অগত্যা তুলকালাম।’পর্ব-৩

0
1266

#অগত্যা_তুলকালাম
নাফীছাহ ইফফাত

পর্ব ৩

আমাদের ভার্সিটি থেকে বেশ খানিকটা দূরে সুন্দর একটা জঙ্গল আছে। জঙ্গলের ভেতরে বিশাল পুরোনো ভাঙ্গা রাজপ্রাসাদ। প্রাসাদের আশেপাশে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে সবসময়। তাই প্রাসাদের আশেপাশে কয়েকটা দোকান গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকবছরযাবৎ। আমরা ফ্রেন্ডরা মিলে প্রায়ই এখানে আসি। আজও আমরা পাঁচজন বসে আছি প্রাসাদ থেকে কিছুটা দূরে একটা উঁচু প্রাচীরে। আমি, শাওন, রিয়াদ, মৌ ও মারিয়া।

এদের মধ্যে শাওন আমার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী। ওর আর আমার বাসা পাশাপাশি হওয়ায় ও আমার সম্পর্কে সবই জানে। আমরা কলেজ লাইফ থেকে একসাথে আছি। ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে রিয়াদ সবচেয়ে ভালো। ও সবার মন রেখে চলে সবসময়। সবসময় অন্যের কথা ভাবে, নিজেকে নিয়ে ভাবে না কখনো। মৌ হলো খাদ্যরসিক, ও খেতে খুব ভালোবাসে। আর মারিয়া শপিং করতে। মৌ ও মারিয়া সুযোগ পেলেই আমাকে আমার বাবা-মা নিয়ে খোঁচাতে ভুলে না। ওরা আমার বাবা-মা সম্পর্কে সবই জানে।

মৌ বার্গারে কামড় দিতে দিতে বললো,
‘এখানে কার বাবা-মা সবচেয়ে বেশি শৌখিন?’
মারিয়া বললো, ‘আমার বাবা-মা অনেক শৌখিন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জিনিস কিনে তারা ঘরভর্তি করে রাখে। ঘর সাজিয়ে রাখে।’

শাওন বললো, ‘আমার বাবা-মাও তাই।’
রিয়াদ কিছুই বললো না। আমরা সবাই জানি রিয়াদ এখানে সবচেয়ে বেশি শৌখিন। ওর বাবা-মায়ের কাছ থেকেই ও এই গুণ পেয়েছে।

মৌ মুখে বার্গারের বাকি অংশ পুরে দিয়ে খোঁচা মারলো আমাকে। বললো, ‘আর হৃদি, তোর বাবা-মা?’
সাথে সাথে সবাই হেসে ফেলে। মারিয়া তো বলেই বসে,
‘ওর বাবা-মা ঝগড়ার দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি শৌখিন।’

ওদের কথায় মন খারাপ হলেও দেখালাম না। এসব শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমি। মুচকি হেসে বললাম,
‘আসলে সবার চেয়ে আমার মা-বাবাই শৌখিন। কারণ ওরা ভালোবাসতে একফোটাও কার্পন্য করে না। ভালোবাসার দিক দিয়ে ওরা শৌখিন।’

‘ভালোবাসা আসছে কেন? আমরা বলছি শৌখিনতার কথা। জিনিস কি কিনে আনে সেটা বল?’

‘সেদিক দিয়েও ওরাই শৌখিন। ওরা কখনো আমার জন্য একটা জিনিস নিয়ে আসে না। দুজন দুটো করে আনে৷ সেটা ড্রেস হোক কিংবা কোনো দামি গিফট।’

মৌ খ্যাকখ্যাক করে হেসে বললো, ‘ঝগড়া করেই তো দুটো জিনিস আনে। একজনেরটা অন্যজনের পছন্দ হয় না তাই।’

আমি চুপ করে গেলাম। ওদের সাথে কথা বলতে আর ইচ্ছে করছে না। উঠে চলে আসতে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনই রিয়াদ বললো, ‘দাঁড়া হৃদিতা।’
এরপর প্রাচীর থেকে লাফ দিয়ে নেমে দাঁড়িয়ে বললো,
‘আচ্ছা হৃদিতা, তুই যদি বলিস তোর নিউ ফোন লাগবে ওরা দুজন কি দু’টো নিয়ে আসবে?’

আমি জানি রিয়াদ কেন এই কথা বলেছে। এখন আমার জবাব শুনে সবাই আফসোস করতে বসবে।

আমি জবাব দিলাম, ‘হ্যাঁ, দুটোই আনে ওরা সবসময়। সেটা যেই জিনিসই হোক না কেন!’

মৌ সত্যি সত্যি আফসোস করে বললো, ‘ইস! আমার বাবা-মা যদি এমন হতো। আমি যদি বলতাম আমার দুটো ফ্লেভারের বার্গার চাই। তখন ওরা দুজনে দুটো করে চারটা বার্গার এনে দিতো। ইস!’

রিয়াদ আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। চোখের ইশারায় বললো, দেখলি?
আমিও হাসলাম। মারিয়া বললো, ‘আচ্ছা হৃদি, তুই বিয়ে করবি কি করে রে? তোর বাবা-মা তো দুটো বর এনে দিবে তোকে। হাহাহা!’ হাসির রোল পড়ে যায় ওর কথায়।

আমি রিয়াদের কাছ থেকে সরে চলে এলাম। আমার কখনোই ভালো লাগে না বাবা-মাকে নিয়ে কোনো কথা শুনতে। কিন্তু বরাবরই আমাকে এসব শুনে আসতে হয়। নাকীবেরও একই সমস্যা ফেইস করতে হয়। আমরা যে নিজ থেকে ফ্রেন্ডদেরকে বলি তা’না। ওরা নিজেরাই আমার বাবা-মাকে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন সিচুয়েশনে ঝগড়া করতে দেখেছে। কিন্তু ওদের ভালোবাসাটা কেউ দেখেনি। ওরা ভালোবাসে গোপনে, ঝগড়া করে প্রকাশ্যে। এক অদ্ভুত জুটি তারা। আমার জীবনে দেখা অন্যরকম ভালোবাসাময় ঝগড়ুটে জুটি।

বাসায় এসে দেখি সব শান্ত। বাবা-মা মুখোমুখি বসে মিষ্টি খাচ্ছে। মা বানিয়েছে নিশ্চয়ই। এখনই খেয়ে বাবা বলবে,
‘এই মিষ্টির স্বাদ, বড়ই বিস্বাদ!’
এটা বাবার ফেমাস ডায়লগ। মা কিছু বানালেই বাবা এরকম বলে। মা-ও যেন এটাই শুনতে চায়।

আমি চুপচাপ দেখতে থাকি ওরা কি করে। আজ কেন যেন ওদেরকে মন ভরে দেখতে ইচ্ছে করছে। দেখলাম, বাবা মিষ্টি খেয়ে চুপচাপ চলে গেলেন। টু শব্দও করলেন না। মা ফ্যালফ্যাল করে বাবার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।

আমি এসে বাবার চেয়ারেই বসলাম। জগ থেকে পানি ঢেলে পান করলাম। মা ধুম করে চেয়ারে বসে বললো,
‘হৃদি রে! তোর বাবার কি হয়েছে বলতো?’
‘কি হয়েছে মা?’
‘আজ বললো না তো, এই মিষ্টির স্বাদ, বড়ই বিস্বাদ।’
‘মা! এটা নিয়ে এখন টেনশন করছো? বাবার হয়তো আজ মিষ্টি ভালো লেগেছে।’

‘ভালো লাগেনি বলেই তো বলেনি।’ মা খানিকটা বিরক্ত হলো বলে মনে হলো।
‘ভালো লাগেনি বলে বলেনি? কি বলছো মা? কিছুই তো বুঝতে পারছি না।’
‘তোর বুঝতে হবে না তো। আমি যাই গিয়ে বরং রসমালাই বানাই। মানুষটা খেতে বড্ড ভালোবাসে।’

মা চলে গেল। আমি বিড়বিড় করে বললাম, ‘আহারে ভালোবাসা। এমন ভালো কয়জন বাসে? সারাদিন যতই ঝগড়া করুক, পরিশেষে লোকচক্ষুর আড়ালে ওরা দুজন দুজনকে সীমাহীন ভালোবাসে।’

বিকেলের দিকে হুট করে রাফিনের ফোন আসে। ও সচরাচর ফোন করে না আমাকে। মাসে দু’তিনবার কিংবা তারও কম আমাদের ফোনে কথা হয়। আজকাল দেখাও হয় না খুব একটা। ও সবসময় নিজের মতো বিজি থাকে। খুব দরকার ছাড়া আমরা ফোনালাপ করি না। তবে রাফিন সবসময় নিজ থেকেই ফোন করে। আমার দিক থেকে ফোন করার কোনো নিয়ম নেই। সেই নিয়ম রাফিন রাখেনি৷ আমার ফোন করার দরকার হলে আগে থেকে ওকে ইনবক্সে বলে রাখতে হয় যে, আজ তোমার একটু সময় হবে? ও যদি বলে সময় হবে তবেই কথা বলতে পারি আমি। তাও ফোনটা ও নিজের সময়মতোই করে।
সম্পর্কের শুরুতে আমি প্রায়ই ওকে ফোন করতাম। কিন্তু ও কখনোই রিসিভ করতো না। কল কেটে ব্যাক করতো। এখন তাও করে না। আমি ফোন করলে ও সবসময় কেটে দেয়। কখনোই রিসিভ করে না। তাই আমি নিজ থেকেই কল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি৷ ওর ইচ্ছে হলে কথা হয়, নয়তো না।

ফোন বাজছে অনেকক্ষণ ধরে। আমি দ্রুত রিসিভ করে সালাম দিলাম। সালাম দিতেই রাফিন জবাব দিয়ে বললো,
‘কি করছিলে?’
‘তেমন কিছু না। বসে আছি বারান্দায়।’
‘আজকে কাশবনে আসছো না?’
‘কাশবনে? কেন তুমি আছো ওখানে?’
‘হ্যাঁ তো।’
‘তাহলে এখনই আসছি আমি।’
‘আরে না, আসতে হবে না। বাদ দাও।’
‘না, না বাদ দিবো কেন? আসি আমি। বাসায় ভালো লাগছে না এমনিতেই।’ কথাটা বললাম বানিয়ে। ওর সাথে দেখা করবো বলে।

‘আচ্ছা তাহলে এসো।’
‘হুম আসছি।’
‘আর শোনো, সাইকেল নিয়ে এসো না অকে?’
‘হেঁটে যাবো অতদূর?’
‘নো ম্যাম, আপনি বাসার নিচে নামলেই হবে। আমি আসছি।’
‘সত্যি?’ খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলাম। রাফিন কখনো আগ বাড়িয়ে এত কথা বলে না। আর বাসার নিচে এসে আমাকে নিয়ে যাওয়া সে-তো স্বপ্নের মতো।

‘সত্যি রে বাবা! তাড়াতাড়ি নামো।’
‘আমি এক্ষুনি আসছি।’

ফোন রেখেই ঝটপট টপস-স্কার্ট পড়ে নিলাম। হিজাব পরে স্কার্ফটা গলায় পেঁচিয়ে উড়ন্ত গতিতে দূরন্ত বেগে নিচে নেমে এলাম। রাফিন সামনেই বাইকে হেলান দিয়ে বসে আছে। আমাকে দেখেই মুচকি হাসলো। ওর সামনে যেতেই ফিসফিস করে বললো,
‘লুকিং সো কিউট!’

মনে মনে আবার একটা ধাক্কা খেলাম। রাফিন কখনোই আমার প্রশংসা করে না। সবসময় সত্যিটা বলে। মন রাখার জন্য কোনো কথা ও বলতে জানে না। ও রোবট টাইপের একটা ছেলে। যন্ত্রের মতো চলে, ভেতরে কোনো ফিলিংস নেই। মাঝেমধ্যে ওর জন্য আমার করা অত্যাধিক ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখে কিঞ্চিৎ পরিমাণ ফিলিংস আসলেও সেটা বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকে না। আবার মাঝেমধ্যে আমার অতিরিক্ত ভালোবাসার কারণে ধমকাতেও ছাড়ে না আমাকে। সেই ছেলের আজ কি হলো বুঝতে পারছি না। আমি ভয়ে ভয়ে কাঁপা হাতে ওর কপালে হাত রাখলাম। ও আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললো, ‘কি?’

আমি চট করে হাত সরিয়ে দু’পাশে মাথা নাড়ালাম। ও মুচকি হেসে বাইক স্টার্ট দেয়। একটানে কাশবনে চলে আসি আমরা।

রাফিন প্রতিদিন কাশবনে আসে ঠিকই। কিন্তু ইদানিং ও বাইক রাইড করে না। কাশবনের ফুরফুরে সুন্দর পরিবেশে বসে সে মনের আনন্দে পাবজি খেলে। তখন ওর আশেপাশে আমি থাকলেও ও কোনো পাত্তা দেয় না। তাই কাশবনে আসাও আমি বন্ধ করে দিয়েছি। ও আমার সামনে আছে অথচ কথা বলছে না, আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না ব্যাপারটা আমি একদমই মানতে পারি না৷ এটার জন্যও আমি কম ধমক খাইনি ওর কাছে। ধমক না খাওয়ার জন্য, এত ব্যাথা সহ্য না করার জন্য ওর মুখোমুখি হওয়াই আমি ছেড়ে দিয়েছি। ওকে ওর মতো থাকতে দিয়েছি৷ তাই কাশবনে আসতেই আমার মনে একটা প্রশ্ন কুইকুই করতে থাকে। রাফিন আজকেও অন্যদিনের মতো পাবজি খেলতে বসে যাবে না তো? তাহলে আমার সুন্দর মুডটা ফুশশ করে নষ্ট হয়ে যাবে। রাফিনকে প্রশ্নটা করার খুব ইচ্ছে থাকলেও করতে পারলাম না।

অনেকটা ভেতরে ঢুকে বাইক থামায় রাফিন। আমার হাত ধরে নিয়ে যায় কাশবনের ভেতর। চারপাশে হাজার হাজার কাশফুলে ছেঁয়ে আছে। তার মাঝখানে আমরা দুজন দাঁড়িয়ে আছি৷ এসব কিছু আমার জন্য অনেক বেশি আশ্চর্যের বিষয়৷ এরকম ঘটনার মুখোমুখি অনেকদিন হইনি আমি৷ রিলেশনের প্রথমদিকে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটলেও এখন সেসব শুধুই স্বপ্ন। রাফিন আমাকে নিয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে যায়। এখানে সুদীর্ঘ দুটো রেললাইন আছে। ও রেললাইনের একপাশে বসে আমাকেও বসতে বলে। আমি বসতেই বললো,
‘আজকে তোমার জন্য একটা বিশাল সারপ্রাইজ আছে।’

আমি একগাল হেসে বললাম,
‘আজকে তো সেই বিকেল থেকে একটার পর একটা সারপ্রাইজ পেয়েই চলেছি।’
‘মানে?’
‘প্রথমে তোমার ফোনকল, তারপর আমাকে নিতে আসা, প্রশংসা করা, হাত ধরে এই এতদূর নিয়ে আসা। সবকিছুই তো সারপ্রাইজ ছিলো আমার জন্য।’

‘তাই না?’ ঠোঁট টিপে হাসে রাফিন। তারপর বলে,
‘আরও একটা সারপ্রাইজ বাকি। এন্ড এটাই মেইন সারপ্রাইজ।’

রাফিন কাঁধ থেকে লম্বা একটা ব্যাগ নামায়। চেইন খুলে বের করে আনে সুন্দর গিটার। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হেসে বলে,
‘তুমি একবার গান শুনতে চেয়েছিলে না? রিলেশনের শুরুর দিকে, মনে আছে?’

মনে থাকা সত্ত্বেও আমি বললাম, ‘না তো! আমার মনে নেই।’
‘তুমি বলেছিলে গান গাইতে, আমি তখন গাইনি। বলেছিলাম গিটারে সুর তুলে গেয়ে শোনাবো। মনে পড়েছে?’ আমাকে মনে করানোর ভঙ্গিতে বলে রাফিন।
‘হুম।’ আবেগে আপ্লুত আমি কথা বলার ভাষা হারিয়েছি।
ও বললো, ‘শুরু করি তাহলে?’
‘করো।’

ও গিটারে টুংটাং শব্দ তুলতে লাগলো। সাথে গাইতে লাগলো আমার প্রিয় গানটা।

“না বলা কথাগুলো দেখলে তোকে বলা হয়ে যায়,
হাজারো এলোমেলো চিন্তারা আজ থমকে দাঁড়ায়।
কেন রে দু’চোখে আসে না ঘুম
প্রতিটি পলকে আদুরে চুম
জানি না হয় রে কেন আমার এমন
মন খোঁজে মন, মনের মতো মন। (২)

অগোছালো আমি কেমন বদলে গেছি দেখ
আনমনে যা-ই বলি গল্পটা যে এক।
খোঁজে নে হৃদয়ের বাইপাসে
স্বপ্নেরা কত যায় আসে।
জানি না হয় রে কেন আমার এমন
মন খোঁজে মন, মনের মতো মন।”

গানের মাধ্যমে যেন ও ওর মনের না বলা সব কথা আমাকে বুঝিয়ে দিলো। পুরোটা সময় এত সুন্দর কেটেছে আমি আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছি।

রাফিন ওর বাইকে করেই আমাকে বাসায় পৌঁছে দিলো। বাইক থেকে নেমে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম ওর সামনে। চারদিকে অন্ধকার নেমেছে অনেক আগেই। ল্যাম্পপোস্টের মিটিমিটি আলোয় আলোকিত চারপাশ। আলো-আঁধারির মাঝে আমি মুগ্ধ হয়ে রাফিনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ও বাইকের হাতলে হাত রেখেই প্রশ্ন করে,
‘কিছু বলবে তুমি?’

আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো মাথা নাড়ালাম। বললো, ‘বলো কি বলবে। রাত হয়ে যাচ্ছে তো।’

আমি আস্তে আস্তে বললাম, ‘কাছে আসতে হবে।’
‘হুম?’ রাফিন আমার দিকে চোখ বড় করে তাকালো।
আমি ওর দিকে সামান্য এগিয়ে বললাম, ‘অল্প কাছে।’
ও আমাকে ওর পাশে বাইকের সাথে ঘেঁষে দাঁড় করালো। বললো, ‘তাড়াতাড়ি বলো।’

আমি চোখ বন্ধ করে ফিসফিস করে দ্রুততর কন্ঠে বললাম, ‘ভালোবাসি’
রাফিন আমার হাত রীতিমতো ছুঁড়ে দিয়ে বললো, ‘এটা বলার জন্য এত্ত কাহিনী করতে হয়? কত্ত দেরী হয়ে গেল আমার। ধ্যাৎ! যাও বাসায় যাও।’

আমি তড়িৎ গতিতে ওর কাছ থেকে পিছিয়ে এলাম। ও চোখেমুখে বিরক্তি ভাব নিয়ে চোখের পলকে আমার সামনে দিয়ে বাইক নিয়ে চলে গেল। এই সামান্য ঘটনায় আমার সীমাহীন কান্না পেয়ে গেল। ডানচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো অশ্রুর লম্বা টান।

#Be_Continued_In_Sha_Allah ❣️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here