অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ১০

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১০
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

সাজ্জাদের যেন মনে হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে সুন্দর মেয়েটি যেনো তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে কারন আদ্রিতা সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসছে। হালকা সাজ, ফর্সা গায়ে কালো ড্রেস। এক কথায় অসাধারণ লাগছে তার কাছে। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিপ। সব কিছু যেনো সাজ্জাদকে আদ্রিতার দিকে টানছে খুব।

সাজ্জাদ বসে বসে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো। যা করলে সবাই সুখী হতে পারবে।

আদ্রিতা খেয়াল করে নি সাজ্জাদকে। আদ্রিতা রান্না ঘরের দিকে চলে গেলো।

মা ডেকেছিলে? (আদ্রিতা)

হ্যাঁ, ওরা সবাই চলে এসেছে নাস্তার ব্যবস্থা করেছি দিয়ে আয় ওদের।

ঠিক আছে বলে আমি আর ফুফু মিলে খাবার গুলো নিয়ে সোফার রুমে আসতে লাগলাম। সাজ্জাদকে দেখে চোখ আটকে গেলো। কালো পাঞ্জাবিতে যে ছেলেদের এতো সুন্দর লাগতে পারে আগে জানা ছিলো না।

আন্টি কেমন আছেন? সাজ্জাদের মা কে জিজ্ঞেস করলাম।

হ্যাঁ, মা ভালো আছি তুমি কেমন আছো। (সাজ্জাদের মা)

জ্বি, আন্টি ভালো আছি। তারপর তাদের সাথে কিছুক্ষণ বসে গল্প করলাম। তখন পরিবারের বাকি সদস্যরা চলে আসলো রুমে। আমাকে বললো আমি যেনো সামিরাকে নিয়ে আসি। ঠিক আছে বলে দির রুমে চলে আসলাম।

দি, চল নিচে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে। (আদ্রিতা)

হ্যাঁ, চল।

সামিরাকে নিয়ে আদ্রিতা নিচে নামছে। শাড়ীতে অসাধারণ লাগছে সামিরাকে। সামিরাকে বসানো হলে সবার মধ্যে। আমি মার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।

সাজ্জাদের বাবা বললো সব যেহেতু ঠিক ঠাক বাসার বউকে খুব তাড়াতাড়ি আমার বাসায় নিয়ে যেতে চাই।

সাজ্জাদের মা বললো, বাসার বউ না বাসার মেয়ে করে রাখবো।

আদ্রিতার মা বাবা ও সম্মতি প্রকাশ করলো। ডিসেম্বর এর ৭ তারিখ সামিরা আর সাজ্জাদের বিয়ে ঠিক করা হলো। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠলো। আদ্রিতার মনে এখন কি চলছে তা আদ্রিতা নিজেই জানে। সামিরা কিভাবে সাজ্জাদের সাথে বিয়ে করবে এইটা সামিরা জানে না। সাজ্জাদ মনে মনে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটি সাজ্জাদই ভালো জানে। আর স্বাধীন সে ত বসে বসে সবার সাথে কথা বলছে। আর বিয়ের অনুষ্ঠানে কি করবে না করবে সব ঠিক ঠাক করছে। ৪ টি জীবন যেন এখন একে অন্যের সাথে জড়িয়ে আছে।

আদ্রিতার মা বলে উঠলো, আসুন সবাই দেড়ি হয়ে যাচ্ছে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন।

আগে ছেলেরা খাবার খেয়ে নিলো। তারপর সব মেয়েরা। খাবার খাওয়া শেষে সবাই আবার বসে গল্প করছে। তখন সাজ্জাদের মা বলে উঠলো, সাজ্জাদ আর সামিরার ত সেইভাবে আলাদা কথা হয় নি। ওরা না হয় একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসুক নিজেদের পছন্দ, অপছন্দ, স্বপ্ন, ইচ্ছা সব কিছু জেনে নিক।

আদ্রিতার বাবা বললো, জ্বি ভালোই হয়। কিন্তু শুধু ওরা দু’জন বিয়ের আগে যাবে জিনিসটা খারাপ দেখায়।

সাজ্জাদের মা বললো, শুধু ওরা দু’জন যাবে কেনো? ওদের সাথে আদ্রিতা আর স্বাধীন ও যাবে।

সবাই সম্মতি প্রকাশ করলো। আমরা ৪ জন বেরিয়ে পড়লাম। গাড়ির প্রথমে সাজ্জাদ আর স্বাধীন আর পিছনে আমি আর দি বসলাম। বাসার সামনেই গাড়ি রাখা ছিলো সাজ্জাদ গাড়ি চালানো শুরু করলো।

এদিকে ~

গাড়িতে উঠার সময় S.R এর একজন লোক তাদের ছবি তুলে নিলো। ছবিটি S.R এর কাছে পাঠিয়ে দিলো।

S.R ছবিটি দেখে রাগে জ্বলে পুড়ছে। বলতে লাগলো সাজ্জাদ সব সময় আমার থেকে জিতে যায়। আদ্রিতাকে আমি নিজের করে নিবো তাহলে আমি জিতে যাবো সাজ্জাদের থেকে। কথা গুলো বলে একা একা হাসা শুরু করলো।

অন্যদিকে ~

কতক্ষণ পরে সাজ্জাদের মা বাবা চলে গেলো। আমাদের বাড়ির আত্মীয় স্বজনরাও চলে গেলো। আদ্রিতার মা আদ্রিতার বাবাকে বললো। স্বাধীন ছেলেটাকে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আদ্রিতার সাথে স্বাধীনকে কেমন মানাবে? আদ্রিতার বাবা বললো, হ্যাঁ স্বাধীনকে আমার ও ভালো লেগেছে আদ্রিতার সাথে ভালোই মানাবে। আদ্রিতার মা বললো আগে সামিরা আর সাজ্জাদের বিয়ে হয়ে নিক। পরে না হয় স্বাধীনের বিষয় নিয়ে ভাববো। আদ্রিতার বাবা সম্মতি প্রকাশ করলো।

এদিকে ~

আমরা ৪ জন একটি পার্কে ঘুরতে আসলাম। দি আর সাজ্জাদ ত এমনি কোনো কথা বলে না। আমি আর স্বাধীন ভাইয়া গল্প করে চলেছি। দি বললো ওর পানির পিপাসা পেয়েছে। পানি কিনবে। সাজ্জাদ স্বাধীনকে বললো, স্বাধীন তুই সামিরাকে নিয়ে যা। আমি এখানে আছি। স্বাধীন ও আর কথা না বাড়িয়ে সামিরাকে নিয়ে গেলো। এখন এখানে আমি আর সাজ্জাদ দাঁড়িয়ে আছে। সাজ্জাদকে ইগনোর করতে আমি একটু সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখলাম ফুসকা বিক্রি করছে। ইশ আলো থাকলে ভালো হতো ওর ও ফুসকা অনেক পছন্দ।

সামিরা পানির বোতল কিনেছে। আর স্বাধীন বক বক করেই চলেছে। আজ কেনো জানি সামিরার খারাপ লাগছে না স্বাধীনের কথা। আর সামিরা চাচ্ছে সাজ্জাদ আর আদ্রিতা যেনো একটু আলাদা সময় কাটাতে পারে তাই স্বাধীনকে বললো সাজ্জাদ আর আদ্রিতা ও ওই জায়গাটা ঘুরে ডেকছে চলুন আমরা একটু এই জায়গা থেকে হেঁটে আসি। স্বাধীন কিছু বলবে এর আগে স্বাধীনের ফোনে একটি মেসেজ আসলো। মেসেজটি পরে স্বাধীন বললো ঠিক আছে চলুন আমরা ঘুরে আছি। একথা বলে স্বাধীন আর সামিরা হাটা শুরু করলো।

সাজ্জাদ দেখলো আদ্রিতা অন্যদিকে হাঁটছে। সাজ্জাদ আদ্রিতার সাথে যাওয়া শুরু করলো। আমি ফুচকাওয়ালা মামাকে বললাম, মামা ঝাল করে এক প্লেট ফুসকা দিয়েন ত বেশি করে ঝাল দিয়েন। সাজ্জাদ এগিয়ে এসে বললো, না মামা হালকা ঝাল দিয়েন বেশি ঝাল খেতে পারে না শুধু শুধু বেশি ঝাল নেই। আমি আর সাজ্জাদের কথা শুনে কিছু বললাম না।

অন্যদিকে ~

নওশিনরা আজ পার্কে ঘুরতে এসেছিলো। আদ্রিতা আর সাজ্জাদকে এক সাথে দেখে। রেগে উঠলো আবার দু’জনই কালো ড্রেস পড়া। নওশিন যেনো রেগে আগুন হয়ে যাচ্ছে। নওশিন রাইসাকে বললো চল আমি ও ফুসকা খাবো তাহলে একটু হলে ও সাজ্জাদের কাছাকাছি যেতে পারবো। নওশিনরা সবাই ফুসকার দোকানের সামনে আসলো।

এদিকে ~

মামা সাজ্জাদের কথা শুনে হেসে বলে উঠলো, নতুন নতুন বিয়ে করেছেন নাকি। কথাটি নওশিন ও শুনেছে। নওশিনের রাগ যেনো আর বেড়ে গেলো। আমি ফুসকাওয়ালা মামাকে কিছু বলবো কিন্তু নওশিনদের দেখে আর কিছু বললাম না চুপ থাকলাম। আমি দেখতে চাই সাজ্জাদ কি বলে। সাজ্জাদ ও নওশিনকে দেখেছে। সাজ্জাদের মনে পরে এই মেয়েটি ত আদ্রিতাকে অপমান করেছিলো।

সাজ্জাদ মামার উদ্দেশ্য বলে, না মামা এখনো বিয়ে করে নি, ও ছোট এখনো তাই।কথাটি বলে আমাকে ওদের সামনে জড়িয়ে ধরে নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিলো। নওশিন সামনে আছে দেখে আমি ও খুব বেশি একটা আপওি করলাম না। সাজ্জাদ তখনো ও সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে। দূরে সরতে চাইলে আর ও শক্ত করে ধরছে। সন্ধ্যা হয়ে আসছে প্রায়। সাজ্জাদের এরকমন আচরনে নওশিনের গ্রুপ আরো রেগে সেখান থেকে চলে যায়।

দূর থেকে একজন সাজ্জাদের দিকে বন্দুক দিয়ে স্যুট করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। বন্দুকের গুলি চালাবে ঠিক এমন সময়…………

#চলবে

[ ডিসেম্বরের ৭ তারিখ কিন্তু বিয়ে 💁‍♀️ আর নওশিনকে কি করি আপনারাই বলুন ও সাজ্জাদকে ভালোবাসে 🤷‍♀️ আচ্ছা আদ্রিতার মার ত স্বাধীনকে পছন্দ হয়েছে। স্বাধীনের সাথে আদ্রিতাকে কেমন মানাবে? 🫣]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here