অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ১১

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১১
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

সরি আদ্রিতা কথাটি মনে মনে বলে।সাজ্জাদ আদ্রিতার মাথায় পিস্তল দিয়ে জোরে করে একটি আঘাত করলো।

হঠাৎ মাথায় কিছুর আঘাত পেয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। আর কিছু মনে নেই সব অন্ধকার হয়ে আসছে।

দূর থেকে একজন সাজ্জাদের দিকে বন্দুক দিয়ে স্যুট করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। বন্ধুকের গুলি চালাবে ঠিক এমন সময় পিছন থেকে স্বাধীন এসে স্যুট করলো ঔই লোকটির হাতে।

একটি মহিলা পুলিশ এসে আদ্রিতাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। অন্যদিকে স্বাধীন আগে থেকেই সামিরাকে স্প্রের মাধ্যমে অজ্ঞান করে দিয়েছে।

সাজ্জাদ আগেই দেখতে পেরেছিলো S.R লোকদের এইজন্যই তখন আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরেছিলো। যদি আদ্রিতার উপর গুলি করে তা থেকে ওকে বাঁচাতে। আদ্রিতা অনেক বার ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু ততবারই সাজ্জাদ আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। রাস্তার মধ্যে দেখে আদ্রিতা কোনোরকম শব্দ করে নি। আর এখন S.R এর বিষয় গুলো আদ্রিতা বা সামিরা দেখতে না পারে এ জন্য দু’জন কেই অজ্ঞান করে দিয়েছে।

দোস্ত আমার মনে হচ্ছে S.R দেশে ফিরে আসছে না হলে ওর লোকদের এতো সাহস হতো না আমরা এইখানে থাকতে হালমা করার চেষ্টা করতো না ( স্বাধীন)

হ্যাঁ, আমার ও মনে হচ্ছে না হলে কোন সাহসে ওরা আমাদের সামনে এসেছে। পার্কের চারদিকে S.R দের লোক আছে। যদি ও স্বাধীন আগে থেকে পুলিশেদের জানিয়ে রেখেছিলো তাই কারোর ক্ষতি হয় নি। কিন্তু সাজ্জাদ বা স্বাধীন কেউ চাচ্ছিল না যেনো আদ্রিতা বা সামিরা ঘটনা গুলো জানে। কারন এই কথা গুলো এখন জানলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সাজ্জাদ আর স্বাধীন এ দিক সামলে নিলো বাকি পুলিশরা ও আছে। S.R দের সব লোকদের ধরতে তারা সক্ষম হয় নি। কিন্তু কয়েকজন কে ধরতে পেরেছে। তাদের পুলিশরা থানায় নিয়ে গেছে। সাজ্জাদের একটি চিন্তা যেভাবেই হোক না কেনো S.R তথ্য বের করতে হবে না হলে অনেক ক্ষতি হতে পারে।

সাজ্জাদ আর স্বাধীন গাড়িতে এসে বসলো। সামিরা বা আদ্রিতা কারোরই জ্ঞান নেই। সাজ্জাদ গাড়ি চালানো শুরু করলো। সাজ্জাদের পাশে আদ্রিতা আর স্বাধীনের পাশে সামিরা।

সামিরা আস্তে আস্তে চোখ খুললে, স্বাধীন বলে উঠে মিস সামিরা আপনি ঠিক আছেন।

হ্যাঁ, ঠিক আছি কিন্তু হঠাৎ কি হয়েছিলো?(সামিরা)

আমার মনে হচ্ছে পার্কের খাবারে কোনো ভেজাল ছিলো। হঠাৎ আপনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। আবার আদ্রিতার ও একই অবস্থা। (স্বাধীন)

কি আদুরি? আদুরি ঠিক আছে ত?(সামিরা)

হ্যাঁ, ঠিক আছে কিন্তু খাবারে কোনো সমস্যা হওয়ার জন্য মনে হয় সমস্যা হয়েছে আপনাদের।(স্বাধীন)

সামিরা ও স্বাধীনের কথা বিশ্বাস করে নিলো।

মাথাটা ব্যথা করছে চোখ খুলে দেখলাম সাজ্জাদ পাশে গাড়ি চালাচ্ছে। আর দি স্বাধীন কথা বলছে। সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছিলো তখন হঠাৎ মনে হলো কেউ যেনো মাথায় কিছু দিয়ে আঘাত করেছিলো।

সামিরা বলে উঠলো, আদুরি পার্কের খাবারে কোনো সমস্যা হয়েছিলো। তোর মতো হঠাৎ আমার ও জ্ঞান হারিয়ে গিয়েছিলো। আর সাজ্জাদ ও স্বাধীন যেহেতু কিছু খায় নি তাই ওদের সমস্যা হয়নি।

দির কথাটা কোনো জানি বিশ্বাস হচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে কোনো একটি ভেজাল হয়েছিলো।

স্বাধীন ও বলে উঠলো, হ্যাঁ সামিরা ঠিক বলছে।

তারপর সাজ্জাদ আর স্বাধীন আমাদের বাড়ির সামনে নামিয়ে তারা চলে গেলো।

দি আমার মনে হচ্ছে কোনো একটা ভেজাল আছে। কিছু ত একটা আছে যা আমাদের আড়ালে হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা জানি না।(আদ্রিতা)

আমার মনে হয় না কোনো ঝামেলা আছে। আদুরি তুই একটু বেশি চিন্তা করিছ।(সামিরা)

আমি আর কিছু বললাম না। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে রাতে আগে আগে শুয়ে পড়লাম আমরা। কিন্তু একটি দিক কোনোভাবেই বুঝতে পারছি না। সেই দু’বছর আগের ঘটনা, সেদিন রাতে বাসায় হামলা, আজকে পার্কে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলা। সব কিছুর মধ্যেই সাজ্জাদ ছিলো। এমন কোনো ব্যাপার হচ্ছে না ত যা আমাদের ঘিরে কিন্তু আমরা জানি না? কথা গুলো চিন্তা করতে করতে মাথা ব্যথা হয়ে আসছে। ঘুমিয়ে পড়লাম।

সাজ্জাদ তুই কি পাগল হয়ে গেছিছ? আমার পক্ষে এ কাজ সম্ভব নয়। ( স্বাধীন)

একটু বোঝার চেষ্টা কর এ কাজের মাধ্যমে আমরা সবাই ভালো থাকতে পারবো। (সাজ্জাদ)

প্রথমে স্বাধীন সাজ্জাদের কথায় রাজি না হলে ও পরে সব দিক বিবেচনা করে রাজি হয়ে যায়।

****কিছুদিন পর *****

সময় আপন গতিতে ছুটে চলেছে। সেদিনের পর সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার কোনো রকম যোগাযোগ হয় নি।

কলেজে বসে আছি। আমি, আলো, তানহা আর আবির। এক সপ্তাহ পর কলেজে অনুষ্ঠান। তা নিয়েই আমাদের কথা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের সব কাজের দায়িত্ব আরিয়ান স্যার আমাদের দিয়েছেন।

তোরা কেনো পারফরম্যান্স করবি না? (আবির)

হ্যাঁ, আমি আর আদ্রিতা এক সাথে গান দিবো ভাবতেছি তোরা কি করবি?(আলো)

আমরা কিছু করবো না আমরা অনুষ্ঠানের বাকি দিক গুলো সামলে নিবো। ( তানহা)

ওকে। তাহলে সব কাজ গুলো ঠিক মতো ভাগ করে নেই।যেহেতু প্রধান অতিথি হিসেবে দেশের সেরা ব্যবসায়ীরা থাকবে তাহলে আমাদের বেস্ট একটি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের কলেজের সুনামের ও একটি ব্যাপার আছে। ( আবির)

আবিরের কথায় সবাই সম্মতি প্রকাশ করলো। কিরে আদ্রিতা কিছু বলতেছিছ না যে?(তানহা)

আরে না এমনি। তোরা বল আমি শুনছি। (আদ্রিতা)

আদ্রিতা আমার সাথে একটু মার্কেট যেতে পারবি আমার ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছে।(আলো)

ফোন নষ্ট হয়ে গিয়েছে মানে? অনুষ্ঠানের সব দায়িত্ব আমাদের উপর। এখন যে তোর ফোন নষ্ট হয়ে গেলো আমরা সবাই তোর সাথে যোগাযোগ করবো কিভাবে? আমাদের যোগাযোগ থাকা এখন জুরুরি। ( আবির)

আরে চিন্তা করিছ না, আমার আর আলোর বাসা ত পাশাপাশি আলোকে কোনো দরকার হলে আমাকে কল দিলেই হবে। আর আলো তোর কাছে কেউ তোর নাম্বার চাইলে আমার নাম্বার দিয়ে দিস তোর হয়ে আমি অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সব কথা বলে নিবো। ( আদ্রিতা)

ওকে আমি তোর নাম্বার দিয়ে দিবো।(আলো)

অনুষ্ঠানের জন্য এমনি আমার মার্কেট যেতে হবে। আমরা প্রোগ্রামের আগের দিন যাবো একসাথে ঠিক আছে? তখনই তোর ফোন কিনে নেবো? আর তোরা ও যাবি? (আদ্রিতা)

আবির আর তানহা বললো, হ্যাঁ আমরা ও যাবো।

তখন আরিয়ান আসলো বললো, সব দায়িত্ব তোমাদের উপর। কলেজের সুনাম জড়িত থাকবে। তাই আশা করি তোমরা ভালো ভাবে কাজ করবে।

আমরা সবাই বললাম, জ্বি স্যার।

আরিয়ান স্যার বললো তোমাদের মধ্যে যেকোনো দু’জন এসো আমার সাথে। বাকি কাজ গুলো দেখিয়ে দেয় কথাটি বলে আরিয়ান স্যার চলে গেলেন। আমি আলো আর তানহাকে বললাম স্যারের সাথে যেতে ওরা গেলো স্যারের সাথে। আমি আর আবির কথা বলতে বলতে কলেজের বাইরে এসে দাঁড়ালাম আলো আর তানহার জন্য।

এদিকে ~

সাজ্জাদ গাড়ি নিয়ে আদ্রিতার কলেজের একটু দুরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এতোদিন ও আদ্রিতার সাথে দেখা করার জন্য এসেছিলো। কিন্তু দেখা হয় নি। আর আজকে আদ্রিতাকে অন্য ছেলের সাথে দেখে। সাজ্জাদের মাথা গরম হয়ে গেলো। রেগে চলে গেলো সেখান থেকে। কিছুক্ষণ পর আলো আর তানহা আসলো।

*******

অফিসে একটি ছেলে বসে আছে, হাতে একটি মেয়ের ছবি। ছেলেটি ভাবতেছে তুমি এখনো আমার কাছে অপরিচিত। মেনে নেবে ত আমাকে তোমার হাসবেন্ড হিসেবে? আমি ও জানি যেইভাবে প্লেন করেছি সেভাবে বিয়ে করা ঠিক নই।কিন্তু বিশ্বাস করো তোমাকে আমি অনেক ভালো রাখবো। তুমি আমার কাছে অসময়ী বৃষ্টির মতো। তুমি আমার অসময়ী বৃষ্টি। কথাগুলো ভেবে ছেলেটা আনমনে হেসে উঠলো।

*******

কলেজ ছুটির পর বাসায় চলে আসলাম। অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে ফোনে তানহার সাথে কথা বলছিলাম এমন সময় ফোনে একটি মেসেজ আসলো। মেসেজ এ লিখা ছিলো, ভালোবাসি তোমাকে! অবাক হয়ে গেলাম আমাকে এই মেসেজটি কে দিবে?

#চলবে

[ অসময়ী বৃষ্টি এইটা আবার কে? আর আদ্রিতার ফোনে মেসেজ কে দিলো? কি মনে হয় আদ্রিতাকে কে ভালোবাসে? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here