#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৩
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতার শারিরীক অবস্থা খারাপ হচ্ছে দেখে সাজ্জাদ দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিতাকে নামালো। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে কিছু লোক ঘিরে দাঁড়ালো সাজ্জাদ আর আদ্রিতাকে।
হঠাৎ S.R দের লোকদের দেখে সাজ্জাদ নিজে ও একটু অবাক হলো।
আদ্রিতা তুমি গাড়িতে গিয়ে বসো। ( সাজ্জাদ)
কিন্তু আপনি? ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা তাড়াতাড়ি গাড়িতে যাও।(সাজ্জাদ)
আদ্রিতা গাড়িতে যাওয়ার আগেই একটি লোক সাজ্জাদের উপর হামলা করতে নিলে সাজ্জাদ তার লুকিয়ে রাখা পিস্তলটি বের করে ওই লোকের হাত গুলিয়ে চালিয়ে দেয়।
সাজ্জাদের কাছে বন্দুক দেখে কি বলবো মুখের ভাষা যেনো হারিয়ে ফেলছি। হঠাৎ স্বাধীন ভাইয়া কিছু পুলিশ নিয়ে আসলো। পুলিশ আর স্বাধীন ভাইয়াকে দেখে বাকি লোকগুলো পালিয়ে গেলো।
দোস্ত ঠিক আছিছ?(স্বাধীন)
হ্যাঁ, ঠিক আছি। S.R দের লোক যেভাবেই হোক না কেনো আদ্রিতাকে তাদের কাছে চাচ্ছে। একটা কাজ কর কিছু যায়গায় খবর দিয়ে দে সামিরার সাথে আমার বিয়ে তাহলে এখন আদ্রিতার উপর বিপদ কিছুটা কমে যাবে। ( সাজ্জাদ)
কিছুই বুঝতে পারছি না সাজ্জাদের কাছে বন্দুক কিভাবে সে ত বিজনেসম্যান তার মানে কি সাজ্জাদ খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত? আর ভাবতে পারছি না কিছু।
সাজ্জাদ পিছনে ফিরে দেখলো, আদ্রিতা তখন গাড়িতে উঠে নি।
Shit! আদ্রিতা তাহলে এতোক্ষণ সব কিছু খেয়াল করেছে। সাজ্জাদের চিন্তা যেনো এখন আরো বেড়ে গেলো এখন যদি আদ্রিতা তার বাসায় বলে দেই সাজ্জাদের কাছে বন্দুক আছে তাহলে এখন অনেক কথা উঠবে আর সাজ্জাদ চাচ্ছে না এখন বিষয়গুলো জানাজানি হোক স্বাধীন আদ্রিতা আমার হাতে বন্দুক দেখে ফেলেছে কি করতে পারি এখন? (সাজ্জাদ)
আরে ওকে একটু বুঝিয়ে বল যে ব্যবসার কারনে তোর কাছে বন্দুক আছে। আর এইটাও ওকে বল যেনো এই ব্যাপারে কাউকে কিছু না বলে।(স্বাধীন)
না অনেক জেদি ও বাসায় গেলে ঠিকই বলে দিবে। সাজ্জাদ বন্দুকের দিকে তাকিয়ে বললো ওকে একটু অন্য ভাবে বোঝাতে হবে। ( সাজ্জাদ)
আমি কি করবো কিছু বুঝতে পারছি না এমনি বন্দুক সহ্য করতে পারি না তার উপর আবার সাজ্জাদের কাছে মাথা ঘুরতেছে।
আদ্রিতা কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার সামনে আসতে নিলে আদ্রিতা সাজ্জাদকে দেখে ভয়ে দৌড় দিতে চাইলে ও সাজ্জাদ আগেই আদ্রিতার হাত ধরে ফেলে। স্বাধীন ও ছিলো সেখানে কিন্তু জানে এখন সাজ্জাদকে কিছু বলে ও লাভ নেই। তাই আর কিছু বললো না চুপ থাকলো।
হাত ছাড়ুন আমার হাত ছাড়ুন কোন সাহসে আমার হাত ধরেছেন? আর আপনি নিশ্চয়ই খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত এ জন্যই আপনার হাতে বন্দুক আছে। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা শান্ত হও। দেখো তুমি আগে আমার পুরো কথা শুনো। ( সাজ্জাদ)
হাত ছাড়ুন আমার না হলে আমি এখন চিল্লানো শুরু করবো। ( আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। আদ্রিতার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বললো। হ্যাঁ আমি খারাপ কাজের সাথে জড়িত আর কিছু বলবো? যদি এই কথা তুমি তোমার বাসায় বলেছে তোমার বাসার সবাই কে শেষ করে দিবো। ( সাজ্জাদ)
কি করছিছ সাজ্জাদ ছাড় ওকে। (স্বাধীন)
তুই কোনো কথা বলিস না আমাকে বলতে দে। এই মেয়ে বুঝেছো বাসায় কাউকে আজকের ব্যাপারে কিছু বলবে না তাহলে তোমার আর তোমার পরিবারের শেষ দিন হবে। (সাজ্জাদ)
আর কিছু শুনতে পারছি না ভয়ে চোখ দিয়ে যেমন পানি পড়ছে আবার কোনো শব্দ ও বের হচ্ছে না মুখ থেকে। সারা শরীর যেন বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।
সাজ্জাদ আর কিছু বলার আগেই আদ্রিতা নিচে পড়ে যেতে নিলে সাজ্জাদ টান দিয়ে সাজ্জাদের সাথে মিশিয়ে নিলো।
জ্ঞান হারিয়েছে। (সাজ্জাদ)
তুই ওকে যেভাবে ভয় দেখিয়েছিছ জ্ঞান হারানোটা স্বাভাবিক। (স্বাধীন)
আদ্রিতাকে এইভাবে না বললে ও আজকে বাসায় এইসব ঘটনার ব্যাপারে বলে দিতো। এখন যেহেতু পরিবারের ব্যাপারে হুমকি দিয়েছি তাই ও কিছু বলবে না। কিন্তু আমাকে কতোটা ভয় পাচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। ( সাজ্জাদ)
ও কি কলেজে যাওয়ার জন্য বের হযেছিলো? এমনি ও কলেজের সময় প্রায় শেষ ওকে বাসায় দিয়ে আসি চল তারপর আমাদের একটু অফিসে যেতে হবে।(স্বাধীন)
ওকে তুই গাড়িতে গিয়ে উঠ আমি নিয়ে আসছি ওকে।
স্বাধীন গাড়িতে গিয়ে উঠলো।
সাজ্জাদ হাত দিয়ে একবার আদ্রিতার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে ওকে কোলে তুলে নিলো। আদ্রিতাকে গাড়ির পিছনের সিটে বসিয়ে দিলো সাজ্জাদ ও পিছনে বসলো। স্বাধীন গাড়ি চালাচ্ছে। আদ্রিতার এমনি জ্ঞান নেই তারপর গাড়ি চালানোর জন্য বার বার জানালার সাথে বাড়ি খাচ্ছে। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।
এটা দেখে স্বাধীন হেসে বললো, এতো যে ভালোবাসিস প্রকাশ করে দিলেই ত পারিছ।
আর কিছুদিন তারপর সারাজীবনের জন্য নিজের করে নিবো। (সাজ্জাদ)
কথাটি বলে দুই বন্ধু হেসে উঠলো। আদ্রিতার বাসার একটু আগেই গাড়ি থামিয়ে দিলো।
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ওর মুখে পানি ছিটানো শুরু করলো।
চোখ খুলে নিজের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করে বুঝতে পারলাম। আমি সাজ্জাদের বাহুতে আবদ্ধ। দ্রুত দূরে সরে গেলাম।
যা বলেছিলাম মনে থাকে যেনো। আজকের ঘটনাটি যেনো কেউ না জানে ( সাজ্জাদ)
আমি আচ্ছা বলে দ্রুত চলে আসলাম। সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। বুঝতে পারছে আদ্রিতা হয় তাকে অনেক ঘৃণা করছে অথবা তাকে অনেক ভয় পাচ্ছে।
সাজ্জাদ আর স্বাধীন চলে গেলো।
********
নওশিনের গ্রুপ কলেজে বসে আছে।
দোস্ত আর মাএ কয়েকদিন তারপর সাজ্জাদকে দেখতে পারবো। (নওশিন)
কিন্তু ওই আদ্রিতা সবসময় সাজ্জাদের কাছে ঘেঁষে থাকে। (রাইসা)
চিন্তা করিস না দরকার হলে অনুষ্ঠানের দিন আদ্রিতাকেই সরিয়ে দিবো। ( নওশিন)
কথাটি বলে নওশিনের গ্রুপের সবাই হেসে উঠলো।
******
আরিয়ান চিন্তা করছে, আদ্রিতাকে সকালে রাস্তায় দেখলো আবার সাজ্জাদ বললো ওকে কলেজে দিয়ে আসবে। তারপর আসলো না কেনো? সাজ্জাদের সাথে কোথায় গেলো?
******
আজকের ঘটনাটি কোনো ভাবেই ভুলতে পারছি না। সাজ্জাদ কি আসলেই খারাপ কোনো কাজের সাথে জড়িত? ফ্রেশ হযে কথাগুলো চিন্তা করছিলাম। ভাবলাম ফোনটা একটু চেক করি। ফোন চেক করে দেখলাম ২ টি মসেজ একটি কালকের নাম্বার থেকে
সেখানে বলা আছে, তোমাকে একদিন না দেখলে মনে হয় যেনো কতো বছর ধরে তোমাকে দেখি না। কলেজে আসো নি কেনো তুমি? তোমাকে না দেখলে আমার দিন ভালো যায় না।
মেসেজটি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। আমাকে এই ধরনের মেসেজ কে দিবে? আর কলেজে যায় নি এইটা সে কিভাবে জানলো।
২য় মেসেজটি চেক করে আরো অবাক হয়ে গেলাম সেখানে লেখা আছে,
মায়াপরী ভয়ার্ত চেহারায় তোমাকে অসাধারণ লাগে। ইচ্ছে করে টুপ করে খেয়ে ফেলি।
ইচ্ছে করছে ফোনটা ভেঙে দিতে কিন্তু কি করবো এ ফোন ভেঙে দিলে আমাকে ও ঘর থেকে বের করে দিবে। বল্ক ও করতে চাচ্ছি না। কে মেসেজ দিচ্ছে এইটা জানতে হবে।
#চলবে
[ সাজ্জাদ ত স্বাধীনের কাছে স্বীকার করলো আদ্রিতাকে ভালোবাসে এখন সবাই খুশি ত?🫣
২ টি মেসেজ কে কে করেছে? 🤷♀️ আর সাজ্জাদ কি আসলেই কোনো খারাপ কাজের সাথে জড়িত? ]