অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ১৪

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৪
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

কি বললি সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বড় বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে?(S.R)

হ্যাঁ, বস আমি শুনে নিজেই অবাক এতোদিন ত মনে করেছিলাম সাজ্জাদ হয়তো আদ্রিতাকে ভালোবাসে তাই হয়তো ওকে রক্ষা করে। এখন বুঝলাম এমনি মানবিকতার জন্য আদ্রিতাকে সাহায্য করেছে আর কিছু না।

তাহলে ভালোই হলো আদ্রিতার বোনকে বিয়ে করে নিক পরে আমি আদ্রিতাকে দেখে নিবো। শুন তুই সব সময় ওদের উপর নজর রাখ। (S.R)

ওকে বস।

তারপর S.R ফোনটি কেটে দিলো। সামিরার সাথে সাজ্জাদের বিয়ের কথা শুনে কিছুটা নিশ্চিন্ত হলো এখন।

******

১০ বছরের একটি মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে সাজ্জাদ। তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি তাই না? বিশ্বাস করো আমার হাত পা বাঁধা। উপায় নেই আর। সেদিন সন্ধ্যায় যদি তুমি না আসতে তাহলে আজকে এতো সমস্যার সৃষ্টি হতো না। S.R এর নজর তোমার উপর পড়তো না। তোমার থেকে এতো দূরে সরে যেতে হতো না আমার। চিন্তা করো না একটু কষ্ট করো আর কিছু দিন পর তোমাকে আমার নিজের করে নিবো। কিন্তু তুমি ত আমাকে খারাপ মনে করো? ভয় পাও অনেক।
কথা গুলো বলে সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

এমন সময় রুসে স্বাধীন প্রবেশ করলো,

দোস্ত তোদের বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। কালকে আদ্রিতাদের বাসায় পাঠিয়ে দিবো সকালে। যেভাবে বলেছিলি সেভাবেই কাজ হচ্ছে। আঙ্কেল আর আদ্রিতার বাবা সব কিছু জানে ত?(স্বাধীন)

হ্যাঁ আমার সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু মা আর আন্টিকে বলি নি কিছু। (সাজ্জাদ)

পরে ঝামেলা হলে? (স্বাধীন)

হবে না সব কিছু ঠিকঠাক হবে। আমার মনে হয় না আমার আর সামিরার বিয়েতে S.R এর লোক আসবে। যদি আদ্রিতার সাথে বিয়ে হতো তাহলে নিশ্চয়ই আসতো। ( সাজ্জাদ)

হ্যাঁ, আচ্ছা সেদিনের ঘটনার সাক্ষী একমাত্র আদ্রিতা। ওর মুখ থেকে একবার সব কথা বের করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। ( স্বাধীন)

আমি অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম বার বার আদ্রিতার আগের কথা মনে পড়লে সমস্যা হয়েছে। এজন্য ওকে বেশি চাপ দিচ্ছি না। আর S.R এখন কোথায় আছে তা যদি জানতে পারি তারপর আদ্রিতাকে জোর করে হলে ও সব কথা বলাতে হবে। সেদিন আদ্রিতা নিজ অজান্তেই অনেক বড় প্রমাণ নিয়ে নিয়েছিলো। সেদিন যখন ওদের বাসায় দাওয়াত ছিলো আমি দেখেছিলাম সোফার রুমে আদ্রিতার সেই ক্যামেরাটি রাখা আছে। আদ্রিতা অনেক যত্নশীল। আমার মনে হয় না আদ্রিতা আগের কোনো ছবি বা ভিডিও ডিলিট করেছে। এখন শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা। (সাজ্জাদ)

হ্যাঁ, দেখি কি হয়। চারটি জীবন কোনদিকে যাচ্ছে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমি ওদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি। সব কিছু ভালোই। ( স্বাধীন)

কার ব্যাপারে তোর অসময়ী বৃষ্টির ব্যাপারে?(সাজ্জাদ)

হ্যাঁ, দোস্ত ওই আর কি মা বাবাকে বলেছি তারা রাজি আছে। প্রথমে একটু আপওি করেছিলো পরে রাজি হযে গিয়েছে। ( স্বাধীন)

যাক ভালোই হয়েছে একদিকে চিন্তা মুক্ত। আদ্রিতার সাথে সেদিন যেই ছেলেটাকে দেখলাম তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলি? ( সাজ্জাদ)

হ্যাঁ, আদ্রিতা আলো তানহা আবির ওরা চারজন খুব ভালো ফ্রেন্ড। আর সেদিন তুই আবিরের সাথে আদ্রিতাকে দেখেছিলি। ( স্বাধীন)

ও আচ্ছা। ( সাজ্জাদ)

********

রাতের খাবার খেয়ে দির রুমে গেলাম।

কিরে এতো রাতে কিছু বলবি? ( সামিরা,)

দি আমার কেনো জানি ভয় লাগছে আজকে তোর সাথে ঘুমাবো। ( আদ্রিতা)

হ্যাঁ ঘুমা তোকে একটি প্রশ্ন করি? (সামিরা)

বল। (আদ্রিতা)

সাজ্জাদকে এখনো ভালোবাসিস? আমার সাথে বিয়ে হলে মেনে নিতে পারবি ত?

দি ঘুমা ভালো লাগছে না। কথাটি বলো শুয়ে পড়লাম।আজকে সাজ্জাদের যেই রূপ দেখেছি আমার শুধু তাকে ভয় লাগছে। সে কি আসলেই আমাকে তখন স্যুট করে দিতো?

আদ্রিতা কিছু বলছে না দেখে সামিরা আর কিছু বললো না।ঘুমিয়ে পড়লো।

*******

অসময়ী বৃষ্টির দেখা পাওয়ার জন্য স্বাধীন আবার রাতে এসেছিলো কিন্তু দেখা পায় নি। এক আকাশ পরিমাণ আফসোস নিয়ে ফিরে গেলো।

******

মায়াপরীর চিন্তায় একজনের মন টিকছে না। ইচ্ছে করছে এখনই গিয়ে মায়াপরীকে তার কাছে নিয়ে আসতে। কিন্তু এখন অধিকার নেই তার। সে মায়াপরীকে হালাল ভাবে তার কাছে টেনে নিতে চায়।

*******

নওশিনের হাতে সাজ্জাদের একটি ছবি। সাজ্জাদকে দেখার জন্য যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছে। আবার অন্য দিকে আদ্রিতার প্রতি নওশিনের রাগ বেড়ে যাচ্ছে।
ক্লাসে সর্বোচ্চ নাম্বার যেমন তুই ছিনিয়ে নিস তেমন ভাবে সাজ্জাদকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবি না তুই আদ্রিতা। কথাটি বলে আদ্রিতার একটি ছবি নিয়ে তা দুভাগ করে ফেলল।

সকালে ~

আদুরিরিরিরি (সামিরা)

দি আস্তে কি হয়েছে ঘুমাতে দে। অনেক ঘুম পাচ্ছে। (আদ্রিতা)

না ঘুম থেকে উঠ কলেজে যা তোর না কলেজে কিসের অনুষ্ঠান আছে? দায়িত্ব তোদের গ্রুপের আর তোরা কলেজে না গিয়ে বাসায় বসে থাকিস। যা কলেজে। (সামিরা)

উঠছি দি,( আদ্রিতা)

সামিরা আদ্রিতাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে চলে গেলো রুম থেকে।

আমি আবার ফোনে একটু বেশি আসক্ত। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম। ২য় নাম্বার থেকে আবার মেসেজ এসেছে,

মায়াপরী তোমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখার ইচ্ছেটা তীব্র হচ্ছে। খুব ভালোবাসি তোমাকে আমার পিচ্চি মায়াপরী।

মায়াপরী নামটা সুন্দর। কিন্তু আমাকে এই মেসেজটি কে দিতে পারে। একথা ভাবছিলাম। তখন ১ম নাম্বার থেকে আবার মেসেজ আসলো সেখানে লেখা,

আশা করি প্রিয় আজকে তুমি কলেজে আসবে।

কি একটা অবস্থা একজন আমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে চাচ্ছে আর একজন কলেজে দেখতে চাচ্ছে। যাই হোক ফোন রেখে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার জন্য বসলাম।

শুনলাম কয়েকদিন পর তোদের কলেজে নাকি কিসের অনুষ্ঠানে আছে সেখানে নাকি সাজ্জাদ আর স্বাধীন ও আসবে? ( আদ্রিতার বাবা)

হ্যাঁ বাবা। ( আদ্রিতা)

অনুষ্ঠানে ওদের কাছাকাছি থাকবি। তাদের যেকোনো দরকার হলে সহযোগিতা করবি। (আদ্রিতার বাবা)

ঠিক আছে বাবা। (আদ্রিতা)

আদ্রিতার মা শুনছো, সামিরার বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। (আদ্রিতার বাবা)

কই দেখি ত কার্ড কেমন হযেছে।( আদ্রিতার মা)

স্বাধীনের কাছে আছে পরে আমাদের পাঠিয়ে দিবে বলেছে। ( আদ্রিতার বাবা)

ঠিক আছে। (আদ্রিতার মা)

মা আমি কলেজে গেলাম। কথাটি বলে বেরিয়ে পড়লাম।

****কলেজে****

কলেজে আমি আর আলো প্রবেশের সময় রাইসা আর নওশিন আসলো। আমি ওদের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে নওশিন বলে উঠলো, খুব ত বড়লোকদের হাতে রাস্তায় খাচ্ছিছ ওদের জড়িয়ে ধরে রাখিছ লজ্জা করে না?

আমি কাকে জড়িয়ে ধরবো, কার হাতে খাবো এগুলো আমার ইচ্ছে। তোর এতো গায়ে লাগছে কেনো?
সমস্যা কি তোর। (আদ্রিতা)

সাজ্জাদকে ভালোবাসি আমি নেক্সট টাইম যদি সাজ্জাদের আশে পাশে তোকে দেখি তাহরে একদম শেষ করে দিবো তোকে কথাটি বলে নওশিন চলে গেলো। আমি আর আলো অবাক হয়ে গেলাম। সত্যি কি নওশিন ভালোবাসে সাজ্জাদকে নাকি আমার সাথে প্রতিযোগিতা? কিন্তু সাজ্জাদ ত আমাকে ভালোবাসে না।

*****ক্লাস রুমে****

ক্লাসে আমি আলো তানহা আবির বসে আছি।বাকি স্টুডেন্ট রাও আছে এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলেন।

তোমাদের অনুষ্ঠানের আর মাএ ৩ দিন বাকি আছে। এবারের প্রধান অতিথিদের জন্য আমরা গিফটের ব্যবস্থা করেছি সে জন্য আমার সাথে তোমাদের গিফট কিনতে যেতে হবে। আদ্রিতা তোমরা ৪ জন কলেজ ছুটির পরে আমার সাথে আসবে। আর এখন আদ্রিতা একটু আমার রুমে আসো। (আরিয়ান)

কিরে দোস্ত তোকে আবার আলাদা রুমে ডাকলো কেনো? কিছু চলছে নাকি তোদের মাঝে? ( আবির)

হুম আমার ও মনে হচ্ছে কিছু এটা চলছে। ( তানহা)

পাগল হয়ে গেছিছ নাকি তোরা। হয়তো কোনো কাজে ডেকেছে। তোরা বস আমি দেখে আসছি। আলো চল। তারপর আলোকে নিয়ে স্যারের রুমে গেলাম।

স্যার আসবো? (আদ্রিতা)

হ্যাঁ এসো। ( আরিয়ান)

আমি আর আলো রুমে আসলাম।

তোমাকে একা আসতে বলেছিলাম আলোকে নিয়ে না।
ওকে বাইরে যেতে বলো। (আরিয়ান স্যার)

ওকে স্যার (আদ্রিতা)

আলো বাইরে চলে আসলো।

*****

সাজ্জাদ আদ্রিতার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। দেখলো একসাথে আলো আর আদ্রিতা আরিয়ানের রুমে ঢুকছে। তাই সাজ্জাদ একটু দুরে দাঁড়িয়েই ওদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু যখন দেখলো আলো রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে আর আদ্রিতা রুমে একা সাজ্জাদের রাগ আর ও বেড়ে গেলো।

#চলবে

[ আরিয়ান স্যার আদ্রিতাকে একা রুমে ডেকেছে কেনো? আর এই নওশিনের কি করবো? 😤
সামিরার বিয়ের কার্ড কিন্তু ছাপানো হয়ে গেছে। 😌

গল্পটা কি এমনি লেখবো নাকি একটু রোমান্টিক ভাবে লেখবো? 🫣 আর রোমান্টিক ভাবে লেখলে কার সাথে কে রোমান্স করবে? 🤭 ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here