#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৫
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
স্যার কিছু বলবেন?( আদ্রিতা)
হ্যাঁ, কালকে তোমাকে দেখলাম সাজ্জাদের সাথে কলেজে আসবে বলে গাড়িতে উঠেছো। তারপর কলেজে আসো নি কেনো? ( আরিয়ান)
স্যার কলেজে আসতাম কিন্তু হঠাৎ রাস্তায় হঠাৎ শরীর দুর্বল লাগছিলো তাই সাজ্জাদ ভাইয়া বাসায় নিয়ে গিয়েছিলো। তাই আসতে পারি নি (আদ্রিতা)
তোমাকে আমি প্রায় সময় সাজ্জাদের সাথে দেখেছি। কার সাথে তুমি আসবে যাবে এইটা সম্পূর্ণ তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তুমি একা সাজ্জাদের সাথে আসা যাওয়া করো না তোমার সাথে আলো ও থাকে। সাজ্জাদ হয়তো তোমার বাবার বন্ধুর ছেলে কিন্তু তাই বলে কি তোমাদের কলেজ থেকে নিয়ে আসার বা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তার?এমন কিছু করো না যেনো আমাদের কলেজের সুনাম নষ্ট হয়। আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছো কি বলতে চাচ্ছি। (আরিয়ান)
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।আমি কার সাথে আসবো এইটা আমার ব্যাপার স্যার কেনো এ বিষয়ে কথা বলবে। শান্ত গলায় স্যারকে বললাম,
স্যার আমরা কার সাথে আসা যাওয়া করবো সেটা সম্পূর্ণ আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর এমন না যে আমার বাসায় জানে না যে আমি সাজ্জাদ ভাইয়ার সাথে এসেছি। আলোর পরিবার ও জানে। আর আমরা এমন কিছু করি নি যে কলেজের সুনাম নষ্ট হবে। (আদ্রিতা)
ওকে এখন যেতে পারো তুমি। (আরিয়ান)
আদ্রিতা রুম থেকে বাইরে চলে গেলো।
আরিয়ান বসে বসে ভাবতে লাগলো আদ্রিতাকে কিছু বলে লাভ নেই। সাজ্জাদের সাথে আসা যাওয়া করবেই। আনমনে বলে উঠলো,
আমি ত চাই না আমার প্রিয়তমা অন্যের সাথে যাওয়া আসা করুক। প্রিয়তমা তুমি কি বুঝতে পারো না আমি চাই না তুমি অন্য কারোর সাথে আসা যাওয়া করো। কতোবার ত আমি তোমাদের পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলাম তখন ত রাজি হলে না। তাহলে সাজ্জাদের সাথে কেনো যাও? আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
স্যারের রুম থেকে বের হবার পর হঠাৎ কেউ আমার হাত ধরে টান দিলো। তাকিয়ে দেখি সাজ্জাদ।
আপনি এইখানে? (আদ্রিতা)
এতোক্ষণ একা আরিয়ানের রুমে কেনো ছিলে?(সাজ্জাদ)
মেজাজা আর ও খারাপ হয়ে গেলো, সাজ্জাদের গাড়ি দিয়ে আসলে আরিয়ান স্যারের সমস্যা। আবার আরিয়ান স্যারের রুমে আসলে সাজ্জাদের সমস্যা। আমি যাবো কোথায়। সাজ্জাদের থেকে হাত ছাড়িয়ে তাকে বললাম,
কোন সাহসে আপনি আমার হাত ধরেছেন? নিজের লিমিটের মধ্যে থাকেন। ভুলে যাবেন না কয়েকদিন পর আপনার সাথে দির বিয়ে।
মুখে খুব কথা ফুটেছে দেখি। আমার সাথে এইভাবে কথা বলার সাহস কিভাবে পাও? তোমার সাহস দেখে অবাক হয় আমি। যাই হোক তোমার উপর সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে। তাই নেক্সট টাইম আমার কথার বাইরে একটা কাজ ও যেনো না দেখি।আশা করি বুঝতে পেরেছো। (সাজ্জাদ)
পাগল হয়ে গেছেন আপনি কিসের অধিকারের কথা বলছেন? আপনার আমার উপর অধিকার কেনো থাকবে? আপনার দির সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার সাথে না। ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা আর কিছু বলার আগেই সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে কলেজের বাইরে পেছনের মাঠে নিয়ে আসলো।সেখানে সচারাচর কেউ আসা যাওয়া করে না। এতো শক্ত করে সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত ধরেছে আদ্রিতা কোনোভাবে হাত ছাড়াতে পারছে না। মাঠের মধ্যে এনে আদ্রিতাকে ধাক্কা দিয়ে একটু দুরে সরিয়ে বললো। এখন বলো কি বলবে? কি যেনো বলছিলে আমার তোমার উপর অধিকার নেই? আমার কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার দিকে আগাতে লাগলো।
আদ্রিতা খেয়াল করলো সাজ্জাদের চোখগুলো রক্ত লাল হয়ে আছে। আদ্রিতা এক পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে।আদ্রিতা ভাবছে সাজ্জাদ হয়তো সেদিনের মতো আদ্রিতার মাথায় বন্দুক ঠেকাবে। কিন্তু আদ্রিতাকে অবাক করে দিয়ে,
সাজ্জাদ কেমন যেনো নেশাক্ত চোখে আদ্রিতার দিকে এগিয়ে আসছে আর তারপর সাজ্জাদ আদ্রিতার কোমর ধরে ওকে একটু উচু করে আদ্রিতার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।
সাজ্জাদের এমন কাজে আদ্রিতা বরফের মতো শক্ত হয়ে গেলো। যেন পুরো শরীর অবশ হয়ে আসছে। সাজ্জাদের থেকে দুরে সরতে চাইলে সাজ্জাদ আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ওকে
সাজ্জাদ নিজে ও যেনো আদ্রিতার নেশা থেকে মুক্ত হতে পারছে না। আর ও গভীর নেশায় পরে যাচ্ছে। পরে কি মনে করে যেনো হঠাৎ আদ্রিতাকে ছেড়ে দিলো। তারপর বললো অধিকারের কথা বললে পরের বার এর থেকে আর ও বেশি কিছু হয়ে যাবে।
আদ্রিতার থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজের মুখ মুছতে লাগলাম।
লজ্জা করে না আপনার? আমার বোনের সাথে বিয়ে ঠিক হওয়া শর্তে ও কিভাবে পারলেন আমার সাথে? ছিঃ ঘৃণা হচ্ছে আপনার উপর। ( আদ্রিতা)
এখনই ঘৃণা হচ্ছে আর ও কিছু করবো নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ এগিয়ে আসতে নিলে।
আর এক পা ও এগিয়ে আসলে আপনার সামনে নিজেকে শেষ করে দিবো। কোন সাহসে আপনি আমার শরীরে স্পর্শ করলেন? (আদ্রিতা)
বললাম না আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে তোমার উপর। (সাজ্জাদ)
ভুলে যাবেন না দির সাথে আপনার বিয়ে (আদ্রিতা)
কার সাথে কার বিয়ে হয় কে কার ভাগ্যে লেখা আছে তা ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে। এখন ক্লাসে যাও। চুপচাপ ক্লাস করবে কোনো ছেলের সাথে একা কোথাও যেনো না দেখি। (সাজ্জাদ)
সমানে চোখের জল পড়ছে যে মানুষটা কিছুদিন পর আমার বোনের স্বামী হবে সে কিভাবে এখন আমার সাথে এ কাজ করতে পারলো। আবার সেদিন আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালো। সাজ্জাদ কি আসলেই খারাপ কাজের সাথে জড়িত? (আদ্রিতা)
মাঠে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম। তখন সাজ্জাদ কাছে এসে নিজের সাথে জড়িয়ে আমার কানের সামনে নিজের মুখ এনে বললো, ম্যাডামের কি হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছে নেই? আমি আমার পদ্ধতিতে নিয়ে যাবো নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো।
ছাড়ুন আমাকে নামান আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। ছাড়ুনননননন (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ ওকে নামিয়ে দিলো। আদ্রিতা দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আদ্রিতা যাওয়ার পর সাজ্জাদ ও চলে গেলো। কিন্তু সেই এলাকার মধ্যেই আছে। কারন সাজ্জাদের কিছু কাজ রয়েছে এলাকাতে।
রুমে যাওয়ার আগে ভালো করে চোখ মুখ ধুয়ে নিলো।
এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? ( আলো)
স্যারের সাথে কথা বলে একটু ক্যানটিনে গিয়েছিলাম।(আদ্রিতা)
স্যার কি বললো তোকে? (আলো)
স্যার যা যা বলেছে সব আলোকে খুলে বললাম। সব শুনে আলো বললো,
সাজ্জাদের সাথে তোর একটা ভালো সম্পর্ক ছিলো আগে। আর তুই কার সাথে যাবি এইটার ব্যাপারে স্যার কেনো কথা বলবে। আবার আমাকে ও তোদের মধ্যে টেনেছে। (আলো)
এমন সময় তানহা আর আবির আসলো,
কিরে কোথায় ছিলি আর স্যার কি অনুষ্ঠানের ব্যাপার কিছু বলেছে? (আবির)
ওদের দু’জন কেও সব কিছু বললাম
দেখ আমার মনে হচ্ছে, স্যার চাচ্ছে না তোরা অন্য ছেলের সাথে ঘুরাঘুরি করিছ। বাই এনি চান্স তোদের মধ্যে কাউকে পছন্দ করে না ত? (আবির)
আবিরের কথা শুনে আমি আর আলো চমকে উঠলাম। আবিরের কথা ঠিক কিন্তু কাকে পছন্দ করতে পারে?
আরিয়ান স্যার রুমে আসলেন,
আদ্রিতা বাকি কাজ গুলো কি শেষ হয়েছে? বাকি কাজ গুলো সেরে তুমি আলো তানহা আবির আমার সাথে আসো গিফট কিনতে হবে।
আমরা বাকি কাজ গুলো সেরে স্যারের সাথে বেরিয়ে পড়লাম।
এতোক্ষণ সাজ্জাদের খবর হয়ে গেছে আদ্রিতা আরিয়ানের সাথে বাইরে গেছে। সাজ্জাদ ও সেই জায়গার জন্য রওনা হলো যেখানে আদ্রিতারা গিয়েছে।
#চলবে
[ আপনার একটু গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। বিশ্বাস করুন আপনাদের একটি গঠনমূলক কমেন্টে অনেক উৎসাহিত হয় আমরা।
সাজ্জাদ কেনো বললো কার সাথে কার বিয়ে হবে তা ভবিষ্যতে দেখা যাবে? আর আদ্রিতার উপর সাজ্জাদের কিসের অধিকার রয়েছে? ]