অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ১৬

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৬
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

স্যারের সাথে আমরা মার্কেটে পৌঁছে গেলাম।

আমি আর আবির যাচ্ছি গিফট কিনতে। আদ্রিতা আলো তানহা তোমরা ডেকোরেশন এর জন্য কিছু জিনিস কিনে নেও। (আরিয়ান)

ওকে স্যার (আলো)

তারপর আরিয়ান স্যার আর আবির চলে গেলেন। এইদিকে আমরা ডেকোরেশন এর জিনিস কিনছি।

*****

সাজ্জাদ যখন খবর পেয়েছে আদ্রিতা আরিয়ানের সাথে মার্কেট গিয়েছে তখন সাজ্জাদ ও মার্কেট ও প্রবেশ করেছে। কিন্তু সাজ্জাদ হুডি আর মাস্ক পরা। তাই হঠাৎ করে কেউ সাজ্জাদকে দেখলে চিনতে পারবে না।

*****

ডেকোরেশন এর জিনিস কিনা শেষ আগে থেকে লিস্ট করা ছিলো তাই বেশি সময় লাগে নি। কিন্তু আরিয়ান স্যার আর আবির এখনো আসে নি।

দোস্ত চল কোনো একটি দোকান থেকে ঘুরে আসি। (তানহা)

হ্যাঁ চল দেখ ঔই দোকানর জিনিস গুলো কতো সুন্দর। দেখে আসি একবার(আদ্রিতা)

কিন্তু টাকা আছে তোদের কাছে? (তানহা)

আরে পছন্দ করে আসি পরে না হয় একদিন এসে কিনে নেবো।চল যাই।(আদ্রিতা)

না না স্যার এখনই এসে পড়লে আমি যাবো না।(আলো)

আরে কিছু হবে না চল। এই কথা বলে আমরা ৩ জন একটি দোকানে গেলাম। দোকানটি বেশ বড়ো। চারদিকে বিভিন্ন রকমের গহনা, চুরি, কানের দুল, ড্রেস আর ও অনেক কিছু।

আদ্রিতা,তানহা,আলো দোকানে যাওয়ার পর সাজ্জাদ ও তাদের পিছনে গেলো। কিন্তু ততোক্ষণে মাস্ক খুলে ফেলেছে।

তাড়াতাড়ি চলো এতোক্ষণে মনে হয় ওদের ডেকোরেশনের জিনিস কেনা হয়ে গেছে। আমাদের জন্য হয়তো অপেক্ষা করছে। (আরিয়ান)

জ্বি স্যার। (আবির)

কি ব্যাপারে এই দোকানে ত ওরা নেই কোথায় গেলো?(আরিয়ান)

আবির একটু আশে পাশে তাকিয়ে বললো, স্যার ও ওই দেখুন অন্য দোকানে গিয়েছে। আমারা মনে হয় ওদের ডেকোরেশন এর জিনিস কেনা শেষ। তাই নিজেদের জন্য কিছু জিনিস কিনতে গিয়েছে। (আবির)

চলো আমরা ওইখানে যাই এখানে দাঁড়িয়ে থেকে কি করবো। (আরিয়ান)

আরিয়ান আর আবির আদ্রিতারা যেই দোকানে গিয়েছে সেই দোকানে ডুকেছে।

দোস্ত দেখ এই চুরিটা কতো সুন্দর (আদ্রিতা)

হ্যাঁ রে আমার ও অনেক পছন্দ হয়েছে। (আলো)

হ্যাঁ, ঠিক বলেছিছ সুন্দর অনেক। কিন্তু আমাদের কাছে ত এটা কিনার মতো টাকা নেই। (তানহা)

হ্যাঁ, এই চুরির সেটের দাম নাকি ২০০০।আমাদের কাছে এতো টাকা নেই। (আদ্রিতা)

আমার ত একটা ড্রেস ও পছন্দ হয়েছে কিন্তু টাকা নেই।কি করি আমরা (তানহা)

হ্যাঁ ওই লাল লেহেঙ্গাটা দেখ কতো সুন্দর। আমার অনেক ভালো লেগেছে। (আদ্রিতা)

ওই লেহেঙ্গাতে কিন্তু আদ্রিতাকে একদম বউ বউ লাগবে। কথাটি বলে আলো আর তানহা হেসে উঠলো। আদ্রিতা কিছুটা লজ্জা পেলো।

হয়েছে আর লজ্জা পেতে হবে না। এমনি ও কোনো একদিন এক রাজপুত্র এসে আমার বান্ধবীকে নিয়ে যাবে। (আলো)

অনেক হয়েছে থাম তোরা, না আমার কাছে টাকা আছে আর না কোনো রাজপুত্র আমার জীবনে আসবে। কিন্তু লেহেঙ্গাটা সুন্দর 🥲 দোস্ত কিনে দে লেহেঙ্গা(আদ্রিতা)

বিয়ে করে নেই জামাইের টাকা দিয়ে কিনে দিবো নি 🥲 লেহেঙ্গা ত আমার ও পছন্দ হয়েছে। (আলো)

হয়েছে আর স্বপ্ন দেখতে হবে না টাকা নেই আমাদের কাছে। (তানহা)

ওরা এতোক্ষণ খেয়াল করে নি পেছনে আবির আর আরিয়ান স্যার দাঁড়িয়ে আছে।

তানহার মাথায় বাড়ি মেরে টাকা নেই ত দোকানে এসেছিছ কেনো?(আবির)

উফফফ সব সময় বিরক্ত করিছ। (তানহা)

আমরা পিছনে তাকিয়ে দেখলাম। আরিয়ান স্যার দাঁড়িয়ে আছে।

তোমাদের কি আরো দেড়ি হবে? (আরিয়ান)

না স্যার এখনোই বের হবো। (আলো)

কথাটি বলে আমরা বের হতে নিলাম।

আরিয়ান একটু আমাদের সামনে এসে আবিরের হাতে গিফটের প্যাকেট দিয়ে বললো, তোমরা বাইরে গিয়ে দাঁড়াও আমার একটু কাজ আছে।

ওকে স্যার। কথাটি বলে আমরা ৪ জন বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম।

এতোক্ষণ সবার কথাই শুনছিলো সাজ্জাদ। আদ্রিতারা বাইরে যেতেই সাজ্জাদ দোকানের মালিককে বললো,

এই চুরির সেটটি প্যাকেট করে দিন (সাজ্জাদ)

আদ্রিতারা যাওয়ার পর আরিয়ান পিছনে ফিরে দেখলো, সাজ্জাদ সেই চুরির প্যাকেটটি কিনছে। এটি দেখে আরিয়ানের রাগ বেড়ে গেলো। নিজের রাগ সংযত রেখে বললো,

আরে সাজ্জাদ তুই?(আরিয়ান)

হ্যাঁ, একটু কেনাকাটা করতে এসেছিলাম। (সাজ্জাদ)

ও আচ্ছা, কিন্তু চুরি কেনো রে দোস্ত প্রেমে পরেছিছ নাকি? (আরিয়ান)

সাজ্জাদ কথাটি শুনে হেসে বললো, হ্যাঁ ধরে নে এরকম কিছুই।

আরিয়ান দোকানের মালিককে বললো, এরকম আর একটি চুরির সেট প্যাকেট করে দিন।

সাজ্জাদ বুঝতে পারলো, ওরা এইটি পছন্দ করেছে দেখেই আরিয়ান চুরির সেটটি কিনছে। সাজ্জাদ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে রেখে বললো,

তুই কার জন্য চুরি কিনলি? (সাজ্জাদ)

আমার প্রিয়তমার জন্য। (আরিয়ান)

নাম কি তোর প্রিয়তমার? (সাজ্জাদ)

সময় হলে জেনে যাবি। অদ্ভুত না দেখ আমাদের দু’জনের পছন্দের মানুষের জন্য একই রকমেন চুরি কিনলাম। (আরিয়ান)

সাজ্জাদ মুচকি হাসলো। লাল রঙের লেহেঙ্গা দেখিয়ে বললো এইটি ও প্যাক করে দিন সাথে একটি হিজাব দিবেন। আর ও কিছু কসমেটিকস দেখিয়ে বললো প্যাক করে দিন। (সাজ্জাদ)

তোর আর আমার প্রিয়তমার পছন্দ যেহেতু এক। তুই যা যা কিনেছিছ আমি ও সেগুলো কিনে নেই।আশা করি আমার প্রিয়তমা ও খুশি হবে। (আরিয়ান)

কথাটি বলে সাজ্জাদ যা যা কিনেছে আরিয়ান ও সেগুলো দেখিয়ে বললো প্যাক করে দিতে। ব্যাপারটা সাজ্জাদের পছন্দ হলো না। কিন্তু কিছু বলার ও নেই।

আরিয়ান মার্কেট থেকে বেরিয়ে গেলো। আরিয়ান বের হওয়ার কতক্ষণ পর সাজ্জাদ দোকান থেকে বেরলো কিন্তু মার্কেট থেকে পরে বের হবে। সাজ্জাদ চাচ্ছে না আদ্রিতার সাথে এখন দেখা হোক।

সরি সরি একটু বেশি ক্ষন দাঁড় করয়ে রেখিছি তোমাদের। (আরিয়ান)

না স্যার সমস্যা নেই। (তানহা)

আরিয়ান স্যারের হাতে ব্যাগটি আদ্রিতা খেয়াল করলো। কিন্তু কিছু বললো না। সবাই বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হলো।

অন্যদিকে ~

ইউনিভার্সিটির ক্লাস শেষে সামিরা দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য। তপ্ত দুপুরে ক্লান্ত চেহারায় অসাধারণ লাগছে সামিরাকে।

হেই সামিরা, (স্বাধীন)

হঠাৎ পিছন থেকে ডাক শুনে কিছুটা চমকে উঠলো সামিরা। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে জবাব দিলো, হাই।

এই দুপুরে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে? (স্বাধীন)

বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। (সামিরা)

ও আচ্ছা, বিয়ে করে নিন তাহলে আপনার হাসবেন্ডই সব জায়গায় আপনাকে নিয়ে আসা যাওয়া করবে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।(স্বাধীন)

সামিরা কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললো, আপনি বিয়ে করলে বুঝি আপনার বউকে সব জায়গায় নিয়ে যাবেন? একা ছাড়বেন না? (সামিরা)

আমার বউকে আমি একা ছাড়ি ও না। (স্বাধীন)

কি? আপনার বউ আছে? (সামিরা)

না মানে মেয়ের বাসায় কথা বলা আছে। এখন সঠিক সময়ের অপেক্ষা। (স্বাধীন)

কেনো জানি সামিরার স্বাধীনের বিয়ের বিষয়টা ভালো লাগছে না। সেদিন পার্কে অনেকটা সময় একসাথে কাটানোর পর স্বাধীনের প্রতি পজিটিভ ধারণা তৈরি হয়েছে।

ভালো ত, তাহলে যান আপনার বউকে আনা নেওয়া করুন। আমাকে বিরক্ত করবেন না। কথাটি বলে সামিরা চলে গেলো।

যাক বাবা রেগে হেলো কেনো। স্বাধীন একা একা কি করবে সেও চলে গেলো।

*****
আরিয়ান প্যাকেটটি নিজের আলমারিতে রেখে দিলো আনমনে বলে উঠলো, প্রিয়তমা তোমার বাসার ঠিকানা আমার কাছে নেই।চাইলে আমি কলেজ থেকে তোমার ঠিকানা নিতে পারি। কিন্তু আমি চাই বিয়ের পর নিজ হাতে তোমাকে এই গিফটটা দিবো।

****আদ্রিতার বাসায় ~

আদুরি পড়তে বস। (সামিরা)

দি পড়ে টিভি দেখতেছি। তুই পড়তে যা। (আদ্রিতা)

আমি আর দি সোফার রুমে বসে আছি। আমি টিভি দেখতে চাচ্ছি আর দি পড়তে বসতে বলছে। এমন সময় হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো

#চলবে

[ আরিয়ান সাজ্জাদ দু’জনই লেহেঙ্গা কিনলো দেখা যাক কে কার জন্য কিনেছে 🤷‍♀️ দেখা যাক কে এই লেহেঙ্গা পড়ে। আর স্বাধীনের বিয়ে কার সাথে ঠিক করা আছে?

যাই হোক লাল লেহেঙ্গা পড়ে আদ্রিতার পাশে কাকে মানাবে? 🙈 সাজ্জাদ, স্বাধীন ভাইয়া নাকি আরিয়ান স্যার?]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here