#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৩
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
আদ্রিতা ঘুমাচ্ছে তখন আদ্রিতার রুমে কেউ প্রবেশ করলো এমন ভাবে আসলো যেনে আদ্রিতার ঘুম না ভেঙে যায়। আদ্রিতার রুমে চুপি চুপি আলো প্রবেশ করেছে। হাতে বেলুন আছে। আদ্রিতার সামনে গিয়ে বেলুন ফাটিয়ে দিলো।
বোম ও আল্লাহ বাসায় কে জানে বোম মেরেছে।(আদ্রিতা)
আলো উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। আদ্রিতা বুঝতে পারলো আসলে কি হয়েছিলো এখানে।
এই তুই আমার রুমে কি করিছ? আর আমার ঘুম নষ্ট করলি কেন? (আদ্রিতা)
কলেজে ৭টায় যাওয়ার কথা এখন ৬.১৫ বাজে আর তুই এখনো ঘুমাচ্ছিলি। (আলো)
হায় আল্লাহ এতো দেরি হয়ে গেছে আগে ডাকবি না?আগে আসলি ন্ কেনো? (আদ্রিতা)
বাহ মাএই বলছিলি কেনো তোর রুমে আসলাম আর এখন বলে চলেছিছ আগে কেনো আসলাম না।(আলো)
হয়েছে চুপ থাক তুই বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। এই বলে আদ্রিতা রুম থেকে চলে গেলো। আলো রুমে বসে বসে ফোন ব্যবহার শুরু করে দিলো।
*********
আরিয়ান আরো আগেই কলেজে পৌঁছে গেছে অপেক্ষা করছে তার ভালোবাসার মানুষটির জন্য। যেহেতু আজকে অনুষ্ঠান সবাই একটু পরিপাটি ভাবে আসবে। আরিয়ান নিজে ও সাদা সার্ট পড়েছে। ফরমাল ড্রেসে অসাধারণ লাগছে তাকে। অনেক স্টুডেন্টই যেনো তার উপর ক্রাশ খেয়েছে এমন অবস্থা। শুধু সে যাকে পছন্দ করে তার মনে আরিয়ানের প্রতি কোনো অনুভূতি দেখলো না আরিয়ান। আসলেই কি অনুভূতি নেই। নাকি আরিয়ানের ভালোবাসার মানুষটি নিজে ও জানে না যে আরিয়ানের প্রতি তার এক #অজানা_অনুভূতি রয়েছে।
*****আদ্রিতার বাসায়****
আদ্রিতা চুল মুছতে মুছতে রুমে আসলো। মাএ গোসল করেছে।
কিরে তুই এখনো রেডি হোস নি কেনো? (আদ্রিতা)
আদ্রিতার কথা শুনে আলো আবার ও হেঁসে উঠলো। ঘড়িতে একবার সময় ত দেখ। (আলো)
আদ্রিতা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো মাএ ৫.৩০ বাজে। তখন আলো সময় বলেছিলো আর আদ্রিতাও বিশ্বাস করে নিয়েছিলো। আদ্রিতার হাতের কাপড়টি আলোর দিকে ছুঁড়ে মারলো।
আমার ঘুম নষ্ট করলি কেন তুই? (আদ্রিতা)
যা করার করেছি চল রেডি হয় এমনি ও রেডি হতে সময় লাগবে। (আলো)
আলো আলোর সব জিনিসপত্র ব্যাগে নিয়ে এসেছে। এখান থেকে রেডি হয়ে একসাথে বের হবে।
আলো আর আদ্রিতা দু’জনই শাড়ি পরে নিলো। আলো সাদার উপর গোলাপি কাজ করা এমন শাড়ি পড়েছে।
আর আদ্রিতা সাজ্জাদের দেওয়া শাড়িটি পড়েছে। আদ্রিতার ফর্সা গায়ে কালো শাড়িটি অনেক মানিয়েছে। তার উপর গোল্ডেন কাজ করা। অনেক ভালো লাগছে আদ্রিতাকে।
দোস্ত তোকে দেখলে ত আজ যে কেউ ক্রাশ খাবে। (আলো)
হয়েছে আর বাজে বকতে হবে না। (আদ্রিতা)
না সত্যি বলছি। হিজাব পড়বি নাসি চুল খোলা রাখবি?(আলো)
না হিজাব পড়বো।(আদ্রিতা)
আচ্ছা তাহলে আমি ও হিজাব পড়বো। (আলো)
আচ্ছা এই শাড়িটি ত আগে দেখলাম না। তুই এই শাড়ি কবে কিনলি? (আলো)
কালকে। (আদ্রিতা)
ও কালকে ত তোকে সাজ্জাদ ভাইয়া নিয়ে গেলো। হাইইই কি রোমান্টিক মোমেন্ট ছিলো। (আলো)
দূর কি যে বলিছ ( আদ্রিতা)
ও আচ্ছা লজ্জা পাওয়া হচ্ছে নাকি কথাটি বলে আলো হেসে উঠলো। আচ্ছা আগে এটা বল শাড়িটা কে কিনে দিয়েছে? ( আলো)
যে কালকে নিয়ে গিয়েছিলো সেই কিনে দিয়েছে। কথাটি বলে আদ্রিতা মুচকি হাসলো।
কিকিকিকি তার মানে সাজ্জাদ ভাইয়া তোকে শাড়ি কিনে দিয়েছে? (আলো)
হুম। (আদ্রিতা)
বাহ ভালোই ত প্রেম করে যাচ্ছিছ। (আলো)
আদ্রিতা আর কিছু বললো না।
আমাকে যে কবে কেউ ভালোবাসবে আর আমাকে ও সাথে নিয়ে ঘুরাঘুরি করবে। (আলো)
দেখ এমন ও হতে পারে কেউ তোকে ডুবে ডুবে ভালোবাসে। (আদ্রিতা)
আলো হেসে উঠলো না রে আমার ভাগ্য এতো ভালো না আজ পর্যন্ত একটি প্রপোজ ও পেলাম না। (আলো)
হয়তো সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব পাবি। (আদ্রিতা)
হুম বিয়ের পর প্রেম করবো (আলো)
পছন্দ আছে নাকি কাউকে? (আদ্রিতা)
না পছন্দ নেই। (আলো)
আচ্ছা বাদ দে রেডি হয়ে নে তাড়াতাড়ি। (আদ্রিতা)
আদ্রিতা আর আলো রেডি হওয়া শুরু করলো।
********
কালকে সারাদিন আদ্রিতার সাথে ঘুরার ফলে দিনে কোনো কাজ করতে পারে নি সাজ্জাদ। সারা রাত কাজ করে এখন ঘুমাচ্ছে। সাজ্জাদ যেনো ভুলেই গিয়েছিলো আজ আদ্রিতার কলেজে যেতে হবে। সাজ্জাদের বাসায় স্বাধীন আসলো দু’জন একসাথেই কলেজে যাবে।
তুই এখনো ঘুমে? ঘুম থেকে উঠ (স্বাধীন)
সাজ্জাদ ঘুমঘুম চোখে বললো, কালকে রাতে সব কাজ করেছি চেক করে দেখ। (সাজ্জাদ)
আরে কাজের জন্য ডাকছি না। কলেজের অনুষ্ঠানে যেতে হবে তাই ডাকছি। (স্বাধীন)
সাজ্জাদ বসে পড়লো সে ভুলেই গিয়েছিলো কলেজে যাওয়ার কথা।
ভুলো গেছিলি অনুষ্ঠানের কথা? (স্বাধীন)
হুম (সাজ্জাদ)
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে আমি কিন্তু রেডি। (স্বাধীন)
স্বাধীন নীল কালারের ব্লেজার পড়েছে। স্বাধীনকে ও যেনো এক কথায় অসাধারণ লাগছে।
সাজ্জাদ উঠে রেডি হতে চলে গেলো।
********
আলো আর আদ্রিতা রেডি হয়ে গেছে।
এই দাঁড়া দি ও যাবে আমাদের সাথে। (আদ্রিতা)
যা আপুকে ডেকে আন। (আলো)
ওকে (আদ্রিতা)
আদ্রিতা সামিরাকে ডাকতে চলে গেলো। আদ্রিতা সামিরার রুমে যাচ্ছে এমন সময় ওর ফোনে মেসেজ আসলো সেখানে লেখা,
প্রিয়তমা সেই সকাল থেকে তোমাকে দেখার জন্য ছটফট করছি। কখন আসবে তুমি? তুমি কি বোঝতে পারো না আমার শুধু তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করে। কখন আসবে তুমি?
আদ্রিতা বুঝতে পারছে না সে কলেজে অনুষ্ঠানে যাবে এইটা এই মেসেজ দেওয়া ব্যক্তিটি কিভাবে জানতে পারলো। আদ্রিতা মেসেজটি দেখে কিছু বললো না। আদ্রিতার জানতে হবে কে এই মেসেজ গুলো দিচ্ছে।
দি তুই এখনো রেডি হস নি? (আদ্রিতা)
না মানে এখনো ত রেডি হয় নি আমি। (সামিরা)
আমাদের ত প্রধান অতিথি আসার আগে কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে। তোর রেডি হতে ত অনেক সময় লাগবে আমরা কি বেরিয়ে যাবো? তুই পরে আসতে পারবি? ( আদ্রিতা)
হ্যাঁ, তোরা চলে যা আমি পরে আসবো। (সামিরা)
আচ্ছা দি আমরা তাহলে বের হয়ে গেলাম। (আদ্রিতা)
আচ্ছা সাবধানে যা। (সামিরা)
আদ্রিতা আর আলো বাসা থেকে বের হয়ে গেছে।
সামিরার অস্থির লাগছে। কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। যাওয়া ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছে না। কিন্তু এই অবাধ্য মনটা বার বার যেতে চাচ্ছে। সিদ্ধান্ত নিলো যাবে কলেজে। সামিরা নিজে ও জানে না এই #অজানা_অনুভূতি মানে কি?
*********
বস আদ্রিতা বেরিয়ে গেছে সাথে একটি মেয়ে ও আছে।মেয়ের নাম আলো আদ্রিতার বেস্টফ্রেন্ড (S.R এর লোক)
এই তোকে না কতোবার বলেছি আদ্রিতা ডাকবি না মেডাম বলে ডাকবি। (S.R)
সরি বস ভুল হয়ে গেছে। মেডাম বের হয়ে গেছে বাসা থেকে। (S.R এর লোক)
যেহেতু সাজ্জাদ ও কলেজে আসবে তাই তুই ও কলেজে যা। দেখ কি হয় কলেজে (S.R)
ওকে বস। (S.R এর লোক)
S.R ফোনটি কেটে দিলো। ওই লোকটি আদ্রিতা আর আলোর পিছু নিলো।
*********
সাজ্জাদ ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে নিলো।
কি ভাবছিছ এতো? (সাজ্জাদ)
অসময়ী বৃষ্টির কথা। (স্বাধীন)
আজকে আসতে ও পারে। (সাজ্জাদ)
মনে হয় না আসবে। (স্বাধীন)
আমার মহারাণী ত আসবেই। (সাজ্জাদ)
বাহ মহারাণী হয়ে গেছে? (স্বাধীন)
সাজ্জাদ হাসলো।একবার বিয়েটা হতে দে বিয়ের পর মহারাণী করেই রাখবো। (সাজ্জাদ)
এখন দেখি ও ছাড়া কারোর কথাই ভাবতে পারিছ না। (স্বাধীন)
আগে ও ভাবতে পারতাম না। মুধু পরিস্থিতির শিকার। পিচ্চি মেয়েটি অজান্তেই নিজের জায়গা আমার মনে করে দিয়েছে। ( সাজ্জাদ)
স্বাধীন হাসলো, সে চিনে তার বন্ধুকে মেয়েটির জন্য নিজের প্রাণ দিতে ও দ্বিধাবোধ করবে না।
******
আদ্রিতা আর আলো কলেজের গেইটের সামনে নামলো। আদ্রিতা কলেজের সামনে যাদের দেখলো তাদের দেখে ভয়ে আলোর হাত খামছে ধরলো।
#চলবে
[ আদ্রিতা কি দেখে ভয় পেলো?
অনুষ্ঠানে সাজ্জাদের সাথে আদ্রতার কি রকম মুহূর্ত চান? ]