#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২২
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে বাসে উঠে গেলো। আদ্রিতা স্বস্তির শ্বাস ফেললো। যতক্ষণ বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলো ততক্ষণে ওই ছেলেরাও সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো আদ্রিতার বিষয়টি ভালো লাগছিলো না। যদি ও সাজ্জাদ ছিলো বলে এতো ভয় লাগে নি।
খারাপ লাগছে নাকি তোমার?(সাজ্জাদ)
না ক্লান্ত লাগছে। (আদ্রিতা)
হুম। সারাদিন অনেক ঘুরাঘুরি করেছো তাই। (সাজ্জাদ)
আপনি ত আমাকে নিয়ে ঘুরলেন। আমি নিজে থেকে বলেছিলাম নাকি ঘুরতে। (আদ্রিতা)
হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না। (সাজ্জাদ)
আচ্ছা আপনার কাছে বন্দুক থাকে কেনো বললেন না কেনো? (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ আর কিছু বললো না। আদ্রিতা বুঝতে পারে জিজ্ঞেস করে ও লাভ নেই উওর পাবে না। তাই আদ্রিতাও আর কিছু জিজ্ঞেস করে নি। কতক্ষণ পর আদ্রিতা জানালায় মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো। সাজ্জাদ এটি লক্ষ্য করে আদ্রিতার মাথা নিজের কাঁধে রেখে দিলো।
********
বস কয়েকদিন গ্রামে গিয়েছিলাম আদ্রিতা কোথায় আছে এখন বলতে পারছি না। (S.R এর লোক)
তোকে বলেছিলাম ওর সব খবর আমাকে দিতে আর তুই এতোদিন ধরে ওর খবর আমাকে দেস নি। ও কার সাথে ঘুরছে কি করছে আমার সব ডিটেইলস চাই। কবে পাবো সব খবর? (S.R)
বস আপনি টেনশন নিবেন না। এমনি ও সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাই টেনশন করতে হবে না সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতা থাকবে না। আর বস একটি খবর পেয়েছি কালকে আদ্রিতা কলেজে অনুষ্ঠান আছে সেখানে নাকি সাজ্জাদ প্রধান অতিথি ( S.R এর লোক)
কি সাজ্জাদ আসবে? তাহলে তুই একটি কাজ কর তুই ও কালকে কলেজে যা। কলেজে কি কি হয় তার সব ডিটেইলস আমার চাই।কোনো খবর যেনো মিস না হয়। নাহলে কিন্তু তোর অবস্থা খারাপ হযে যাবে। ( S.R)
ওকে বস (S.R এর লোক)
তারপর S.R ফোনটি কেটে দিলো।
******
আদ্রিতা উঠো এসে পড়েছি আমরা। (সাজ্জাদ)
আদ্রিতার তখন ও ঘুম ঘুম চোখ কোনোভাবে একটু তাকিয়ে বললো কই এসেছে?
সাজ্জাদ বুঝলো যা বলছে ঘুমের মধ্যে। সাজ্জাদের মাথায় একটু দুষ্ট বুদ্ধি কাজ করলো সে একজনের থেকে পানি নিয়ে আদ্রিতার মুখের উপর পানি মারলো।
আদ্রিতার ঘুম ভেঙে গেলো এই ঠান্ডার মধ্যে পানি মেরেছে দেখে রেগে বললো, এই কে কোন সাহসে আমাকে পানি মারলো? (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ হেসে উঠলো। আদ্রিতার বুঝতে বাকি নেই এ কাজ কে করেছে। সাজ্জাদ আর আদ্রিতা নেমে গেলো। সাজ্জাদ আদ্রিতাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো।
****আদ্রিতার বাসায় *****
এতো লেইট কেনো হয়েছে? (আদ্রিতার মা)
মা একটু মার্কেটে গিয়েছিলাম এই জন্য।(আদ্রিতা)
আচ্ছা রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নে। (আদ্রিতার মা)
আচ্ছা (আদ্রিতা)
আদ্রিতা রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়ে নিলো। রাতে ডিনার সেরে সামিরার রুমে আসলো।
দি (আদ্রিতা)
হ্যাঁ বল (সামিরা)
কালকে আমার সাথে কলেজে যাবি? (আদ্রিতা)
না আমার ইউনিভার্সিটি যেতে হবে। ( সামিরা)
ও জানো কালকে প্রধান অতিথি হিসেবে সাজ্জাদ ও আসবে। (আদ্রিতা)
হ্যাঁ শুনেছি। (সামিরা)
ভালোই হবে ভাইয়া থাকলে মজা হয় অনেক।(আদ্রিতা)
তুই আবার সাজ্জাদকে কবে থেকে ভাইয়া বলে ডাকিছ? (সামিরা)
আরে সাজ্জাদকে না স্বাধীন ভাইয়া ও আসবে। আর স্বাধীন ভাইয়া অনেক হাসিখুশি মানুষ। তাই বললাম ভাইয়া থাকলে মজা হয় অনেক। (আদ্রিতা)
স্বাধীন ও আসবে? (সামিরা)
হ্যাঁ সাজ্জাদ আর স্বাধীন ভাইয়া দু’জনি প্রধান অতিথি। দু’জন একসাথেই আসবে। (আদ্রিতা)
সামিরা আর কিছু বললো না কিছু একটা ভাবছে।
এই দি কিছু বল (আদ্রিতা)
তুই কি একা যাবি? (সামিরা)
না আলো আসতে পারে ঠিক নেই। কেনো? (আদ্রিতা)
আমি ও যাবো তোর সাথে (সামিরা)
তুই না একটু আগে বললি তোর ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস আছে। (আদ্রিতা)
হ্যাঁ ত কি হয়েছে তখন বলেছি যাবো না এখন বলছি যাবো। কেনো তোর কোনো সমস্যা? (সাসিরা)
আরে আমার সমস্যা কেনো হবে আমি নিজেই ত তোকে বললাম যেতে। (আদ্রিতা)
তাহলে আর কি আমি ও যাবো। (সামিরা)
কোন ড্রেস পড়বি? (আদ্রিতা)
সামিরা কিছুক্ষণ ভেবে বললো নীল শাড়ি আর তুই কি পড়বি? (সামিরা)
কালো শাড়ি পড়বো আজকেই কিনেছি। (আদ্রিতা)
ও আচ্ছা। (সামিরা)
হ্যাঁ দেখবি শাড়িটা?(আদ্রিতা)
না কালকেই দেখে নিবো। এখন রুম থেকে যা আমি পড়তে বসবো। (সামিরা)
ওকে দি (আদ্রিতা)
কথাটি বলে আদ্রিতা রুম থেকে বের হয়ে গেলো। সামিরার অস্থির লাগছে নিজে ও বুঝতে পারছে না কি চাচ্ছে সামিরা।
********
মিম দেশে ফিরেছে। (সাজ্জাদ)
হুম শুনলাম। (স্বাধীন)
ও সব খবর এনেছে? (সাজ্জাদ)
না সব খবর পায় নি। শুনেছি কিছুদিন আগে মেয়ে প্রাচার করার কথা ছিলো। আর সামনের মাসে S.R দেশে আসবে। (স্বাধীন)
মিমকে বল আমার বিয়ে পর্যন্ত থেকে যেতে। (সাজ্জাদ)
হুম থাকবে সেদিন পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে কিছু বোঝা যাচ্ছে না। (স্বাধীন)
কেনো S.R দেশে কবে আসবে? (সাজ্জাদ)
ডিসেম্বরের ৬ তারিখ। (স্বাধীন)
আর ৭ তারিখ বিয়ে। সমস্যা হবে না সব দিক চিন্তা করেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কালকে সামিরার সাথে কথা ভলতে হবে। (সাজ্জাদ)
কি বলবি? (স্বাধীন)
যা ঘটতে চলেছে সেই ব্যাপারে একটু ধারণা দিয়ে দিবো। (সাজ্জাদ)
কালকে আদ্রিতার কলেজে যেতে হবে। (স্বাধীন)
হ্যাঁ জানি। (সাজ্জাদ)
যাই হোক আজকে সারাদিন কোথায় ছিলি?(স্বাধীন)
কোথায় আবার অফিসে। (সাজ্জাদ)
একদম মিথ্যে বলবি না অফিসে তুই ছিলি না। আমি অফিসে এসে দেখেছি তুই ছিলি না খোঁজ নিযে জানতে পারলাম আমি বের হওয়ার একটু পরই নাকি তুই বের হয়ে গিয়েছিলি। কোথায় ছিলি? (স্বাধীন)
আদ্রিতার সাথে ছিলাম। (সাজ্জাদ)
কি সারাদিন তুই কি আদ্রিতার সাথে ছিলি নাকি?(স্বাধীন)
হুম। (সাজ্জাদ)
বাহ আমাকে ঢাকার বাইরে পাঠিয়ে নিজে ত ভালোই ঘুরলি। (স্বাধীন)
বিয়ের পর বউ নিয়ে ঘুরিছ।(সাজ্জাদ)
হুম একবার বিয়েটা করে নেই তারপর দেখবি তোর থেকে বেশি ঘুরবো। কিন্তু তুই ত বিয়ে না করেই ঘুরতেছছ।(স্বাধীন)
সাজ্জাদ কিছু বললো না শুধু হাসলো।
******
তুই কিছু ঠিক করেছিছ কালকে কি করবি?( রাইসা)
অবশ্যই কালকেই দেখবি আদ্রিতার শেষ দিন।এমন কাজ করবো সাজ্জাদ ঘৃণা ছাড়া কখনো আর আদ্রিতার দিকে তাকাবে না। (নওশিন)
বেশি খারাপ কিছু করিছ না পরে আমাদের দোষ আসলে কলেজে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। যা করবি ভেবে চিন্তে করিছ। (রাইসা)
ওকে কথাটি বলে নওশিন ফোন কেটে দিলো।
******
আদ্রিতা রুমে এসে সাজ্জাদের দেওয়া শাড়িটি খুললো। মুচকি হাসলো সাজ্জাদের চয়েস আছে বলতে হবে। কালোর উপর গোল্ডেন কাজ অনেক ভালো লাগছে আদ্রিতার কাছে। আদ্রিতা শাড়িটা একবার জড়িয়ে ধরলো অনেক শান্তি লাগছে আদ্রিতার কাছে। আদ্রিতা সব কিছু গুছিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল ~
আদ্রিতা ঘুমাচ্ছে তখন আদ্রিতার রুমে কেউ প্রবেশ করলো এমন ভাবে আসলো যেনো আদ্রিতার ঘুম না ভেঙে যায়।
#চলবে
[ সামিরা হঠাৎ অনুষ্ঠানে যেতে কেনো রাজি হলো? নওশিন কি ঠিক করেছে? আদ্রিতার রুমে কে প্রবেশ করলো? ]