অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ২৭ #লেখিকাঃ আদ্রিতা খান

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৭
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

ছেলেটি আদ্রিতার শাড়ির আঁচলে হাত দিতে নিলো আর ঠিক তখনই কেউ দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করলো।

এই কে ভিতরে আসলি? একটি ছেলে বলে উঠলো।

আদ্রিতার মনে কিছুটা হলে ও আশার আলো দেখা দিলো।

হঠাৎ সেই আগন্তুক ছেলেটি রুমের ভিতরে থাকা ছেলেগুলোর উপর গুলি চালিয়ে দিলো। সাথে সাথে ওরা দু’জন মারা গেলো।

এমন ঘটনার জন্য আদ্রিতা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। আকস্মিক এমন ঘটনায় আদ্রিতার মুখ থেকে কোনো শব্দ ও বের হলো না। আদ্রিতার দু’পাশে এখন দু’টি লা*শ। আদ্রিতা ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।

********

সাজ্জাদ আর বাকিরা বিভিন্ন রুমে আদ্রিতাকে খুঁজে চলেছিলো। হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে সাজ্জাদের পা যেন বরফের ন্যায় জমে যায়। সাজ্জাদ নিজেই কতোবার বন্দুক ব্যবহার করেছে তার ঠিক নেই। কিন্তু এখন ভয় পাচ্ছে। একটি ভয় আদ্রিতাকে হারিয়ে ফেললো নাকি। আলো, তানহা আবির ওরা ও ভয় পেয়ে যায়। আরিয়ান স্যার ও শব্দটি শুনে। কলেজে এরকম শব্দের জন্য মোটেও কেউ প্রস্তুত ছিলো না। যেই রুম থেক৷ শব্দটি আসে সেই রুমের দিকে সবাই দ্রুত এগিয়ে যায়। সাজ্জাদ দ্রুত সেই রুমের দিকে যাওয়া শুরু করলো। কলেজের বাকিরা ও ভয় পেয়ে গেলো৷

********

সাজ্জাদ রুমে ঢুকে দেখতে পারে, আদ্রিতার বিধ্বস্ত দেহটি নিচে পড়ে আছে। হাত কাঁচের চুড়ি গুলো ভেঙে হাত থেকে রক্ত পড়ছে। লিপস্টিক লেপটে আছে। হিজাব খুলে গিয়েছে। শাড়িটা এলোমেলো। আর তার পাশেই দু*জন এর লা*শ পরে আছে। বাকিরা ও রুমের এ অবস্থা দেখে ভয় পেয়ে যায়। সাজ্জাদ এমন অবস্থার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।

সাজ্জাদ দ্রুত গিয়ে আদ্রিতাকে সেখান থেকে তুলে একটি বেঞ্জে শুইয়ে দেয়।

আলো, তানহা, আবির আর আরিয়ান স্যার রুমে ঢুকে স্তব্ধ হয়ে গেলো।

আলো আদ্রিতা এই কথাটি বলেই ওর মাথা ঘুরে উঠে। আদ্রিতার এই অবস্থা তারপর আবার দু’টি লা*শ। আলো হঠাৎ পড়ে যেতে নিলে আরিয়ান ধরে ফেলে। আরিয়ান নিজেই কলেজের মধ্যে এরকম ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। স্বাধীন যেয়ে ছেলেদের চেক করে সাজ্জাদের উদ্দেশ্য বললো,

মারা গিয়েছে। (স্বাধীন)

আদ্রিতার জ্ঞান না ফিরা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না কি হয়েছে রুমে। (সাজ্জাদ)

হুম। (স্বাধীন)

কিন্তু কেউ আদ্রিতার সাথে খুব খারাপ করার চেষ্টা করেছে। আমি ছাড়বো না কথনো ও ( সাজ্জাদ)

সাজ্জাদের চোখে মুখে রাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে যারা আদ্রিতার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে তাদের এখন সামনে পেলে খুন করতে ও দ্বিধা বোধ করবে না।
আরিয়ান আলোকে একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো। তানহার হাত পা ও যেনো শক্ত হয়ে আসছে। আবির তা বুঝতে পেরে ওকে ধরে ও একটি চেয়ারে বসিয়ে দিলো।

ভাইয়া কলেজে খু*ন কে করবে? (আবির সাজ্জাদের উদ্দেশ্য বলে উঠলো)

এর জবাব আদ্রিতাই ভালোভাবে দিতে পারবে।(সাজ্জাদ)

কিন্তু আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলে কি ওকে এগুলো জিজ্ঞেস করা ঠিক হবে? (আবির)

জিজ্ঞেস ত অবশ্যই করতে হবে। কে এগুলো করেছে তা জানতে হবে। (সাজ্জাদ)

স্বাধীন তুই গাড়ি বের কর আদ্রিতাকে এখন বাসায় নিয়ে য়ায়। ওর রেস্টের প্রয়োজন আবার হাত থেকে ও রক্ত পড়ছে। আরিয়ান তুই পুলিশদের কল দে। এই জায়গার ঘটনা খুলে বল। আর আদ্রিতার সাথে সরাসরি পুলিশদের কথা বলার প্রয়োজন নেই যা কথা বলার আমি বলবো। (সাজ্জাদ)

আচ্ছা স্বাধীন গাড়ি বের করতে চলে গেলো। আরিয়ান পুলিশকে কল করে জানিয়ে দিলো। কলেজ যারা ছিলো সবাইকে থাকতে বলেছে পুলিশ।

আবির তানহা আর আলোকে নিযে অন্য রুমে যাও। (সাজ্জাদ)

ভাইয়া এই অবস্থা দেখে আলো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে ওকে কিভাবে নিবো……. (আবির)

আরিয়ান আলোকে একটু অন্য রুমে নিয়ে যা। আর কোনো স্টুডেন্ট যেনো এখন এই রুমে আসতে না পারে। (সাজ্জাদ)

ওকে (আরিয়ান)

আবির আর তানহা চলে গেলো রুম থেকে।

আরিয়ান কিভাবে আলোকে নিবে নিজে ও বুঝতে পারছে না। ইচ্ছা না থাকা শর্তে ও আলোকে কোলে তুলে নিলো। আলোকে নিয়ে অন্য রুমে গেলো।

সাজ্জাদ আদ্রিতার হিজাবটি কোনো মতে একটি বেঁধে দিলো। শাড়ির আঁচলটি ঠিক করে দিলো। মৃত ছেলেগুলোর দিকে তাকালো সাজ্জাদ চিনতে পারলো এটি কালকের বাস স্ট্যান্ডের সামনে থাকা ছেলেগুলো।সাজ্জাদ কিছু একটা ভাবলো কোনোভাবে বুঝতে পারছে না কি থেকে কি হয়ে এখানে দু’টি পক্ষ রয়েছে তা সাজ্জাদ নিশ্চিত। এ সমস্যা সমাধানের জন্য আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে আসা জুরুরি। সাজ্জাদ আদ্রতাকে কোলে তুলে নিলো তারপর আদ্রিতাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।

********

দোস্ত এটা কি হলো? ( রাইসা)

নওশিনের ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। রিজভীর অবস্থা ও একই। তারা ত চেয়েছিল ওই ছেলেদের দিয়ে আদ্রিতাকে ধর্ষ*ণ করাবে। কিন্তু আদ্রিতার ত কিছু হলো না বরং ওরা নিজেরাই মারা গেলো।

দোস্ত ওদের কে মারলো? ( নওশিন)

কিছুই বুঝতে পারছি না কি হয়ে গেলো। আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলে ও যদি বলে দেই রিজভী যেতে বলেছিলো সেখানে তখন আমাদের অবস্থা কি হবে ভাবতে পারছিছ? ( রাইসা)

কিছু বুঝতে পারছি না কি করবো? (নওশিন)

আমি? আমি কি করবো তোদের জন্য আমি ফেঁসে গেলাম। (রিজভী)

মাথা ঠান্ডা করে কাজ করতে হবে। এমন ভাব করতে হবে যেনো আমরা কিছু করি নি। ( রাইসা)

হুম আর নিয়মিত কলেজে আসতে হবে। এখন না আসলে সবাই সন্দেহ করবে আমাদের। (নওশিন)

হ্যাঁ। সবাইকে শান্ত থাকতে হবে। ( রাইসা)

******

সাজ্জাদ আদ্রিতাকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। নিজে ও বসলো। স্বাধীন আগে থেকেই গাড়িতে বসে ছিলো।

জ্ঞান এসেছে? ( স্বাধীন)

না। (সাজ্জাদ)

কলেজে এইরকম কে করতে পারে? ( স্বাধীন)

গাড়ি চালানো শুরু কর। এইসব কথা এখন শুনতে চাচ্ছি না। ( সাজ্জাদ)

স্বাধীন বুঝতে পারলো সাজ্জাদ রেগে যাচ্ছে। তাই আর কথা বাড়ালো না।

সাজ্জাদ গাড়িতেই আদ্রিতাকে জড়িয়ে ধরলো। যেনো গাড়ি চালানোর সময় পরে না যায়।

আনমনে বলে উঠলো,

সরি আদুরি আমার খেয়াল রাখা উচিত ছিলো। আমার তোমার প্রতি একটু খেয়াল থাকলে আজকে তোমার এ অবস্থা হতো না। জানি না কে ওই ছেলেদের খু*ন করেছে। কিন্তু আজকে ওই লোকটি না থাকলে তোমার আর ও ক্ষতি হয়ে যেতো। কথাগুলো বলে সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

[ সরি আজকে অনেক ব্যস্ততার জন্য গল্পের পর্বটি ছোট হয়েছে।

কে খু*ন করেছে ওদের? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here