#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ২৮
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
সাজ্জাদ চোখ বন্ধ করে গাড়িতে বসে রইলো। এক হাত দিয়ে আদ্রিতাকে জড়িয়ে রেখেছে। আদ্রিতার চেহেরাটা দেখে সাজ্জাদের রাগ দিগুণ বেড়ে যাচ্ছে। যাদের জন্য আদ্রতার এই অবস্থা সাজ্জাদ পারলে তাদের খু*ন করে ফেলতে ও দ্বিধা বোধ করবে না। স্বাধীন গাড়ি চালাচ্ছে। গাড়িতে সম্পূর্ণ নিরবতা চলছে।
****কিছুক্ষণ পর****
বাসায় এসে পড়েছি। ( স্বাধীন)
সাজ্জাদ গাড়ি থেকে নেমে আদ্রিতাকে তুলে নিলো। স্বাধীন কলিং বেলে চাপ দিলো।
******
কলিংবেলের শব্দ শুনে আদ্রিতার মা যেয়ে দরজা খুলে দিলো। তারপর যা দেখলো মোটে ও প্রস্তুত ছিলো না। আদ্রিতার মা চিল্লিয়ে উঠলো। আদ্রিতার মার হঠাৎ আওয়াজ শুনে সামিরা আর আদ্রিতার বাবা দ্রুত দরজার সামনে এসে দেখলো,
সাজ্জাদ বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। সাজ্জাদের কোলে আদ্রিতা দেখেই বোঝা যাচ্ছে খারাপ কিছু হয়েছে। স্বাধীন ও দাঁড়ানো আছে। আদ্রিতার এই অবস্থা দেখে সামিরার বুক ও মোচড় দিয়ে উঠলো। কেউ কিছু বলার আগে স্বাধীন বলে উঠলো,
আপনাদের সব খুলে বলছি আগে আমাদের ভেতরে আসতে দিন। ( স্বাধীন)
বাকিরা ওদের ভেতরে আসার সুযোগ করে দিলো।
আন্টি আদ্রিতার রুম কোনটি?(সাজ্জাদ)
দুতালায় ডান পাশের রুমটি। (আদ্রিতার মা)
ওকে কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে আদ্রিতার রুমের দিকে চলে গেলো। বাকিরাও সাজ্জাদের পিছু এলো।
সাজ্জাদ আদ্রিতাকে খাটে শুইয়ে দিলো। সামিরার উদ্দেশ্য বললো,
ওর ড্রেস চেঞ্জ করে দিও। (সাজ্জাদ)
আন্টি আংকেল আপনারা নিচে আসুন সব বলছি। (স্বাধীন)
আদ্রিতার কাচে সামিরাকে রেখে বাকিরা নিচে নেমে আসলো। সাজ্জাদ এর মধ্যে ডক্টরকে কল দিয়ে বাসায় আসতে বললো।
এখন বলো কি হয়েছে আমার মেয়ের এই অবস্থা কি করে হলো? ( আদ্রিতার বাবা)
আদ্রিতার মার কানতে কানতে অবস্থা খারাপ। সাজ্জাদ আদ্রিতার মা বাবাকে সব খুলে বললো।
আমার মেয়ের সাথে কার এমন শএুতা থাকতে পারে?(আদ্রিতার মা)
আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলেই স্পষ্ট বোঝা যাবে কি হয়েছিলো। ( সাজ্জাদ)
হ্যাঁ আগে আদ্রিতার জ্ঞান ফিরে আসাটা জুরুরি। (স্বাধীন)
*******
কলেজে পুলিশ এসে তাদের লাশ নিয়ে গেছে। আলোর জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু এমন ঘটনায় অনেক ভয় পেয়ে গেছে। পুলিশরা সাজ্জাদের সাথে ফোনে কথা বলেছে। আদ্রিতার জ্ঞান ফিরলে ওযেনো কেউ আদ্রিতাকে কিছু জিজ্ঞেস না করে সেই ব্যবস্থা সাজ্জাদ করেছে। এই বিষয়টি নিয়ে শুধু সাজ্জাদ কথা বলতে চাচ্ছে আদ্রিতার সাথে। অন্যদিকে পুলিশ দেখে নওশিনদের ভয়ে অবস্থা খারাপ। কিন্তু নিজেদের যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছে যেনো কেউ সন্দেহ না করে।
*******
যারা আদ্রিতার সাথে এই কাজ করেছে তাদের শাস্তি চাই। (আদ্রিতার বাবা)
আমি নিজ হাতে তাদের শাস্তি দিবো। (সাজ্জাদ)
এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠলো, ডক্টর এসেছে।
আদ্রিতার মা ডক্টরকে আদ্রিতার রুমে নিয়ে গেলো। বাকিরা ও গেলো।
হাতে মনে হয় কেউ অনেক জোরে চাপ দিয়েছে। কাঁচের চুড়ি গুলো ভেঙে হাতে বিঁধে গেছে। আমি ড্রেসিং করে দিচ্ছি। আর অতিরিক্ত ভয়ে ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আমি একটি ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিচ্ছি জ্ঞান ফিরতে সময় লাগবে। (ডক্টর)
সাজ্জাদ ডক্টরকে সব ঘটনা বললো। সব কথা শুনে ডক্টর বললো,
জ্ঞান ফিরার সাথে সাথে সেই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করবেন না। একটু সময় নিন দেখুন ও নিজে থেকে কিছু বলে নাকি। ( ডক্টর)
আচ্ছা ঠিক আছে। (সাজ্জাদ)
আসুম আমি এগিয়ে দিচ্ছি। ( স্বাধীন)
ডক্টর চলে যাবে তাই স্বাধীন বাইরে এগিয়ে দিতে চলে গেলো। সামিরা আদ্রিতার পাশে বসে আছে। কানতে কানতে চোখ মুখ ফুলে উঠেছে।
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়। তোমরা না হয় রাতের খাবার খেয়ে তারপর যাও। ( আদ্রিতার মা)
জ্বি আন্টি আমরা আছি। আদ্রিতার জ্ঞান ফেরা না পর্যন্ত এ বাসায় আছি। জ্ঞান ফিরলে ওর সাথে কথা বলা জুরুরি। ( সাজ্জাদ)
আচ্ছা ঠিক আছে। ( আদ্রিতার মা)
মা – বাবা তোমরা এখন যাও আদুরি ঘুমাক আমি ওর সাথে আছি। ( সামিরা)
আদ্রিতার মা বাবা রুম থেকে চলে গেলো। স্বাধীন রুমে এসেছে।
সামিরা ( সাজ্জাদ)
জ্বি ( সামিরা)
তোমার সাথে কিছু কথা বলার ছিলো। (সাজ্জাদ)
জ্বি বলুন। ( সামিরা)
তোমার সাথে কিছুদিন পর আমার বিয়ে ঠিক করা আর এখন আমি তোমার বোনকে সবার সামনে দিয়ে কোলে করে নিয়ে বাসায় ঢুকলাম। তোমার খারাপ লাগে নি?(সাজ্জাদ)
বিয়ের কথা শুনে সামিরার বুক ধক করে উঠলো। আবার সাজ্জাদের সাথে বিয়ের কথা। সামিরার পছন্দ না এ বিষয়ে কোনো কথা।
না আমার খারাপ লাগে নি। বরং আমার মনে হয় আপনি আমার জন্য না আদুরির জন্য উপযুক্ত একটি মানুষ। ( সামিরা)
সামিরা নির্ভয়ে কথাটি বলে ফললো। সাজ্জাদ ও যেনো এই কথাটি শুনতে চাচ্ছিলো।
তার মানে তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাও না? (সাজ্জাদ)
সামিরা নিশ্চুপ।
যেভাবে আমাদের বিয়েে কথা এগোচ্ছে এগিয়ে যেতে দেও কোনোরকম বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করো না। তাহলে নিজেদের বিপদ বাড়বে। ( সাজ্জাদ)
সামিরা এবার ও কিছু বললো না। সাজ্জাদ আবার বলে উঠলো,
দিনশেষে সবাই সবার ভালোবাসার পূর্ণতা পাবে। (সাজ্জাদ)
একথার পর সবাই নিশ্চুপ।
তোদের আসলে বিয়ে হওয়া উচিতই না। তোদের মতো এতো গম্ভীর মানুষ আমি আগে দেখিনি (স্বাধীন)
আমার বোনের এই অবস্থা আর আপনার কি এখন মজা করতে ইচ্ছে হচ্ছে? (সামিরা)
আরে মিস সামিরা রেগে যাচ্ছেন কেনো? আচ্ছা আমি আর কিছু বলবো না। ( স্বাধীন)
সাজ্জাদ আদ্রিতার দিকে তাকিয়ে আছে আদ্রিতার চেহেরাটা দেখে সাজ্জাদ ভিতরটা পুড়ে যাচ্ছে।
আপনারা ও রেস্ট নিন আমি রুম দেখিয়ে দিচ্ছি আসুন আমার সাথে। ( সামিরা)
সাজ্জাদ স্বাধীনকে ইশারায় কিছু একটি বললো। স্বাধীন তা বুঝতে পেরে সামিরার সাথে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। এখন রুমে শুধু সাজ্জাদ আর আদ্রিতা আছে। সাজ্জাদ আদ্রিতার কাছে গেলো। হাত গিয়ে আদ্রিতার গাল স্পর্শ করলো। সাজ্জাদের ঠোঁট আদ্রিতার কপালে ছুঁয়ে দিলো। পরে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
******
সামিরার দেখিয়ে দেওয়া রুমে সাজ্জাদ আর স্বাধীন ফ্রেশ হয়ে বসলো।
তোর কি মনে হয় খু*ন কে করেছে? ( স্বাধীন)
এখানে নিশ্চয়ই দুটি পক্ষ রয়েছে। একদল আদ্রিতার ক্ষতি করতে চেয়েছে। অন্যদল সাহায্য। (সাজ্জাদ)
কলেজে আদ্রিতার এমন শএু কে রয়েছে। ( স্বাধীন)
আছে ত কেউ। না হলে কারোর সাহস কিভাবে হয় আদ্রিতার দিকে হাত বাড়ানোর। ( সাজ্জাদ)
****কিছুক্ষণ পর*****
সামিরা দৌঁড়ে সাজ্জাদের রুমে গেলো। সাজ্জাদের উদ্দেশ্য বলে উঠলো,
আদ্রিতার জ্ঞান ফিরেছে।
#চলবে
[ একটু গঠনমূলক মন্তব্য চাই ❤️ ভাবতেছি কালকের পর্বটি একটু রোমান্টিক করবো। আপনারাই বলুন কি করবো? 🫣 ]