অজানা_অনুভূতি #পর্ব- ০৩

#অজানা_অনুভূতি
#পর্ব- ০৩
#লেখিকা – আদ্রিতা খান অদ্রি

সত্যি মেয়েরা আঘাত পেলে
সম্পূর্ণ বদলে যায়। সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমিয়ে পড়লো।

আজ কিছুটা শান্তি লাগছে সাজ্জাদের মুখের উপর ফোন কেটে দিয়ে। পরে দির সাথে কতোক্ষণ গল্প করে ঘুমিয়ে পড়লাম। কাল সকালে কলেজে যেতে হবে। কলেজে না গেলে ত আবার আলো রাগ করে থাকবে। আলো হচ্ছে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। ও জানে অতীতে আমার আর সাজ্জাদের কাহিনী। ওর সাথে আমার বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকে মা – বাবা আর দি ও ওকে চেনে। আচ্ছা কালকে যখন আলো শুনবে দির সাথে সাজ্জাদের বিয়ে ঠিক হয়েছে ওর রিয়েকশন কি হবে? কি জানে, যাই হোক ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে ~

আদ্রিতা, নাস্তা না করে একদম বের হবি না।

মা, বাইরে নাস্তা করে নিবো আলোর সাথে।

না একদম না ঐইদিন কি অবস্থা হয়েছিলো মনে নেই? চুপচাপ নাস্তা করতে বস।

বুঝলাম এখন বেশি কথা বলে লাভ নেই। তাই নাস্তা করতে বসে পরলাম। এখন যতই নাস্তা করি না কেন বাইরে আলোর সাথে ঠিকই কিছু খেয়ে নিবো। বাবা আরো আগেই অফিসে চলে গিয়েছে। আজকে নাকি কিসের মিটিং আছে সে জন্য।

আদুরি একটু শোন

হ্যাঁ, দি বল,

কলেজে যাবি ত? আমি একটু ইউনিভার্সিটিতে যাবো, চল একসাথেই বের হয়।

আচ্ছা দি, তারপর দি আর আমি নাস্তা করে নিলাম। একসঙ্গে বেরিয়ে পড়লাম। আমাকে কলেজ গেইটের সামনে নামিয়ে দিয়ে দি চলে গেলো।

কলেজে পা দিতে না দিতেই কেউ দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো। হাসলাম সবাই কতো ভালোবাসে শুধু একজন ব্যতীত।

কিরে এতোদিন কলেজে আসলি না কেনো? আপুর থেকে শুনলাম তুই নাকি রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলি? এতো দুর্বল কেন তুই। জানতাম কলেজে আসলে এখন ওর এইসব ভাষণ শুনতে হবে।

আরে একটু প্রেশার লো হয়ে গিয়েছিলো আর বেশি কিছু না। ক্লাসে চল, পরে বাকি কথা হবে। এমন সময় তানহা আর আবির আসলো। আমরা ৪ জনের একটি গ্রুপ। ফ্রেন্ডশিপের দিক দিয়ে আমরা সেরা। সারা কলেজ আমাদের গ্রুপের কথা জানে। অনেকদিন পর কলেজে আসলাম। আমরা ৪ জন রুমে যেতে নিবো এমন সময় রিজভী, রিফাত, সায়েম, রাইসা আর নওশিন আসলো। ওদের ৫ জনের একটি গ্রুপ। ওদের দেখে কিছুটা বিরক্ত হলাম। আমি আর আলো ২ জনই ক্লাসের টপ স্টুডেন্ট। যার ফলে ওরা আমাদের হিংসা করে এবং অনেকবার ক্ষতি করতে চেয়েছে। আমরা ত ওদের কোনো ক্ষতি করি নি তাও বার বার কেনো আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে বুঝি না।ওদের কিছু না বলে আমরা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলাম এমন সময় রাইসা বলে উঠলো কি ব্যাপার টপার কোথায় ছিলে এতোদিন? নওশিন বলে উঠলো, আরে বুঝিছ না কলেজের টপার কি আর আমাদের সাথে কথা বলবে এ কথা গুলো বলে সবাই হেসে উঠলো। আমরা আর কিছু বললাম না৷ রুমে চলে আসলাম। রুমে আসার পর, আবির বলল আদ্রিতা ওদের কিন্তু কিছু বলা উচিত ছিলো। আমি বললাম বাদ দে কিছু মানুষ কখনো ঠিক হবে না। আবির ওর সিটে বসে পড়লো। আমি আলো আর তানহা গল্প জুড়ে দিলাম। ক্লাসে টপার হলে ও লাস্টে বসি আর ওদের সাথে সারাক্ষণ গল্প করতে থাকি। তখন একজন রুমে আসলো আমরা পাওা না দিয়ে গল্প করছিলাম। হঠাৎ একজন বলো উঠলো লাস্টে সাদা হিজাব দাড়াও। বুঝতে পারলাম আমাকে বলেছে।

ক্লাসে শিক্ষক আসলে দাড়াতে হয় জানো না নাকি? আমি তোমাদের নতুন শিক্ষক আরিয়ান চৌধুরী।

সরি স্যার আমি খেয়াল করি নি…

ক্লাসে সারাক্ষণ কথা বললে খেয়াল করবে ও না। আমার ক্লাসে আমি কোনো রকম কথা মেনে নিবো না। আর তুমি নাম কি তোমার?

জ্বি, আদ্রিতা।

তুমি ক্লাস থেকে বের হয়ে যাও। এখনি।

মাথা নিচু করে বের হয়ে আসলাম। দেখলাম রাইসা, নওশিন ওরা হাসা হাসি করছে।

বাইরে এসে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।

এদিকে সাজ্জাদ আদ্রিতার কলেজে এসেছে। যদি ও জানে না আদ্রিতা এই কলেজে পড়ে। কিছুদিন পর কলেজে একটি অনুষ্ঠান রয়েছে। সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হচ্ছে সাজ্জাদ আর স্বাধীন। কারণ তারা ২ জনই দেশের নামকরা বিজনেসম্যান। সাজ্জাদ প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে বের হয়েছে। এমন সময় মনে পড়লো তার বন্ধু আরিয়ান এই কলেজে জয়েন করেছে। তাই তার সাথে দেখা করার জন্য আবার কলেজে গেলো। রুমের সামনে এসে দেখতে পারলো আদ্রিতা মাথা নিচু করে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।

তুমি এখানে?

তার কন্ঠস্বর শুনে উপরে তাকালাম, আপনি এইখানে?

ক্লাসের ভেতর থেকে রাইসা দেখতে পেরেছিলো আদ্রিতা কার সাথে যেন কথা বলছে, সে দাঁড়িয়ে বললো, স্যার ওই মেয়েটি বাইরে দাঁড়িয়ে কার সাথে যেনো কথা বলছে। একথা শুনে আরিয়ান বাইরে বের হলো।

সাজ্জদকে দেখে বলে উঠলো, দোস্ত তুই,

হ্যাঁ, আমি কলেজে একটু কাজে এসেছিলাম তাই ভাবলাম তোর সাথে দেখা করে যায়। কিন্তু আদ্রিতা বাইরে দাঁড়িয়ে কেন?

তুই চিনিস ওকে?

হ্যাঁ বাবার বন্ধুর মেয়ে।

ও আচ্ছা ক্লাসে কথা বলছিলো তাই রুম থেকে বের করে দিছি।

ছোট মানুষ ভুল করে ফেলেছে রুমে যেতে বল।

সাজ্জাদের কথা শুনে অবাক হলাম আচ্ছা আমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছি সেজন্য কি তার কষ্ট হচ্ছে? তার ও কি আমার প্রতি অনুভূতি কাজ করে?

আরিয়ান স্যার বললেন রুমে যাও। তারপর আমি রুমে এসে পড়লাম। সাজ্জাদ, স্যারের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেলো।

অন্যদিকে ~

নওশিন সাজ্জাদকে দেখেই তার প্রেমে পড়ে যায়। রাইসাকে বলে দোস্ত দেখ ছেলেটা সুন্দর আছে। At any cost i need him কিন্তু, সাজ্জাদ, আদ্রিতার সাথে কথা বলেছে দেখে নওশিনের আদ্রিতার প্রতি আরো রেগে যাচ্ছে।

রুমে আসার পর আলো বললে অনেক কষ্ট হয়েছে তাই না। তারপর আমরা বেশি কথা বললাম না আর চুপচাপ ক্লাস করে নিলাম।

এদিকে ~

সামিরা তার কাজ শেষ করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য। হঠাৎ খুব দ্রুত গতিতে একটি ট্রাক সামিরার দিকে আসতে লাগলো আর ঠিক তখনই………

#চলবে

[ আসসালামু আলাইকুম
পাঠকরা কি মনে হচ্ছে কার সাথে কার মিল হবে?আমি নতুন নতুন লেখা শুরু করেছি ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আদ্রিতা আমার ছদ্মনাম। আমি ইন্টার ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়ার চাপে হয়তো কমেন্ট এর রিপ্লাই দিতে পারি না। কেউ রাগ করবেন না। আপনাদের ভালোবাসা পেলেই এ গল্পটি সুন্দর ভাবে শেষ করা সম্ভব❤️ ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here