অতিরিক্ত চাওয়া নাবিলা ইষ্ক পর্ব : ৭

অতিরিক্ত চাওয়া

নাবিলা ইষ্ক

পর্ব : ৭

গাড়ি চলতে শুরু করলো। আমি আর কোথাও তাকানোর শক্তি পেলাম না। আর কিছুক্ষণ আগে যে পরে পিটে কাঁদছিলাম সেটাও মনে হচ্ছে এখন আরো তিব্র ভাবে বাহিরে আসতে চাচ্ছে। না চাইতেও বারবার তাঁর দিক চোখ যাচ্ছে। গোলাপী ঠোঁট দু ‘টি রক্তের লাল বর্নের ধারন পেয়েছে তার। কালো টি_সার্টের মাঝে তার ফোর্সা গায়ের রঙ ফুটে উঠেছে। সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালিয়েই যাচ্ছে। গলায় সিংহের একটা চেইন আইটেম কিছু পড়া। হাতে ঘড়ি বেশ বড়? আজকে চুল আওলাঝাওলা হয়ে আছে। মে বি তখনের জন্য? কেনো জানো স্যারটাকে আজ বেশ লাগছে! এমন চোখে আগে কখনও পর্যবেক্ষন করা হয় নি! আর করবো বাই বা কেনো? আমি তো শুধু শিক্ষকের নজরে দেখেছিলাম!

আমার প্রচন্ড রাগ লাগছে স্যারের এমন বিহেভিয়ারে। কোথায় গাড়ি যাচ্ছে তাও জানি নাহ? আর কিছু বলার ভাষাও পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে কেউ আমার গলা চেপে ধরে আছে…স্যার কি আমায় ইউস করতে চাচ্ছে। নাকি সে আমায় ঘৃনা করে তাই এমন কাজ করলো? কিস তো ঘৃনা করা ব্যাক্তিকে করা যায় না। কাউকে তিব্র ভাবে আপন করে পেতে চাইলেই এভাবে কিস করে নিজের মাঝে গুছিয়ে নেয়।
এখন আমার আরো বেশি কান্না পাচ্ছে। ঠোঁট গুলি মে বি তেনাতেনা হয়ে গেছে। এতোক্ষন অন্যকারো ঠোঁটের ভার বহন করেছে কম কথা…?
আমার কাছে এই কাহিনীটা একটা স্বপ্ন মনে হচ্ছে। স্বপ্ন হলে এখনি উঠতে চাচ্ছি এই বাজে স্বপ্ন থেকে। এইটা অবিশাষ্য তৃষ্ণা স্যার যে কিনা আমায় দেখতেই পারে না সে আমায় কিস করেছে তাও এতো সফটলি। আবার মনে হচ্ছিলো সে কাদতেছিলো। আমার মাথায় কিছুই আসছে না…
ভাবনায় ছেদ পড়লো গাড়িটা থামায়। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম এক লেকের পাশে। একটা মানুষও দেখতে পাচ্ছি না। স্যারের দিক তাকাতেই দেখলাম সে সিটে মাথা হেলান দিয়ে শুয়ে আছেন।

আমি কাপাকাপা কন্ঠে বললাম…
” আ…আমি বাসা…বাসায় যাবো প্লিজ।
সে এখনও সেভাবেই চোখ বুঝে আছে। হঠাৎ তার গলার আওয়াজ পেয়ে সেখানে তাকাতেই দেখলাম সে এখনো সেভাবেই চোখ বুঝে আছে…

” রোকনা নাহি মুঝকো.. জিদপে আগায়াহু মে…?
ইস কা দার দিবানা পান চারহা…
দেখোনো এহা আকে মেরা হাল কেয়সা হে…
টুটকে আভিতাক না জুড়া…. [এতোটুকু গেয়ে সে আমার দিক তাকালো.. ]
তুমহে আপনা বানানেকা জুনুন ছাড়পে হে… কাবছে হে …?
মুঝে আদাত বানালো একবুড়ি কেহনা এহ তুমসে হ্যা…

আমি অবাক চোখে তাকিয়ে আছি স্যারের দিক। সে গান গেলো তাও এমন ইনসেন সং। তাও আমার দিক তাকিয়ে! গানটা কি আমায় মিন করে গেলো…? তার চোখের দিক তাকাতেই তার চোখে চোখ পড়তেই আটকে উঠলাম আমি..? তার চোখের চারপাশ সম্পুর্ণ লাল হয়ে জমে আছে। কেমন এক ভয়ানক চাহনীয় ছিলো! বেশিক্ষণ তাকাতে পারি নি আমি! চোখ নামিয়ে আশে_পাশে তাকাতে লাগলাম! সে এবার আমার দিক একটু ঝুকে গেলোহ..
” ভয় করছে তাই নাহ? [ আমি তাকালাম ] আমি তো চাই তুমি আমায় ভয় পাও.. ঘৃনা করো!
কথাটা বলেই সে অট্টহাসি হাসিতে ফেটে পড়লো! আমি তো প্রচন্ড ভয় পাচ্ছি স্যারের এমন বিহেভে! হঠাৎ স্যার আবার মুখটা খিচে ফেললেন..! সাথে সাথে ড্রাইভিং স্ট্রিকে কষে বারি মারলেন! আমার দিক ভ্রু_কুচকে তাকিয়ে বললেন…
” এই পিচ্চি কি আছে তোমার মাঝে..?
[ আমি তো রীতিমতো অবাক, কি বলছে স্যার এগুলো! ]
হ্যা.. কি আছে? কেনো আমায় এমন বানাচ্ছো? [ কথাটা বলেই তার ডান হাতের চার আংগুল ইউস করে আমার গাল চেপে ধরে, তার দিক টেনে নিলেন ] দিন দিন আমি আমার নিজেকে হাড়িয়ে ফেলছি! কেনো? কেনো তোমার থেকে দূরে থাকতে পারি না! কেনো তোমায় নিয়ে সারাক্ষন ভাবি! কেনো তোমায় এতোটা চাই? উত্তর আছে তোমার কাছে? নাই..! আমার কাছেও যে নেই!
তোমার মাঝে কিচ্ছু নেই.! কিচ্ছু?
তাও আমি প্রতিনিয়ত পাগল হচ্ছি! এই! আমি তোমার টিচার নই! আমি শুধু তোমায় একনজর দেখার জন্য পড়াই! কেনো বুঝোনা?

আমি শুধু তার দিক তাকিয়ে! অজানা এক টান অনুভব করছি! স্যারের কি হয়েছে? এটাতো বুঝতে বাকি নেই যে স্যার মে বি আমায় পছন্দ করেন! পছন্দ না করলে কি কেউ এভাবে কিস করে? বা এভাবে কথা বলে?
ভাবনায় ছেদ পরে স্যারের আওয়াজে! সেদিকে তাকাতেই দেখি স্যার চোখ বুঝে সিটে হ্যালান দিয়ে আছেন!..
বলতে শুরু করলেন আর আমি শুনতে..

” তুমি যেই ডাইরীটা পড়েছিলে ফ্ল্যাটের লাইব্রেরীতে! সেখানে যেই পিচ্চি মেয়ের কথা আমি উল্লেখ করেছিলাম জানতে চাও সে কে?
আমি সাথে সাথেই রিপ্লাই দিলাম.. ” নাহ..নাহ..! শুনতে চাই না! আমি বাড়ি যাবো?
” উহুউম… ইউ হেভ টু নো?

তাকিয়ে রইলাম স্যারের দিক! সে সিটে চোখ বোঝা অবস্থায় বলা শুরু করলেন!

PAST….

জানো ভালোবাসা বলতে তেমন কিছুই আমার মনে আসে নি! কিছুটা হ্যান্ডসাম থাকায় ভার্সিটিতে অনেক প্রেম করেছি! যেই মেয়েকে ভালোলাগতো প্রপোজ করতাম আর সেও এক্সেপ্ট করতো!
সেদিন বুধবার ছিলো! ভার্সিটি সেষে মাত্র বাড়ির পাশের চায়ের টঙে দাড়িয়েছিলাম! তখনি সেখানে উপস্থিত হয় একটি ট্রাক! আমি চা খাওয়ায় মনোযোগ দিচ্ছিলাম! তখনি এক পুচকি মেয়ে দৌড়িয়ে আসে দোকানে..
বলতে থাকে আইসক্রিম বা চিপস দিন!
মেয়েটাকে ভালো ভাবে একনজর দেখলাম! আমার এখনও স্ট্রিট মনে আছে.. গোলাপি রঙের হাটু অবদি জিন্স আর হোয়াইট ফুল হাতার গেঞ্জি ছিলো পরনে! মাথায় ক্যাপ ছিলো আর চারপাশের চুল গুলি লাফাচ্ছিল! হালকা ফোর্সা গায়ের রঙে পিচ্চিটা বেশ মায়াবতী ছিলো! যতক্ষণ ছিলো সেখানে আমি তাকিয়েই ছিলাম!
তখনি হয়তো সেই মেয়ের বাবা আসেন! মেয়েটি চিপসটা নিয়েই দৌড়িয়ে সামনের বাড়ির মধ্যে ঢুকে পরে! তখনি এক মহিলা ঢেকে উঠে ” বেলি.. ”

পিচ্চি মেয়েটির নাম ছিলো বেলি! বেলিকে আমার ভালোলাগতো! ভাবতাম যে আমি তো বাচ্চা প্রিয় তাই হয়তো! অতোটা গুরুত্ব দিতাম না এই বিষয়ে! শুনলাম বেলির বাবা তার জন্য টিচার খুজছেন! আমাকে বলতেই আমি হ্যাঁ বলে দিলাম! কেনো বললাম তার জবাব ও নেই! আমার তখন এক্সাম চলছিলো! পড়াতে শুরু করলাম মেয়েটিকে..!

প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত বেলিক নতুন ভাবে খুটিয়ে খাটিয়ে দেখতাম! প্রচন্ড ভালো লাগতো! ওর বোকা, বোকা কথা গুলোর মাঝেই নিজের হাসি খুজে পেতাম! হঠাৎ, হঠাৎ নাক টানা! কখনও পড়ার জন্য বকলে মুখ কুচকে রাখা আমার বেশ লাগতো ওকে দেখতে! প্রায় টাইম ওর ছবি তুলে রাখতাম ফোনে! মোবাইল ওপেন করতেই ওর ছবি গুলি নেড়েচেড়ে দেখতাম! মাঝে মাঝে বাড়ির পথে দেখতাম খেলতে! সারাদিন খেলতো আর আইসক্রিম খেতো!
মাঝে মাঝে অনেক মন চাইতো ওর জন্য আইসক্রিম কিনতে! নিজে নিজেই বলতাম ও আমার ছাত্রী! অনেকটা মেয়ের মতোই! কিন্তু ওটা চিন্তা করতেই পারতাম না! মুখটা কালো হয়ে যেতো! প্রায় টাইম আইসক্রিম কিনে দিতাম, আর ও তা আমাকেও খাইয়ে দিতে চাইতো! ওর হাতে খেতে তো চাইতাম কিন্তু ফোকাস আমার ভালো ছিলো না! তাই ইগনোর করতাম!
এতো কাহিনীর মাঝেও নিজের অনুভূতি তখনও বুঝতে পারি নি!

সেদিন মনে হয় শনিবার ছিলো! অনেক্ষণ যাবত বসে ছিলাম ওর জন্য! কিন্তু ও তো পড়তেই আসলো না! ভাবলাম হয়তো আজ আসবে না! কেমন ফাকা ফাকা লাগছিলো সেই দিনটা! কিছু একটা নেই, নেই লাগছে!
রাত্রে ঘুমুচ্ছিলাম! এমন এক বাজে স্বপ্ন দেখলাম যে তড়িঘড়ি করে উঠে পরলাম! তখনও বিস্বাশ হচ্ছিলো না ব্যাপারটা! বারবার ভালোবাসার কথা বলছিলাম বেলিকে ! আমি সেই রাত্রে আর ঘুমাই নি!

পরের দিন আর কোথাও বের হই নি! বেলিকে না দেখতে পেয়ে নিজেকে পাগল, পাগল মনে হচ্ছিলো! অস্থির অস্থির ফিলিং হচ্ছিলো! কি করবো না করবো ভেবে পাচ্ছি না! আর কিছু না ভেবেই কল লাগালাম! কলটা ধরেই বেলির বাবা বললেন! তারা গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন! ১০_১২ দিন আসবে না! কথাটা শুনে আমি কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে ছিলাম! ফোনের মধ্যে বেলির আওয়াজ পাচ্ছিলাম.. ” উফ বাবা তুমি আমায় হ্যাল্প করো গাছে উঠবো!
ভয়েসটা শুনা মাত্রই চিৎকার দিতে ইচ্ছে করছিলো! একদিন না দেখতে পেয়ে আমার এই অবস্থা ১২ দিন কিভাবে থাকবো?
দিন যাচ্ছে আর বেলির প্রতি আমি কতোটা উইক তা অনুভব করছি ! একনজর শুধু একনজর দেখতে মন চাচ্ছিলো! ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম এতো উইক এর মানে!
যখন বুঝতে পেরেছিলাম নিজেকে থু থু দিতে ইচ্ছে করছিলো! সেষে এক নাবালিকা মেয়েকে মনে ধরেছে! তিব্র কষ্ট মনে ধরেছিলো তখন! স্বাশ নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো আমার!
আমার অতিরিক্ত চাওয়া শুরু হয়েছিলো সেই ২ দিনের মাঝে! বুঝিয়ে দিয়েছিলো আমি কতোটা ব্যহায়া হয়ে উঠেছি! ৩ দিনের মাথায় ঠিকানা জোগার করলাম চাদপুরের! সকল তথ্য নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম….

[ গল্পের টাইটেল টা দেখেছো নিশ্চয়ই? ” অতিরিক্ত চাওয়া ” নামেই বুঝিয়ে দিয়েছি যে সবকিছু অতিরিক্ত হবে এখানে! আর ভাই/বোন এটা কেমন ধরনের কথা ” বই বের করেন “! আমার এখনও ওই বই লিখার এজ বা জগ্যতা কিছুই হয় নি! তাই অযথা এগুলো বলে লজ্যা দেবেন না! আমি শুধু সখের বসে লিখি! আর ভবিষ্যৎে ও বই বের করার ইচ্ছা নেই! ওভাবে কখনও ভাবিও নি!
আর আবারও বলে দিচ্ছি গল্পটায় যা হবে অতিরিক্ত! আর এইটা সর্ট স্টোরি! মানে হলো.. ছোট! মাত্র ১০ বা ৯ পার্ট হবে! কল্পনা করা গল্পটা তো আর হুটহাট বড় করা যায় না! বুঝেছো নিশ্চয়ই! 😑😑]

চলবে..?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here