অন্তরালের অনুরাগ ❤ পর্বঃ১৭

0
8300

গল্পঃ #অন্তরালের_অনুরাগ
লেখনীতেঃ #নাহিদা_নীলা
#পর্বঃ ১৬ ✈🌎

চারজোড়া চোখ সাদিদ নীলার দিকে চমকিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। সাদিদের মুখ নিঃসৃত বাক্যগুলো তাদের কাছে নিতান্তই গল্পকথা মনে হচ্ছে। নতুবা এমনটাও কি সম্ভব? আর ধৈর্য্য ধরতে না পেরে তানবীর প্রায় ধমকিয়ে উঠল,

— ‘ একটা লাথি মারমু এমন ফাইজলামি করলে। ‘
— ‘ আচ্ছা মারিস। বাট আ’ম টেলিং দ্য ট্রোথ। ‘

সাদিদ এতটুকু বলে থামল। মাথা নিচু করে বসে থাকা নীলার পাশে গিয়ে দাঁড়াল। একহাতে তাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলল,

— ‘ উয়ি আর হাসবেন্ড ওয়াইফ। ‘
— ‘ সাদি, তুই সত্যিই মজা করছিস না? ‘
— ‘ এমন বিষয় নিয়ে মজা করব কেন? আমি এতক্ষণ তোদের সব সত্য কথা-ই বলেছি। যেভাবেই হোক না কেন বা যে পরিস্থিতি, ধর্মমতে নীলাঞ্জনা এখন আমার ওয়াইফ। পৃথিবীর কোনো কিছু এই পবিত্র সত্যকে মিথ্যা করতে পারবে না। ‘

এতক্ষণে বোধহয় উপস্থিত সবাই বিষয়টাকে আসলেই সত্য ভেবে নিচ্ছে। নতুবা হুট করে কেউ এসে বলবে সে আমার বিয়ে করা বউ, এমনটা কে বিশ্বাস করবে?
সবাই এখন একে-অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। এতক্ষণ পরিস্থিতি গম্ভীর থাকলে আচমকা সব পল্টন এসে একত সাদিদ নীলার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। সাদিদ-নীলাকে প্রায় আলু বর্তা বানাতে তারা উঠে পড়ে লেগেছে। সাদিদ কোনোভাবে নীলাকে এর মধ্যে থেকে বের করার চেষ্টা করতে করতে বলল,

— ‘ এই তোরা আমার বউকে মেরে ফেলবি নাকি? ছাড় বলছি। ওর কষ্ট হচ্ছে। ‘

সাদিদের নিচুস্বরের ধমকে সবাই এবার একটু ধমলো। কিন্তু আলাদাভাবে নীলা-সাদিদকে বিয়ের শুভেচ্ছা জানাতে লাগল। তানবীর কোলাকুলি করতে এসে ফিসফিসিয়ে বলল,

— ‘ খালি বিয়ে? নাকি সব কাজই শেষ করে তারপর জানাতে এসেছিস? ‘

সাদিদ ঠোঁট কামড়ে হাসল। সে ভালো-ই বুঝতে পাড়ছে তানবীর কোনদিকে ইন্ডিকেট করছে। সাদিদ তার পিঠে জোরে একটা চাপড় মেরে বলল,

— ‘ আমি কি তোদের মতো নাকি? বিয়েটা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হয়েছিল বিধায় জানাতে পারিনি। তাই বলে এতটাও ফাস্টে যাচ্ছি না। ‘
— ‘ মিয়া তুমি আর কথা কইয়ো না। তোমারে আমি হারে হারে চিনবার পারি। হয়তো ঠিকঠাক সুবিধা করতে পারো নাই। নতুবা তৃতীয় ব্যক্তি নিয়া-ই তুমি হাজিরা দিতা। ‘

সাদিদ তার কথা শুনে হাসতে হাসতে তানবীরের পেটে মৃদু ঘুষি দিলো। তানবীরও দুষ্টু হাসছে। পাশ থেকে নীলা, শান্ত আর প্রিয়তী সন্দেহপ্রবল দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। অর্ণব পাশে দাঁড়িয়ে ঠোঁট টিপে হাসছে। প্রিয়তী তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে উঠল,

— ‘ বাবু, তারা এভাবে হাসছে কেন? ‘

তানবীর হাসি ভুলে এবার তেতে উঠল। রাগে গজগজ করতে করতে বলল,

— ‘ এই মাইয়া, এই? হে কি ফিডার খায়? না বাবুদের মতো প্যামপাস পরে? হেরে বাবু ডাকস কেন? ‘
— ‘ ছিঃ কি বিচ্ছিরি! তোমার মুখের ভাষা এমন জঘন্য কেন? ‘
— ‘ তোর মুখের এই জঘন্য শব্দগুলো শুনলে আমার ভাষা এমনিতেই জঘন্যের আস্তানা খোঁজে বেড়ায়। ‘
— ‘ দেখছ বাবু, ও কি বলে? ‘
— ‘ তোর পেঁচার মতো মুখে…
— ‘ চুপ আর একটা কথা নয়। এখানে তোদের একটা দরকারী কাজে ডেকেছি? না তোদের ঝগড়ার জন্য? ‘
— ‘ সব দোষ এই বাবু নামকরণের মহিলার। ‘
— ‘ তানবীর চুপ করতো এবার। নতুবা আমি চলে গেলাম। ‘
— ‘ আচ্ছা রাগিস না। বল কি কথা। ‘

সাদিদ নীলার দিকে তাকালো। নীলা অনবরত হাত-পায়ের নখ খুঁটে চলেছে। সাদিদ তাকে আগেই এই বিষয়ে বলেছে। এখন সবার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে এইটা নিয়েই তার ভয়।

— ‘ আমি একটু ঘুরতে যাবার প্ল্যান করছিলাম। ‘

অর্ণব, তানবীর তাদের ভ্রুজোড়া কুঁচকালো। বাকি সবাই স্বাভাবিকভাবে নিলেও তাদের একটু খটকা লাগছে। অর্ণব-ই বলল,

— ‘ সেটা ভালো কথা। কিন্তু কোথায় যাবার প্ল্যান করেছিস? ‘
— ‘ দার্জিলিং। ‘

সাদিদের এমন নির্লিপ্ত উত্তরে নীলার প্রায় চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। কি বলছে সাদিদ?
দার্জিলিং! নীলার তো নিজের কানকেই বিশ্বাস হচ্ছে না।
সাদিদের এক কথা ছিল, হয় মধুচন্দ্রিমা নতুবা পরিবারকে জানাব। নীলার লজ্জা লাগলেও শেষমেশ মধুচন্দ্রিমাতে এসে রাজি হয়েছিল। কিন্তু তাই বলে দার্জিলিং?
এমনটাতো সাদিদ তাকে বলেনি। এমনকি নীলাও এমনটা ভাবতে পর্যন্ত পারেনি।

— ‘ দার্জিলিং প্ল্যান? ‘
— ‘ হুম। ‘

তানবীর আর অর্ণব এবার হাসছে। তাদের আর বুঝার বাকি নেই বিষয়টা প্রকৃত অর্থে কি? তাদের এমন দুষ্টু হাসি দেখে সাদিদও মাথা চুলকে হাসছে। তার বন্ধুগুলো বড্ড পাঁজি।

— ‘ যাবি ভালো কথা। কিন্তু কবে যেতে চাস? ‘
— ‘ যত দ্রুত সম্ভব। কিন্তু আমরা একা নয়। তোদের সবাইকেও আমাদের সঙ্গে যেতে হবে। ‘
— ‘ মানে? ‘

সবকটা একসঙ্গে চিল্লিয়ে উঠল। সাদিদ কানে হাত চেপে ধরে বিরক্তিমাখা কন্ঠে বলল,

— ‘ আরে আস্তে। কানের পর্দা ফাটিয়ে দিবি তো। সবাই মিলে এমন চেচাচ্ছিস কেন? ‘
— ‘ না চেঁচিয়ে কি করব? তুই শালা হানি…

সাদিদ দ্রুত এসে তানবীরের মুখ চেপে ধরল। নীলাকে সে একান্তই ভালোবেসে লজ্জা দিতে চায়। লজ্জায় রাঙিয়ে তার লালাভ বর্ণের সৌন্দর্যমাখা মুখটা দেখতে, সাদিদের চোখজোড়া সবসময় ক্লান্ত হয়ে বসে থাকে। কিন্তু তাই বলে সে সবার সামনে এভাবে লজ্জা পাক এমনটা সাদিদ চায় না। তাই এই বাধা, আটকিয়ে ফেলার ব্যস্ততা।

— ‘ চুপ। তুই আর একটা কথাও বলবি না। ‘

তানবীরও এবার বাধ্য ছেলের মতো মাথা নাড়ালো। সাদিদ মুখ ছাড়তেই পাশ থেকে অর্ণব বলে উঠল,

— ‘ তোরা ঘুরতে যাচ্ছিস ভালো কথা। কিন্তু সেখানে আমাদের গিয়ে কি কাজ? ‘
— ‘ প্রথমত তোরা আমার ভাইয়ের থেকে কম নস। তাই আমাদের সাথে যেতেই পারিস। এভাবে আলাদাভাবে বলার কিছু নেই। আর নীলাঞ্জনাও হয়তো এমনটাই চায়।
আমাদের বিয়ের কথাটা পরিবারের কেউ এখনও জানে না। এমতাবস্থায় একা একা দু’জন এতটাদূরে ঘুরতে গেলে ওর হয়তো ভালো লাগবে না। সবসময় মাথায় এটা-সেটা আসতে থাকবে। সবার সাথে থাকলে জার্নিটা বেশি এনজয় করবে। তাই তোদেরকেও আমাদের সাথে আসতেই হবে। ‘
— ‘ ভাইয়া না মানে জিজু, উনাদেরটা না হয় বুঝলাম কিন্তু আমি কেন? ‘
— ‘ শান্ত তুমিতো আরও আগে। তোমাকে ছাড়া নীলাঞ্জনার যাওয়া প্রায় ইম্পসিবল। ‘

শান্ত সাদিদের দিকে অবাক চাহনিতে তাকিয়ে আছে। সাদিদের কথাটা তার বোধগম্য হয়নি। সাদিদ-ই তাকে এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিলো।

— ‘ নীলাঞ্জনা এইমুহূর্তে পরিবারকে জানাতে চায় না৷ তাই এভাবে আমার সাথে না জানিয়ে ওর যাওয়াটা সম্ভব নয়। তাহলে অনেক কথা উঠবে। তাই তোমাকেই এইদিকটা সামলাতে হবে। বলতে পারো ভালো কিছুর বিনিময়ে ছোটখাটো মিথ্যা বলতে হবে। তোমার উপর এই ক্ষেত্রে আমার পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে। ‘

সাদিদের কথায় শান্ত হাসল। উপস্থিত সবাইও হাসছে। সবাই এটা সেটা নিয়ে আলোচনা করতে লাগলেই সাদিদ নীলাকে টেনে কোণায় নিয়ে গেল। নিজের দুইহাত দেয়ালে রেখে নীলাকে বাহুবন্ধনে আঁটকে ধরল। নীলার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,

— ‘ তখন ছাড়া পেলেও হিসাব কিন্তু ছাড়িনি বউ। কড়ায় গন্ডায় হিসাব করছি। সময়মতো সবকিছু সুদে-আসলে উশুল করব। রেডি হও বউপাখি। নিজের ভাগের একবিন্দুও আমি ছাড় দিব না। ‘

নীলার দম প্রায় আটকে যাবার অবস্থা। এখন থেকেই তাকে সাদিদের যেসব ভয়ংকর কথার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, না জানি হাতে পেয়ে তার কি হাল করে? নীলা একপলক চোখ উঁচিয়ে তাকালো। সাদিদের ঘোর লাগা দৃষ্টি দেখে পরমুহূর্তেই সে চোখ নামিয়ে নিলো৷ কিন্তু কিছু করার নেই। এটা-ই মানতে হবে। সাদিদের জেদ চেপেছে। এই বান্দাকে এখন কোনোভাবেই মানানো যাবে না। নীলা বাকি সবাইকে লক্ষ করে আশেপাশে তাকালো। সবাই দার্জিলিং ভ্রমণ নিয়ে কথা বলছে৷ কিভাবে কি করবে, কোথায় কোথায় যাওয়া হবে এসব নিয়ে প্ল্যান করছে। আপাতত নীলা-সাদিদকে দেখার সময় তাদের নেই। কেননা সবকিছুকে ছাপিয়ে এবার যাত্রা হবে দার্জিলিং। মেঘের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত এই পাহাড় কন্যার বুকে হানা দিতে নব্য দম্পতি এবং তার বন্ধুরা ছুটে আসছে।

__________________

আরিফ মাহমুদ সোফায় বসে আছেন। দৃষ্টি তার তীক্ষ্ণ। কেননা এই দুইটা পাঁজি মেয়ে তাকে সেই কখন থেকে বসিয়ে রেখেছে। কি কথা বলবে বলবে করে ঘণ্টা পার করে ফেলছে। তিনি এবার কিছুটা রাগী স্বরে বললেন,

— ‘ তোমরা কি সত্যিই কিছু বলতে চাও? বলার থাকলে বলো নতুবা আমার দরকারী কাজ আছে। ‘
— ‘ আঙ্কেল আর একটু বসেন। মুখ দিয়ে কথাটা বের হতেই চাইছে না৷ একেবারে গলায় এসে আটকে রয়েছে। ‘
— ‘ কি এমন কথা বলতে চাও যে গলায় এসে আটকে রয়েছে? ‘
— ‘ না মানে আঙ্কেল, আসলে না মানে…

আরিফ রহমান নীলার দিকে তাকালেন। সে সাথে সাথে দৃষ্টি নত করল। তিনি তাদের দুইজনের মতিগতি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। শান্তও একবার নীলার দিকে তাকালো। লম্বা একটা শ্বাস টেনে সে এবার একদমে বলে ফেলল,

— ‘ আঙ্কেল আমাদের ভার্সিটি থেকে নাফাখুম জলপ্রপাতের উদ্দেশ্য যাবে। মাঝপথে থানচি, মিলন ছড়ি, বগালেক, স্বর্ণমন্দির, নীলাচলসহ আরও অনেকগুলো স্পট ঘুরে দেখানো হবে। ‘
— ‘ সেটাতো বেশ ভালো কথা। ‘
— ‘ আঙ্কেল আমি এবং নীলও তাদের সাথে যেতে চাচ্ছি। ‘

আরিফ মাহমুদ এবার খানিকক্ষণ চুপ থেকে চিন্তা করতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পরেই হাসিমুখে বলে উঠলেন,

— ‘ যাবার হলে যাবে। মানা করছে কে? আমার জীবনেও আমি এসবে বহুতবার গিয়েছি। ‘
— ‘ আসলে আঙ্কেল অনেকগুলো স্পট তো তাই সময়টা একটু বেশি লাগবে। চার রাত পাঁচ দিন। ‘
— ‘ যদি সিকিউরিটি ব্যবস্থা এবং মেনেজমেন্ট ভালো থাকে তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
— ‘ ও আঙ্কেল আপনার মতো মানুষ হয় না। ‘

বলেই শান্ত খুশিতে গিয়ে আরিফ মাহমুদকে আলতো করে জড়িয়ে ধরল। নীলাও মাথা নিচু করে মুখ টিপে হাসছে। যাক এদিকের ঝামেলা তাহলে মিটে গিয়েছে। আব্বু রাজি মানে আম্মুও রাজি।
শান্ত নীলাকে বাই বলে তাদের বাসা থেকে খুশিমনে চলে গেল। দার্জিলিং যাচ্ছে তার কতশত জিনিস গুছিয়ে নেওয়া বাকি। শান্ত যেতেই নীলাও রুমে আসলো। রুমে আসতেই ফোনের আওয়াজ কানে আসতে ফোনটা সে হাতে নিলো। সাদিদ কল দিচ্ছে।

— ‘ আসসালামু আলাইকুম। ‘
— ‘ ওয়ালাইকুম আসসালাম বউপাখি। কি করো? ‘

নীলা মাথা নিচু করে লাজুক হাসল। এই ছেলেটাও না সবসময় তাকে এসব বলে লজ্জা দিতে থাকে।
নীলা নিচুস্বরে বলল,

— ‘ এতক্ষণ আব্বুর রুমে ছিলাম। আব্বু রাজি হয়েছে। যাওয়ার পারমিশন দিয়েছে। ‘
— ‘ বাহ্ শশুরমশাই তো গ্রেট। বিনা ঝামেলাতেই মেয়ের হানিমুনের ব্যবস্থা করে দিলো। ‘
— ‘ চুপ করুন তো, সবসময় বাজে কথা। ‘
— ‘ আরে বাজে কোথায়? হানিমুনই তো। ‘
— ‘ আব্বু কি এসব জানে? জানলে দুইজনের পা ভেঙে দিবে। ‘
— ‘ বলছে তোমাকে! দেখবে আরও দ্রুত যাবার জন্য উঠে পড়ে লাগবে। আমরা যত দ্রুত কাছাকাছি আসবো তারাও ততদ্রুত নানা-নানু হয়ে যাবে। এমন খুশির খবর থেকে কে বাদ পড়তে চায়? ‘

নীলার মুখ লালাভ বর্ণ ধারণ করেছে। বোধহয় এখন-ই লাল বর্ণে মুখ পুরো জ্বলে যাবে। নীলার নিঃস্তব্ধতা দেখে সাদিদ ঠোঁট কামড়ে নিঃশব্দে হাসল। সে খুব ভালো-ই বুঝতে পাড়ছে অপরপাশে নীলার কি অবস্থা। কিন্তু সে যে অতটাও ভালো নয়। তাই নীলাকে আরও লজ্জায় ফেলতে বলল,

— ‘ বউ, আমি কিন্তু আর ওয়েট করতে পাড়ছি না। কবে নাগাদ যে কাগজপত্রের সব ঝামেলা মিটবে, আর কবে যে তোমাকে একান্তভাবে নিজের কাছে পাব। পাখ, আমি পুরো অধৈর্য্য হয়ে গিয়েছি।
তুমি জানো আমাদের ফাস্ট নাইট নিয়ে ইতিমধ্যে আমি কতশত প্ল্যান করে ফেলেছি? আমি আমাদের বিশেষ মুহূর্তটাকে খুব স্পেশালভাবে কাটাতে চাই। কোনো কিছুর কমতি রাখতে একদমই চাচ্ছি না।
এই তুমি কি শুনছ? কোনো কথা বলছ না কেন? ‘

সাদিদ ফোন হাতে নিয়ে দেখল ফোনটা ইতিমধ্যে কেটে দেওয়া হয়েছে। সে রাগ করল না বরং হাসল। সে ভালো করেই জানে এর
পিছনের কারণটা। তবুও সে তার দুষ্টুমি বুদ্ধিতে ফোনের মেসেজ অপশনে গেল।
মেসেজ টোনের আওয়াজে নীলা চোখ খোলে তাকালো। সাদিদের এসব লজ্জাজনক কথা শুনে এতক্ষণ তার অবস্থা পুরোপুরি কাহিল। লজ্জায় সে কুঁকড়ে যাচ্ছে। নীলার শরীর মৃদু কাঁপছে। সে কাঁপা হাতে ফোনটা চেক করল।

— ‘ এত লজ্জা! কিন্তু পেলেও লাভ নেই বউ। তোমাকে আর ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। আমাকে এত জ্বালানোর ফল, তোমাকে এবার সবগুলো পইপই করে করে ফিরত দিব৷ সুতরাং তৈরি থেকো বউপাখি। সাদিদের ভালোবাসাময় জ্বালা কাকে বলে, এবার তুমি হারে হারে টের পাবে। ‘

নীলা বিছানা ধরে ফ্লোরে বসে গেল। মাথাটা বিছানায় ঠেকিয়ে সে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। শরীর তার অবশের ন্যায় অনুভব হচ্ছে। দূরে থেকেই সাদিদের লজ্জাবাণে নীলা কুঁকড়ে যায়। না জানি যখন একান্তে থাকবে তখন কি অবস্থা হবে? নীলা সেসব ভাবতেই পাড়ছে না। কল্পনা করার শক্তিও তার মধ্যে এখন অনুপস্থিত। সাদিদ দূরে থেকেই তাকে অনবরত লজ্জা দিয়ে শুষে নিচ্ছে।
সামনের দিনগুলোতে কি হবে বা নিজেকে কিভাবে সামলাবে সেটা নীলার কাছে বড্ড অজানা। এখনতো কেবল সময়-ই সঠিক উত্তর দেবার জন্য একমাত্র অবলম্বন।

___________________

অবশেষে দীর্ঘ কয়েকদিনের পাসপোর্ট, ভিসা, রুম বুকিং সহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষে দার্জিলিং যাবার কাঙ্ক্ষিত সময়টা এসে গিয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিভোর নগরী, পাহাড়ে ঘেরা অপূর্ব চিরহরিৎ ভূমির দার্জিলিংয়ে যাওয়া নিয়ে সবাই বেশ উৎসুক। সাদিদ, তানবীর এবং অর্ণব পূর্বে দার্জিলিং ভ্রমণে আসলেও নীলা, শান্ত এবং প্রিয়তীর জন্য এটাই প্রথম। তাই তাদের উত্তেজনাও চরমে। নীলা কিছুতা জড়তা, ইতস্ততায় ভুগলেও সাদিদ আছে পুরোপুরি অস্থির হয়ে। এতটা দিন সে প্রতিটা মুহূর্তে চরম অস্থিরতায় বিরাজ করেছে। সাথে নীলাকেও তার অসহ্যকর লজ্জাবাণে কুঁকড়ে দিয়েছে। নীলার পক্ষে সেসব দাঁত চেপে সহ্য করা ব্যতিত আর কোনো উপায় ছিল না। নতুবা সাদিদ ভালোর ভালো কিন্তু খারাপের একশেষ। তার কথামতো চলতে পাড়লে সে খুব-ই ভালো। কিন্তু সামান্য এদিক-সেদিক হলেই তার অন্তর কাঁপানো ধমক-টমক খেয়ে ফেলতে হয়। আর নীলা এতদ্রুত হার্ট ফেইল করে পরপারগামী হতে চায় না। তাই ভদ্র মেয়ের মতো কথা শুনে ফেলাতেই মঙ্গল।
সাদিদরা গাড়িতে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টে এসে নামল।

নীলা বাস জার্নিতে ক্লান্ত হয়ে যায়। আর ঢাকা থেকে দার্জিলিং জার্নির জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক সড়কপথ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের বুড়িমারি সীমান্ত অতিক্রম করে যাওয়া।
চ্যাংড়াবান্দা দিয়ে ভিসা করা থাকলে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের বুড়িমারি সীমান্তে ইমিগ্রেশনের প্রক্রিয়া শেষ করে, চ্যাংড়াবান্দা থেকে বাসে শিলিগুড়ি চলে আসা যায়। তারপর শিলিগুড়ি জিপ স্টেশন থেকে দার্জিলিংগামী টাটা সুমো বা কমান্ডার জিপের টিকিট কেটে সরাসরি দার্জিলিং চলে আসার পথ। ভাড়া জনপ্রতি ১২০ ভারতীয় রুপির মতো। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলং যেতে প্রায় আড়াই ঘন্টা সময় লাগে।
সাদিদরা এতটা জার্নি সহ্য করতে পাড়লেও নীলার হয়তো সেক্ষেত্রে বেশ কষ্ট হবে। তাই সাদিদ যতটুকু সম্ভব নীলার জন্য সাচ্ছন্দ্যবোধের ব্যবস্থা করেছে। বিমানে গেলে ঢাকা-শিলিগুড়ি লম্বা বাস জার্নিটা কম হবে। তাই তারা বিমানপথে বাগডোগরা পর্যন্ত যাওয়ার প্ল্যান করেছে।
ঢাকা থেকে বিমানে যেতে চাইলে ঢাকা–কলকাতা–বাগডোগরা ফ্লাইটে যেতে হবে। তারপর বাগডোগরা এয়ারপোর্টে পৌঁছে সেখান থেকে ট্যাক্সিতে দার্জিলিং যেতে পারবেন। বাগডোগরা থেকে দার্জিলিয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। ট্যাক্সিতে যেতে সময় লাগবে প্রায় দুই ঘণ্টা ত্রিশ মিনিটের মতো।

মেঘের দেশ স্বপ্নিল ভুবনের দার্জিলিং শহরে এসে পৌঁছাতেই সবার মুখে এক তৃপ্তির রেখা ফুটে উঠল। জার্নির ক্লান্তিটা এই অতি সৌন্দর্যের কাছে নিতান্তই ফিকে মনে হচ্ছে। সবাই চলন্ত ট্যাক্সির জানালা দিয়ে শহরের এই সৌন্দর্য অবলোকন করছে।
সাদিদ একহাতে নীলাকে কাছে টেনে যত্নে আগলে নিলো। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে উঠল,

— ‘ ভালোলাগছে? ‘
— ‘ ভীষণ। খুব সুন্দর, আমি হয়তো ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না! ‘

নীলার চোখে মুখে মুগ্ধতার বহিঃপ্রকাশ দেখে সাদিদও মৃদু হাসল। এগিয়ে এসে নীলার কপালের একপাশে চুমু দিয়ে আদর দিলো। নীলা দ্রুত ট্যাক্সিতে অবস্থিত বাকি সবার দিকে একপলক তাকালো। সবাই তাদের অবস্থা দেখে মুখ টিপে মিটমিটিয়ে হাসছে। নীলা তা দেখে লজ্জায় দ্রুত মাথা নুড়ালো। সাদিদটাও না, বড্ড বেশরম।

তারা দার্জিলিং শহরের ফোর স্টার হোটেল সেন্ট্রাল হেরিটেজে রুম বুকিং করেছে। বাকিদের জন্য দুইটা ডাবল বেডের দুই রুম নেওয়া হয়েছে। আর নীলা সাদিদের জন্য বিগ সাইজের একটা রুম।

নীলা রুমে এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। মুখে অনাবিল খুশির পাশাপাশি অনিচ্ছা সত্ত্বেও কিছুটা ক্লান্তি চলে আসছে। সাদিদ রুমে ডুকে নীলাকে এমন অবস্থায় দেখে হাসল। ল্যাগেজগুলো রেখে নীলার পাশে বসে তার মাথায় আলতো করে হাত বুলালো। মাথায় সাদিদের স্পর্শ পেতেই নীলা চোখ খুলে তাকালো।

— ‘ বেশি কষ্ট হচ্ছে? ‘

নীলা মৃদু হাসল। মাথা ডানে-বামে নাড়িয়ে বলল,

— ‘ না তেমন না। আপনিতো কষ্ট করতে দিলেন-ই না। ‘
— ‘ তারপরও যতটা করেছ তোমার জন্য অনেক। এখন কষ্ট করে আরেকটু উঠো তো। ওয়াসরুমে গিয়ে একটা হট শাওয়ার নাও। তখন দেখবে শরীরটা অনেক ঝরঝরা লাগবে। ‘
— ‘ এখানে তো অনেক ঠান্ডা। এখন শাওয়ার নিতে পারব না। ‘
— ‘ আরে অবুঝ পাখি, গরম পানি দিয়ে করবে। শাওয়ার না নিলে শরীর আরও বেশি মেজমেজ করবে। ততক্ষণে আমি কফি আর হালকা নাস্তার অর্ডার করে দিচ্ছি। ‘
— ‘ আচ্ছা। ‘

নীলা এবার ভাদ্র মেয়ের মতো উঠে বসল। টলতে টলতে সে ওয়াসরুমের দিকে এগিয়ে গেল। সাদিদ সেদিকে তাকিয়ে হাসল। তারপর রুম সার্ভিসকে হট কফি দিতে বলল।
নীলা ফ্রেস হয়ে আসতেই সাদিদও ফ্রেস হয়ে নিলো। কফি আর হালকা নাস্তা করা শেষ হতেই সাদিদ বলে উঠল,

— ‘ পাখি এখনতো প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। আজকে আর কোথাও ঘুরতে যাব না। কাল সকাল সকাল ঘুরতে বেড়িয়ে যাব। এখন তাহলে একটু ঘুমিয়ে নাও। এতটা জার্নির পর একটু ঘুমিয়ে নিলে তোমার ভালো লাগে। কয়েক ঘণ্টা পর উঠে তারপর আবার ডিনার করবে। ‘
— ‘ আপনি ঘুমাবেন না? ‘

সাদিদ মৃদু হেসে বিছানায় শুয়ে নীলার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো। নীলা এতক্ষণ অন্য ভাবনাতে মগ্ন থাকলেও এখন আবারও একঝাঁক লজ্জা এসে তাকে ভর করল। সাদিদের সাথে এইভাবে একরুমে, এক বিছানায় থাকতে প্রথমবার বিধায় নীলার বেশ জড়তা কাজ করছে। নীলাকে মাথা নিচু করে বসে থাকতে দেখে সাদিদ-ই তাকে টান দিয়ে নিজের পাশে শুইয়ে দিলো। দুইজনের উপর মোটা কম্বলটা ভালোকরে দিয়ে দিলো। নীলাকে অন্যপাশে তাকিয়ে থাকতে দেখে সাদিদ বলে উঠল,

— ‘ পাখি, বুকে আসবে? ‘

নীলা সাদিদের মুখের দিকে তাকালো। সবসময় দুষ্টুমি করলেও নীলা জানে সাদিদ কখনও তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর খাটাবে না। নীলার মর্জি ব্যতিত সাদিদ কখন-ই তাকে নিজের কাছে টানবে না। এতটুকু বিশ্বাস তো নীলা সাদিদকে চোখ বন্ধ করেই করতে পারে।
নীলার মুখে ভালোবাসার মানুষটার জন্য সীমাহীন শ্রদ্ধা প্রকাশ পেল। সে ঠোঁটের কোণে হাসি ঝুলিয়ে সাদিদের বুকে মাথা রাখল। নীলা সাদিদের বুকে মাথা রাখতেই সাদিদ তাকে দুইহাতে টেনে নিজের সাথে আর নিবিড়ভাবে মিশিয়ে নিলো। নীলার মাথায় শব্দ করে দীর্ঘ একটা চুমু খেল।

— ‘ তুমি হয়তো কল্পনাও করতে পারবে না আমার আজ কতটা শান্তি অনুভব হচ্ছে। বুকটা এই উষ্ণতার জন্য কতটা পুড়েছে তার হিসাব রাখা দুঃসাধ্য বউ। বুকটা এবার দার্জিলিয়ের পরিবেশের মতোই শীতল হয়ে গেল। ‘

নীলা সাদিদের মুখে এমন কথা শুনে তার বুকে মুখ গোঁজে নিঃশব্দে হাসল।
সাদিদের কাছেও এই মুহূর্তটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তার প্রাণপাখি তার এতটা কাছে। একি বিছানায়, একই কম্বলের নিচে তারা অবস্থান করছে। এমন একটা দিনের প্রত্যাশা সাদিদের কত করেছে সেটা কেবল সে-ই জানে। আর আজ দুইজনে এতটা কাছে আছে, ভাবতেই সাদিদ খুশিতে পুলকিত হচ্ছে। এর থেকে সুখের মুহূর্ত আর কি হতে পরে?
সাদিদ মাথা নিচু করে নীলার দিকে তাকালো। তার চোখের পাতা মৃদু নড়াচড়া করছে। ক্লান্তিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বোধহয় সে ঘুমিয়ে যাবে।
সাদিদ নিজের চোখ বন্ধ করে নীলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।
সাদিদের এসব জার্নিতে প্রবলেম হয় না। সে স্বাভাবিক ভাবেই নীলার মাথায় হাত বুলাচ্ছে। মিনিট দশেক পর-ই সাদিদ তার বুকে নীলার ঘন নিঃশ্বাস অনুভব করতে পাড়ল। তার প্রাণপাখি ঘুমিয়ে পড়েছে।
সাদিদ মৃদু হেসে নীলাকে আস্তে করে বালিয়ে শুইয়ে দিলো। তার একটা ফ্রেশ ঘুম প্রয়োজন। সাদিদ ঝুঁকে এসে একদৃষ্টিতে নীলার মুখটার দিকে তাকিয়ে রইল। তার ডান গালে হাত রেখে বাম গালে চুমু দিলো। একে একে নীলার গালে, কপালে গুটিকয়েক চুমু খেল। নীলার ক্লান্তিতে এসবে বিন্দুমাত্র হুঁশ নেই। সাদিদ আবারও নীলাকে এমন গভীরভাবে ঘুমাতে দেখে হাসল। আবারও সে কপালে দীর্ঘ একটা চুমু খেয়ে আদর করল।
তারপর আস্তে করে নীলার পাশে শুয়ে তাকে নিজের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিলো। নীলা ঘুমিয়ে পড়লেও সাদিদের যে ঘুম হবে না। একে তো নীলা তার এতটা কাছে রয়েছে। দ্বিতীয়ত তাদের মধ্যে বৈধ সম্পর্ক। নিজের স্ত্রী এতটা কাছে থেকেও দূরে থাকলে এটা যে সহ্য করা যায় না। সাদিদের জন্যতো আরও কষ্টদায়ক। সে যে নীলাকে খুব বেশি চায়। সেটা হোক শারীরিক বা মানসিক। কোনো ক্ষেত্রে-ই নীলার প্রতি সামান্য দূরত্বটা সে সহ্য করতে পারে না।
কিন্তু সাদিদ তাকে ভীষণ ভালোভাবে। তাই নীলাকে ভালোবাসতে চায়, কষ্ট দিতে নয়। নীলা যে এখন প্রচন্ড ক্লান্ত সেটা সাদিদের বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হচ্ছে না। তাইতো এতকাছে থেকেও সে নীলাকে কাছে টানেনি। নীলা হয়তো সাদিদের কথা ভেবে না করতে পারত না। কিন্তু সাদিদ যে এমনটা করবে না। এই মেয়টাকে ভালোবাসে সে। সে তাকে সীমাহীন চায়। দুষ্টুমি করে হয়তো বারবার লজ্জায় ফেলে, বিনা কারণে হেনস্তা করে। কিন্তু তাই বলে যে তার কষ্ট বুঝবে না এমন প্রেমিক বা স্বামী সে নয়।
সাদিদ নীলার মাথায় হাত বুলিয়ে তার ঘুমন্ত মুখটার দিকে আবারও তাকালো। একদৃষ্টিতে মুগ্ধ চোখে নিজের প্রাণপাখিটাকে দেখতে লাগল। এ মুগ্ধতার যেন কোনো শেষ নেই। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর, একটা সময় সে আবেগময় কন্ঠে নিচুস্বরে বলে উঠল,

— ‘ ভালোবাসি পাখি। খুব বেশি। ‘

#চলবে…

[ প্রিয়পাঠক, আমি কতটা ভ্রমণপিপাসু আপনারা বোধহয় সেই বিষয়ে তেমন একটা আন্দাজ করতে পারেননি। তাই গতপর্বের দেওয়া উত্তর পর্বে সবাই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের নামগুলো কমেন্টে উত্তর হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এক-তৃতীয়াংশ আপনারা সাজেক হিসেবে উত্তর দিয়েছেন। আমি বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত আপনাদের সঠিক উত্তরের সামান্য হিন্ট পর্যন্ত দিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কারও উত্তর এখন পর্যন্ত সঠিক হয়নি।

✔সঠিক উত্তর হচ্ছে – ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দার্জিলিং।

আপনারা কেউ দুঃখ পাবেন না। যদি দুই-তিনজন ভুল উত্তর দিতো তাহলে আমি তারপরও তাদের প্রত্যেককে “সেরিনা বইটি ” পার্সেল করে পাঠিয়ে দিতাম। কিন্তু এতগুলো কপিতো দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই আপনারা প্লিজ হতাশ হবেন না। ইনশাআল্লাহ আমার প্রিয় জিনিস “বই” উপহারের পর্ব ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here