অপরাধী পর্ব-৯

0
1295

#অপরাধী
#লেখক_অন্তর
পর্ব_৯
,
,
,
ঘুম ভাঙ্গলো বটে তবে চোখে এখনো ঘুম,কিন্তু চোখ মেলতেই পারতেছি না আমি!আস্তে আস্তে করে চোখ খুলতে চেষ্টা করতে লাগলাম আর আস্তে আস্তে চোখ খুললাম, চোখ খুলতেই আমি পূরাই হতাশ হয়ে গেলাম। কারন দেখলাম সাদা জামা পড়া অবস্থায় রিদিকা আমার খাটে বসে আছে তাকে এভাবে হুট করে দেখেই আমি প্রায় ভয় পেয়ে গেছিলাম।

–তু তু তুমি!এখানে কি করতেছিলা!(আমি)

–না মানে তোমাকে ডাকতে আসছিলাম আর দেখতেছি তুমি পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছো!কিন্তু এখন তোমার চেহারার এই এক্সপ্রেশন কেন!(রিদিকা)

–যদি কোনো বাচ্চা ছেলের সামনে হঠাৎ করে একটা ভুতনি এসে যায় তাহলে সেই বাচ্চা ছেলেটার কেমন এক্সপ্রেশন আসা করো তুমি!(আমি ভিত হয়ে)

–ঐ কি বললা, আমি ভুতনি!(রিদিকা রেগে)

–তো নয়তো কি,সকাল সকাল হুট করে এভাবে সাদা জামা পড়ে ভুতনির মতো সামনে বসে থাকে নাকি,আমি যে ভয়টা পাইছি,আমার হাটবিট বেড়ে এক অবস্থা সাথে কলিজাটাও অল্পের জন্য মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাইতো!,!আর তাছাড়াও আমাকে ডাকতে আসতে হয় নাকি,আমাকে তো সৌরভ ডাক দিতে পারতো!সে তো আমার সাথে রুমে আছে…..!(আমি)

আমি পাশে তাকিয়ে দেখি সৌরভ নাই,

–কিরে ভাই এতে কখন উঠলো!আর আমাকে একটা ডাকও দিলো না!(আমি)

–সৌরভ ভাইয়া নিচে ব্যস্থ আর আংকেল তোমার কথা জিজ্ঞেসা করছে পরে সৌরভ ভাইয়া বলে তুমি নাকি পড়ে পড়ে ঘুমাইতেছো কয়েকবার ডাকছিলো কিন্তু তুমি নাকি উঠো নাই,পরে সে চলে যায়,পরে আমাকে সৌরভ ভাইয়াই বলছে তোমাকে ডাক দিতে!(রিদিকা)

আসলেই ঘুমন্ত অবস্থায় যদি কেউ আমাকে ডাকে তাহলে আমি শুনি না যদি আমার শরীর ঝাকি দেয় তাহলেই বুঝতে পারি কেউ আমাকে ডাকতেছে কিনা!কারন ভাই একদিক দিয়ে আমি যেমন চা পাগলা অন্যদিকে আমি ঘুমকেও প্রচুর ভালোবাসি, হয়তো samz vai আমার মতো ঘুম পাগলা তাই সে ঘুম ভালোবাসি গানটা গাইছিলো।

–তো কই ডাকছো আমাকে! সেই তো ভুতনির মতো খাটে চুপচাপ বসেছিলা!আচ্ছা বাদ দাও,যাও আমি আসতেছি!(আমি)

–যাও আসতেছি মানে! এই তুমি আমাকে রুম থেকে তাড়ায় দিচ্ছো!(রিদিকা)

–খোদারে আমি কখন রুম থেকে তাড়ায় দিলাম, জাষ্ট বললাম আচ্ছা যাও আমি আসতেছি,যদি রুম থেকে তাড়ায় দিতাম তাহলে তো ডাইরেক্ট এই ভাবে বলতাম, এই ছ্যামড়ি বাহির হ আমার রুম থেকে, কিন্তু আমি তা করি নাই,মানে কথায় কথায় খালি দোষ খুজে বেড়ায় !(আমি)

–এই তুমি আমাকে আবার ভুতনি বললা! আর এক মিনিট কি বললা আমি ছ্যামড়ি!তোমাকে তো আমি (রিদিরা)

বলেই ডাইরেক্ট আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে, আর সোজা আমার গলা চেপে ধরে,

–রিদিকা,আরে মরে যাবো তো ছাড়ো!(আমি)

–আমাকে ভুতনি বলছো তাই না এখন আবার ছ্যামড়িও বলা হইছে, (রিদিকা)

–আরে আজব, চোখ খুলতেই হুট করে সাদা জামা পড়া অবস্থায় তোমাকে সামনে দেখলাম, তোমাকে তো ভুতনি বলবোই আর কথা রইলো ছ্যামড়ি বলা সেটা বরিশাইল্লা ভাষায় মেয়েদের বলা ছ্যামড়ি হয়,রিদিকা গলায় ব্যাথা পাইতেছি!আমার কিছু হইছে আমার বউকে কি জবার দিবা!(আমি)

–আমি তো ভুতনি তাই না, তাই তো গলা চিপে ধরছি আর বউকে জবার দেওয়ার কি আছে! বউই তো তোমার গলা চিপে ধরছে! (রিদিকা)

বলেই রিদিকা সাথে সাথে চিব্বায় কামড় দেয়,

–মানে!(আমি অবাক হয়ে)

সাথে সাথে রিদিকা আমার গলা ছেড়ে দেয়, আর উঠে চলে যেতে লাগে কিন্তু যাওয়ার আগে একটু থেমে সে আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দেয়, সেই হাসিটা দিয়ে রিদিকা কি বুঝাতে চাইছে তা বুঝলাম না, আর বারবার সে কি বলতেছে এই সব,কি বুঝাতে চাচ্ছে আমাকে,মানে তার কিছু কিছু কথা কাজ আমাকে সত্যি চিন্তায় ফেলে যায়,কেন জানি রিদিকার এই সকল কার্য্যক্রম আমাকে অন্য কিছু ইংগিত করতেছে, এখন এই সব নিয়ে ভাবাটা ঠিক হবে না এই সব নিয়ে অন্য সময় ভাববো যাই হোক বাদ দিলাম, এরপর আমিও ফ্রেস হতে চলে গেলাম ফ্রেস হয়ে নিলাম এরপর একটু পরিপাটি হয়ে নিচে গেলাম দেখলাম সৌরভ সোফায় বসে আছে আমিও তার কাছে গেলাম!

–কিরে হারামী, তুই উঠলি আমাকে ডাক দিলি না কেন!(আমি)

–ভাই,আপনারে বহুত ডাকছি কিন্তু তো আমারে পাত্তাই দেন নাই,ঘুমের জগতে ভালোভাবেই চলে গেছিলেন!পরে তোর জন রিদিকাকে পাঠালাম!(সৌরভ)

–ভাই,দরকার ছিলো এতো কাহিনীর, অল্পের জন্য বেচে গেলাম নাহলে হাট এটাক করে মরতাম!(আমি)

–মানে, হাট এটাকে মরতি মানে টা কি!(সৌরভ)

–ভাই কি সুন্দর করে ঘুম থেকে উঠলাম উঠতেই দেখি সাদা জামা পড়ে এক ভুতনি সামনে বসে আছে, তাকে দেখে আমার কলিজা অল্পের জন্য বাহির হয়ে যাইতো,ভাই সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার পর হঠাৎ করে দেখিস যে কেউ তোর বসে আছে তাও সাদা জামা পড়ে তাহলে তোর কেমন্টা লাগবে!আমি তো ভাই বেহোস হতে হতে বেচে গেলাম,প্রথমে চেহারা খেয়াল করি নাই পরে দেখি তাই বেশি ভয় পাইছিলাম, পরে দেখি এটা তো বাসার ভুতনি!ভাই তুই যদি আমাকে ঝাকি দিয়ে ডেকে দিতি তাহলে এই রকম ভায় পাইতাম না(আমি)

আমার কথা শুনে সৌরভ তো বেশ হাসতেছে, এই দিকে রিদিকাও মুন্নিও আসলো আমাদের কাছে তারাও সোফায় বসলো।রিদিকাকে দেখেই আমার সকালে ঘটনাটা মনে পড়ে গেলো,তবে আমি দেখতেছি দিন দিন মেয়েটা আমার প্রতি যে বিহেবার করতেছে তা মোটেও আমার থেকে ভালো লাগতেছে না মনে হচ্ছে তার এই সকল আচরন সামনে আমার জন্য খারাপ পরিস্তিতি বানিয়ে দিতে পারে তাই আর যাই হোক এখন থেকেই রিদিকার থেকে একটু দূরুত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। কারন আমি চাই না এমন কোনো পরিস্থিতির সমুক্ষীন হতে যার জন্য মামা মামী আমাকে খারাপ মনে করুন।তারা আমার জন্য যা করছে আমি চাই না আমি এমন কোনো কাজ করি যার জন্য তারা কষ্ট পাক ও তাদের কাছে আমি ছোট হই।

তখনি আমাদের সকলের নাস্তার জন্য ডাক দেয় আর আমরাও টেবিলে যেতে লাগি সেখানে গিয়ে আমি যখনি একটা চেয়ারে বসতে যাবো ঠিক তখনি সেখানে আমার পাশের চেয়ার খালি থাকাতে রিদিকা বসে যায়,আর বসেই আমাকে তার পাশের চেয়ারে বসতে বলে, কিন্তু আমি চাই রিদিকার থেকে একটু দূরে থাকতে তাই আমি রিদিকার পাশে চেয়ারে না বসে অন্যসাইডে বসি,আর যেখানে আমাকে বসতে বলা হয় সেখানে সৌরভ বসে, রিদিকাও আমার দিকে এক নজর তাকায় কিন্তু আমি তার সেই দেখা দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে।এরপর আমরা নাস্তা করে নি, নাস্তা শেষ করে আমি আংকেলকে খুজতে লাগি কারন সৌরভ বলছিলো আংকেল নাকি আমাকে খুজছে, তাই আমারও উচিত তার কাছে যাওয়া। কারন আংকেল আমাকে যেহুতু খুজছে নিশ্চই কোনো না কোনো দরকারেই হবে।বাসার একজন কাজের লোককে আংকেলের সম্পকে জিজ্ঞেসা করি,সেও বলে আংকেল নাকি রুমে আছে তাই আমিও আংকেলের রুমের দিকে গেলাম,রুমের দরজার সামনে গিয়ে দরজায় নক করলাম আর আংকেলও ভিতরে যেতে বলে আমিও ভিতরে গেলাম সেখানে দেখলাম আংকেল সুট প্যান্ট বের করে বসে আছে।

–আংকেল আমাকে খুজছিলেন!(আমি)

–হ্যা অন্তর,তোমাকে খুজছিলাম আসলে গাড়ি সাজাতে দিছিলাম কিন্তু এটার এখনো কোনো খোজ খবর পাই নাই,ড্রাইবারকেও কল দিলাম অনেকবার কিন্তু রিসিব করতেছে না তারপর যেখানে পাঠাইছি সেখানে ওনারেও কল রিসিব করতেছে না, তুমি কি একটু গিয়ে দেখতে পারবা ব্যাপারটা কি! (আংকেল)

–আচ্ছা আংকেল আমি দেখতেছি আপনি চিন্তা করিয়েন না,(আমি)

বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম আর সোজা সৌরভ এর কাছে গেলাম,কারন সৌরভের একটা বাইক আছে আর আমি সেটা নিয়েই সেখানে যাবো যেখানে গাড়ি সাজাতে দিছে।

–সৌরভ তোর বাইকের চাবিটা দে তো!(আমি)

–এই নে, কেন কি হইছে!কই যাবি!(সৌরভ)

–না আসলে গাড়ি সাজাতে দিছিলো কিন্তু এখনো কোনো খোজ নেই তাই আংকেল বলছে গিয়ে দেখতে কি হইছে। (আমি)

এরপর আমি বাইকের চাবি নিয়ে সোজা বাইকের কাছে চলে যাই আর সেখানে গিয়ে বাইক স্টাট দিতেই দেখলাম গাড়িও উপস্থিত।তাই আমি আবার বাইকের স্টাট অফ করে দিলাম আর বিয়ে গাড়ি সাইড করতেই আমি সেই গাড়ির ড্রাইবারের কাছে গেলাম।

–আরে আংকেল এতো লেট কেন,আর আপনাকে তো কল দেওয়া হইছিলো রিসিব করতেন না কেন,অন্তত কলটা তো রিসিব করবেন!(আমি)

–আসলে আমার মোবাইল ভুলে বাড়িতেই রয়ে গেছে,(ড্রাইবার আংকেল)

–আচ্ছা বাদ দেন,যান ভিতরে গিয়ে নাস্তা করে নেন,আর আমি আংকেল্কে গাড়ি আসার খবর টা জানাই দি।(আমি)

এরপর আমি বাইক থেকে নেমে সোজা আংকেলের কাছে চলে যাই আর তাকে গাড়ি আসার খবর টা বলি ও ড্রাইবার কল রিসিব না করার কারনটাও বলে দেই,।

–ঠিক আছে সমস্যা নাই, শুনো অন্তর পূরা বিয়ের অনুষ্ঠানে তুমি সৌরভের সাথে থাকবা আর কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবা!(আংকেল)

–জি আংকেল,সমস্যা নাই আমি আছি আসা করি কোনো সমস্যা হবে না আর যদিও সমস্যা হয় আমি নিজে সামলানোর চেষ্টা করবো, যদি বেশি গুরুতর হয় তাহলে আপনাকে জানাবো(আমি)

এরপর আমিও চলে যাই, আমার মনে পড়লো আমার ব্যাগ গুলো আমার আগের রুমেই আছে আর সেখানেই আমার বিয়েতে যেগুলো পড়বো সেগুলো আছে তাই আমিও আমার সেই রুমের দিকে যেতে লাগি, রুমের সামনে গিয়ে শুনলাম রুমের ভিতরে মানুষ আছে, এখন কি করবো!এরপর চিন্তা করলাম সৌরভের কাছে গিয়ে ওরে বলবো আমার ব্যাগ গুলো বাহির করে দিতে রুম থেকে!তাই আমিও সৌরভের রুমে চলে যাই আর সেখানে গিয়ে আগে দরজায় নক করলাম।

–এই সৌরভ ভিতরে আছিস!(আমি)

–হ্যা আছি,ভিতরে আয়!(সৌরভ)

এরপর আমিও ভিতরে যাই আর সেখামে গিয়ে দেখলাম সৌরভ তার সাথে রিদিকা মুন্নিও আছে,!

–দোস্ত একটা হেল্প লাগবে, (আমি)

–কি হেল্প বল!(সৌরভ)

এরপর আমি সৌরভকে আমার ব্যাগের কথা বলি।

–আচ্ছা তুই আমার সাথে আয়!(সৌরভ)

এরপর আমি সৌরভের সাথে সেই রুমে যাই সেখানে গিয়ে আমার ব্যাগ গুলো নিয়ে সৌরভের রুমে চলে আসি!এরপর আর কোনো কাজ নাই তাই সৌরভের সাথে বসে বসে আড্ডা দিতে লাগি আর তার মজা নিতে লাগি।এরপর যাওয়ার সময় হয়ে আসে তাই সকলে রেডি হতে ব্যস্থ এই দিকে সৌরভও সেরোয়ানি পাগ্রিটাও পড়ে একদম রেড়ি আর আমি এখনো রেডিই হলাম না, হবোই বা কি করে জামাই রেডি করতে আমি শেষ।

–ভাইরে কি গরম!আর ওই তুই রেডি হচ্ছিস না! (সৌরভ)

–আরে ভাই সময়টা পাইলাম কই,(আমি)

–যা রেডি হয়ে নে,(সৌরভ)

–হ্যা যাচ্ছি!(আমি)

আমিও ব্যাগ থেকে সার্ট প্যান্ট বের করে নিলাম আর সেটা নিয়ে যখনি রেডি হতে যাবো তখনি কেউ একজন দরজা নক করলো!

–অন্তর আছিস!(মামা)

–হ্যা মামা আছি,ভিতরে আসো‌!(আমি)

এরপর দেখলাম মামা মামী রুমে আসলো!আর তাদের কাছে কিছু প্যাকট দেখতে পাচ্ছি আমি!

–বাহ বাহ, দুলাতো দেখি রেডি হয়ে গেছে।যাক ভালো! কিরে অন্তর তুই রেডি হস নাই যে!আর তোর হাতে কি এই গুলো!(মামা)

–তেমন কিছু না মামা সার্ট আর প্যান্ট আর কি!(আমি)

–অহ,আচ্ছা ঐগুলো তোর খাটের উপর রেখে এই দিকে আয় তো একটু!(মামা)

আমিও মামার কথা মতো সার্ট আর প্যান্ট খাটের উপর রেখে মামা মামীর কাছে গেলাম।

–হ্যা বলো কিছু লাগবে!(আমি)

–হ্যা দেখ তো এই গুলো কেমন! (মামা)

–কি মামা!(আমি)

এরপর মামা মামী আমাকে কিছু প্যাকেট দেয়, আমিও প্যাকেট গুলো খুলে দেখি এখানে একটা সাদা কালারের সার্ট একটা নেভিব্লু পেন্ট ও আর একটাতে নেবিব্লু কোট আছে।

–মামা এই গুলো তো সুন্দর আছে, কার জন্য নিছো এই গুলো!(আমি)

–যার জন্যই নিয়ে থাক তুই একবার পড়ে দেখ তো!(মামী)

–কিহহ,আমি পড়বো, আরে মামী পাগল হইছো নাকি,এই জিনিস গুলো আমি কেন পড়বো,এই গুলো যার জন্য নিছো তাকেই দাও!আর তাছাড়াও আমি কোট পড়ি না।(আমি)

–পড়িস না মানে, আজকে পড়তেই হবে তোকে,আমি আর তোর আংকেল কতো সুন্দর করে কোট প্যান্ট পড়লাম আর তুই পড়বি না এটা কোনো কথা,আর তুই আমার ভাগিনা বুঝছিস মামা স্টান্ডার্ড হলে ভাগিনা কেমনে সিম্পল হবে সেও মামার মতোই স্টান্ডার্ড হতেই হবে নাহলে আমাদের সম্মান থাকবে! পরে লোকজন বলবে মামা কি সুন্দর ভাবে আসলো আর তার ভাগিনা এই ভাবে চলে আসলো!(মামা)

–ধুর মামা, লোক জনের কথা কান দিয়ে লাভ নাই,আর আমার এই সব পড়তে ইচ্ছা করে না,চাইলে আমিও তো একটা কোট নিতে পারতাম কিন্তু ভালো লাগে না, চিন্তা করলাম সার্ট ইনকরে পড়বো, আর আমার কোট লাগেও না।(আমি)

–চুপ, একদম চুপ, কোনো কথা বলবি না, মামা যেটা দিছি সেটাই নিবি,কোনো বার্তি কথা বলবি না, আমি চাইছি এইগুলো পড়বি মানে পড়বি,তোর মামী আর আমি মিলে কতো কষ্ট করে এই গুলো আনলাম আর আমাদের ফিরিয়ে দিবি!(মামা)

— কিন্তু মামা আমি কোট পড়ি না। (আমি)

–এখন থেকে পড়বি,(মামা)

–নাকি তুই আমাদের তোর কেউই ভাবিস না!থাক পড়িস না বুঝছি আমরা তোর কেউই না!(মামী)

–ওরে ভাইরে আবার ইমোশনাল ব্লেকমেইল,(আমি)

–আসলে ঠিক বলছে, তুই আমাদের তোর কেউই ভাবিস না তাই আমাদের ফিরিয়ে দিচ্ছিস, থাক লাগবে না। এই চলো এখানে থেকে সময় নষ্ট করে লাভ নেই,আমরা ওর কেউই না। (মামা)

–অকে ফাইন পড়তেছি!ইমোশনাল ড্রামা বন্ধ করো দুই জনেই!(আমি)

–আচ্ছা যা তাড়াতাড়ি পড়ে আয়।আমরা দেখতে চাই তোকে কেমন লাগে এই কোট প্যান্টে! (মামী)

আমি সেই প্যাকেট নিয়ে যেতে লাগি আর দেখি সৌরভ সালা হাসতেছে আমাদের কান্ড দেখে।আমি আস্তে করে বাথরুমের ভিতরে যাই এরপর সেইগুলো পড়তে লাগি আমার নিজের থেকেই কেমন যেন অস্থী বোধ হচ্ছে, হবেই না কেন যেই ছেলে আজ পর্যন্ত কোট প্যান্ট পড়ে নাই খালি সাট ইন করেই সামাল দিছে তাকে শেষ মেষ কোট পড়তে হচ্ছে তাও ইমোশনাল ব্লেকমেইল হয়ে!আমিও সেই গুলো পড়ে বাথরুম থেকে বের হলাম, বের হতেই মামা মামী আমার দিকে অবাক চোখে তাকায় আছে, আমি বুঝতে পারছি আমাকে বলদের মতোই লাগবে কারন আজ পর্যন্ত কোট প্যান্ট আমি পড়ি নাই,যার জন্য এই সবে নিজেকে কেমন লাগবে তা অজানা!

–জানি আমাকে খুব বাজে লাগতেছে, এভাবে দেখে লাভ নাই, আমি বলছিতো আমাকে এই সবে মানাবে না, কেন আমার ইজ্জতের পিছনে পড়ে আছো তোমরা!(আমি)

–মাশআল্লাহ,বেশ সুন্দর লাগতেছে তোকে!(মামী)

–মামী পাম দিও না, আমি জানি আমাকে বাজে দেখাবে, তাই।মিথ্যা কথা কম বলো!(আমি)

–তুই একবার আয়নার সামনে গিয়ে দাড়া এরপর বলিস তোকে কেমন লাগতেছে! (মামা)

–মামা দাড়াতে হবে না আমি জানি এই সব আমার জন্য না। (আমি)

–নারে দোস্ত,তোকে মানাইছে এটাতে! তুই একবার আয়না দেখ!(সৌরভ)

আমি জানি না তাদের কি হইছে, তাই আমিও আয়নায় সামনে দাড়ালাম,সেখানে গিয়ে নিজেকে দেখেই অবাক হয়ে গেলাম,কারন আমি ভাবতেও পারি নাই কোট প্যান্টে আমাকে এমন দেখাবে, আমি নিজেকে আয়নায় দেখে নিজেই প্রায় অবাক আর মজার বেপার হলো এই সব আমার বডির সাথে মিলে গেছে, মানে বলতেগেলে পার্ফেক্ট সাইজ কিন্তু কিভাবে!আর আয়নার সামনে আমি নিজেকে দেখে পূরাই নিস্তব্দ!

–কিরে, এভার কি বলিস!বল!(মামা)

আমি কি বলবো পূরাই নিস্তব্দ হয়েই রইলাম,এরই মধ্যে আংকেলের ডাক আসে আর বলে সৌরভকে নিয়ে বের হতে।

এরপর আর কি আমিও আর একটু পরিপাটি হয়ে মামা মামী সহ সৌরভকে নিয়ে বের হলাম আর হল রুমের দিকে যেতে লাগি, হল রুমের দিকে যাচ্ছি আর সেখানে আংকেল আন্টি রিদিকা ও মুন্নি উপস্থিত!

–আরে দেরি হয়ে যাচ্ছে তো!আরে অন্তর তোমাকে তো কোট প্যান্টে বেশ মানাইছে, (আংকেল)

–আসলেই বাবা,তোমাকে বেশ সুন্দর লাগতেছে কোট প্যান্টে, (আন্টি)

একত আমি একটু uneasy feel করতেছি এই কোট প্যান্টে এবার এরাও আমাকে এভাবে বলে আরো uneasy feel করাচ্ছে!

আমি দেখলাম রিদিকা ও মুন্নি আমার দিকে বেশ অবাক চোখেই তাকিয়ে আছে বিশেষ করে রিদিকা, তবে আমি খেয়াল করলাম হলুদের অনুষ্ঠানের মতো আমাদের বিয়ের পোষাকের কালারও ম্যাচ হয়ে গেলো!এটা কি করে সম্ভব।সব কিছুই রিদিকার সাথে মেলাটা আমার মোটেও ভালো ফিল করাচ্ছে।

–আচ্ছা দেরি হয়ে যাচ্ছে, অন্তর তুমি সৌরভকে নিয়ে তার গাড়ি করে ক্লাবে আসো আমরা যাচ্ছি!ও হ্যা সাথে রিদিকা ও মুন্নিকে রাখিও।(আংকেল)

–জি আংকেল(আমি)

এরপর আমরা চারজনেই গাড়িতে বসলাম সৌরভের সাথে রিদিকা মুন্নি বসলো আর আমি ড্রাইবারের সাথে বসলাম।এরপর গাড়ি যেতে লাগে ক্লাবে যেখানে বিয়েটা হবে।কিছুক্ষনের মধ্যে আমরা পোছে যাই ক্লাবের গেটে তবে পূরা রাস্তায় রিদিকা পিছন থেকেই আমাকে দেখে যাচ্ছিলো যা আমি গাড়ির আয়না দিয়ে আড়ালে দেখি,এরপর আমরা গেট থেকে নেমে যাই তখনি রিদিকা আমার পাশে এসে দাড়ায়!

–বাহ খুব সুন্দর লাগতেছো তো তোমাকে!(রিদিকা)

–জি থ্যাংইউ!(আমি)

–তবে তোমার হাতটা না একটু খালি খালি লাগতেছে! (রিদিকা)

আসলেই আমার হাত খালি কারন আমি সাধারনত আমি ঘড়ি ইউজ করি কিন্তু গতপরশু থেকেই আমার ঘড়িটা খুজে পাচ্ছি না, অথচ আমার মনেই আছে আমি ঘড়িটা ঠিক আমার মাথার বালিশের কাছেই রাখছিলাম!পরে চিন্তা করছিলাম একটা ঘড়ি কিনবো কিন্তু ব্যস্থতার মধ্যে সেটাও কেনা হয় নাই!আবার যখন মার্কেটে যাওয়া হয় তখন ঘড়ির কথা মাথায় থাকে না।

–সমস্যা নেই!হাত খালি হলেও আমার চলবে (আমি)

–দাঁড়াও এক মিনিট (রিদিকা)

বলেই তার ব্যাগ থেকে একটা ছোট বক্স বের করে আর সেটা খুলতেই দেখি একটা জেন্টস ঘড়ি,সেটা এটা নিয়েই মুহুত্তের মধ্যেই আমার হাতে পড়িয়ে দিলো,আমি তা দেখে থ হয়ে গেলাম,

–এই, তুমি আমাকে এই ঘড়িটা কেন পড়ালে! (আমি)

–কোট প্যান্ট পড়ছো অথচ হাতে ঘড়ি নেই, বেপারটা জমে না তাই পড়িয়ে দিলাম!(রিদিকা)

–কিন্তু আমি তো বলছিই ঘড়ি ছাড়া চালিয়ে নিবো,আর হুট করেই তোমার কাছে এই ঘড়িটা কই থেকে আসলো!ঘড়িটা কই পাইছো!(আমি)

–যেখান থেকে পাই না কেন,বা আসুক না কেন সেটা তোমার দরকার নেই,পড়াই দিছি সো পড়ে থাকো!

এরই মধ্যে গেটে কার্যক্রম শুরু হয়ে গেলো তাই রিদিকাকে আর কিছুই বলতে পারি নাই, দুলাকে তার শালা ও শালিকাগন স্বাগতম জানাচ্ছে, দুলাকে ভালো করে স্বাগতম জানানো শেষ করে আমাদের ভিতরে আসতে দেয়, বেচারা দুলা ভালো ভাবেই লুটে গেছে শালিকাগন দের কাছে, এরপর আমরা ক্লাবের ভিতরে যেতে লাগি সেখানে নরমালি একটা রেষ্ট রুম আছে আমিও সৌরভকে নিয়ে সেখানে যাই,সৌরভকে নিয়ে সেখানে বসতেই দেখি আমার মোবাইলে কল আসে দেখলাম তানভির কল দিচ্ছে আমিও রিসিব করলাম কিন্তু সেখানে নেটে প্রচুর সমস্যা করতেছে তাই কথা বুঝা যাচ্ছে না তাই আমিও সৌরভকে বসিয়ে রেখে বাহিরে গেলাম কথা বলতে আবার কল আসতেই আমি রিসিব করে অন্য মনস্ক হত্তেই হুট করেই কেউএকজনের সাথে আমার ধাক্কা লেগে যায়, ভাগ্যিস মোবাইলটা শক্ত করেই ধরছি নাহলে তো কলিজায় সেই লেভেলের আঘাত লাগতো,আমি দেখলাম একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খাই আর ধাক্কা খাওয়াতে মেয়েটা নিচে পড়ে গেছে!

–Im Extremely sorry আপু!(আমি মেয়েটার দিকে হাত এগিয়ে দিয়ে)

মেয়েটার মাথা ঝুকে ছিলো তাই প্রথমে চেহারা দেখি নাই যখনি মেয়েটা মাথা উঠালো আমি সাথে সাথে আমি তাকে দেখেই আমি নিস্তব্দ হয়ে গেলাম।

চলবে…………..
ভুলক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর লাইক ও গল্প ভিত্তিক কমেন্ট করে পাশে থাকুন।।সেয়ার করুন আর পরর্বতি পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
পার্ট 10
https://www.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/399279208734002/
পার্ট 8
https://m.facebook.com/groups/315195763809014/permalink/398329612162295/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here