অপেক্ষার প্রহর পর্ব-৪

0
978

অপেক্ষার প্রহর (পর্ব- ৪)
ফরিদা বেগমের শরীরটা ভাল যাচ্ছে না কয়েকদিন ধরে।একটু পরিশ্রম করলেই কাহিল লাগে। তারপর আবার সকাল থেকে অনেক কাজ করতে হচ্ছে আজ। কাজের লোক ২জন। পারুলের বাড়ি পাশেই কয়েকবাড়ি পরে।সে এসে ছুটা কাজ করে দিয়ে যায়। আরেকটা মেয়ে আছে, শেফালী নাম।চরে বাড়ি। এখন ধানের মৌসুম।তাই মেয়েটা ছুটি নিয়ে বাড়ি গেছে। ওই ঘরের বাকি কাজ করে। শেফালি না থাকায় এখন ঘরের কাজগুলো ফরিদাকে করতে হচ্ছে।এত কাজ করে হাঁপিয়ে উঠেছেন। শফিককে ফোন করতে হবে। ছেলেটা নতুন বাসায় উঠেছে, ওর খবর নিতে হবে।কাল রাতে কথা হয়েছিল, তখনও সবকিছু গোছান হয়নি।ফরিদা চাচ্ছিলেন আরও পরে বাসা ভাড়া নিতে, হাসানের পরীক্ষা শেষে।শফিকের বাবা জামিলুর রহমানই তাড়া দিয়ে ছেলেটাকে দিয়ে বাসা ভাড়া করালেন। একটা বাসা নেয়া মানে তো আর চারটি খানি কথা না।নতুন করে আসবাবপত্র কেনা, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা ইত্যাদি নানা ধরণের কাজ আছে। এগুলো গুছিয়ে উঠতে সময় লাগবে। তাই শফিককে তাড়াতাড়ি বাসা ভাড়া নিতে হল।
বাসা নিয়ে একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। শফিকের বিয়ে হলে তো নতুন করে বাসা নিতেই হবে।এবার ছেলেকে বিয়ে দিবেন ফরিদা। কয়েকটা পাত্রীর ছবি-বায়োডাটা আছে ফরিদার কাছে। গ্রামের মেয়ে দেখেই বিয়ে দিবেন ফরিদা। ঐসব শহুরে মেয়ের পাল্লায় পড়তে দিবেন না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ছেলের বিয়ে দিতে চান ফরিদা। এতদিন শফিককে অনেকবার বিয়ের কথা বলেছেন। ছেলের এক কথা- আগে Established হই, তারপর না হয় বিয়ের জন্য দেখা যাবে। পাস করার পর ৪ বছর হয়ে গেছে। চাকরীতে রোজগারও তেমন খারাপ না। তাই ফরিদা আর দেরী করতে চান না। দেরি করলে ছেলের মতিগতি আবার কি হয় আল্লাহই জানে। এইত শফিকের বন্ধু সুদীপ্ত একটা মুসলমান পতিতাকে বিয়ে করেছে। ফরিদা সুদীপ্তকে পছন্দ করেন কিন্তু এই বিয়েটা কেন জানি ফরিদা মেনে নিতে পারছেন না। শফিকের কাছে সুদীপ্তর বউ এর ছবি দেখেছেন।অনেক সুন্দর দেখতে।কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়।
সুদীপ্ত ছেলেটা ফরিদার জীবনে এক আশীর্বাদ। ফরিদার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।মায়ের জন্য কিডনির খোঁজে পাগল হয়ে গিয়েছিল শফিক।কারও সাথেই টিস্যু আর ব্লাড স্যাম্পল ম্যাচ করছিল না।একমাত্র সুদীপ্তর সাথে ম্যাচ করে। সুদীপ্তর একটা কিডনি নিয়ে বেঁচে আছেন ফরিদা। তাই ছেলেটার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ ফরিদা আর শফিক। শফিকের বাবা জামিলুর রহমান প্রচণ্ড ধর্মপ্রাণ ব্যাক্তি। প্রথমে একটু গাইগুই করছিলেন, “একটা হিন্দু ছেলের কিডনি নেওয়াটা কি ঠিক হবে?”
শফিক জোর গলায় বলল, “কিডনির কোন ধর্ম থাকে না আব্বা। এটা আমাদের শরীরের একটা প্রয়োজনীয় অঙ্গ ছাড়া কিছুই না।” তারপর আর কিছুই বললেন না জামিলুর সাহেব।
জামিলুর সাহেব যাবেন তাদের রেখে আসতে। কিন্তু তার থাকার উপায় নেই। তাদের দোকান আছে একটা। কিছু জমি আছে বরগা দেয়া।দোকান আর জমি থেকে ভালই রোজগার হয়।জামিলুর সাহেবই দোকানে বসেন। সাথে একটা ছেলেও আছে সাহায্য করার জন্য। জসিম নাম।জসিম আগে এই বাড়িতেই থাকত। এখন বিয়ে করে আলাদা ঘর ভাড়া করে থাকে। ঐ ছেলের উপর তো আর বেশিদিন দোকানের ভার দিয়ে রাখলে চলবে না। বেশিদিন দোকান বন্ধও করে থাকা যাবে না। তাকে চলে আসতে হবে।
গেটের কড়া নাড়ার শব্দ। জামিলুর সাহেব এসেছেন। প্রতিদিন দুপুরে আসেন বাসায় বিশ্রাম নিতে। বিশ্রাম নিয়ে বিকেল ৪টার দিকে গিয়ে আবার দোকান খুলেন।ফরিদা গিয়ে গেট খুলে দিলেন।
“হাসান আসছে?”
“১২.৩০টা বাজে। এখনও তো পরীক্ষা শেষে হয় নাই। আর শহর থেইকা আসতে তো সময় লাগে।” হাসান ট্রেনে করে শহরে যায়। এই এলাকার মানুষজন ট্রেনে করে শহর থেকে এলাকায় আসে। প্রায় সব ট্রেনই মেথিকান্দা রেলস্টেশনের উপর দিয়ে যায়। তাই ট্রেনে যাওয়া আসা করা মানুষের জন্য সুবিধা। হাসান স্থানীয় কলেজে পড়েছে। কিন্তু পরীক্ষার সিট পড়েছে শহরে।
হাসান কে নিয়ে টেনশানে আছেন জামিলুর সাহেব। তার বড় ছেলে শফিক পড়াশুনায় ভাল ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়েছে। ভাল চাকরি করে।কিন্তু এই ছেলেটার পড়াশুনায় কোন মনোযোগ নেই। খালি আড্ডা দিয়ে বেড়ায়। দিন দিন পড়াশুনায় কম্পিটিশান বাড়ছে। আগে যেমন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ার খবর শোনা যেত, এখন আর সেইরকম শোনা যায় না। যাকেই জিজ্ঞেস করা হয় সেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে।তাহলে এইসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে টেকে কারা? আগে ছেলেপেলে স্ট্যান্ড করলে তাদের নাম পত্রিকায় আসত। জামিলুর সাহেবের ধারণা কয়েকদিন পর ছেলেপেলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকলে তাদের নাম পত্রিকায় উঠবে।
জামিলুর সাহেব গোছল সেরে মসজিদে গিয়ে নামাজ পরে আসলেন। বাসায় এসে কিছুক্ষণ কোরান শরীফ পড়েন। ফরিদাও এর মধ্যে গোছল- নামাজ সেরে নেন। ২ জনে একসাথে খেতে বসেন।
খেতে খেতে ফরিদাকে প্রশ্ন করলেন জামিলুর সাহেব, “ছেলেকে যে নিয়ে যাচ্ছ ফরিদা, ওরে সামলাইতে পারবা তো? এখানেই তো ঠিক মত পড়াশুনা করে না, শহরে গেলে কি করে আল্লাহই জানে।”
“কেন এত চিন্তা করতেছ? শফিক তো আছেই। হাসান শফিকরে একটু ভয়ই পায়। আর এখানে তো ভর্তি কোচিং এর ব্যবস্থা ভাল নাই। ওর সব বন্ধুরাও তো ঢাকায় যাইতেছে কোচিং করার জন্য।”
“সেজন্যই তো চিন্তা হয়। এইসব বন্ধুবান্ধব তো ওরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাইব না।আর শফিকের কথা বলতেছ। শফিকের অফিস আছে না? অফিসের কাম কইরা, তোমারে ডাক্তার দেখাইয়া ও আর কতইবা সময় পাইব ভাইয়ের পড়াশুনা দেখানোর? নিজের গরজ না থাকলে কোনদিন উন্নতি করা যায় না ফরিদা।” ফরিদা চুপ করে রইলেন।
জামিলুর সাহেব বলতেই লাগলেন, “তুমি হাসানরে বইলা দিও আমি কিন্তু ওরে প্রাইভেটে পড়াইতে পারুম না। এত টাকা পয়সা আমার নাই। ওরে পাবলিকেই পড়তে হইব। এখন নবাবজাদা কি করব এটা তার বিবেচনা।” ফরিদা কিছু বললেন না। তার শরীরটা আবার খারাপ লাগছে।
“শফিকের খবর কি? ওর সাথে কথা হইছে? ওর গুছান হইছে সবকিছু?”
“কাইলকা রাতে কথা হইছে। সব গুছাইয়া উঠতে পারে নাই। এখন তো অফিসে। রাতে ফোন দিমু।”
“একটা বাসার কাজকর্ম কি কম নাকি? তোমার তো ঐখানে গিয়া কষ্ট হইয়া যাইব। তোমার ছেলে তো পছন্দ করে না, নইলে তো বলতাম একটা ছোট বাচ্চা নিয়ে যাও বাসার কাজে সাহায্য করার জন্য।”
শফিক বাচ্চাদের দিয়ে কাজ করানো একদম পছন্দ করে না। শেফালীকে কাজে রাখার আগে জামিলুর সাহেব দশ বছরের একটা বাচ্চা নিয়ে এসেছিলেন বাসার ছোটখাটো কাজ করার জন্য। সর্বসাকুল্যে এগার দিন ছিল ছেলেটা। এই এগার দিনে শফিক একবারও ফোন দেয়নি, ফোন রিসিভ ও করেনি। শেষ পর্যন্ত ঐ ছেলের পরিবর্তে শেফালীকে রাখা হলে শফিক আবার বাড়ির সাথে যোগাযোগ করে।
“শেফালীকে বলেছি। ও বলল বাড়িতে কথা বইলা জানাইব। কিন্তু ওরে নিয়ে গেলে এখানকার কাজকর্মে সমস্যা হইব না?”
“তুমি আমার ব্যাপারে চিন্তা কইরো না।দরকার হইলে পারুলরে বইল ২ বেলা আইসা কাজ করতে। তুমি ভালমতো চিকিৎসা করাও ফরিদা। ২ দিন পর পর শরীর খারাপ করা ভাল লক্ষণ না।” একটু চুপ থেকে জামিলুর সাহেব আবার বললেন, “ঢাকায় যাইতেছ, সুদীপ্ত ছেলেটার সাথে দেখা করবা না?”
“দেখা তো করন লাগেই।”
“ও তো বিয়া করছে। ওর বউরে দেইখা কিছু দিবা না?”
“দেওন তো লাগে। কিন্তু কি দিমু কিছু বুজতাছি না।”
“যেমন বিয়াই করুক, ও তোমারে তার নিজের একটা কিডনি দিছে। ওর প্রতি একটা দায়িত্ব আছে আমাগো সবার। এক কাজ কর।কিছু টাকা নিয়া যাও। শফিকরে নিয়া একটা চেইন কিনা লইয়ো। সোনা পাইলে খুশি হইব।” ফরিদা অবাক হয়ে গেলেন। সুদীপ্তর কাছ থেকে কিডনি নেয়াটা প্রথমে পছন্দ করছিলেন না জামিলুর সাহেব। আর এখন ওর বউকে সোনার চেইন দিতে চাচ্ছেন। বাকি খাওয়াটা দুইজনে নীরবে শেষ করল।
সন্ধ্যার পরের সময়টা ফরিদার কাছে অসহ্য লাগে। একা একা আর কতই বা থাকা যায়। জামিলুর সাহেব দোকানে থাকেন। হাসানের পরীক্ষা। তাই ও নিজের ঘরে পড়ছে। নইলে এই সময় তো ও বাইরে থাকে। জামিলুর সাহেবের কথা কিছুটা হলেও সত্যি। হাসানের পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ কম।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার প্রতিই আগ্রহ বেশি। কিছুদিন ফরিদা টিভিতে সিরিয়াল দেখতেন।কিন্তু সব সিরিয়ালের একই কাহিনী। গরীব ঘরের মেয়ে বিয়ে হবে বড়লোক ঘরের ছেলের সাথে।ঘরে হাজারো সমস্যা। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঝগড়া করে পুরো সিরিয়াল পার করে দেয়। সবচেয়ে বড় কথা এগুলো দেখলে কেমন জানি নেশা ধরে যায়। একদিন না দেখলে খারাপ লাগে। আর সময়ও নষ্ট হয় অনেক।
গেটে কড়া নাড়ার শব্দ, “খালাম্মা আছেন?”
ময়নার মা এসেছে। হাসান গেট খুলে দেয়। ঘর অন্ধকার হয়ে ছিল, ময়নার মা লাইট জ্বালাল।
“খালাম্মা ভালা আছেন? শরীরটা ভালা?”
“এইত মোটামুটি। তুমি কেমন আছ ময়নার মা?বাড়ির সবাই ভালা আছে?”
“ছিলাম তো ভালাই। তয় মনির মাস্টারের বাড়ির খবর শুইনা মনটা খারাপ হইয়া গেল।”
“কেন? কি হইছে?” মাস ছয়েক আগে মাস্টার মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। মেয়ে দেখতে শুনতে ভালই কিন্তু মেয়ের অন্য ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। লোকমুখে শুনতে পান মেয়ে নাকি বিয়ের দুই মাস পর স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে যায় প্রাক্তন প্রেমিকের হাত ধরে। ফরিদা এখন আর বাইরে তেমন যান না। খুশিদের বাড়ি গেলে জানতে পারতেন আসল ঘটনা।
“মাস্টারের মেয়ের বিয়া হইছিল না, মাইয়া তো আগের লাভারের হাত ধইরা পালাইছে। অহন শুনলাম ঐ পোলা নাকি ১মাস মাইয়ারে লইয়া ঘরও করছে।অহন মাইয়ারে খেদাইয়া দিছে।মাইয়া বাপের বারিত চইলা আইছে। মাইয়ার আবার বাইচ্চা হইব। আল্লাহই জানে বাইচ্চার বাপ কে।”
ফরিদার মনটা খারাপ হয়ে গেল। খুশি এত ভাল একটা মেয়ে।প্রথম দেখায় আপন করে নেয়। এরকম একটা মেয়ের কপালে এরকম একটা ঘটনা ঘটল।“তাইলে তো ঐ বাড়ির সবাইর মন খারাপ।” এটা বলার পরই মনে পড়ল তিনিও তো শফিকের বিয়ে দিতে চান গ্রামের মেয়ে দেখে। এই যদি আজকালকার মেয়েদের অবস্থা হয় তাহলে ভরসা রাখবেন কার উপরে? এটা চিন্তা করে ফরিদা বুকের মধ্যে একটা চাপ অনুভব করলেন। মাথাটা একটু ঘুরে উঠল কি? শরীরটা আবার খারাপ লাগছে।
“ময়নার না তুমি আমারে কিছু পিঠা বানাইয়া দিও তো। ঢাকায় যামু। ছেলের লাইগা লইয়া যামু।” ফরিদা ময়নার মার সাথে এ ব্যাপারে আর কোন কথা বলতে চান না। এ ধরনের মানুষের সাথে এসব ব্যাপারে কথা বলা একদিক দিয়ে বিপদজনক। কোথায় কোন কথা গিয়ে বলবে আল্লাহ মালুম।
শিলা ফেসবুকে একটা লেখা পড়ছে। ভালই লিখেছে লেখক। আজকাল ফেসবুক একটা জনপ্রিয় মাধ্যম হয়েছে লেখালেখির।শিলারও একসময় লেখালেখির ইচ্ছে ছিল। ইস্কুলে দেয়াল পত্রিকায় লিখেছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন ব্যস্ততায় লেখালেখির অভ্যাসটা আর ধরে রাখা যায়নি। তবে বই পড়ার অভ্যাসটা ধরে রেখেছে। এখন পড়ছে শেহাবউদ্দিন আহমদের অনুবাদ করা “পৃথিবীর সেরা লোকজগল্প” বইটি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের লোকজগল্পগুলির এক অসাধারণ কালেকশান। শিলা বিশ্বাস করে ভাল লেখক হওয়া যেমন কঠিন, ভাল পাঠক হওয়াও খুব একটা সহজ না। হুমায়ন আহমেদের “জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প” কিংবা জাহানারা ইমামের “একাত্তরের দিনগুলি” এই বইগুলির পাঠক অনেক খুঁজে পাওয়া যাবে কিন্তু এম আর আখতার মুকুলের “আমি বিজয় দেখেছি” এই বইয়ের পাঠক খুব একটা বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
“খালামনি একটা গান শুনবে” শিলার বোন মিলা এসেছে বাসায়। মিলার দুই ছেলেমেয়ে। মিলার মেয়ে আনিলা শিলাকে প্রশ্ন করেছে।
“অবশ্যই শুনব। গাও তো শুনি”
“আমাদের ইস্কুলে এ বছর বর্ষবরণ হবে তো তাই মা বলেছে এই গানটা গাইতে অনুষ্ঠানে।” আজকাল অনেক ইস্কুলে বিভিন্ন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হচ্ছে। উদ্যোগটা ভালই।
আনিলা গান শুরু করল, “পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে পাগল আমার মন জেগে উঠে।” আনিলা গানের সুর ধরে রাখতে পারছে না, এমনকি মাঝে মাঝে গানের কথাও ভুলে যাচ্ছে।
“এত কঠিন গান গাচ্ছ কেন? আরও তো সহজ গান আছে।”
“ইস্কুলের মিসও এই কথা বলেছেন, কিন্তু মা বলেছে আমাকে এই গানই গাইতে হবে।” মিলা প্রচণ্ড জেদি একটা মেয়ে।সবসময় নিজেকে, নিজের পরিবারকে বড় প্রমাণ করতে চায়। তার ধারণা কঠিন কাজ করলেই মানুষজন বড় হয়ে উঠে। মেয়েকে গানের প্রতি অনুরক্ত করা না, বরং আমার মেয়ে পারে এই কথা প্রমাণ করাই ওর কাছে বড় বিষয়।
“খালামনি তুমি মাকে এই ব্যাপারে কিছু বল না। আমি গানটা ঠিক মত গাইব দেখ।” এই বলে চলে গেল। শিলার মেয়েটার জন্য খারাপ লাগছে। না, আপার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতেই হবে, আনিলা যতই মানা করুক। (চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here