অপেক্ষা পর্ব- ১১:

অপেক্ষা পর্ব- ১১:
লেখিকা: সামিয়া বিনতে হামিদ

সকালের মিষ্টি রোদ জানালার কাঁচ ভেদ করে চোখের উপর এসে পড়লেই রিধির ঘুম ভেঙে যায়। আলসেমির জন্য বিছানা ছাড়তে মন চাইছে না তার। গতকাল জুনাইয়েত আর নবনীর বিবাহ-বার্ষিকী উপলক্ষে অনেক মেহমান এসেছিল। তাদের নাস্তা-পানির ব্যবস্থা করা থেকে শুরু করে বিদায় পর্যন্ত সব কাজ রিধি একাই করেছে। কারণ রক্তিমের শরীর খারাপ ছিল। মা-বাবার গুরুত্বপূর্ণ দিনটি সে নিজের অসুস্থতার কারণে মাটি করতে চায় নি, তাই কাউকে কিছু বলেওনি। রিধির বানানো নাস্তা খাওয়ার পর থেকেই তার এই অবস্থা। সারা শরীর জ্বলছিল তার। অনেক বমিও হয়েছিল। পরে জুনাইয়েত হোসেইন ঔষুধ নিয়ে এসেছিলেন, তা খেয়ে একটু ভালো লেগেছে। কিন্তু রিধির মোটেও মায়া হয়নি।

রিধি ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বের হয়ে দেখল বাসায় কেউ নেই। রক্তিমের রুমের দরজা বন্ধ।
মোবাইল হাতে নিয়ে নবনীর নম্বরে কল দিলো।

রিধি: মা তোমরা কোথায়? বাসায় কেউ নেই?

নবনী: আমরা বাড়িতে এসেছি। তোদের বড়চাচা খুব অসুস্থ তাই। তোকে ডাকি নি, তুই ঘুম ছিলি এইজন্য। রক্তিমকে বলে এসেছি। আজকে নাও আসতে পারি আমরা। থাকতে পারবি তো?

রিধি: ওই রাক্ষসের সাথে?

নবনী: রিধি, এভাবে বলে না মা। রক্তিমের শরীর ভালো না। একটু খেয়াল রাখিস ওর।

রিধি: আচ্ছা।

রিধি এখন মনে মনে বকছে নিজেকে আর বলছে,
রিধি: কেন তুই রক্তিমকে ঝাল নাস্তা খেতে দিলি? এখন মজা বুঝ! রক্তিম সুস্থ থাকলে গতকাল সবকাজ তোকে করতে হতো না। আর এখন শাস্তিভোগ কর রিধি, সেবাও করতে হবে ওই রাক্ষসটার!

রিধি নাস্তা করে নেয়। নবনী নাস্তা বানিয়ে গিয়েছিলেন, তাই অসুবিধে হয়নি।
এরপর সে ঘরে এসে খুব জোরে গান বাজিয়ে দেয়। এর মধ্যে গোসল সেরে নেয়। তারপর পড়তে বসে যায়। রিধির গান শুনে শুনে ম্যাথ করতে খুব ভালো লাগে। এটিই তার ছোটবেলার অভ্যাস।

এদিকে এতো জোরে গানের আওয়াজ পেয়ে রক্তিমের ঘুম ভেঙে যায়। ঘড়ি দেখল দুপুর সাড়ে বারোটা। রিধির রুমের সামনে এসে দরজায় ঠোকা দেয় কিন্তু রিধির কোনো সাড়া নেই। তাই নিজেই ঢুকে পড়ে। দেখল রিধি পড়াশুনা করছে তাও গান ছেড়ে। রক্তিম এসে গান বন্ধ করে দেয়। গান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রিধি ঘাড় ফিরিয়ে দেখে রক্তিম তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। রক্তিমকে দেখে তার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।

রিধি: আপনি? আমার রুমে? আপনার সাহস কি করে হয় এভাবে না বলে আমার রুমে আসার? আস্ত একটা বদ দেখছি আপনি?

রক্তিম: আমি বদ? বদ হচ্ছো তুমি! তোমার জন্য আমার এই অবস্থা আজকে। আর এভাবে কান ফাটানো শব্দে গান শুনছো কেন?

রিধি: আপনাকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। এখন যেতে পারেন।

রক্তিম: আমার বাসায় থেকে আমার সাথে বড়ো গলায় কথা বলছো?

রিধি: মানে? কি বোঝাতে চান আপনি? এইটি শুধু আপনার বাসা? আমারো বাসা এটি, বুঝতে পেরেছেন?

রক্তিম: জোর করে অধিকার চাচ্ছো?

রিধির চোখ ছলছল করে উঠল,
রিধি: এখন বলবেন আমি অনাথ! আমার বাবা-মা নেই। অন্যের উপর বোঝা হয়ে আছি। তাই তো?

রক্তিম: তুমি নিজেই বলছো এসব কথা।

রিধি: আচ্ছা, কি চান আপনি? চলে যাবো আমি?

রক্তিম: যাওয়ার জায়গা থাকলে কি এখানে পড়ে থাকতে? বাই দা ওয়ে, বাবা-মা তোমার উপর দয়া করছে, আর তুমি তাদের সন্তানকেই মারতে চাচ্ছো?

রিধি: আমি আপনাকে মারতে চেয়েছি?

রক্তিম: কি খাইয়েছিলে ওইদিন?

রিধি: আপনাকে খেতে তো বলি নি। আপনি নিজেই খাদকের মতো খেয়েছিলেন। এমনভাবে খেয়েছেন যে, মনে হচ্ছে অনেকদিন কিছু দেয় নি কেউ।

রক্তিম রিধির দিকে শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। তারপর এগিয়ে আসতে থাকে ধীরে ধীরে। রক্তিম রিধির কাছে আসার আগেই, রিধি রক্তিমকে ধাক্কা দেয় খুব জোরে। ধাক্কা খেয়ে রক্তিম রিধির বিছানায় গিয়ে পড়ে। রিধি দৌঁড়ে রুম থেকে বের হয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অনেকক্ষন দরজা ধাক্কানোর পরও যখন রিধি দরজা খুলছে না, রক্তিমের মেজাজ গরম হয়ে যায়। তার ফোনও রুমে রেখে এসেছিল। আর রিধি নিজের ফোন নিয়েই বের হয়েছে।
এদিকে বিকেল হয়ে যাচ্ছে, রিধি এখনো আটকিয়ে রেখেছে তাকে।

রক্তিম চিৎকার করে বলল,
রক্তিম: ভালো হচ্ছে না রিধি। দরজা ভেঙে বের হতে পারলে কিন্তু তোমাকে আমি মেরে ভর্তা বানাবো। খোলো রিধি। রিধি। রি…..ধি…..।

উপায় না দেখে দরজা ভেঙেই বের হয় রক্তিম। রক্তিমের দরজা ভাঙার আওয়াজ শুনে আশপাশের ফ্ল্যাটের মানুষ জড়ো হয়ে যায়। রক্তিম পুরো বাসায় রিধিকে খুঁজে পায় নি। পরে রিধির একটি চিঠি খুঁজে পেয়েছিল, যেখানে রিধি লিখেছে সে এই বাসায় আর থাকবে না। এতোদিন সবার উপর বোঝা হয়ে থাকার জন্য ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে। এখন যদি তাকে রাস্তায় থাকতে হয় সে রাস্তায়ই থাকবে।

রক্তিম চিঠি পড়ার পর খুব ঘাবড়ে যায়। রিধি ঘর ছেড়ে চলে যেতে পারে, এটি রক্তিমের মাথায়ও আসে নি। ভয়ে পাগলের মতো ছুটাছুটি করছে এখন রক্তিম। রিধির কিছু হয়ে গেলে, সে কি নিয়ে বাঁচবে? রিধির ফোনে কল দিয়েও তাকে পায় নি।
রাত হয়ে যাচ্ছে, সে কি দিয়ার বাসায় খোঁজ নিয়ে দেখবে?

দিয়ার বাসা রক্তিম চিনতো। কারণ দিব্য রক্তিমের কাছে পড়েছিল ভার্সিটি ভর্তির আগে। আর রাজিয়া রহমান ও নবনী হোসেইনের মধ্যেও ভালো সম্পর্ক আছে। তাদের যাওয়া আসাও হয়। রক্তিম দিয়ার বাসায় গিয়ে দেখল, দিয়া বাসায় নেই। সে বিকেলে ইশাদের বাসায় গিয়েছিলো আর রাতে আসবে। আর দিয়ার সাথে দেখা করতে রিধি আসেও নি।
রক্তিম দিয়াদের বাসা থেকে বের হয়ে মাটিতে বসে পড়ে। রিধির কোনো বান্ধবীকেও আর চিনে না রক্তিম। কিভাবে খুঁজে পাবে সে রিধিকে? রক্তিমের মাথা সম্পূর্ণ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তবুও সে নিজেকে শান্ত করে দিয়ার নম্বরে ফোন দেয়। মিসেস রাজিয়া রহমান থেকে নম্বর নিয়েছিলো দিয়ার।

এদিকে দুপুরে বাসা থেকে বের হয়েই দিয়াকে ফোন দিয়েছিল রিধি। সব খুলে বলে দিয়াকে। দিয়া বিকেলে ইশাদের বাসায় যায়, কারণ ইশা ডেকেছিল দিয়াকে। আগামীকাল নাকি তাদের ভার্সিটিতে প্রোগ্রাম আছে। আর দিয়াও যাবে দিব্যের সাথে। তাই কি পড়বে এসব নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছে। সাথে ইশার রিহার্সালও দেখা হবে। দিয়াই রিধিকে আসতে বলে ইশাদের বাসায়। ইফতিও ছিল বাসায়। এই সুযোগে ইফতির সাথে কথাও হয়ে যাবে, একসাথেই যেহেতু গ্রুপ স্টাডি করবে টেস্টের পর। ইফতি ছাড়া বাকি সবার সাথেই রিধির কথা হতো। আর ইফতি যতোবার রিধিকে দেখতো হাঁ করে তাকিয়ে থাকতো, যা রিধির একদম পছন্দ ছিলো না। তাই কখনো কথাও বলে নি।

আজকেও রিধিকে দেখে হাঁ করে তাকিয়ে আছে।

রিধি ইফতিকে এভাবে হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে দিয়ার কানের কাছে এসে বলল,
রিধি: জীবনে মেয়ে দেখে নি নাকি?

দিয়া: তোকে পছন্দ হয়েছে মনে হয়?

রিধি: তোকে কে বলেছে?

দিয়া: বোঝায় যায়।

রিধি: খুব অভিজ্ঞতা হয়েছে তোর!

দিয়া: চুপ কর।

ইশা, দিয়া আর রিধিকে নিয়ে তার রুমে চলে গেল। অনেকক্ষন বসে আড্ডা দিচ্ছিল তারা।

ইশা: আচ্ছা আমি একটু আসি। তোমরা বসো।

দিয়া: আচ্ছা আপু।

ইশা চলে যাওয়ার পর দিয়া বলল,
দিয়া: অনেকক্ষন হয়ে গিয়েছে, রক্তিম ভাইয়া তোকে খুঁজছে না?

রিধি: খুঁজলে খোঁজবে। আই ডোন্ট কেয়া’র। তার শাস্তি হোক। এখন বুঝবে সে, রিধি কতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যখন বাবা-মা এসে লাঠি দিয়ে পেটাবে তখন দেখিস কিভাবে আসবে আমার কাছে আর কাকুতিমিনতি করে বলবে, একটিবার ক্ষমা করুন রাজকুমারী, উদ্ধার করুন আমায় রাজামহাশয়ের শাস্তি থেকে। আমি চিরজীবন আপনার সেবা করে যাবো।

এটি বলতে বলতে রিধি হেসে দেয়।

দিয়া: তোর মনে হয় তোর কাছে ক্ষমা চাইবে? আমার তো মনে হয় মাটিতেই পুঁতে দেবে।

রিধি: ভালো কথা বল। এসব কি হ্যাঁ? বাবা-মা থাকতে ওই রাক্ষস আমার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।

হঠাৎ দিয়ার ফোনে অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে।
দিয়া: কার নম্বর হতে পারে?

রিধি নম্বর দেখেই চিনেছে এটি রক্তিমের নম্বর। কারণ সে বিকেলেই নম্বরটি ব্ল্যাকলিস্টে পাঠিয়েছিল।

রিধি: খবরদার, ধরবি না। এইটা ওই রাক্ষসের নম্বর।

দিয়া: না ধরলে সন্দেহ করবে। নিশ্চয় বাসায় গিয়েছে। মায়ের কাছ থেকেই নিয়েছে হয়তো আমার নম্বর। মা তো জানেও না তুই আমার সাথে আছিস।

রিধি: ইশ, আমার রুমের দরজা ভেঙে দিয়েছে হয়তো।

দিয়া চোখ ছোট করে বলল,
দিয়া: তুই না বাসায় যাবি না আর? দরজা ভাঙলে কি সমস্যা?

রিধি: হুহ, বাবা-মা আসলে তো যাবোই।

দিয়া: দেখ। আবার ফোন দিচ্ছে। আমি কথা বলছি। দাঁড়া।

রিধি: দাঁড়াবো কেন? শোন, তুই মিথ্যে বলবি। বলবি আমি নেই তোর সাথে। আমাকে এখন ধরে নিয়ে গেলে মেরে মাটিতে পুঁতে দিবে কিন্তু দিয়া।

দিয়া: চুপ করবি এখন?

রিধি: আচ্ছা আচ্ছা।
রিধি মুখে আঙ্গুল দিয়ে দিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

দিয়া গলা ঝেড়ে বলল,
দিয়া: হ্যালো। আসসালামু আলাইকুম। কে বলছেন?

রক্তিম কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
রক্তিম: দিয়া আমি রক্তিম রিধির……রি–রি–ধি….. আসলে আমি রিধিকে খুঁজছিলাম আমাকে চিনেছো মনে হয়?

দিয়া: ওহ, হ্যাঁ। রিধির বড়ো ভাইয়া?

রক্তিম দিয়ার কথা শুনে ভ্রু কুচকে কড়া গলায় বলল,
রক্তিম: আমি রিধির ভাইয়া না।

দিয়া রক্তিমের কথা শুনে ভয়ে চুপসে গেল। মনে হচ্ছে, ফোনের ভেতর থেকে হাত বের করে গলা টিপে মেরে ফেলবে।

আমতা আমতা করে বলল,
দিয়া: জ–জ–জ্বি।

রক্তিম: রিধি কোথায় বলতে পারবে?

দিয়া: রিধি? কে? মানে, রিধি কোথায় আমি কিভাবে বলবো?

রক্তিম: রিধিতো তোমাকে সব কথাই জানায়, তাই বলছি।

দিয়ার গলার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে,
দিয়া: না ভাইয়া, আমাকে কিছুই বলে নি। আমি রাখছি। আমি একটু ব্যস্ত আছি।

দিয়া ফোন কেটে দেয়। আর কিছু বলার সুযোগ দেয় নি রক্তিমকে। রক্তিমের কিছুটা সন্দেহ হয়। তাও মন মানছিল না, তাই আশেপাশে খোঁজ নিতে থাকে। সকাল থেকে কিছুই খায় নি রক্তিম। মাথাটা ঘুরছে এখন। নবনী ফোন দিলে জানিয়ে দেয় তারা ঠিকাছে। অযথা চিন্তা করবে তাই। রাতের নয়টা বেজে যায়। ঘুরে ফিরে দিয়াদের বাসার সামনেই আসে রক্তিম। কারণ তার মন বলছে রিধিকে এইখানেই পাবে। রিধি আর দিয়া ওইসময় বের হয়েছিল ইশাদের বাসা থেকে। আজকে দিয়াদের বাসায় থাকবে ভাবছে রিধি।

রক্তিমের আর পা চলছিলো না তখন। দূর থেকে রিধিকে দেখে যেন আবার জীবন ফিরে পেয়েছে সে। একপ্রকার দৌঁড়ে এসে রিধিকে জড়িয়ে ধরে রক্তিম। রক্তিমের এমন আচমকা দৌঁড়ে আসা দেখে দিয়া ভয়ে, পাগল পাগল, বাঁচাও, বাঁচাও বলে চিৎকার করে উঠে।
দিব্য ওই সময় গেইটের সামনেই দিয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিল।
আওয়াজ শুনে ইশা, ইফতি, আর দিব্য বের হয়ে আসে।

কিন্তু রক্তিমের এদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে ঘোরের মাঝেই বলতে থাকে,
রক্তিম: আমাকে ফেলে কোথায় চলে গিয়েছিলে? আমি যা-ই বলবো তোমার শুনতে হবে কেন? তোমাকে কতো ভালোবাসি আমি, বোঝো না? আর কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না। আমি কিভাবে খুঁজেছি তোমাকে। জানো তুমি?
বলতে বলতে রক্তিমের চোখ বেয়ে পানি রিধির ঘাড়ে এসে পড়ল।

ছেলেরাও কাঁদে। প্রিয়মানুষকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাদেরও অশ্রু গড়ায়।

দিব্য ব্যাপারটি বুঝতে পেরে ইশারায় ইশাকে বলে ইফতিকে নিয়ে চলে যেতে। আর দিয়াকেও বাসায় যাওয়ার জন্য বলে।
রক্তিম খুব শক্ত করেই বুকের সাথে চেপে রেখেছিল রিধিকে। রিধির এখন দম বন্ধ হয়ে আসছে। কারণ এই প্রথম সে কোনো পুরুষের এতো কাছাকাছি এসেছে। আর রক্তিমের বলা কথাগুলো শুনে তার হাত পা অবশ হয়ে যায় অনেকটা। দিব্যকে দেখে, হাত উঠিয়ে ইশারায় রক্তিমকে সরানোর জন্য বলে। কিন্তু দিব্য কি করবে বুঝতে পারছে না।

কিছুক্ষন পর রক্তিম আপনাআপনি নিজের ভার ছেড়ে দেয় রিধির উপর, তখনই দিব্য রক্তিমকে ধরে ফেলে। দুজন মিলে রক্তিমকে বাসায় নিয়ে যায়।

দিব্য: রিধি, তুমি রক্তিম ভাইয়ের খেয়াল রেখো। অনেক দুর্বল মনে হচ্ছে তাকে।
রাজিয়া রহমান যেহেতু ডক্টর তিনি রক্তিমদের বাসায় এসে বলেন তাকে স্যালাইন দেওয়া লাগবে। স্যালাইন কিনে আনে দিব্য। এরপর তারা বাসায় চলে যায়।

দিব্য যাওয়ার সময় বলে,
দিব্য: দরকার হলে আমাদের ফোন দেবে। আমি আসবো।

রিধি: আচ্ছা।

রিধির এখন খুব খারাপ লাগছে। শুধু তার জন্যই রক্তিমের এই অবস্থা।
রিধির কাছে খুব নিষ্পাপ লাগছে এখন রক্তিমের চেহারা। কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ রাক্ষস চেপে বসে হয়তো রক্তিমের উপর।
সারারাত সে রক্তিমের পাশে বসে থাকে। আজকে সে প্রথম অন্যের জন্য রাত জাগছে। কোনো মুভিও দেখতে মন চাইছে না। ঘুমও যেন পালিয়ে গেছে চোখ থেকে। রিধি অপেক্ষায় আছে কবে রক্তিম চোখ খুলে তাকাবে তার দিকে। এভাবেই যেন রিধি বসে কাটিয়ে দিতে পারবে রক্তিমের অপেক্ষায়।

চলবে—-

আগের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/373151184406660/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here