অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব-১৫

0
3636

#অবশেষে_তোমাকে_পাওয়া
#পর্ব_পনেরো (গল্পের নতুন মোড়)
#লেখিকা_তারা_ইসলাম

মিস্টার এ’সি’পি রুদ্র মির্জা ভালো আছো তো?

“রুদ্র চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে সামনে চেয়ারে বসা রেয়ান চৌধুরির দিকে।

“রেয়ান বললো- আমি জানতাম না এই এলাকায় এসে এত বড় একটা সারপ্রাইজ পাবো।তবে ব্যাপারটা ভালোই হলো চেয়ারম্যানের ছেলে পুলিশ বাহ বাহ ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন জানি একটা লাগছে বলেই ঠোঁট চেপে হাসলো।

“রুদ্র তার কথায় পাত্তা না দিয়ে বললো- আরে রেয়ান চৌধুরি যে তো থানায় কি জন্য এসেছেন?

“রেয়ান এক ভ্রু উঁচু করে বললো- আমার বাবাই ও স্যরি মানে আমার বাবার এক বন্ধু আহান চৌধুরি উনার ওয়াইফ আর উনার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছেন না।উনারা আগে এই-এলাকাতেই থাকতেন।তবে ঠিক কোথায় সেটা বাবাই জানেন না।সেটার জন্যই এই থানায় আসা বলে সামনে টেবিলে একটা মেয়ের ছবি রাখলেন দেখতে অনেকটা সুন্দর আর ইয়াং।

“রুদ্র ছবিটা ভালোভাবে দেখে বললো- কত-বছর আগে উনারা মিসিং হয়েছেন?

“রেয়ান কিছুক্ষণ ভেবে বললো- প্রায় ২২-২৩ বছর তো হবেই।

“রুদ্র বললো- এত গুলা বছর পর উনাদের খুঁজ করছেন কেন?আর ছবিটাও পুরণো মনে হচ্ছে?এভাবে কিভাবে খুঁজবো?তবে ভালো ভাবে নাম ঠিকানা বলে যান আমরা খুঁজার চেষ্টা করবো।

“রেয়ান হেসে সব তথ্য দিলো আর বললো- বাবাইয়ের কোনো কারণ বসতো দেশের বাহিরে যেতে হয়েছিলো, এই নিয়েই উনারা হাসবেন্ড ওয়াইফের মধ্যে রাগারাগি হয়!তারপর থেকে উনার ওয়াইফ উনার মেয়ে নিয়ে মিসিং।বাবাই অনেক খুঁজে ছিলেন তবে পাই’নি।কিন্তু কারোর থেকে জানতে পেরেছিলো এই এলাকাতেই নাকি ছিলেন উনার ওয়াইফ।কিন্তু উনার সেদিন দেশের বাহিরে যাওয়ার কথা ছিলো তাই আর খুঁজতে পারেন’নি।আর এত গুলা বছরের মধ্যে উনি অনেক নাকি খুঁজেছেন তবে তাদের দেখা পাইনি।তাই এখন থানায় আসা!বাবাই একটু অসুস্থ তাই আমিই এলাম।

“রুদ্র মন দিয়ে কথা গুলা শুনলো তবে কথা গুলা তার ঠিক বিশ্বাস হলো এর মধ্যে কোনো রহস্যর গন্ধ পাচ্ছে সে।তবে মুখে কিছু বললো না হুম ছাড়া।

“তারপর রেয়ান চলে যেতে নিলে কাট’কাট গলায় রুদ্র বললো- মিস্টার রেয়ান চৌধুরি আমার ওয়াইফের দিকে নজর না দিয়ে ভালো দেখে একটা মেয়ে বিয়ে করে নিবেন।

“রেয়ান চমকে তাকালো রুদ্রর দিকে।রুদ্র তার তাকানো দেখে তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো- আমার ওয়াইফের পিছনে পরে থাকবেন আর আমি জানবো না তা কি করে হয় বলেন?আমার ওয়াইফের সব খবর আমার থাকে।

“রেয়ান চোখ মুখ শক্ত করে বললেন- আমি নূরময়ীকে ভালোবাসি!

“রুদ্র চিল্লিয়ে রেগে বললো- চুপ একদম চুপ।কিসের নূরময়ী ও শুধুমাত্র আমার নূর।আর ভালোবাসি মানে?আরেকবার যদি আপনি আমার সামনে ওকে এই নামে সম্বোধন করেন সেদিন আপনার শেষদিন হবে।

“রেয়ানও রেগে বললো- সে যদি তোমাকে ভালোনাবাসতো তাহলে অনেক আগেই ওকে আমার করে নিতাম মিস্টার রুদ্র মির্জা।

“রুদ্র বাঁকা হেসে বললো- সেটা এই জীবনে কখনো হবে না ও শুধু আমার আর আমারি থাকবে মিস্টার রেয়ান চৌধুরি।

“রেয়ান রাগে কাঁপছে তবে কিছু না বলেই রুদ্রর কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো।

“রেয়ান যেতেই রাগে রুদ্রের মাথা ফেটে যাচ্ছে।সে কখনোই নূরের প্রতি অন্য কারোর ভালোবাসা মেনে নিবে না!না সহ্য করতে পারবে।তার সব রাগ যেনো নূরের ওপর গিয়ে পরলো তাকে যদি সে এখন সামনে পেতো একদম ঠু*কে দিতো।এসব ভাবতে ভাবতেই তার ফোনে কল আসলো!ফোন হাতে নিতেই দেখলো কলটা নূর করেছে।সেটা দেখে তার আরও রাগ হলো তাই রাগ নিয়েই কয়েক-বার রিং হতেই সে রিসিভ করলো।

“নূর চঞ্চল গলায় বললো- রুদ্র আপনার সাথে আমার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।আর এখন আমি আমার আব্বুর বাসায়।আপনি কি আমার সাথে এই মুহুর্তে দেখা করতে পারবেন?

“নূরের কথা শুনে রুদ্র রেগে চিল্লিয়ে বললো- তুমি ওখানে গিয়েছো কেন?তোমাকে না তারা যেতে মানা করেছিলো?আর কি কথা ফোনে বলো আমি অতদূর এখন যেতে পারবো না!আমি এখানে আড্ডা দিচ্ছি না নিশ্চয়।

“নূর বললো- প্লিজ আজকেই আমি আর কখনো দরকার হলেও বলবো না দেখা করতে।আপনি একটু আমার সাথে দেখা করুন আপনাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার আছে প্লিজ প্লিজ।এসব আপনাকে বলতেই হবে রুদ্র।

“রুদ্র এবার দিগুণ রাগ নিয়ে আর চিল্লিয়ে বললো- তুই যদি আমার সামনে থাকতি না?একদম চ*ড়ি*য়ে তোর গাল আমি লাল করে ফে’লতাম।বললাম না বিজি আছি তোর আজাইরা কথা শুনার মুটেও ইচ্ছা নেই আমার।আর যা বলার ফোনে বল নাহলে বলা লাগবে না!আমি ব্যস্ত।

“এবার নূর রেগে বললো- আপনি যদি আজকে আমার সাথে দেখা না করেন?সত্যি বলছি আপনি আর আমাকে পাবেন না বলে দিলাম।

“রুদ্র এবার বিচ্ছিরি একটা গালি দিয়ে বললো- তোর মতো মেয়ে আমার চাইও না তাই অহেতুক এমন আজাইরা কথা আমাকে শুনাতে আসবি না বলেই রেগে ফোন রেখে দিলো।

“রুদ্র সেদিন বেলুন নিয়ে করা নূরের কাজের জন্যই আজকে সে সব রাগ নূরের ওপর ঝেড়েছে।সে নূরকে বার বার বলেছিলো ভার্সিটি গিয়ে দুষ্টামি না করার জন্য কিন্তু সে দুষ্টামিও করছে সাথে রেয়ানকেও নিজের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।তার জন্যই নূরের প্রতি তার এত রাগ।

“সে ব্যাপারটা জানতে পেরেছে কাকতালীয় ভাবে।নূরদের ভার্সিটির সামনে একটা মৃ’ত মেয়ের লাশ পাই আমানরা তো সে রাসেলের কেসে বিজি থাকায় ভীষণ কৌশলে কেস’টা সে রুদ্রকে সমাধান করতে দে।আর সাথে ভার্সিটির সামনে থাকা সি’সি’টিভি ফুটেজ ও দে গত-তিন মাসের।সেটা দেখতে গিয়েই সেদিনের সব বেলুন নিয়ে করা নূরের দুষ্টামি গুলা দেখতে পাই।সাথে মেয়েটার খু*নি*কেও দেখতে পাই+ধরে ফেলে।
~~~~~~~~~~
নূর ফোন হাতে নিয়ে বসে আছে।সে আজকে দ্বিতীয় বারের মতো আহত হলো।কিন্তু কেন জানি সে কান্না করতে পারছে না।যেনো চোখের পানি পুকুরের মতো শুকিয়ে গেছে!তার মতো ইমোশনাল মেয়ের তো এখন কেঁদে কেটে দুনিয়া এক করে ফেলার কথা।কিন্তু আজ কান্না আসছে না।পরিস্থিতি তাকে আজ কঠোর,অনুভূতি শূন্য করে দিয়েছে।আহা পরিস্থিতি মানুষকে কতটাই’না বদলে দে।তার এই দুনিয়ায় আপন বলতে আর কেউ নেই।রুদ্রও তাকে আজ ভীষণ ভাবে হার্ট করেছে তাই সে মনে মনে ভাবলো- মিস্টার রুদ্র মির্জা আপনি আর আমাকে জীবনেও পাবেন না।আপনাকে আর জীবনেও বিরক্ত করবো না।আজকে আপনার সঙ্গ আমার ভীষণ প্রয়োজন ছিলো কিন্তু আপনি আমার সাথে ছিলেন না।তাই আপনাকেও আমার জীবনে আর চাইনা ভেবেই চোখ বন্ধ করে নিলো আর চোখ বন্ধ করতেই রুদ্রর চেহেরা ভেসে উঠলো।আর সাথে সাথেই চোখ খুলে ফেললো সে।সে আর কাউকে ভাবতে চাইনা।সে একা থাকতে চাই!সে তার অতীত যেনে ব্যতীত কিন্তু ভেঙ্গে পরলে যে চলবে না তার যে এখন অনেক কাজ বাকি!নিজের লড়াই যে নিজেকে লড়তে হবে।এখন যে পাশে কেউ নেই।সে ঠিক করলো- আমি আর ভেঙ্গে পরবো না,কান্না করবো না,কারোর সঙ্গ চাইবো না,নিজের জীবন এবার নিজের মতো করে গড়ে তুলবো।আমার সত্যটা জেনে কখনোই রুদ্রর পরিবার আমাকে মেনে নিবে না।হয়তো রুদ্রও মেনে নিবে না।রুদ্র মেনে নিবে না ভাবতেই নূরের সারা-শরীর কাঁপতে লাগলো কষ্টে।সে রুদ্রকে ভালোবাসে ভীষণ ভীষণ ভালোবাসে।ভেবেই ঘুমানোর চেষ্টা করলো আর মনে মনে একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো।
~~~~~~~~~~~~
রুদ্র সবেমাত্র নিজের রুমে এসেছে”তার সব কিছু বিরক্ত লাগছে।এক তো এখনো পর্যন্ত রাসেলকে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না।আর দ্বিতীয় তো সে নূরের সাথে বাজে ব্যবহার করেছে।রুমে চার-পাশ দেখে রুদ্র দীর্ঘশ্বাস ফে’ললো।নূর ছাড়া রুমটা মৃ*ত মৃ*ত লাগছে!তার কিছু ভালো লাগছে না।সে না খেয়েই শুয়ে পরলো।একবার ভাবলো নূরকে কল দিবে কিন্তু পরে সে রেয়ানের কথা মাথায় আসতেই রাগে অভিমানে আর কল দে’নি।কেন দিবে?নূর কি কখনো তার কথা শুনেছে।সব সময় নিজের ইচ্ছামত চলেছে।রুদ্র মনে মনে ভাবলো- নূর আজকে তাকে কি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে বলেছে?হয়তো তার পরিবারের সাথে সব ঠিক হয়ে গেছে।আরও অনেক কথা নিজ নিজ মনে ভেবে সে ঘুমানোর চেষ্টা করলো।তার নূরকে ছাড়া ভালো লাগছে না।সে নূরকে ভালোবাসে কতটুক তার পরিমাণ জানা নেই রুদ্রর তবে এই জীবন তার নূরকে ছাড়া চলবে না।
~~~~~~~~~~~~~`
আব্বু আমি আমার আসল মায়ের ঠিকানা জানতে চাই।মৃত্যুর আগে হলেও ওই মহিলার একবার চেহেরা দেখতে চাই।আর আমার আসল বাবার ঠিকানাও জানতে চাই।কোথায় উনারা?

“আমার কথা শুনে আব্বু আমার দিকে করুণ চোখে তাকালো তবে কিছু বললো না।

“আমি আহত গলায় বললাম- আব্বু আমার আসল মা যে আমাকে তোমাদের কাছে দিয়ে দিলো।এতে লাফ কি হলো?আমি যে কখনো মায়ের ভালোবাসা পাই’নি।অন্তত্য উনার কাছে থাকলে আমি সেটুকু তো পেতাম।আমি একটু মায়ের ভালোবাসা চাই আব্বু।ও আব্বু আমি একটু হলেও মায়ের ভালোবাসা চাই।আমি আমার আসল মায়ের সব সত্য জেনেও যে উনাকে ঘৃণা করতে পারছি না।কারণ মায়েরা কখনো তার সন্তানের কাছে খারাপ হয়’না।উনি হয়তো এমনটা পরিস্থিতির শিকার হয়েই করেছেন।আমার আসল মা যেমনই হোক না কেন আমি উনাকে দেখতে চাই।উনার শরীরের ঘ্রাণ নিতে চাই।মায়ের আদর চাই আব্বু।প্লিজ তুমি আমাকে ঠিকানাটা দাও?

“আব্বু আমার কথা শুনে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।তবে আমার পাথর হয়ে যাওয়া হৃদয়ের ফলে আমার কান্না এলো না।নিজের এত বড় সত্য জানতে পেরে যেনো আমি পাথরের নায় হয়ে গেলাম।একবারও কান্না করলাম না।কোনো ভাবেই পারলাম না চোখে জল আনতে।আব্বু আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন- মাই প্রিন্সেস সেখানে অনেক বিপদ।আমি তোমাকে বিপদে ফেলতে চাই’না।শুনো আপা মানে তোমার আম্মু কিন্তু আগে এমন ছিলো না কেন হলো জানা নেই।আর আমি যতটুক জানি তোমার বাবা এই দেশে নেই।আর তোমার আম্মুর সঠিক ঠিকানা আমার জানা নেই।কিন্তু লাস্ট যেখানে দেখা হয়েছিলো সে এলাকার নাম বলে আব্বু কথা শেষ করলো

“আব্বুর দেওয়া এলাকার ঠিকানা শুনে আমি অবাক হলাম।এটা তো শহরের বাহিরে।তবুও নিজেকে সামলিয়ে বললাম- আমি উনার সাথে দেখা করতে চাই আব্বু।

“আব্বু বললেন- সেখানে অনেক বিপদ কিন্তু ।তুমি একা মেয়ে হয়ে এসব নিতে পারবে না।তোমার মাকে খুঁজা এত সহজ ব্যাপার না।তোমার মা একজন ছদ্দবেশি!কখন কোন রুপ নেন সেটা কেউ জানেন না।উনার নাম শায়লা খাতুন সেটাই মনে রাখবে।

“আমি আব্বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললাম- আমি প্রচুর ভীতু আব্বু তবে দূর্বল নই।আমি পারবো দেখিও আমি পারবো।আমাকে পারতেই হবে যেভাবে হোক আমি আমার মা’কে খুঁজে বের করবো।

“আব্বু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন- তুমি একা মেয়ে মা আমার।এমন করিও না যদি কেউ ভুল ক্রমেও জেনে যায় তুমি শায়লা আপার মেয়ে তখন তোমার উপর সবাই ঝাঁপিয়ে পরবে কারণ তোমার মায়ের শক্রুর অভাব নেই।তাই যেভাবে জীবনযাপন করছো সেভাবেই করো।আর রুদ্র বাবার কথা একবার ভাবো সে জানতে পারলে কি হবে?সে কি তোমাকে যেতে দিবে কখনো সেখানে?প্রিন্সেস আমার বা*চ্চা*মো করিও না।

“রুদ্রর নাম শুনে গত-রাতের কথা মনে পরে গেলো আর রাগে শরীর কাঁপতে লাগলো তাই মনে মনে ভাবলাম- আমি মা’রা যায় কিংবা বেঁচে থাকি এতে উনার কিছু যায় আসে’না বাবা।উনার এখন আমাকে নিয়ে ভাবার আর আমার কথা শুনার কোনো টাইম নেই।সে কেন আমাকে নিয়ে চিন্তা করবে।তবে মুখে বললাম- তা নিয়ে তুমি চিন্তা করো না আব্বু।উনাকে সহ্য নিয়ে যাবো আমার সাথে।

“আব্বু বললেন- সেখানে তোমার থাকা খাওয়ার জন্য অনেক টাকা লাগবে!তা আমি দিয়ে দিবো।কারণ তোমার মা’কে খুঁজে পাওয়া এত সহজ ব্যাপার না।রুদ্র থাকবে তোমার সাথে!তবুও আমার থেকে টাকাটা নিবে তুমি।

“আমার কাছে যথেষ্ট টাকা ছিলো রুদ্রই দিয়েছিলো
কেনাকাটা করার জন্য কিন্তু সে-গুলা আমি রেখে দিয়েছিলাম।কিন্তু টাকা গুলা হবে কি’না জানি না তাই আব্বুর দেওয়া টাকা গুলাও নিলাম।

~~~আমি রেডি হয়ে নিলাম অন্য এক জায়গাতে,অন্য এক পরিবেশে,আর অন্য এক উদ্দেশ্য যাওয়ার জন্য।জানি না সামনে কি আছে আমার জন্য।তবে আমার মা’কে চাই চাই।

~ যথেষ্ট কাপড়,ফল কা*টা’র ধারালো চু*রি,আরও যাবতীয় লাগতে পারে এমন জিনিস নিয়ে নিলাম একটা মাঝারি সাইজের ব্যাগে।এটা কিছুক্ষণ আগে আব্বু দিয়ে গিয়েছিলো।আব্বু কখনো আমাকে যেতে দিতো না একা।কিন্তু আমি বলেছিলাম রুদ্রও আমার সাথে যাবে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা।আমার কিছু হয়ে গেলেও আমার কিছু যায় আসে’না।এই দুনিয়াতে বেঁচে থাকার মতো কোনো কারণ আমি খুঁজে পাই’নি।বরং আমার মতো অপয়া না থাকলেই সবার জীবন সুন্দর হবে।ভেবেই তাচ্ছিল্য হাসলাম!নিজেকে আমি শক্ত করে নিলাম!আর ভেবে নিলাম নূর সামনের পথ অনেক কঠিন তবে তোকে চেষ্টা করতে হবে।কেন করলো উনি তোর সাথে এমন।সব জানতে হবে কি রহস্য লুকিয়ে আছে এর মধ্যে ভেবেই নিজেও রেডি হয়ে নিলাম।গোল জামা হাটু পর্যন্ত,জিন্স পেন্ট,মাথায় উঁচু করে ঝুটি করা,জামার ওপর কটি,পায়ে কেডস,মেকাপ বিহীন চেহেরায় মাস্ক লাগিয়ে নিলাম!ব্যস আমি রেডি।

“আব্বুর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আম্মুকে দেখলাম না।হয়তো আম্মুর আমার জন্য কিছু যায় আসে’না।তবে আজকে আর মন খারাপ হলো না
নিজেকে কেমন জানি অনুভূতিহীন লাগছে।তবে আব্বু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো- তোমার আগামী পথ ভালো হোক।আর তুমি আর রুদ্র সাবধানে যেও।

“আমি বাঁকা হেসে আব্বুকে বললাম- আব্বু আসি!যদি ফিরি আম্মুকে নিয়ে ফিরবো না হলে তুমি আর আমার চেহেরা দেখবে না।বলেই সেখানে আর এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে আমি বেড়িয়ে পরলাম নিজের উদ্দেশ্যর জন্য।
~~~~~~~~~~~~
রুদ্র ফাইনালি রাসেলের এলাকার খুঁজ পেয়ে গেছি। কিন্তু আছে কোথায় সেটা জানতে পারি’নি।আর এটাও জেনেছি তার আসল মালিক কোনো ছেলে নই বরং একজন মহিলা নাম শায়লা খাতুন।

“আমানের কথা শুনে রুদ্রর মুখে হাসি ফুটে উঠলো আর বললো- আমান জায়গাটার এড্রেস সেন কর।এবার মাঠে আমিও নামছি,আর কোনো মেয়ের জীবন আমি নষ্ট হতে দিবো না।বলেই ফোন রেখে দিলো”কিছুক্ষণ পর এড্রেসটা আমান সেন করতেই রুদ্র সেদিকে তাকিয়ে বললো- শায়লা খাতুন আপনিই মেইন কালপ্রিট তাহলে।আমাদের খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে বলেই সেখানে যাওয়ার জন্য রেডি হতে লাগলো।

~ রুদ্র পরিবারের সবাইকে বললো সে ব্যবসার কাজে শহরের বাহিরে যাচ্ছে।নূরকে কল অবশ্য দিয়েছিলো।যত-মান অভিমান থাকুক তাদের মধ্যে!তার ফিরতে দেরি হবে হয়তো কারণ কেসটা অনেক জটিল।তাই নূরকে জানানো দরকার কিন্তু নূরের ফোন বন্ধ।কয়েক-বার ট্রাই করলো কিন্তু ফোন বন্ধ।তাই রুদ্র মারিয়াকে কল করে বললো নূরকে যেন তার খবরটা দিয়ে দে।তারপরই সে তার পুলিশ টিম নিয়ে খুব সাবধানে বেরিয়ে পরলো….

#চলিবে..চলিতে থাকিবে, যতদিন না শেষ হচ্ছে 😒

#বিঃদ্রঃ পেজের রিচ ডাউন, এই পর্বে সকলে একটু কষ্ট করে রেসপন্স করার চেষ্টা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here