অবশেষে তোমাকে পাওয়া পর্ব-৫

0
4129

#অবশেষে_তোমাকে_পাওয়া
#পর্ব_পাঁচ
#লেখিকা_তারা_ইসলাম
———————————————————————-
রোদের তাপে সারা-শরীর জ্বলসে বাসায় এসে আমি আর মারিয়া ঝগড়া শুরু করে দিলাম।ও আজ এখানেই থাকবে!কারণ আমান ভাইয়া একটা কাজে শহরের বাহিরে গেছেন।কয়েক-দিন লাগবে ফিরতে তাই সে নিজের রুমেই থাকবে।আমাদের ঝগড়া মূলত বেলুন নিয়ে।ভার্সিটি থেকে বের হয়ে মারিয়া কত গুলা বেলুন কি’নে নিলো।সে বেলুন-প্রেমী তাই তাকে রা*গা*তেই এক-প্রকার জোর করে ওর কাছ থেকে বেলুন গুলা নিয়ে দৌড় লাগিয়ে ছিলাম।কিন্তু এক আজাইরা ছেলেকে বিশ্বাস করে সব শেষ।ধরা খেয়ে গেলাম।সেখান থেকে আমরা ঝগড়া করতে করতে বাসায় ফিরেছি আর এখনো করছি।

“অবশেষে মারিয়া বললো- জানু বাদদে দোষ দুইজনের ওকে।আর যা ফ্রেশ হয়ে আয়।

~~ সে বিকেল থেকে আমি আর মারিয়া আড্ডা দিয়ে যাচ্ছি মারিয়ার রুমে।দুইজনে অনেক মজাও করছি বটে এটা সেটা বলে।অনেকটা সন্ধ্যা হয়ে গেছে।তাও আমাদের আড্ডার শেষ নেই যেন।কিন্তু আমাদের আড্ডার মাঝে তাদের কাজের লোক রিনি ভাবি এসে আমাকে বললেন- মেজো ভাবি আপনাকে মেজো ভাইয়া ডাকে।

“আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম- উনি কখন আসলেন?

“রিনি ভাবি বললেন- কিছুক্ষণ আগে আমি মাত্র চা দিয়ে আসলাম।সেটা বলে উনি রুম ত্যাগ করলেন।

“আমি মারিয়ার দিকে বিরক্তি নিয়ে বললাম- এখন আসি কেমন!আর শুন কিছুক্ষণ পর আবার এসে এক সাথে পড়বো।আমার কথা এখনো শেষ হয়’নি।তো*র য*ম ভাই কেন ডাকে দেখে আসি।

“মারিয়া হেসে আমাকে টিজ করে বললো- যাও মেরি ভাবি যাও বলেই খিলখিল করে হেসে উঠলো।আমি ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে উনার রুমের দিকে হাটা দিলাম।আর উনার রুমের দিকে আসতে আসতে ভাবলাম- আজ আবার আমি কি করলাম?কিছুই তো করি’নি তাহলে ডাকছে কেন?এসব ভেবেই ভয়ে ভয়ে উনার রুমে চলে আসলাম।

“উনি ফাইল দেখতে দেখতে চা খাচ্ছেন।আমাকে দেখতেই কিছুটা রাগি চোখে তাকালেন।

“উনার চোখ দেখে ভয় পেলেও সাহস করে মিনমিন গলায় বললাম – আমাকে ডেকেছেন কেন?

“উনি নিজেকে শান্ত করে আমার দিকে এক মনে তাকিয়ে বললেন- তোমাকে ডাকা যাবে না নাকি?

“আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম।

“উনি আস্তে করে বিছানা থেকে উঠে আমার কাছে এসে হালকা রাগ নিয়ে বললেন- আমি তোমার হাসবেন্ড।তাই আমি কখন বাসায় আসছি না আসছি।আমার কি পছন্দ কি পছন্দ না।আমার কখন কি প্রয়োজন সে খেয়াল আছে তোমার?আমি আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে চাই।আর তুমি পারো শুধু সবার সাথে হাহা-হিহি করতে?তুমি কখন বুঝবে তোমার দায়িত্ব কর্তব্য গুলা?বা*চ্চা*তো আর না তুমি।

“উনার কথা গুলা সব আমার মাথার উপর দিলে গেলো তাই কাঁদো কাঁদো হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম- আমার কি করতে হবে বলুন?

“উনি আমার কথা শুনে রেগে চিল্লিয়ে বললেন- কি করতে হবে তাই’না আসো আমার পা টিপে দাও।

“উনার চিল্লানো শুনে ভয়ে আমি রুমের দরজার সাথে মিশে গেলাম আর বুকে হাত দিয়ে বড় বড় শ্বাস নিতে লাগলাম।খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো জ্ঞান হারাতে তবে উনার ভয়ে সেটাও পারলাম না।জ্ঞান কোনো ভাবে হারালো না আমার।

“উনি আমার কাছে এসে শক্ত করে কাধ চেপে ধরে বললেন- এ জন্যই আমি অবুঝ কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে চাই’নি।তুমি আসলেই একটা বলতে গিয়ে থেমে গেলেন।তারপর আবার বললেন- তুমি আমার জীবনসঙ্গী হওয়ার যোগ্য না বলেই আমাকে ধা*ক্কা দিলেন।

“উনার কথায় অপমানে লজ্জায় আমি কাঁদতে কাঁদতে নিচে বসে পরলাম।কি করবো কি বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।উনি রেগে বারান্দায় চলে গেলেন।আর আমি সেখানেই বসে বসে কাঁদতে লাগলাম।তার কিছুক্ষণ পর নিজেকে স্বাভাবিক করে মনে মনে বললাম- আমাকে অপমান করা তাইনা আমিও আপনার যোগ্য হয়ে দেখাবো।তারপর চোখের পানি মুছে তানিয়া ভাবির রুমের দিকে হাটা দিলাম।

~~~ রুদ্র কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখলো নূর নেই।রুদ্রর খারাপ লাগলো আজকে রাগ থেকেই সে নূরের সাথে খারাপ বিহেভ করেছে।সে বা কি করবে সে চাই নূর থাকে বঝুক তার কেয়ার করুক।আর তাকেই যেন ভালোবাসে।তারপর মনে মনে ভাবলো- নূর তো ছোট না তবে সে সব কিছু এখনো বুঝে নিতে পারে’নি হয়তো আমার ওকে সময় দেওয়া দরকার।এসব ভাবতেই তার ফোনে কল আসলো আর রিসিভ করে কিছুক্ষণ কথা বলার পর বললো- আসছি!তারপর রুদ্র আরও কিছু ভেবে রেডি হতে লাগলো তার কাজ আছে তাকে এক্ষুণি যেতে হবে।

~~~ আহা মেয়ে কান্না করছো কেন?কতদিন বা বিয়ে হয়েছে তোমাদের আস্তে আস্তে সব বুঝবা।

“আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম- প্লিজ ভাবি আমাকে বলো কিভাবে উনার প্রতি থাকা দায়িত্ব কর্তব্য গুলা পালন করবো?

“তানিয়া ভাবি হেসে আমার মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে বললো- পা*গ*লি মেয়ে আর কান্না করিও না।আমি ও প্রথমে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারি’নি তবে আস্তে আস্তে সব শিখেও গেছি মানিয়েও নিয়েছি।

“আমি বললাম- কিভাবে?

“তানিয়া ভাবি বললেন- আচ্ছা আগে বলো তুমি মেজো ভাইয়াকে ভালোবাসো?না ভালোলাগে নাকি মায়ায় পরেছো?

“ভাবির কথায় লজ্জা পেলাম- আর বললাম দূর ভাবি কি বলছো এসব?

“তানিয়া ভাবি ঢং করে বললেন- আর লজ্জা পেতে হবেনা।তবে উত্তরটা দিতে হবে নাহলে বুঝাবো কেমনে?

“আমি অনেক ভাবলাম হয়তো একটু মায়ায় পরে গেছি।কিন্তু ভালোবাসা ভাবতেই মৃদু কেঁপে উঠলাম।যে মানুষটা কথায় কথায় আমাকে ঠু*কে দিবে বলে!সে মানুষটাকে ভালোবাসবো ভেবেই চমকে উঠলাম।তবে নিজেকে সামলিয়ে ভাবির দিকে তাকিয়ে মুখ কালো বললাম- কোনোটা না ভাবি।আমি উনাকে ভয় করি যাকে বলে য*মে*র মতো ভয়।

“আমার কথায় তানিয়া ভাবি কপালে চা*প*ড় দিয়ে বললো- আল্লাহ তোমরা দুটো দুই-রকম তোমাদের কোনো মিলও নেই।তবে আল্লাহ তোমাদের এক-সাথে করেছেন যখন তোমাদের ভালোর জন্যই করেছেন।আর তাহলে শুনো ভাইয়ের প্রতি কি কি কর্তব্য দায়িত্ব পালন করতে হবে।তবে জ্ঞান হারালে চলবে না বলে দিলাম।বলেই ভাবি আমাকে অনেক কিছু বুঝিয়ে দিলেন।ভাবির সব কথা শুনে চোখ আমার বড় বড় হয়ে গেলো আল্লাহ কথা গুল শুনেই আমি জ্ঞান হারাবো মনে হচ্ছে।করতে গেলে তো এক্কিবারে উপরে উঠে যাবো।

“ভাবি কথা শেষ করে বললো- তো ছোট বুঝেছো?

“ভাবির কথায় হাত দিয়ে মুখ ডেকে বললাম- এইগুলা করতেই হবে?আমি পারবো না উনি আমাকে জাস্ট খু*ন করে ফে’ল’বেন।

“তানিয়া ভাবি খিলখিল করে হেসে বললেন- কিছু করবে না তুমি চেষ্টা করে দেখিও বলতে বলতে সেখানে প্রবেশ করলো দাদি।

“উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- এ যে জ্ঞান হারানো মাইয়া জামাইরে আঁচলের মধ্যে বা*ই*ন্দা রাখতে হয়।আমারে তো তুমি পছন্দ করো না কিন্তু আমি ভালাই কইতাছি।

“দাদির কথা শুনে আমি হেসে বললাম- কে বললো আপনাকে আমি পছন্দ করি না।পছন্দ না রবং আপনাকে ভালোবাসি।ওইদিনের জন্য স্যরি দাদি।তারপর দুষ্টুমি হেসে বললাম- দাদি গো জামাইরে কিভাবে আঁচলে বাধে?

“দাদি অল্প বয়সী মেয়েদের মতো খিলখিল করে হেসে উঠে বললেন- আমি জানি আমার জন্যই তোমাগো বিয়ে হয়েছে তাই আমারে পছন্দ করতে না।সেদিন আমি ওমন না করিলে তোমাগো বিয়ে হতো না।তারপর আবার থেমে বললেন- যা হইয়াছে ভালাই হইয়াছে আমার নাতী রাজপুত্রর মতো একখান বর পাইছো।বলেই উনি ভাব নিলেন।

“দাদির কথায় উনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থেকে উচ্চস্বরে হেসে উঠলাম।তারপর ভাবি আর দাদিও হেসে উঠলেন।

“তারপর দাদি বললেন- শুনো মেয়ে সোয়ামীকে আগে আঁচলে বাধবা।যেন অন্য মাইয়ার লগে ইটিসপিটিস করতে না পারে।

“আমি গোল গোল চোখে দাদিকে বললাম- সেটা কি ভাবে করবো দাদি?

“দাদি বললেন- তোমরা আজকালকার মাইয়া গুলা জামাইরে এক্কিবারেই পাত্তা দাওনা।আমাগো জামানায় আমরা জামাই ছাড়া কিছু বুঝিও নাই বলে দাদি লজ্জা পেলেন।

“তানিয়া ভাবি বললেন- তাহলে দাদি আপনিও দাদার জন্য পা*গ*ল ছিলেন বলে ঠোঁট চেপে হাসলো।

“দাদি বললেন- যা কি যে বলো।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- আমার মেজো নাতীরে আঁচলে বাধতে অনেক কষ্ট হবে মেয়ে।

“আমি ঠোঁট উলটে মন খারাপ করে বললাম- তো এখন উপায়?

“দাদি বললেন- শুনো আমার কথা।জামাই ঘরে আসলে পিছন পিছন ঘুরবা কি খাবে কি লাগবো কি চাই সব দিবা।জামাই বাসায় থাকলে বেশি বেশি সাজবা।জামাইয়ের সামনে বেশি বেশি শাড়ি পড়বা।তারপর জামাইয়ের সামনেই কাপড় বদলাবা~তারপর দাদি আরও জ্ঞান দিয়ে আমায় বললেন মাথায় ডুকেছে?

“দাদির কথা শুনে লজ্জায় আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম।তানিয়া ভাবির অলরেডি কাশি শুরু হয়ে গেছে।লজ্জায় কান আমার গরম হয়ে গেলো।দাদি যা বললো এসব করতে গেলে দেখা যাবে প্রাণ আমার পাখি হয়ে উড়ে যাবে।ছিঃ ছিঃ

“দাদির বললেন- এত লজ্জার কিছু নেই।এইগুলা না করলে সোয়ামী সোহাগা কেমনে হইবে মেয়ে?

“আমি দাদির কথা শুনে কানে দুই-হাত দিয়ে বললাম- এসব আমার পক্ষে করা সম্ভব না।

“তানিয়া ভাবি মুখে হাত দিয়ে হেসে বললো- এসব আমাকেও দাদি শিখিয়ে দিয়েছিলো।আর দাদির কথা মতন করেই কিন্তু তোমার বড় ভাইয়াকে এখনো আঁচলে বেধে রেখেছি বলেই অট্টহাসি দিলো।

“আমি নার্ভাস হয়ে গেলাম তাদের সব কথা শুনে।ভাবতেই আমি জ্ঞান হারাচ্ছি আর করতে গেলে তো কথায় নেই।

~~~তারপর আমরা তিনজনে অনেকক্ষণ আড্ডা দিয়ে চলে আসলাম যে যার রুমে।আসার সময় দাদি আমাকে আরও পরামর্শ দিলেন।কি কি করতে হবে।আমিও বাধ্য মেয়ের মতো হুম হুম করলাম।
——————————-
স্যার আপনি যে মেয়েটার খুঁজ নিতে বলেছেন তার সব ইনফরমেশন আমি নিয়ে এসেছি~ মেয়েটার নাম নূর জামান!অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে।বাবা লেয়ান জামান! একজন ডাক্তারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী।মা রাহেলা খান! বাসায় শাড়ি” হাতের” জিনিস এসবের ব্যবসা করেন।ভাই লিয়ান জামান!এবার ক্লাস নাইনে পড়ছে।

“তবে স্যার একটা কথা হলো মেয়েটা বিবাহিত আর তার হাসবেন্ড আর কেউ না বরং রুদ্র মির্জা।

“সাহেলের কথা শুনে রেয়ান চৌধুরি রেগে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বললেন- এটা হতে পারে না।তুমি ঠিক ভাবে খুঁজ নিয়েছো?

“সাহেল বললো- জ্বী স্যার আমি ঠিক ভাবেই খুঁজ-খবর নিয়েছি।

“রেয়ান থাকে হাতের ইশারায় যেতে বললো।সে চলে যেতেই রেয়ান চেয়ারে বসে পরলো।

“রাগে রেয়ানের ফর্সা চেহেরা লাল হয়ে গেলো।তার এখন ইচ্ছে করছে রুদ্রকে জাস্ট শেষ করে দিতে।তারপর নিজেকে শান্ত করে মনে মনে ভাবলো মিস্টার রুদ্র মির্জা আমাদের আবার দেখা হবে।
——————————————-
“রাতে ডিনার করে রুদ্র ঘরে আসলো।এসেই নিজের কাজে লেগে গেলো।কিন্তু কিছু সময় পর রুমে প্রবেশ করলো নূর।রুদ্র নূরের দিকে একটু তাকিয়ে আবার কাজে মন দিলো।

“নূর রুমে এসে বিছানার এক-পাশে বসে ভাবতে লাগলো কি করবে।দাদি যা বলেছে তা করতে গেলে তো ওকে মির্জা সাহেব ঠু*কে দিবেন।তাও মনে মনে সাহস নিয়ে আলমারি থেকে থেকে ঘুমানোর জন্য কাপড় বের করে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।

“ফ্রেশ হয়ে এসে সোজা উনার পাশে শুয়ে পরলাম।তার কিছুক্ষণ পর উনিও আমার থেকে দুরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পরলেন।আমি মনে মনে দাদির কথা গুলা মনে করে উনার বালিশের কাছে গিয়ে মাথা রাখলাম।এই কাজটা করতে গিয়ে আমি কেঁপে উঠলাম।

“আমি উনার কাছে যাওয়ায় উনি প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন তবে নিজেকে সামলিয়ে রেগে বললেন- এখানে কেন আসছো?নিজের বালিশে যাও।

“উনার কথা শুনে ভয়ে আমি জমে গেলাম।তবে সরে আসলাম না।

“উনি আবার হালকা চিল্লিয়ে বললেন- কি সমস্যা কথা কানে যাচ্ছে না?নিজের বালিশে যাও।

“আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি।মৃদু কাঁপছে শরীর।

“উনি এবার বললেন- শেষ বারের মতো বলছি নিজের জায়গায় যাও!

“কিন্তু আমি তখনও উনার বালিশে শুয়ে আছি আমাদের মাঝে তেমন একটা দুরুত্ব নেই।আমি ভয় পেলেও শক্ত হয়ে উনার বালিশে শুয়ে থাকলাম।

“এবার উনি বললেন- যাবে না তো?ঠিক আছে বলে উনি আমাকে এক হাত দিয়ে কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে উনার বাহু-ডোরে আবদ্ধ করে ফেললেন।তারপর ফিসফিস করে বললেন- এসব নিশ্চয় তোমার দাদি শাশুড়ি শিখিয়েছেন?তো শুনো উনার কথায় বেশি নাচা-নাচি করতে যেও না!না হলে পরে দেখা যাবে নাতীর ঘরে পু*তি*ন নিয়ে টানাটানি করবে বলেই শব্দ করে হেসে উঠলেন।

“উনার এভাবে জড়িয়ে ধরায় আমার সারা-শরীর অবশ হয়ে গেলো মনে হচ্ছলো আমি জ্ঞান হারাবো চোখ নিভু নিভু হয়ে আসছিলো।কিন্তু উনার লাগাম ছাড়া কথা শুনে লজ্জায় আমি কাঁপছিলাম।তবে উনার হাসির ঝংকারে আর চোখ খুলে উনার দিকে তাকানোর সাহস পেলাম না।

“উনি হাসি বন্ধ করে বললেন- জ্ঞান হারিয়েছো নাকি?

“আমি কিছু না বলে উনার বুকের সাথে মিশে রইলাম।

“তারপর উনি দুষ্টুমি কন্ঠে বললেন- তো মিসেস রো*গী আপনার ভয় লাগছে না?

“উনার কথার বলার স্টাইলে আমি আরও লজ্জায় কুঁকড়ে গেলাম।

“আমার এমন অবস্তা দেখে উনি আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্বাভাবিক কন্ঠে বললেন- বিয়েটা যেভাবেই হুক হয়েছে তো।তোমার পরিবার তোমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছে!তাই তোমার সব দায়িত্ব আমার।আমি একটা সুন্দর গুছানো স্বাভাবিক একটা সংসার করতে চাই।আমার সব মনের কথা আমি তোমাকে শেয়ার করতে চাই।তবে তার আগে সেটার যোগ্য তোমাকে হতে হবে।বার বার জ্ঞান হারানোটা আমার বিরক্ত লাগে।এটা যেভাবেই হুক তোমার কন্ট্রোল করতে হবে।আমার না বলা সব কথা তোমার বুঝে নিতে হবে।তুমি যেমন আমার দায়িত্ব”আমি ও কিন্তু তোমার দায়িত্ব।আর হ্যা এখন মন থেকে সংসারটা সামলাবে।আমি কখনো তোমাকে ডিভোর্স দিব না।তুমি যেমন হও না কেন।আমি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো।কারণ তুমি আমার ওয়াইফ।

“উনার সব কথা গুলা আমি মন দিয়ে শুনলাম।এখন আর উনার প্রতি ভয় কাজ করছে না।আমি শব্দে করে কেঁদে উঠলাম আমি সব-সময় চেয়েছিলাম যে আমার লাইফ পার্টনার হবে যেন আমার সব দূর্বলতা বুঝবে।আমার ভুল গুলা ধরিয়ে দিবে।আমাকে ভালোটা বুঝাবে!আমি মনে মনে ঠিক করলাম এখন থেকে আর হেলা-পেলা করবো না কোনো কাজে!মন দিয়ে সব সামলাবো।

“আমায় কাঁদতে দেখে উনি বললেন- ভালো কথা বললেও কান্না করতে হয় নাকি?আচ্ছা ঘুমাও আর কান্না করবে না।

“আমি কাঁদতে কাঁদতে এক সময় উনার বুকেই ঘুমিয়ে গেলাম……
——————————————–
(চলবে)

(ভুল ক্রুটি ক্ষমা করবেন।আর ভুল গুলা ধরিয়ে দিবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here