গল্পের_নাম : অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব_২২ ও ২৩ ( crazy_for_you )
লেখনিতে :#মিমি_মুসকান
আরিয়ান নিশি’কে হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় বাড়ির বাইরের অংশে। নিশি ছাড়ানো’র চেষ্টা করলেও আরিয়ান ছাড়ছে না।
“নিশি : ভাইয়া কি করছেন আমি কিন্তু চিৎকার করবো
“আরিয়ান : নিশি তোমার সাথে আমার কথা আছে প্লিজ দু’মিনিট দাঁড়াও।
“নিশি : কার ব্যাপারে আরিফা’র। দেখুন আমি কিন্তু আরিফা’র ব্যাপারে একটাও খারাপ কথা শুনবো না।
“আরিয়ান : না জিসান আর নিশি’র ব্যাপারে..
“নিশি : মানে…
.
এদিকে লাইট জ্বলে ওঠার পর জিসান তড়িঘড়ি করে খুঁজে যাচ্ছে নিশি’কে। কিন্তু নিশি’কে খুঁজেই পাচ্ছে না। জিসান অস্থির হয়ে পড়ে তখন আরিফা জিসানের ঘাড়ে হাত রেখে বলে..
“আরিফা : আরে এখানেই আছে। হয়তো কোথাও গেছে তুই শান্ত হো একটু!
“জিসান : আরে এখানেই তো ছিলো এতো তাড়াতাড়ি কোথায় গেলো
“নিশান : হাইপার হচ্ছিস কেন। হয়তো এখানেই আছে। আচ্ছা কল কর ফোন তো আছে ওর কাছে!
“জিসান : ওহ্ হ্যাঁ..
( ফোন’টা বের করে কল করতে থাকে নিশি’কে। কিন্তু নিশি’র ফোন ওখানেই বেজে ওঠে )
“মেহেদী : ফোন তো এখানেই!
“রৌদ্দুর : এই মেয়ে টাও না পাগল করে ছাড়বে আমাদের!
“জিসান : ভালো লাগে না ধুর!
“আরিফা : তুই বেশি টেনশন করছিস এসে পরবে এখনই।
“জিসান : হুম।
.
নিশানের ফোন হঠাৎ বেজে ওঠে। নিশান ফোন নিয়ে কথা বলতে বলতে বাইরে চলে আসে।
.
এদিকে নিশি অধীর আগ্রহে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে কি বলবে আরিয়ান তাকে। আরিয়ান’কে অনেকটা অস্থির দেখাচ্ছে।
“নিশি : কি হলো বলুন..
“আরিয়ান : নিশি আমি জানি না তুমি কিভাবে কথা’টা নিবে কিন্তু এটাই সত্যি যে…
“নিশি : যে…
“নিশান : যে আমি জিসানের সৎ ভাই! তাই ও তোমাকে ভালোবাসে জানা’র পরও আমি তোমাকে ভালবাসি!
.
হুট করেই নিশানের এমন কথায় নিশি আর আরিয়ান দু’জনেই অবাক। বেশি অবাক আরিয়ান কারন ও একথা বলতে নিশি’কে এখানে আনে নি। নিশান সেটা জানে তাই হুট করেই নিশান এমন কিছু বলে। কারন সে চায় না আরিয়ান নিশি’কে কিছু বলুক।
নিশি নিশানের কথা শুনে চরম অবাক। কি বলছে নিশান এইসব। আরিয়ান অবাক চোখে নিশানের দিকে তাকালে নিশান চোখ রাঙিয়ে আরিয়ানের দিকে তাকায়। আরিয়ান মাথা নিচু করে বলে..
“আরিয়ান : হ্যাঁ এটাই বলার ছিলো!
“নিশি : ( পেছনে ফিরে আরিয়ান’র দিকে তাকায়। )
“আরিয়ান : আচ্ছা তোমরা কথা বলো আমি আসছি!
( আরিয়ান দ্রুত গতিতে চলে যায় সেখান থেকে)
“নিশি : আরে ভাইয়া শুনুন তো! ( আরিয়ান পিছু পিছু যেতে নিলে নিশান সামনে এসে দাঁড়ায় ) আপনি..
“নিশান : ( নিশি’র কোমর ধরে ) জান পাখি..
“নিশি : ( রাগে নিশানকে ধাক্কা দিয়ে ওর গালে চড় মেরে )
কি শুরু করেছেন কি আপনি! আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না আমি আপনাকে ভালোবাসি না। আমি জিসান’কে ভালোবাসি শুধু জিসান’কে। আপনি কেন আমাদের মাঝে এভাবে আসছেন বলুন তো কেন? জিসান ভাই তো আপনার। আপন বা পর যাই হোক সে আপনার ভাই। আপনার ছোট ভাই’কে ভালোবাসি আমি। আপনাকে না। আর কোন অধিকারে আপনি আমার কাছে আসেন কোন অধিকারে। কে আপনি?কিসের এতো অধিকার দেখান আপনি। কিসের বলুন? দেখুন লাস্ট টাইম বলছি ভালোভাবে আমার জীবন থেকে সরে যান প্লিজ!
.
নিশান কিছু বলে না প্রতিউওরে। সে চুপচাপ শুনে। সত্যিই কি কিছু বলার উচিত ছিলো তার। কিন্তু সে বললেই কি তার জান পাখি তা মেনে নেবে।
নিশি কথা শেষ করে রেগে সেখান থেকে চলে আসে। খারাপ তার ও লাগছে এভাবে এইসব বলায় কিন্তু তার কোনো উপায় ছিল না। নিশান বুঝতে রাজি না। সে কি বা করতে পারে!
নিশি ফিরে আসায় জিসান দৌড়ে নিশি’র কাছে যায়। নিশি’কে গিয়ে জরিয়ে ধরে।
“জিসান : কোথায় ছিলি তুই? জানিস পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। আর ফোন কোথায় তোর। ফোন ব্যবহার করিস কেন হুম একটা ফোন ঠিকঠাক ভাবে রাখতে পারিস না।
“নিশি : আমি এখানেই ছিলাম। একটু বাইরে গেছি তুই ঠান্ডা হো একটু!
“জিসান : রাখ তোর ঠান্ডা। ( নিশি’র হাত ধরে ) এইবার হাত ছাড়লে খবর আছে তোর!
“নিশি : কি করছিস সবাই দেখছে!
“জিসান : দেখুক।
.
জিসানের কান্ড দেখে সবাই মুখ টিপে হাসছে। নিশি লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখে কারন। জিসানের মা বাবা ও এইসব দেখছে। পেছন থেকে নিশান বলে ওঠে…
“নিশান : পার্মানেন্ট ভাবে রেখে দিলেই তো পারিস!
“আরিফা : ভাইয়া বললো দশ কথার এক কথা আসলেই তো!
“মেহেদী : কিন্তু তার আগে তো ভাইয়ের’টা দেখা উচিত কারন তিনি তো বড়!
“নিশান : ( মুচকি হেসে নিশি’র দিকে তাকিয়ে ) তা দেখা যাবে কিন্তু জিসানের ভয় বেশি নিশি’কে হারাবার তাই বললাম।
“রৌদ্দুর : তা কিন্তু ঠিক কথা।
.
পার্টি শেষে জিসান নিশি’কে নিয়ে বের হয় ওর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। গাড়িতে বসে আছে নিশি বাইরের দিকে তাকিয়ে। ভাবছে আজকের সব কথা, এতো ঘটনা এতো কিছু! নিশান আসলেই পাগলামি করছে এটা হয় না। নিশানের সাথে আর দেখা হয় না নিশি’র ।
নিশি গালে হাত দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবছে। জিসান নিশি’কে এমন চুপ থাকা দেখে জিজ্ঞেস করে..
“জিসান : কিরে কি ভাবছিস এতো
“নিশি : ( জিসানের দিকে ফিরে ) বিয়ে করবি আমাকে!
“জিসান : ( চট করে গাড়ি ব্রেক করে নিশি’র দিকে তাকিয়ে ) কি বললি!
“নিশি : বিয়ে করবি আমাকে। বিয়ে..
“জিসান : হ্যাঁ মানে না মানে..
“নিশি : কি হ্যাঁ মানে করছিস। ভালোবাসি’স না
“জিসান : হ্যাঁ বাসি তো অনেক বাসি
“নিশি : তাহলে বিয়ে করতে সমস্যা কোথায়?
“জিসান : মানে এতো তাড়াতাড়ি…
“নিশি : রাখ তোর তাড়াতাড়ি ( গাড়ি থেকে নেমে ) আমি একাই যেতে পারবো!
“জিসান : আরে নিশি কি করছিস দাঁড়া..
.
নিশি দাঁড়ায় না হাঁটতে থাকে। জিসান গাড়ি থেকে নেমে নিশি’র সামনে দাঁড়িয়ে।
“জিসান : কি করছিস? এতো রাতে একা একা কোথায় যাচ্ছিস?
“নিশি : সর সামনে থেকে.. ( জিসানের পাশ দিয়ে যেতে চাইলে)
.
জিসান পেছন থেকে নিশি’র হাত ধরে নিশি’কে ঘুরিয়ে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পরে। তারপর নিজের হাত থেকে একটা রিং বের করে নিশি’র সামনে ধরে বলে..
“জিসান : এখন এটা দিয়ে প্রোপজ করি পরে ওকে। তো মিস নিশিতা আহমেদ নিশি! আপনি কি আমার শেহজাদি হবেন, হবেন আমার অর্ধাঙ্গিনী,হবেন আমার সারা জীবনের সাথি! মিস নিশিতা আহমেদ থেকে হবেন কি নিশিতা জিসান চৌধুরী! ( ভ্রু নাচিয়ে )
“নিশি : ( মুচকি হেসে ) হুম হবো!
জিসান নিশি’র উওর শুনে হেসে ওর অনামিকা আঙ্গুলে রিং’টা পরিয়ে দেয়। তারপর ওর হাতের উপরে কিস করে।
নিশি খুশিতে একটা লাফ দিয়ে জিসান’কে জরিয়ে ধরে বলে..
“নিশি : আই লাভ ইউ জিসান..
“জিসান : আই লাভ ইউ টু। তাহলে এবার চলুন
“নিশি : হুম।
দু’জনেই গাড়িতে গিয়ে বসে। এভাবেই খোলা আকাশের নিচে নিশি জিসানের বিয়ের প্রস্তাব মেনে নেয়। কিন্তু এই আকাশের নিচেই আরেকজন বসে বসে সব দেখে। এইসব দেখার পর তার কলিজা’টা ফেটে যাচ্ছে রাগে কিন্তু তাও সে চুপ। রাগে তার চোখ লাল হয়ে গেছে। চুপচাপ গাড়ি’র হ্যান্ডেল’টা ধরে মাথা’টা সিটের সাথে ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয় নিশান। নিশি’র প্রতিটা কথা বাজে ওর কানে।
নিশান : কিসের অধিকার? হ্যাঁ নিশি বলেছিল কিসের অধিকার ওর ওপর আমার। আমি কেন অধিকার ফলাই ওর ওপর। আর আমি জেনো আর অধিকার ফলাতে না পারি তাই আজকে এইসব করল নিশি। বিয়ে করবে না জিসান’কে। অর্ধাঙ্গিনী হবে ওর, সারাজীবন একসাথে থাকবে…( একটা দীর্ঘশ্বাস )।
.
বাসায় এসে আজ অনেক খুশি নিশি। কখন থেকেই অনামিকা আঙ্গুলে’র রিং’টা দেখছে। কি সুন্দর মূহুর্ত ছিল তখন যখন জিসান তাকে বিয়ে প্রোপজাল দিয়েছে। খোলা আকাশের নিচে, প্রতিটা গাছপালা, বাতাস, চাঁদ এমন’কা তারাও সাক্ষী ছিল তাদের এই ভালোবাসা’র । ভাবতেই ভালো লাগছে তার। সব কিছু এভাবে ঠিক হয়ে যাবে ভাবতে পারে নি।
মুচকি মুচকি হাসছে আর রিং’টাকে দেখছে। খুশিতে হেলেদুলে বেড়াচ্ছে পুরো রুমে। মেয়ের এমন হাবভাব ধরা পরে রায়হান আহমেদ এর কাছে। উনি এসব দেখে নিশি’কে কিছু জিজ্ঞেস করে না। কিন্তু ঘরে আসে ফারহানা বেগম এর সাথে আলোচনা করেন এই বিষয় নিয়ে।
এদিকে দেখতে দেখতে ৩ বোতল ড্রিক করে ফেলেছে নিশান। আরিয়ান চেয়েও থামাতে পারছে না তাকে। নিশানের কানে শুধু নিশি’র কথা বাজছে।
নিশান চোখ বন্ধ করে এক চুমুক দিতেই মনে পরে নিশি’র কথা..
“কোন অধিকারে আপনি আমার কাছে আসেন কোন অধিকারে। কে আপনি?কিসের এতো অধিকার দেখান আপনি। কিসের বলুন?”
নিশান চোখ খুলে হেসে বলে..
“অধিকার! জান পাখি অধিকার.. তুমি অধিকার দেখাচ্ছো আমাকে। তোমার প্রতি আমার কোনো অধিকার নেই তাই তুমি জিসান’কে সে অধিকার দিলে না। তোমাকে আমি এখন দেখাবো কিসের অধিকার! অধিকার এর মর্ম এবার বুঝবে তুমি!
“আরিয়ান : তুই আমাকে তখন না করলি কেন? তখন আমি সব বলে দিলে এতো কিছু হতোই না
“নিশান : ও বিশ্বাস করতো তোর কথা! বলতো আমি তোকে দিয়ে এইসব মিথ্যে বলাচ্ছি!
“আরিয়ান : ভিডিও দেখাতাম। সেগুলো তো ছিলো
“নিশান : মন ভেঙে যেতো ওর। এতো বড়ো শক ও মেনে নিতে পারতো না।
“আরিয়ান : কেন তোর মন ভাঙেনি..
“নিশান : এটা তো অনেক বার ভেঙেছে তাই এখন আর ভাঙে না..
“আরিয়ান : তা এখন কি করবি! বিয়ের কথা তো হয়ে গেলো
“নিশান : তো বিয়ে তো হয় নি..
“আরিয়ান : মানে…
“নিশান : সেটা কাল’ই দেখবি কিসের অধিকার…
.
সকালে নিশি অফিসে যাবার জন্য রেডি হয়ে বের হতে নিলে রায়হান আহমেদ নিশি’কে ডেকে বলেন..
“রায়হান : মামনি..
“নিশি : হ্যাঁ বাপি..
“রায়হান : আজ অফিসে যাওয়া লাগবে না!
“নিশি : কেন বাপি..
“ফারহানা : তোকে আজ দেখতে আসবে..
“নিশি : মানে বাপি… ( অবাক হয়ে )
“রায়হান : হ্যাঁ মামনি। আমার খুব কাছের একজন আর সম্বন্ধ’টা খুব ভালো।
“নিশি : কিন্তু বাপি…
“রায়হান : একদিন অফিসে না গেলে কিছু হবে না। তারা দুপুরে আসছেন। তুমি আরিফা কে ফোন করে আসতে বলো ( ফারহানা’কে উদ্দেশ্য করে ) । আর নিশি আশা করি তুমি আমাকে হতাশ করবে না।
“নিশি : ( বাবার মুখে নিশি ডাক শুনে নিশি আর কিছু বলে না। কারন ওর বাবা সিরিয়েস কিছু হলে নাম ধরে ডাকে। তাই নিশিও মাথা নিচু নাড়িয়ে রুমে চলে যায় )
“ফারহানা : হঠাৎ করে এইসব! তাড়াহুড়ো হচ্ছে না..
“রায়হান : নিশি’কে কিছুদিন ধরে নাকি কোনো ছেলের সাথে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমার মেয়ে’কে আমি অনেক বিশ্বাস করি আর যা করছি ওর ভালো’র জন্য করছি তুমি চিন্তা করো না।
“ফারহানা : হুম আমি জানি।
.
নিশি রুমে এসে দরজা লক করে বিছানায় ধপাশ করে বসে পরে। রাগে শরীর জ্বলছে। নিশানের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য এতো কিছু করলো, কালকে বিয়ে ঠিক করল তাও এখন এই সমস্যা। মাথায় খারাপ হয়ে যাচ্ছে নিশি’র।
“নিশি : উফফ জীবন’টা পুরো তেজপাতা হয়ে যাচ্ছে। কাল এতো কিছু করলাম , রাতে সব ঠি করলাম আর আজ এটা! বাপি এমন কেন করছে কেন কিছু বুঝতে চাইছে না। একবার জিজ্ঞেস ও করল না আমার পছন্দের কথা। হুট করেই এইসব!
.
নিশি রুমে পাইচারি করছে এখান থেকে ওখানে। তখন আরিফা আসে। নিশি আরিফা’কে দেখে তাড়াতাড়ি নিশানের থেকে শুরু করে কাল রাতে জিসানের প্রোপজ করা অবদি সমস্ত কথা বলে তার সাথে সকালের দেখতে আসার ব্যাপার’টাও।আরিফা হা করে সব শুনে।
“আরিফা : এতো কিছু হয়ে গেলো আর তুই আমাকে কিছু বললি না।
“নিশি : আরে সময় পেলাম কোথায় বলার!
“আরিফা : নিশান ভাইয়া.. আর সাথে আরিয়ান ও আমি কিছুই ভাবতে পারছি না।
“নিশি : এখন আর তোর ভাবা লাগবে না। এখান থেকে বের হবার উপায় বল!
“আরিফা : আরে চিল ছেলেকে না বলে দিবি ব্যস এটাই!
“নিশি : যদি না মানে..
“আরিফা : প্রেগন্যান্ট বলে দিবি সিমপাল ( হেসে )
“নিশি : তোর এখানে মজা মনে হচ্ছে ( দাঁতে দাঁত চেপে )
“আরিফা : আরে মজা করবো না এখনকার দিনে এটা নরমাল ব্যাপার। যাই হোক ছেলে মেয়েরা আলাদাভাবে কথা বলতে পাঠানো হয়। তখন তুইও বলে দিবি যে তোর বফ আছে ব্যস আর তখন কাজ না হলে বললাম তো…
“নিশি : চুপ কর শাকচুন্নী। চিন্তায় আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে!
“আরিফা : আরে আমি কি স্বাদে বলছি নাকি! তুই যেভাবে আচারের বোয়াম’টা নিয়ে বসে আছিস ওই’টা ছাড়া অন্য কোনো প্ল্যান আসলো না আমার।
“নিশি : শোন আমার খুব টেনশন হচ্ছিল তাই আমি আচার খাচ্ছি!
“আরিফা : তোকেই দেখলাম যে কি না টেনশনে পরলে আচার খায়। তবে একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার কি জানিস!
“নিশি : কোনটা?
“আরিফা : দুই ভাই তোর প্রেমে পাগল। বাহ সেই না
“নিশি : আবার মজা করছিস!( রেগে )
“আরিফা : আচ্ছা আচ্ছা রাগিস না কিন্তু এটা বল আজ অফিসে যাস নি ফোন করে নি?
“নিশি : না
“আরিফা : কেন?
“নিশি : কালকে অনেক কথা বলেছি তাই হয়তো… যাই হোক ওই টেনশন এখন নিতে পারবো না আগে এই ছেলে’র পক্ষে’র টেনশন শেষ করি…
“ফারহানা : কিসের এতো টেনশন.. ( হুট করে )
“নিশি : টেনশন মানে ( ঘাবড়ে গিয়ে )
“আরিফা : আসলে ওই যে দেখতে আসবে সেটা। তা আন্টি আপনার কিছু চাই এখানে..
“ফারহানা : হ্যাঁ ওদের আসার সময় হয়ে গেছে তাই এই শাড়ি’টা আনলাম। ওকে পরিয়ে দে আমার অনেক কাছ আছে ওখানে…
“নিশি : এতো আয়োজন করছো মনে হচ্ছে যেন বিয়ে করতে আসছে..
“ফারহানা : ভাগ্যে কি আছে কে বলতে পারে বল!
“নিশি : মা…
“ফারহানা : আরে এমন কিছু না আরিফা ধর এগুলো।
“আরিফা : হুম আন্টি।
.
ছেলেরা এসে পরেছে। আরিফা নিশি’কে এখনও সাজাচ্ছে। নীল রঙের একটা শাড়ি, তার সাথে নীল রঙের রেশমী চুড়ি, কানের দুল। চুল গুলো খোঁপা বেঁধে বেলী ফুল দিয়ে দিয়েছে। নিশি’কে আজ চমৎকার লাগছে। নিশি আয়নাতে নিজেকে দেখে মুখ ফুলিয়ে আরিফা’কে বলে…
“নিশি : এতো সুন্দর করে সাজিয়েছিস কেন? তুই কি চাস বিয়েটা হোক!
“আরিফা : আরে আরে তা না। যতই হোক তোর একটা সম্মান আছে। তাই…
“নিশি : না লাগবে না কিছু। এতো সাজাগোজের দরকার নেই। জিবন’টা তেনা তেনা হয়ে যাচ্ছে।
“আরিফা : কার কারনে জিসান না নিশান!
“নিশি : আরু…
“ফারহানা : কিরে তোদের হলো চল এখন..
“আরিফা : হ্যাঁ আন্টি আসছি..
.
আরিফা নিশি’কে নিয়ে নিচে নামছে। নিশি’র তো বেহাল অবস্থা। কেন জানি ওর শরীর আবারও শিউরে উঠছে। হার্টবিট আবারও বেড়ে যাচ্ছে। কারন কি নিশান আসে নি তো!
হাত পা কাঁপতে থাকে নিশি’র। কোনোমতে ছেলেপক্ষ’র সামনে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু মাথা তুলে দেখার সাহস পায় না। নিশি আরিফা’কে খোঁচা দিচ্ছে। আরিফা তো ছেলেপক্ষ দেখে অবাক। সে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে।
“নিশি : কিরে বল কিছু!
“আরিফা : ….
“নিশি : আরু..
“আরিফা : ( মুচকি হেসে ) সামনে দেখ কে এসেছে..
“নিশি : হাসছিস কেন?
“আরিফা : দেখ তো!
.
নিশি এবার সামনে তাকায়। সামনে তাকিয়ে দেখে নিশি তো খুব অবাক। কারন চিকন ফেমের গোল চশমা, পরনে একটা কাতান শাড়ি পরে তার সামনে আরশিয়া চৌধুরী বসে আছেন। নিশি তো খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করছে। কারন উনি তো আরশিয়া চৌধুরী তার মানে জিসান’র জন্য এসেছে। তাহলে তার এরকম অনুভূতি’র কারন কি। আচ্ছা আরশিয়া চৌধুরী কার জন্য দেখতে এসেছেন নিশি’কে।
চলবে….
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/391446905910421/