অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব_৩৪

গল্পের_নাম : অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব_৩৪ ( #crazy_for_you )
লেখনিতে :#মিমি_মুসকান

“নিশান : আরে জান ছাড় আমাকে। আর কখন আসলি তুই।

( নিশি জান শুনে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে নিশানের দিকে )

“- : তোর সাথে আমার কোনো কথাই নেই তুই কথাই বলবি না।

“নিশান : আরে বাবা কি করলাম আমি।

“- : কি করছিস আবার বলছিস। তুই পারলি এইভাবে আমায় ধোঁকা দিতে…..

( ধোঁকা দেবার কথা শুনে নিশি’র চোখ আরো বড় বড় হয়ে গেল। সে নিশানের দিকে তাকাল। কিন্তু নিশানের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। সে দিব্যি কথা বলে যাচ্ছে ওই মেয়েটা’র সাথে। )

“নিশান : ধোঁকা… মানে!

“ফুপি : আরে ও বিয়ের কথা বলছে। তুই আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে ফেললি। হুট করেই চলে আসলি আমাদের থেকে আর এসেই বিয়ে… ( বসা থেকে দাঁড়িয়ে )

“নিশান : ( মেয়ে’টা কে ছিলেন ছেড়ে ) আরে ফুপি… এমন কিছু না হুট করেই হয়ে গেল এইসব। কিন্তু তোমরা কখন আসলে আর আমাকে তো একবার জানালেও না।

( নিশি দাঁড়িয়ে কথা শুনছে। কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না। )

“নিশি : ( মনে মনে ) এই মহিলা যদি ফুপি হয় তাহলে এটা মনে হচ্ছে ওনার মেয়ে মানে নিশানের ফুফাতো বোন। হ্যাঁ এটাই হবার কথা কিন্তু কথা হলো এই মেয়ে কিসের কথা বলছে আর এতো চিপকে আছে কেন ওনার সাথে। আর উনি ও কেমন চিপকে আছে কিছুই বলছে না কেন?

“ফুপি : তা তোর বউ কোথায় দেখি কি এমন সুন্দরী। যার জন্য এতো তোরজোর।

“নিশান : ( এগিয়ে এসে নিশি কে ফুপি’র দিকে ঘুরিয়ে ) এই যে আমার জান পাখি!

“ফুপি : ( নিশি’র থিতুনিতে হাত দিয়ে ) যা সুন্দরী তো দেখতে কিন্তু একটু খাটো।‌‌ আমাদের তিশা’র চেয়েও মনে হয় খাটো হবে মেয়েটা।

“নিশি : ( তাহলে এই মেয়ে’টার নাম তিশা। হুহ লম্বু খাম্বা একটা। আমি ওর থেকে কি কম সুন্দরী। আসছে ওর চেয়ে খাটো আমি হুহ। কি সুন্দরী উনার মেয়ে যার সাথে আমার তুলনা করে। সুপারি গাছের পেত্নী, ভুতনি আসছে। )

“নিশান : যেমনই হোক না ওর আমার ভালোবাসা ফুপি ‌। ( এক হাত দিয়ে নিশি কে জরিয়ে ধরে )

“তিশা : ওরে ভালোবাসা রে।

“নিশান : কেন তোর হিংসে হয় নাকি।

“তিশা : হ্যাঁ হবেই তো আমার ভালোবাসায় ভাগ বসিয়েছে হবে না আবার।

“নিশি : ( ভ্রু কুঁচকে নিশানের দিকে তাকায় )

“নিশান : ( নিশি’র দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ) তোর ভালোবাসা তার জায়গা আর ওর টা ওর জায়গায় বুঝলি জান।

“আরশিয়া : কিন্তু তোমরা এখন, তোমাদের না আরো দেরি আরে আসার কথা ছিলো।

“নিশান : আসলে মা কিছু কাজ ছিলো অফিসে তাই এসে পরেছি।

“আরশিয়া : আর জিসান…

“নিশান : ওরা কালকে আসবে! নিশি তোমাকে তো পরিচয় করানো হলো না। উনি হলেন আমার ফুপি ( মহিলাকে উদ্দেশ্য করে ) আর ও হলো… ( মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে )

“তিশা : ( নিশানের কথা শেষ হবার আগেই ) জান। নিশানের জান তিশা।

“নিশান : ( মুচকি হেসে )

“নিশি : আসসালামুয়ালাইকুম ফুপি। আসসালামুয়ালাইকুম তিশা আপু। আমার নাম নিশি , নিশি আহমেদ নিশান চৌধুরী।

“তিশা : ( অনিচ্ছাকৃত হাসি দিয়ে ) ওহ আচ্ছা। আমি কি তোমার বড় হব যে আপু বললা।

“নিশি : ফুপি তো বললো এই মাত্র তুমি আমার বড় তাই…

“নিশান : ( বাহ্ জান পাখি কি জবাব টাই না দিলো )

“তিশা : সেটা তো হাইটে বলল!

“নিশি : ওই একই। আচ্ছা তোমরা বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। আর আপনি আসুন অফিসে যেতে হবে না আপনাকে…

“নিশান : হ্যাঁ আসছি।

“তিশা : আজ অফিসে যাবি! না গেলে হয় না আমি আসলাম আর তুই চলে যাবি…..

“নিশান : একটু কাজ আছে যেতে হবে রে…

“ফুপি : তিশা কাজের জন্য’ই তো ওরা না ঘুরে এখানে এসে পরেছে তুই এমন করিস না।

“তিশা : মম….

“নিশান : আচ্ছা আমি তাড়াতাড়ি চলে আসবো। হ্যাপি এখন।

“তিশা : ইয়াপ আমি জানতাম তুই আমার কথা ফেলবি না। ( নিশান কে জরিয়ে ধরে )

“নিশি : ( বুঝলাম না কথায় কথায় এভাবে জরিয়ে ধরার মানে কি আর উনি এতো আদিক্ষেতা দেখাচ্ছে কেন। )

“নিশান : আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি নিশি এসো।

“নিশি : হুম…
.
নিশান নিশি’র হাত ধরে রুমে নিয়ে আসে। কিন্তু নিশি পুরো রেগে বম হয়ে আছে। নিশানের এতো কাছে তিশা আসলে তার রাগ হচ্ছে।
নিশান কিছু টা হলেও বুঝতে পারছে নিশি রেগে আছে কিন্তু কি কারনে সেটা বুঝতে পারছে না।

নিশান রুমে এসে শাওয়ার নিতে চলে যায় কিন্তু নিশি বিছানায় বসে ভাবছে তিশা কেন বললো নিশান তাকে ধোঁকা দিয়েছে। খানিকক্ষণ পর নিশান এসে দেখে নিশি বিছানায় থম মেরে বসে আছে। নিশান নিশি’র সামনে এসে দাঁড়ায়। নিশি মাথা উঁচু করে তাকিয়ে দেখে নিশান খালি গায়ে। নিশি তাড়াতাড়ি হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়…

“নিশি : আপনার কি শরম লজ্জা নেই, আপনি ছাড়াও এই রুমে আরেকজন থাকে সেটা কি আপনার জানা নেই। হুট করে এসে আমার সামনে এভাবে দাঁড়ানোর মানে কি?

“নিশান : তুমি এতো মনোযোগ দিয়ে কি ভাবছিলে শুনি।

“নিশি : ( আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে এক চোখ বের করে ) মানে…

“নিশান : এতো লজ্জা পাওয়ার কি আছে তোমার হাসবেন্ড আমি। তুমি জানো আমার এই সিক্স প্যাক দেখার জন্য কতো মেয়ে পাগল।

“নিশি : কতো মেয়ে না শুধু তিশা পাগল। ( হাত সরিয়ে )

“নিশান : ( বক্সার গেঞ্জি পরতে পরতে ) মানে…

“নিশি : অনেক সহজ তিশা’র সিক্স প্যাক পছন্দ তাই আপনি জিম করে এসব করেছেন।

“নিশান : ( মেঝেতে নিশি’র সামনে বসে নিশি’র হাতে তোয়ালে দিয়ে ) মাথা টা মুছে দাও তো।

“নিশি : ( মুখ ভেংচি দিয়ে তোয়ালে নিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ) কি জিঙ্গেস করলাম আমি।

“নিশান : ( হঠাৎ তিশা কে নিয়ে এতো পরলো কেন। তাহলে কি জান পাখি jealous feel করছে )

“নিশি : কি হলো!

“নিশান : উফ ভালো মতো একটু মুছো না জানো তিশা কতো সুন্দর করে মুছতো। ( দেখি কি করে )

“নিশি : ( মুখ ফুলিয়ে তোয়ালে রেখে ) তাহলে ওর কাছে গিয়েই মুছোন। (। বলেই বিছানা থেকে নেমে হাঁটতে থাকে )

“নিশান : ( হাত টেনে নিশি কে কোলের ওপর বসিয়ে ) কোথাও যাচ্ছো?

“নিশি : ছাড়ুন আমাকে, ধরবেন না একদম। ( রেগে )

“নিশান : না ছাড়বো না। আচ্ছা জান পাখি আমি না কিছু পুড়ে যাওয়ার গন্ধ পাচ্ছি।

“নিশি : বাহ আপনার নাক তো বেশ ভালো রান্না ঘরে পুড়ছে আর আপনি এখানে সেটার গন্ধ পাচ্ছেন।

“নিশান : না এখানেই কিছু পুড়ছে।

“নিশি : কি এখানে কি পুড়বে?

“নিশান : জান পাখি তুমি jealous feel করছো।‌

“নিশি : কাকে নিয়ে?

“নিশান : আমাকে নিয়ে তিশা’র সাথে!

“নিশি : হোয়াদ্দা ফাউউ কথা।

“নিশান : তাহলে আমার কেন মনে হচ্ছে।

“নিশি : সেটা আপনিই ভালো জানেন। আচ্ছা ছাড়ুন এখন আমায়।

“নিশান : না ছাড়বোনা আমার বউ কে আমি জরিয়ে ধরেছি কার কি।

“নিশি : হইছে আগলা পিরিত না দেখাইলেও চলবো।

“নিশান : এই জিনিস টা আবার কি?

“নিশি : এটা জানেন না আপনি!

“নিশান : না তো। কখনো শুনি নি এরকম ভাষা।

“নিশি : তাহলে আপনি বাঙালি না।

“নিশান : কিহহ বাঙালি হতে হলে এসব জানতে হয় নাকি।

“নিশি : হ্যাঁ, হয়।

“নিশান : আমাকে তো কেউ কখনো বললো না এইসব।

“নিশি : বলবো কিভাবে, তারা জানে নাকি এইসব।

“নিশান : হতেও পারে।‌ কিন্তু আমরা জানি কোন ব্যাপারে কথা বলছিলাম।

“নিশি : মনে নেই।

“নিশান : আচ্ছা বাদ দাও রোমান্স করবো তোমার সাথে।

“নিশি : এ…এই একদম না ছাড়ুন আমাকে।

“নিশান : তুমি বললেই হলো…

“নিশি : দেখুন!

“নিশান : হ্যাঁ তোমাকেই দেখছি।

“নিশি : ছাড়ুন আমায়…

“নিশান : ( নিশি’র ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে ) চুপ… ( নিশানের চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পরতে থাকে। নিশান ‌ধীরে ধীরে নিশি’র ঠোঁটের দিকে আগাতে থাকে। নিশি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে। নিশান নিশি’র কাছে যেতেই হুট করে তিশা রুমে ঢুকে পরে…

“তিশা : ওপস সরি!

“( তিশার কথা শুনে নিশান নিশি কে ছেড়ে দেয়। নিশি আর নিশান ওঠে দাঁড়ায় )

“নিশান : তুই এখন…

“তিশা : সরি নক করে আসা দরকার ছিলো। আসলে কি বল তো আগে তো তোর রুমে এমন করেই এসে পরতাম নক করতাম না কিন্তু এখন তো…

“নিশি : ( জানিস যখন তখন নক করলি না কেন রে ভুত’নি‌।‌ আমি জানি ইচ্ছে করেই নক করিস নি আবার এখানে এসে simpathy নেওয়া হচ্ছে ) it’s ok আপ্পি, ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যাবে। তা কিছু লাগবে আপনার।

“তিশা : হ্যাঁ নিশান কে ‌( নিশানের দিকে ফিরে ) শাওয়ার নিয়েছিস বুঝি, চুল তো এখনো ভেজা দে আমি মুছে দেই ( নিশানের চুলে হাত দিয়ে )

“নিশি : ( বিছানা থেকে তোয়ালে নিয়ে ) থাক আপ্পি আমি আছি তোমার কষ্ট করা লাগবে না তুমি বসো না।

“তিশা : ( নিশি’র কথায় জোরপূর্বক হাসি দিয়ে )

“নিশান : ( আমি যা ভাবছিলাম তাই ঠিক। নিশি jealous. হি হি হি ‌এখন দেখি জান পাখি তুমি আমায় কিভাবে ভালো না বেসে পারো। )

“নিশি : ( নিশান কে টান দিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে ) আপনি বসুন এখানে , আমি চুল মুছে দিচ্ছি।

“নিশান : ( দাঁত বের করে হেসে ) আচ্ছা।

“তিশা : আচ্ছা আমি তাহলে যাই তোরা আয়, নিচে সবাই তোদের জন্য অপেক্ষা করছে।

“নিশি : ওহ তাহলে তুমি আমাদের ডাকতে এসেছিলে আপু, আচ্ছা তুমি যাও আমরা আসছি।

( তিশা মুখ ফুলিয়ে চলে যায় )
.
নিশি চুল মুছছে আর নিশান ওর কোমর জরিয়ে ধরে।

“নিশি : কি হচ্ছে?

“নিশান : কিছু না।

“নিশি : চুল মোছা হয়ে গেছে যান রেডি হয়ে নিন।

“নিশান : হুম…
.
কিছুক্ষণ পর…

নিশি আর নিশান একসাথে নিচে নামে। তিশা রাগি চোখে ওদের দিকে তাকায়। নিশি বেশ বুঝতে পারছে এই তিশার মনে কিছু না কিছু আছে আর ‌নিশানের‌ ফুপি ও‌ বেশ সুবিধার নন।

নিশান অফিসে চলে গেলে নিশি যায় আরশিয়া’র সাথে কথা বলতে। আরশিয়া রুমে বসে বই পরছিলেন। নিশি গিয়ে ওনার পাশে বসলেন।

“আরশিয়া : কিছু বলবে মা..

“নিশি : মা! একটা কথা জিজ্ঞেস করবো!

“আরশিয়া : হ্যাঁ করো!

“নিশি : আপনি তো আমায় বলেছিলেন আমার নাকি অনেক কিছু জানার আছে আর আমি জানতে চাইলে আমি আমায় জানাবেন।

“আরশিয়া : ( বই টা বন্ধ করে নিশি’র দিকে অবাক চোখে তাকায় )

“নিশি : ( এক হাত আরশিয়া হাতের ওপর রেখে ) মা আমি সব জেনে গেছি। এখন শুধু কারন টা জানতে চাই বলবেন আমায়।

“আরশিয়া : নিশি একটা কথা মনে রাখবে পৃথিবীতে যা কিছু হয় তার পিছনে সবসময় একটা কারন থাকে…

“নিশি : আমি জানি মা! জিসান এমন হওয়ার পিছনে কোনো না কোনো কারন আছেই।

“আরশিয়া : জানো কিছু সংসার সুখি হয় আবার হয় না। যেগুলো সুখের হয় না তার পিছনে স্বামী স্ত্রী মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে আবার কিছু সংসার এমন থাকে যেখানে স্বামী স্ত্রী মিল থাকলেও কিছু আত্নীয় স্বজন দের জন্য তা ঠিক থাকে না।

“নিশি : ( মনোযোগ দিয়ে শুনছে )

“আরশিয়া : ( দীর্ঘশ্বাস ফেলে ) নিশানের মা আমার বড় বোন ছিলো। উনি যখন মৃত্যু শয্যায় ছিলেন তখন আমি ছিলাম উনার পাশে। উনি আমার হাতে হাত রেখে বলেছিলেন যেন আমি নিশানের খেয়াল রাখি। নিজের বোনের কথা রাখা’র জন্য আমি আহসান’কে বিয়ে করি। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিলো। এরপর জিসানের জন্ম হলো কিন্তু আমি কখনও ওদের মাঝে ভেদাভেদ করি নি।
আমার সুখের সংসার ছিলো কিন্তু আমি একটা কথা কি জানো সুখ কিন্তু ক্ষনস্থায়ী। তেমনি আমার সুখ ও বেশি দিন টিকল না। ( বলে থামলেন তিনি )

“নিশি : কেন মা কি হয়েছিল?

“আরশিয়া : ( আবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে ) লোভ মানুষকে হৃদয় হীন করে তোলে, পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট করে তোলে জানো তুমি। আমার সাথেও তাই হলো, সম্পত্তির জন্য নিজের কাছের লোকরাই সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তারা আমাদের সব সম্পত্তি নিজের করে নিতে চায়। তাই তারা প্রথমে নিশান কে নিজের হাতে রাখতে চেয়েছিল। রাখলে লাভ ও হতো আর সহজও কারন নিশান আমার সৎ ছেলে ছিলো। ওরা ভেবেছিলো নিশান কে সহজেই নিজের হাতে করতে পারতো। কিন্তু জানো নিশান আমাকে খুব বিশ্বাস করতো আর ভালোবাসতো তাই হয়তো ওকে কিছু করতে পারে নি। ( থেমে ) তাই বলে তারা থেমে থাকেনি। তারা আমার ছোট ছেলে জিসানের মাথা টা নষ্ট করে দিলো। ছোট থেকেই জিসান কে বুঝতে শিখালো নিশান ওর সৎ ভাই,
নিশান ওর থেকে আমাকে কেড়ে নিবে। জিসান তখন এতোটাই ছোট যে ওর ছোট মাথায় এটাই গেধে বসল। এরপর থেকেই নিশান যে জিনিসটা নিতো জিসান সেটাই ওর থেকে কেড়ে নিতো।

“নিশি : এরকম’টা কে করল মা!

“আরশিয়া : নিশানের ফুপি!

“নিশি : কিহহ!

“আরশিয়া : হ্যাঁ মা। নিশানের ফুপি। উনি ছোটবেলা থেকেই জিসানের মাথায় এসব ঢুকিয়েছে। নিশান কে ও চেয়েছিলো কিন্তু নিশান এসবে কান দেয় নি তবুও খুব ভালোবাসে নিজের ফুপি কে। নিশি তোমাকে একটা কথা বলি।

“নিশি : হুম…

“আরশিয়া : উনি কিন্তু এখানে এমনে এমনে আসেনি। কিছু না কিছু তো করবেই। উনি চেয়েছিল তিশা’র সাথে নিশানের বিয়ে দিতে। কিন্তু নিশান করতে চায় নি। তাই উনি এখানে এসেছেন। তোমাকে অনেক কিছু সহ্য করতে হবে মা।

“নিশি : এটা আমার প্রথমেই মনে হয়েছিল। কিন্তু আপনি চিন্তা করবেন না মা আমি এমন কিছুই হতে দেবো না।

“আরশিয়া : ( মুচকি হেসে নিশি’র মাথায় হাত দিয়ে ) তোমাকে আমি ভরসা করি। জানো আপু আজ বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন কারন উনি একদম মন মতো বউ মা পেয়েছেন। জানো নিশি তোমার সাথে আমি কেন নিশানের বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম।

“নিশি : ( আরশিয়া’র দিকে তাকায় যার অর্থ কেন )

“আরশিয়া : এতো কিছু হবার পরও নিশান এসে আমাকে বলে নি জিসান ওর সাথে এমন কিছু করেছে। সেদিন ও অনেক কেঁদেছে আমার কাছে তবুও আমাকে কিছু বলে নি। কিন্তু আমার মনে হয়েছিল হয়তো জিসান কিছু করেছে। পরে আমি সব জেনেছি আরিয়ান’র কাছ থেকে। আমার মনে হলো তোমার জন্য নিশান’ই ঠিক তাই নিশানের সাথে তোমার বিয়ে দিলাম। হয়তো তুমি এখন সেটা বুঝবে না কিন্তু একদিন ঠিকই বুঝবে।

“নিশি : ( নিশ্চুপ )…

“আরশিয়া : ( নিশি’র মাথায় হাত দিয়ে ) আমিও মেয়ে সবকিছু বুঝি। জানি এতো সহজে মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু আমি একজন মা ও । তাই সন্তানের ভালো টা বুঝি। তুমি আমার কাছে আমার বউ কম মেয়ে বেশি। আমার কোনো মেয়ে নেই তবে মেয়ে হিসেবে দেখি আমি।

“নিশি : মা…

“আরশিয়া : তোমার কাছে সময় আছে। তাড়াহুড়ো করো না।‌

“নিশি : ঠিক আছে মা। আমি আসছি এখন।

“আরশিয়া : আচ্ছা যাও।
.
নিশি আরশিয়া’র রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে আসতে নিলে হুট করেই তিশা এসে নিশি’র সামনে পথ আটকে দাঁড়ায়…

“নিশি : তুমি….

চলবে….
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/399103871811391/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here