গল্পের_নাম : অভ্রভেদী_প্রণয় পর্ব_ ২৬ ( #crazy_for_you )
লেখনিতে :#মিমি_মুসকান
নিশান কিছুক্ষণ পর খাবারের প্লেট নিয়ে রুমে ঢুকল।নিশি মেঝেতে বসে এখনও কাঁদছে। নিশান খাবারে’র প্লেট টা নিয়ে নিচেই নিশি’র সামনে বসলো। এক লোকমা ভাত নিশি’র মুখের সামনে ধরে বলল..
“নিশান : সারাদিন কিছু খাও নি খেয়ে নাও।
.
নিশি মুখ ফিরিয়ে নিল। নিশান নিশি’র মুখ ঘুরিয়ে গাল চেপে ধরে মুখে খাবার ঢুকিয়ে দিলো। নিশি মুখ ফুলিয়ে মুখে খাবার নিয়ে বসে রইল। খাবার গিলছে না। নিশান খাবারের প্লেট নিয়ে নিশি’র দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু নিশি খাবার মুখে নিয়েই বসে আছে। নিশান নিশি’র মুখের ওপর থাকা ছোট চুল গুলো কানের পিছে গুঁজে দেয়। নিশি নিশানের ছোঁয়ায় কেপে ওঠে। সে গুটিয়ে বসে। নিশান নিশি’র গালে হাত রেখে বলে…
“নিশান : জান পাখি খেয়ে নাও জিদ করো না।
“নিশি : ( চুপ হয়ে একই ভাবে বসে আছে )
“নিশান : তুমি কি চাও বলোতো… শুধু তোমাকে আদর করি। ( দুষ্টু হাসি দিয়ে )
“নিশি : ( চোখ বড় বড় করে নিশানের দিকে তাকায় )
“নিশান : কি করবো ( নিশি’র দিকে ঝুঁকে )
.
নিশি চট করে মুখের খাবার খেয়ে আবারো আ করে। নিশান মুচকি হেসে নিশি মুখে আবারও খাবারের লোকমা দেয়। নিশি চুপচাপ খেয়ে নেয়। নিশান বসে নিশি’কে খাওয়াতে থাকে। খাওয়া শেষ হয়ে গেলে নিশান প্লেট নিয়ে চলে যায়। নিশি মেঝেতেই বসে থাকে। ঘরের চারদিক দেখছে। এটাই সে ঘর যেখানে নিশি’কে আরো একবার আটকে রাখা হয়েছিল। তার মানে এখানে কেউ নেই যার কাছে সে সাহায্য চাইবে। নিশি চারপাশ তাকায়,নিশি’র ছবিতে ঘরের দেওয়াল ভর্তি। হঠাৎ নিশি মনে পরে সেই স্বপ্নের কথা।
সেদিন স্বপ্নে যা দেখেছিল আজ তাই হয়েছে। ভাবতে পারে নি কখনো স্বপ্নটা এভাবে সত্যি হয়ে যাবে। এসব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল নিশি।
হুট করেই নিশান এসে নিশি’কে কোলে তুলে নেয়। তারপর নিশি’কে খাটে শুইয়ে দিয়ে নিশি’কে বুকে জরিয়ে ঘুমিয়ে পরে।ঘটনা’টা এতো তাড়াতাড়ি হওয়ায় নিশি’র বুঝতে সময় লাগে। নিশি তখন নিশানের বুকে। নিশানের প্রত্যেক’টা হার্টবিট’র শব্দ শুনতে পারছে সে।
নিশি কিছু বলতে যাবে তার আগে নিশান বলে ওঠে…
“নিশান : যা বলার সকালে বলো। খুব ঘুম পাচ্ছে আমার। হিসেব করে দেখলে আজ বাসর রাত ছিল তোমার আমার কিন্তু জানি তা কিছু হবে না। তাই ঘুমিয়ে পরো তুমি আর আমাকেও ঘুমাতে দাও। যা ঝগড়া করার আছে সকালে বলো আর নড়াচড়া করবে না কারন তোমাকে আমি ছাড়ছি না। তোমাকে বুকে নিয়ে ঘুমাবো আজ।
“নিশি : আহারে উগন্ডার শখ কতো আমাকে নিয়ে ঘুমাবে। কেন রে আমি কি তোর কোলবালিশ নাকি। হুহ দম নিতে পারছি না। আর বলছেও কথা বলতে না। তোর সাথে আমি এমনেতেও কথা বলবো না। ঠক, প্রতারক একটা। আই যাস্ট হেট ইউ। ( মনে মনে )
“নিশান : হ্যাঁ গালাগালি শেষ হলে এবার নিজে ঘুমাও আর আমাকেও ঘুমাতে দাও।
“নিশি : শুনলো কিভাবে ( নিশানের দিকে তাকিয়ে )
“নিশান : তোমার প্রতি অনুভব’র কথা জানি আমি। ঘুমাও এখন তুমি আর ভেবো না।
.
সকালে…
নিশি ঘুম থেকে ওঠে দেখে নিশান এখনো তাকে বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। নিশি নিশান’কে দেখতে থাকে।
নিশি নিশানের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে কেন এই লোকটা এমন। এমন কেন করছে তার সাথে। এসব কি শুধু ভালোবাসা না অন্য কিছু।
হঠাৎ’ই চোখ খুলে নিশি’র দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচাতে থাকে নিশান। নিশি তো ভয়’ই পেয়ে যায়।
“নিশি : আপনি..
“নিশান : তা আমাকে দেখছিলে বুঝি
“নিশি : আপনাকে দেখার কি আছে
“নিশান : আই নো অনেক হ্যান্ডসাম আমি
“নিশি : তাহলেই হয়েছে
“নিশান : কি বললে তুমি
“নিশি : ছাড়ুন আমাকে..
“নিশান : আমার সম্পত্তি তুমি। তোমাকে নিয়ে যা ইচ্ছে হয় করবো। এখন ছাড়বো না ছাড়বো না এটা আমার ইচ্ছা।
“নিশি : ( মুখ ফুলিয়ে থাকে )
নিশান নিশি’র ধরে ওর গাল ঘসতে থাকে। নিশানের খোঁচা খোঁচা দাড়ি নিশি’র গালে লাগে।
“নিশি : এই শেভ করেন না আপনি
“নিশান : তুমি যা জ্বালাও শেভ করার সময় পাই না আমি..
“নিশি : তাহলে আমাকে ছাড়ুন এখন।
“নিশান : ওয়েট তার আগে একটা কাজ করতে হবে
“নিশি : কি…
.
নিশান হুট নিশি’র ঠোঁট দুটো আঁকড়ে ধরে অনেকক্ষণ যাবত। নিশি মোচরা মোচরি শুরু করে দেয় কিন্তু নিশান তাও ওকে ছাড়ে না। কিছুক্ষণ পর নিশান নিজেই ছেড়ে দেয় নিশি’কে। নিশি’র ঠোঁটে’র হাল বেহাল।
“নিশি : এটা ঠোঁট আমার..
“নিশান : হ্যাঁ আর তুমি আমার। যাই হোক গুড মর্নিং কিস ছিল এটা জানি তুমি তো দিবে না তাই আমিই দিলাম
“নিশি : আই যাস্ট হেট ইউ
“নিশান : অ্যান্ড আই লাভ ইউ জান পাখি!
.
নিশান নিশি’কে ছেড়ে দেয়। ছাড়া পেয়ে নিশি আবার একটু দম ফেলে। তারপর ওয়াসরুম চলে যায় ফ্রেশ হতে। নিশান আবারও ঘুমিয়ে পরে।
খানিকক্ষণ পর নিশি একটা লাইট সবুজ রঙের শাড়ি পরে আয়নার সামনে এসে চুল ঝারতে থাকে। হঠাৎ করেই নিজের কোমরে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে লাফিয়ে ওঠে নিশি।
হাতের ছোঁয়া’টা নিশানের সেটা চিনতে কষ্ট হয় নিশি’র।নিশান পেছন থেকে নিশি’র কোমর জরিয়ে নিশি’র চুলে মুখ গুজে দেয়। নিশি ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু নিশান ততোটাই শক্ত ভাবে নিশি’কে জরিয়ে ধরে।
“নিশান : তোমার এই চুলের গন্ধ আমায় পাগল করে জান পাখি!
“নিশি : সকাল সকাল কি শুরু করেছেন ছাড়ুন আমাকে।
“নিশান : তুমি রাতে কিছু করতে দিলা কই
“নিশি : ফালতু কথা বন্ধ করুন। ছাড়ুন আমাকে
“নিশান : এ ছাড়া আর কোনো ডায়লগ জানো না তুমি
“নিশি : হুহ।
.
নিশান আরো কতোক্ষণ নিশি’কে ওভাবে জরিয়ে রাখে। তারপর ছেড়ে দিয়ে ওয়াসরুম এ চলে যায়।
নিশি বিছানায় বসে বসে ভাবছে কি করে এখান থেকে বের হওয়া যায় তখন নিশান ওয়াসরুম থেকে ডাক দেয় নিশি’কে।
“নিশি : কি হয়েছে
“নিশান : জামা আনি নি আমি দিয়ে যাও
“নিশি : নিয়ে যেতে পারেন না
“নিশান : আমি আসবো এভাবে..
“নিশি : দিচ্ছি..
.
নিশি একটা জিন্স আর টি শার্ট নিয়ে ওয়াসরুম এর দরদার সামনে এসে নক করে। নিশান দরজা খুলে নিশি জামা বাড়িয়ে দেয় নিশানের কাছে। তখন নিশান নিশি’র হাত ধরে ওয়াসরুম এ টেনে নিয়ে আসে।
নিশিকে দেওয়ালে চেপে ধরে আছে নিশান। নিশি নিশানের দিকে তাকাতেই দেখে নিশান খালি গায়ে। নিশি চোখ বন্ধ করে ফেলে তাড়াতাড়ি!
“নিশি : ছি আপনি খালি গায়ে আমার সামনে।
“নিশান : তো
“নিশি : এসবের মানে কি
“নিশান : প্রেম প্রেম পাচ্ছিল আমার তাই
“নিশি : যতসব
.
নিশান নিশি’র ঘাড়ে নিজের মুখ ডুবিয়ে দেয়। তারপর নিশি’র গালে স্লাইড করতে থাকে। নিশি’র কানে ফিসফিসিয়ে বলে..
“নিশান : তোমাকে দেখানোর ছিল শেভ করে ফেলেছি
“নিশি : উদ্ধার করেছেন আমাকে। সরুন এখন যেতে দিন আমাকে
“নিশান : হুম যাও ( নিশি’র থেকে সরে গিয়ে )
“নিশি : হুহ..
.
নিশি যেতে নিলেই নিশান ওর কোমর ধরে আবার নিজের কানে টেনে আনে।
“নিশান : জান পাখি তুমি এতো আনরোমান্টিক কেন,
“নিশি : কারন আই হেট ইউ
“নিশান : বাট আই লাভ ইউ..
.
সারাদিন নিশি পুরো বাড়ি ঘুরল পালানোর জন্য। কিন্তু কিছু’ই পেলো না। বাড়ি’টাতে নিশি ছাড়াও আরো অনেক মানুষ আছে। বেশির ভাগই গার্ড তাও পুরো বাড়ি জুড়ে। বাড়ির বাইরেও অনেক গার্ড। আসল কথা হলো নিশি”র পালানোর কোনো পথ নেই।
বাড়িতে অনেক কাজের লোক।তারা নিজেদের মতোই কাজ করছে। নিশি’র সাথে কেউ কথা বলে না। নিশিও কথা বলতে চাইলে কথা বলছে না কিন্তু ওই রাতে দেখা মহিলা’কে পেলো না।
নিশি ঘরে বসে জিসানের কথা ভাবছে। কাল থেকে এ পর্যন্ত জিসানের ব্যাপারে কোনো কথা হয় নি নিশানের সাথে। নিশান রুমে ঢুকতেই নিশি বলে ওঠে…
“নিশি : জিসান কোথায়?
( সরি সবাইকে গল্প ছোট আর লেট হবার জন্য। )
আগের পর্বের লিংক
https://www.facebook.com/groups/371586494563129/permalink/393455452376233/