অল্প থেকে গল্প🍁.পর্ব:৮

0
1039

অল্প থেকে গল্প🍁
অরিত্রিকা আহানা
পর্ব:৮

উপল চুপচাপ খাটের কোনায় বসে আছে।অনুর মাথায় যে কি ভূত চেপেছে সে বুঝতে পারছে না।কি করে এমন একটা ছেলের সাথে ছবির বিয়ে ঠিক করছে।পাত্রের ছবি দেখেই ওর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।ছেলেটাকে ওর সুবিধের মনে হচ্ছে না।বয়সও বেশি মনে হচ্ছে।
উপল নড়েচড়ে সোজা হয়ে বসলো।গলাটা পরিষ্কার করে বললো,
—অনু তুমি কি সিরিয়াস?
—কোন ব্যাপারে?
—ছবির বিয়ে নিয়ে।
—কেন কোন সমস্যা?
—না মানে ছেলেটা তো আমার চেয়েও অনেক বড়।
—আরমান মানুষ হিসেবে অনেক ভালো।ছবিকে কে ও ভালো রাখবে।অন্তত তোমারদের মত নয়।বয়স বেশি হলেই কোন মানুষ খারাপ হয়ে যায় না।আরমান যথেষ্ট দায়িত্ববান।
—কেন ইয়াং ছেলেরা দায়িত্ব নিতে জানে না?
—সেটা আমি তোমার কাছে জানতে আসবো না।অনেক দরদ দেখিয়েছো আর দরকার নেই।
—কিন্তু…
—কোন কিন্তু নয়।আমার বোনের ব্যাপারে তুমি কোন কথা বলতে এসো না।
উপল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চুপ করে রইলো।অনু ইদানীং ওর কোন কথাই সহ্য করতে পারে না।অথচ বিয়ের প্রথম প্রথম দুজনের মধ্যে কত ভালোবাসাবাসি ছিলো।চোখে হারাতো দুজন দুজনকে।এখন সেই সব শুধু স্মৃতি।বিগত সাত আটমাস যাবতই অনু এমন খিটখিটে আচরণ করছে।লাস্ট দুমাসে সেটা প্রকোপ আকার ধারণ করেছে।অনুর হঠাৎ এই পরিবর্তন কেন উপলের মাথায় আসছে না।সে কি সংসার নিয়ে বিরক্ত? নাকি প্রেগন্যান্সির কারনে? হতে পারে প্রেগন্যান্সির কারনেই!এইসময় শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্সের কারনে নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে!উপল উঠে বাতি নিভিয়ে দিলো।চুপচাপ গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।অনুর কাছে ঘেঁষা তার একদম নিষেধ।

অবশেষে ছবির ঘোরতর আপত্তির কাছে অনু হার মানলো।ছবি কিছুতেই বিয়ে করবে না।অবশ্য মুখে অনু যাই বলুক না কেন মনে মনে সে নিজেও চাইছিলো না ছবিকে আবার বিয়ে দিতে।বিশেষ করে বাবা মাকে না জানিয়ে শুধুমাত্র জেদের বশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে কি না তা নিয়েও টেনশনে ছিলো।কিন্তু আনোয়ারা বেগমকে শুদ্ধর বিয়ের তোড়জোড় করতে দেখে তার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।ওর সব রাগ গিয়ে পড়লো উপলের ওপর।সে কেন শুদ্ধর বিয়েটা আটকাচ্ছে না।কেন কিছু করছে না?।যদিও উপল জানে বিয়েটা হচ্ছে না তবুও ইচ্ছে করেই অনুকে জানায় নি সে অনুর ওপর বিরক্ত হয়ে চুপচাপ রইলো।

শুদ্ধর বিয়ে উপলক্ষে পুরো ফ্যামিলি চিটাগাং এসেছে। তবুও সপ্তাহ খানেকের মত ছুটি নিয়েছে সে।আত্মীয় স্বজন সবাইকে দাওয়াত করতে হবে,নানারকম ঝামেলার ব্যাপার আছে।তাই আনোয়ারা বেগম সবাইকে তাড়া দিয়ে নিয়ে এসেছেন।

অনু খেয়াল করেছে।আনোয়ারা বেগম ছবিকে দেখলেই মুখ ভার করে রাখেন।তাই সে ছবিকে কড়া নিষেধ করে দিয়েছে ছবি যেন দরকার ছাড়া আনোয়ারা বেগমের সামনে না যায়।ছবিও জরুরী কোন দরকার ছাড়া পারতপক্ষে আনোয়ারা বেগমের সামনে যায় না।

শুদ্ধর বন্ধুরা সবাই এসেছে।চারিদিকে হৈচৈ।পুরো বাড়ি লাইটিং করা হয়েছে।শুদ্ধদের বাড়িটা দোতলা।এতদিন কেউ না থাকায় বেশ অযত্নে ছিলো।ওরা আসার আগেই উপল কেয়ারটেকারকে দিয়ে রঙ করে নিয়েছে।বাড়িভর্তি মেহমান থাকায় বাড়িটা বেশ জমজমাট লাগছে।বাড়ির সামবে দুপারে সারি বাধানো নারিকেল গাছ লাইটিং আলোয় ঝিকঝিক করছে।উৎসবমুখর পরিবেশ চারদিকে।
অনু নিজের ঘরে দুম মেরে বসে আছে।উপলের সাথে একটু আগে আরেকদফা ঝগড়া হয়েছে তার।শরীর খারাপ তাই বেশি কিছু বলতে পারে নি।রাগ পুরোপুরি ঝাড়ার আগেই উপল বেরিয়ে গেছে।
পায়ে ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় খাটের ওপর গিয়ে শুলো সে।চিন্তায় মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।আনোয়ারা বেগম ধুমধাম করে ছেলের বিয়ের আয়োজন করছেন।এদিকে ছবির কথা কেউ ভাবছে না।কত জঘন্য মেন্টালিটি এদের।চোখ বন্ধ করে এসব ভাবছিলো সে,এমন সময়
শুদ্ধ দরজায় দাঁড়িয়ে বলল,
—আসবো ভাবি?
অনু অনিচ্ছাসত্ত্বেও বলল,
—এসো।
শুদ্ধ ভেতরে ঢুকে বলল,
—তোমার কি শরীর খারাপ ভাবি?
অনু জবাব দিলো না।এইমুহূর্তে শুদ্ধর সাথে ওর কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।মুখ কালো করে বসে রইল!
—ভাবি তুমি কি আমার ওপর রেগে আছো?
—রাগবো কেন?
স্পষ্ট ক্ষোভ অনুর গলায়।শুদ্ধ হেসে বলল,
—সত্যি রেগে নেই তো?
অনু অসহায় গলায় বলল,
—কেন করছো শুদ্ধ?
—আমি তো বিয়ে করছি না ভাবি!
—তাহলে এসব কি? এত ধুমধাম আয়োজন?
—লুকিয়ে করলে কি খুব বেশি ভালো হতো?
—মানে?
—মানে কিছু না ভাবি।অনেক দিন সবার বাড়িতে আসা হয় না।বিয়ে উপলক্ষে সবাই একত্র হলাম খারাপ কি?অনু অধৈর্য গলায় বলল,
—বিয়েটা কি তাহলে হচ্ছে?
শুদ্ধ চেয়ার টেনে অনুর পাশে বসলো।স্বভাবসুলভ ঠান্ডা গলায় বলল,
—না!
অনুর সন্দেহ পুরোপুরি না কাটলেও কিছুটা কমেছে।
শুদ্ধ টি-শার্টের কোনা দিয়ে চশমা পরিষ্কার করে নিলো।তারপর মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,
—তোমাকে একটা ঘটনা বলি মন দিয়ে শুনবে ঠিক আছে?
অনু মাথা দুলালো।শুদ্ধ মুচকি হেসে বলল,
—গুড!
অনু উৎসুক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে।শুদ্ধ শান্ত গলায় শুরু করলো,
— আচ্ছা ভাবি বলতো বাচ্চারা যখন দুষ্টুমি করে তখন মায়েরা তখন কি করে?
অনু বিরক্ত কন্ঠে বলল,
— বেত নিয়ে তাদের পেছন পেছন
ছোটে দু-ঘা বসিয়ে দেওয়ার জন্য।
—এক্সেক্টলি! আর বাচ্চারা?
অনু বিরক্তি চেপে রাখতে পারছে না। এখন এসব বলার সময়? শুদ্ধর মাথা কি গেছে? এসব উদ্ভট কথা শুনতে তার মোটেও ভালো লাগছে না। হতাশ কন্ঠে বলল,
—এসবের মানে কি শুদ্ধ?
শুদ্ধ হেসে বলল,
—আমার কথা কিন্তু এখনো শেষ হয় নি ভাবি? তুমি আগে বলো, মা যখন রেগে গিয়ে বেত নিয়ে দৌড়ায় তখন বাচ্চারা কি করে?
অনু বিরক্ত গলায় বলল,
—আর কি করবে?মারের হাত থেকে বাঁচার জন্য এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করে দেয়!
—ঠিক বলেছো ভাবি।কিন্তু যে বাচ্চা বুদ্ধিমান সে কি করবে জানো?
—কি?
—সে কখনো ছোটাছুটি করবে না!সে গিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরবে মাকে!পালাবে না।যত রাগই থাকুক না কেন সন্তান ঝাপ্টে ধরলে মা কিন্তু আর রেগে থাকতে পারে না!তাকে কাছে টেনে নেবে।তুমি কি আমার কথা বুঝতে পেরেছো ভাবি?
অনু বিস্ময় নিয়ে শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে আছে।শুদ্ধ এত সুন্দর করে কেন কথা বলে?ওর শ্বশুরমসাইয়ের দেওয়া নামটা সার্থক।শুদ্ধ তার নামের মতই শুদ্ধ!অনু অপরাধীর সুরে বলল,
— তুমি এত ভালো কেন শুদ্ধ?
শুদ্ধ হাসলো।অনু তাকিয়ে আছে।পৃথিবীর সবচেয়ে নিখাদ হাসি দেখছে সে।শুদ্ধ মধুর গলায় বলল,
—রাগ কমেছে?
—আর লজ্জা দিও না শুদ্ধ!
—ঠিক আছে ভাবি আমি আসছি।
শুদ্ধ উঠে চলে যাচ্ছিলো।দরজার কাছ থেকে ফিরে এসে বলল,
—তোমার কি শরীর খারাপ ভাবি?
অনু হেসে বলল,
—এখন ভালো আছি।

ছবি এদিক ওদিক ঘুরছে।ওর চোখদুটো শুদ্ধর সন্ধান করে চলেছে।হঠাৎ চোখের সামনে কেউ তুড়ি বাজাতেই ও চমকে উঠলো।মেহেদী হাসিমুখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
–কি ব্যাপার ছবি?তোমাকে ডাকতে ডাকতে আমার ভোকাল কর্ড ডেমেজ হয়ে গেছে অথচ তুমি ফিরেও তাকালে না?এতবার ডাকলাম সাড়া দিলে না কেন?আমি তো ভাবলাম তুমি মনে হয় কোন কারনে কানে কালা হয়ে গেছো।
ছবি লজ্জিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়িয়ে বললো,
—সরি ভাইয়া,আমি খেয়াল করি নি।কেমন আছেন আপনি?
—আছি ভালোই।তোমার কি খবর?
ছবি টেনে হিঁচড়ে ঠোঁটে হাসি এনে বলল,
—আলহামদুলিল্লাহ!
—আমাদের বিয়েতে এলে না কেন?
–পরীক্ষা সামনে তো তাই পড়ালেখা নিয়ে একটু ব্যস্ত ছিলাম।
—তোমার মুক্তা আপু বারবার তোমার কথা জিজ্ঞেস করছিলো!
—মুক্তা আপু আসে নি?
–সে তো তিনদিন আগেই সব গোছগাছ করে রেডি।আমার ছুটি নিতে দেরী হয়ে গেছে তাই..
পুরো কথাটা শেষ করতে পারলো না মেহেদী ওদের কথার মাঝখানেই মৌনতা এসে টেনে নিয়ে গেলো।
–তোরা এখানে বকবক করছিস?এদিকে অনুষ্ঠান তো শুরু হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠান শুরু কথা শুনেই ছবির বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো।নিজেকে সামলে অস্ফুটসরে বলল,
—আপনারা যান ভাইয়া আমি একটু আসছি।

ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই আনোয়ারা বেগমের চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ কানে এলো। অনু এগিয়ে গেলো দেখার জন্য।আনোয়ারা বেগম আবার কি নিয়ে ক্ষেপেছেন?গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে যেতেই দেখলো শুদ্ধ মাথা নিচু করে উনার সামনে বসে আছে।
আনোয়ারা বেগম ঝাঁঝালো গলায় বললেন,
—ওদেরকে ফোনটা কি তুমি করেছো?
—হ্যাঁ।
—কেন?
—আমি বিয়েটা করতে পারবো না।
—দেখো শুদ্ধ আমি তোমার সাথে মজা করছি না।কি হয়েছে আমাকে ঠিক করে বলো?
—আমি তোমাকে সব বুঝিয়ে বলছি মা।তুমি আগে একটু শান্ত হয়ে বসো।
আনোয়ারা বেগম কাজের বুয়াকে ডেকে বললেন,
–আমার মাথায় পানি ঢালার ব্যবস্থা কর।
শুদ্ধ উদ্বিগ্ন হয়ে আনোয়ারা বেগমের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,
–তোমার কি খারাপ লাগছে?
—আমাকে বিরক্ত করবে না শুদ্ধ আমি এখন একটু একা থাকতে চাই।
উনি চলে যেতেই মৌনতা শুদ্ধর পিঠে চাপড় মেরে হাসতে হাসতে বললো,
–কি রে আমার জন্য কষ্ট হচ্ছিলো না?আমি জানতাম তুই আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করতেই পারবি না।
শুদ্ধ হাত ঝাড়া দিয়ে বললো,
–বিরক্ত করিস না তো।এমনিতেই অসহ্য লাগছে।

শুদ্ধ ভেতরে চলে গেলো।অনুর ঠোঁটে তখন বিশ্বজয়ের হাসি।ভারী শরীর নিয়ে গুটিগুটি পায়ে ছবির ঘরের দিকে ছুটলো সে।
ছবি খাটের ওপর উপুড় হয়ে বসে আছে।অনু ওর মাথায় হাত রাখতেই মুখ তুলে তাকালো।চোখ ফুলে লাল হয়ে আছে।মাথার চুল সব এলোমেলো,গায়ের জামা দুমড়ে মুচড়ে আছে।চেহারা মলিন হয়ে আছে।চোখভর্তি টলমল করা পানি!অনুর নরম গলায় বলল,
—কাঁদছিস কেন?
ছবি জবাব দিতে পারলো না।অনুর কোমর জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো।অনু হেসে উঠে বলল,
—বিয়ে তো হচ্ছে না তাহলে কাঁদছিস কেন?
—আমার ভয় লাগছে আপু।আশেপাশে তাকালেই বুক কেঁপে উঠে।শুদ্ধ ভাইয়া যদি সত্যি সত্যি রাজী হয়ে যায়? বিয়েটা যদি হয়ে যায় আপু?আমি চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি!
অনু খেয়াল করলো কথা গুলো বলার সময় ছবির গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।ছবিকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ কিছুক্ষন মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো সে।দুষ্টু হেসে বলল,
—বিয়ে ভেঙ্গে গেছে ছবি।
ছবি ফ্যালফ্যাল করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলো।অনু নিজেই ছবির চোখ মুছে দিয়ে ওর মুখটা তুলে ধরে বলল,
—এবার সব ভুল শুধরে নেওয়ার পালা।এখন কাঁদলে চলবে না।
—সত্যি বলছো আপু?সত্যি বিয়েটা ভেঙ্গে গেছে?
—তিনসত্যি!
ছবি খুশিতে শক্ত করে বোনকে জড়িয়ে ধরলো।
অনেক্ষন বাদে অনু দীর্ঘশ্বাশ ছেড়ে বলল,
—সত্যিই আমি অনেক বোকা ছবি।
অনুর চোখের পানি টুপ করে ছবির মাথার ওপর গড়িয়ে পড়লো।অনুর হঠাৎ কান্নার কারন ছবি বুঝলো না। অনু ডান হাতটা চেপে ধরে নরম গলায় বলল,
—তোমার কি হয়েছে আপু?ভাইয়ার সাথে ঝগড়া হয়েছে?
অনু ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
—তোর মনে আছে ছবি ছোটবেলা আমরা দুষ্টুমি করতাম তখন মা বেত নিয়ে আমাদের পিছু তাড়া করতেন?
—আছে!
—আমরা তখন কি করতাম?
—ছুটে পালিয়ে যেতাম।
—হুম!সন্তান দোষ করলে মা বেত নিয়ে দৌঁড়ায়।আমার মত আর তোর মত বোকারা তখন মারের হাত থেকে বাঁচার জন্য এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে।কিন্তু যারা প্রকৃত বুদ্ধিমান তারা কখনো ছোটাছুটি করে না।কারন তারা জানে মায়ের রাগ কমাতে হলে একমাত্র মায়ের কোলই সবচেয়ে নিরাপদ স্থান।
ছবি অবাক হয়ে চেয়ে আছে।অনু ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
— শোন তুই ভুল করেছিস তাই আম্মা তোর ওপর রেগে আছে।তাই বলে তুই কেন দূরে সরে থাকবি।তোর আরো বেশি করে উনার কাছে যাওয়া উচিৎ।উনার মন জয় করার চেষ্টা করা উচিৎ।
—-কিন্তু তুমিই তো আমাকে বলেছিলে…
অনু ওর মুখের কথা টেনে নিয়ে বলল,
—বলেছিলাম!কারণ আমি বোকা!
আবারও একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো অনুর বুক চিরে। বিড়বিড় করে বলল,
—আমি বোন হয়ে যেটা তোকে শেখাতে পারলাম না শুদ্ধ আমাকে সেটা শিখিয়ে দিলো।আমি সত্যি অনেক বোকা।আমার বোঝা উচিৎ ছিলো এভাবে পালিয়ে বেড়ালে তো সম্পর্কের জটিলতা মিটবে না।সম্পর্কের জটিলতা ভাংতে হলে তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়!সম্পর্কে গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করতে হয়! ”
ছবির কথার ঘোর ভাংলো।
—কি ভাবছো আপু?
—কিছু না।..আমি যা বললাম মনে থাকবে?বেশি বেশি করে আম্মার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করবি।এভাবে পালিয়ে বেড়ালে দূরত্ব বাড়বে বইকি কমবে না।আম্মা নরম মনের মানুষ।তোর ব্যবহারে দুঃখ পেয়েছেন।কিন্তু তাই বলে তুই হাতপা গুটিয়ে বসে থাকলে তো চলবে না।আম্মাকে যে করেই হোক মানাতে হবে।
—ঠিক আছে।
ছবির মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
—তুই এমন মুখ ভার করে রেখেছিস কেন?
—কিন্তু আন্টি যদি উনার আবার বিয়ে দিতে চান?
অনু হেসে উঠে বলল,
—শোন আম্মা যদি সত্যিই শুদ্ধর বিয়ে দিতে চাইতেন তাহলে উনি আমাদেরকে না জানিয়েই দিতে পারতেন।কিন্তু উনি আমাদের সামনেই সব আয়োজন করছেন। কেন করছেন? উনি চাইছেন তুই যাতে তোর ভুলটা বুঝতে পারিস!তোকে আরেকটা সুযোগ দিতে চাইছেন।
ছবি যারপরনাই অবাক হলো।খুশিতে ওর চোখমুখ ঝলমল করে উঠলো।সত্যি তো!
অনু বলল,
—এখন বুঝেছিস?তুই আম্মার কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইবি।যেভাবেই হোক আম্মার মন জয় করতে হবে তোকে।পারবি?
ছবি হাসলো।দ্যাট মিনস,’তুমি শুধু দেখো।’
অনু হাসিতে যোগ দিয়ে বলল,
—আয় চল ওদিকে কি খবর দেখে আসি!
.
.
চলবে
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here