অস্তিত্বে_চাই_তোমার_ছোঁয়া পর্ব_০৬
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
দৃষ্টিকোণ দৃঢ় করে ইফদিয়ার চুলের বেনী নাড়াতে নাড়াতে বদরাগী যুবকের পাশ কেটে চলে গেল। দূরে বটগাছের নিচে যাবিয়াজের বন্ধুগণ হাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এরফান হাতজোড়া মাইক্রোস্কোপের মত করে যাবিয়াজের মুখের দিকে তাকাল। যা দেখে ঠোঁট ফুলিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
‘হুয়াইট ননসেন্স কি সমস্যা তোর!’
‘না আজ সূর্য পশ্চিম দিকে উঠেছে। মাত্রাতিরিক্ত গরম লাগছে।’
‘হায় গারমি।’
শ্রেয়িতা আবেদনময়ী ভঙ্গিমায় বলে উঠে। ফেরদৌস দেখে ঠাট্টার সুরে বলে,
‘হায় মেহনাত স্যারের বলদরাণী।’
‘তুই শেয়ালের মাথা।’
এরফান ঝগড়া থামাতে বলে,
‘আরে তোরা থাম। আজকে পুচকি ভাবি পানি কেন ঢালছে রে!’
‘ঐটাই ইয়ার কিন্তু সেই লেভেলের এটিটিউট আছে ভাবির মধ্যে।’
যাবিয়াজের দিকে চোখ মেরে বলে শ্রেয়িতা। যাবিয়াজ শান্তভঙ্গিতে কিছু ভাবছে। ওরা নিজেদের কথোপকথনে ব্যস্ত। বাঁকা হাসি নিজের ঠোঁটের কোণায় ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে সে। ট্রাউজারের পকেটে হাত গুজে আনমনে বলে,
‘মিস কুচুরীপানা পানি ফেলার শোধ আমি নিয়ে ছাড়ব। জাস্ট ওয়েট পাতা কষে রস বের করতে আমিও জানি।’
যাবিয়াজ শ্রেয়িতার হাত টেনে আড়ালে আনে। বেচারী হকচকিয়ে গেল। তার দিকে আশ্বস্ত ভঙ্গিমায় ডেভিল স্মাইল নিয়ে বলে,
‘কাজ নাকি মুনাফা।’
শ্রেয়িতা চোখজোড়া সরু করে পিটপিট করে তাকিয়ে বলে,
‘পুচকি ভাবির ব্যাপারে!’
যাবিয়াজ পূর্বের ন্যায় শয়তানি নজরে তাকায়। যার অর্থ ইফদিয়ারকে ঘিরে হবে কাজটা। শ্রেয়িতা চুক্তিময় কণ্ঠে বলে,
‘ইয়ে লাকরি বিনা মাতলাব কি কাম নাহি কারতি হে…।’
শ্রেয়িতার মৌখিক উক্তি পূর্ণ হওয়ার পূর্বে যাবিয়াজ আহ্লাদী কণ্ঠে বলে,
‘ধান ভানলে কুড়ো দেব, মাছ কাটলে মুড়ো দেব,
কালো গাইয়ের দুধ দেব, চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।’
শ্রেয়িতা মুচকি হেসে মাথা নেড়ে সম্মতি দিল কাজের ব্যাপারে। শীতল পাটিতে আয়েশে বসে থাকা ফেরদৌস,এরফান কিছু বুঝল না। তারা আড়ালে গুপ্ত কণ্ঠস্বর শুনার প্রচেষ্টা করে। কিন্তু সক্ষম হলো না। এরফান ফেরদৌসকে ইশারায় ‘কি’ বুঝায়! এতে ফেরদৌস গাল বাঁকিয়ে হাত দেখিয়ে ‘আমি কি জানি’ বুঝায়। ফেরদৌস ইশারায় কাছে ডাকে। এরফান আবালের মত কাছে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তার মাথায় হাত দিয়ে বারি মারে। নিম্ন কণ্ঠে বলে,
‘আমাকে কি তোর জ্বীন বা সাধুবাবা মনে হয়! যে এখান থেইকা ওখানের কথা শুনতে পারমু।’
এরফান ঠোঁট ফুলিয়ে রাস্তার পাড়ে দৃষ্টিপাত করে। অচেনা তবুও পরিচিত মুখশ্রী দেখে চট করে দাঁড়িয়ে যায় সে। ফেরদৌস যাবিয়াজ এর বাঁকা হাসি বারংবার লক্ষ করছে। ভাবান্তর হয়ে এরফানকে উদ্দেশ্য করে বলে,
‘কাউরে ফাঁসানোর ব্যবস্থা করতেছে নাকি এই পোলা। ঐ এরফান শোন..।’
পাশে তাকিয়ে দেখে এরফানের ছাঁয়ামূতিও নেই। বেক্কল বনে গেল চৌপাশে পর্যবেক্ষণ করে বুঝল, সত্যি এরফান উধাও হয়ে গেল। ব্যবলাকান্তের মত আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,
‘আল্লাহ বিচার দিলাম তোমাকে।
বামুন গেল ঘর তো লাঙল তুলে ধর হারামীর দলবল। অকর্মার ছাতা।’
১১.
‘হেই মিস ভীতিসার।’
তিয়ানা নিজের ডাকনামের পরিবর্তে অন্য নাম শুনে হাঁটা থামিয়ে দিল। তাকে ‘ভীতিসার’ বলায় রাগান্বিত হয়ে পিছে ঘুরে। কিন্তু পূর্বের সাহায্যকারী ছেলেটাকে দেখে হা হয়ে গেল। এরফান হাসি সংযত করে নিজের চুল পিছনের দিকে টেনে হালকা ঝুঁকে এলো তিয়ানার দিকে। মাদকময় কণ্ঠে বলে,
‘হা কর দৃষ্টিকোণে চেয়ে থেকো না রমণী। বড্ড ইচ্ছে জাগে অপ্সরীর ওষ্ঠমেলন করার।’
তিয়ানা ভেবাচেকা খেয়ে গেল। সঙ্গে একরাশ অস্বস্তি, জড়তা এসে ভর করল। নজর সরিয়ে সন্দেহজনক গলায় বলে,
‘এ্যা আপনি কি বলছেন!’
এরফান দাঁত কেলিয়ে বলে,
‘বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাতা মিস ভীতিসার।’
হাসি-ঠাট্টার সুরে বলে শিষ বাজিয়ে হাঁটা ধরে। তিয়ানা মাথার উপর দিয়ে গেল এরফানের উক্তিগুলি। গালে হাত রেখে তার যাওয়ার দিকে অন্যমনস্ক হয়ে বলে,
‘না চেনা অকর্মণ্য পোলা কোথাকার। একটু সহায়তা করছে কি ভাব দেখাচ্ছে। আমি ভীতিসার তো তুই হাড্ডিসার।’
ইফদিয়ার ক্লাসে বসে আছে। তার বান্ধবীর জন্যে সিট বরাদ্দ করে রেখেছে। কেউ সিটে বসতে চাইলে নানান বাহানা বানিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
কিছুক্ষণ আগে…
তাদের ক্লাসরুমে ছেলেমেয়ে একসঙ্গে ক্লাস করে। এর মধ্যে একজন ব্যাকবেঞ্চার ছেলে এসে ‘হাই’ বলে হাত উচিয়ে দেখায়। ইফদিয়ার দেখে ফোঁস করে রাগমিশ্রিত শ্বাস ছেড়ে হ্যাবলামার্কা হাসি দিল। ছেলেটা স্মার্টনেস দেখিয়ে বলে,
‘হেই গার্ল আমি কি তোমার পাশে বসতে পারি।’
‘মর।’
নিম্ন সুরে বলায় ছেলেটি ‘হুয়াইট’ বলে ধ্যান ফেরায় ইফদিয়ার। সে খুব করুণ চাহনী নিয়ে বলে,
‘কি বলব দুঃখের কথা ফ্রেন্ড। আজ এই সিটে তুমি বসলে নিশ্চিত মৃত্যু অবধারিত।’
‘মানে!’
ছেলেটি ভীতু প্রকৃতির। কথাটি শুনে ঢোক গিলে চোখ মিটমাট করে। ইফদিয়ার তার দূর্বল জায়গা বুঝতে পেরে বলে,
‘হুম আমার অতীতের ছাঁয়া এই সিটের মধ্যে থাকে। কোনো ছেলেমেয়ে বসলে যমরাজ চলে আসে।’
‘এখন!’
‘অন্য সিটে গিয়া বস না গাধা।’
জট করে বলায় ভ্রু কুঁচকে তাকায় ছেলেটা। ইফদিয়ার থতমত চোখে নম্র সুশীল কণ্ঠে বলে,
‘অনেক সিট পড়ে আছে। চাইলে আমার পিছনের সিটে বসে পড়ো।’
‘কারেক্ট সলিউশন।’
ছেলেটা ইফদিয়ার অনুরোধময় কণ্ঠে সত্যি পিছে বসে পড়ে। বরাবর তার পিছনের সিটে বসায় সে হাশঁপাশ করতে থাকে। মনে নিজেকে গালায় আবার তিয়ানাকেও। ছেলেটা বসে বই বের করে কি যেন নোট করছে। সেখানে আর ধ্যান দিল না ইফদিয়ার।
বর্তমান…
তিয়ানা এসে ‘সরি সরি’ বলে বসে গেল। একে তো দেরি করে ক্লাসে এলো। তার উপর ঢং এর সরি বলে হাসছে। মন চাচ্ছে মাথার উপর কিল দেয়। ইফদিয়ার অগ্নিশর্মা নয়নে বিড়বিড় করে বলে।
ছেলেটা হা করে লক্ষ করছে। ইফদিয়ার ঢোক গিলে প্রস্তুতি নিল পরবর্তী বোকা বানানোর ধাপে। ছেলেটা বসা থেকে উঠে এসে সরু দৃষ্টিতে সন্দেহপ্রবণ কণ্ঠে বলে,
‘এই মিস ধ্যানপরায়ণ। ঐ মিস কেমনে বসল!’
‘কই কে বসছে! এখানে কেউ বসে নি আমি একা বসে আছি।’
ছেলেটি পরীক্ষা করতে স্পর্শ করতে চাইলে তিয়ানা ভ্র বাঁকিয়ে তেজি ভাব নিল। ছেলেটা নিজেকে গুটিয়ে ইফদিয়ারকে বলে,
‘তোমার পাশে মেয়ে বসেছে।’
‘ভারি মজার মানুষ তুমি। আমার অতীতের ছাঁয়াময়ী বান্ধবীকে দেখতে পাচ্ছো মনে হয়।’
‘কি ছাঁয়া!’
ইফদিয়ার করুণ চাহনী নিয়ে মাথা উপর-নিচ নেড়ে হ্যাঁ জানায়। ছেলেটার কপালে ঘাম এসে ভীড় করে। ঠোঁট চেপে ‘ভূত’ বলে চেঁচিয়ে বাঁ দিকের সিটে গিয়ে বসে পড়ে। ছেলেটাকে বোকা বানিয়ে হেসে ফেলল তারা।
জনাব মশিউর রহমান তাদের পদার্থবিজ্ঞানের স্যার এসে রুড কণ্ঠে দাঁড়াতে বলে ‘ইফদিয়ার’ কে। ঢোক গিলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে যায়। তিনি কড়া গলায় মার্জিন করার স্কেল হাতে নেড়ে নেড়ে বলেন,
‘নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রের বিবৃতি করো!’
ইফদিয়ার স্যারের করা প্রশ্নের সমাধান সম্পর্কে নিশ্চিত। কিন্তু এ মুহূর্তে মুখে আনতে পারছে না। তার সাজানো মনের সমাধানটা তীব্র ভয় আতঙ্কের কারণে অগোছালো হয়ে পড়ল। তিয়ানা চুপ করে আছে। সে করুণ দৃষ্টি নিয়ে স্যারের দিকে তাকায়। কিন্তু মোটু ব্যাঙমার্কা স্যার রাগী ভাব নিয়ে তার বান্ধবীর দিকে তাকিয়ে আছে। স্যার ধমকি দিয়ে উঠেন। ইফদিয়ার কেঁপে উঠল। আহত কণ্ঠে বলে,
‘স্যার আ আমি পারি। কি কিন্তু বল বলতে পারছি না।’
‘হাত পাতো।’
তিয়ানা চোখ বড় করে তাকায়। ইফদিয়ার ভয়ে জোড়সরো হয়ে পড়ে। যা দেখে তিয়ানা দাঁড়িয়ে যায়। মাথা নিচু অপরাধী কণ্ঠে বলে,
‘স্যার ইফদিয়ার দোষ নেই। ক্লাসে আপনি এসেছেন তা আমরা বুঝতে পারিনি। অতঃপর হাসাহাসি করছিলাম।’
‘চুপ থাকো তুমি। তোমাকে জিজ্ঞেস করেছি আমি!’
তিয়ানা কে চুপ করিয়ে স্যার ‘ঠাস ঠাস’ করে দুটো স্কেলের বারি দিল ইফদিয়ার হাতে। ব্যথার তীব্রতায় হাতে যন্ত্রণা অনুভব করছে। লাল হয়ে দাগের উদয় হলো হাতের মধ্যে। চোখের কার্নিশ বেয়ে অশ্রুসিক্ত হলো। চোখের জল আসবেও না কেনো! নরম অস্থিজোড়ায় যদি ধারালো লোহার জিনিস জোরে চালানো হয়। তাহলে অস্থি ভেঙ্গে রক্তপাত হবেই। কড়া গলায় বসতে বলে নিজের জায়গায় গেলেন স্যার। পুনরায় পড়া বুঝাতে আরম্ভ করলেন। ক্লাস শেষ হলে ইফদিয়ার কে টেনে ক্যান্টিনে নিয়ে আসে তিয়ানা। ক্যান্টিনের আঙ্কেল থেকে বরফ সংগ্রহ করে ইফদিয়ার পাশে বসে। তার হাতে নম্রভাবে বরফ ঘষা দিতে থাকে। গরম ব্যথাতুর জায়গায় ঠান্ডার আভাস পেয়ে হাতের যন্ত্রণা কমে আসে। তবুও যেন হাত নাড়তে অসুবিধা হচ্ছে। তিয়ানা কান্নাময় কণ্ঠে চেহারার বেহাল দশা বানিয়ে বলে,
‘আমি সরি। বেস্টি হলাম অথচ তোকে বিপদে বাঁচাতে পারলাম না। আমায় ভুল বুঝিস না।’
‘ধ্যাঁত কি বলিস! তুই বিপদে সৎভাবে সততা প্রয়োগ করেছিলি রিম্বেবার।’
তিয়ানা উত্তরে ফুঁপিয়ে কাঁদে। ইফদিয়ার শান্ত্বনা দিচ্ছে। দু’বান্ধবীর নিদারুণ দশা দেখে যাবিয়াজ আর এরফান ভ্রু কুঁচকে ভার্সিটির দুতলা থেকে আন্দাজ করার চেষ্টা করে। এরফান যাবিয়াজের কাঁধে হাত রেখে বলে,
‘কি মনে হয়!’
‘আমরাও স্কুলজীবনের গন্ডি পেরিয়েছি।’
মৃদু হাসে এরফান। যাবিয়াজ শান্ত দৃষ্টিতে গুণছে ইফদিয়ার অশ্রুজল। রমণীর অজান্তে গালের মধ্য দিয়ে গড়া পাঁচ-ছয় বিন্দুর স্বচ্ছ তরল দৃষ্টিনন্দন করছে। মনের খন্ডাংশে ঘোর দৃষ্টি নিয়ে ভাবে।
‘রক্তজবার মত রঞ্জিত হয়েছে তোমার হস্তাক্ষর। অক্ষরের মালা গাঁথায় কাটা ফুটিয়েছে বিদ্রোহী রঙ। সেই রঙের ওপারে মিশ্রিত করিব একগুচ্ছ লাল গোলাপী রঙ। এসে পরশ বুলিয়ে দিও তোমার ব্যথাতুর হস্তাক্ষরের। আশ্বাস দিচ্ছি যন্ত্রণার ছিঁটেফুটো রইব না আর।’
ভার্সিটি শেষ হওয়ার পর এরফান যাবিয়াজকে খুঁজে। কিন্তু যুবককে পায় না। মূলত বাইক না নিয়ে আসায় যাবিয়াজের বাইকে করে বাসায় যেতে চেয়েছিল। হঠাৎ ‘পিপ পিপ’ শব্দে দেখে ফেরদৌস গাড়ির গ্লাস নামিয়ে বলে,
‘শোন আয় পৌঁছে দেয়। যাবিয়াজ এর গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। বেরিয়ে গেছে বহু আগে।’
এরফান হাঁফ শ্বাস ছেড়ে উঠে বসে।
যাবিয়াজ বাইকে হেলমেট পড়ে বসে রইল। দৃষ্টি স্পর্শীকাতর রমণীর উপর। ইফদিয়ার মনমরা হয়ে বাসার ভেতর প্রবেশ করেছে। চৌপাশে চোখ বুলিয়ে বুঝতে পারল তার বাবা নামক অমানুষ বাসায় ফিরেনি। সেও মাথা ঘামায় নি পা ডিঙিয়ে মায়ের কাছে গেল। মিসেস জাবিয়া চোখ খুলে শুয়ে আছেন। উনার বেগতিক করুণ অবস্থা দেখে ভয় হলো তার মনমাঝাড়ে। দ্রুতগতিতে ফোন নিয়ে ডক্টর ভাইকে কল দিল।
ডা. ইসমাইল হক চেম্বারে বসে পেশেন্টের অপেক্ষা করছে। যাবত ১৮ জন পেশেন্ট এর ট্রিটমেন্ট করে ফেলেছে। বাদ বাকি একজন রয়ে গেল। সে এখনো মেডিক্যালে এসে পৌঁছায় নি। হাতের ঘড়ি লক্ষ করছে আর মুখের মধ্যে বিরক্তির আভা প্রকাশ করছে। ফোনের ভাইব্রেশনে স্ক্রিনে খেয়াল করে ‘ইফুপাখি’ নামটি ভেসে উঠছে। আজ কতদিন পর রমণীর কণ্ঠ শুনবে। ভাবতেও যেন শীতল হাওয়া বুকের মধ্যে বয়ে গেল তার। ফোনটি রিসিভ করতেই রমণীর কান্নাভেজা কণ্ঠ শুনতে পেল। ছটপটিয়ে উঠে যুবক। চিন্তিত কণ্ঠে বলে,
‘কি হয়েছে ইফুপাখি কাঁদছো কেনো তুমি।’
‘ইসম ভাই আম্মা আসো প্লিজ।’
ইসমাইল এর বুকের স্পন্দন তেজ হয়ে গেল। ‘আম্মা’ বলতে মিসেস জাবিয়াকে বুঝিয়েছে এটা বুঝতে তার বেগ পেতে হলো না। চেম্বার হতে তৎক্ষণাৎ বেরিয়ে পড়ে। বাসায় এসে মায়ের করুণ দশা দেখে চটজলদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। ইফদিয়ার রুমের বাহিরে পায়চারী করছে।
________
যাবিয়াজ বাসায় এসে ধপ করে সোফায় বসে পড়ে। বাবা কে ঘুম ভেবে নিজের শয়তানি খেলা আরম্ভ করার চিন্তা করে। হাতজোড়া থুতনীর উপর ভর করে বিড়বিড় করে বলে,
‘অপরাধ ছোটবড় হোক শাস্তি সে হিসেবে দিতে হয়। কিন্তু ছোট বিষয়ে বড় শাস্তি প্রদান করা নিতান্ত অগ্রাহ্য।’
চলবে…..