আঁধারের_গায়ে_গায়ে তমসা_চক্রবর্তী পর্ব-৭

আঁধারের_গায়ে_গায়ে
তমসা_চক্রবর্তী
পর্ব-৭

।।২০।।
-“আচ্ছা ম্যাডাম, আপনি কতবছর সেন পাবলিকেশনে চাকরি করছেন”!!

সকাল দশটা বাজতেই উজান আর মিলি সেন পাবলিকেশনের অফিসে পৌঁছে সমতার সাথে কথা বলতে শুরু করে।

-“প্রায় বছর তিনেক হয়ে গেল আমি এই কোম্পানিতেই আছি স্যার”।

কন্ঠস্বরের কম্পন জানান দিলো পুলিশি জেরার মুখে সমতা বেশ ভীত। উজান যদিও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করেই সমতাকে পরবর্তী প্রশ্ন করতে শুরু করল।

-“সেন পাবলিকেশনে জয়েন করার প্রথম থেকেই কি আপনি রাইমা সেনের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করছেন”!!

-“না, মানে..আমি জয়েন করেছিলাম গ্রাফিক্সের কিছু ফ্রিলান্স কাজ করার জন্য, ওই পার্ট টাইম জব আর কি! কিন্তু জয়েন করার সপ্তাহ খানেক পরেই মিস্টার সেন আমাকে রাইমা ম্যাডামের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করার প্রস্তাবটা দেন।আমারও সেই সময় একটা কাজের খুব দরকার ছিল।তাই কাজটা পছন্দ না হলেও কাজটা জয়েন করি তখন”!

আমতা আমতা করে উত্তর দেয় সমতা।

-” কাজটা পছন্দ না হওয়ার কোনো স্পেসিফিক কারন ছিল কি”!!

উজানের সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে বেশ অস্বস্তিতে পড়ল সমতা।মাথা নিচু করে জবাব দেয়,

-“আসলে স্যার, আমার কাজটা তো ঠিক আর পাঁচটা সাধারণ সেক্রেটারির মত না। সাধারনত, সেক্রেটারিরা, বসের রাইট হ্যান্ড হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে আমার কাজ ছিল রাইমা ম্যাডামের চোখ হয়ে উঠা। অনেক বড় দায়িত্ব।কিছু ভুল হলেই সব দোষ আমার ঘাড়ে পড়বে!তাই পারব কি পারব না,একটা দোলাচলে তো ছিলামই আর তার ওপর পার্ট টাইম কাজ করার সময় মিস্টার সেনের যা মেজাজ দেখেছিলাম তাতে ভয় তো পাওয়ারই কথা”!!

-“তা এই তিনবছরে আপনার ভয় কেটেছে নাকি এখনো..”!!

মিলির আকস্মিক প্রশ্নে মুখ তুলে তাকাল সমতা। এতক্ষনে হাসি ফোটে তার মুখে।

-“সত্যি বলতে,রাইমা ম্যাডামের সাথে কাজ শুরু করার কয়েকদিনের মধ্যেই ভয়টা একদম কেটে গিয়েছিল ম্যাডাম।আসলে মিস্টার সেন আর ম্যাডাম দুজন সম্পূর্ণ দু’মেরুর মানুষ। একেবারে বিপরীত স্বভাবের।স্যার স্টাফেদের সাথে যতটা রূঢ় ব্যবহার করতেন ম্যাডাম ঠিক ততটাই নরম স্বভাবের।কখনো কারুর সঙ্গে উঁচু গলায় কথা বলতেন না।আর ম্যাডাম তো আমাকে প্রথম দিন থেকেই নিজের বন্ধুর মত ট্রিট করেন। আমার যেকোনো মতামত যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে শোনেন।কখনো কোনো কাজে ভুল করে ফেললে যথেষ্ট যত্ন সহকারে সেগুলো শুধরেও দিয়েছেন।কখনো আমার কোনো অসম্মান করেননি”!

-“অফিসে নতুন পান্ডুলিপি জমা পড়লে সেগুলো কি আপনার হাত দিয়েই ফারদার প্রসেস হতো”!!

উত্তর দিতে খানিকটা ইতস্তত করল সমতা।

-“হ্যাঁ, মানে,আগে নতুন পান্ডুলিপি জমা পড়লে প্রথম প্রিভিউটা আমিই করে ম্যাডামকে রিভিউ দিতাম। আমার সেই রিভিউয়ের ওপর বেস করে ম্যাডাম কিছু পান্ডুলিপি সিলেক্ট করে বাড়ি নিয়ে যেতেন।যতদূর জানি, মিসেস সেন সেগুলো ম্যাডামকে পড়ে শোনাতেন। তারপরেই কোন লেখা ছাপা হবে সেটা ম্যাডাম ডিসাইড করতেন”!!

-“আর মিসেস সেনের মৃত্যুর পর! তারপরেও তো সেন পাবলিকেশন থেকে এগারোটা বই প্রকাশ হয়েছে”!!

মিলি নিজের প্রশ্নের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলতে চাইল সমতাকে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এবার বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ না করে হালকা হাসল সমতা।

-“এগারোটা বই ছাপা হয়েছে ঠিকই ম্যাডাম, কিন্তু সেগুলো প্রায় সবই প্রিঅ্যাপ্রুভড ছিল।তবে মিসেস সেনের মৃত্যুর পর ম্যাডাম আমাকে শুধুই পান্ডুলিপি সিলেকশনের কাজটা দেখতে বলেছিলেন। আর তার সাথে অফিসিয়াল কিছু কাগজপত্র,যেগুলোতে ম্যাডামের সাইনের প্রয়োজন হতো সেগুলো দেখাশোনা করার জন্যই অ্যাসাইন করে দিয়েছিলেন”!

-“আচ্ছা, এই হিমাংশু রায় কেমন মানুষ ছিলেন”!!

হিমাংশু রায়ের নামটা শুনেই সমতার মুখে নেমে আসা অন্ধকার চোখ এড়াল না মিলি আর উজানের।সমতার নিরবতা উজানকে পুলিশী গাম্ভীর্য প্রকাশে বাধ্য করল।

-“কি হল ম্যাডাম! উত্তর দিন”!!

-“দেখুন স্যার,ওনার লেখা পড়ে আমার বেশ ভালোই লেগেছিল, তাই রাইমা ম্যাডামকে আমি ওনার নাম রেকমেন্ড করেছিলাম।তারপর ওনার সেই বই ছাপাও হয়েছে। এমনকি রাইমা ম্যাডাম ওনাকে আমার সামনেই বেশ কয়েকবার বলে ছিলেন যে আমিই প্রথম ওনার লেখা রেকমেন্ড করেছিলাম। কিন্তু ওনাকে কখনোই সামান্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখিনি। বরং আমাদের মানে সেন পাবলিকেশনের স্টাফেদের উনি বেশ হেও করতেন।এমন একটা ভাব ছিল, যেন আমরা সবাই ম্যাডামের দৃষ্টিহীনতার সুযোগ নিয়ে ওনাকে ঠকিয়ে চলেছি।আর মিস্টার সেনের মৃত্যুর পর তো যেন উনি আরও বেশি করে প্রেসের সব ব্যাপারে মাথা ঘামাতে শুরু করেছিলেন”!

-“আপনি কখনো এব্যাপারে রাইমা সেনকে সাবধান করেননি”!! উজানের গলায় পুলিশী ঝাঁঝ।

-“আমি ওনাকে কি সাবধান করতাম বলুন তো!হিমাংশু বাবু আর মিস্টার সেন উভয়ের ব্যবহারই তো স্টাফেদের সঙ্গে একই রকমের ছিল। তাছাড়া হিমাংশু বাবুকে মিস্টার অ্যান্ড মিসেস সেন রাইমা ম্যাডামের জন্য পছন্দ করেছিলেন।তারও আগে ম্যাডাম নিজে ওনাকে পছন্দ করেছিলেন।সেখানে আমার কি ওনার সম্পর্কে কিছু বলা সাজে! আফটার অল আমিও তো এই কোম্পানির একজন কর্মচারী মাত্র”!!সমতার গলায় উষ্মা প্রকাশ পায়।

-“আচ্ছা সমতা, মিসেস সেনের মৃত্যুর পর থেকে তো আপনি সেন ভিলাতেই থাকছেন। কেন”!

-“রাইমা ম্যাডামের রিকোয়েস্টে বলতে পারেন। আসলে মিসেস সেনের মৃত্যুর পর ম্যাডাম সাংঘাতিক ভেঙ্গে পড়েছিলেন।সেই সময় এমনভাবে রিকোয়েস্ট করলেন! তাছাড়া মিস্টার সেনও রাইমা ম্যাডামের মানসিক অবস্থা দেখে খানিকটা ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই হয়ত ম্যাডামের চব্বিশ ঘণ্টার সহকারী হওয়ার বিনিময়ে আমাকে প্রায় তিনগুণ বেশি পারিশ্রমিক অফার করেছিলেন। আমার বাবা প্যারালাইজড,কোনো রোজগার নেই। ভাইটা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, সংসারের খরচটা তো নেহাতই কম নয়।তাই মিস্টার সেনের অফার করা টাকার অঙ্কটা শুনে আর না করতে পারিনি।তবে আমি প্রতি শনিবার অফিস করে বাড়ি চলে যেতাম আর রবিবার রাতে আবার সেন বাড়িতে ফিরে আসতাম”!

-“আচ্ছা মিস্টার সেনের কোনো শত্রু ছিল”!!

মিলির প্রশ্নে জোর চমকাল সমতা।

-“এ প্রশ্নের জবাব স্মৃতি আমার কাছে নেই ম্যাডাম।আমি স্যারের সঙ্গে সেভাবে তো কাজ করিনি কখনো।ম্যাডামের সঙ্গেই…”!!

-“তবে কি রাইমা সেনের কোনো শত্রু ছিল”!!

কয়েক মূহুর্ত শূন্য দৃষ্টিতে মিলির দিকে তাকিয়ে থাকল সমতা।তারপর অস্ফুটে বলে ওঠে,

-“সেনেরা কিছু ভোলে না,কিচ্ছু না”!

।।২১।।

সেন পাবলিকেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তার অন্যপ্রান্তে রাখা নিজের গাড়ির দিকে পা বাড়িয়েও থমকাল উজান।

-“কি হল!দাঁড়িয়ে পড়লে যে”!!

ইশারায় সামনের বিল্ডিংখানা দেখতে মিলিকে অনুরোধ করল উজান।

-“এককাপ কফি খেয়ে আসবে নাকি”!!

কলেজস্ট্রীটে এসে উজানের এমন লোভনীয় প্রস্তাবে মিলির চোখ দুটো চকচক করে উঠলো। মুখে দুষ্টু মিষ্টি হাসি মাখিয়ে বলে,

-“এসিপি উজান রায়ের মধ্যে যে এত নস্টালজিক একটা মানুষ লুকিয়ে আছে এটা কিন্তু সত্যিই জানা ছিল না”!

মিলির মশকরায় যেন একটা মন খারাপের রেশ ছড়িয়ে পড়ল উজানের মনে।সেদিকে চোখ পড়তেই মিলি গলার স্বরটা যথাসম্ভব খাদে নামিয়ে বলে,

-“আই অ্যাম সরি উজান। আমি কিন্তু জাস্ট মজা করছিলাম।প্লিজ..”!

-“ডোন্ট বি সরি মিলি।আমি জানি তুমি মজা করছিলে। আসলে মাঝেমাঝে এত ফ্রাস্টেটেড লাগে না! সারাদিন চোর,ডাকাত,খুনি এদের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে নিজের জীবনটাই যেন হারিয়ে ফেলছি।এসিপি উজান রায় যত উন্নতি করছে মানুষ হিসেবে উজান রায় ততই হারিয়ে যাচ্ছে।আমার ছোট ছোট সখ আহ্লাদগুলো আস্তে আস্তে জীবন থেকে মুছে যাচ্ছে, মিলি”!!

একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একদমে কথাগুলো শেষ করল উজান।পায়ে পায়ে সেন পাবলিকেশন পেরিয়ে কফি হাউজে পৌঁছে কোনার দিকে একটা ফাঁকা টেবিল দেখে উজানের সাথে সেটা দখল করে বসল মিলি। কফি হাউজের ভিতরটা একবার চোখ বুলিয়ে মিলির মনটাও টনটন করে উঠলো।

-“জানো উজান, কলেজের ছুটিতে যখন বাড়ি ফিরতাম,রোদ,ঝড়, বৃষ্টি যাই হয়ে যাক না কেন কফি হাউজে আড্ডা দিতে আসাটা মাস্ট ছিল।আমারা স্কুলের ছ’বন্ধুর কাছে কফি হাউজ ওয়াজ অ্যান আল্টিমেট রিলিফ।কাউকে না পেলে ঋক আর আমিই চলে আসতাম।কফি হাউজের চার্মেই মনটা ভালো হয়ে যেত। কিন্তু এই কটা বছরেই জায়গাটা কেমন যেন বদলে গেছে। কফি হাউজের সেই চার্মটা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে”!

-“আজকালকার ইয়ং জেনেরেশনকে কফি হাউজের থেকে সাউথ কলকাতার এসি ক্যাফে অনেক বেশি টানে বুঝলে!!বই পাড়াটাই দেখ না,ক’টা লোক আসে এখন! সবাই অনলাইন অর্ডার করে দিচ্ছে আর বাড়িতে বসেই বই পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এতরকমের বই ঘাঁটার সুযোগটা যে হারাচ্ছে সেটা আর বুঝতে পারছে না। কিন্তু কিছু করারও নেই। মানুষের কাছে সময় কোথায় যে দোকানে এসে বই কিনবে!সবাই শুধু দৌড়ে চলেছে”!!

উজানের গলায় একরাশ উষ্মা প্রকাশ পেতেই,টেবিলের ওপর রাখা উজানের হাতের ওপর হাত রাখল মিলি। অকস্মাৎ মিলির হাতের স্পর্শে চমকে উঠলো উজান।খানিকটা অস্বত্বি বোধ থেকে চারপাশটা একবার চট করে চোখ বুলিয়ে নিল উজান।

-“আমার হাতে হাত রাখতেও এত দ্বিধা”!

নিজেকে সংযত করার প্রানপণ চেষ্টা করে মিলির হাতের তালুতে হালকা চাপ দেয় উজান। কিন্তু উজানের স্বরে সামান্য হলেও হীনম্মন্যতার আভাস পায় মিলি।

-“দ্বিধা নয় মিলি, ভয়।ভয় হয় মাঝেমাঝে।আমার সঙ্গে তোমার জীবনটা জড়িয়ে কোনো ভুল করছি না তো”!!

-“ভুল”!! স্তব্ধ চোখে প্রশ্ন করে মিলি।

-“আমায় প্লিজ ভুল বুঝোনা। তোমাকে কতটুকু সময় দিতে পারি বল! আমাদের সব ডেটের ভেনু তো সেই প্রথম থেকেই লালবাজার। কাঁহাতক এরকম একটা কেজো, সারাদিন চোর ডাকাত নিয়ে সংসার করা মানুষকে সহ্য করা যায়! তাই ভয় পাই”!!

উজানের কথাগুলো শুনতে শুনতে হেসে ফেললো মিলি।

-“তুমি একটা পাগল!আমি কোন সে, সারাদিন হাই প্রোফাইল মানুষ নিয়ে কাজ করি উজান! আমার জীবনও তো সেই চোর ডাকাত আর লাশকাটা ঘরেই সীমাবদ্ধ। তুমি আছো বলে অন্তত লালবাজারের বিলাসবহুল কেবিনে বসে ডেট করার সুযোগ পাচ্ছি।নাহলে হয়ত বয়ফ্রেন্ডকে মর্গে ডেকে পাঠাতাম”!

কথার মাঝেই বেয়ারা টেবিলে ধূমায়িত কফি পেয়ালা আর ফিস ফ্রাই পরিবেশন করতেই কপোত কপোতি বাচ্চাদের মত প্লেটে ঝাঁপিয়ে পড়ল। তবে ফিস ফ্রাই শেষ হওয়ার আগেই মোবাইলে ফরেনসিক এক্সপার্টের ফোনটা পেয়ে উজানের আবার মেজাজ বিগড়ে গেল।

-“শালারা শান্তিতে এককাপ কফিও খেতে দেবে না”! বিরক্ত মুখে ফোনটা রিসিভ করল উজান।

-“বল সোমনাথ, পোস্ট মর্টেমের রিপোর্ট কি বলছে”!!

-“ডেথের রিজন হার্ট অ্যাটাক তবে ম্যাডামের আন্দাজ একেবারে ঠিক স্যার।ব্লাডে অস্বাভাবিক মাত্রায় অ্যালপাজোলামের ট্রেস আছে”!

-” আর কোনো অস্বাভাবিকতা”!!

-“না স্যার।আর সেভাবে অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়ল না”!

ফোনকলের মাঝেই মিলি ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো,

-“রিপোর্টটা মেইল করতে বল।ইমিডিয়েটলি”!!

চোখের ইশারায় মিলিকে আশ্বস্ত করে উজান।

-“সোমনাথ,আমি অফিসে নেই এই মুহূর্তে।সো, রিপোর্টটা আমায় ইমিডিয়েটলি মেল করে দাও”।

-“ওকে স্যার”!

ফোনটা রেখে মিলিকে রিপোর্ট সম্পর্কে উৎসুক দেখে উজানের মাথায় একটু দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল। মিলির কৌতুহল দমনের বিন্দুমাত্র প্রচেষ্ঠা না করেই চুপচাপ কফি কাপে চুমুক দিল উজান।

-“এই কেসটা মিটে গেলে ভাবছি কয়েকদিনের জন্য পাহাড়ে ঘুরে আসব।আমিও ভীষন ফ্রাস্টৈটেড হয়ে যাচ্ছি”!

উজান পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট নিয়ে কিছু বলছে না দেখে মিলি নিজের কৌতুহলটা গিলে ফেলে কথা ঘোরালেও উজান বেশ অবাক হল।

-“এরকম অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছো কেন!কথাটা আমি কিন্তু সিরিয়াসলি বললাম।পঞ্চচুলি বেসক্যাম্প ট্রেক করে আসব ভাবছি।অ্যান্ড আই ওয়ান্ট তুমিও চল আমার সাথে”!!

মিলির এহেন সরাসরি প্রস্তাবে জোর বিষম খেল উজান।

-“আ..আমি”!!

-“তোতলাচ্ছো কেন?ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেছি, প্রিহানিমুনে যেতে বলিনি”!

মিলির বলার ভঙ্গিতে এবার হেসে ফেললো উজান।

-“এককাপ কফি শান্তিতে খেতে পারছিনা আর তুমি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলছো! হিমাংশু রায়ের ব্লাডে অ্যালপাজোলাম পাওয়া গেছে ম্যাডাম।আপাতত কলকাতাকেই পঞ্চচুল্লি ভেবে কাজে লেগে পড়ো”!

-“গুড।এখন শুধু বাইক মহাপুরুষ আমাদের জালে পড়বে কিনা সেটাই চিন্তা।চলো সেন বাড়ি থেকে একবার ঘুরে আসি”। তারপরই চোখটা একটু টিপে আবার বলে,-” আর বাই দ্যা ওয়ে, কথা লুকিয়ে রাখার ক্যাপাটা কিন্তু তোমার একেবারেই নেই।এখন চলো,যেতে যেতে রিপোর্টার কপিটায় জলদি চোখ বুলিয়ে নিই”!!

#ক্রমশ

/*কমেন্ট বক্সে আগের পর্বগুলির লিংক শেয়ার করা আছে*/

© আমার ভিনদেশী তারা-amar bhindeshi tara-কলমে তমসা চক্রবর্তী
#AmarBhindeshiTara
#TamosaChakraborty
# ভালো লাগলে লেখিকার নাম সহ শেয়ার করবেন 🙏।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here