আকাশে তারার মেলা ✨পর্ব -২

আকাশে তারার মেলা ✨পর্ব -২
#লেখিকাঃআসরিফা সুলতানা জেবা

শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে অত্যন্ত রাগী ফেইস নিয়ে গতকাল ছাদের সেই অচেনা নীলাভ চোখের সুদর্শন ছেলেটা কে নিজেদের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে তীব্র থেকে তীব্রতর অবাক হল তুলি। এত্তো রাগী ছেলেটা! খপ করে পাশে থাকা ইনশিতার হাত খামচে ধরল শক্ত করে। তুলি অত্যন্ত সাহসী প্রকৃতির এক মেয়ে কিন্তু তার সাহস যেন এই রাগী ছেলেটার কাছে খুবই নগন্য। ইনশিতার কিছুটা পিছনে লুকিয়ে গেল সে। ভাই কে আসতে দেখে ইনশিতা যেন প্রাণ ফিরে এল। মুখে হাসি ফুটে উঠল তার। আদ্রর চোখ প্রথমে গিয়েই পড়ল ইনশিতার পিছনে লুকিয়ে থাকা ভীতু তুলির দিকে। আদ্রের রক্তিম চোখ দেখে মাথা নিচু করে ফেলল তুলি। দৃষ্টি সরিয়ে ইনশিতার দিকে তাকাতেই ইনশিতা বলতে শুরু করল,,,

–ভাইয়া ছেলেটা আমাদের জিজ্ঞেস করছিল এএএক রাতের রেট কত! আমাদের নাকি তুলে নিয়ে যাবে। তুলির দিকে হাত বাড়াতেই তুলি ছেলেটা কে থাপ্পড় মেরে দেয় । ছেলেগুলো আমাদের খুঁজছে তখন থেকেই।

চমকে উঠল তুলি। এই ছেলেটা আদ্র? মায়ের তথাকথিত আদ্র? দু চোখ বন্ধ করে হাত দু’টো মুঠোয় চেপে নিল আদ্র। রাগে তিরতির করে কাঁপছে তার সারা শরীর। চোখ মেলতেই আঁতকে উঠল তুলি। এ কেমন মানুষ? রাগলে নীলাভ চোখ গুলো আরো সুন্দর লাগে। কারো রাগী ফেইস এতো সুন্দর হয়? তুলির ভাবনার ছেদ ঘটল হাতে স্পর্শ পেতেই। মুখ তুলে হাতের মালিক কে দেখার আগেই তাকে ও ইনশিতা কে টেনে এনে গাড়িতে বসিয়ে দিল মানুষ টা। বিস্ময়কর দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারল না তুলি। তার বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রচন্ড তোলপাড়! তার চাহনি জানান দিচ্ছে ইহা মুগ্ধতার চাহনি। সত্যিই কি তাই? তার কিশোরী জীবনে কি আবারও পদার্পণ করছে অজানা কোনো ভালো লাগা?


সন্ধ্যার দিকে ইনশিতার সাথে হাতিরঝিল এসেছে তুলি। ইনশিতা কে তার মা সব বলেছে। গোধূলি বেলায় মেয়েটা কে মনমরা হয়ে থাকতে দেখে ইনশিতার মনে হল তুলি কে নিয়ে ঘুরে আসলে মন্দ হয় না। তুলিও ঘুরার কথা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠল। চটপট লং একটা কালো জামা ও গলায় স্কার্ফ পেঁচিয়ে বেরিয়ে পড়ল ইনশিতার সাথে। ভালো ভালোই ঘুরছিল ইনশিতার সাথে। কিন্তু বিপত্তি ঘটল কিছু ছেলের জন্য। তিনটা ছেলে কিছু সময় থেকেই ফলো করে যাচ্ছে তুলি ও ইনশিতা কে। শুধু ফলো করেই ক্ষান্ত হয় নি এক পর্যায়ে পথ রুখে দাঁড়াল ছেলেগুলো। মুখ থেকে ছিটকে আসছিল মদের বাজে গন্ধ। ইনশিতা ও তুলি পথ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আবারও পথ আটকে তিনজনের মধ্যে একজন বলে উঠল সেই তিক্ত কথাগুলো যা সহ্য করতে পারে নি তুলির মন। সাথে সাথেই সজোরে থাপ্পড় বসিয়ে দিল ছেলেটার গালে। ভয়ার্ত চোখে তাকাল ইনশিতা। তুলি যে রাগের ঠেলায় ভুল করে বসেছে। তার জন্য যে নির্মম পরিণতি সহ্য করতে হবে তা মস্তিষ্ক ধারণ করতেই কোনো উপায় না পেয়ে ব্যাগ থেকে পিপার স্প্রে বের করে স্প্রে করে দিল ছেলেগুলোর দিকে। দৌড়াতে দৌড়াতে ফোন করে ভাই কে জানাল সবকিছু। ভাগ্য ভালো কাছাকাছি কোথাও বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মত্ত ছিল আদ্র।


গাড়ির বাহিরে দাঁড়িয়ে তুলির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রেখেছে আদ্র। এই তীক্ষ্ণ চাহনি যেন তুলির প্রাণ পাখি উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আচমকাই আদ্রর পিছনে ছেলেগুলো দেখে ভয়ার্ত চোখে তাকাল তুলি। তুলির চোখে চোখ রাখতেই যেন কোনো ঘোরে চলে গেল আদ্র। আদ্র কে এভাবে রোবটর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভাইয়া বলে ডেকে উঠল ইনশিতা। মুহুর্তেই পিছন ফিরে লাথি বসিয়ে দিল ছেলেটার পেটে। বাকি দু’টো ছেলে ও পেরে উঠছে না আদ্রর সাথে। ভয়ংকর ভাবে ছেলেগুলো কে মারছে আদ্র। আদ্রর চেহারা দেখে কেঁপে উঠল ছেলেগুলো। পা জড়িয়ে বলে উঠল,,,

—ক্ষমা করে দেন ভাই। আপনার বোন আমরা জানতাম না। ক্ষমা কইরা দেন।

–আমার বোন বলে ক্ষমা চাইছিস? তারপর অন্য কোনো মেয়ের সাথে সেইম কাজ টাই করবি? কে হাত টা বাড়িয়ে ছিলি?

কাতর চোখে তাকাল ছেলেগুলো। আদ্রর রাগ বেড়ে গেল দ্বিগুণ। চিতকার করে বলে উঠল,,,

—কে হাত টা বাড়িয়ে ছিলি ওর দিকে?

ছেলেগুলো কোনো জবাব দিচ্ছে না। ইনশিতার দিকে দৃষ্টি দিতেই ইনশিতা দেখিয়ে দিল কোন ছেলেটা হাত বাড়িয়েছিল। সাথে সাথেই ভয়ংকর আর্তনাদ করে ভেসে আসল ছেলেটার। হাতের ব্যথায় কাতরাতে লাগল শুধু রাস্তায় পড়ে। ভয়ে কেঁপে উঠল বাকি দুইজন।

রাগে আরো জোরে জোরে মারতে লাগল আদ্র। ঢোক গিলল তুলি। তার কাছে মনে হচ্ছে আদ্র কোনো ফাইটার। তার মন এখন জানতে চাইছে আদ্র আসলে কি? মনের প্রশ্ন মনে জমিয়ে না রেখে এমন পরিস্থিতিতে ও ইনশিতা কে প্রশ্ন করেই বসল,,,

—আদ্র ভাইয়া কি করে আপু?

হাসল ইনশিতা। চোখে মুখে বিস্ময় নিয়ে জবাব দিল,,,

–ভাইয়া একজন ডক্টর।

আদ্রের দিকে তাকাল তুলি। অবস্থা কাহিল রাস্তায় পড়ে থাকা ছেলেগুলোর। ইশশ কি হাল করেছে ছেলেগুলোর! ডক্টর হয়ে এতো নির্দয় তাহলে জণগণের সেবা করবে কে! আদ্র কে কোনোভাবেই ডক্টর মনে হচ্ছে না তার। তুলির ধারণা মতে ডক্টর রা হবে সাদাসিধা, সরল মানুষ। দেখতে হবে পুরো গম্ভীরটাইপ। কিন্তু আদ্র সে তো রাগী, সুদর্শন যুবক। তুলির মতে আদ্রর নায়ক হওয়া উচিত ছিল। ডিশুম ডুশুম ফাইটের জন্য একদম পারফেক্ট ছেলে আদ্র। কি করল এটা আদ্র? বেচারি তুলির এতো বছরের ধারণা টাই পাল্টে দিল। তুলির মন এখন চিতকার করে বলতে চাইছে–“এটা আপনি ঠিক করেন নি আদ্র ভাইয়া। একদমই ঠিক করেন নি।”

তিনজন ছেলে আসতেই আদ্র বলে উঠল,,,

–ওদের হসপিটালে পাঠানোর ব্যবস্থা কর নিবিড়। আর হে,, খেয়াল রাখবি নেক্সট টাইম ওরা কোনো মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায় কিনা। যদি এমন কোনো কথা তোদের কারো কানে পৌঁছায় হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার অবস্থায় ও রাখবি না।

—————————————-

প্রচন্ড পেট ব্যথা করছে তুলির। গাড়িতে করছিল কিন্তু ব্যথার চেয়ে আদ্রের সেই ভয়ংকর রাগের প্রভাব টাই মনে বিরাজ করছিল অধিক। রুমে এসে পেট ব্যাথার কারণ বুঝতে পেরে লজ্জায় নত হয়ে পড়েছে সে। ড্রেস পাল্টিয়ে নিয়েছে কিন্তু কোনো প্যাড নেই তার কাছে। ইনশিতা দের কাছে যে চাইতে যাবে সেই পরিস্থিতিতে ও নেই। পেট ব্যাথা নিয়ে ঘাপটি মেরে শুয়ে রইল তুলি। দরজায় টোকা পড়তেই কিছু টা নড়ে উঠল । চেয়ে দেখল আমরিন। হাতে একটা ব্যাগ। কাছে এসে ব্যাগটা রেখে বলে উঠল,,,

—আমাদের বলতে পারতিস তুলি। এভাবে ব্যাথা নিয়ে থাকা যায় বোকা মেয়ে? কষ্ট হচ্ছে না তোর? ভাইয়া না দেখলে তুই তো আমাদের বলতি না। ভাগ্যিস ভাইয়া বুঝে নিয়েছে আর প্যাড ও ওষুধ পাঠিয়েছে।

থমকে গেল তুলি। অতিশয় লজ্জা ঘিরে ধরল তার মনে। কেন আদ্রর চোখে পড়ল এটা ভাবতেই লজ্জায় মরে যাচ্ছে সে। ব্যাগ থেকে প্যাড নিয়ে চেঞ্জ করে এসে বিছানায় বসতেই মুচকি হেসে এক গ্লাস গরম দুধ বাড়িয়ে দিল আমরিন। দুধের গ্লাস টা হাতে নিয়ে কিছুটা অবাক হল তুলি। কই দুধের গ্লাস তো ছিল না। হয়তো আমরিন আনিয়েছে। গরম দুধ ও ওষুধ খেয়ে স্বস্তি ফিল করছে তুলি। মনে মনে হাজারো ধন্যবাদ জানাল আদ্র কে। এক মুঠো ভালো লাগা ও সৃষ্টি হল আদ্রর প্রতি। মানুষ টা কে যতটা নির্দয় ভেবেছিল একদম তেমন না কেমন যেন রহস্যময়!


সকালের সূর্যের কিরণ ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে তুলির চোখে মুখে। আড়মোড়া ভেঙে বিছানা থেকে উঠে বসল তুলি। প্রশান্তির এক ঘুম হয়েছে। পিরিয়ড নিয়ে এ প্রথম হয়তো এতো ভালো ঘুম ঘুমাতে পেরেছে তুলি। সারাক্ষণ পেট ব্যথায় কাতরালে ও ফিরে দেখার জন্য কেউ ছিল না। নির্ঘুম রাত কাটত। কাঁদতে কাঁদতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ত। একেবারে গোসল সেরে নিল তুলি। হালকা গোলাপি কালারের একটা থ্রি পিছ পড়ে নিল। কেন যে তার মন চাইল একটু সাজতে। নিজের শ্যামলা রঙ নিয়ে কখনও আফসোস হয় না তুলির। তার কাছে মনে হয় সবাই কি আর শ্যামবর্ণা হতে পারে? সে হতে পেরেছে তাই বা কম কিসের? হালকা গোলাপি কালারের লিপস্টিক লাগিয়ে নিল ঠোঁটে। নিচে নেমে এসে দেখল অলরেডি সবাই ডাইনিং টেবিলে উপস্থিত। সবাই কে গুড মর্নিং জানিয়ে চেয়ারে বসল তুলি। দ্রুত বেগে কেউ তার পাশের চেয়ারে বসতেই চমকে উঠল সে। চোখ ফিরিয়ে তাকাতেই মন জুড়িয়ে গেল তার। আদ্র বসেছে তার পাশে। মায়ের দিকে তাকিয়ে আদ্র বলে উঠল,,,

—তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও মা। আজ ইমারজেন্সি আছে হসপিটালে। লেট করা যাবে না।

নাস্তা দিতে নিলে আদ্র মিসেস সায়েরা কে থামিয়ে বললেন,,,

—স্পেশাল অতিথি কে আগে দাও মা। ছোট দের আগে দিতে হয় জানো না মা?

মৃদু হাসল সবাই। তুলি বেক্কল বনে গেল। সে কি এতোটাই ছোট নাকি রাক্ষস যে এভাবে বলা হল। সায়েরা বেগম তুলির প্লেটে নাস্তা দিলেন। আদ্র নিজেই নিয়ে নিল নিজের খাবার। চেয়ারে বসে সায়েরা বেগম বলে উঠলেন,,,

–এগারো টার দিকে ফিরবি তো আদ্র? আজ তো তুলি ও আমরিন কে তোর কলেজে ভর্তি করানোর জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা।

–নিয়ে যাব মা। রেডি হয়ে থাকতে বলবে দু’জন কে।

বিস্মিত হয়ে পড়ল তুলি। সায়েরা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,,,

—আমি কলেজে ভর্তি হব মানে?

—মানে টা খুব সোজা। এখন থেকে তুমি এখানেই থাকছো।

পাশ থেকে খাবার খেতে খেতে কথাটা বলে উঠল আদ্র। সায়েরা বেগম ও হেসে বললেন,,,

–আদ্র ঠিক বলেছে তুলি। তোর মামা আমায় ফোন দিয়েছিলেন। ভাইয়া কাঁদছিলেন তোর জন্য। ওনি ওনার ভুল বুঝতে পেরেছে। ভাইয়া চাইছে তুই আমাদের এখান থেকেই স্টাডি কমপ্লিট করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর।

চোখের কোণে পানি চিক চিক করছে তুলির। তার কানকেই বিশ্বাস করতে পারছে না তার মামা এমনটা চেয়েছে। কৃতজ্ঞতায় ভরে গেল মনটা মামার জন্য। ফিরতে চায় না আর সেই শহরে। মুখোমুখি হতে চায় না আহাদ ও ঝুমুর। হঠাৎ এক অদ্ভুত ইচ্ছে জাগল তুলির মনে। আদ্র উঠে যেতে নিলে প্রচন্ড জোরে তুলি বলে উঠল,,,

—আমাকে হসপিটালে নিয়ে চলুন আদ্র ভাইয়া।

তুলির এমন কথায় চোখ বড় বড় করে তাকাল সবাই। আদ্র ও দাড়িয়ে পড়ল। সবার দিকে তাকিয়ে জিভ কাটল তুলি। হি হি করে হেসে বলল,,,

–আসলে আমি না জীবনে ও হসপিটালে যাই নি। আমার খুব ইচ্ছে হসপিটাল দেখার।

আরেক দফা অবাক করে দিল সবাই কে। হসপিটালে কম বেশ সবারই যাওয়া হয় ডক্টর দেখানোর সুবাদে। তুলির কথাটি সত্যিই খুব বিস্ময়কর। সায়েরা বেগম আদ্র কে ইশারা করলেন নিয়ে যেতে।


গাড়ির কাছে এসে দাড়িয়ে আছে তুলি। আদ্র কে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি করে গাড়ির দরজা মেলে বসতে নিলে থামিয়ে দিল আদ্র। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলে উঠল-,,,

–গলায় পেঁচিয়ে পড়ো ওড়না টা।

ভ্রু কুটি করে বলে উঠল তুলি,,

–কেন ভাইয়া? ওড়না তো সঠিক ভাবেই দিয়েছি।

মুহুর্তেই রেগে গেল আদ্র। চোখ কটমট করে তুলির দিকে দৃষ্টি তাক করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,,

–সঠিক ভাবে দিলে গলার তিল টা কেন দেখা যায়? মানুষ কে দেখানোর ধান্দা হলে আমি তোমাকে নিব না তুলা।

প্রচন্ড জোরে ধুক করে উঠল তুলির বুকের বা পাশ টা। আবারও তুলা ডাক! লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে ওড়না টা গলায় পেঁচিয়ে নিল সে। আদ্র অন্য দিকে তাকিয়ে আছে। গাড়ির দরজা লাগানোর আওয়াজ কানে আসতেই মুচকি হাসল আদ্র। শীগ্রই গিয়ে বসে পড়ল ড্রাইভিং সিটে। তুলির মন চাইল আদ্র কে রাতের জন্য ধন্যবাদ জানাতে। পরক্ষণেই মনে হলো আদ্র নিজেই তো দিতে পারত কিন্তু আমরিন কে দিয়ে পাঠিয়েছে যেন তুলির অস্বস্তিে পরতে না হয়। কথাটা বুঝতেই শীতল বাতাস ছুঁয়ে গেল সারা শরীর জোরে । হাসি মুখে আঁড়চোখে আদ্রর দিকে তাকাতেই দেখল আদ্র মনোযোগ দিয়ে ড্রাইভিং করছে। এতো নীরবতা ভালো লাগছে না তুলির। তাই মুখ ফস্কে বলে উঠল,,,

–মায়ের কাছ থেকে শুনেছি ছোট বেলায় আমি পুকুরে পরে যাওয়ায় আপনি অনেক কেঁদেছিলেন। এখন কি আর আমার জন্য কাঁদেন না আদ্র ভাই?

থেমে গেল গাড়ি। আদ্রর দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো তুলির দৃষ্টিতে। তুলি মাথা নত করে ফেলল। বুঝতে পেরেছে ভুল প্রশ্ন করে বসেছে। কোনো জবাব না পেয়ে মাথা তুলতেই চোখে পড়ল আদ্রর ঠোঁটের কোণে থাকা হাসি আর নীলাভ চোখের মুগ্ধতা। আদ্র দৃষ্টি সরিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে বলে উঠল,,,

—এখন আর কান্না করি না। কারণ তুলা উড়ে যাওয়ার নেই আর কোনো প্রক্রিয়া।

চলবে,,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আচ্ছা আহাদ নামটা কি পরিবর্তন করে দিব পাঠক/পাঠিকা? আর কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন। কারণ আপনাদের রেসপন্স লেখক /লেখিকাদের লিখার আগ্রহ বাড়ায়।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here