আনকোরা পর্ব-১৮

0
2720

#আনকোরা

#রূবাইবা_মেহউইশ
১৮.

কোকিলের কুহু সুর আর চায়ের কাপে চামচের টিং টিং শব্দে গভীর ঘুমটা একটু একটু করে চোখের পাতা ছাড়তে লাগলো। সারারাত এক কাত হয়ে শোয়ার ফলে শরীরের এক পাশ ভীষণ ব্যথায় শক্ত হয়ে আছে। এতোটাও পরিশ্রম শরীরের ওপর দিয়ে যায়নি তবুও যে কেন সে রাতভর এক কাতে ছিলো আল্লাহ জানে! দরজা ভেতর থেকে লাগানো আছে তবুও রান্নাঘরের চামচ-কাপের আওয়াজ কেন এত লাগছে কানে বুঝে পায় না চৈতী। ঘড়িতে কয়টা বাজে কে জানে কিন্তু বিছানা তো ছাড়তেই ইচ্ছে করছে না।কিন্তু টুং টাং শব্দ এত বাড়ছে যে আর বিছানায় থাকা সম্ভব হলো না চৈতীর। কিন্তু এই শব্দটা একদম দরজার কাছে কেন মনে হচ্ছে! রান্নাঘরটা বাবা মায়ের ঘরের পরে সে হিসেবেও আওয়াজ এতটা আসার কথা না। বিছানা থেকে নেমে এলোমেলো চুল গুলো পেঁচিয়ে খাটের কিনারায় থাকা পাঞ্চ ক্লিপে আটকে নিলো। খাট থেকে ওড়না গায়ে দিতে দিতে দরজা খুলেই মা বলে ডাকতে গিয়েও থেমে গেল। দিহান দাঁড়িয়ে আছে চায়ের কাপ হাতে৷ চামচের শব্দটা সেই করছে এত বিশ্রীভাবে৷ মেজাজের বারোটা বেজে গেছে চৈতীর দাঁতে দাঁত চেপেই বলল, “তুমি! আর এমন চামচের শব্দ করছো কেন?”

“বেয়াদব!” বলেই দিহান চৈতীর ঘরে ঢুকে খাটে বসে পড়লো। চায়ের কাপে সুরৎ করে শব্দ করে টান দিয়েই আবার বলল, “কি নোংরা মেয়েরে তুই! এই ভর দুপুরেও বিছানার অবস্থা কি খারাপ।”

দিহানকে দেখেই চৈতীর ঘোর কাটেনি তারওপর তার এমন ঠাস ঠাস কথা যেন খুব কানে লাগলো। মাথার ভেতর কিছুই ঢুকছে না যেন তার। দিহানও আবার মুখ খুলল, “ভেন্দার মত দাঁড়িয়ে আছিস কেন এখনও? যা মুখ হাত ধুয়ে আয় জলদি। খিদে লেগেছে আমার দ্যাখ মামী কি রান্না করেছে।”
চমক নাকি বিষ্ময় চৈতী নিজের মধ্যেই নেই আবার মনে হচ্ছে কাল রাতে সে অনেকবার মনে করেছিলো দিহান ভাইকে আর তাই এখন ভ্রম হচ্ছে। তার ভ্রম দূর করে দিলো তার মা। পেছন থেকে গলা এলো, “চৈতী কি এখনও উঠেনি দিহান?”

“হ্যাঁ মামি উঠেছে কিন্তু লাভ কি গরু জায়গা থেকে নড়লে তো!”

“এসব কি দিহান ভাই? মুখের ভাষা এত বিশ্রী কেন?”
চৈতী আচমকাই এবার রেগে গেল। তার সাথে এখন কি হচ্ছে তার নিজেরই বোধগম্য নয়।

“এ্যাই তুই আমার ভাষায় বিশ্রী কি পেলি। কখন থেকে সব কথায় বিশ্রী বিশ্রী করছিস কেন?”

“বিশ্রীকে বিশ্রী নয়তো কি সুশ্রী, সুশীল বলবো! ভেন্দা,গরু এসব কি বলছেন আমাকে?”

“এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দেব ফাজিল।যা এখান থেকে।” বলেই দিহান চায়ে আরেকটা লম্বা চুমুক দিয়ে শেষ করে ফেলল। চৈতীর মেজাজ আরও এক ডিগ্রি খারাপ হলো এই চায়ের সুরুৎ সুরুৎ শব্দে।

ভর দুপুরের সময় আজ ঐশী আর দিলশাদ ছাড়া কেউ নেই বাড়িতে। ময়নার কোন এক পরিচিতা এসেছে ঢাকায় কোথাও চাকরির জন্য সে দেখা করতে চলে গেছে। দিশান আর তার বাবা অফিসেই লাঞ্চ করবে। দুজনের জন্য আর তেমন করে কিছুই রান্না করা হয়নি৷ ঐশী খাবার বেড়ে শ্বাশুড়িকে ডেকে মাত্রই বসছিলো অমনি কলিংবেল বেজে উঠলো। ভর দুপুরে কোন মেহমান আসবে বলে মনে হয় না কিন্তু এই সময় কে আসবে! ভাবতে ভাবতেই ঐশী দরজা খুলল সেই সাথে দিলশাদও ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে। তার নজর দরজায় পড়তেই ঐশীকে বলল, “ঐশী সালাম দাও আন্টি হয় উনি৷ অনামিকা ভেতরে এসো তুমি।”

ঐশী সালাম দিয়েই দরজা থেকে সরে দাঁড়ালো। দিলশাদ খেয়াল করলো অনামিকার মুখে ঘাম,কপাল ভিজে চুল লেপ্টে আছে। দিলশাদ খাবার টেবিলের সামনে আসতে আসতে আবার বলল, “বসো খাওয়া-দাওয়া করি।” ঐশী চলে গেছে ঝটপট এক গ্লাস শরবত বানিয়ে নিয়ে এলো। ততক্ষণে অনামিকাও এসে দাঁড়িয়েছে দিলশাদের সামনে।

“কেমন আছেন আপা?”

“ভালো আছি। আমি ভাবছিলাম সময় করে তোমার সাথে কথা বলল। সেদিন দিহানের জন্য,,, ”

“কিছুই করিনি আপা ডাক্তার হিসেবে শুধু কর্তব্য পালন করেছি।”

“তবুও।”

“কোন তবুও নেই আপা। যাইহোক, আজ একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছি। সেদিন তো সুইটি আপার ফোন নম্বরটা নিতে ভুলে গেছি। তাদের বাড়িতেও যাবো যাবো করে আর সময় হয়নি কিন্তু আজ আমার ছেলের জন্য বাধ্য হয়েই আসতে হলো।”

“বুঝলাম না ঠিক। আচ্ছা তুমি আগে শরবতটা নাও!” ঐশী শরবত নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে সামনে। ভদ্রতাসূচক হাসি দিয়ে অনামিকা শরবতের গ্লাস নিলো। দিলশাদ ডাইনিংয়ে বসতে বললে সে শুনলো না। সোফায় বসে শরবতটা শেষ করে আবার বলল, ” আমি কাল আপনাদের বাড়ি মানে চাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলাম।কিন্তু দারোয়ান জানালো দুদিন হয় সে বউ মেয়ে দুজনকেই রংপুরে নিয়ে গেছে।”

কথা বলার সময় অনামিকার মুখে বিমর্ষতা যেন সে খুব কাঙ্ক্ষিত কিছু খুঁজতে গিয়ে পায়নি। দিলশাদ সায় দিলো হ্যাঁ তারা সেখানে গেছে। এখন থেকে সুইটি সেখানেই থাকবে।

“তুমি চাঁদের সাথে দেখা করতে এসেছিলে অনামিকা?”

“নাহ!” তৎক্ষনাৎ চমকে উঠে যেন জবাব দিলো অনামিকা। তারপরই বলল, “আসলে আপা আমার একটাই ছেলে। তার বাবার মতই এমবিবিএস পাস। ইন্টার্নি শেষে বছর হয়ে এলো ঢামেকে প্র্যাক্টিসিংয়ে ছিল৷ এবছরে আবার বিদেশে যাবে বছর দুইয়ের জন্য। কিন্তু,”

দিলশাদ অতি মনযোগেই শুনছিলেন অনামিকার কথা। তারা পরিচিত আরো প্রায় ছাব্বিশ, সাতাশ বছর আগে থেকে। বলতে গেলে অনামিকাকে তিনি ষোলো, সতেরো বছর বয়সী দেখেছিলেন। কিন্তু চাঁদকে ভালোবাসে কথাটা বলার পরই অনামিকার পরিবার যা করেছিলেন তারপর আর কোন প্রকার যোগাযোগ ছিলো না এই মেয়েটার সাথে। চাঁদও নিজের মত পথ বেছে নিয়েছে তাদের সাথে বন্ধুত্ব ভুলে এরপর আর প্রশ্নই আসেনি যোগাযোগের। আজ এতগুলো বছর পর হাসপাতালে দেখে দিলশাদের প্রথমে রাগ হলেও এখন আর কোন রাগ নেই। সবাই ভালো আছে যার যার পথে। চাঁদ সুইটিকে ভালোবেসেই বিয়ের জন্য বলেছিলো তার বাবাকে। অনামিকাও তার স্বামীর সাথে সুখে আছে। তাই আজ উৎসাহী হয়েই সে অনামিকাকে আপ্যায়ন করতে চাইছে। কিন্তু সংকোচে পরে অনামিকা আসল কথাটাই বলতে পারছে না।ঐশীও পাশেই বসা ছিলো। সে অনামিকার মুখ দেখে বলল, “আন্টি বোধহয় কিছু বলতে চাচ্ছেন মা।”

“হ্যাঁ, আমিও বুঝতে পারছি। কিন্তু অনামিকা তুমি বলো না এত হেজিটেশন কেন?”

“আসলে আপা আমার ছেলেটা সেদিন রাজশাহী থেকে ফিরেই হাসপাতালে এসেছিল যেদিন দিহানকে নিয়ে গেল। তখন করিডোরে সে একটা মেয়েকে দেখেছিলো। তার খুব ভালো লেগেছে আর আমাকেও দেখিয়েছে মেয়েটিকে।”

“এটা তো ভালো কথা। খোঁজ খবর নিয়ে ভালো হলে বিয়ে করিয়ে দাও। আর যা বললে তোমার ছেলে তো ভালো যোগ্য বলা যায়।”

“হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ সব দিক থেকেই সে বেস্ট পাত্র হিসেবে। নিজের ছেলে বলে বলছি না সত্যিই সে উপযুক্ত সব দিক থেকে। কিন্তু সে যাকে পছন্দ করেছে সে চাঁদের মেয়ে চৈতী।”

“কিহ!” ঐশীই আগে রিয়াক্ট করলো। দিলশাদ স্বাভাবিক। হয়তো সে অনামিকার ছেলের কথা তোলার পরই বুঝে গিয়েছে। কিন্তু ঐশীর হজম হচ্ছে না সে তার শ্বাশুড়ির আগেই বলে দিলে, “চৈতী তো বিবাহিত। দিহান ভাইয়ার সাথে বিয়ে হয়েছে চৈতীর।”

“মরার মত ঘুমাস ক্যান তুই?”

“আমি কখন মরার মত ঘুমালাম!”

“কখন মানে! আমি বারোটা থেকে দরজা ধাক্কাচ্ছি। মামীর সাথে এক থেকে দেড় ঘন্টা কথা বললাম৷ মাঝে মামী পাস্তা আর পুড়ি খাওয়ালো। চা খেলাম তবুও তোর উঠার নাম নেই। মামা মামীর ঘরে একটা খাট সেট করলাম নতুন করে কিন্তু তোর তাও উঠার নাম নেই।”

দিহানের কথায় চৈতীর চক্ষু চড়কগাছ। এখন কয়টা বাজে! তড়িঘড়ি সে মোবাইল নিয়ে সময় দেখল দুইটা বেজে গেছে। আজ সে এক দুপুর পর্যন্ত ঘুমেই ছিল!

“আপনি কখন আসছেন?”

“এক কথা ক’বার বলবো?”

“দিহান, এসো বাবা খাবার খেয়ে পরে এই ঝগরুটের সাথে লেগো।”

সুইটি খাবার বেড়ে ডাকছে দিহানকে। চৈতীর মুখ হা হয়ে গেল মায়ের কথা শুনে৷ ঝগরুটে! মা’ও দিহান ভাইয়ের সাথে তাল মিলিয়ে তাকে উল্টাপাল্টা বকছে! দিহান সেই কখন চৈতীর রুমে এসে বিছানায় শুয়েছিলো এখনও সেভাবেই আছে৷ আর চৈতী ব্রাশ করে একেবারে গোসল শেষ করে বাথরুম থেকে বেরিয়েছে। বেরিয়েই আবার দুজনের ঝগড়া শুরু। সুইটির কানে যাচ্ছে সকল কথা সে মনে মনে বলছে লড়ুক এমন করে তবুও পাশাপাশি থাকুক তারা আজীবন। দুপুরে খেতে বসতেই চাঁদ খানও এসেছে। টেবিলে চারজন একসাথে বসলেও কেউ কোন কথা বলল না। মাঝে সুইটি শুধু একবার বলেছে, “আপা আমাদের ওপর রেগে আছে।”

চৈতীর বাবা কথাটা শুনে কয়েক সেকেন্ড থম মেরে ছিলেন পরেই আবার খাওয়ায় মনযোগ দিলেন৷ রেগে সে নিজেও আছে বোনের ওপর। বোনের সেসব কথা চৈতীকে নিয়ে বলা কিছুই ভোলেননি৷ সে মেয়েকে যতোই জোর করে বিয়ে দেক না কেন ফেলে তো দেয়নি। আর সে তো শুধু নিজের মেয়ের ভালো নয় বরং ভাগ্নেরও ভালো চেয়েই বিয়েটা দিয়েছিলেন। নইলে তার মত মানবতার পিছে ছুটতে থাকা লোক কেন প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে জোর করে বিয়ে দিতেন!পরিস্থিতি খারাপ হলে তা আবার ভালোও হয় এটা অন্তত বড় আপার বোঝা উচিত ছিলো।এই যে আজ, চৈতী দিহান বিনা দ্বিধায় পাশাপাশি আছে একজনের জন্য আরেকজন ছুটে রংপুর চলে এসেছে এগুলোও সেই জোরজবরদস্তির সুফল। খাওয়া শেষ করেই চাঁদ খান প্রশ্ন করলো, ” তুই এখানে এসে পৌঁছেছিস তোর মাকে কি ফোন করে জানিয়েছিস?”

মামার কথা শুনতেই জ্বিভে দাঁত বসালো দিহান৷ সত্যিই সে ভুলে গেছে মাকে জানাতে। আবার মনে হলো সে ভুলেনি চৈতীর ঝগড়ার কারণেই তার সময় হয়নি ফোন করার। দিহানের চুপ থাকাতেই চাঁদ খান বুঝতে পারলেন দিহান ফোন করেনি। তাই সে নিজেই ফোন বের করে বড় আপার নাম্বারে ডায়াল করলো।অনামিকা যাওয়ার পরপরই দিলশাদ আর ঐশী খেতে বসেছিলো। তাদেরও মাত্রই খাওয়া শেষ হলো। তার ফোন বাজছে শুনতেই ঐশী উঠে ফোন এনে দিল শ্বাশুড়ির হাতে।

‘ভাই’ লেখা স্ক্রীণে দেখতেই দিলশাদের মুখ উজ্জ্বল হলো। অভিমানে চোখ ঝাপসাও হয়ে উঠলো তার। ঐশীকে ডাইনিং পরিষ্কার করে নিতে বলেই নিজের ঘরে চলে গেল সে ফোন কানে নিয়ে।

“আসসালামু আলাইকুম আপা।”

দিলশাদ সালামের জবাব নিয়েই বলল, “তোর আপা বেঁচে আছে নাকি!”
“এভাবে বলছো কেন আপা? এত কিসের রাগ তোমার! যাদের জন্য রাগ দেখাচ্ছো তারা তো দেখছি মিলেই গেছে।”

এবার আর রাগ, অভিমান কিছু রইলো না দিলশাদের। সে এক হাতে চোখ দুটো মুছে বলল, “পাজিটা পৌঁছে গেছে?”

চাঁদ খান ফ্ল্যাট থেকে বাইরে বেরিয়ে গেল ফোন কানে নিয়ে। সে জবাব দিলো, “তোমার পাজিটা বারোটার দিকে এসেছে। কিন্তু ঐ যে তোমার পাজি আর আমার তোতাপাখিটার তর্কাতর্কি, ঝগড়া বিবাদই তো শেষ হয় না তাই ভুলে গেছে তোমাকে জানাতে।”

চাঁদ খানের কথায় সশব্দে হেসে উঠলো দু ভাই বোনই। পেছন থেকে সুইটি এসে দাঁড়ালো খুব সন্তর্পণে। চাঁদ টের পায়নি তাই সুইটিই একটুখানি কেশে বলল, “আপা লাইনে থাকলে আমাকে একটু দিয়েন।”

“তুমি আবার কি বলবে আমার আপাকে?” চাঁদের এমন কথায় সুইটি সংকোচে “কিছু না” বলে চলে যাচ্ছিলো। চাঁদ এক হাতে তার হাত টেনে ধরলো। ফোন বাড়িয়ে দিলো সুইটির দিকে। সুইটি ফোন কানে নিয়ে কথা বলল।স্যরিও বলল দিলশাদকে দেখা না করে আসার জন্য । দিলশাদ অবশ্য তার প্রতি কোন রাগই রাখেনি। সে হাসি হাসি মুখেই অনেক কথা বলে ফোন রাখলো। সুইটি যতক্ষণ দাঁড়িয়ে কথা বলল ঠিক ততক্ষণই চাঁদ খান সুইটির একটা হাত ধরেই দাঁড়িয়ে ছিল। কথা শেষ হতেই সুইটি ইতস্তত করতে করতে বলল, “হাতটা ছাড়ুন।”

ওহ!

এমন করেই বলল চাঁদ খান যেন সে ভুলেই গেছে তার হাতের মাঝে সুইটির হাত।

পূব আকাশ রক্তিম হওয়ার আগ মুহূর্তে আকাশটা হঠাৎ করেই মেঘলা হয়ে উঠলো। বাতাস শুরু হতেই ধূলোবালিও উড়তে লাগলো।দিহান ফ্ল্যাটের সামনের ছোট্ট বারান্দাটাতে দাঁড়িয়ে খোলা মাঠ দেখছিল। আচমকা ধূলোর উড়ো উড়িতে তার চোখে বালি কণা পড়লো। এক হাতে চোখ কঁচলে সে ঘরের ভেতর যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই ধাক্কা লাগলো চৈতীর সাথে। সে কোন কথা বলবে তার আগেই চৈতী বলে উঠলো, “কি অবস্থা দিহান ভাই চোখে দ্যাখো না?”

“অসভ্য মেয়ে তুই চোখে দেখিস না আমার চোখে কিছু পড়েছে।”

“কই দেখি!” বলেই চৈতী দিহানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দু হাতে দিহানের মুখটা ধরলো। গালভর্তি ছোট ছোট দাঁড়ি হাতের তালুতে লাগতেই চৈতীর গা শিউরে উঠলো। সে দু হাত দিহানের গাল থেকে সরিয়ে তার চোখের পাতা ধরলো। দেখার চেষ্টা করলো কি পড়েছে।

“কেঁপে উঠলি কেন?” মুখ ফসকেই বলে ফেলল দিহান।সে খেয়াল করেছে চৈতীর হঠাৎ শিউরে উঠে হাত সরিয়ে নেওয়া।

“কোথায় কেঁপে উঠলাম!” কন্ঠস্বরে স্পষ্ট কম্পন চৈতীর।দিহান আনকোরা নয় এমন অনুভূতিতে। চোখের সামনে প্রিয়ন্তির এমন অনেক মুহূর্তই সে দেখেছে। আঙ্গুলের ভাজে আঙ্গুল রেখে সে যখন প্রয়ন্তিকে আদুরে ভঙ্গিতে প্রথমবার কপালে চুমো খেল ঠিক এমন করেই কেঁপে উঠেছিলো সে। দিহানের গালে হাত ছুঁয়েও সে এমন করেই কেঁপে উঠেছিলো প্রথমবার। প্রথমবারে সবেতেই এমন শিউরে ওঠে মেয়েরা এমনটাই মনে হলো দিহানের। তবে কি চৈতীও এই প্রথমবার কোন পুরুষের গাল ছুঁলো! তাহলে অভ্রের সাথে তার দেখা হওয়া!

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here