আমার পুতুল বর লেখিকা: আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম) পর্ব : ৫৩

আমার পুতুল বর
লেখিকা: আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম)
পর্ব : ৫৩

দেখতে আরশি-মিহির এক্সামের দিন ঘনিয়ে এলো। কেটে গেছে পুরো একটা মাস। এই এক মাসে বদলেছে মন, বদলেছে সম্পর্ক। সুজানা এখন মাহিরের শুধু বেস্ট ফ্রেন্ড ই নয় বাগদত্তা ও বটে। হ্যা সেদিন সুজানার মুখে ওমন একটা কথা শোনার পর মাহির আর এক মুহুর্ত ও অপেক্ষা করেনি, বাবাকে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছে। ১ সপ্তাহের মধ্যে দুই পরিবারের সম্মতিতে ওদের বাগদান সম্পন্ন করা হয়েছে। মাহির যখন জেনেছিলো ওর জন্য নিধিকে বাছাই করা হয়েছে তখন অনেক বড় ঝটকা খেয়েছিলো। বাবার হাত ধরে ধীর কন্ঠে বলেছিলো ,,
— মিহির মতো আরশি, নিধি কে ও আমি বোনের চোঁখে দেখি। সেখানে নিধিকে বিয়ে করার কথা আমি কি করে চিন্তা করবো বলো? আর তার থেকেও বড় কথা আমি সুজি কে ভালোবাসি। ১/২ বছরের ভালোবাসা নয় এটা। বিগত ১২ বছর যাবৎ আমি ওকে ভালোবাসি।
মাহাদ রহমান ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,,
— সুজানা কি তোমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসে?
— সবার ভালোবাসা প্রকাশের ধরন এক হয় না বাবা। আমি আমার ভালোবাসা টা ওর সামনে প্রকাশ করতে পেরেছি কিন্তু ও পারছে না। ওর আমাকে ভালোবাসি কথাটা বলতে হবে না। ওর আচরণে বারবার প্রকাশ পেয়েছে ও আমাকে কতটা ভালোবাসে। আমার বিশ্বাস ও আমাকে আমার মতো করেই ভালোবাসে। বাবা প্লীজ একবার জাস্ট একবার আমার বিশ্বাসের উপর বিশ্বাস করে দেখো।
মাহাদ রহমান ছোট্ট করে নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,,,
— ঠিক আছে। তোমার খুশিতেই আমি খুশি। তুমি যদি সুজানা কে নিয়ে সুখী হতে পারো তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।
মাহির খুশি হয়ে ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,
— থ্যাংক ইউ সো মাচ বাবা।
মাহাদ রহমান হেসে ছেলের পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। ছেলের মুখে এই হাসিটা দেখার জন্য তিনি সব করতে পারেন।
এরপর নিধির পরিবারের সাথে আলোচনা করা হলে, নিধি ওর বাবাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেয় ও মাহির কে বিয়ে করতে চায় না। যেহেতু ছেলে-মেয়ে কেউই রাজি নয় সুতরাং এই বিয়ে নিয়ে আর কোন কথা উঠার প্রশ্নই আসে না। মাহাদ রহমান কিছুটা সস্তি পেলেন। কথা দিয়ে কথার খেলাফ করা তিনি একদম পছন্দ করেন না। এখানে তো তিনি তার বেস্টফ্রেন্ডকে কথা দিয়েছেন । এখন যখন ছেলে-মেয়ে বই একে অপরকে বিয়ে করতে চায় না তখন তো আর কিছু করার নেই। এই ঘটনার দু-দিন বাদেই মাহিরের পুরো পরিবার আরশিদের বাড়িতে উপস্থিত হয়। মাহাদ রহমান সুরাজ জামানকে সবটা খুলে বলেন। সুরাজ জামান প্রথমে অবাক হয়েছিলেন এটা জেনে যে সুজানা আর মাহির একে অপরকে ভালোবাসে। কারণ সুজানা কখোনো এমন কিছু বলে নি। বাবা-মেয়ে হওয়া সত্বেও ওদের সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ। তাই উত্তরের আশায় সুজানার দিকে তাকালে সুজানা মাথা নামিয়ে মিন মিন করে বললো,,
— বাবা আমি মাহির কে বিয়ে করতে চাই। সরি ব্যাপারটা তোমাকে আগে জানানো হয়নি। প্লীজ মাফ করে দাও।
সুরাজ জামান মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,,
— দেখতে দেখতে আমার আম্মিটা কত্তো বড় হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। আমি তোমার উপর রাগ করিনি আম্মি। তুমি তোমার জন্য একজন যোগ্য ছেলে কেই পছন্দ করেছো। শৈশব থেকে একসাথে পথ চলা শুরু হয় তোমাদের। সেক্ষেত্রে মাহিরের থেকে ভালো জীবনসঙ্গী তুমি আর পেতেনা।
সুজানা ছলছল চোখে বাবার দিকে তাকালে সুরাজ জামান মিষ্টি হেসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
মাহাদ রহমানের উদ্দেশ্য বললো,,,
— আমার এই বিয়েতে কোনো আপত্তি নেই ভাইজান। মাহির কে আমি ছোট থেকে চিনি ওর মতো মেয়ে জামাই পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
— আমাদের সুজানা কে কি কম মনে করেছেন নাকি ভাইজান? আমার কাঠখোট্টা টাইপের ছেলেকে একমাত্র ওই সোজা করতে পারে। দুর্দান্ত সাহসী তরুণ জার্নালিস্ট মাহির রহমান একমাত্র সুজানা জামানের সামনেই বিলাই হয়ে যায়। ( মৃধা রহমান )
মাহিরের মায়ের কথা শুনে সবাই জোরে জোরে হেসে উঠলো। সুজানা লজ্জা পেয়ে আসছি বলে নিজের ঘরে চলে গেলো। মাহির ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে।
— ভাই আমি বলছিলাম কি আপাতত ওদের বাগদান টা করিয়ে রাখি তারপরে আরশি আর সূর্যের বিয়ের পর না হয় ওদের বিয়েটাও দিয়ে দেবো। কি বলেন?
— হ্যা ভাইজান সেটাই ঠিক হবে। তাহলে আপনারা একটা ডেট বলুন সেদিন নাহয় আমরা শুভ কাজটা সেরে ফেলবো।
মৃধা রহমান আড়চোখে ছেলের দিকে তাকালেন। মাহির ওনাকে ইশারায় কিছু একটা বলতেই উনি হালকা কেশে মুচকি হেসে বললেন,,
— ভাইজান বলছি আমরা তিনদিন পরে ওদের বাগদান সম্পন্ন করতে চাইছি আপনাদের যদি কোনো আপত্তি না থাকে তো!
মাহাদ রহমান কিছু বলতে যাচ্ছিলেন মৃধা রহমান ইশারায় চুপ থাকতে বললেন।
সুরাজ জামান কিছুক্ষন ভেবে বললেন,,
— খুব দ্রুত হয়ে যাচ্ছে না আপা!
— আমি জানি ভাইজান। কিন্তু ওরা যেহেতু দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক তাহলে আর অপেক্ষা কিসের! তাইনা বলুন। আর এখন তো শুধু বাগদান টা হবে বিয়ে হতে এখনো দেরি আছে।
সুরাজ জামান আফিফ হাসান আর স্ত্রীর দিকে তাকালেন। দুজনেই মাথা নেড়ে সম্মতি দিলো। সুরাজ জামান সূর্যর কাছে জানতে চাইলে সূর্য বললো,,
— এখানে তুমি বা আমি কেউই ডিসিশন নিতে পারিনা। তুমি বরং আপুকে জিজ্ঞেস করো এতো জলদি বাগদান করতে ওর কোনো সমস্যা নেই তো!
— হ্যাঁ তা ঠিক বলেছো কিন্তু সুজানা তো ঘরে গেলো।
— আরশি তুমি যাও আপু কে গিয়ে সবটা বলো তারপর ওর মতামত কি সেটা আমাদের জানাও।
আরশি সূর্যের কোথায় মাথা নাড়িয়ে সুজানার ঘরের দিকে গেলো।

— আপ্পি!
সুজানা বিছানায় বসে কিছু একটা চিন্তা করছিলো আরশির ডাকে ওর দিকে তাকালো।
— আরশি রানি আয়। বলছি ওরা কি চলে গেছে?
— না আপ্পি। আমাকে পাঠানো হয়েছে তোমার মতামত জানতে।
— কিসের মতামত বিয়ের ব্যাপারে তো আমি হ্যা বলেই দিয়েছি তাহলে!
— আসলে আপ্পি মাহির ভাইয়ের ফ্যামিলি চাচ্ছিলো তিনদিন পর তোমাদের বাগদান করতে এখন এতে তোমার মতামত কি তুমি কি চাও এতো জলদি বাগদান টা করতে না কি আরো পরে? ওরা এখন শুধু বাগদান টা করিয়ে রাখবে বিয়েটা আমার আর সূর্যের বিয়ের পরে হবে।
সুজানা চোখ বড় বড় করে আরশি কে দেখছে।
— কি বলছিস এতো জলদি?
— হ্যা । তোমার কি আপত্তি আছে?
— দেখ আমিও চাই বিয়ের সব রিচুয়াল্স হোক কিন্তু তাই বলে এত তাড়াতাড়ি!!
আরশি দুষ্টু হেসে বললো,,
— দেখো গিয়ে মাহির ভাইয়ের হয়তো তর সইছেনা তোমাকে বিয়ের সাজে দেখার।
আরশির কথায় সুজানা লজ্জা পেলো। তাও কপট রাগ দেখিয়ে বললো,,
— তুই বড্ড ফাজিল হয়ে গেছিস।। ভাইকে বলতে হবে।
আরশি সূর্যের নাম শুনে মুখ বাকালো।। সুজানা কে বললো,
— তাহলে এখন ওদের কি বলবো, যে তুমি এত জলদি কিছু করতে চাও না?
সুজানা ঠোঁট কামড়ে ভাবছে কি বলবে। একদিক থেকে আনন্দ লাগছে এটা ভেবে যে খুব শীঘ্রই ও মাহিরের হতে চলেছে তো অন্যদিকে সবাই কে এতো জলদি ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতেই কান্না পাচ্ছে।
আরশি হয়তো সুজানার মনের অবস্থাটা বুঝতে পারলো। তাই সুজানাকে জড়িয়ে ধরে বললো,,
— মাই ডিয়ার আপ্পি এতো চিন্তা কেনো করছো? দেখো আমরা মেয়ে হয়ে যখন জন্মেছি তখন আজ নাহক কাল বাবার বাড়ি ছেড়ে যেতেই হবে। অন্য একজনের হাত ধরে জীবনের বাকিটা পথ চলতে হবে। বাবা মাকে ছেড়ে জীবনসঙ্গীর হাত ধরার সময়টা কারো কারো ক্ষেত্রে অনেক আগেই চলে আসে তো কারো ক্ষেত্রে অনেক পরে। কারণ সময়ে তো আর কারো জন্য থেমে থাকে না। তোমাকে নিজের করে পেতে মাহির ভাই অনেক অপেক্ষা করতে হয়েছে। তাই ফাইনালি এখন যখন তার অপেক্ষার অবসান হয়ে গেছে তখন তিনি তোমাকে পুরোপুরি নিজের করে নিতে আর অপেক্ষা করতে চাইছেন না। এবার তুমি ভেবে বলো তুমি কি করতে চাও।
সুজানা কিছুক্ষন আরশির দিকে তাকিয়ে রইলো। মুচকি হেসে ওর গালে হাত রেখে বললো,,
— আমার ছোট্ট মিরর কুইনটা কত্ত বড় হয়ে গেছে। পাকা পাকা কথা বলতে শিখে গেছে।
আরশির কপালে চুমু দিয়ে,, “সবাই কে বলে দে আমার কোনো আপত্তি নেই।” আরশি খুশি হয়ে সুজানা কে জড়িয়ে ধরলো তারপর এক দৌড়ে নিচে গিয়ে সবাইকে খুশির খবরটা দিলো। সবাই একে অপরকে মিষ্টিমুখ করানো মাহিরের চোখদুটো সুজানাকে খুঁজছে। ইচ্ছে করছে ওর ঘরে গিয়ে ওকে টাইটলি হাগ করতে। কিন্তু কি করবে সকলের সামনে উঠে তো আর যেতে পারবেনা। অগত্যা মন খারাপ করে বসে রইলো।
নির্ধারিত দিনে সুজানা আর মাহিরের বাগদান সম্পন্ন করা হয়েছে। সবাই অনেক আনন্দ করেছে কিন্তু এতো আনন্দের মাঝেও ওরা রিক,রোজ আর ন্যান্সিকে ভীষন মিস করেছে। ওরা কয়দিন আগেই কানাডা ফিরে গেছে। হঠাৎ করে ন্যান্সির বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন তার জন্য ন্যান্সিকে যেতে হবে। ওকে একা ছাড়বে না বলে রিক আর রোজ ও ওর সাথে চলে যায়। তবে যাবার আগে ওদের কাছে প্রমিস করে যায় যে আরশি আর সূর্যের বিয়ের আগেই ওরা আবার চলে আসবে। ওদের ছাড়া সব আনন্দই কেমন ফিকে লাগে। কিন্তু কি আর করার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওদের যেতে হয়েছে।

এদিকে নিধি আর অভ্র ওদের খুনসুটিময় ভালোবাসা বেশ ভালোই উপভোগ করছে। নিধি অভ্রকে ঠিক আগের মতই জ্বালাতন করা শুরু করেছে তবে এবার বোধহয় মাত্রা টা একটু বেড়ে গেছে। অভ্র মাঝে মাঝে বিরক্তি প্রকাশ করলে নিধি চট করে ওর গালে চুমু দিয়ে বলবে,,” রাগ করে না বাবুতা চককেত খাওয়াবো তোমায়।” তারপর খিল খিল করে হেসে উঠবে। ব্যাস অভ্র আর চাইলে ও নিজের বিরক্ত টা ধরে রাখতে পারেনা। তার জায়গায় একরাশ মুগ্ধতা এসে জমা হয়। অভ্র বুঝে গেছে নিধিকে ছাড়া ও এক মুহুর্ত ও থাকতে পারবে না। নিধি ওর থেকে দূরে গেলে ওর মনটা ছটফট করতে শুরু করে। নিধির দিকে কেউ বাজে নজরে তাকালে বা বাজে কথা বললে অভ্র তাকে খুন করতে পর্যন্ত প্রস্তুত হয়ে যায়। মাঝে মাঝে অভ্র নিজের এই পরিবর্তনের কারন খুজে পায় না।
এর নাম যদি ভালোবাসা হয় তবে হ্যা ও নিধি কে ভালোবাসে।

রেহান-মিহি এখন আগের মতো অতোটা ঝগড়া না করলেও একেবারেই যে করে না তা নয়। তবে আজকাল মিহি রেহানের সামনে গেলে লজ্জায় আড়ষ্ঠ হয়ে থাকে। সেদিন রেহানের বলা কথাগুলো মনে পড়লেই খালি রেহানের থেকে দূরে পালাতে ইচ্ছে করে। এইতো সেদিনের কথা_____

মিহি কলেজে এসেছিলো ফর্ম ফিল আপ এর কাজে। আরশির একটু লেট হবে আসতে তাই ও গেটের কাছে অপেক্ষা করছিলো। ঠিক সেই মুহূর্তে রেহান আর সাগর ওর সামনে এসে উপস্থিত হয়। মিহি রেহানকে হঠাৎ করে নিজের সামনে দেখে হকচকিয়ে গেলো। আসলে রেহানের ঐদিনের কথাগুলো শোনার পর মিহি লজ্জায় আর অসস্তিতে ওর সাথে কথা বলে নি। এক প্রকার এড়িয়ে চলেছে। কিন্তু আজ এভাবে যে ওর সামনে পরে যাবে তা ভাবতেই পারেনি। মিহির ভাবনার মাঝেই ওর হাতে টান পরে। তাকিয়ে দেখে রেহান ওর হাত ধরে রেখেছে। মিহি অবাক হয়ে রেহানের দিকে তাকালো। সাগর পাশ থেকে মুখে হাত দিয়ে হাসছে। রেহান মিহির হাত ধরে টেনে ব্যাকসাইডে নিয়ে যাচ্ছে। মিহি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললো,,
— কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমায়? এমন করছেন কেনো? সবাই কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখুন। উফফ ছাড়ুন!!
রেহান মিহির কোনো কথা না শুনে ব্যাকসাইডে এনে গাছের সাথে চেপে ধরলো। এই জায়গাটা একেবারে নির্জন। মিহির কোমর চেপে ধরে রাগি গলায় বললো,,
— এই মেয়ে কয়টা কল দিয়েছি আমি তোমায়? কতগুলো মেসেজ করেছি একটার ও রিপ্লাই দাও নি কেনো? ইগনোর করছো আমায়? অপরাধ কি আমার? আনসার মি!
— আ,,আমি কেনো আপনাকে ইগনোর করবো! আমি বিজি ছিলাম।
— আচ্ছা কি এমন রাজকার্য করছিলে?
— আরশি আমাকে গেটে না পেলে টেনশন করবে।
— আমি যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও।
— আ,, আমি
— যাই হোক ! অন্যায় যখন করেছো তখন শাস্তি তো তোমায় পেতেই হবে।
— শ,,শাস্তি !!
— হ্যা শাস্তি..
— কি শাস্তি?
— তোমার মূল্যবান সময়ের মধ্যে প্রতিদিন দেড়ঘন্টা সময় আমায় দিতে হবে। এক্সামের আগ পর্যন্ত।
— অ্যা?
— হ্যা।
— কিন্তু কি করে মানে কি করবেন এই সময়ে?
— সেটা পরে বুঝতে পারবে নাও গো।
মিহি আর কিছু না বলে গেটের দিকে চলে গেলো। তারপর থেকে প্রতিদিন বিকালের দিকে মিহি আর রেহান এক সঙ্গে সময় কাটায়। পার্কে বসে আড্ডা দেয়, নয়তো উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়ায়, কখোনো মুভি দেখতে যায়, নয়তো নদীর পাড়ে গিয়ে পা ভিজিয়ে বসে থাকে। এভাবেই তাদের দিন চলছে।

__________________________

আজকে আরশি-মিহির ফার্স্ট এক্সাম। আরশির সাথে সুজানা আর সূর্য এসেছে। মিহির সাথে মাহির এসেছে। এক্সামের আগে সূর্য আরশির বেশ খেয়াল রেখেছে। খাওয়া-দাওয়া, পড়াশুনা, ঘুমানো সব কিছুর তদারকি নিজে করেছে। সুজানা আরশি আর মিহি কে বুঝাচ্ছে। ঠাণ্ডা মাথায় পরীক্ষা দিতে। তাড়াহুড়ো না করতে। যেটা সহজ মনে হবে সেটা আগে লিখতে। আরশি আর মিহি মুচকি হেসে সুজানা কে জড়িয়ে ধরলো। মাহির ও ওদের বেস্ট অফ লাক উইস করলো। আরশি সূর্যের কাছে গেলে সূর্য ওকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে হাতে চুমু দিয়ে বললো অল দা বেস্ট। আমি এখানেই থাকবো এক্সাম শেষ হলে চলে আসবে কেমন? আরশি মিষ্টি হেসে মাথা দোলালো। সূর্য মিহি কে উদ্দেশ্য করে বললো,,”অল দা বেস্ট আধি ঘারওয়ালি”। মিহি হেসে বললো থ্যাঙ্ক ইউ জি-জা-জি। মিহি আর আরশি ভিতরে যাওয়ার সময় মিহি একবার পিছনে ঘুরে রাস্তার অপরপাশে তাকালো। রেহান বাইকে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে। মিহি কে তাকাতে দেখে মুচকি হেসে বললো বেস্ট অফ লাক! বিনিময়ে মিহি ও মৃদু হেসে হলের ভেতরে চলে গেলো।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here