আমার পুতুল বর
লেখিকা: আরশি জান্নাত ( ছদ্মনাম)
পর্ব : ২৭+২৮
ক্লাস শেষে কেন্টিনে এসেছে আরশি আর মিহি। এসে দেখলো সূর্য বসে আছে। কিন্তূ একা নয়। ওর সাথে দুটো ছেলে আর দুটো মেয়ে ও আছে। এদের আরশির পরিচিত মনে হচ্ছে। কিন্তূ কোথায় দেখেছে?
~ কি হলো চল ! ( মিহি )
~ হ্যাঁ।
~ ( বসতে বসতে ) এই আরশি সূর্য ভাইয়া তো আজকেই জয়েন করলো , এর মাঝে ফ্রেন্ডশীপ ও করে ফেলেছেন? ভেরি ফাস্ট হা!! ( মিহি )
~ আমার না ওনাদের পরিচিত মনে হচ্ছে কোথাও দেখেছি বোধয়।
~ এই ভার্সিটির, তো নিশ্চই এখানেই দেখেছিস।( মিহি )
~ আ, হুম হতে পারে। যাক গে চকলেট শেক অর্ডার কর।
~ ওকে। মিহি উঠে অর্ডার দিতে গেলো।
রেহান আর অভ্র এলো কেন্টিনে। আরশি কে একা বসে থাকতে দেখে ওর কাছে গেলো।
~ আরশি! একা কেনো তুমি? ( অভ্র )
আরশি চোখ তুলে তাকালো। ওদেরকে দেখে হাসলো।
~ না ভাইয়া আমি একা নই মিহি ও আছে আমার সাথে। ও অর্ডার দিতে গেছে। আপনারা বসুন না !
রেহান অর্ডার দেওয়ার জায়গায় তাকিয়ে আছে। আরশি সেটা খেয়াল করে বললো,,,
~ রেহান ভাই! কাউকে খুঁজছেন? উম, মিহি কে নয়তো??
~ হ্যাঁ? মানে না। ওকে কেনো খুজবো ? আমি এমনি দেখছিলাম। এক কাজ করি আমি বরং অর্ডার টা দিয়ে আসি। অভ্র কফি খাবি তো?
~ হ্যাঁ।
রেহান অর্ডার দিতে চলে গেলো। অভ্র আরশির দিকে তাকালো। কিছু বলতে চাইছে কিন্তূ সংকোচ এর কারনে বলতে পারছে না। আরশি ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। একবার আড় চোখে সূর্যের দিকে তাকালো। ওর দিকে পিঠ করে বসা। তাই ওকে দেখতে পারছে না। ঐ দুটো মেয়ে কি যেনো বলছে আর বেশ হাসাহাসি করছে। এক প্রকার হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে। যদিও সেটা শব্দহীন কিন্তূ আরশির কাছে মনে হচ্ছে ওর কান ফেটে যাবে। এভাবে হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ার কি আছে, কি এমন কথা বলছে যে এভাবে হাসছে? ছেলে দুটো মুখে হাত দিয়ে হাসছে আর সূর্য!! স্ট্রেট হয়ে বসে আছে,হাতে কফির কাপ। তবে মাঝে মাঝে শরীর হালকা দুলছে হয়তো হাসছে তাই। এমনি তো হাসতে দেখা যায় না আর এখন একদিনের পরিচিত মানুষের কথা শুনে হাসছে, ঢং!!! মুখ ভেংচি দিয়ে আরশি চোখ সরিয়ে নিলো। অভ্রর দিকে তাকিয়ে দেখলো ও নীচের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু ভাবছে।
~ কোনো সমস্যা ভাইয়া?
~ আরশি! তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
~ হ্যাঁ ভাইয়া করুন না !
~ আ,, তুমি কি কাওকে পছন্দ করো?
আরশি একটু চমকালো। হঠাৎ এই প্রশ্ন করছেন কেনো উনি! কিছুটা ইতস্তত করে বললো,,,
~ কেনো ভাইয়া?
~ আম জাস্ট আস্কিং! ইটস ওকে যদি তুমি বলতে না চাও। আমি জোর করবোনা।
~ এমন কিছু না ভাইয়া আসলে ( কথা বলতে গিয়ে আরশি থেমে গেলো কারণ সূর্য এদিকেই আসছে )
আরশি কে থেমে যেতে দেখে অভ্র ওর দিকে তাকালো। ওকে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ওর দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিক তাকিয়ে সূর্য কে দেখতে পেলো।
~ সূর্য ভাইয়া! আরশি তুমি কি ওনাকে ডেকেছো?
~ না উনি আজকে ভার্সিটি জয়েন করেছেন।
~ কিন্তূ আমায় তো বলেছিলেন কালকে করবেন তাহলে?
~ আমি বলছি। আমাকে স্যার কল দিয়ে আজকেই জয়েন করতে বলেছিলেন। কারণ সামনে ফাংশন আছে ভার্সিটি তে। আর এই ফাংশন এর দায়িত্ব মাস্টার্স আর ভার্সিটির ফাইনাল ইয়ার এর স্টুডেন্টদের। ( সূর্য ওদের কাছে এসে বললো )
~ ওহ আচ্ছা। ( অভ্র )
~ হুম। আরশি! তুমি একটু আমার সাথে এসো। কাজ আছে। ( সূর্য )
~ আমি!! ( আরশি নিজের দিকে আঙ্গুল তাক করে বললো )
~ হ্যাঁ জলদি। অভ্র প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড আমার একটু কাজ আছে ওর সাথে।( সূর্য )
~ সিওর। ( অভ্র )
আরশি উঠে সূর্যের পিছু পিছু ঐ টেবিলটার কাছে গেলো যেখানে এতক্ষন সূর্য বাকিদের সাথে বসে ছিলো।
~ গাইস ও আরশি। ( সূর্য )
লাল ড্রেস পরা মেয়েটা নিজের জায়গা থেকে উঠে আরশির কাছে এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো। আরশি পুরো বোকা বনে গেছে। চেনা নেই জানা নেই ওকে এভাবে জড়িয়ে ধরলো কেনো ?
~ ( আরশি কে ছেড়ে দিয়ে ) ও মাই গড! তুমি আরশি। আমার তো বিশ্বাস ই হচ্ছে না। সেই ছোট্ট গোলু মোলু আরশি এতো সুন্দর হয়ে গেছে। মাশাআল্লাহ। আমাকে চিনতে পেরেছো? পারোনি হয়তো। না পারাটাই স্বাভাবিক। আমি ফাবিহা। সূর্যের ছোটো বেলার ফ্রেণ্ড। মনে আছে আগে তোমাদের বাড়ি প্রায় ই আসতাম আমরা সবাই ??
এবার আরশি বুঝলো কেনো ওদের পরিচিত মনে হচ্ছিলো। এরা তাহলে সূর্যের পুরোনো ফ্রেণ্ড।।
~ ( মুচকি হেসে ) হ্যাঁ আপু মনে আছে। কেন্টিনে
ঢুকার সময় তোমাদের দেখে আমার বেশ পরিচিত মনে হচ্ছিলো। কিন্তূ কোথায় দেখেছি মনে করতে পারছিলাম না।
~ আমাকে মনে আছে !! বলোতো আমি কে ?
~ উমম!! টিয়া আপু ?? ( কিছুটা ভেবে )
~ একদম।। ( হেসে জড়িয়ে ধরলো )
~ আমরা কে তাহলে আরশি পরী??
~ নিতুল ভাইয়া আর রাফিদ ভাইয়া ???
~ হ্যাঁ বাহ্ সূর্য ওর মেমোরি তো সেই শার্প। সূর্য কিছু বললো না।
~ বসো আরশি। ( টিয়া )
~ না না আপু তোমরা গল্প করো। আমার ফ্রেণ্ড চকলেট শেক আনতে গেছে,এসে যাবে। ( আরশির ভীষণ খারাপ লাগছে একটু আগে ওদের নিয়ে কি ভেবেছিলো !! )
সূর্য একবার বসে থাকা অভ্রর দিকে তাকিয়ে আবার আরশির দিকে তাকালো। আরশি নিজের টেবিলের দিকে যাচ্ছিলো কিন্তূ মিহি আর রেহানকে দেখে ওখানেই দাড়িয়ে গেলো। একি অবস্থা হলো!! অভ্র ও হা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে।
~ এই একি অবস্থা তোদের ভাইয়া !!! ( নিধি অবাক হয়ে রেহানকে জিজ্ঞেস করলো। ও মাত্রই এসেছিলো কিন্তূ ভাইকে এই অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে গেছে )
~ মিহি !! কি করে হলো এসব? ( আরশি )
মিহি আর রেহান একে অপরের দিকে আঙ্গুল তাক করলো। রেহান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,
~ আমার দিকে ইশারা করছো কেনো দোষটা তো তোমার!!
~ একদম আমাকে দোষ দিবেন না আপনি।। আপনি আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন তাই হয়েছে এসব।
~ আমি তোমাকে কেন ধাক্কা দিতে যাবো ? তুমিই তো উল্টো আমার সামনে চলে এলে । চার চোখ লাগিয়ে ও তো কিছু দেখতে পারোনা।
~ ( আঙ্গুল উঠিয়ে ) একদম আমাকে খোঁচা দেবেন না! আপনি চশমা পড়তে পারেন না যখন চোখে এতোটাই সমস্যা। সামনের মানুষ ও ঠিক মতো দেখতে পারেন না, আবার আমাকে খোঁচা দিচ্ছেন??
~ কারেকশন প্লিজ।। মানুষ দেখতে পারি কিন্তু লিলিপুটদের চোখে পড়ে না।
~ এইইই !! কে লিলিপুট হ্যাঁ? কে লিলিপুট?
~ তুমি!
~ আমি লিলিপুট??? তাহলে আপনি কি গন্ডার, হাতি, মহিষ, জিরাফ!!!!
~ কি বললে তুমি আমি এইগুলো?
~ হ্যাঁ.
~ তাহলে তুমি তো ব্যাঙ, খালি লাফাও। আর সবসময় ব্যাঙের মতো ঘেঙর ঘেঙ্ করো।
~ কি বললেন আপনি!! আপনি তো……
~ চুপ ( অভ্র, নিধি, আরশি একসাথে চেচিয়ে বললো )
~ কি হয়েছে না বলে তখন থেকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে যাচ্ছিস কেন,, বলবি তো যে কি হয়েছে? ( অভ্র )
~ মিহি , তোর কি কোন বুদ্ধি নেই? দেখতো সবাই কেমন করে তোর দিকে তাকিয়ে আছে!! ( আরশি মিহির কাছে গিয়ে বললো )
মিহি চারপাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই ওদের দিকে এমন ভাবে দেখছে যেন চিড়িয়াখানা থেকে কোনো জন্তু পালিয়ে এসেছে।। রেহানের দিকে কটমট করে তাকালো।
~ এই ভাইয়া বল না কি হয়েছিলো? ( নিধি )
ফ্ল্যাশব্যাক,,,,,,,
~ভাইয়া দুটো চকলেট শেক প্লিজ।
মিহি মোবাইল এ চ্যাটিং করতে করতে অর্ডার দিলো। রেহান এসে দেখলো মিহি একমনে ফোন চালাচ্ছে। মিহিকে কিছু না বলে দোকানের ছেলেটা কে ইশারা করে দু কাপ কফি দিতে বললো। মিহি কি যেনো দেখছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। রেহান সেটা খেয়াল করলো।
~ কি দেখে এরোকম করে হাসছে ও? ( মনে মনে )
চকলেট শেক আর কফি একি সাথে ওদের দেওয়া হলো। রেহান কফি নিয়ে আগে গেলো। এরপর মিহি চকলেট শেক এর ট্রে টা নিয়ে পিছনে গেলো। মিহি এখনো খেয়াল করে নি যে ওর সামনে রেহান আছে। ও নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটছে।
রেহানের যেতে যেতে মনে পরলো চকলেট চিপস এর কথা। নিধি আসছে ও তো এটাই খাবে। অর্ডার দিতে হবে। এটা ভেবে পিছনে ঘুরলো ওর ঠিক সামনে মিহি কিন্তূ ও অর্ডার এর কথা ভাবতে গিয়ে ওকে খেয়াল করে নি। যার ফলে দুজনের ধাক্কা লেগে গেলো।
ওদের দুজনের হাতের কফি আর চকলেট শেক ওদের গায়ে পড়লো।।
~ ওহ শিট!!! কি করলে এটা তুমি ??? দেখে চলতে পারোনা।
~ আপনি!!
~ হ্যাঁ আমি।
~ আপনি কখন এলেন! আর আমাকে ধাক্কা কেনো দিলেন??
~ এক্সকিউজ মি আমি না তুমি আমাকে ধাক্কা দিয়েছো। কারণ তুমি আমার সামনে।
~ হোয়াট?? সে তো আপনিও আমার সামনে। কি বলছেন পাগল হয়ে গেছেন নাকি?
~ আমি বলতে চাইছি আমি সামনে থেকে পিছনে ঘুরেছি দ্যাট মিন্স এখন তুমি আমার সামনে । আর ধাক্কাটা তুমিই দিয়েছো।
~ আপনাকে কে বলেছিলো আচমকা পিছনে ঘুরতে?
~ তোমাকে কে বলেছিলো আমার সাথে লেগে লেগে হাঁটতে?
~ দোষ আপনার আপনি হুট করে পিছনে ঘুরেছেন।
~ না দোষ তোমার! তুমি আমার সাথে চিপকে হাঁটছিলে।
~ না আপনার! আমি তো দূরেই ছিলাম আপনি আমাকে দেখেন নি কেনো ?
~ সেটা তো আমিও বলতে পারি। তুমি আমাকে দেখোনি কেনো?
~ আপু, ভাইয়া আপনারা প্লিজ শান্ত হোন। আর জলদি গিয়ে এগুলো ক্লিন করে ফেলুন। দোকানের ছেলেটা দৌঁড়ে এসে বললো।
রেহান মিহি নিজেদের দিকে তাকালো। ওদের গায়ে চকলেট শেক আর কফি পরে কেমন চিপ চিপে হয়ে গেছে। মিহি আর রেহান একে অপরের দিকে চোখ রাঙ্গিয়ে তাকালো। তারপর নিজেদের টেবিলের কাছে গেলো।
ফ্ল্যাশব্যাক শেষ।।।।।।।।।
~ আচ্ছা যা হবার হয়েছে। ভাইয়া তুই চল একেবারে বাসায় চলে যাই। আরশি, মিহি তোমাদের ও তো ক্লাস শেষ আর মিহির জামায় ও দাগ লেগে গেছে। তোমরাও বরং বাড়ি ফিরে যাও। ( নিধি )
~ হ্যাঁ তাই ঠিক হবে। আরশি চল। ওহ সূর্য ভাইয়া কে বলবি না ? ( মিহি )
আরশি পিছনে ঘুরে সূর্যের দিকে তাকালো। সূর্য ও ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। মিহি আরশির পিছনে তাকিয়ে দেখলো সূর্য আর ওই ছেলে মেয়ে গুলো দাড়িয়ে আছে।
~ ঐতো ভাইয়া । এই রে ভাইয়া আর ওনার ফ্রেন্ডরা ও তো আমাকে এই ধলা বাঁদরের সাথে ঝগড়া করতে দেখেছে। কি লজ্জার ব্যাপার!!!
~ সেটা তোর এতক্ষন পরে মনে পড়লো??
~ হেহে। সূর্যের দিকে এগিয়ে গিয়ে,,,, ভাইয়া আপনি কি এখন বাড়ি ফিরবেন মানে আরশি কে নিয়ে যাবেন নাকি আমার সাথে যাবে ও ?
~ তার দরকার নেই। আমি তোমাদের সাথেই যাচ্ছি আমার বাসায় কাজ আছে। ( আরশির দিকে তাকিয়ে ) গাইস ক্যারি অন প্লিজ আমি আজ আসি। বাকি ডিসকাশন কাল করবো।
আরশি ভাবছে,,,,,
~ বাড়িতে এখন কি কাজ আছে ওনার? ( মনে মনে )
টিয়া আর ফাবিহা এগিয়ে এসে আরশি কে জড়িয়ে ধরলো।
~ কালকে দেখা হবে কিউটি। ( টিয়া )
~ হ্যাঁ আপু অবশ্যই।
নিতুল আর রাফিদ আরশির দিকে এগিয়ে এসে বললো,,
~ বাই আরশি পরী।।আমাদের ফ্রেণ্ড টার খেয়াল রেখো, ( সূর্যের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ দিয়ে বললো )
আরশি চমকে গেলো। আর সূর্য কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে।
~ চুপ কর! বাই আপু মনি।।। ( রাফিদ )
~ বা….বাই।।।।
মিহি ওদের সবাইকে হা করে দেখছে। ব্যাপারটা কি হলো !! ওরা আরশি কে এভাবে ডাকছে কেন, আর এমন ভাবে কথা বলছে যেনো ওদের অনেক আগে থেকে পরিচয়???
অভ্র নিধির দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু নিধি একবারের জন্যও অভ্রর দিকে তাকায়নি। অভ্র বেশ বুঝতে পারছে নিধি ভীষণ হার্ট হয়েছে কালকে। ওর সাথে কথা বলতে হবে।
ওরা একে একে যার যার গন্তব্যে বেরিয়ে পড়লো। যাওয়ার আগেও একে অপরকে চোখ দিয়ে শাসাতে ভোলেনি মিহি আর রেহান। আরশি আর নিধি এক প্রকার টেনে ওদেরকে নিয়ে গেছে।
এবারো আরশি আর মিহি পিছনের সিটে বসলো।
মিহি আরশি কে সূর্যর নিউ ফ্রেন্ড এর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আরশি ওকে ওদের পূর্ব পরিচয়ের কথা সব টা বললো।।।
মিহি কে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে ওরা নিজেদের বাসায় গেলো। কিন্তু বাড়ি গিয়ে সূর্যকে কোনো বিশেষ কাজ করতে দেখা গেলো না।
~ কই ওনার না কি কাজ আছে বাসায়? তা কোন রাজকার্য করছেন নিজের ঘরে বসে ?? আচ্ছা উনি তখন আমাদের সাথে করে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য মিথ্যে বলেছিলেন নাকি? কেনো বলেছিলেন আমার জন্য !! না না , তা কেন করতে যাবেন উনি নিশ্চয়ই নিজের ঘরে কোন কাজ করছেন। উফফ আরশি তুই বাজে কথা ভাবা বন্ধ কর। উনি তোকে এতোটা ইম্পরটেন্স নিজের লাইফে কোনদিন দেন নি। আর কখনো দিবেন ও না। ইউ আর নাথিং টু হিম।। ( দীর্ঘশ্বাস ফেলে )
#চলবে
আমার পুতুল বর
লেখিকা : আরশি জান্নাত (ছদ্মনাম)
পর্ব : ২৮
~ মা, শুনো আমি একটু বাইরে যেতে যাচ্ছি আমার এক পুরোনো ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে। ( সুজানা )
~ কে রে ! তোর ঐ বেস্ট ফ্রেণ্ডটা নাকি ? কারণ তোর তো তেমন মনে রাখার মতো ফ্রেণ্ড নেই আর।
~ ( মুচকি হেসে ) হ্যাঁ মা ওর সাথেই দেখা করতে যাবো।
~ আচ্ছা যা কিন্তূ একা যাবি? একা যাওয়ার দরকার নেই এক কাজ কর আরশি কে নিয়ে যা। ( অহনা )
~আচ্ছা ঠিক আছে। আমি ওকে বলছি। ( সুজানা )
~ আরশি রানি!! আরশি, কিরে কোথায় গেলি ?
~ এইতো আপ্পি। বারান্দায় ছিলাম।
~ আচ্ছা শোন, তুই কি এখন ফ্রী আছিস ?
~ হ্যাঁ কেনো বলোতো ?
~ আসলে এখানে এসছি বেশ কিছুদিন হলো। কিন্তূ আমার বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথেই দেখা করা হলোনা। আজ ভেবেছি দেখা করবো। মা বলেছে তোকে নিয়ে যেতে। তুই চল না আমার সাথে।
~ ( মিষ্টি হেসে ) আচ্ছা তুমি রেডি হতে যাও আমিও রেডি হচ্ছি।
~ ঠিক আছে।
~ আরে ইয়ার কি করলি তুই আমার পাকা গুটি খেয়ে দিলি ? ( রোজ )
~ তুই যে আমার টা খেয়েছিলি মনে নেই ? ( ন্যান্সি )
~ সব থেকে সেফ তো আমি খেলছি। না নিজে কাউকে খাচ্ছি আর না কেউ আমাকে খাচ্ছে। কিন্তূ তোরা এমন ভাবে গুটি খাচ্ছিস যেনো কতবছর কিছু খাস নি এখন একে অপরের গুটি খেয়ে পেট ভরছিস ।। ( দাত কেলিয়ে বললো রিক )
রোজ আর ন্যান্সি কুশন দিয়ে রিক কে মারতে লাগলো।
~ তুই তো গুটিবাজ একটা। সুবিধাবাদী।। ( রোজ )
~ এই কি করছিস! মারছিস কেনো ইউ টু চুরেলস !!! আহহহ ( রিক নিজেকে ওদের হাত থেকে বাঁচাতে বাঁচাতে বললো )
~ বাহ! কি সুন্দর লাইভে মারামারি দেখছি। আমার তো এমন মারামারি দেখতে বেশ ভালো লাগে। ( আরশ সোফায় বসে গালে হাত দিয়ে বললো )
রোজ আর ন্যান্সি রিককে মারা থামিয়ে আরশের দিকে তাকালো।
~ কেমন মারামারি আরশ ? ( ন্যান্সি )
~ আরে আপু জানো আমাদের স্কুলে ক্লাস টেনের ৪ টা আপু মিলে ২ টা ভাইয়াকে সেই কেলিয়েছিলো। ( এক্সাইটেড হয়ে )
~ আরশের পাশে বসে,,,, হোয়াট ইজ কেলানি আরশ ? ( রোজ )
~ আরে আপু বুঝলে না? কেলানি মানে হচ্ছে মারা।
~ ওহ ( রিক, রোজ আর ন্যান্সি একত্রে মুখ গোল করে বললো )
~ আচ্ছা তারপর ! কেনো কেলিয়েছিলো মানে মেরেছিলো ? ( রোজ )
~ ঐ ছেলে দুইটা পাশের স্কুলের।আমাদের স্কুলের ক্লাস টেনের অবনি আপুকে টিজ করেছিলো, অবনি আপু তার গ্রুপের বাকি ফ্রেন্ডদের ব্যাপারটা জানালে পরে ওরা চারজন মিলে ছেলে দুইটাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আমাদের স্কুলের মাঠের পিছনে ডেকে এনে জুতো দিয়ে মেরেছিলো।। আমি আর আমার ফ্রেণ্ড লুকোচুরি খেলার সময় ওখানেই লুকিয়েছিলাম তখন ওদের মারতে দেখেছিলাম।
~ ওয়াও সেভেজ গার্লস।। ( ন্যান্সি )
~ ওহ আচ্ছা এখন ওয়াও, সেভেজ গার্লস? তোরা তো টিজ করলে আরো খুশি হয়ে আমাদেরকে এসে বলতি দোস্ত ঐ ছেলেটা আমাকে এটা বলেছে, ওটা বলেছে আর কি ভাব টাই না নিতি তোদের নিয়ে কমেন্ট করেছে বলে !! এতো জলদি ভূলে গেলি ? ( রিক )
~ তুই তোর মুখটা বন্ধ রাখ। ( রোজ কপাল কুঁচকে বললো )
~ সত্যি বললেই দোষ হয়। এমন করেই সত্যকে আটকে রাখা হয়। ( রিক )
সূর্য এসে সোফায় বসে টিভি অন করলো। টিভি দেখতে দেখতে বাকিদের উদ্দেশ্য জিজ্ঞেস করলো,
~ এমন গোল মিটিং বসিয়েছিস কেনো ? কি নিয়ে কথা হচ্ছে?
রিক ওর জায়গা থেকে উঠে এসে সূর্যের পাশে বসলো।
~ ভাই তুই বল এদের যখন রাস্তায় ছেলেগুলো টিজ করতো তখন এরা আমাদের কাছে এসে সেটা ভাব নিয়ে বলতো কি না ? দেখ একদম সত্যি বলবি ।
~ হ্যাঁ ভাব তো নিতো , কেনো ?
~ নিতো রাইট!!! হেহেহে জানতাম । শুনে নে ইউ টু চুরেলস।।
রোজ আর ন্যান্সি কটমট করে রিকের দিকে তাকিয়ে আছে। নেহাত সূর্য কথাটা বলেছে তাই ওরা কিছু বলতে পারছে না। কিন্তূ যদি সূর্যের জায়গায় অন্য কেউ থাকতো তাহলে নির্ঘাত এখানে থার্ড ওয়ার্ল্ড ওয়ার হতো।
সূর্য আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না। বেশি ঘাটতে গেলে এখন এখানে বসে ওর আর খেলা দেখা হবে না এদের জন্যে। তাই চুপ করে খেলা দেখায় মন দিলো।
~ আরশি হয়েছে তোর?
~ এইতো আপু শেষ । চলো। এই এক মিনিট ! আরে বাহ! আপ্পি আজ তো তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। ফেইসটা ও অনেক গ্লো করছে দেখছি। হুম,, ,,হুম এর পিছনে রহস্য কি? বেস্ট ফ্রেন্ড এর সাথেই দেখা করতে যাচ্ছোতো নাকি আবার আমার হোনে ওয়ালে জিজুর সাথে দেখা করতে যাচ্ছো,, বলো বলো ? ( দুষ্টু হাসি দিয়ে টেনে টেনে শেষের কথা টা বললো )
আরশির মাথায় মেরে ,,,
~ বড্ডো বেশি কথা বলিস তুই । বড়ো আপুকে নিয়ে মজা করছিস ??
~ আহ!! আপ্পি তোমার সাথে মজা করবো না তো কি অন্য কারো সাথে করবো ? তুমিই তো আমার একমাত্র ভালোবাসার জাদু আপ্পি। ( সুজানাকে জড়িয়ে ধরে )
~ হ্যাঁ তাই তো। আচ্ছা হয়েছে এখন চল দেরি হচ্ছে।
~ হুম চলো।
ওরা নিচে নেমে এলো।
~ আরশি একটু দাড়া আমি মাকে বলে আসি যে আমরা বেরোচ্ছি।
~ আচ্ছা যাও।
সুজানা ওর মার ঘরে গেলো।আরশি সোফার কাছে এসে দাড়ালো।
~ আরশি কোথাও যাচ্ছো নাকি? রেডি হয়েছো যে ? ( রোজ )
~ হ্যাঁ আপু একটু বাইরে যাবো সুজানা আপুর সাথে। আপুর বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে।
~ওহ আচ্ছা।
আরশি আড় চোখে সূর্যের দিকে তাকালো। সূর্য টিভি দেখতে ব্যস্ত। সুজানা কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে এলো।
~ চল।
~ আপু!
ওরা যেতে গিয়েও সূর্যের ডাকে থেমে গেলো।
~ হ্যাঁ ?
~ কোথায় দেখা করতে যাচ্ছিস। মানে জায়গা টা কোথায় ?
~ এইতো সামনেই ” ইউ এন্ড মি ” রেস্টুরেন্ট এ।
~আচ্ছা তাহলে দু মিনিট ওয়েট কর আমি আসছি।
আরশি আর সুজানা একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে। সূর্য ওয়েট করতে বললো কেনো? রোজ, রিক আর ন্যান্সি ও উৎসুক জনতার মতো তাকিয়ে আছে সামনে কী হয় দেখার জন্য।। আরশ সুযোগ বুঝে কার্টুন দেখতে বসে গেছে।
২ মিনিট পরে সূর্য টি শার্টের ওপর জ্যাকেট পরে হাতে গাড়ির চাবি নিয়ে ওদের কাছে এলো।সবাই ওর দিকে কনফিউজড হয়ে তাকিয়ে আছে।
~চল।
~ ভাই তুই কি কোথাও যাচ্ছিস ?
~ হ্যাঁ তোদের ছেড়ে দিয়ে আসি চল।
~তুই আমাদের ছেড়ে দিয়ে আসতে যাবি!! কেনো ? আমরা তো যেতে পারবো।
~ শোন ড্রাইভার আঙ্কেল সকালে বাবা আর বাবাইকে নিয়ে গেছে। আর আরেকজন এখন নেই দুইদিন আসবে না ব্যাক্তিগত কারনে। তোদের তো আর ড্রাইভ করতে দিতে পারি না। তাই আমিই তোদের ছেড়ে দিয়ে আসছি। আবার নিয়ে আসবো জাস্ট বের হওয়ার আগে কল করিস।
~ আ…. সূর্য ইন দ্যাট কেস আমিতো ফ্রি আছি আমিই নাহয় ছেড়ে দিয়ে আসবো আবার নিয়ে ও আসবো। তুই খেলা দেখ না ! ( রিক )
সুজানা কিছু একটা চিন্তা করছে। তারপর হঠাৎ মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো।
~ হ্যাঁ ভাই রিক কে আমাদের নিয়ে যেতে দে। তোর এতো হয়রান হতে হবে না ।
~ আপু! আমি বলেছি তো আমি দিয়ে আসবো। তাহলে এতো কথা উঠছে কেনো ? কোনো কথা না বলে চল।
~ উম ওকে। চল আরশি রানি আমরা বরং ভাইয়ের সাথেই যাই।
সুজানা বাকিদের দিকে তাকিয়ে হেসে বেরিয়ে গেলো ।
গাড়িতে আরশি কে জোর করে সূর্যের পাশে বসিয়ে দিলো। আরশি মানা করেছিলো কিন্তূ সুজানা শোনে নি। সূর্যের তাড়া দেওয়ায় অগত্যা ওকে সূর্যের পাশেই বসতে হলো। গাড়ি চলছে। কেউ কোনো কথা বলছে না। আরশি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে । হঠাৎ সুজানা বললো,,,
~ আরশি জানিস আজ পর্যন্ত ভাই কিন্তূ কখনো এতো দায়িত্ব নিয়ে আমাদের কাউকে কোথাও নিয়েও যায়নি আবার নিয়েও আসেনি। কিন্তূ আজ তোকে প্রথমে কলেজে নিয়ে গেলো আবার নিয়ে এলো। এখন আবার আমাদের পৌঁছে দিচ্ছে , আবার বলেছে ফোন করলেই নাকি নিতে চলে আসবে। আমিতো মনে হচ্ছে অনেক কিছু বুঝে ফেলেছি। আচ্ছা তুই এতে কি বুঝলি? ( ভ্রু নাচিয়ে মুখে হাসি নিয়ে প্রশ্ন করলো )
সূর্য মিরর দিয়ে কপাল কুচকে সুজানার দিকে তাকালো,
~ এতো আজাইরা কথা কেমনে ভাবিস তুই আপু ??
~ আচ্ছা এইগুলা আজাইরা কথা তাই না? তো তুই বল তুই আগে কখনো এমন কিছু করেছিস ??
~ সো হোয়াটস দা বিগ ডিল ?
~ এই তুই চুপ কর তো! আরশি তুই বল তুই কি বুঝেছিস?
আরশি সূর্যের দিকে একবার তাকিয়ে সুজানার দিকে তাকালো। একটু হেসে বললো,,
~ হ্যাঁ বুঝতে পারছি। তোমার ভাই এখন তোমাদের কথা ভেবে দায়িত্ববান হয়ে উঠছে। সকালে মামনির কথা শুনে আমাদের সাথে করে নিয়ে গেলো যদিও ফেরার সময় ওনার কাজ ছিলো তাই আমাদের নিয়েই ফিরেছিলেন। আবার এখন তোমার কথা ভেবে আমাদের পৌঁছে দিচ্ছেন আবার নিয়ে ও আসবেন। এতে বুঝতে পারলাম উনি ধীরে ধীরে ওনার ফ্যামিলির প্রতি নিজের দায়িত্ব বোধের প্রকাশ করছেন।
সূর্য আরশির দিকে তাকালো। আরশি ও সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। সূর্য চোখ সরিয়ে আবার ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো। সুজানা হতাশ হয়ে বললো,,,,,
~ তোর সত্যি তাই মনে হয়? আমার তো তা মনে হচ্ছে না। আমি জানি ভাই সব তো…..
হঠাৎ সূর্য গাড়িতে ব্রেক কষলো।
~ আপু নাম! রেস্টুরেন্টে এসে গেছি।
~ ওহ আচ্ছা।
আরশি আর সুজানা নেমে দাড়ালো।
~ ভাই বলছি এই পর্যন্ত যখন এসেছিস তখন ভিতরেও চলে আয়।
~ না। তুই তোর কাজ শেষ হলে ফোন করিস। আমি এসে যাবো।
~ হ্যাঁ তা করবো। দেখ আমি জানি তুই আসবি না। তাও বলছিলাম। আমি আসলে আরশির কথা ভেবে তোকে থাকতে বলছিলাম।( সূর্য আর আরশি একে অপরের দিকে তাকিয়ে আবার সুজানার দিকে তাকালো) দেখ আমি আর আমার ফ্রেণ্ড মানে ছেলে ফ্রেণ্ড গল্প করবো আর বেচারি আরশি একা একা বোর ফিল করবে, ছেলে হওয়ার কারণে আমি আরশি কে যতটুকু চিনি ও কম্ফর্টেবল হতে পারবে না। তাই তুই থাকলে হয়তো একটু কমফোর্ট ফিল করতো । কেউ তো এটলিস্ট ওর সাথে থাকতো, যদিও আমি থাকবো কিন্তূ বুঝতেই তো পারছিস অনেক দিন পর ফ্রেণ্ড এর সাথে দেখা করবো, একটা আলাদা এক্সাইটমেন্ট কাজ করবে ।কি আর করার তুই তো এইসব পছন্দ করিস না তাই থাকবি ও না। ( আরশির দিকে ফিরে ওর হাত ধরে ) চল আরশি আমরা ভেতরে যাই আজকে এক দিনের জন্য একটু নিজেকে মানিয়ে নিস। ভাই তুই ও যা।
আরশি নির্বাক শ্রোতা হয়ে এতক্ষন সুজানার বক্তব্য শুনছিলো। ওর এখন ঠিক কি বলা উচিত ও বুঝতে পারছে না। ভাবছে কি বলা যায়। কিন্তূ কি বলবে ভেবে না পেয়ে অগত্যা সুজানার সাথেই চলতে লাগলো।
কিছুদূর যেতেই,,,,,
~ তোরা ভিতরে যা আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।
সুজানা হাটা থামিয়ে সূর্যের দিকে তাকালো। সূর্য গাড়ি পার্ক করতে চলে গেছে। আরশি অবাক হয়ে সূর্যের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করে কি হলো ? উনি রাজি হলেন কেনো?
সুজানা সূর্যের যাবার পানে তাকিয়ে হালকা হাসলো। তারপর আরশির দিকে ফিরে ওর হাত ধরে বললো,,
~ আরশি একটা কথা সত্যি করে বলতো ,,, তোর কি এখনো মনে হয় ভাই যা করছে তা শুধু মাত্র আমাদের কথা ভেবে, আমাদের প্রতি ওর দায়িত্ব বোধ থেকে ? কারণ দেখ এখন কিন্তূ ওর রেস্টুরেন্টের ভিতরে যাওয়ার কারণটা আমরা নই কিংবা আমাদের প্রতি ওর দায়িত্ব নয় ,, কারণটা হচ্ছিস তুই ! ও এসব তোর প্রতি থাকা ওর কেয়ারনেস থেকে করছে । যেটা ও তোকে বুঝতে দেয় না। কিন্তূ ও সেটা লুকাতে ও পারছে না। আমরা তা ঠিক বুঝতে পারছি। তুই একটু নিজের মধ্যে সবটা আওড়ে নে, দেখবি তুই ও বুঝতে পারছিস। ভাই এর করা কাজ গুলো যদিও সামান্য কিন্তূ এর পিছনে যে কারণটা রয়েছে না সেটা কিন্তূ অনেক বিশাল। তোকে ও এসব বুঝতে হবে। তোরা কি করিস জানিস তো!! নিজেদের মনের কথা নিজেদের থেকেই আড়াল করে রাখিস। আই জাস্ট হোপ তোরা নিজেদের মনের ভিতর যা যা আছে তা একে অপরেকে খুলে বলতে পারিস। তাহলে সবটা ঠিক হয়ে যাবে! ( আরশির গালে আলতো করে হাত বুলিয়ে ) চল ভিতরে চল। ভাই আসছে।
সুজানা ভিতরে চলে গেলো। আরশি ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। ও সুজানার বলা কথাগুলো ভাবছে।
~ আপু ঠিক যা বোঝাতে চাইছে আমাকে সেটা কি সত্যিই ঘটছে ?? একবার মনে হচ্ছে আপুর কথা মতোই সব হচ্ছে কিন্তূ আবার মনে হচ্ছে এসব শুধুই আপুর ভ্রান্ত ধারণা।। ( মনে মনে )
~এখানে দাড়িয়ে আছো কেনো?
~ হুঁ? ওহ হ্যাঁ ভিতরে যাচ্ছি। আপ.. আপনি ও চলুন। ( মাথা নামিয়ে ভিতরে চলে গেলো আরশি )
সূর্য ওর পিছন পিছন ঢুকলো।
#চলবে