#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-১৩
২৫.
কথায় আছে বিপদ যখন আসে চার দিক থেকে আসে।
তাহুর মা-বাবার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
তাহুর বাবা খুব ভোরে চলে গেছেন ঢাকা জরুরী কাজে।
তাহু মাকে বলেছেন মেয়েকে যেনো তিনি নিজে গিয়ে স্কুলে দিয়ে এবং নিয়ে আসেন কারণ মেয়ের নবম শ্রেনীর ফাইনাল পরীক্ষা চলছে যদিও আজ লাষ্ট পরিক্ষা। তাহুর মা মেয়েকে তো দিয়ে আসছে ঠিকই কিন্তু আনতে যেতে পারেনি কারণ তার দাদি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে যাওয়াতে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় ।
অবশ্য শিলা আছে বলে অতটা চিন্তা করেননি। মেয়েকে বলেও দিয়েছে আমার আসতে দেরি হলে শিলার সাথেই যেন থাকে আর একা যেনো কোথাও না যায়।
তাহু ,শিলা আর মেহু অনেকক্ষন অপেক্ষা করে যখন দেখলো তাহুর মা আসছে না তখন মেহু বললো ‘তাহু আন্টি মনে হয় আসবে না কোনো কাজে আটকে গেছে তুই চল দিয়ে আসি তকে ।
শিলা বললো মেহু তুই আবার উল্টা দিকে যাবি কেনো আমি আছি তো তুই যা আমি পারবো।
বুঝিস শিলা পারবি তো না হলে আমি চলি তদের সাথে।
হুম পারবো তুই যাস। বলে তিন বান্ধবী কথা বলতে বলতে রওনা দিলো।
যথাসময়ে এসে মেহু চলে গেলো তার রাস্তায়। আর তাহু -শিলা চললো তাদের রাস্তায়।
হাঁটতে হাঁটতে যখন তারা একটু নির্জন রাস্তায় আসে তখন খুব কৌশলে পিছন থেকে কে যেনো শিলাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয় । আর সাথে সাথে পিছন থেকে একটা অটো এসে শিলার উপর দিয়ে চলে গেলো। সব কিছু মূহূর্তের মধ্যেই ঘটে গেলো কেউ কিছু বুঝতেও পারলো না। ফাঁকা রাস্তা কেউ নাই মনে হলো সব কিছু আগে থেকেই কেউ পরিকল্পনা করে রেখেছিলো।
তাহু শিলার অবস্থা দেখে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে কিছু বলতে পারছে না। শিলার শরীর থেকে স্রোতের মতো রক্ত বের হতে লাগলো।
কিছু বলবে তখনি পিছন থেকে নাকে রুমাল চেপে ধরল তাহুর। আর শিলা পরে রইলো রাস্তায় ।
শিলাকে রাস্তার মানুষ যখন হসপিটালে নিয়ে যায় তখন ওর আশেপাশে তাহুর কোনো চিহ্নও খুঁজে পাওয়া গেলো না । শিলার অবস্থা খুবই খারাপ অনেক রক্ত দিতে হচ্ছে ওকে।
কিন্তু এখনো শিলা আর তাহুর পরিবার কিছুই জানে না।
২৬.
তাহুর বাবা ড্রইং রুমে মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে আছে । মেয়েকে সব জায়গায় খোঁজা শেষ কোথাও খোজে পাননি।
তাহুর মা যখন তার শাশুড়িকে নিয়ে বাসায় আসেন তখন প্রায় তিনটা বাজে। ভাবেছেন এসে দেখবেন মেয়ে তার বাসায় ।
মেয়ে পরিক্ষা শুরু হয় দশটায় আর শেষ হয় একটায় এবং দুইটার মধ্যে বাসায় থাকার কথা কিন্তু এখন বাজে তিনটা । এতো দেরি তো হবার কথা না ।
মেয়ে বাসায় নেই বলে ভয় পেয়ে যান শাশুড়িকে নিজ রুমে রেখে দৌড়ে যান শিলাদের বাসায় গিয়ে দেখে বাসায় কেউ নেই পাশের বাসার মহিলাকে জিগ্গেস করলে বলে তারা সকলেই হসপিটালে আছে শিলা নাকি এক্সিডেন্ট করেছে ।
কথাটা শুনে তিনি আঁতকে উঠে কারণ তার মেয়েরও তো শিলার সাথে থাকার কথা।
তাই তিনি আবার ছোট লাগান হসপিটালের উদ্দেশ্যে। গিয়ে দেখেন শিলার মা কান্না করছে মেয়ের অবস্থা ভালো না শিলাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
কথাটা শুনে তাহুর মাও কন্না করে দেয় । কারণ শিলাও তো তার মেয়ের মতোই।কতো গিয়েছে বাসায় মেয়ের সাথে। নিজ মার মতো কতো আবদার করতো তার কাছে ।কি থেকে কি হয়ে গেলো ।কিন্তু এখানেও জানতে পারলেন তাহু নাকি ওর সাথে ছিলোই না ।এবার তো চিন্তায় তার অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো । মেয়েকে খোজার কথা বলে হসপিটাল থেকে বের হয়ে গেলেন । বাসায় আসতে আসতে অনেক যায়গায়ই খোঁজ করলেন তিনি কিন্তু কোথাও মেয়ের খবর নেই ।
তাই বাসায় এসে তাড়াতাড়ি তাহুর বাবাকে ফোন দিয়ে সব খুলে বলেন।
তাহু কথা শুনে সাথে সাথে নাসিম উদ্দিন বাসার পথে রওনা দেন।এবং ফোনেও মোটামুটি সব জায়গায় খোঁজখবর নেন । গ্ৰামে এসেও দিশেহারা হয়ে সব জায়গায় খোঁজ নেন কিন্তু পান না । পুলিশ স্টেশনে যায় ওখানে বলে চব্বিশ ঘণ্টা না গেলে নাকি তারা কিছু করতে পারবে না। শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে সোফায় বসে পরেন মাথায় হাত দিয়ে।
তাহুর মা কন্না করতে করতে চোখ – মুখ ফুলিয়ে ফেলেন।তাদের একটা মাত্র আদরের মেয়ের কি হলো,কোথায় আছে কোনো খারাপ কিছু যদি হয় ,কি ভাবে বাঁচবে মেয়েকে ছাড়া।এসব বলছে আর কান্না করছে।
তখনই এক প্রতিবেশী এসে বলে তোমার মেয়ে নাকি ভাইগা গেছে চেয়ারম্যানের পোলার সাথে।
চেয়ারম্যান বইলা বেরাইতাছে। দুইজন দুজনকে বলে পছন্দ করত বিয়ার প্রস্তাবও নাকি দিছিলো চেয়ারম্যান। তাইলে রাজি হইলা না কেন এখন দেখ দিলো তো নাক কান কাইটা।
চলবে……..
আসসালামুয়ালাইকুম সবাইকে
নতুন লেখিকা হিসেবে জানি না কেমন লাগছে সাবার কাছে । যদি লেখা ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন । আর যদি কোনো ভুল করে থাকি কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন।আপনাদের একেকটা মন্তব্য আমাকে উৎসাহিত করবে এবং ভুল শুধরানোর সুযোগ করে দিবে।♥️