আমার বনু সিজন ২ পর্ব-১২

0
1324

#বোনু
#সিজন_০২
#Part_12
#Writer_NOVA

সবার নজর এখন ওদের দিকে।মিহু ওর ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে, মুচকি হেসে বললো।

মিহুঃ বড় ভাইয়ু,তুমি এখনো বদলাওনি।

ঐশিকঃ কেন?

মিহুঃ আমি কিন্তু অনেক বড় হয়ে গেছি।এটা আমাদের বাড়ি নয় কলেজ।আমাকে ছাড়ো।

ঐশিক ঠোঁটে হালকা হাসির রেখা ফুটিয়ে মিহুকে ছেড়ে দিলো।

ঐশিকঃ হির বোনু,তুই এখন এখান থেকে যা।

মিহুঃ কিন্তু —-

ঐশিকঃ কোন কিন্তু নয়।যেতে বলছি যাবি।
(চোখ, মুখ শক্ত করে)

আবিরঃ ও যাবে মানে??ও গেলে বিচার কি করে হবে?

ঐশিকঃ থামুন,সেটা আমি দেখবো।(রেগে)

মিহু চলে গেল। মিহু কখনো ঐশিকের কথার অবাধ্য হয় না।পৃথিবীতে ওর বাপির পর এই ছেলেটার কথা শুনে মিহু।শুনবেই না কেন?ঐশিক ওকে অনেক আদর করে।ছোটবেলা থেকে ওকে আগলে রেখেছে। ঐশিক ওর মামাতো ভাই। লুবনা মির্জার একমাত্র বড় ভাই লাবিব মির্জার দুই ছেলে।বড় ছেলে ঐশিক মির্জা ও ছোট ছেলে রিশিক মির্জা। লাবিব মির্জা দেশের নামকরা বিজনেস ম্যান।বিখ্যাত মির্জা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির মালিক তিনি।কিন্তু ঐশিক তার ব্যবসা পছন্দ করে না।তাই সে আইন নিয়ে পড়ালেখা করেছে।বিদেশে ছিলো কয়েক বছর।বিদেশ থেকে ফিরে পুলিশের চাকরিতে জয়েন করেছে। খুব বড় পদে নিয়োগ পেয়েছে। কয়েক মাস বান্দরবান ছিলো।গত পরশু পোস্টিং হয়ে এখানে এসেছে। ঐশিক মিহুকে খুব ভালোবাসে।তবে সেটা নিজের ছোট বোনের মতো।

ঐশিক কখনো মিহুকে নিজের বোনের থেকে কম মনে করে না।এক কথায় বলতে গেলে মেহরাবের থেকে বেশি কেয়ার করে ঐশিক, মিহুকে।নিজের ছোট বোন না থাকায় ঐশিক ও রিশিক দুজনই মিহুকে খুব ভালোবাসে।মিহুও তেমন ওদের দুজনকে বড় ভাইয়ু ও ছোট ভাইয়ু বলে ডাকে।মেহরাবকে শুধু ভাইয়ু বলে। মিহুর দিকে কেউ বাজে ইঙ্গিত করে আর তার খবর যদি এই দুজনের একজন পায় তাহলে তার তেরটা বেজে যাবে।মেলার মধ্যে যে ছেলেটা অসভ্যতামী করেছিলো মিহুর সাথে সে ছেলেটাকে গোডাউনে নিয়ে দুই হাত কেটে দিয়েছিলো ঐশীক।আর তার সাথে ছিলো মেহরাব ও রিশীক।

ভেতরে কি হলো তা আর মিহু জানে না। বাইরে দাঁড়িয়ে মিহু ঐশীকের জন্য অপেক্ষা করছে। প্রায় এক ঘন্টা পর মিহু দেখলো আবির চৌধুরী রাগে চোখ মুখ লাল করে বের হয়ে গেলো। পেছন পেছন রিকি।রিকি মিহুর সামনে এসে দাঁড়ালো।

রিকিঃ আমি তোমাকে দেখে নিবো।তোমার সর্বনাশতো আমি করবোই করবো।

মিহুঃ আরে যা রাস্তা মাপ।তোর যা করার করিস।আমি তোকে ভয় পাই নাকি? এতদিন আমার এক ভাই ছিলো।এখন তিন ভাই চলে এসেছে। আমিও দেখবো আমার তিন ভাইকে ঘোল খাইয়ে, তুই আমার কি ক্ষতি করতে পারিস?বাড়ি গিয়ে বাপের কোলে বসে ফিডার খাইস।তাও যদি একটু বুদ্ধি খুলে।আমার সাথে লাগতে আসিস না।এর ফল ভালো হবে না।

রিকি রাগে বিরবির করতে করতে চলে গেল। ঐশিক সামনে এসে দাঁড়ালো।

ঐশিকঃ কি হয়েছে?

মিহুঃ কিছু না।আমাকে হুমকি দিয়ে গেল।আমি কি ওকে ভয় পাই নাকি?যত্তসব ফালতু ছেলে।

ঐশিকঃ হয়েছে, আর বকবক করতে হবে না।

মিহুঃ ঐখানে কি হলো বড় ভাইয়ু?

ঐশিকঃ তা তোর না জানলেও চলবে। মন দিয়ে শোন,ফাজিল ছেলে-মেয়েদের সাথে একদম মিশবি না।

মিহুঃ আচ্ছা বড় ভাইয়ু।

ঐশিকঃ কি বললাম মনে থাকবে তো?

মিহুঃ হি হি হি বড় ভাইয়ু তো জানে না আমি ঐ দলের লিডার।(মনে মনে)

ঐশিকঃ কি হলো হাসছিস কেন?

মিহুঃ কোথায় না তো?বাড়ি যাবে না?

ঐশিকঃ হ্যাঁ,চল।অনেকদিন ধরে ফুপুমনিকে দেখি না।

মিহুঃ চলো।কিসে যাবা?

ঐশিকঃ আমার গাড়িতে যাবি।

মিহুঃ আমার বাইকের কি হবে?

ঐশিকঃ চিন্তা করিস না।আমার লোক পৌঁছে দিবে।

মিহুঃ ঠিক আছে চল।

ঐশিক আর মিহু গাড়িতে করে মির্জা কুঠিরের দিকে রওনা দিলো।

☘️☘️☘️

খান ভীলা………

সারা রুমের একটা জিনিসও আস্ত নেই। ডেসিং টেবিল থেকে শুরু করে কাবার্ড,সোফা,খাট সবকিছু তছনছ। মনে হচ্ছে একটু আগে এই রুমে টর্নেডো হয়েছে। ঠিক তাই। রাজ রুমের একটা জিনিসও ভালো রাখেনি।ছোট ফুলদানি,মগ এমনকি টি-টেবিল সবকিছু ভেঙে ফ্লোরে পরে রয়েছে। এখানে শেষ নয়।ড্রয়িংরুমের ওপর দিয়েও টর্নেডো গিয়েছে। গ্যারেজে ৪ টা গাড়ি ছিলো। দুটো প্রাইভেট কার,একটা মাইক্রো,একটা হাইস্।ঐ চারটার সামনের পেছনের এমনকি জানালার কাচগুলোও ভাঙা। এই চারটার তেরটাও রাজ বাজিয়েছে।ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে সবগুলো গাড়ির কাচে এলোপাতাড়ি বারি মেরেছে। ওর শরীরের অনেক জায়গায় কাচ ঢুকে রয়েছে।

বাড়ির সবাই ভয়ে কাঁপছে। আইজান পর্যন্ত সামনে যেতে ভয় পাচ্ছে। রোজনী বেগম তার ছেলেকে গত ২৬ বছরে এরকম রাগতে কখনো দেখেনি।নিবরাজ সবকিছু ভেঙে নিজের রুমের ফ্লোরে বসে রয়েছে। এক দৃষ্টিতে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। বাড়িতে আইরিন, রোজনি ও আইজান।নিবিড় ও জীবন খান অফিসে।রাজের বাবা ও চাচাকে কল করা হয়েছে। তারা দুজনেই বাসায় আসছে।

রোজনিঃ আইজান কি হয়েছে আজ কলেজে?
আইজানঃ না মানে বড়মা হয়েছে কি?
(আমতা আমতা করে)

আইরিনঃ জান, ভনিতা করিস না।কি হয়েছে বল?(রেগে)

আইজানঃ পাপা ও বড় বাবা আসুক তারপর একসাথে বলবো।

রোজনিঃ আমার ছেলেটাকে কখনো এত রাগতে দেখিনি।

আইরিনঃ রাজের কি হলো?আমি নিজেও বুঝতে পারছি না।

রোজনিঃ দেখে আয় তো বাবা,নিজের কোন ক্ষতি করে কি না।সারা বাড়ি তছনছ করুক তাতে আমার কিছু আসে যায় না। কিন্তু ছেলেটা যেনো নিজের কোন ক্ষতি করে না।

আইজানঃ আমি দেখে এসেছি বড় মা।ভাই, চুপ করে ফ্লোরে বসে রয়েছে।

কিছুখন পর কোলিং বেল বেজে উঠলো। নিবীড় ও জীবন খান হন্তদন্ত হয়ে বাড়িতে ঢুকলো।ঢোকার পর কোন কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।

রোজনিঃ তুমি এসেছো রাজের বাবা?দেখ ছেলেটা বাড়ির কি অবস্থা করেছে। ও তো কখনো এমন
করে না।

রোজনি বেগম স্বামীকে ধরে কেঁদে উঠলেন। নিবীড় খান সারা বাড়িতে চোখ বুলালেন।কোন কিছু আর আস্ত নেই।

নিবীড়ঃ জান,কলেজে আজ কি হয়েছে?

আইজান সবাইকে পুরো ঘটনা খুলে বললো।নিবীড় খানের বুঝতে বাকি রইলো না তার ছেলে কেন এসব করেছে।

রোজনিঃ আমিতো কিছুই বুঝাতে পারছি না।

নিবীড়ঃ না বোঝার কিছু নেই রাজের মা।তোমার ছেলে পাগলের মতো মিহুকে ভালোবাসে। ওকে ছাড়া তোমার ছেলে বাঁচবে না। সবে তো মাত্র শুরু আরো কত কিছু দেখবে।

রোজনিঃ কি বলছো তুমি?

আইজানঃ বড় মা,বড় বাবা ঠিক বলছে।

রোজনিঃ আমার ছেলে তো কখনও আমাকে কিছু বলেনি।

জীবনঃ ভাবী,রাজ কি কখনো কাউকে কিছু বলে?

আইরিনঃ সেটা তুমি ঠিক বলেছো।রাজ কখনো কাউকে কিছু বলে না।

রোজনিঃ রাজের বাবা তুমি একটু ওর কাছে যাও।ওকে বুঝিয়ে বলো।ও যখন মিহুকে এতো ভালোবাসে তাহলে আমরা মিহুকেই এ বাড়ির বউ করবো।আমার কোন আপত্তি নেই।

নিবীড়ঃ তুমি কি পাগল হলে যে আমাকে ওর সামনে যেতে বলেছো।তুমি জানো না রাজ যার সাথে রাগ সেই একমাত্র ওর রাগ ভাঙতে পারে।আমি ওর সামনে যাই আর আমাকে হসপিটালে ভর্তি করুক।

আইরিনঃ তাহলে কি করবেন ভাইজান?

জীবনঃ মিহুকে আসতে বলো ভাইয়া।

নিবীড়ঃ তাই করতে হবে জীবন।প্রথমে ফাহিমকে কল করি।তারপর মিহুকে কল করবো।

☘️☘️☘️

নিবীড় খান ফাহিম মির্জাকে কল করে সবকিছু খুলে বললো।ফাহিম মির্জা মিহুকে নিয়ে আসতে বললো।ফাহিম মির্জার সাথে কথা শেষ করে মিহুকে কল করলো।মিহু দুপুরের খাবার খেয়ে নিজের রুমে গিয়েছে সবেমাত্র। ঐশিক চলে গিয়েছে খাবার খাওয়ার পর। ও থাকতে চাইনি।ওর নাকি একটা জরুরি কাজ আছে। লুবনা মির্জা জোর করে রেখে দুপুরের খাবার খাইয়ে তবেই ছেড়েছে।রুমে যেতেই মিহুর মোবাইলে আননোন নাম্বার থেকে একটা কল আসে।ইচ্ছে না থাকলেও ধরলো সে।

মিহুঃ আসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?

নিবীড়ঃ অলাইকুম আস সালাম। মিহু মা-মণি আমি তোমার নিবীড় চাচ্চু,নিবরাজের বাবা।

মিহুঃ ওহ সরি চাচ্চু।আমি চিনতে পারিনি।

নিবীড়ঃ তুমি এখন কোথায়?

মিহুঃ বাড়িতে,কেন চাচ্চু?কোন প্রবলেম হয়েছে? আপনার কণ্ঠটা কি রকম জানি শোনা যাচ্ছে?

নিবীড়ঃ মা-মণি তুমি ইমেডিয়েটলি আমাদের বাসায় আসতে পারবে?এখানে অনেক বড় ঝামেলা হয়েছে।

মিহুঃ কি হয়েছে?

নিবীড়ঃ তুমি বাড়ি আসো।তারপর সব বলছি।প্লিজ তাড়াতাড়ি চলে আসো।

মিহু কিছু বলার আগেই কলটা কেটে গেল।

মিহুঃ কি হয়েছে খান বাড়িতে? চাচ্চু মনে হলো অনেক নার্ভাস।আমার এখুনি ঐ বাড়িতে যেতে হবে। রাজ ভাইয়া নিজের কোন ক্ষতি করেনি তো।তখনতো দেখলাম খুব রেগে বের হয়ে গেলো।

মিহু কোনমতে ওড়নাটা গলায় প্যাচিয়ে, মাথায় একটা ঝুটি করে বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলো। খান বাড়িতে গিয়ে ওর চক্ষু চড়কগাছ। সারা বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে পরে রয়েছে। বাড়ির সবাই সোফায় গালে হাত দিয়ে বসে আছে। মিহুর খুব ভয় করতে লাগলো।রাজের কিছু হয়নি তো।মিহুকে দেখে নিবীড় খান এগিয়ে আসলেন।

নিবীড়ঃ এসেছো মিহু মা-মণি।

মিহুঃ চাচ্চু, এ বাড়ির এই অবস্থা কেন? নিবরাজ ভাইয়া কোথায়?

নিবীড়ঃ এই অবস্থা তোমার নিবরাজ ভাইয়াই করেছে। ও এখন ওপরে আছে। কলেজে কি হয়েছিলো মা-মণি? ছেলেটা কে ছিলো?

মিহুঃ কোন ছেলেটা?

নিবীড়ঃ তুমি যাকে জরিয়ে ধরেছিলে?

মিহুঃ চাচ্চু ঐটা আমার মামাতো ভাই ঐশিক।তাকে আমি নিজের বড় ভাই হিসেবে মানি।বড় ভাইয়ু আমাকে নিজের ছোট বোনের মতো ভালোবাসে।ও কখনো আমাকে অন্য নজরে দেখে না।

নিবীড়ঃ বুঝতে পেরেছি। তুমি উপরে রাজের কাছে যাও।ও ভীষণ রেগে রয়েছে। আমরা কেউ সামনে যেতে সাহস করছি না।তোমাকে ও কিছু করবে না।

মিহুঃ কিন্তু —-

রোজনিঃ আমার ছেলেটা তোমায় পাগলের মতো ভালোবাসে মিহু।তুমি তা কেন বোঝো না।আজ তুমি অন্য একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছো বলে সারা বাড়ির লাখ লাখ টাকার জিনিস নষ্ট করেছে।কেনো এমন করছো তুমি? কি নেই আমার ছেলের?তোমার কাছে আমার ছেলেট যেনো ভালো থাকে তাই চাইছি।প্লিজ ওর সাথে এমন করো না।

নিবীড়ঃ জীবন,বাড়ির ভাঙাচোরা জিনিসপত্র বের করে সেখানে নতুন আসবাবপত্র আনার ব্যবস্থা কর।কয়েক ঘন্টার মধ্যে আমি পুরো বাড়ি আগের মতো দেখতে চাই। কুইক কাজে লেগে পর।

জীবনঃ ওকে ভাইয়া।কয়েক ঘন্টার মধ্যে সব আগের মতো হয়ে যাবে।তুমি কোন চিন্তা করো না।
রোজনিঃ কথা বলছো না কেন মিহু?

মিহু মাথা নিতে করে রেখেছে।কি বলবে ও সবাইকে তাও নিজেও জানে না। ধীর পায়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেল।বাড়ির সবাই ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। রোজনি বেগম মুখে আঁচল গুঁজে সশব্দে কেঁদে উঠলেন।

মিহু রাজের রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরের কোন জিনিস ভালো নেই। কাবার্ড, সোফা, ডেসিং টেবিল সব নিচে পরে আছে।কাচ ভেঙে সারা মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। ভেতরে ঢোকার মতো সাহস মিহু পাচ্ছে না। ভয়ে সারা শরীর ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। নিবরাজ রেগে গেলে মিহু এমনিতেই ভীষণ ভয় পায়।অনেক কষ্ট এক পা, দু পা করে রুমে ঢুকলো। রাজ এখনো ফ্লোরে পা ছড়িয়ে, কপালে হাত রেখে বসে আছে। মাথাটা খাটের কোণার সাথে হেলান দেওয়া।মিহু আস্তে করে রাজের কাঁধে হাত রাখলো।

নিবরাজঃ জান, আমার ভালো লাগছে না। যাঃ এখান থেকে। তা না হলে তোকে আমি কি করবো, আমি নিজেও জানি না।

মিহুঃ নিবরারারাজজজজ ভাভা ভাভা ই ই-ইয়ায়া।আআআআমি মিমিমিহু।

মিহু নামটা শুনে হঠাৎ কি জানি হলো।এক ঝাটকা মেরে মিহুর হাতটা ওর কাঁধের থেকে সরিয়ে দিলো।তারপর নিজের দুই হাত দিয়ে মিহুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। মুখে তার এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো।

#চলবে

#Part_11

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here