#আমার_বোনু
#Part_12
#Writer_NOVA
কয়েকদিন পর……
ড্রয়িংরুমের সোফায় সিরিয়াল ধরে বসে আছে পাঁচ ভাই। ঊষা তাদের হঠাৎ করে জরুরি তলব করেছে। কিসের জন্য তা তারা জানে না। বোন তলব করেছে আর ভাইরা আসবে না তাতো নয়।বোনের খবর পেয়ে কাজ ফেলে ছুটে এসেছে।ওদের বসিয়ে রেখে ঊষা সেই যে রুমের দিকে গিয়েছে আর আসার খবর নেই। অর্ণব দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নিলো। এক ঘন্টা পর তার একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং আছে। বেশ কিছু সময় হাসফাস করে বোনকে ডাকলো,
— কই রে বোনু কোথায় গেলি?
আদিল একবার সব ভাইয়ের দিকে তাকালো। তারপর সেও জোরে চেচিয়ে উঠলো,
— বোনু জলদী আয়।
ঈশানের মুখ থমথমে। উত্তরের রাস্তার মোড়ে আজও সেদিনের মতো তার দলের লোকের সাথে আরানের দলের লোকের সংঘর্ষ বেঁধেছে। অবস্থা বেগতিক। এতখন একের পর এক কল আসছিলো। ঈশান বিরক্ত হয়ে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। মনে মনে ভেবে রেখেছে এখান থেকে যাওয়ার পর নিজের দলের লোকদের আগে সাইজ করবে। এগুলো অল্পতেই মারামারি লাগিয়ে দেয়। আর তার ভোগান্তি পোহাতে হয় ঈশানকে। এখন তার কাছে বোনের থেকে আপাতত আর কিছু বড় নয়।
অরূপ, ইশাত বসে বসে অনলের সাথে কথা বলছে। নিত্যন্ত আজাইরা পেচাল যাকে বলে। সেই পেচাল পারছে তিনজনে। চুপচাপ আজাইরা বসে থাকবে। কিছু তো একটা করতে হয়।
অর্ণবের ধৈর্য্য হারা সুর আবারো পাওয়া গেলো,
— বোনু তোর কি হলো?
ঊষা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে নামতে শাসনের সুরে বললো,
— এতো ষাঁড়ের মতো চেচামেচি করছো কেনো? আসতেও তো একটু সময় লাগে। আমি কি এরোপ্লেন নাকি যে উড়ে এসে পরবো?
জিনিয়া ঊষাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
— তাদের সব কয়জনকে যে তুমি এই অবেলায় বাসায় আনতে পেরেছো তাইতো অনেক।
ঊষার হাতে অনেকগুলো গিফটের প্যাকেট। সেগুলো সামনের টেবিলে রেখে দাঁড়ালো। তারপর দুই কোমড়ে হাত রেখে কপাল কুঁচকে আদেশের ভঙ্গিতে বললো,
— সবাই এবার চোখ বন্ধ করে বাম হাত এগিয়ে দাও তো দেখি।
ইশাত কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
— কেনো?
ঊষা মুখ দিয়ে উফ শব্দ করে তার বিরক্তি প্রকাশ করলো। তারপর তাড়া দিয়ে বললো,
— বেশি কথা বলবে না। কোন প্রশ্নও করবা না। যা বলছি তাই করো।
জিনিয়া সামনের সোফায় বসে হাত দিয়ে নিজেকে একটু বাতাস করে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,
— ঊষা যা বলছে চুপচাপ তাই করো তো।
পাঁচ ভাই আর প্রশ্ন করলো না। চোখ বন্ধ করে বাম হাত সামনের দিকে বারিয়ে দিলো। ঈশান চোখ খুলতেই ঊষা চেচিয়ে বললো,
— তোকে কি আলাদা করে ইনভাইটেশন দিতে হবে ছোট ভাইয়ু?
ঈশান মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো। দ্রুত চোখ বন্ধ করে ফেললো। ইশাত, অরূপ পিটপিট করে এক চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করতেই ঊষা ধমকে উঠলো,
— সেজো ভাইয়ু, অরূপ ভাইয়ু একদম চিটিং করবা না। তাহলে কিন্তু গিফট মাইনাস হয়ে যাবে।
ইশাত, অরূপ ধাওয়া খেয়ে দ্রুত চোখ বন্ধ করে নড়েচড়ে সোজা হয়ে বসলো। ঊষা গিফটের প্যাকেট খুলে প্রতি ভাইয়ের হাতে সুন্দর একটা লেটেস মডেলের ঘড়ি পরিয়ে দিলো। পাঁচ ভাই চোখ খুলে বিস্মিত চোখে ঘড়ির দিকে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো। ঈশান প্রথম মুখ খুললো,
— এগুলো কোথা থেকে চুরি করে আনছিস কালুর মা?
ঊষা ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে চেচিয়ে উঠলো,
— ছোট ভাইয়ু ভালো হয়ে যা তুই।
ইশাত কপাল কুঁচকে সন্দেহের গলায় প্রশ্ন করলো,
— তোর জামাই দিয়েছে নাকি?
ঊষা রেগে উত্তর দিলো,
— কেন আমার জামাই দিবে কেনো? আমি দিতে পারি না?
অরূপ মাথা চুলকে ঘড়ির দিকে চোখ রেখেই ঊষাকে বললো,
— বোনু সত্যি তুই এগুলো আমাদের জন্য কিনেছিস?
ঊষা ছোট তিনটার ওপর রেগে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করছে। তিন ভাই তাদের বোনকে রাগাতে পেরে শয়তানি হাসি দিলো। তারপর একসাথে জোরে হো হো করে হেসে উঠলো। অর্ণব বোনের হাত সামনে এনে হাতে একটা চুমু খেয়ে বললো,
— অনেক সুন্দর হয়েছে বোনু। আমার বোনু আমাদের জন্য পছন্দ করে এনেছে তা কি অসুন্দর হতে পারে?
আদিল হাতের ইশারায় ঊষাকে কাছে ডাকলো। ঊষা সামনে যেতেই এক হাতে জড়িয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললো,
— বোন তার ভাইদের জন্য গিফট কিনে এনেছে তা না পছন্দ হয়ে যাবে কোথায়?
ঊষা খুশিমনে বললো,
— সত্যি তোমাদের পছন্দ হয়েছে?
আদিল মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝালো। ঊষা খুশিতে আদিলকে জড়িয়ে ধরলো। উচ্ছাস কন্ঠে বললো,
— Thank you মেজো ভাইয়ু। আমি অনেক চিন্তায় ছিলাম। তোমাদের গিফটটা পছন্দ হবে কিনা। আমি পাঁচ জনের জন্য একিরকম ঘড়ি পছন্দ করেছি। আমি আর বড় ভাবী গিয়ে এগুলো কিনে নিয়ে এসেছি। যাতে ঐ তিন বিটকেল বলতে না পারে বড় ভাইয়ুরটা সুন্দর হয়েছে আমরটা নয়। মেজো ভাইয়ুরটা ভালো লাগে বেশি ব্লা ব্লা।
কথাগুলো বলে ঊষা ভেংচি কাটলো।অর্ণব, আদিল উচ্চস্বরে হেসে উঠলো। জিনিয়া মনোযোগ দিয়ে ওদের খুনসুটি দেখছে। ঊষা জিনিয়ার সামনে একটা প্যাকেট এগিয়ে দিয়ে বললো,
— এটা তোমার জন্য বড় ভাবী।
জিনিয়া অবাক হয়ে বললো,
— এটা কখন কিনলে? আমি তো পুরো সময় তোমার সাথে ছিলাম। তোমাকে এসব কিনতে দেখলামও না।
ঊষা এক চোখ মেরে মুচকি হেসে বললো,
— সিক্রেট, বলা যাবে না।
জিনিয়া হাসতে হাসতে গিফটের প্যাকেটটা হাতে নিলো। অনল দৌড়ে এসে ঊষার হাত টেনে বললো,
— আমার জন্য কিছু আনোনি রাণী?
ঊষা অনলকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,
— আমার বাবাটার জন্য কি আমি কিছু না এনে থাকতে পারি? এই নাও এটা তোমার জন্য।
বিশাল এক গিফট বক্স অনলের দিকে বাড়িয়ে দিলো ঊষা। গিফট পেয়ে অনল খুশিতে লাফাতে লাফাতে ঊষার গালে চুমু খেয়ে বললো,
— লাবুউ রাণী।
আরেকটা গিফটের প্যাকেট আদিলের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে ঊষা বললো,
— এটা মেজো ভাবীর জন্য। তুমি একটু কষ্ট করে দিয়ে দিও।
আদিল ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
— তোর ভাবীর জন্য তুই গিফট এনেছিস।তাই তুই দিয়ে আসবি। আমি কেন দিবো?
ঊষা অসহায় চোখে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো। কিন্তু আদিলের ভাবগতি পাল্টালো না। অরূপ বললো,
— ঘটনা কিরে বোনু? হঠাৎ আমাদের জন্য গিফট কেন আনলি?
ঊষা উত্তর দেওয়ার আগে ইশাত আরেকটা গিফটের প্যাকেট দেখিয়ে বললো,
— ঐ নীল গিফটটা কার জন্যরে বোনু?
ঊষা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। মাথা নিচু করে বললো,
— ওর জন্য কিনেছি এটা।
ইশাত বুঝতে না পরে বললো,
— ওরটা কে?
অরূপ ইশাতের মাথায় টোকা মেরে বললো,
— ওরে বুদ্ধ বুঝিস না কেন? কে হতে পারে তুই বল।
ইশাত মাথা খাটিয়ে বুঝতে পেরে “ওহো” বলে চেচিয়ে উঠলো। ঊষা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করেই রাখলো। সব ভাই মিটমিট করে হাসছে। ঈশান ভ্রু কুঁচকে বললো,
— আমাকে একটা কথা বল তো বোনু। তুই এত টাকা পেলি কোথায়? চুরি-টুরি করিসনি তো?
ইশাত গলা মিলালো,
— হ্যাঁ রে বোনু চুরি করে আমাদের গিফট দিচ্ছিস না তো?
অরূপ ভাবার ভান করে বললো,
— আমারো সেম কোশ্চেন।
ঊষা চেচিয়ে বললো,
— আমার টাকা দিয়ে কেনা। তোমরা এই জীবনে ভালো হবে না। আমাকে না রাগালে কি তোমাদের পেটের খাবার হজম হয় না? আজ তোমাদের একদিন কি আমার যতদিন লাগে।
ঊষা ছুটে গিয়ে প্রত্যেকের পিঠে চড়, থাপ্পড় যা পারে তাই দিতে লাগলো। সাথে চুল টান তো ফ্রী আছেই। বোনের হাত থেকে বাঁচতে তারা তিনজন ছুট লাগলো।গোল গোল করে ঘুরতে লাগলো৷ ঊষাও ওদের পিছু পিছু ঘুরছে। অর্ণব, আদিল, জিনিয়া বসে বসে মজা নিতে লাগলো।
★
আদিলের রুমের দিকে উঁকি মারতেই ঊষার বুক কেঁপে উঠলো। আজকাল অথৈ কে সে ভীষণ ভয় পায়। এর জন্য একে এড়িয়েও চলে। আদিলের ওপর ঊষার অনেক রাগ হচ্ছে। তখন অথৈ এর গিফটটা নিয়ে অথৈকে দিয়ে দিলে তো তাকে এখন অথৈ এর সামনে পরতে হতো না। বুকে থু থু দিয়ে অনেকটা সাহস যুগিয়ে দরজায় নক করলো ঊষা।
— মেজো ভাবী, মেজো ভাবী!
অপরপাশ থেকে কোন আওয়াজ এলো না। ঊষা গুটিগুটি পায়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঢুকলো। ঊষার হৃৎপিণ্ডটা ধুকপুক করছে। তার মনে হচ্ছে সে বাঘের খাঁচায় ঢুকেছে। মনে মনে ভাবলো বাঘের খাঁচায় বোধহয় এতো ভয় করতো না। যতটা এখন করছে। এই বুঝি অথৈ চেচিয়ে উঠে বলে,
— তুমি আমার রুমে কি করো?
কিন্তু তেমন কিছু হলো না। অথৈ ওয়াসরুমে গিয়েছে। তাই ঊষা চুপচাপ এক জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। অথৈ কিছু সময় পর বের হলো। ছিটকিনির খট করে আওয়াজ হতেই ঊষার হৃৎপিণ্ডটা লাফিয়ে উঠলো। অথৈ বের হয়ে ঊষাকে নিজের রুমে দেখে কপাল কুঁচকে ফেললো। তবে কোন কথা বললো না। এগিয়ে গিয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে লাগলো। ঊষা ঢোক গিলে নিচুস্বরে অথৈ কে ডাকলো।
— মেজো ভাবী!
অথৈ চোখে, মুখে বিরক্তি নিয়ে ঊষার দিকে তাকালো। কোন কিছু বললো না। ঊষা ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গিফটের প্যাকেটটা অথৈ এর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
— এটা তোমার জন্য।
অথৈ যেনো কথাটা শুনেও শুনলো না। এমন ভাব করে ঊষাকে সাইড কাটিয়ে খাটে গিয়ে বসলো, যেনো ঊষা যা বলেছে তা সে শুনেইনি। ঊষার এবার ভয়ে হাত-পা কাঁপছে। যেখানে ছিলো সেখানে দাঁড়িয়ে রইলো। ওকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অথৈ ঘর কাঁপিয়ে হুংকার করে উঠলো,
— তোমার এখানে কি?
ঊষা থতমত খেয়ে বললো,
— তোমাকে গিফট দিতে এসেছিলাম।
অথৈ এতে রেগে গেলো। দ্রুত এগিয়ে এসে গিফটটা ঊষার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে ছুড়ে মারলো। ঊষা ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেলো। অথৈ পূর্বের থেকে চেচিয়ে বললো,
— আমার থেকে আমার স্বামীকে কেড়ে নিয়ে এখন দরদ দেখানো হচ্ছে?
ঊষা স্তব্ধ হয়ে গেলো। অথৈ কি বলে এসব? সে আদিলকে কেড়ে নিয়েছে মানে? ঊষা কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
— আমি ভাইয়াকে কেড়ে নিয়েছি মানে? কি বলছো এসব তুমি?
অথৈ বাঘের মতো গর্জে বললো,
— এখন ন্যাকা সাজা হচ্ছে? কিছুই জানো না? শুধু মাত্র তোর কারণে আমার স্বামী আমাকে ঠিকমতো সময় দেয় না। তোর কারণে আমার সাথে ঠিকমতো কথা বলে না। আমার তো মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় তোকে গলাটিপে মেরে ফেলতে। আমার স্বামীকে তুই ইচ্ছে করে আমার থেকে দূরে রাখিস তাই না? তোকে আমি ছাড়বো না এত সহজে।
ঊষা হতবিহ্বল হয়ে রইলো। অথৈ কি বলে এসব? তার চোখ দিয়ে আপনাআপনি পানি পরতে লাগলো। নিজের ভাইকে নিয়ে তাকে কথা শুনচ্ছে অথৈ। এটা কি তার সেই মেজো ভাবী যে তাকে ছাড়া একবেলা খাবার খেতে চাইতো না। নিজের বড় বোনের মতো গার্ড দিতো।
এর মধ্যে পাপ্পি রুমে ঢুকলো। অথৈকে চেঁচাতে দেখে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো। অথৈ তেড়ে ওর দিকে আসতে নিলে সে ঊষার পিছনে লুকিয়ে পরলো। তবুও ঘেউ ঘেউ বন্ধ করলো না। ঊষা তো নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না। বারবার মনে হচ্ছে এসব কথা অথৈ বলতেই পারে না। তার শুনতে ভুল হয়েছে। থুম মেরে ঊষাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অথৈ এর মাথায় চিনচিন করে রাগ বাড়তে লাগলো। সে এবার খেপা বাঘের মতো তেড়ে এসে বললো,
— ঢং করতে মন চাইলে অন্য কোথাও গিয়ে করো। আমার রুম থেকে দয়া করে বের হও। সাথে তোমার এই কুত্তার বাচ্চাও নিয়ে যাও। তোমাকে আর তোমার এই কুত্তার বাচ্চাকে আমার সহ্য হচ্ছে না বাপু। আমি তোমায় এর আগে বহুবার বলেছি তোমার মুখখানা আমাকে দেখাবে না। আর চোখের পানি মুছো৷ এই পানি দিয়েই তো আমার স্বামীকে জাদু করেছো। বোনের চোখের পানি দেখলে ভাইরা তো আবার গলে মম হয়ে যায়। বের হও তো আমার রুম থেকে। আমি তোমাকে আর নিতে পারছি না। কি বলছি শুনছো?
ঊষা কোন উত্তর দিলো না। নিষ্পলক দৃষ্টিতে অথৈ এর দিকে তাকিয়ে রইলো। জিনিয়া নিজের রুম থেকে ছুটে এসে জিজ্ঞেস করলো,
— কি হয়েছে অথৈ? ঊষা তুমি এই রুমে কেন? আর কাঁদছো কেনো? কি হয়েছে?
ঊষা যেনো কথা বলতে ভুলে গেছে। অথৈ কোন উত্তর দিলো না। রাগে বিরবির করতে করতে খাটে বসলো। জিনিয়া কিছু বুঝতে না পেরে অথৈ কে জিজ্ঞেস করলো,
— হয়েছেটা কি তা কি আমায় বলবে? আর গিফটটা ফ্লোরে পরে আছে কেনো?
অথৈ রাগে চিৎকার করে ঊষাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে জিনিয়াকে বললো,
— ওকে আমার সহ্য হচ্ছে না। ওকে আমার চোখের সামনে থেকে সরতে বলো ভাবী।
জিনিয়া ধমকে উঠলো,
— কি বলো এসব অথৈ? ওর বাড়ি আর তুমি ওকে চলে যেতো বলো? তোমার হয়েছে কি বলো তো? মেয়েটার সাথে ইদানীং এমন ব্যবহার করো কেনো? ও তোমার কোন বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছে? আমি এর আগে দুইবার তোমাকে সুন্দর করে বুঝিয়েছি ঊষার সাথে এমন ব্যবহার করবে না। তবুও তুমি একি কাজ বারবার করে যাচ্ছো। এর কারণ কি? তুমি আমার কথা কেনো শুনছো না?
অথৈ কোন কথা না শুনে একটা কথাই বলে যাচ্ছে,
— ওকে আমার সামনে থেকে সরতে বলো। আমি ওকে কিছুতেই সহ্য করতে পারছি না।
ঊষা কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে দৌড়ে বের হয়ে গেলো। পাপ্পি অথৈ এর সামনে এসে কয়েকবার ঘেউ ঘেউ করে ঊষার পিছু দৌড় দিলো। জিনিয়া অথৈ এর দিকে তাকিয়ে মুখ ঝামটা মেরে বললো,
— তোমার কপালে শনি ঘনিয়ে এসেছে অথৈ। তুমি বড্ড বেশি বেরেছো। এর খেসারত তোমাকে দিতে হবেই। কাদের কলিজায় আঘাত করছো তা তুমি এখন টের পাবে না। আমার মতো যখন উচিত শিক্ষা দিবে তারপর বুঝবে।
অথৈ জিনিয়ার কোন কথা বুঝলো না। জিনিয়া ঊষাকে ডাকতে ডাকতে বের হয়ে গেলো।
~~~ পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে🥱।
#চলবে
আপনাদের অনেক অনুরোধে আমি এই গল্পটা এনেছি। এখন আপনাদের মন্তব্য দেখে আমি হতাশ। আমি একটাও গঠনমূলক মন্তব্য পাই না। নেক্সট, নাইস ছাড়া যদি একটা গঠনমূলক মন্তব্য আসতো তাহলে আমি বলতে পারতাম, “না একটা মন্তব্য তো পাই।” আপনাদের যেমন গঠনমূলক মন্তব্য লিখতে কষ্ট লাগে তেমনি আমারও গল্প লিখতে কষ্ট লাগে। তাই এখন থেকে আমি আর নিয়মিত গল্প দিবো না। রোজা রেখে সব সামলিয়ে এত কষ্ট করে গল্প লেখার কোন মানে হয় না। তাই আপনারা এবার থেকে একদিন পরপর গল্প পাবেন😊। আর গল্পটাও আমি দ্রুত শেষ করে দিবো।