আমার বোনু পর্ব-১৩

0
2254

#আমার_বোনু
#Part_13
#Writer_NOVA

— তুমি আজকাল আমাকে সময়ই দাও না।

আক্ষেপের সুরে অথৈ কথাটা বলতে বলতে আদিলের পাশে বসলো। আদিল সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলো। অথৈ এর কথা শুনে ওর দিকে একটুও তাকালো না। আপনমনে কাজ করতে লাগলো। অথৈ রেগে ল্যাপটপ টান মেরে বললো,

— আমি কিছু বলছি তুমি কি তা শুনতে পেয়েছো?

আদিল হাত বাড়িয়ে ল্যাপটপ নিতে চাইলে অথৈ সরিয়ে ফেললো। এতে আদিলের কপাল বিরক্তিতে কুঞ্চিত হয়ে এলো। আদিল বিরক্তিমাখা কন্ঠে বললো,

— অথৈ আমার ল্যাপটপ দাও।

অথৈ জোর গলায় বললো,
— দিবো না।

— আমি দিতে বলছি।

— আমি দিবো না বলছি।

অথৈ ভেবেছিলো আদিল ল্যাপটপ নিয়ে ওর সাথে জোরজবরদস্তি করবে। কিন্তু তেমন কিছু হলো না। আদিল উঠে কাবার্ডের সামনে গেল। কাবার্ডের দরজা খুলে একে একে অথৈ এর সব জামা-কাপড় এক প্রকার ছুঁড়ে খাটে ফেলতে লাগলো। অথৈ আদিলের কান্ড দেখে হতবাক। ল্যাপটপটা সোফায় রেখে আদিলের সামনে এসে বললো,

— কি হয়েছে আদি? তুমি আমার জামা-কাপড় বের করছো কেন?

আদিল কোন কথা বললো না। অথৈ-কে পাশ কাটিয়ে গিয়ে লাগেজ হাতে তুলে নিলো। লাগ্যাজের মধ্যে অথৈ এর জামা-কাপড় দলা মোচড়ি করে ভরতে লাগলো। অথৈ আদিলের দুই হাত টেনে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বললো,

— তোমার হয়েছে কি বলো তো? তুমি আমাকে এমন এভয়েড করছো কেন? আর আমার জামা-কাপড় লাগ্যাজে কেন ভরছো?

আদিল দম টেনে নিজের হাত দুটো অথৈর থেকে ছাড়িয়ে বললো,

— তোমার বাবার বাড়ি যাচ্ছো তুমি?

— হঠাৎ আমরা ঐখানে কেন যাবো?

— আমরা নই শুধু তুমি।

— মানে?

— মানে খুব সিম্পল। তুমি তোমার বাবার বাড়ি যাচ্ছো।

— এই তোমার হয়েছে কি বলোতো আমায়? এত করে যখন যেতে চাইলাম তখন তো যেতে দিলে না। এখন নিজেই পাঠাচ্ছো।

আদিল লাগ্যাজের চেইল লাগাতে লাগাতে বললো,
— তোমার বাবাকে খবর পাঠিয়েছি। তিনি বোধহয় এর মধ্যে চলেও এসেছে। তুমি বরং তৈরি হয়ে নাও।

— বাবার বাড়ি যাবো ভালো কথা। তাই বলে তুমি সব জামা-কাপড় প্যাক করছো কেন?

— একেবারের জন্য গেলে তো সব জামা-কাপড়ই প্যাক করবো।

অথৈ আৎকে উঠে বললো,
— একেবারের জন্য মানে? এই আদি কি বলছো তুমি? তোমার মাথা ঠিক আছে?

আদিল অথৈ এর দিকে তাকিয়ে বললো,
— প্রেগন্যান্ট থাকা অবস্থায় ডিভোর্স দেয়া যায় না। তাই এখন তোমাকে ডিভোর্স দিতে পারছি না। বাচ্চা হওয়ার পর তুমি ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবে। আর হ্যাঁ বাচ্চা নিয়ে টেনশন করো না। আমি বাচ্চা নিয়ে আসবো। তুমি নতুন জীবন শুরু করতে পারবে।

অথৈ এর মাথায় মনে হলো আকাশ ভেঙে পরলো। ওর চোখ দিয়ে আপনাআপনি পানি পরতে আরম্ভ করলো। কান্না জড়ানো কন্ঠে আদিলকে বললো,

— তুমি আমাকে ডিভোর্স দিবে?

— হ্যাঁ, তুমি কি কানে কম শুনো নাকি?

— আদি তুমি এই কথাটা বলতে পারলে? আমার অপরাধটা কি?

এবার আদিল গর্জে উঠলো,
— তোমার অপরাধ কি তুমি জানো না?

— জানলে কি আর জিজ্ঞেস করতাম।

অথৈ কান্না করতে করতে ধপ করে ফ্লোরে বসে পরলো। ওর কানে এখনো ডিভোর্সের কথাটা বারি খাচ্ছে। আদিল এগিয়ে এসে বললো,

— এতো অভিনয় কি করে করো তুমি?

— আমি অভিনয় করছি না আদি।

আদিল চিৎকার করে বলে উঠলো,
— তুমি কোন সাহসে আমার বোনুর সাথে খারাপ ব্যবহার করো? ওর দেয়া গিফট তুমি ফ্লোরে ছুড়ে মারো কোন সাহসে? ওর চোখ দিয়ে পানি ঝড়ানোর তুমি কে? আমার বোনের অপরাধটা কি তুমি বলতে পারবে? আমি কিছু বলছি না বলে তুমি এত বাড় বেড়ে যাবে? কে দিয়েছে তোমায় এতবড় স্পর্ধা?

অথৈ কোন কথা বলতে পারছে না। কাঁদতে কাঁদতে ওর হেচকি উঠে গেছে। আদিল নিজের চুলগুলো মুষ্টিবদ্ধ করে চেচিয়ে বললো,

— যে আমার বোনকে সহ্য করতে পারবে না তার স্থান এ মির্জা কুঠিরে নেই।

অথৈ হতভম্ব হয়ে গেলো। নিষ্পলক চোখে আদিলের দিকে তাকালো। আদিল কিছু সময় থেমে বললো,

—আমার সন্তানকেও আমি তােমার কাছে রাখবো না। তাহলে সেই সন্তান যে তোমার মতো হবে না তার বা কি গ্যারান্টি? তুমি মুক্তি চাইছিলে না আমার বোনের থেকে? আমি তোমাকে দিবো সেই মুক্তি।

অথৈ এগিয়ে এসে আদিলের দুই হাত জড়িয়ে ধরে বললো,
— এসব তোমাকে কে বলেছে?

আদিল তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,
— আমাদের রুমে আমি হিডেন ক্যামেরা সেটআপ করে রেখেছিলাম। সেখানে পুরোটা দেখেছি। তুমি কি ভাবছো? একের পর এক তুমি আমার বোনকে কাদিয়ে যাবে আর আমি হাত-পা গুটিয়ে চুপচাপ বসে থাকবো? একদম না।

— আমি এখন কার কাছে যাবো?

আদিল স্ট্রিট উত্তর দিলো,
—তা যার কথায় এসব করেছো তার কাছে যাও।

অথৈ চমকে উঠলো। আদিল তাহলে কি সবকিছু জেনে গেছে? আদিল অথৈ এর চিবুক উঠিয়ে ধরলো। অথৈ এর এই প্রথম অপরাধবোধ কাজ করছে। সে আদিলের চোখের সাথে চোখ মেলাতে পারছে না। আদিল আবারো তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

— প্রথমে ভেবেছিলাম প্রেগ্ন্যাসির কারণে তুমি এমন করছো। পরে আমার একটু খোটকা লাগলো জানো। মনে হলো কেউ তো তোমার পেছনে কলকাঠি নাড়াচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখলাম আমার সন্দেহ ঠিক। তা তোমার সেই প্রাণপ্রিয় বান্ধবীকে খবর দাও। যে তোমার কানে বিষ ঢেলে ঊষার প্রতি বিষিয়ে তুলেছে। সে এসে নিয়ে যাবেনি।

অথৈ এগিয়ে এসে আদিলের পা জড়িয়ে ধরে বসে পরলো। কাঁদতে কাঁদতে বললো,
— আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আদি। তাই তোমার ভাগ আর কারো সাথে শেয়ার করতে পারছিলাম না।

আদিল ধিক্কার জানিয়ে বললো,
— তুমি এত নিচ মন-মানসিকতার হলে কি করে অথৈ? ঐ মেয়ের কান ভাঙানো কথায় তুমি এতো নিচে নেমে গেছো। ছিঃ ছিঃ! তোমাকে আমার নিজের স্ত্রী ভাবতেও ঘৃণা লাগছে। তুমি কি করে ভাবলে ঊষা তোমার থেকে আমাকে কেড়ে নিবে? আমার কাছে বোনের জায়গায় বোন আর স্ত্রী এর জায়গায় স্ত্রী। আমি তো কাউকে কম্পেয়ার করিনি। যার যার জায়গায় তাকে ঠিক রেখেছিলাম। তুমি তা সন্দেহের চরম পর্যায় নিয়ে গেছো। তাহলে তুমিও শুনে রাখো। পুরো পৃথিবী একদিকে আর আমার বোন আরেকদিকে। আমি তোমাকে আর নিতে পারছি না অথৈ। অন্যের উস্কানিতে তুমি তোমার আদিকে হারাতে বসেছো। উফস সরি, হারাতে বসেছো নয় হারিয়ে ফেলেছো।

আদিল নিজের পা ছাড়ানোর জন্য পা ঝাড়া মারতে লাগলো। কিন্তু অথৈ পেচিয়ে ধরে রেখেছে। অথৈ হাউমাউ করে কাঁদছে। আজ সে বুঝতে পারছে কি ভুল সে করেছে। থেমে থেমে বললো

— আদি আমাকে মাফ করে দাও।তোমার সন্তান আমার পেটে? ওর কথা ভেবেও তো আমাকে মাফ করতে পারো।

আদিল কপাল কুঁচকে অথৈ এর দিকে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করে কাঠ কাঠ গলায় বললো,

— আমার সন্তান তোমার পেটে বলেই তুমি এখনো ভালো আছো। নয়তো ময়লা আবর্জনা লাথি মেরে ডাস্টবিনে ফেলতে আমি দ্বিতীয়বার ভাবি না।

অথৈ স্তব্ধ হয়ে গেলো। এ কোন আদিলকে দেখছে সে। অথচ আদিল থমকে দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখের এক্সপ্রেশনে বলে দিচ্ছে সে কতটা কঠিন ও বিরক্ত হয়ে আছে অথৈ এর ওপর। আদিল জানে অথৈ তাকে ছেড়ে যাবে না। এবার সে উপলব্ধি করতে পারবে বান্ধবীর কানপড়ায় সে কতবড় ভুল করেছে।সে অথৈ কে মোটেও ডিভোর্স দিবে না। ভয় দেখাতে এতবড় পদক্ষেপ নিয়েছে। আদিল একবার মনে মনে বড় ভাইকে ধন্যবাদ জানালো। জিনিয়া যখন প্রেগন্যান্ট ছিলো। তখন ঊষার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিলো। যদিও সে প্রেগ্ন্যাসির কারণে করেছিলো। কারো কানপড়ায় নয়। তবে অথৈ এর মতো এতো খারাপ ব্যবহার করেনি।তখন জিনিয়াকেও অর্ণব এভাবেই শায়েস্তা করেছিলো। যদিও অর্ণব ডিভোর্সের কথা বলেনি। কিন্তু আদিল অথৈকে ঠিক করতে এতদূর গড়িয়েছে।

—গুড আফটারনুন ঢাকা। ৯৪.৮ কেপিটাল এফএমে আমি আরজে রুশা আছি আপনাদের সাথে। আমার শো “মনের কথা” নিয়ে আমি থাকবো বিকেল ৫টা অব্দি। সাথে গান,আড্ডা ও ফান। যারা আমার সাথে যুক্ত হতে চান তারা এসএমএস এবং ফেসবুক পেইজের কমেন্টবক্সে এড হয়ে আপনাদের মনের ভাব জানিয়ে দিন। সাথে আপনাদের মনের গহিন কোণে লুকানো কথাটিও শেয়ার করে দিতে পারেন। এখন নিচ্ছি বিজ্ঞাপন বিরতি। ফিরবো একটু পরে।

মোবাইলটা পাশে রেখে ইয়ারফোন কান থেকে খুলে ঊষা দৃষ্টি দিলো বহুদূরের ঘনকালো মেঘের দিকে। ঠান্ডা বাতাস বইছে। মনে হচ্ছে রাতে বৃষ্টি নামবে। ভীষণ মন খারাপ থাকলে ঊষা এফএম শুনে। তেমনি আজও শুনছিলো। সেদিন অথৈ ওর সাথে রুড ব্যবহার করার পর প্রয়োজন ছাড়া সে রুম থেকে বের হয় না। এমনকি খাবার টেবিলেও যায় না। ভাইরা খাবার নিয়ে এসে বোনকে খাইয়ে দিয়ে যায়।

মোবাইলে রিং হতেই মাথা ঘুরিয়ে তাকালো ঊষা। স্ক্রিনে তারিনের নাম দেখা যাচ্ছে। কল রিসিভ করার কোন তাড়া দেখা গেলো না ওর মধ্যে। রিং হতে হতে মোবাইলের আলো বন্ধ হয়ে গেলো। দুদিন ধরে কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ঊষা। তার জন্য হয়তো তারিন কল করেছে। আবারো তারিনের কল এলো। ঊষা কল রিসিভ করলো না। তার এখন কথা বলতে ইচ্ছে করলো না। হঠাৎ কেউ এসে ঊষার দুই হাত জড়িয়ে হু হু করে কেঁদে উঠলো। ঘটনার আকস্মিকতায় ঊষা হকচকিয়ে গেলো। ভালো করে তাকিয়ে দেখলো সেটা অথৈ।

— আমায় মাফ করে দাও ঊষা। আমি তোমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। আজ আমি নিজের ভুলে সব হারাতে বসেছি।

ঊষা প্রতিত্তোরে কিছু বললো না। সে জানতো এমনটাই হবে৷ চুপ করে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। তার কাছে এখন নিজেকে অনুভূতি শূন্য মানুষ মনে হচ্ছে। অথৈ নাক টেনে কান্না করতে করতে বললো,

— অন্যের কথা আমার ওপর এতটাই প্রভাব ফেলেছিলো যে আমি দিকবিদিকশুন্য হয়ে গিয়েছিলাম। আমার কোন হুশ ছিলো না। তাই তো তোমার সাথে আমি এমন জঘন্য ব্যবহার করতে পেরেছি।

ঊষা ঠোঁট বাঁকিয়ে হাসলো। হাসিটা অনেকটা তাচ্ছিল্যের দেখালো। শ্বাস টেনে অথৈ এর থেকে নিজের হাত দুটো ছাড়িয়ে ধীর গলায় বললো,

— তোমার দ্বারা এমনটা আশা করিনি মেজো ভাবী। আমি তোমাদের দুই ভাবীকে ভাবী নয় নিজের বড় বোন মনে করি। কখনো বোন ছাড়া অন্য কোন নজরে দেখিনি। তোমার ওপর আমার কোন অভিযোগ নেই। তুমি যেতে পারো।

অথৈ করুন সুরে বললো,
— তুমি আমায় মাফ করে দিয়েছো তাহলে?

ঊষা একপলকে অথৈ এর দিকে তাকিয়ে বললো,
— চেষ্টা করবো মাফ করতে। কিন্তু জানি না পারবো কিনা। আন-এক্সপেক্টটেড জখম ছিলো তো। তাই ঠাওর করে উঠতে পারিনি। পুরো হৃৎপিণ্ড বরাবর ছুরি চালিয়ে গেছে। কাটিয়ে উঠতে তো সময় লাগবেই।

অথৈ পূর্বের থেকে জোড়ালোভাবে ঊষার হাত দুটি নিজের এক হাতে শক্ত করে ধরে আরেক হাতে ঊষাকে জড়িয়ে ধরে কান্না জড়ানো কন্ঠে বললো,

— আমি এখন বুঝতে পারছি কত বড় ভুল করেছি আমি। তোমার মেজো ভাইয়ু আমাকে চোখে আঙুল দিয়ে ভুলটা দেখিয়ে দিয়েছে। তুমি যদি আমায় মাফ না করো তাহলে আমার সংসার নষ্ট হয়ে যাবে। আমি আদিকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলবো। তোমার ভাই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে। অনেক কষ্ট করে তাকে আমি থামিয়েছি। সে বলেছে যদি তুমি আমাকে মাফ করো তবেই সে আমাকে মাফ করবে। নয়তো নয়।

ঊষা নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে গেলো। জানলার সামনে দাঁড়িয়ে দূরের মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখতে দেখতে বললো,

— মাফ শব্দটা না এই মুহুর্তে তোমার জন্য ভেতর থেকে আসছে না ভাবী। তবে বললাম তো আমি চেষ্টা করবো। তোমার আগেই বোঝা উচিত ছিলো এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। মেজো ভাইয়ুকে তুমি চিনো না। সে এক কথার মানুষ। তোমাকে কিন্তু বিয়ে করেছিলো আমার কথায়। আমি পছন্দ করেছিলাম বলে তুমি এই মির্জা কুঠিরের মেজো বউ। আজ তুমি আমার সাথে…… যাকগে বাদ দেই। সেদিনের কথা মনে এলেই তোমার ওপর ভীষণ রাগ হয়। ভেতরটা দাবানলের মতো পুড়ে যায়।কাকে বোনের মতো ভালোবেসে ছিলাম আমি? যে কিনা তার মর্যাদাই দিতে জানে না। একটা কথা জানো কি মেজো ভাবী, যার ব্যবহার আমার মনের গহীনে আঘাত করে তাকে আমি অন্যদের মতো খুব সহজে মাফ করে দিতে পারি না। তবে আমি চেষ্টা করবো।

অথৈ আরো নানাভাবে ঊষাকে বুঝাতে লাগলো। কিন্তু আজ ঊষা একদম শক্ত হয়ে ছিলো। তাই তাকে তার সিদ্ধান্ত থেকে সরানো গেলো না।অথৈ হাল ছেড়ে দিলো। আজ সে অসহায়। চোখের পানি মুছতে মুছতে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ঊষা একবার সেদিক পানে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। আবারো মনোযোগ দিলে আকাশপানে।

— এদিকে আয় তো বোনু তোর মাথায় একটু তেল লাগিয়ে দেই।

জানলার দিক থেকে দৃষ্টি সরাতেই ঊষা দেখলো আদিল তেলের বোতল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অন্য সময় হলে সে তেল না দেওয়ার জন্য বহু বাহানা করতো। কিন্তু আজ করলো না। মাথাটা তার ভালোই ধরেছে। তেল দিলে ভালো লাগবে। তাই চুপচাপ খাটে বসে পরলো। আদিল তেলের বোতল নিয়ে ধীরেসুস্থে বোনের মাথায় তেল লাগাতে লাগলো। মাথার তালুতে তেল পরতেই ঊষার কেমন জানি শান্তি শান্তি লাগা শুরু করলো। কিন্তু বুঝতে পারলো না তেলের কারণে নাকি অথৈ এর এমন পরিবর্তনের কারণে।

~~~ কিছু মানুষকে ক্ষমা করতে চাইলেও ভেতর থেকে ক্ষমা নামক শব্দটা আসে না।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here