আমার_গল্পে_তুমি ৩৬_পর্ব

আমার_গল্পে_তুমি ৩৬_পর্ব
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)

,
আর্দ্র ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে ইয়ানা ওকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে এখন রাগ করলেও কিছু করার নাই তারপর ও গ্যাস অফ করে দিলো, ওদিকে অনিক আর আকাশ এর তো হাচ্ছি আর কাশি দিতে দিতে যক্ষা রোগীর মতো অবস্থা হয়েছে, আর্দ্রর অবস্থাও দেখার মতো ওদের ওমন নাজেহাল অবস্থা দেখে ওদিকে অন্তরা আর রোজা তো হাসতে হাসতেই শেষ,, এমনটা করা ঠিক হয়নি মনে হয় আমরা একটু বেশিই করে ফেলেছি দেখেছো সবার কেমন অবস্থা হয়েছে।

ঠিক হয়েছে কোনো কিছু না পেরে আগে আগে এমন ভাব দেখালে এমনি হয় তুমি চুপ থাকো তো ইয়ানা, ওখানে শুধু তোমার বর না আমার বর ও আছে বুঝলে,, কি ভালোবাসা আহা বরের এমন করুন অবস্থা বউ এর দেখছি সয্যই হচ্ছে না কি বলো রোজা।

হুম সেটাই তো দেখলি আপু আমাদের ইয়ানা দেখছি বিয়ের পর একদম বর পাগল হয়ে গেছে, আর্দ্র ভাই এর এমন শোচনীয় অবস্থা দেখে ইয়ানার ভারি কষ্ট হচ্ছে, ইস রে, তুই বরং এক কাজ কর তুইও আর্দ্র ভাই এর সাথে যোগ দে তাহলে যদি আর্দ্র ভাইয়ার কষ্ট টা একটু কমে আহারে বেচারা।

চুপ করবে তোমরা আমি মোটেও সেসব কিছু মিন করে কথা বলিনি আমি তো,,,

হুমম আমরা জানি জানি প্লেন কতো উপর দিয়ে যায় বুঝেছো,, তারপর ওরা ইয়ানাকে নিয়ে হাসি মজা করতে করতে আর্দ্রদের রান্না শেষ,, ওরা কোনো মতে ইউটিউব এ দেখে দেখে রান্না শেষ করেছে তারপর একে একে তিন জন টেবিলে খাবার দিলো,, অন্তরার মা আর বাবা চলে গেছে আর আর্দ্রর মা বাবার জন্য আগেই রান্না করে রাখা ছিলো কেননা ইয়ানারা জানত আর্দ্রদের রান্না আর যাই হোক খাওয়ার উপযুক্ত হবে না,, ওনারা দুজনেই খায়ে রুমে চলে গেছে,, কিন্তু আশা আর পরশ বেবির কাছে আছে কেননা অন্তরা নিচে আছে তাই,, রোজা ইয়ানা আর অন্তরা খাবার টেবিলে বসল, ইয়ানার পা এখন একটু ভালো নিজে নিজেই হাঁটতে পারে,, ওরা টেবিলে বসার পরই তিন জন তিনজনকে খাবার পরিবেশন করল, আর্দ্র ইয়ানার প্লেটে ভাত আর মাছ তুলে দিয়ে ইয়ানার দিকে তাকিয়ে থাকল,, ইয়ানা একটু মাছের টুকরো ছিঁড়ে সাথে তরকারি নিয়ে ভাত মেখে কেবলি মুখে দিলো তখনি বুঝলো, মাছ আসলে ভালো করে ভাজি করা হয়নি মাঝে হালকা কাঁচা আছে, আর সবজির কথা তো বাদ ওটা আরো বেশি কাচাঁ ইয়ানা কেবলি আর্দ্র কে বলবে যে রান্না ভালো হয়নি ওরা হেরে গেছে,, আর্দ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল আর্দ্রর মুখটা লাল হয়ে গেছে আগুনের তাপে আর ও ভ্রু কুঁচকে অধীর আগ্রহে ইয়ানার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ইয়ানা কি বলে, ,ইয়ানা আর্দ্রর এভাবে তাকানো দেখে কিছু বললো না মনে মনে কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসি দিয়ে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বুঝালো যে রান্নাটা অনেক ভালো হয়েছে,, ইয়ানার ইশারা বুঝতে পেরে আর্দ্রর কুঁচকানো ভ্রু ঠিক করে মুখে একটা হাসি এনে শার্টের কলার ধরে একটু টেনে এমন ভাব দেখালো যেনো এসব রান্না ওর বাঁ হাতে খেলা,, আর্দ্রের এহেন কাজে ইয়ানা মাথা নিচু করে আবার ও হাসলো ,, ওদিকে অন্তরা আর রোজা এক লোকমা ভাত মুখে দিয়েই ওরা বুঝলো যে ওরা কাঁচা কোনো সবজি খাচ্ছে অন্তরা কেবলি অনিককে কিছু বলতে যাবে তখনি ইয়ানা ওদের দুজনকে থামিয়ে দিয়ে বলল,, সত্যি ভাইয়া আমি জানতামই না আপনি আর আপনার ভাই এতো ভালো রান্না করতে পারেন অনেক সুন্দর হয়েছে তাই না আপু??

ইয়ানার কথা শুনে রোজা আর অন্তরার অবস্থা কাহিল তবুও মুখে হাসি রেখে একটা আধ কাঁচা সবজি চিবতে চিবতে বলল,, হ্যাঁ সত্যি অনেক ভালো লাগছে হিহিহি।

দেখেছো আমি আগেই বলেছিলাম যে আমার সাথে পাঙ্গা নিও না তাহলে হেরে যাবে দেখেছো কেমন হেরে গেলে, আরে এসব তো আমার বা হাতের খেল হুমম? ভাব দেখিয়ে বলল অনিক।

হুমম আপনার বা হাতের খেল বলেই তো তখন আর্দ্র ভাই কাছে ঘ্যান ঘ্যান করছিলেন যে আর্দ্র ভাই যেনো আপনাকে সাহায্য করে ,, ফিসফিস করে কথাটা বলল আকাশ।

সালাবাবু তুমি চুপ থাকো নয়ত আমার সাথে সাথে তোমার ইজ্জত যাবে বুঝলে তাই চুপ থাকাই ভালো আর যত পারো ঢপ মারো।

আচ্ছা তাহলে তো আমাদের খাওয়া শেষ এবার তোমরা খাও আমরা গেলাম,, এই বলে ইয়ানারা তিন জনই উঠে চলে গেলো আর ওরা উঠে,, আর্দ্র ভ্রু কুঁচকে ইয়ানাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকল কেননা ওর কেমন জানো সন্দেহ হচ্ছে ,,, অনিক আর আকাশ লোভে লোভে খেতে বসল,, আহ কতক্ষণ খাইনি ক্ষিদেই যেনো পেটের মধ্যে ইদুর দৌড়াদৌড়ি করছে আরে আর্দ্র এখনো দাঁড়িয়ে আছিস কেনো বস সালাবাবু শুরু করো,,।

হ্যাঁ হ্যাঁ আমার ও পেটের মধ্যে যুদ্ধ চলছে আর্দ্র ভাই বসে পড়ুন নইলে ফুরায় গেলে কিন্তু পরে আফসোস করবেন,, আকাশ আর অনিক আর্দ্র কে ডাকাডাকি করে নিজেরা প্লেটে খাবার বেড়ে নিলো তারপর ভাত মেখে এক লোকমা মুখে দিতেই দুজন দুজনের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থু থু মুখের খাবার টুকু ফেলে দিলো।, কিরে ফেলে দিলি কেনো? ভালো হয়নি?? খাওয়ার জন্য এতো তোরজোর করলি এখন না খেয়ে ফেলে দিচ্ছিস কেনো??

আরে এটা তো খাওয়ারি যোগ্য হয়নি সব কিছু কেমন আধ কাঁচাই রয়ে গেছে, আর মুখ পোড়া ঝাল হয়েছে এটা খাওয়া যাবে না।

অনিকের কথা শুনে আর্দ্র অনিককে কিছু বলবে তার আগেই ওর কিছু একটা মনে পড়ে গেলো তারপর ওদের কিছু না বলেই আর্দ্র ওখান থেকে চলে গেলো।
,,,,,
—-এটা কি হলো??
—কি হবে??
— রান্না ভালো হয়নি ওটা খাওয়ার যোগ্যই হয়নি তাহলে তখন বললে কেনো যে ওটা ভালো হয়েছে??
— হুম আমি কেনো বলেছি,, কি বলুন তো আপনারা এতো কষ্ট করে রান্না করলেন পরে আমরা খায়ে যদি বলতাম যে ভালো হয়নি তাহলে আপনাদের মন খারাপ হতো তাই আপনাদের যাতে মন খারাপ না হয় এই জন্যই বলেছি,, তবুও তো আপনারা হেরে গেছেন এখন বাজি মোতাবেগ আমরা যা বলবো আপনাদের তাই করতে হবে।
— কি চাই তোমাদের??
— বেশি কিছু নাহ, আমি অনেকদিন হলো আমার মামা বাসায় যায়নি আপনাকে আমাকে সহ সবাইকে নিয়ে আমার মামা বাসায় বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে।, তবে এখন না সামনে শীত আসছে, যখন পুরো শীত আসবে, মানে যখন জাঁকিয়ে শীত পড়বে তখন আর ততদিনে আমার পাও সেরে যাবে।

কীহ অসম্ভব আর আমি তো শুনেছি তোমার মামা বাসা তো গ্রামে তাও আবার পুরো শীতে গ্রামে আর গ্রামে নাকি অনেক বেশি শীত পড়ে আবার ওখানে ভালো টাওয়ার ও পাই নাহ, না না আমি যেতে পারবো না।

এটা বললে তো হবে না, আমি যখন যেতে বলেছি তখন যেতে তো হবেই কেননা আপনারাই বাজি ধরেছেন এখন তো আমার চাওয়া রাখতেই হবে।

আর্দ্র কিছু বলতে যাওয়ার আগেই ওখানে আকাশ রোজা অন্তরা অনিক চলে আসলো,, কিরে আর্দ্র কে বলেছিস যে আমাদের কি চাই??

কি চাই তোমাদের? কই আমাকে তো বললে না, এই ইয়ানা রোজা তোমরা কি প্ল্যান করেছো বলোনি কেনো আমায় আমাকে রেখেই প্ল্যান করেছো, বলো বলো কি চেয়েছো আর্দ্রর কাছে??

আরে আপু বলবো বলবো সব বলবো কিন্তু তোমার দেবর তো রাজিই হচ্ছে না।
—- না না এটা বললে তো হবে না, আর্দ্র ভাইয়া ইয়ানা যা চাই আমরাও তাই চাই এখন মাঝ রাস্তায় এসে থেমে গেলে তো চলবে না।
— আরে আর্দ্র ওরা কি এমন চেয়েছে যে তুই না করেছিস, আর যা টাকা পয়সা চাই দিয়ে দে আর যদি কম পড়ে তাহলে বল আমিও কিছু দিচ্ছি।
— না না অনিক ভাইয়া আমাদের টাকা চাই না আমরা শুধু চাই আমাদের সবাই কে নিয়ে ইয়ানা নানু মানে ওর মামা বাসায় বেড়াতে নিয়ে যেতে হবে।
— ব্যাস এইটুকু?? আরে আর্দ্র তুই কি বলতো ওরা এটুকু একটা জিনিস চেয়েছে এটাই তুই দিতে পারছিস না, ওকে ডান আমিই তোমাদের নিয়ে যাবো খুশি।
— অনিক ভাই এতো তারাতারি ডান বলেন না, আর্দ্র ভাই মুখ দেখেছেন নিশ্চয়ই ওখানে কোনো ঘাপলা আছে নয়ত ওনি নিষেধ করতো না, তুমি তো রান্নার মতো আগে আগেই হ্যাঁ বলে দিলে পরে কোনো সম্যসা হলে কিন্তু আর্দ্র ভাই আর আপনাকে সাহায্য করবে না,,, আকাশ ফিসফিস করে অনিকের কানে কানে বলল।
— ঠিকি তো বলেছো সালাবাবু আমি তো এমন ভাবে ভেবেই দেখেনি এখন তাহলে কি হবে?
— কি আর হবে আমরা সবাই এই শীতের মৌসুমে খাঁটি খেজুরের রস আর শীতের পিঠা খেতে গ্রামে যাবো,, ইয়ে,,,,,

— উফফ হয়ে গেলো,, আর্দ্র বিরক্তি নিয়ে কথাটা বলল।

চলবে,,,,,??

(গ্রামে গিয়ে, এবার শীতে আর্দ্র ইয়ানার প্রেম জমে খাঁটি খেজুরের রস হয়ে যাবে🥰🥰)

7 COMMENTS

  1. ৩৬ এর পর আমি কোন পর্ব পাচ্ছি না,,,
    Can you help me,,, next part গুলি কিভাবে পাব,,,
    প্লিজ আমাকে লিংকটা আবার দিবেন???

  2. গল্পের লাইব্রেরী ওয়েবসাইট টা যার তাকে আমার অনেক বকা দিতে ইচ্ছে করছে,
    সেকি আমাদের কমেন্টস গুলি দেখছে না ???
    তারো ত উচিত একটা কিছু রিপ্লে করা,,
    কিন্তু সে ঘুমোচ্ছে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here