আমি সেই চারুলতা পর্বঃ৬

0
1512

#আমি_সেই_চারুলতা
#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া
#পর্বঃ৬
_______________________

শিহাব ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো চারুর চিৎকারে। ওর চিৎকার শুনেই শিহাব বেশ জোরে একটা ধমক দিলো চারুকে। শিহাবের ধমকেই চুপ করে গেলো চারু। ও তো আগেই জানে শিহাব খুব রাগী,
– এই মেয়ে সমস্যা কি তোমার? চিৎকার করছিলে কেনো?
– আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেনো? কেউ দেখলে কি ভাববে? দরজা খুলে দিন।
মিনমিন করে বললো চারু। যেনো গলা থেকে স্বর বের হতে চাইছে না। খুব কষ্টে নিজের সাথে যুদ্ধ করে কথাটা বললো সে।
– এই দরজা খুলবে না। তোমার সাথে আমার কথা আছে। যতক্ষণ না অবধি কথা শেষ হয় ততক্ষণ দরজা বন্ধই থাকবে।
– কথা বলবেন মুখ দিয়ে এখানে দরজার কি কাজ?
শিহাবের ইচ্ছে হলো এই মেয়ের কানের নীচে দুইটা থাপ্পড় দিতে কিন্তু আফসোস শিহাব সেইটা কখনো করতে পারবে না। এই মেয়ের সাহস দেখে শিহাব বিষ্মিত! যেখানে শহরের নামীদামী মানুষ শিহাবের সাথে কথা বলতে ভয় পায় সেখানে এই পুচকে মেয়ে কি না শিহাবকে আদেশ করছে। তাকে প্রশ্ন করছে। তার কাছে কৈফিয়ত চাইছে।
– তোমার সাহস দেখে আমি অবাক। তুমি আমাকে বলবে আমার কি করা উচিত কি করা উচিত নয়?
– না মানে,
– কোনো মানে নেই। তোমার সামনে সোফা আছে চেয়ার আছে যেখানে খুশি বসে যাও।
– মিলি আপু এখনই চলে আসবে। আমাকে যেতে হবে। আমি আপনার সাথে পরে কথা বলি?
– মিলি আসবে না। তাকে আমিই পাঠিয়ে দিয়েছি। যতক্ষণ আমি না বলবো ততক্ষণ সে এখানে আসবে না।
– আপনি পাঠিয়েছেন? কিন্তু কখন? আর আপনি হঠাৎ করে ঘরেই বা কিভাবে আসলেন?
– আমি ঘরেই ছিলাম। মানে বারান্দায় আরকি। সেখান থেকে ঈশারায় মিলিকে চলে যেতে বলেছি।
– সে আসবে কখন?
– যখন আমি বলবো।
– কিন্তু আপনি তাকে কিভাবে বলবেন?
– এই মেয়ে, এক থাপ্পড় দিয়ে তোমার সব দাত ফেলে দেবো। এত প্রশ্ন করো কেনো তুমি? তোমার কাছে ইন্টারভিউ দিতে বসেছি আমি? তোমাকে আমি কথা বলার জন্য ডেকেছি। আমি যা বলবো তুমি শুধু সেটা শুনবে। একদম পাল্টা প্রশ্ন করবে না। নাহলে আমার বারান্দা দেখেছো? এই বারান্দা দিয়ে ছুড়ে নিচে ফেলে দেবো তোমাকে।
– দুঃখিত। আমি তো শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম।
– আর করবে না। আর মিলির ঘরে টেলিফোন আছে। সেখানে ফোন করলেই ও চলে আসবে। এখন বুঝেছো?
– তারও আলাদা টেলিফোন আছে?
প্রশ্নটা করেই ভড়কে গেলো চারু। শিহাব তাকে প্রশ্ন করতে নিষেধ করেছিলো। শিহাবও চোখ রাঙিয়ে চারুর দিকে তাকালো। শিহাবের এভাবে তাকানো দেখে চারু নিচের দিকে তাকালো। এই শীতেও ঘামছে সে। চারুকে চুপ থাকতে দেখে শিহাব এইবার বলা শুরু করলো,
– আমি ঠিক যা যা প্রশ্ন করবো তুমি সরাসরি সেসবের উত্তর দিবে। একটাও উল্টোপাল্টা কথা বললে কিংবা উল্টো প্রশ্ন করলে ছুড়ে ওই জানালা দিয়ে নীচে ফেলে দেবো তোমাকে আমি।
– আপনি কি শুধু থাপ্পড় দিয়ে দাত ফেলতে আর জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিতেই পারেন?
শিহাব এই মেয়ের সাহস দেখে অবাক। কোথায় পায় এই মেয়ে এত সাহস? শাওনও কখনো এভাবে ওর সাথে কথা বলার সাহস পায় না।
– তুমি শাওন কে ভালোবাসো?
চারু বিব্রত হয়ে যায়। ও বুঝতে পারে না ওর কি বলা উচিত। যতই হোক শিহাব শাওনের বড় ভাই। ওকে বলা যায় ওর ছোট ভাইকে ও ভালোবাসে। এইটা নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর। তবে শিহাবকে দেখে মনে হচ্ছে না ওর কোনো অস্বস্তি হচ্ছে।
– কি হলো, উত্তর দাও না কেনো? আমি জানি শাওন তোমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমার জানা প্রয়োজন তুমি শাওনকে ভালোবাসো কি না।
– আপনি জেনে কি করবেন?
– যদি উত্তর হ্যাঁ হয় তাহলে আমি এই বিয়ে টা ভাঙার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আর যদি না হয় তাহলে আমি তোমাকে বিয়ে করে নেবো কারণ জীবনে অনেকেই ভালোবাসে। সবাই তার ভালোবাসার মানুষটিকে পায় না। সেই মানুষটিও হয়তো তাকে ভালোবাসে না। একপাক্ষিক ভালোবাসার জন্য শুধু শুধু একটা হয়ে যাওয়া সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার কোনো মানে হয় না। মা কে কষ্ট দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি মা কে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।
– আপনি খুবই স্বার্থপর আর স্বার্থান্বেষী মানুষ। শুধুমাত্র নিজের আর মায়ের কথাই ভাবলেন? ভাইয়ের কথাটা একবার ভাবলেন না?
– না ভাবার কোনো কারণ নেই। শাওনকে আমি খুবই ভালোবাসি। অনেক ভেবেচিন্তেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
– যদি ভালোই বেসে থাকেন তাহলে কিভাবে এই সিদ্ধান্ত আপনি নিতে পারেন? আমি যদি ওকে ভালো নাও বাসি আপনার কি উচিত আমাকে বিয়ে করা? ও যখন আমাদের বিয়ে দেখবে ওর কষ্ট হবে না? সারাজীবন আমাকে নিজের ভাবি হিসেবে দেখতে কষ্ট হবে না?
– ও তোমাকে কখনো দেখবে না। যদি তোমার সাথে আমার বিয়ে হয় তাহলে আমি তোমাকে নিয়ে শহরে চলে যাবো।
– আপনি খুবই বাজে একজন মানুষ। শাওন ভাইকে বিন্দুমাত্র ভালো বাসেন না আপনি।
– তুমি নিশ্চয়ই জানো আমরা দুই ভাই। আমার জন্মের নয় বছর পর শাওনের জন্ম হয়। আমার জন্মের পর মা বাবা অনেক চেয়েছেন আরেকটা বাচ্চা নিতে কিন্তু পারেন নি। আল্লাহ দেন নি। কিছু কবিরাজও দেখান কিন্তু কোনো কাজে দেয় নি। তখন তেমন ভালো ডাক্তার ছিলো না বিধায় তারা একপ্রকার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন। আমিও চাইতাম আমার একটা ছোট ভাই বা বোন আসুক। সেটাও হলো না। (গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া) আমিও একসময় পর আশা ছেড়ে দেই ভাই বোনের। আর আমরা সবাই যখন সে আশা ছেড়ে দেই তখনই মায়ের প্রেগ্ন্যাসির ব্যাপারে সবাই জানতে পারে। আমার বয়স তখন আট। বেশ খুশি ছিলাম ছোট অতিথির আগমনে। আট মাসের মাথায় জন্ম হয় শাওনের। তখন থেকেই শাওন সবার আদরের। এত চেষ্টার পর জন্ম হয়েছে শাওনের সবাই তাকে ভালোবাসবে সেটাই স্বাভাবিক। বাচ্চা থাকার কারণে শাওনের এত ভালোবাসা আমার হিংসার কারণ হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু হয়নি কারণ আমি নিজেও শাওনকে খুব ভালোবাসতাম। আমার আর শাওনের পছন্দ ছোট থেকেই একইরকম। যেটা আমি পছন্দ করতাম সেটা শাওনের পছন্দ হতো আবার যেটা শাওনের পছন্দ হতো সেটা আমার পছন্দ হতো তাই বাবা মা যেটাই কিনতেন একই রকম কিনতেন দুটোই। পছন্দ এক হওয়ার পরেও আমাদের মাঝে কখনো কোনো জিনিস নিয়ে ঝগড়া হয় নি। কেনো জানো? কারণ যা কিছুই একটা থাকতো আর আমাদের দুজনেরই সেটা পছন্দ হতো আমি সেটা শাওনকে দিয়ে দিতাম। কারণ ছোট থেকেই ওর প্রতি আমার ভালোবাসাটা একটু বেশি। আর এই কারনেই হয়তো ছোট থেকেই ও আমাকে সম্মান করতো। সেই ছোট থেকে আজ অবধি শাওনের সব চাওয়া আমি পূরণ করে এসেছি। এমনকি নিজের অতি পছন্দের সাইকেল টা পর্যন্ত আমি শাওনকে দিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আর একই রকম সাইকেল আমি দ্বিতীয় বার কখনো পাই নি। কিন্তু আমার আক্ষেপ ছিলো না। শাওনের হাসি মুখ দেখলেই আমি আমার সাইকেল হারানোর কষ্ট ভুলে যেতাম। আজ অবধি ওর যত আবদার যা বাবা মা পুরন করেনি সেটা আমি পুরন করে এসেছি। আর এই কারনেই হয়তো শাওনের জীবন এখন এমন। যদি আমরা সবাই শাওনের এই অতিরিক্ত জেদ প্রাধান্য না দিতাম তবে শাওনের জীবন আজ অন্যরকম হতো। এই ছোট গ্রামে পড়ে থাকতে হতো না তাকে। সেও হয়তো লেখাপড়া করে আমাদের মতোই প্রতিষ্ঠিত হতে পারতো। যাই হোক, তোমাকে এত কথা বলার কারণ, শাওন একদিন আমাকে ফোন করে জানিয়েছিলো সে চারুলতা নামের একটা মেয়েকে পছন্দ করে। কিন্তু সমস্যা সে মোটামুটি গরীব ঘরের মেয়ে আর জমিদার বাড়ির বউ হিসেবে মা কখনো গরিব মেয়েকে আনবে না। সেদিন থেকে আমি ধনী পরিবারের মেয়েদের নামে মায়ের কাছে বানিয়ে বানিয়ে অনেক কথা বলতে শুরু করলাম। অর্থাৎ বউয়ের সাথে শাশুড়ির মেলে না সারাদিন তারা ঝগড়া করে আবার গরীব পরিবারের মেয়ে সম্পর্কে বললাম, তারা শাশুড়ী কে খুব মানে। ছেলে বিয়ে করালে গরীব মেয়েই করানো উচিত। আর নিজের গ্রামের মেয়ে হলে আরো ভালো ইত্যাদি ইত্যাদি। এইভাবে পুরো দেড় মাস লাগিয়ে আমি মায়ের ব্রেন ওয়াশ করলাম। বলা বাহুল্য, আমি তখনও তোমাকে দেখিনি। সব কিছু ঠিকঠাক ছিলো। আমি মায়ের ব্রেন ওয়াশ করতে সক্ষম হলেও কিছুটা গন্ডগোল হয়ে যায়। মা শাওনের বিয়ের কথা না ভেবে আমার বিয়ের কথা ভাবতে শুরু করে। ব্যাপারটা জানতে পেরে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। আমার মাথায় ছিলো না আমার বিয়ের আগে মা শাওনের বিয়ে দেবে না। পরে আমি ভাবলাম আমি আগে নাহয় বিয়ে করে নেই তারপর শাওনকে তার পছন্দের মেয়ের সাথে বিয়ে দেওয়া যাবে। এমন মনোভাব নিয়েই আমার ঢাকা থেকে গ্রামে আসা।
এই অবধি বলে শিহাব একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। চারু বুঝলো না সে থেমে কেনো গেলো?
– কি হলো? চুপ করে গেলেন যে?
– এখন আমি যা বলবো চুপচাপ শুনে যাবে। এরপরের ঘটনা তুমি বেশ অনেকটাই জানো আরো জানবে কিন্তু এর মাঝে তুমি কোনো প্রশ্ন করা তো দূরে থাক একটা টু শব্দও করবে না। মনে থাকবে?
চারু হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়লো। এইবার শিহাব বলতে শুরু করলো,
– আমি গ্রামে ফিরে আসি প্রায় দশ বছর পর। এই দশ বছরে শুধু বড় অনুষ্ঠান ছাড়া আমার গ্রামে আসা হয়নি। আর অনুষ্ঠানে এসেও সর্বোচ্চ দুই কি একদিন থাকতাম। ফলাফল, আমার গ্রাম আমারই অপরিচিত হয়ে গেলো। মা যখন আমার বিয়ের কথা ভাবে তখন আমি গ্রামে আসি হাতে একমাসের সময় নিয়ে। অর্থাৎ এখন যে আমি গ্রামে আছি সেটা শুধুমাত্র একমাসের জন্য। এর মধ্যেই বিয়ে শেষ করে আমি ঢাকা চলে যাবো এমনই কথা হচ্ছে আর আমার বউকে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সেখানে নিয়ে যাবো। যাই হোক, গ্রামে আসি রাতে আর পরের দিন বের হই। গ্রামটা ঘুরে দেখার ইচ্ছে পোষণ করি। দশ বছরেই অনেকটাই বদলে গিয়েছিলো গ্রামটা কিন্তু আমার কখনো সেটা দেখার সময়ই হয়নি। দুপুর হতেই বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলাম আমি কিন্তু তখনই কারোর চিৎকার শুনতে পেলাম। আমার গন্তব্যের একেবারে উল্টো দিকে। ভাবলাম কেউ হয়তো বিপদে পড়েছে তার সাহায্যের দরকার। তাই এগিয়ে গেলাম সেদিকে। মধ্যবয়স্ক এক ভদ্রলোক নিজের মেয়ের বয়সী একটা মেয়েকে জোর করে কোথাও নিয়ে যাচ্ছে। আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে বাজে দৃশ্য বোধহয় সেটাই ছিলো। সেখানেই চিৎকার করে বললাম, “ওখানে কে?” দূর থেকে বুঝলাম ভদ্রলোক মেয়েটার হাত ছেড়ে দিয়েছে। কিছুটা এগোতেই লোকটাকে চিনলাম। আমাদের আন্ডারেই কাজ করে লোকটা। আর তার ঠিক পাশেই ভয়ার্ত চেহারায় দাঁড়িয়ে আছে একটা মেয়ে। তার চোখেমুখে ভয় স্পষ্ট। এই শীতেও বেশ ঘেমে গেছে সে। কপালে নাকে হীরের টুকরোর মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম। লম্বা চুলে বেনি করা। বেনি থেকে কিছু চুল খুলে এসে তার গলায় পেচিয়ে এসেছে। কিছুক্ষণ পরপর শুকনো ঢোক গিলছে বাচ্চা মেয়েটি। সারাজীবন নিজের মনে কল্পনা করা রাজকুমারীর সাথে এত মিল কোনো মেয়ের সাথে কখনো পাই নি আমি। প্রথম দেখাতেই যেনো একটা হৃৎস্পন্দন মিস করলাম আমি। দেখে মনে হয়েছিলো মেয়েটা আমার চেয়ে বয়সে হয়তো আট নয় বছরের ছোট হবে। এমনই কিছু ধারণা করে নিয়েছিলাম। তবে মেয়েদের বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমি কতটা কাচা সেটা অবশ্য আমি পরে বুঝতে পেরেছিলাম। আমার পছন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কিছুক্ষণের মাঝেই জানতে পারলাম এটি সেই মেয়ে যাকে আমার ভাই ভালোবাসে। ভুলটা আমারই ছিলো। ছোট থেকেই আমার আর শাওনের পছন্দ এক। তাই শাওনের যাকে পছন্দ হয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই আমারও তাকে পছন্দ হবে এইটা হয়তো আমার কাছে খুব একটা অস্বাভাবিক ছিলো না। খুব দ্রুতই নিজেকে মানিয়ে নিলাম। ছোট থেকেই এমন হয়ে আসছে। আমাদের দুজনের একসাথে যেটা পছন্দ হয় আমি সেটা শাওনকে দিয়ে দেই আর এক্ষেত্রে তো শাওনই তোমাকে আগে পছন্দ করেছিলো। তোমাকে ভালোবেসে আটকে রাখার কোনো কারণই আমার মধ্যে ছিলো না। মনে মনে ঠিক করে নিলাম মা যেই মেয়েকে আমার জন্য ঠিক করে রেখেছে তাকেই বিয়ে করে নেবো আমি। তবে সেখানেও ভাগ্য আমার সহায় হলো না। মা আমার জন্য তোমাকেই পছন্দ করলো। শাওনের কথা ভেবে মানা করলাম মা কে। বললাম মেয়ে পছন্দ হয়নি। মা মানলেন না। তোমাকে পছন্দ না হওয়ার কোনো কারণ ছিলো না। মেয়ের বয়স কম এই অযুহাতও মানলেন না। গ্রামে নাকি এই বয়সেই বিয়ে হয়। সেদিন তোমার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত নিজের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছি আমি। কিন্তু বিশ্বাস করো এই প্রথম বারের মতো আমি ব্যর্থ। এই প্রথমবার শাওনকে কোনো কিছু দিতে আমার কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু আমার মতে শাওনেরই তোমাকে পাওয়া উচিত। ও এতদিন যাবত ভালোবেসে এসেছে তোমাকে কিন্তু আমার অবচেতন মন সেটা কিছুতেই মানতে পারছে না। এর কারণ কি তুমি জানো? কারণ হলো আমার অন্যান্য পছন্দের জিনিসের তুলনায় তুমি অনন্য। তোমার তুলনা সম্ভব নয়। অন্য জিনিসগুলো হয়তো আমি মনোযোগ দিয়ে খোজাখুজি করলে একইরকম আরেকটা জিনিস পেয়ে যেতাম। কিন্তু তুমি? তুমি তো একটাই আছো। তোমাকে কিভাবে আরেকটা খুজে বের করবো আমি? অতঃপর সিদ্ধান্ত নিলাম তোমাকেই সব জানাবো। তুমি আর শাওন যদি একে অপরকে ভালোবাসো তাহলে আমি সরে যাবো আর যদি না বাসো তাহলে তোমাকে সময় নিতে বলবো। তুমি যাকে চাইবে তাকে বেছে নেবে। তুমি কাকে বেছে নেবে সেই সিদ্ধান্ত আমার নয় কারণ তুমি কোনো জিনিস নও। তুমি মানুষ। তোমার প্রান আছে। অনুভূতি, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা সবই আছে। তোমার ইচ্ছা অনুযায়ীই তুমি কাউকে বেছে নেবে। তবে আমি বলবো তুমি যেনো শাওনকে বেছে নাও কারণ সব দিক থেকে শাওনই তোমার জন্য ভালো হবে। তোমরা একে অপরকে আগে থেকে চেনো। বয়সে ভারসাম্য আছে। ও তোমাকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসে ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তাছাড়া সবচেয়ে বড় কথা আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো কিন্তু শাওন পারবে না। ছোট থেকেই ও যা চেয়েছে তাই পেয়ে এসেছে ও, তাই হঠাৎ করে নিজের এই অমূল্য জিনিস হারাতে দেখতে পারবেনা সে। এখন জিজ্ঞেস করতে পারো, সব জেনেও আমি কেনো তোমাকে বেছে নিতে বলছি। নিজে চলে গেলেই তো হয়। আমার উত্তর হবে, আমি যদি নিজে চলে যাই তাহলে সবসময় মনে হবে আমি সরে না গেলে তুমি আমার হতেও পারতে। কিন্তু তুমি নিজেই যদি শাওনকে বেছে নাও তবে আমার এমন কিছু মনে হবেনা। আমিও শান্তি পাবো আর শাওনও। ওহ, আরেকটা কথা, তুমি ভেবো না শাওনকে বিয়ে করলে তোমাকে সর্বক্ষণ আমার সামনে থাকতে হবে। আমি আগেই বলেছি গ্রামে আমি বেশ আসি না। দুই ঈদে এসে একদিন একদিন করে থেকে যাই আর কোনো বিয়ে হলে আসি তাই তোমাকে আমার সামনে থেকে অস্বস্তিতে পড়তে হবে এমন কিছু ভাবার কোনো কারণ নেই। এখন তুমি বলো তুমি কি শাওনকে ভালোবাসো?
শিহাবের কথা শুনে চারু ঝিম মেরে বসে রইলো। পৃথিবী যেনো ঘুরছে তার। এমন কিছু শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না সে। আজ ও এতবড় ধাক্কা খাবে তা সে কল্পনাও করতে পারেনি। চারু উত্তর দেওয়ার মতো কিছু পাচ্ছেনা। শিহাবকে কি বলা উচিত হবে ও শাওনকে ভালোবাসে? শিহাব হয়তো চারুর উদ্বিগ্নতা বুঝতে পারলো।
– আমি বুঝতে পারছি তুমি বলতে পারছো না। অস্বস্তি হচ্ছে হয়তো। তুমি যদি শাওনকে ভালোবাসো তাহলে আমাকে ইশারা দাও। মানে আমার বা পাশের ঘরটাই মিলির ঘর। তুমি যদি ওকে ভালোবাসো তাহলে এখান থেকে উঠে চলে যাও। বাকি যে কথা আছে সেটা আমরা পরে বলবো। আর যদি না বাসো অর্থাৎ তুমি ভাবার জন্য সময় নিতে চাও তাহলে এক মিনিট এখানে চুপচাপ বসে থাকো।
চারু আরো দশ সেকেন্ডের মতো সেখানে বসে রইলো তারপর ধীরে ধীরে উঠে দরজা খুলে মিলির ঘরের দিকে চলে গেলো। চারুর চলে যাওয়া দেখে শিহাব একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। ভালোই হয়েছে। এইটাই হওয়া উচিত ছিলো। চারুলতাকে যখন দেখেছিলো তখন মনে হয়েছিল এখন হয়তো আর সে চারুকে ছাড়তে পারবে না। সে এতবছর শাওনকে যা দিয়ে এসেছে এখন তার বিনিময়ে ওর থেকে ওর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদকে কেড়ে নিতে চলেছে। এমনটা হলে সারাজীবন আফসোস করতো ও। ভালোই হয়েছে চারু চলে গিয়েছে।

চারু মিলির কাছে চলে যাওয়ার পর আর কোনো কথা হয়নি শিহাব আর চারুর মধ্যে। শাওন এখন গ্লাস ভরে ভরে পানি খাচ্ছে৷ জমিদার গিন্নি ওর হাত থেকে আচার কেড়ে নিতেই ও আবার পানি নিয়ে বসেছে। ওর ঠিক কি পরিমাণ ঝাল লাগছে তা ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তবে ও এত ঝাল আচার কেনো খেলো সেটাই কেউ বুঝতে পারছেনা। অনেক কাজ পড়ে থাকায় সেদিকে কেউ কোনো নজর দিলো না শুধু শাওনের দাদি এক বাটি চিনি এনে দিলো তাকে। শাওন সেই চিনি খেয়ে ঝাল নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছে। শাওনকে দেখে সত্যিই খুব মায়া লাগছে চারুর। শাওনের চোখেমুখে এমনিও বেশ মায়া কাজ করে। আচ্ছা মায়াবতীর পুরুষবাচক শব্দ কি? পুরুষদেরও কি মায়াবতী বলা হয়? বলা হলে শাওনকে নিঃসন্দেহে মায়াবতী বলা যেতো। চারু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শাওনের দিকে। কারোর দিকে এক দৃষ্টিতে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকলে অপর পাশের ব্যক্তি সেটা বুঝতে পারে। শাওনও পারলো। কিন্তু সে যখনই চারুর দিকে তাকালো চারু মাথা নিচু করে ফেললো। কিন্তু আজ এখানে অন্য কিছুও হয়ে পারতো। এরই মাঝে শাওনের দাদি শিহাবকে ডাকাডাকি করতে শুরু করে দিলো। তার ইচ্ছে তিনি তার নাতি আর নাতবউকে একসাথে দেখবেন। ওনার চিৎকার চেচামেচি তে একপ্রকার বাধ্য হয়েই নিচে নেমে এলো শিহাব। এই প্রথম হামিদ শিহাব কে দেখলো। এই শিহাব হামিদেরও বারো বছরের বড়। ওর সাথেই নাকি ওর ছোট বোনের বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। চারু কি কোনো দিক থেকে কম? কেনো তার বিয়ে নিজের চেয়ে বয়সে এত বড় লোকের সাথে হতে হবে? যদিও শিহাবকে দেখে বোঝার উপায় নেই ওর বয়স ত্রিশ। ২৫-২৬ বলে অনায়াসে চালিয়ে দেওয়া যাবে। সবাই বিশ্বাসও করবে। তাও এই ব্যাপারটা হামিদের কাছে ভালো লাগছে না। শিহাব এসে চারুর বিপরীত সোফায় বসতে চাইলেও তার দাদি তাকে বাধা দিয়ে চারুর সাথে বসতে বললো। শিহাব জানে চারু তার ছোট ভাইয়ের হবু বউ তাই তার সাথে বসতে বেশ অস্বস্তিই লাগছে। আবার ভাবছে এইটাই হয়তো শেষ বারের মতো ওর পাশে বসা। তাই অস্বস্তি রাখলো না মনে। ভালোবাসা অপরাধ নয়। সেও ভালোবেসেছে শাওন ও ভালোবেসেছে। চারুও ভালোবেসেছে। অন্যায় তো করেছে প্রকৃতি। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলো না। সবকিছু একই রকম পছন্দ করে বলে কি জীবনসঙ্গিনীও একই মানুষকে পছন্দ করবে? এতে অবশ্য কারোরই কোনো দোষ নেই। শিহাব যদি প্রথমেই চারুকে দেখে নিতো তাহলে হয়তো আর তাকে এমন অবস্থায় পড়তে হতো না। দাদিকে দেখানো শেষ হতেই শিহাব উঠে যেতে চাইলো।
– আজ খুব জোরে বৃষ্টি হবে। রেডিওতে শুনেছিলাম। হয়তো তোমাদের থাকতে হতে পারে। যদি থেকে যাও তাহলে তোমার সাথে আমার কথা আছে। আমিই যাবো চিন্তা করো না।
– কোথায় যাবেন? আর রাতে দেখা না করাটাই ভালো বলে মনে হয়।
– দেখা করা জরুরি। আমার কথা শেষ হয়নি। আমি আসবো তোমার ঘরে। আর ভয় পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। মেয়েদের আমি সম্মান করতে জানি আর যাকে আমি ভালোবাসি তাকে কখনো আমি অসম্মান করবো না এতটুকু জেনে রেখো।
শিহাব আর চারুর এমন ফিসফিসিয়ে বলা কথা চোখ এড়ালো না শাওনের দাদির।
– কি গো নাতি, হবু বউয়ের লগে এত কি কথা? কয়দিন সবুর করো তারপর তো কথা কওনের জন্য সারাজীবনই পাইবা।
দাদির কথা শুনে ঘরে থাকা প্রত্যেকেই হেসে উঠলো। অনেকে জোরে হাসলো আবার অনেকে মুচকি হাসলো। হাসলো না কেবল শাওন, চারু আর শিহাব। চারু একবার শাওনের দিকে তাকালো। সে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। একবারের জন্যেও ওদের দিকে তাকাচ্ছে না। ওর ই বা কি দোষ? ও তো স্বীকারই করেছে শিহাবের সাথে ও চারুকে সহ্য করতে পারেনা।

শেষ পর্যন্ত শিহাবের কথাই ফললো। সন্ধ্যার পর থেকেই বেশ জোরেশোরে বৃষ্টি শুরু হলো। শীতকালে এমন বৃষ্টি আগে কখনো নামতে দেখেনি চারু। এইটা হয়তো শীত নামিয়ে দেওয়া বৃষ্টি। রাস্তাঘাট কাদায় মাখামাখি হয়ে গেছে। এ সময় কোনো গাড়িও পাওয়া যাবে না। এই বৃষ্টির মাঝে কে ছুটবে নিজের গরুর গাড়ি নিয়ে? বাধ্য হয়েই জমিদার বাড়িতে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা। মনোরমার বেশ অস্বস্তি হচ্ছিলো এভাবে এ বাড়িতে থাকতে কিন্তু বাড়ির প্রত্যেকের সুন্দর ব্যাবহারে বেশিক্ষণ এই অস্বস্তি টিকলো না। (গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া) সবাই তাদের আলাদা যত্ন করছে। ছেলের হবু শশুড় বাড়ির মানুষ বলে কথা। নাজিমুদ্দিন আর মনোরমাকে একঘরে দেওয়া হলো। হামিদের জন্য এক ঘর আর চারুর জন্য একঘর। চারুর ঘরটা শিহাবের ডান পাশে। এই প্রথমবারের মতো একা ঘরে ঘুমাতে যাচ্ছে চারু। যদিও হামিদ অন্যঘরে থাকে কিন্তু সেখানে তো কোনো দরজা নেই তাই আর আলাদা মনে হয় না। কোনো কিছু হলেই সাথে সাথে হামিদ কে ডাকা যাবে। কিন্তু এখানে সে একদম একা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাত আটটার মধ্যেই ঘুমাতে চলে গেলো সবাই। বাইরে এখনো ঝুম বৃষ্টি হয়ে চলেছে। চারু ঘরে ঢুকতেই বেশ বড় একটা খাট দেখতে পেলো। সে চৌকিতে ঘুমায়। কে জানে খাটে ঘুম আসবে কি না। আবার বেশ নরম একটা কম্বল দেওয়া হয়েছে তাকে। চারু কোনোরকমে শুয়ে পড়লো। তার মনে হচ্ছিলো এই নতুন পরিবেশে একটুও ঘুম হবে না তার। কিন্তু তার ভাবনা সম্পূর্ণ ভুল করে ঘুমরাজ খুব দ্রুতই তার চোখে অবস্থান করলেন। অপরদিকে শিহাবের যে তার ঘরে আসার কথা সেটা বেমালুম ভুলে গেলো সে। কিছুক্ষণের মাঝেই কিছু আওয়াজ শুনে ঘুম ভেঙে যায় চারুর। দেওয়ালে পেন্টিং এর পেছন থেকে আওয়াজ আসছে। চারু উঠে বসলো। কিছুক্ষণের মাঝেই পেন্টিং টা জানালার মতো খুলে কেউ ভেতরে ঢুকলো। চারু হতভম্বের মতো সেদিকে তাকিয়ে রইলো। এতক্ষণে ঘুমরাজ তার চোখ থেকে পালিয়েছে।
– আপনি ছবির ভিতর থেকে কিভাবে এলেন?
– গুপ্ত দরজা।
সেখান থেকে ঢুকতে ঢুকতে জবাব দিলো শিহাব। ঢুকেই চারুকে কিছু বলতে যাবে তারপরেই অন্য দিকে ঘুরে গেলো সে।
– গুপ্ত দরজা কেনো?
– এই জমিদার বাড়ি অনেক আগে বানানো হয়েছে। আর শত্রুপক্ষের থেকে বাচার জন্য গুপ্ত দরজাও লাগানো হয়েছে। একটা বিশেষ চাবির মাধ্যমে ওই দরজা খোলে। এইটা অবশ্য আমি আর বাবা ছাড়া এখন কেউ জানে না। পরে আবার আমি আর শাওন তার আমাদের পরের জেনারেশন। এভাবে এগোতে থাকবে আরকি। নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ ” নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ” এবং ফলো করে সাথেই থাকুন।
চারু খেয়াল করলো কথাটা বলার সময় শিহাব বিন্দুমাত্র তার দিকে তাকালো না।
– আপনি ওদিকে তাকিয়ে আছেন কেনো?
– নিজের দিকে তাকাও তাহলেই বুঝবে।
শিহাবের কথা বুঝতে না পেরে চারু নিজের দিকে তাকালো। অবাক হয়ে খেয়াল করলো তার শরীরে ওড়না নেই। হায় আল্লাহ! ও শিহাবের সামনে এভাবে বসে আছে? ছিহ, চারু তাড়াতাড়ি নিজের ওড়না গায়ে জড়িয়ে নিলো।
– আপনি আমাকে আগে বলেন নি কেনো?
– তুমি যেটা নাও নি আমি সেটার নাম ভুলে গিয়েছিলাম। সেটাই মনে করার চেষ্টা করছিলাম।
চারু অবাক হয়ে বসে রইলো। শিহাব কি না ওড়নার নাম ভুলে গিয়েছিলো। অবশ্য অবাক হওয়ার কিছু নেই। শিহাব তো আর ওড়না পড়েনা।
– তো যেইটা বলতে এসেছি সরাসরি বলি। এখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না আমি। আমি বিয়ে ভেঙে দেবো এর জন্য আমার তোমার সাহায্য চাই।
– আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারবো না। যা করার আপনাকেই করতে হবে।
– কেনো? সাহায্য কেনো করতে পারবে না?
– বাবা যদি জানতে পারে আমার মা কে মেরে ফেলবে। মা ছাড়া এই দুনিয়ায় আমার আর কেউ নেই।
চারুর কথাটা যেনো কেমন অসহায়ের মতো শোনালো। শিহাবেরও বেশ মায়া লাগছিলো চারুর উপর। তাই কিছু না বলে চুপচাপ সেখান থেকে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ হলো সে।
– চলে যাচ্ছেন যে? কিছু তো এখনো বললেনই না।
– কি বলবো? আমি এসেছিলাম তোমার সাহায্য চাইতে। তুমি যেহেতু পারবে না তাই আমাকে যা করার করতে হবে।
শিহাব চুপচাপ চলে গেলো। এত কষ্ট করে এই দরজা খোলাই বৃথা গেলো তার। চুপচাপ আবার দরজা লাগিয়ে নিজের ঘরে শুয়ে পড়লো সে। ঘুম আসছে না তার। চারু কে যেদিন থেকে দেখেছে সেদিন থেকেই তার ঘুম হচ্ছে না আর। চোখ বন্ধ করলেই চারুর সেই ভয় মিশ্রিত চেহারাটা চোখে ভাসে। নাহ! এভাবে ঘুমানো সম্ভব নয়। সে ছবি আকতে শুরু করলো। যখনই ও কোনো কিছু দ্বারা কষ্ট পায় তখনই সে ছবি আকে। এইবার সে ভিন্ন কিছু চেষ্টা করলো। চারুকে নিজের ছবিতে ফুটিয়ে তুলতে চাইলো সে। প্রথমেই চারুর ভয় মিশ্রিত একটি ছবি একে ফেললো সে। ইশ! এমনই এক রাজকুমারীকেই তো সে নিজের মনে স্থান দিয়েছিলো। তাহলে এই রাজকুমারী কেনো তার হলো না? শিহাব আরো বেশ কয়েকটি ছবি আকলো তার। চারুকে আকতে গিয়ে যেনো চারুতে মত্ত হয়ে গিয়েছে সে। অবশেষে শিহাব আরো একটি পাগলামি করে ফেললো। শিহাব একটি ছবি আকলো যাতে দেখা যাচ্ছে ও পরম যত্নে জড়িয়ে ধরে রেখেছে চারুকে। আর চারুও শিহাবকে ভালোবেসে নিজের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে কিন্তু আফসোস এইটা আর কখনোই হবার নয়।

বিঃদ্রঃ গল্প পড়ে এমন বেশ কয়েকজন কে আমি পেইজে লাইক করার জন্য ইনভাইট করলাম কিন্তু তন্মধ্যে কয়েকজন ছাড়া আর কেউই ইনভিটিশন এক্সেপ্ট করলো না। কিন্তু তারা রেগুলার গল্প পড়ে যাচ্ছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, যারা গল্প পড়েন তারা পেইজে একটা লাইক দিয়ে যাবেন।

#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া

(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)

To Be Continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here