আমি সেই চারুলতা পর্ব-১৮

0
1909

#আমি_সেই_চারুলতা
#Shuvra_Ahmed_Priya
#পর্বঃ১৮
_______________________

– শিহাব তুই কাল রাইতে কই ছিলি?
– শাওনের কাছে ছিলাম মা।
– মিথ্যা কস ক্যান? তোর ছোট চাচায় সারা রাইত শাওনের লগে ছিলো। কই তুই তো যাস নাই।
শিহাব অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। এইমাত্রই বাড়ি ফিরেছে সে আর এখনই জমিদার গিন্নি তার উপর প্রশ্নবাণ নিক্ষেপ করছে।
– তোর হাত কেমনে কাটলো শিহাব? আর আমি বুঝতাছি মাথায় আঘাতও জাবিনের জন্য হয় নাই। আমি তহন খেয়াল করি নাই কিন্তু আমি দেখছি তোর মাথার র*ক্ত কিছুটা জমাট বাধা ছিলো। জাবিনের আঘাতে র*ক্ত বের হইলে তো তাজা র*ক্ত থাকতো না?
শিহাব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এখন আর কিছু লুকিয়ে লাভ নেই। জমিদার গিন্নি বোকা হলেও সব বুঝতে পেরেছেন।
– হ্যাঁ মা ঠিকই ধরেছো। আমি তোমাদের মিথ্যে বলেছি কিন্তু বিশ্বাস করো, এই মিথ্যেটা বলার প্রয়োজন ছিলো। আমি এখন তোমাকে কিছুই বলতে পারছিনা কিন্তু দেখো একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
– কি হইছে শিহাব?
– বলবো মা। এখন দয়া করে কিচ্ছু জিজ্ঞেস করো না। আমি যা করছি যতটুকু করছি সব আমাদের পরিবারের জন্য। কিন্তু, আমি তোমার কসম কেটে বলছি আমার জন্য কখনো কারোর কোনো ক্ষতি হয়নি আর হবেনা। তোমার ছেলের উপর বিশ্বাস রাখো মা। আমি জানি আমি তোমার নিজের ছেলে না কিন্তু তোমার আদর্শে বড় হয়েছি আমি। কখনো সে আদর্শের অপমান করবোনা। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি মা।
জমিদার গিন্নি শিহাবের মুখ চেপে ধরলো। তার চোখে দেখা যাচ্ছে এক সমুদ্রসম ভয়।
– চুপ এই কথা আর কহোনো বলবি না। তুই আমার পোলা। বুঝতে পারছস তুই? কেউ যেনো এইসব আজেবাজে কথা না জানে।
শিহাব কিছু বললো না। এই মমতাময়ী মহিলা তার নিজের মা নয় ভাবতেই কষ্টে বুকের ভিতরটা ভেঙে গুড়িয়ে যাচ্ছে তার।
– শিহাব তুই কি তোর আসল বাপ মা খুজতে চাইতাছস? আমারে ছাইড়া চইলা যাবি তুই?
– না মা। তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাওয়ার আগে আমার মৃত্যু হোক। আমি আমার মন প্রাণ আত্মা সবকিছু দিয়েই তোমাকে নিজের মা মানি।
– তুই আমারে কথা দে আমারে রাইখা কহোনো যাবি না। কথা দে।
– কথা দিলাম মা। কখনো যাবো না।
– সত্যিই কইরা বল তুই কাইল রাইতে কই ছিলি। তোর মাথায় আঘাত লাগলো কেমনে।
শিহাব চুপ করে রইলো। সে চায়না তার মা তার জন্যই কষ্ট পাক।
– বল না শিহাব। কই গেছিলি তুই?
– আমি তাদের কাছে ফিরে যাবোনা মা কিন্তু একবারের জন্য হলেও আমার জন্মদাতাকে দেখতে চাই। যে হাসপাতালের বেডে আমাকে ফেলে চলে গিয়েছিলো। তুমি চিন্তা করোনা মা। সে শুধুই আমার জন্মদাতা। আমার মা শুধু আর শুধুমাত্র তুমি।

★★★

নতুন বাড়িতে এসেছে আজ এক সপ্তাহ হলো। চারু বারবার ফাতেমার সাথে ভাব জমানোর চেষ্টা করলেও ফাতেমার কোনো আগ্রহ না দেখে বারবার তাকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। নাহ! ফাতেমার সাথে তার সখ্যতা বোধহয় সম্ভব না। এই তো দুদিন আগের কথা। চারু চেয়েছিলো ফাতেমাকে কাজে সাহায্য করতে। ফাতেমা বললো হামিদ পছন্দ করবেনা সেটা। হামিদ নাকি ফাতেমা ছাড়া অন্য কারোর কাজ পছন্দ করেনা। চারু অবাক হয়েই তাকিয়ে ছিলো ফাতেমার দিকে। সারাজীবন হামিদের জামাকাপড় ধোয়া, বিছানা গোছানো, সকালের রান্না করা সব চারুই করেছে আর হামিদ নাকি চারুর হাতের করা কাজ পছন্দ করবেনা। সেই অবধি নাহয় ঠিকই ছিলো কিন্তু পরে আবার বিরবির করে বলছে কেউ তার কাজে সাহায্য করেনা। সব কাজ তার একাই করতে হয়। তারপর চারু একপ্রকার জোর করেই রান্নার দায়িত্ব নিলো। রান্না খেয়েই খেপে উঠলো হামিদ,
– তুমি চারুরে দিয়া রান্না করাইছো ক্যান? ওরে কি আমি কামের মানুষ হিসাবে আনছি? ও শুধু পায়ের উপর পা তুইলা খাইবো। তুমি ক্যান ওরে দিয়া রান্না করাইলা।
হামিদের রাগ ছিলো নিতান্তই অবাস্তব। চারুকে কাজের জন্য আনেনি তবে কি ফাতেমা কাজের মেয়ে? কিন্তু এই কথাটা বলার সাহস চারু কিংবা ফাতেমার হলোনা। চারু মনস্থির করলো হামিদের রাগ কমলে এই বিষয় নিয়ে কথা বলবে। ফাতেমা কোনোমতে ভয়ে ভয়ে বললো,
– ও না আমিই রান্না করছি।
ফাতেমার বোকাবোকা কথাবার্তায় সে নিজেই ফেসে গেলো।
– তুমি আমারে শিখাইবা কোনটা চারুর হাতের রান্না আর কোনটা তোমার? সাত বছর বয়স থেইকা চারু প্রতিদিন সকালের খাবার রান্না করতো আর মা মারা যাওয়ার পর থেইকা তিনবেলাই চারু রানতো। আট বছরের বেশি সময় আমি চারুর রান্না চিনি। একদম উল্টাপাল্টা কথা বইলা আমার মেজাজ বিগড়ে দিবানা।
– আমার রান্না কি ভালো হয়নি?
– তোর রান্নার ধারের কাছেও যাইতে পারবোনি ওর রান্না? কিন্তু তুই আমার কাছে আছস তোরে আমি আর কোনো কষ্ট পাইতে দিমুনা।
সেদিন রগচটা হামিদের রাগের সময়ে বলা কথার প্রতিউত্তর করতে পারেনি দুজনের কেউই। ফাতেমার সাথে সখ্যতা গড়ে না ওঠার আরো একটা বড় কারণ হামিদ নিজেই। অবশ্য হামিদকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রান্নার কাজটা চারু করার অনুমতি পেয়েছে। ফাতেমার রান্না তেমন ভালো না বিধায়ই হয়তো পেয়েছে। হামিদ ছোটবেলা থেকেই সবাই হাতের রান্না খেতে পারেনা। অবশ্য ফাতেমার রান্না খুব একটা খারাপও না। অন্তত শেফালীর চেয়ে শতগুণে ভালো।

নতুন বাড়িটির ছাদের উপর বসে ছিলো চারু। তার পাশেই এসে বসলো হামিদ,
– কাল তোরে কলেজে ভর্তি করায়া দিমু। ভালো একটা কলেজের সন্ধান পাইছি। কিন্তু,
– কিন্তু?
– কিন্তু কলেজে ভর্তি হইতে শুনলাম সার্টিফিকেট লাগে। তোর তো সার্টিফিকেট নাই। তাছাড়া চার মাস পার হইয়া গেছে এরজন্য একটু সমস্যা হইবো। তাও আমি কলেজে কথা বলছি। ভর্তি হওয়া যাইবো কিন্তু সার্টিফিকেট লাগবোই।
– এখন কি হবে?
– শুনছি কিছু টাকা দিয়া নাকি বোর্ড থেইকা সার্টিফিকেট উঠানো যায়। কালকে উঠায়া তারপর ভর্তি করাইতে হইবো।
– একদিনে উঠানো যাবে?
চারুর প্রশ্নে হামিদ একটু দ্বিধায় পড়ে গেলো। আসলেই তো, একদিনে কি উঠানো যাবে?
– সেসব বাদ দাও, তোমার কাজ কেমন চলছে বলো।
– আগের মতোই। এহন ভাবতাছি আরেকটু বাড়াইতে হইবো কাজ নইলে এত কম টাকা দিয়া সংসার চলবো না।
– আমি তোমাকে খুব ঝামেলায় ফেলে দিলাম না?
– আমি তোরে এমন কিছু কইছি?
– না তারপরও মনে হচ্ছে। আমার জন্যই তো এত এক্সটা খরচ।
– ওইসব তোর ভাবতে হইবো না। তোর যা লাগবো সেইটা বলবি। পূরণ করার দায়িত্ব আমার।
– আমাদের ভাগ্যটা এমন না হলেও পারতো তাই না বলো?
– মায়ের মৃত্যুই আজ আমাদের এ অবস্থার জন্য দায়ী। আচ্ছা মা নাহয় নাই কিন্তু নানাজান কি আমাদের সাথে একটু দেহা করতে পারতো না?
– মা বেঁচে থাকতেই তো সে কোনো যোগাযোগ রাখেনি। মৃত্যুর পর কিভাবে রাখবে বলো।
– তোর নানার চেহারা মনে আছে চারু? তোর যহন আট বছর তহন আমরা শেষবার নানা জানের বাড়ি গেছিলাম। তোর মনে আছে কি না জানিনা কিন্তু আমার মনে আছে, ওইদিন বাপজান আর নানার মধ্যে কিছু একটা নিয়া ঝামেলা হইয়া যায় তারপর বাসায় আসার পর বাপজান মায়েরে অনেক মারধর কইরা কয় যেনো নানা জানের সাথে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে। মাও তার কথা মাইনা নিছিলো। ওইদিনের পর থেইকা আর ওই বাড়ির সাথে মায়ের কোনো যোগাযোগ নাই। আমার কি মনে হয় জানস?
– কি?
– আমার মনে হয় নানা জান এহোনো জানেনা আমার মা আর নাই। আমার মায়েরে অনেক আদর করতো নানাজান। তোর হয়তো মনে নাই কিন্তু আমি দেখছিলাম। নানাজান বেশ কয়েকবার আসছিলো মায়েরে দেখতে কিন্তু বাপজান দেহা করতে দেয় নাই। তারে আমার বাপ ডাকতেও ঘেন্না হয়।
– একটা কথা বলি?
– বল।
– না থাক, বাদ দাও। এইসব এখন মূল্যহীন। বলে কোনো লাভ নেই।
– বল না।
– আগে আমার একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। তুমি ভাবিকে নিজের ইচ্ছে তেই বিয়ে করেছিলে তো?
– হুম কিন্তু বিয়ার আগে তারে দেহি নাই। ম্যানেজাররে দেইখা ধারণা করছিলাম তার বইন তার মতোই হইবো কিন্তু পরে দেহি ম্যানেজার হইছে তার মায়ের মতো সাদা। আর ফাতেমা তার বাপের মতো কালা। যাই হোক, যা হইছে সেটা তো আর বদলান যায়না। তাছাড়া ফাতেমারে বিয়া করায় কিছু সুযোগ সুবিধা পাইছি। ঘরের কাজকাম করার জন্য তো একজন লাগতো। কামের মানুষ রাখতে গেলে শহরে মোটা অংকের টাকা গুনতে হয়। ফাতেমারে শুধু খাওন পরন দিলেই চলে। আমার চাকরিটাও ফিক্সড হইয়া গেছে।
– তোমার তাকে পছন্দ হয়নি? এর কারণ কি শুধুই গায়ের রঙ?
– না। একে তো এই মহিলা বোকা তার উপর হিংসুটে। মাঝেমধ্যে অসহ্য লাগে তারে আমার। আবার বয়সও মনে হয় আমার সমান। তারে বিয়া না করলে আরো অনেক ভালা মাইয়া পাইতাম আমি।
চারু হামিদকে তার কথাটি আর বলতে চাইলোনা। শুধু শুধু এখন এইসব হামিদকে বলে তার সংসারে আগুন লাগানোর কোনো মানেই হয়না। বিন্দিয়া অনেক আগে থেকেই পছন্দ করতো হামিদকে। হামিদ অবশ্য তাকে চিনতো না কিন্তু বিন্দিয়ার ভাষ্যমতে এখন হামিদ তাকে চেনে। তাদের কথাও হয়েছে। বিন্দিয়া দেখতে সুন্দরী, বয়স কম বিন্দিয়াকে যেকেউই পছন্দ করতে বাধ্য। এখন এই কথা হামিদকে জানানো মানে শুধুই তার আফসোস বাড়িয়ে দেওয়া। গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া।

মধ্যরাতে হঠাৎই ঘুম ভেঙে গেলো চারুর। সে অনুভব করলো তার ভীষণ পানির তেষ্টা পাচ্ছে। জগে পানি নেই। পানি নেওয়ার জন্য উঠে বসলো চারু। নতুন এই বাড়িতে দুটো বেডরুম। একটায় চারু থাকে অন্যটায় হামিদ আর ফাতেমা। একটা রান্নাঘর আরেকটা বাতরুম। পানি আনার জন্য রান্নাঘরে যেতে হবে। পানি নিয়ে আসার সময় কিছুটা চিৎকার চেচামেচির আওয়াজ শুনলো চারু। সম্ভবত, হামিদ আর ফাতেমার মাঝে কিছু একটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। চারু সেদিকে যেতে চাইলো না। এইটা সম্পূর্ণই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, এখানে তার ঢোকার কোনো অধিকার নেই কিন্তু চিৎকার চেচামেচি ক্রমশই বেড়ে চলেছে। চারু বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারলো না। এগিয়ে গেলো ওঘরের দিকে। ফাতেমা চিৎকার করে বলছে,
– এমনিই আপনের বেতন মাত্র সাত হাজার টাকা। এই টাকা দিয়া দুইজন মানুষ ক্যামনে চলে? আপনে আবার আপনের বইনেরে নিয়া আসেন কোন আক্কেলে? সংসার কেমনে চলবো? এহন আবার তারে লেহাপড়াও করাইতে চান।
– আমার বইনেরে আমি লেখাপড়া করামু তোর বাপের কি? তোর বাপের টাকায় লেখাপড়া করামু আমি ওরে? সাত হাজার টাকা বেতনে যদি তুই চলতে না পারস তাইলে তোর বাপের বাড়ি যাইয়া লক্ষ লক্ষ টাকায় রাজরানি হইয়া থাক গিয়া।
– খবরদার বাপ তুইলা কথা কইবেননা। এতদিন অনেক চুপ থাকছি আর পারমুনা। আপনে আজই আপনের বইনেরে বিদায় করবেন। তার লগে এক বাড়িতে আমি থাকমুনা।
– না থাকলে বিদায় হ। আমার ঘাড়ের উপর বইসা রইছস ক্যান? তুই না থাকলেও তো আমরা দুইজন একটু শান্তিতে থাকতে পারি। পরের মাইয়ার এক পেট বেশি চালাইতে হয়না আমার। আমি আমার বইনেরে খাওয়ামু। পরের বাড়ির মাইয়ারে খাওয়ামু ক্যান আমি?
ফাতেমা স্তব্ধ হয়ে গেলো। হামিদের এমন উত্তর আশা করেনি সে। তার ভাবি যতবার তার ভাইকে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে তার ভাই ততবারই তার হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছে আর হামিদ কিনা তাকে চলে যেতে বলছে? এত ভালোবাসা তার বোনের প্রতি।
– আপনে আমারে চইলা যাইতে কইলেন?
– হ কইলাম। তোর ভাই আমারে ঠকায়া তোর মতো একটা কালা মাইয়ার লগে আমার বিয়া দিছে। বিয়ার আগে একটা ছবিও দেয় নাই। আবার তোর বয়সও আমার চেয়ে বেশি। এমন বুড়ি লইয়া আমি সংসার করমু ক্যান?
– হায় খোদা, কি কন আপনে এইগুলা? আমি আপনের বড় ক্যান হমু? আমি আপনের এক বছরের ছোট।
– কি যে ছোট ওইটা দেহাই যায়। একটা কথা ভালো কইরা শুইনা রাখ, আমার বইন এইহানেই থাকবো। তোর থাকতে মন চাইলে থাকবি নইলে বাসা থেইকা বাইর হইয়া যাবি। আমার বাসায় থাকবি, আমারটা খাবি আর আমার বইনেরে সহ্য করতে পারবিনা এইটা তো হইবো না।
– আপনের বইনের মূল্য আপনের কাছে আমার থেইকা বেশি?
– খবরদার আমার বইনের লগে নিজের তুলনা করবিনা। তার দাসী বান্দি হওয়ার যোগ্যতাও তোর নাই। তোর মতো মাইয়ারে যে আমি মাইনা নিছি হেইডাই অনেক। তুই আবার আমারে ছাইড়া দেওয়ার ভয় দেখাস। তুই আমার জীবন থেইকা গেলে আমি আরো অনেক সুন্দর মাইয়া পামু। এই কালা ভূত লইয়া আমার বইসা থাকতে হইবোনা।
চারুর আর ভেতরে যাওয়ার ইচ্ছে হলোনা। দরজার বাইরে থেকেই ফিরে এলো সে। ফাতেমা তাকে পছন্দ করেনা সেটা হয়তো স্বাভাবিক। সে তো ঠিকই বলেছে, মাত্র সাত হাজার টাকায় কিভাবে তিনজন মানুষের চলে? আর তাছাড়া কোনো মেয়েই চায়না তার প্রিয় মানুষ তার চেয়ে বেশি প্রায়োরিটি অন্য কাউকে দিক কিন্তু হামিদ? সে কেনো ফাতেমার সাথে এমন আচরণ করছে? হামিদ কবে থেকে এমন হয়ে গেলো? হামিদ তো এমন ছিলোনা। ফাতেমার প্রতি তার অবহেলার কারণ শুধুই কি তার গায়ের রঙ? নাজিমুদ্দিন ও মনোরমাকে সহ্য করতে পারতোনা তার গায়ের রঙের কারণে। নাজিমুদ্দিনের র*ক্তই বইছে হামিদের শরীরে। তবে কি আবারও অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে?
চারু স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলো। নাহ, কখনোই এমনটা হতে পারেনা। হামিদ কখনোই নাজিমুদ্দিনের মতো হবেনা। এই হামিদকে ছোট থেকেই চিনে আসছে সে। আর যাই হোক, হামিদ কখনোই এমনটা হতে দেবেনা। চারুর ঘরের বাতি জ্বালানোই ছিলো। ঘরের বাতি জ্বালানো দেখে ঘরে প্রবেশ করলো হামিদ,
– কি রে তুই এহোনো ঘুমাস নাই? রাইত জাগস ক্যান? শরীরের জন্য ভালা না। ঘুমা চুপচাপ।
– ঘুম আসছেনা। আমার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলবে?
– কি কথা?
– এমনিই কথা। আচ্ছা তুমি ভাবিকে পছন্দ করো না কেনো?
– আগেই তো কইছি। ওই মাইয়া কালো, বোকা, হিংসুটে। এমন মাইয়ারে পছন্দ করন যায়না।
হামিদের কপালের রগগুলো ফুলে উঠেছে। চেহারায় দেখা যাচ্ছে ভীষণ রাগের আভাস।
– আমাদের মাও তো শ্যামলা ছিলেন তার জন্যই বাবা আমাদের মা কে পছন্দ করতেন না। তবে কি আবারও অতীতের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে?
কথাটা বলার সময় চারুর গলা ধরে এলো। হামিদ চমকে উঠে চারুর দিকে তাকালো। মিথ্যা বলেনি চারু। আসলেই এমন হয়েছিলো। এ কি করতে যাচ্ছিলো সে? নাজিমুদ্দিনের ওই বিশ্রী ঘটনার পুনরাবৃত্তি কি না ঘটাতে চলেছিলো সে?
– তবে কি আরো একবার অসহায় চারু আর হামিদের জন্ম হবে? এমনটা হতে দিও না প্লিজ। চারু আর হামিদের জীবন যে খুবই কষ্টের। আরো দুজন চারু আর হামিদকে জন্মাতে দিও না।
হামিদ মেঝেতে বসে পড়লো। আসলেই সে এইটা কি করতে যাচ্ছিলো? মনোরমা শ্যামলা ছিলো বলেই আজ তাদের এই দুর্ভোগ। সে নিজেও কি না এমন ঘটনা ঘটাতে চলেছিলো? তবে কি বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সেও নাজিমুদ্দিনের মতো হয়ে যাবে? নাহ অসম্ভব! প্রয়োজন হলে শরীরের সব রক্ত সে ফেলে দেবে তাও নাজিমুদ্দিনের মতো হবেনা। কখনোই হবেনা।

★★★

মাথা থেকে ব্যান্ডেজের কাপড় খুলছে শিহাব। আঘাতটা বেশ জোরেসোরেই লেগেছে। ভাগ্যিস জাবিন চোর ভেবে আঘাত করেছিলো নইলে কে জানে আবার এই মাথা ফাটা নিয়ে কিসের অযুহাত দেখাতে হতো। ওর অবস্থা তো খুব একটা ভালো না। শাওনের সাথে সাথে তাকে সামলানো এখন দুষ্কর কিন্তু কিছুই করার নেই। মেয়েটা ভীষণ রকম পাগলামি করছে। আরে বাবা প্রেমে কি মানুষ ব্যর্থ হয়না? কয়জন এমন পাগলামি করে? এভাবে কেউ কাচের গ্লাস মাথায় ছুড়ে মারে? একটু এদিক সেদিক হলেই শিহাব সোজা উপরে চলে যেতো। ভাগ্যিস পরিবারের সাথে সে নেই নইলে তার বাবা মা তাদের আদরের মেয়ের এ অবস্থা দেখেই পটল তুলতো। মেয়েরা এত ইমোশনাল কেনো হয় কে জানে? কই শিহাবও হারিয়ে ফেলেছে তার স্বর্ণলতাকে কিন্তু সে তো দিব্যি বেঁচে আছে।
চারুর কথা মনে হতেই ভেতর থেকে এক দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো। কে জানে পনেরো বছরের সেই কিশোরী টার মায়া সে কেনো ছাড়তে পারেনা। কি আছে তার মধ্যে? সে তো এখন অন্য কারোর। চারু নিশ্চয়ই এখন আরো বড় হয়েছে। সে কি এখনো আগের মতো মিষ্টি করে ভয় পায়? শিহাবের আঁখি দ্বয় জলে ভরে উঠলো আর ঠোঁটে দেখা গেলো হাসি। কি মিষ্টি ছিলো পুরোনো দিনগুলো। সেদিনগুলো না গেলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? চারু এখন অন্যকারো, ভাবতেই বুকের ভিতরটা ভেঙে গুড়িয়ে যায় তার। কে জানে শাওন যদি চারুকে বিয়ে করতো তবে সর্বক্ষণ চারুকে দেখার পর কি অবস্থা হতো ওর? নিশ্চয়ই একেবারে পাগল হয়ে যেতো সে। তবে শাওন চারুকে নিঃসন্দেহে খুবই ভালোবাসতো নইলে এত বড় একটা স্টেপ সে নিতে পারতো না। আচ্ছা আবার যদি চারুকে পাওয়ার একটা সুযোগ শিহাব পায় তাহলে কি সে চারুকে নিজের করে নেবে? সম্ভবত না। শাওন কখনোই সেটা মানতে পারবেনা। আচ্ছা চারুর বিয়ের তো প্রায় দেড় বছর হয়ে এলো। গ্রামে তো বিয়ের বছর না ঘুরতেই বাচ্চা হয়ে যায়। চারুরও কি বাচ্চা আছে? শিহাবের মনটা হঠাৎই বিষিয়ে উঠলো। চারুর শরীরে অন্যকারো স্পর্শ যেখানে সে মানতে নারাজ সেখানে অন্য কারোর ভালোবাসার চিহ্ন থাকবে এইটা সে কিছুতেই মানতে পারছেনা। বারবার শুধু মনে হয় চারু শুধুই তার। আর কারোর হতে পারেনা সে। তার শরীরে অন্যকারো স্পর্শ থাকতে পারেনা। সেবার যখন মজিদ সামান্য চারুর হাতটা ধরেছিলো তখনই মেরে তার হাত পা অবধি ভেঙে দিয়েছিলো শিহাব আর এখন চারু অন্যকারো। তাকে ছোয়ার অধিকারও অন্য কারোর। শিহাব চাইলেও সেখানে বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেনা। পৃথিবীর বিষাক্ততম অনুভূতিই বোধহয় নিজের প্রেয়সী অন্যের বিছানায় আছে সেটা জানতে পারা। আচ্ছা, আল্লাহ যদি চারুকে ওর জন্য, ওর ভাগ্যে লিখে রাখতো তবে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? শাওন যদি চারুকে ভালো না বাসতো তাহলেও কি খুব বেশি ক্ষতি হতো? জামাল হোসেন নামক লোকটা যদি চারুর জীবনে না আসতো তাহলে কি খুব বেশি ক্ষতি হয়ে যেতো? কেনো এমন হলো? এইটা হওয়া কি খুব প্রয়োজন ছিলো? চারু কি তাকে একটু ভালোবাসতে পারতো না? এই জীবনে আর কাউকেই আপন মনে হয়না শিহাবের। বারবার মনে হয় জমিদার গিন্নি শুধুই তাকে করুনা করে। বাসার অন্য সকলের ভালোবাসা পেলে মনে হয় এই ভালোবাসার উত্তরাধিকার সে নয়। এত কিছুর মাঝেও প্রথম কাউকে ভালোলাগা আর তাকে ভালোবাসা ছিলো চারু কিন্তু এই চারুও তার রইলো না। এ জীবনে ভালোবাসার বড্ড অভাব তার। সে সবসময় চায় কেউ তাকে ভালোবাসুক। তার অস্তিত্ব জুড়ে শুধু আর শুধুমাত্রই শিহাব থাকবে কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো না। কিছু মানুষের জন্মই হয় ভালোবাসা বিহীন। শিহাবও বোধহয় তেমনি এক মানুষ। আজও শিহাবের মনে আছে সেই দিনটির কথা। তার জীবনের সবচেয়ে বিভীষিকা ময় দিন ছিলো সেটা। অনিচ্ছায় বাবা মায়ের কিছু কথা শুনে নেয় সে। কথাগুলোর সারমর্ম এইরূপ যে,
যেদিন জমিদার গিন্নি প্রথম সন্তান জন্ম দেন তার বয়স তখন সবেমাত্র পনেরো। বাচ্চা ও মায়ের উভয়ের জীবন ঝুঁকিতে ছিলো। জমিদার গিন্নিকে বাঁচানো গেলেও বাচ্চাটাকে বাঁচানো যায়নি। জমিদার গিন্নি পাগলের মতো নিজের বাচ্চাকে চাইছিলো। সেদিনই হাসপাতালে জন্ম হয় আরেকটি শিশুপুত্রের। তাকে জন্ম দিয়েই মৃত্যু বরণ করলেন মা। বাচ্চাটার বাবাও এরপর আর কোনো খোঁজ নেয়নি তার। সেই শিশুপুত্রকেই জমিদার সাহেব তুলে দিলেন জমিদার গিন্নির হাতে আর সেদিনের সেই শিশুপুত্রই আজকের এই শিহাব। এই ঘটনা কেবল জমিদার গিন্নি আর জমিদার সাহেবই জানেন আর বছর চারেক আগেই সেটা জানতে পারে শিহাব। সেদিন থেকেই তার জীবনটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সে যাই অর্জন করে, মনে হয় এইটা তার নিজের না। জমিদার গিন্নির সেদিনের করুনার জন্য আজ সে এখানে। গল্পের আসল লেখিকা স্নেহা ইসলাম প্রিয়া। জমিদার গিন্নি কখনো শাওনের সাথে শিহাবের ভেদাভেদ করেনি তাও শিহাবের মনে হয় এসবই শুধুই করুনা। ভাগ্যিস শাওন এইসব জানেনা। জানলে তার ভালোবাসাও শিহাবের শুধুই করুনা বলে মনে হতো। শাওনকে খুবই ভালোবাসে শিহাব। তার করুণা মানতে পারবেনা সে। জীবন আসলেই খুবই জটিল। মাঝেমাঝে এমন অনাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটে যায় মনে হয় যেনো জীবনের মোড়টাই ঘুরে গেলো।

সকাল হতেই শিহাব আবার বেড়িয়ে গেলো। জমিদার বাড়ির সকলেই এখন শহরে আছে কিছুদিনের জন্য। শিহাব সবার থেকে কিছুটা দূরে আলাদা একটা বাড়িতে থাকে। তাদের কাছাকাছি গেলেই মনে পড়ে যায় এরা কেউ তার নিজের নয়, শুধুই করুনা করে চলেছে তার উপর। আরো একজন বাড়ি থেকে দূরে আছে আর সেটা হলো মিলি। ছোট চাচার বড় মেয়ে মিলি। ও এখন যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারই সামনে একটা ছোট বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে সে আর তার দুই বান্ধবী। মিলির দুই বান্ধবী এখন ছুটিতে তাদের গ্রামের গেছে। সে বাসায় মিলি একা। অনেক বলার পরেও মিলি এ বাড়িতে আসতে রাজি হয়নি। এর কারণ অবশ্য শিহাব জানে। সপ্তাহ দুয়েক আগেই তার সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে তার। মেয়েটা অনেক ভেঙে পড়েছে। ভালোবাসার কোনো কমতিই ছিলোনা তাদের মাঝে কিন্তু তাও কেনো বিচ্ছেদ হলো সে এক রহস্য। মিলির ভাষ্যমতে, আরো একজন মেয়ের সাথে সম্পর্ক রয়েছে তার। তাই মিলি নিজেই বিচ্ছেদের রাস্তা বেছে নেয় কিন্তু বিচ্ছেদ করেও সেটা মানতে পারছেনা মিলি। বারবার পাগলের মতো আচরণ করে চলেছে আর তাকে সামলাতে গিয়েই শিহাবের এই বেহাল। সেদিনও কাচের গ্লাস মাথায় ছুড়ে মেরেছিলো। ভাগ্যিস সঠিক সময়ে শিহাব সরে গিয়েছিলো নইলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতো। পরে আবার বারবার এসে সরি বলেছে কিন্তু কি লাভ? কিছু একটা হয়ে গেলে তো শিহাব সোজা উপরে চলে যেতো। সেদিন থেকেই মিলি রান্নাবান্না একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে। বাইরের খাবারও খেতে পারেনা সে। বাধ্য হয়েই বোনের জন্য রান্না করছে শহরের খুব বড় একজন ব্যাবসায়ী শিহাব। বাহ কি ভাগ্য তার! আবার রান্না করতে গিয়ে হাতও কেটে ফেলছে। ছোট থেকেই মিলিকে নিজের বোনের মতো ভালোবেসে এসেছে শিহাব। এমনি এমনি ছেড়েও দিতে পারছেনা। আচ্ছা, মিলি যদি জানতে পারে শিহাব তাদের বংশের কেউই না তবে কি মিলি শিহাবকে ভাই মানবে? মানতেও পারে আবার নাও পারে। না মানলেও বা কি? এই মানুষেরাই এখন শিহাবের আপনজন। তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা শিহাব কল্পনাও করতে পারেনা।
ঘরে ঢুকতেই মিলিকে দেখা গেলো সে সাজগোছ করছে বসে বসে। শিহাব অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মিলির দিকে। এই দুই সপ্তাহে মিলিকে কখনো হাসতেও দেখা যায়নি। তবে কি মিলি এসব কিছুর থেকে মুভ অন করলো? শিহাবের ভিতর থেকে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস বেড়িয়ে এলো। ভালোই হয়েছে এই মেয়ের পাগলামি আর দেখতে হবেনা। কোনদিন যেনো শিহাবকে আল্লাহর কাছেই পাঠিয়ে ছাড়তো সে।
– মাথা থেকে ওই ছেলেটার ভূত নেমে গেছে?
– ও ভূত কেনো হবে? আমাদের মধ্যে সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।
শিহাব একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে এসি অন করে দিয়ে সোফায় গা এলিয়ে দিলো,
– দুই সপ্তাহের পরিশ্রম বৃথা গেলো। আরে বোন যদি সব ঠিকঠাকই করে নিবি তাইলে এই দুই সপ্তাহ এত কষ্ট কেনো করালি?
– ছোট বোনের জন্য এইটুকু করতে পারবা না? কেমন ভাই তুমি?
– হ্যাঁ পারবোনা কেনো? তার জন্য মাথা ফাটিয়েছি, হাত কেটেছি, রান্না করেছি। আর কি করা বাকি আছে?
– সরি বলেছি না আমি।
– যাই হোক, ভালোই হয়েছে সব ঠিক হয়েছে। এই পাগলামি আর সহ্য হচ্ছিলো না। এইবার বল সব ঠিক কিভাবে হলো।
– আমিই ভুল ছিলাম। ওর কারোর সাথে কোনো সম্পর্কে ছিলো না। ও প্রমাণ দিয়েছে আমাকে।
– এখন কি দেখা করতে যাচ্ছিস?
– হুম। আচ্ছা ভাইয়া তোমাকে একটা প্রশ্ন করি?
– কর।
– তুমি কখনো কাউকে ভালোবেসেছো? যদি বাসো তাহলে সে যদি তোমার না হয় তাহলে তুমি কিভাবে থাকবে?
– হঠাৎ এ প্রশ্ন?
– কেনো যেনো মনে হয় আমি যাকে ভালোবাসি তাকে আমি পাবোনা।
– আরে আমি আছি না? এত চিন্তা করিস কেনো? তুই যাকে চাইবি সেই তোর হবে।
– প্রশ্নের উত্তর কিন্তু দিলেনা। তুমি কাউকে ভালোবাসো? সত্যি বলবে কিন্তু।
– বাসি তো।
– কে সে? কোথায় থাকে? কবে বিয়ে করছো?
– তার নাম স্বর্ণলতা। বিয়ে হয়ে গেছে তার। সে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অপ্রাপ্তি। কই তাতে কি হয়েছে? বেঁচে আছি না আমি?
নরম কণ্ঠে কথাটা বললো শিহাব। মিলি স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো,
– বিয়ে হয়ে গেছে মানে? তুমি কিছু করলেনা?
– কি করতাম? সে যে অন্য কাউকে ভালোবাসতো। কিন্তু দুভার্গ্য, সে যাকে ভালোবাসতো তাকে সে পায়নি। সেই ছেলেটা আমার ভীষণ কাছের।
– একেবারে ভালো হয়েছে। কাউকে কষ্ট দিয়ে কখনো সুখে থাকা যায়না। এই তার প্রমান।
– আমি চাইনা সে কষ্টে থাকুক। ভালোবাসা আর সুখের চাদর সবসময় তাকে মুড়িয়ে রাখুক। সেই চাদর ভেদ করে কখনো যেনো তাকে কোনো কষ্ট ঘ্রাস না করতে পারে। জীবনে অনেক কষ্ট পেয়ে এসেছে সে। এইবার তার সুখ প্রাপ্য। আমার না হোক, কিন্তু যার কাছে আছে তার হয়েই খুশি থাকুক আমার স্বর্ণলতা।

বিঃদ্রঃ আর মাত্র তিন থেকে চারটি পর্ব বাকি রয়েছে প্রথম পরিচ্ছেদের। খুব শীঘ্রই শেষ করে দেবো প্রথম পরিচ্ছেদ। যারা যারা পড়ছেন, এই শেষ সময়ে প্রত্যেকের রেসপন্স আশা করছি। আপনাদের রেসপন্স যতটা ভালো হয় আমার লেখাও ঠিক ততটাই উন্নতমানের হয়। ধন্যবাদ সবাইকে। হ্যাপি রিডিং।

#স্নেহা_ইসলাম_প্রিয়া

(কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)

To Be Continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here