#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 16 – 17
পিউ বসে আছে সোফায় কাজী বিয়ে পড়াচ্ছে! আশেপাশে সবাই গোল হয়ে দাড়িয়ে.. পিউ এর বুক ধুকপুক ধুকপুক করছে! মনে হচ্ছে শূন্য পৃথিবীতে বসে আছে পিউ আশেপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই পিউ এর কানে যাচ্ছেনা! শুধু নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে বসে আছে পিউ৷ পিউ এভাবেই বসে আছে যে তার কানে কাউর কথা যাচ্ছেনা৷কাজী পিউকে কবুল বলতে বলছেন দুতিন বার পিউ শুনছেই না শুনবে কি করে? কি হচ্ছে সেটাই তো পিউএর মাথায় ঢুকছেনা! পিউ এর বাবা মেয়ের নির্লিপ্ত চাহুনি দেখে মেয়ের কাছে গিয়ে ডাক দেয়!
— পিউ? এই পিউ কি ভাবছিস!
সবাই পিউ আর তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে উৎসুক দৃষ্টিতে! ছেলের বাড়ীর মানুষ কেমন খুতখুত চোখে তাকিয়ে পিউ এর দিকে। ছেলের বাড়ীর এমন চাহুনি আন্দাজ করে পিউএর মা৷ মেয়ের পাশে দাড়িয়ে ক্ষেপে ফিসফিস করে বলেন।
— এই মেয়ে বাবার মান সম্মান ডুবাচ্ছো কেনো? ওরা ভুল ভাবছেন আমাদের!
মার কথা শুনে নির্লিপ্ত তাকিয়ে থাকা পিউ একটু নড়েচড়ে বসে হঠাৎ কবুল বলে উঠে তিন বার!পিউ বলার পড়ে ছেলেও কবুল বলে দেয়! বিয়ে হয়ে যায় সবাই মিষ্টি মুখ করে!
বিয়ে পড়ানো শেষ হতেই ছেলের আংকেল সবার সামনেই পিউ এর বাবার সাথে কথা বলতে বসেন আর আব্দার করে বলেন পিউ এর বাবার কাছে,
— বেয়াই আমরা আজি মেয়ে নিয়ে যেতে চাই!! পড়ে অনুষ্ঠান করা যাবে! এখন তো যেকোনো সময় বিয়ের অনুষ্ঠান করা যায় এগুলা কোনও ব্যাপার না! কিন্ত বিয়ে যেহেতু হয়েও গেছেতো আজ আমরা মেয়ে না নিয়ে যাবোনা!
ছেলের আংকেল এর সাথে তাল মিলিয়ে। ছেলে ফুপু খালাও একি করা বললেন৷ চিন্তিত পিউ এর বাবা। পিউ এর দিকে তাকালেন। পিউ আগের মতো নির্লিপ্ত নির্বিকার দৃষ্টিতে মাথা নিচু করে বসে আছেন। কি জানি ওনার একটু মায়া হলো উনি বললেন।
— বেয়াই! আমার এক মাত্র মেয়ে পিউ সবার আদরের৷ হঠাৎ সব হয়ে গেলো যদিও এতো দ্রুত বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা ছিলো না। মেয়ে তো আপনাদের হয়েই গিয়েছে তাও অনুষ্ঠানের পড়েই না হয় একবারে যাবে পিউ।
পিউ এর বাবার কথা তারা রাখেনি। অনেক বলার পড়েও। পিউকে নিয়ে তারা রাত ১০ টায় নিজের বাড়ীর উদ্দেশ্য রৌনা দেবেন বলে বেরিয়ে পড়ে। পিউকে বিদায় দেয় সময় পিউ আস্ফির বাইক নিয়ে দাড়িয়ে থাকা রাস্তায় তাকিয়ে বাবাকে ধরে হাউমাউ করে কেদে দেয়!
কান্নাকাটির পড় পিউ এর বাবা পিউকে তার বর এর পাশে গাড়ীতে উঠিয়ে দেয়৷ গাড়ী চলতে থাকে! পিউ নিশব্দে কেদে যাচ্ছে গাড়ীতে তার বর, বরের বন্ধু,বরের খালাতে বোন সবাই কথা বলছে মজা করছে! আর পিউ এর অস্থির লাগছে চিনে না জানেনা! একটা ছেলেকে একবার মুখ তুলে দেখেওনি আর বিয়ে হয়ে গেলো কি করে থাকবে পিউ অজানা অচেনা যায়গায়!
পিউ এসব ভাবতে ভাবতে গাড়ী বরের বাড়ীর সামনে থামে! বরের খালাতো বোন পিউকে ধরে ভেতরে নিয়ে যায় একটা রুমে বসিয়ে দেয়। পিউ বসে বসে কান্না করছিলো তখন তার বর রুমে ঢুকে পিউ ভয়ে দাড়িয়ে যায়৷ পিউএর বর পিউ এর একদম সামমে এসে দাড়ায়!
পিউ একবার মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে৷পাঞ্জাবি পরিহিত এটা আস্ফি তার চোখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে পানির মতো করে৷ ভয়ে পিউ আস্ফির থেকে দূরে চলে যায়। আর চিৎকার করে কেদে দেয়৷ পিউ সারা ঘর থেকে পালানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। পিউ বুঝতে পারছে ঘুমের মধ্যেও যে সে একটা বাজে স্বপ্নের শিকার হয়েছে কিন্তু তাও সে কেদে যাচ্ছে চিৎকার করে ভয়ে হাত পা কাপছে।
পিউ এর বাবা মা ব্রেকফাস্ট করছিলেন ডাইনিং এ মেয়ের রুম থেকে গলা ছেড়ে কান্নার স্বর আসতে দুই জন নিজেদের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে দৌড়ে মেয়ের রুমে যায়৷ তাদের কলিজায় পানি নেই বললেই চলে মেয়ে তাদের কাদছে কেনো আবার ?? পিউ এর রুমে গিয়ে দুই জন দেখলেন পিউ কোল বালিশ জড়িয়ে হাউমাউ করে কাদছে৷ পিউ এর মা বাবা বুঝতে পারলেন। মেয়ে স্বপ্ন দেখে কাদছেন৷ তাই পিউএর মা মুখ ভেঙচিয়ে বললেন,
— রাজকুমারীর যত ঢঙ সব বাবার থেকে শিখেছে! আর কত দিন এমন করবে ঘুমের মধ্যে??
পিউ এর বাবা রেগে বললো,
— মেয়েটা স্বপ্ন দেখে কাদে প্রায় সময়ি এটা তুমি আমি জানি! তাতেও আমার দোষ??
পিউএর নাদিয়া চলে গেলো আরেকটা ভেঙচি কেটে! তা দেখে পিউ এর বাবা বিরবির করলো,
— মন চায় সারা জীবনের জন্য মুখটা ভেঙচি স্টাইল করে দেই ! ভেঙচি কাটার শখ মিটে যেতো একদম !
পিউর বাবা আয়মান এবার মেয়েকে বিরক্ত স্বরে ডাকলেন,
— পিউউউউউ এই ফাজিল মেয়ে উঠ বলছি!! আর কতো দেখবি স্বপ্ন !!
বেশকিছু ক্ষণ ডাকার পড়ও কাজ না হলোনা পিউ কেদেই যাচ্ছে ঘুমে তাই তিনি রেগেই বললেন,
— কিরে উঠবিনা? দাড়া এখুনি উঠবি। হয়েছিস তো মার মতন ঝগড়াটে। তবুও দোষ হয় আমার!
বলেই তিনি বেড সাইড থেকে পানির গ্লাস হাতে উঠিয়ে তিনি মেয়ে মুখে গ্লাস ভর্তি পানি ছিটকে মারলেন। তাতে পিউ সাথে সাথে হুরমুরিয়ে উঠে বসে বাবাকে দেখে ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো!
কেদে কেদেই পিউ বলছে,
— বাবা… বাবা গো তুমি আমার বিয়ে দাওনি তো বাবা?? আমি বিয়ে করবোনা বাবা! আমি বিয়ে করবোনা!!
পিউ এর বাবা ঠাট্টার স্বরে বললেন,
— বিয়ে দেবো? কে করবে তোকে বিয়ে?? মার থেকে শিখে শিখে হয়েছিস তো ঝগড়ার রাজকুমারী! কে করবে এমন ঝগড়ার মেশিন কে বিয়ে!
পিউ বাবার দিকে তাকিয়ে আছে এই কথা শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে! তারপর হেসে বললো,
— হিহি তুমি বিয়ে দিলেও আমি করবোনা মাথায় ঢুকিয়ে নাও। আর হ্যাঁ একদম কথা বাড়াবেনা! না হলে এখুনি মাকে ডেকে বলবো। তুমি বলেছ আমি মার থেকে শিখে শিখে ঝগড়ার মেশিন হয়েছি৷
আয়মান ঘারড়ে গেলো মেয়ের কথায়৷ কারন এই কথা নাদিয়ার কানে গেলে বাসায় কয় দিন চুলায় আগুন ঝলবে না আল্লাহ মাবুদ জানেন৷ তাছাড়া মেয়ের মত ছাড়া তিনি মেয়ের বিয়ে দিবেন না তাই ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই! তাই তিনি হেসে মেয়ের পাশে বসে৷পিউ এর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললেন,
— পাগল নাকি আমার রাজকুমারীর বিয়ে আমি এতো জলদি দিবো?? রাজকুমারীর হাড় শক্ত না হলে দিবো না বিয়ে!
পিউ মিষ্টি করে হেসে বাবাকে জরিয়ে ধরে বললো,
— আই লাভ ইউ মাই ফার্স্ট রাজকুমার!!
— আই লাভ ইউ টু মাই রাজকুমারীর!
পেজন থেকে নাদিয়া নাক ফুলিয়ে বললো,
— হয়ে গেছে সকালের ড্রামা ইশ বিয়ে দেবে না সারা জীবন ঘাড়ে তুলে রাখবেন তিনি!
পিউ রেগে বললো,
— ভুল মা আমি শুধু আমার রাজকুমার এর না তোমার কাধে বসেও খাবো!
আয়মান আর পিউ হেসে দিলো। নাদিয়া রেগে পায়চারি করলো সারা সকাল। উনার এক কথা। আয়মান মেয়েকে বেয়াদব বানিয়েছে আদর দিয়ে বাদর তৈরী করেছেন!
দুপুরে পিউ তার দেখা স্বপ্নের কথা ভাবছিলো! আজ সকালের মতন স্বপ্ন পিউ আস্ফির সাথে দেখা হওয়ার পড় থেকেই দেখে আসছে এই স্বপ্নের কারণ পিউ আজও বুঝেনা। কিন্তু আস্ফির ঐ রক্তঝরা চোখের কথা মনে হলে পিউ এর আর আস্ফিকে দুই চোখে দেখতে ইচ্ছে করেনা! এই যেমন দুইদিন আস্ফির সাথে কথা না হওয়ায় পিউ এর মনে হচ্ছিলো সে মরেই যাবে। কিন্তু আজ সকালের স্বপ্ন দেখে! পিউ এর মন বলছে আস্ফি আর কখনই তার সামনেই না আসুক তাই ভালো! আবার মন চায় আসুক। পিউ এর মন গিরগিটি হয়ে গেছে গিরগিটি মতন ক্ষনে ক্ষনে রঙ বদলায়! মূলত এই স্বপ্নই ছিলো আস্ফিকে রিজেক্ট করার মেইন কারণ যেটা কেউ জানেনা। পিউ এর ভাবনার মধ্যেই ফোন বেজে উঠে পিউ আস্ফি ভেবে দ্রুত ফোন পিক করে৷
— হ্যালো আস্ফি??
— আস্ফিকে পিউ??
পিউ অবাক হয়ে বললো,
— আপনিকে??
— আমি আরাফ পিউ নাম্বার দেখোনি??
— ওহ না আসলে.. বাদ দাও তোমার গলা এমন শোনাচ্ছে কেনো কিছু হয়েছে??
আরাফ প্রায় কান্না করে দিয়ে বললো,
— পিউ বাবা মা দুইজন খুবি অসুস্থ হয়ে পড়েছে টিয়া টিয়া করে খাওয়া দাওয়া সব ছেলে দিয়েছে! বাবার শ্বাস কষ্ট বেড়েগিয়েছে! মার আজ কয়দিন যাবত জ্বর আমি কি করবো আমি বুঝতে পারছিনা! বাবা মা আমার সাথে কথাও বলে না! ডক্টর দেখাতে যায়না! আমার কথাও শুনে না! ঐদিকে পাড়া-প্রতিবেশীদের যন্ত্রণা আমি আর পারছিনা পিউ৷
পিউ আরাফের কথা শুনে কেদে দিলো। পিউ বুঝতে পারছে আরাফের কষ্ট। পিউ বললো,
— তুমি চিন্তা করো না আরাফ! আমি আসছি আন্টি আংকেলকে আমি বুঝাবো। আর পাড়াপ্রতিবেশীদের কথা এখন ভাবার সময় নয় আন্টি আংকেলকে আগে সুস্থ স্বভাবিক করতে হবে! তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি আসছি এখুনি!
আরাফ নিজেকে সামলে বললো,
— ঠিক আছে!
আরাফকে বুঝিয়ে পিউ ফোন কেটে রেডি হয়ে মার কাছে গেলো,
— মা আমি টিয়ার বাসায় যাচ্ছি! আসতে একটু লেইট হতে পারে!
— এই সময় টিয়ার বাড়ী কেনো যাবি আর টিয়া তো নেই তাহলে….!
পিউ তার মাকে সব বললে আর অমত করে না নাদিয়া! পিউ বেরিয়ে যায় বাসা থেকে টিয়ার বাসার উদ্দেশ্য রিকশা করে চলে যায় !
.
টিয়া বারান্দায় দাড়িয়ে আছে সামনে বিশাল সমুদ্র টার দিকে তাকিয়ে আছে সে! বাড়ীটা সুন্দর একটি জায়গায় গড়া পেছনের সাইডের এই বারান্দায় দাড়ালে সামনের অপরূপ সুন্দর দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়! বিশাল বড় বিচ পেরিয়ে সমুদ্র কিন্তু তার আগেই এই বাড়ীটি ঐ রাতে টিয়া৷ বিচ সাইডের মানে বাড়ীর পেছনের মেইন ডোর দিয়ে বেরিয়েছিলো তাই সে সমুদ্র এর দিকে চলে গিয়েছে! ভেবেই দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুমে চলে এলো টিয়া!
ঐরাত এর পড় ডেনিয়াল আর আশেনি টিয়ার সামনে৷ ঐ ঈগলকে আর দেখতে হয়নি সেটা এক ভালোলাগা হলেও৷ সারাদিন কোন কাজ নেই তাতে টিয়া বোড় হয়ে গেছে! এই রুমেই তার রাত দিন পার হয়৷ একটু ভালোলাগেনা টিয়ার কি করবে ভেবে কূলকিনারা খুজে পায়না সে! খাওয়া শাওয়ার ছাড়া কিছু করার নেই! না এই রুমে টিভি আছে না ফোন না অন্যকিছু! ব্ল্যাক জিন্স, আর ব্ল্যাক লুজ শার্ট টিয়ার পড়নে৷ নিজেকে আয়নায় দেখছে টিয়া সুন্দরই লাগছে তাকে কিন্তু তাতে কি সে বন্দি পাখি। কোন কিছুই যেনো এটা ভেবে ভালো লাগেনা টিয়ার যে সে ডেনিয়ালের হাতে বন্দি৷
টিয়া আয়নায় নিজেকে দেখতে দেখতে বিরবির করলো,
— যদি একটা মিরাক্কেল হয়ে যায় তো কেমন হবে? আমায় যদি স্তব্ধ বাঁচাতে চলে আসে তো কেমন হয়৷ স্তব্ধ মাই জান তুমি যদি ঐ মাহিনের মতন করে এই ডেনিয়ালের বাচ্চাকে মেরে ফেলতে পারোনা আমি তোমায় একটা বড় উম্মাহ গিফট দিবো! এবার আর গোয়েন্দা গিরি করতে যাবো না কেনো মেরেছো সেটাও খুজতে যাবো না! সত্যি বলছি গট প্রমিজ! প্লিজ এই শালা ঈগল টাকে মেরে আমায় উদ্ধার করো এখান থেকে৷ বাদর ব্যাটা আমার উপর নজর দিয়ে বসে আছে! মন তো চায় চোখ তুলে মার্বেল খেলি। স্টুপিড ডাইনোসর থুক্কু ডেনিয়াল!
টিয়া আয়নায় তাকিয়ে কথা বলতে ব্যস্ত তখুনি ক্রিশ্চান ঢুকে রুমে৷ খুব শান্ত স্বরেই বলে,
— ম্যাম!
টিয়া দ্রুত পিছন ফিরে থতমত খেয়ে বলে উঠে,
— ইয়েস?
— ম্যাম স্যার আপনাকে তৈরী হতে বলেছেন! বাইরে যাবেন আপনাকে নিয়ে!!
টিয়া ভরখে গিয়ে বললো,
— আমায় নিয়ে যাবে?? কিন্তু কই যাবে??
— আই ডোন্ট নো ম্যাম!
বলেই ক্রিশ্চায় চলে গেলো! টিয়ার কান্না পাচ্ছে সে কোথাও যাবেনা এই শয়তান লোকের সাথে! টিয়ার মোটেও সুবিধের লাগেনা ডেনিয়ালকে কিভাবে তাকিয়ে থাকে তার দিকে! টিয়া ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে গিয়ে বসে রইলো বেডে৷ সে কিছুতেই যাবেনা ডেনিয়ালের সাথে!
প্রায় ১ ঘণ্টা পড় ক্রিশ্চান ডেকে যায় টিয়াকে । টিয়া কোন পাত্তা দেয়না। একটু পড় টিয়া দরজায় বাজেকাই ডাকে লাফ দিয়ে উঠে দাড়িয়ে পড়ে টিয়া! টিয়া বুঝতে পারে ডেনিয়াল দরজার ঐপাশে! টিয়া কি ভেবে দরজা খুলে দিয়ে বেডে এসে বসে পড়ে৷ ডেনিয়াল রুমে ঢুকে দেখে টিয়া রেডি হয়নি এখনো৷ ডেনিয়াল প্রচুর রেগে কিছু বলবে তার আগেই টিয়া বললো,
— আমি কোথাও যাবো না! আপনার সাথে! প্লিজ আমায় মুক্তিদিন… আপনি প্লিজ!
টিয়া আর কিছু বলার আগেই ডেনিয়াল টিয়ার পেছনের চুল আঁকড়ে ধরে দাড় করিয়ে বলে উঠে,
— মুক্তিই যেনো না পেতে পারো সেই ব্যাবস্থাই আমি করছি! কাম উইথ মি বেইবি!
টিয়া ডেনিয়াল এর কথার মানে বুঝলোনা? কি বলতে চাইছে ডেনিয়াল? টিয়া ডেনিয়াল এর হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে চাইছে। সমানে ছুটাছুটি করেই যাচ্ছে টিয়া। ডেনিয়াল সেদিকে পাত্তা না দিয়ে টেনে হিঁচড়ে টিয়াকে নিয়ে বাড়ী থেকে বেরুলো! টিয়াকে একটা মার্সিডিজ এর সামনে ধাক্কা দিয়ে দাড় করিয়ে। গাড়ীর দরজা খুলে বললো,
— গাড়ীতে উঠে বসো!
টিয়া শুনলোইনা ডেনিয়ালের কথা সে আশপাশে দেখতে ব্যস্ত পালানোর জন্য। কিন্ত টিয়া আর কিছু ভাবার আগেই ডেনিয়াল গাড়ীর দরজা খুলে টিয়াকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ীর ভেতরে ফেললো! তাতে টিয়া হাতে ব্যাথা পেলো! ডেনিয়াল নিজেও গাড়ীতে উঠে টিয়ার পাশে বসলে৷ জ্যাক ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ী স্টার্ট দিলো।
টিয়ার ভয়ে শরীর কাপছে কি হতে যাচ্ছে আবার তার সাথে? আবার কোন বিপদ আসছে না তো তার কপালে?? টিয়া ভয়ে কাপা কাপা স্বরেই ডেনিয়ালকে জিজ্ঞেস করলো,
— আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??
ডেনিয়াল টিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
— যেখানে তোমার স্তব্ধ পৌঁছোতে পারবে না!
টিয়া অবাক হয়ে বললো,
— মানে?
ডেনিয়াল আর কিছু বললো না! টিয়া এবারও ডেনিয়ালের কথা বুঝলোনা। যেখানে তোমার স্তব্ধ পৌঁছোতে পারবে না এই কথার মানেকি? টিয়া কিছুক্ষণ ভেবে চট করেই ভেবে নিলো স্তব্ধ হয় তো এসেছে আমেরিকা ডেনিয়াল এর হাত থেকে উদ্ধার করতে?
টিয়া একটা হাসি দিয়ে বললো,
— তার মানে মিরাকেল হয়েই গেলো স্তব্ধ এসেছে আমায় বাঁচাতে??
ডেনিয়াল টিয়ার দিকে রেগে তাকিয়ে বললো, — এসেছে বাঁচাতে কিন্তু নিজের প্রাণ হারিয়ে যাবে!
টিয়া ডেনিয়াল এর কথায় নিজের চোখ মুখ শক্ত করে বললো,
— স্তব্ধ যা ভাবে করেই ছাড়ে! আর হতেও তো পারে সে নয় আপনি নিজের প্রাণ হারালেন! ইউ নো মিরাকেল হতেই……
ডেনিয়াল টিয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই টিয়ার গালে কষে এক চড় বসিয়ে দেয়! সাথে সাথে টিয়ার গালে স্পষ্ট পাঁচ আঙুলের দাগ পড়ে যায়! টিয়া নিজের ঠোঁটে কোণে হাত লাগিয়ে দেখে রক্ত! টিয়া কেঁদে দেয়! ডেনিয়াল টিয়ার ঠোঁটে রক্ত দেখে জোরে হাত গাড়ীর দরজার দিকে ঘুষি মারে!
ডেনিয়াল এমনি রেগে আছে যখন থেকে জেনেছে স্তব্ধ তার এড়িয়াতে নেই তাকে বি ডিতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা! তার উপর টিয়ার বাঁকা কথা নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছেনা কিছুতেই!
টিয়া ডেনিয়াল এর রাগ দেখে কেপে উঠে কান্নাও বন্ধ করে দিয়েছে। টিয়ার বারবার মনে হচ্ছে তার কপালে দুঃখ আছে! টিয়া আল্লাহ আল্লাহ করতে লাগলো বসে! ঠোঁট টাও জ্বলছে কেটে যাওয়াতে প্রচুর!
.
.
স্তব্ধ, টনি বসে আছে তাদের পার্সোনাল মিটিং রুমে৷ সামনে একটি বোর্ডে ডেনিয়াল রাইজিং এর এটু জেট ইনফরমেশন টানানো। স্তব্ধ সব ইনফরমেশন ভালো করে দেখলো!
হঠাৎ স্তব্ধ ভ্রু কুঁচকে বললো,
— ডেনিয়াল গ্লোবার! সে মেয়েদের মারতে পছন্দ করে কেনো??
চলবে!
[১২ টায় ঘুম থেকে উঠেছি তাই লেখা থাকা শর্তেও এক পার্ট আগে দিতে পারিনি এক সাথেই দুই পার্ট দিতে হলো তার জন্য । দুঃখিত]