আলোয় অন্ধকার পর্ব-৪০

0
2336

#আলোয়_অন্ধকার🍁
#Roja_islam
#part 40
আস্ফি ছাদে দাঁড়িয়ে গালে হাত বুলাচ্ছিলো যেখানে কিছুক্ষণ আগে স্তব্ধের হাতের পাঁচ আঙুলের ছাপ পরেছে। স্তব্ধ ছোট ভাইয়ের অধপতন মেনে নিতে পারেনি তাই গায়েই হাত তুলে বসেছে যদিও জীবনের প্রথম। তবে আস্ফি জানতো এমনি হবে। ও আসলে জানতো স্তব্ধ ওর উপর নজর রাখবে। আর ও খুব বাজে ভাবে ধরা পরতে চায়নি। তাই আজ নিজেই ধরা দিয়ে দিয়েছে। এমনিতেও অনেক দিন স্তব্ধের রাগী চেহারার ও মিস করছিলো তাই তো সাহস বেড়েগেছে ওর অবাধ্য মনের। এখন নিশ্চয়ই আর ওর মন চেইনস্মোকার হওয়ার সাহস পাবেনা। আচ্ছা ওর ভাই যদি জানতে পারে ও পিউকে কষ্ট দিচ্ছে তাহলে ওকে নিশ্চয়ই আলুরভর্তা করে ফেলবে। কিন্তু ওর কিছুই করার নেই টিয়ার পজিশনে ও কখনও পিউকে কল্পনাও করতে পারবে না! কথা গুলো ভাবতেই ওর ফোন বিকট শব্দে বেজে ওঠে! আস্ফি ফোনের দিকে একটিবার তাকালোনা। সোজা রিসিভ করে কানে ধরে তিরিক্ষি মেজাজে বলল,
–” এভাবে বারবার ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করার মানে কি?”

পিউ মিনমিনে কাঁদছিলো আস্ফির ভয়ংকরী কণ্ঠে বলে উঠা কথা শুনে! নাক টেনে বলল,
–” আমি তোকে ডিস্টার্ব করি???”

বন্ধনাকে কথা বলছে পিউ বুঝাই যাচ্ছে হয়তো অনেক সময় ধরে কাঁদছিল। আস্ফির বুকটা ধকধক করছে! তবুও তেজী গলায় বলল,
–” তাহলে তোর কি মনে হয়! তোর ফোন পেয়ে আমার সুখ সুখ অনুভূতি হবে? ”

পিউয়ের ভয়ংকর কান্না পাচ্ছে চিৎকার করে কাঁদতে পারলে ভালো লাগতো! শ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছে। বুকের মাঝে তীক্ষ্ণ এক ব্যাথা তীব্র থেকে তীব্রতা পাচ্ছে! নিজেকে কিছুটা ধাতস্থ করে পিউ ক্ষীণ স্বরে বলল,
–” এমন করছিস কেন আস্ফি! আগে তো এমন হতো না আমাদের? কেন কষ্ট দিচ্ছিস আমাকে!”

আস্ফি দূর্বল না হয়ে। কথা ঘুরানোর জন্য বলল,
–” যেখানে আমাদের মাঝে আর কোন সম্পর্ক নেই! সেখানে এসব কথা বিলাসিতা নয় কি?”

পিউ বিস্মিত কণ্ঠে বলল,
–” বিলাসিতা?”

আস্ফি পিউয়ের কথাটা যেন শুনলোইনা উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে বলল,
–” এনিওয়ে! তোকে একটা গুড নিউজ দেওয়ার আছে!”

পিউ আশাহত কণ্ঠে বলল,
–” কি?”

আস্ফি ঘুরে ছাদের রেলিং উপর বসে শ্বাস নিয়ে বলল,
–” টিয়া ফিরে এসেছে! এবং অদের বিয়েও হয়ে গিয়েছে! ”

এই কথা শুনে আস্ফির প্রতি পিউয়ের অভিমানী মন। আরো অভিমানে ভেঙে পরলো টিয়ার প্রতিও। টিয়া ওকে একবার জানানোর প্রয়োজন করলো না অথচ এতকিছু হয়ে গেলো? পিউ আস্তে করে বলল,
–” কেমন আছে ও?”

–” ভালো! এখন রাখছি ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করিস না প্লিজ!”

পিউ রাখছি শুনে দ্রুত কণ্ঠে বলল,
–” আস্ফি বিয়ে হয়ে যাচ্ছে আমার! ”

কথাটা কানে যেতেই আস্ফি কিছু ক্ষণ স্থির বসে রইলো। দু পাশেই পিনপতন নীরবতা! বেশকিছু ক্ষণ পর আস্ফি নিরবতা ভেঙে বলল,
–” করেনে বিয়ে! আমাকে জানানোর প্রয়োজন দেখছিনা। তোর বিয়ের দাওয়াতে-মেহফিলে ও আমাকে ইনভাইট করার কথা ভাবিস না! রাখছি!”

পিউ মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছিলো যেন ওর বিয়ে হয়েযাচ্ছে কথাটা শুনে আস্ফি অন্তত আর রাগ ধরে না থাকতে পারে! কিন্তু আস্ফির কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলো এবং পরমুহূর্তে বুঝলো আস্ফি কলটাও কাট করে দিয়েছে! পিউ মনে মনে ভাবলো শুধু একটা কথা। আস্ফি এতো নিষ্ঠুর ঠিক কবে হলো কিভাবে হলো?

নিস্তব্ধ রাত চারপাশ থেকে ঝিঁঝি পোকার তীক্ষ্ণ ডাক কানে ঝড়তুলে দিচ্ছে। টিয়া বেডে ছটফট করছে। ওর শরীরের প্রতিটা জয়েন্ট মনে হচ্ছে ব্যাথায় ভেঙে গুড়িয়ে যাবে। সেই সাথে শরীর উত্তাপ যেনে সেকেন্ডে এক ডিগ্রি করে বেড়েই যাচ্ছে। ও বুঝতে পারছে ওর শরীর ভেঙে জ্বর আসছে। কিন্তু ও টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারছেনা। স্তব্ধ এখনও রুমে আসেনি। স্তব্ধ এলে নিশ্চয়ই কিছু একটা করতো! ও খিঁচে চোখ বন্ধ করে পরে রইলো বেডের এককোনায়! হঠাৎ ওর মনে হলো স্তব্ধ বলেছিলো ওর রাতে জ্বর আসবে! কি করে বুঝে গেলো ছেলেটা? অদ্ভুত! পরমূহুর্তে ভাবলো গুণ্ডা ছেলেগুলো হয়তো সবি বুঝে যায়!

চলবে!

[ জানি ৪০ পর্বের নামে এটা একটা মজা ছিলো এটা । কিন্তু আমি এটুকুই অনেক কষ্টে লিখেছি। টিয়ার মতো আমার শরীরটা ভালো না। তার উপর আমি সত্যি ব্যাস্ত আছি। ইন শা আল্লাহ্ কাল বড় লিখে দিবো। প্লিজ আজকের জন্য স্যরি! আজ দিতামিনা কিন্তু বলেছিলো দিবো তাই যেমনি হোক দিয়েছি শুধু কথা রাখতে!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here