#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ০৬
__________________
ইরতিজা এক হাতে ব্যাগ নিয়ে শপ থেকে বের হলো। তার ব্যাগে আছে টমেটো, কাঁচকলা, মিষ্টি আলু, রেড পেপার (কেপসিকাম) ইত্যাদি। রাস্তায় পা রেখেছিল কেবল, এর মাঝেই সামনে থেকে ঝড়ের গতিতে কিছু ছুটে গেলেই থমকে যেতে হলো তার। দেখলো কালো জ্যাকেট পরিহিত একটা লোক দৌড়ে অতিক্রম করে গিয়েছে তাকে। লোকটার পিছনে আরও একজন দৌড়ে আসছে। মূলত অতিক্রম করে যাওয়া লোকটাকে তাড়া করছে সে। কিন্তু সে এখনও অনেক পিছিয়ে। ইরতিজাকেই ছাড়াতে পারেনি সে। চোখের সামনে এসব দেখে বিস্ময়ে থ হয়ে গেল ইরতিজা। এর মাঝে একটা আজব কাণ্ড ঘটলো। যে লোকটা তাকে অতিক্রম করে একটু সামনে এগিয়ে গিয়েছিল, সেই লোকটা হঠাৎই আবার পিছন ফিরে এলো। ইরতিজা হাঁ হয়ে দেখছিল। কে জানতো লোকটার পিছন ফিরে আসাতে তার দুর্ভাগ্য রচিত হবে!
লোকটা সোজা ইরতিজার দিকে এগিয়ে এলো। অকস্মাৎ বিস্ময়ে বিহ্বল ইরতিজাকে কাছে টেনে এনে গলায় ধরলো ধারালো একটা ছুরি।
ঘটনার আকস্মিকতায় পুরো জমে গেল ইরতিজা। আতঙ্কে তার হৃৎপিণ্ড গলার কাছে উঠে এসে আটকে গেল। ভয়ে দু চোখ কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম। হাতের ব্যাগ রাস্তায় পড়ে ছড়িয়ে গিয়েছে সকল সবজি। ইরতিজার মনে হলো সে মৃত্যু থেকে খুব বেশি দূরে নেই! সে মৃত্যুর অতি নিকটে।
পিছিয়ে থাকা মানুষটা কাছে এসে গেছে।সামনে এসেই ব্রেক কষলো সে নিজের চলনের উপর। ইরতিজার গলায় ছু’রি ধরা লোকটা বললো,
“ডোন্ট ট্রাই টু ক্যাচ মি। দেন আই উইল বি ফোরসড টু হিট দিজ গার্ল!”
ক্যানিয়লের মুখে গভীর বিরক্তির ছায়া। লোকটার কাজে যে সে অতিশয় বিরক্ত তা মুখে স্পষ্ট ফুঁটে উঠেছে। বললো,
“লড়াইটা তোমার আর আমার মাঝে চলছিল, সেই লড়াইয়ে তুমি কেন এই মেয়েটাকে টেনে এনেছো? এটা কাপুরুষের পরিচয় বহন করে। আর…আর আমি চিনিও না এই মেয়েটাকে। এ মেয়েটার জন্য কেন আমি তোমাকে ছেড়ে দেবো? মেয়েটা আমার কেউ হয় না। তুমি ওকে আঘাত করো বা মেরে ফেলো আমার কিছু যায় আসে না। উটকো ব্যাপার দিয়ে আমাকে আটকানোর চেষ্টা বন্ধ করো।”
ক্যানিয়ল কাছে এগিয়ে আসা দিলেই ইরতিজা প্রাণের মায়ায় ব্যস্ত হয়ে বলে উঠলো,
“না না, কাছে আসবে না প্লিজ! সে সত্যি সত্যি আমাকে আঘাত করবে। আমি এত তাড়াতাড়ি মরতে চাই না। প্লিজ, তার থেকে দূরে থাকো তুমি। প্লিজ!”
ক্যানিয়ল ইরতিজার মুখে দৃষ্টিপাত করলো। শ্যাম বরণ মেয়েটার দিকে একবারও খেয়াল চক্ষুতে তাকায়নি। মেয়েটার মুখ ঘর্মাক্ত, ভয়ে থমথম। একেকটা শ্বাস টেনে তুলতে যেন আজন্মের কষ্ট হচ্ছে তার। দু চোখে ক্যানিয়লকে থামতে বলার অনুরোধ। কিন্তু ওই অনুরোধের ভাষা বুঝতে পারলেও তাতে মায়া হলো না ক্যানিয়লের। ইরতিজার চোখে চোখ রেখে বললো,
“দেখো গার্ল, তুমি আঘাত প্রাপ্ত হলে আমার কিছু যায় আসে না। আমি তোমাকে চিনি না, জানি না, তোমাকে অক্ষত রাখতে কেন আমি একে ছেড়ে দেবো? তোমার প্রাণের চেয়েও এই লোককে আটক করা বেশি জরুরি। আই অ্যাম স্যরি!”
ক্যানিয়ল এগিয়ে আসতে পা বাড়ালো। লোকটা অমনি ছুরিটা আগের চেয়ে শক্ত করে ধরলো গলায়। ইরতিজার মাথায় হিজাব। গলার কাছে থাকা হিজাবের অংশে ছিদ্র ধরলো। ইরতিজা আবারও বলে উঠলো,
“ডোন্ট ডোন্ট, ডোন্ট মুভ। প্লিজ, ডোন্ট ডু ইট। আই লাভ মাই লাইফ সো মাচ। আমার লাইফে এখনও অনেক কিছুই ঘটার বাকি, সেসব ঘটার আগে এভাবে মৃত্যু ঘটবে এটা মানতে পারবো না আমি।”
ক্যানিয়ল খুব ঝামেলা বোধ করলো। মেয়েটার এসব ন্যাকা ন্যাকা কথা তার কাছে অতি তুচ্ছ। বিরক্ত লাগা সত্যেও সে বিনয় কণ্ঠে মেয়েটাকে বোঝানোর জন্য বললো,
“ইট’স ও কে। এটা তেমন কোনো ব্যাপার নয়। সে শুধু এই ছোটো ছুরিটা দিয়ে তোমার গলায় আঘাত করবে। এটা তেমন গুরুতর হবে না। তুমি মারা যাবে না এতে। দরকার পড়লে তোমার ট্রিটমেন্টের সকল খরচ আমি বহন করবো। তুমি বুঝতে পারছো না, তোমার জীবনের থেকে এই লোককে ধরাটা বেশি জরুরি।”
ইরতিজার কেঁদে ফেলার অবস্থা। চোখের তারায় ইতোমধ্যে স্বচ্ছ জল চিকচিক করে উঠেছে। বললো,
“আই ক্যা’ন্ট টেইক দিজ রিস্ক। আই ওয়ান্ট টু লিভ।”
“কিন্তু তোমার জীবনের কোনো গুরুত্বই আমার কাছে নেই।”
ইরতিজার শুষ্ক কপোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো।
“আমার মা-বাবা আমার জন্য বাড়িতে অপেক্ষা করছে।”
ক্যানিয়লের মন গলছে না। কিন্তু তার বিবেক তাকে মেয়েটার কথা মেনে নিতে ইঙ্গিত করছে। ক্যানিয়ল দ্বিধায় পড়লো, সে ঠিক কী করবে? দ্বিধাগ্রস্ত কণ্ঠে বললো,
“কিন্তু…”
“প্লিজ!” ক্যানিয়লকে থামিয়ে দিলো ইরতিজার আকুতি ভরা কণ্ঠ।
অশ্রুসিক্ত চোখ জোড়ায় ক্যানিয়ল তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। সিদ্ধান্তে উপনীত হলো সে। লোকটার দিকে চেয়ে বললো,
“মেয়েটাকে ছেড়ে দাও। আমি তোমায় তাড়া করবো না।”
লোকটার মুখে খুশির দ্যুতি ঝলমল করলো। অতি দ্রুত গতিতে ইরতিজাকে ক্যানিয়লের দিকে ঠেলে দিয়ে সে উল্টো দিকে দৌড় দিলো। ইরতিজা গায়ের উপর এসে পড়ার আগেই ক্যানিয়ল তাকে দুই হাত দিয়ে সামলে নিলো। ইরতিজাকে দাঁড় করিয়ে রেখে অযথাই একবার লোকটার পিছু ছুটলো। কিন্তু লোকটা ততক্ষণে অনেক দূরত্বে চলে গিয়েছে। ব্যর্থতা নির্মমভাবে প্রভাব ফেললো ক্যানিয়লের মনে। রাগ হাওয়ায় দোদুল্যমান কচি কিশলয়ের মতো তিরতির করে কেঁপে উঠলো। সব রাগ উপচে উঠলো মেয়েটার উপর। ঘুরে তাকালো মেয়েটার দিকে। দ্রুত পায়ে এগিয়ে এলো।
ইরতিজা কাঁপছে। ঠান্ডায় নয়, ভয়ে। এর মাঝে ক্যানিয়ল এসে হুংকার ছাড়লো,
“হেই পাকিস্টানি গার্ল, ইউ ডোন্ট নো হাউ টু ওয়াক অন দ্য রোড? কীভাবে হাঁটো রাস্তা দিয়ে? অমনোযোগী হয়ে চোখ আকাশে তুলে হাঁটো? কীভাবে লোকটা তোমাকে ওরকম ভাবে অ্যাটাক করতে পারে? তুমি কি তোমার প্রতি এতটাই কেয়ারলেস? জানো, তোমার জন্য কত বড়ো একটা ব্যাপার মিসিং হয়ে গিয়েছে? ওই লোকটাকে ক্যাচ করা প্রয়োজন ছিল। তোমার জন্য…শুধু তোমার জন্য লোকটা এভাবে পালাতে পেরেছে। এরপর আর কখনও এরকম ভাবে রাস্তাঘাটে বের হবে না। হাঁটা শিখে তারপরই রাস্তায় বের হবে, বুঝতে পেরেছো?” গর্জন করে উঠলো ক্যানিয়ল।
ইরতিজা স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে রইল। ক্যানিয়ল অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অস্ফুটে উচ্চারণ করলো,
“ইডিয়ট গার্ল!”
তারপর বলতে লাগলো,
“আজকে আমার দিনটা কাকে দেখে শুরু হয়েছিল কে জানে! ওহ নো… দেখে তো ছিলাম মিরান্ডাকে। মিরান্ডা তো অসম্ভব ভালো একটা মেয়ে। মিরান্ডাকে দেখে দিন শুরু হলে দিন ভালোর জায়গায় খুব ভালো কাটার কথা। কিন্তু তুমি এতটাই বাজে যে তোমার খারাপের কাছে সকল ভালো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ইউ আর আ…”
রুষিত কণ্ঠ থমকে গেল ক্যানিয়লের। পিছনে ধপ করে একটা শব্দ শুনতে পেয়েছে। পিছন ফিরে যারপরনাই অবাক হলো। মেয়েটা তো এখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। দৃষ্টি নামতে নামতে একেবারে রাস্তার উপর গিয়ে মিশলো। মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে!
সামনের দৃশ্যটা অবলোকন করে ক্যানিয়লের চোখ-মুখ কুঁচকে গিয়ে মারাত্মক বিরক্তির চিত্র এঁকেছে। বিরক্তিতে চিৎকার করতে ইচ্ছা হলো তার।
__________________
হালকা উষ্ণ বাতাস এসে মুখে পড়ছে। হ্যাঁ, টের পাচ্ছে ইরতিজা। এই উষ্ণ বাতাস কোত্থেকে আসছে? চোখ মেলে মুখের উপর একটা ঝুলন্ত মনুষ্য মুখ দেখতে পেয়ে আঁতকে উঠলো ইরতিজা। দুই হাত দিয়ে মানুষটাকে ঠ্যালা দিয়ে দ্রুত শয়ন থেকে উঠে বসলো। ঠ্যালার বেগ এত মারাত্মক ছিল যে ক্যানিয়ল ছিটকে গেল পিছন দিকে। ইরতিজার বক্ষৎপঞ্জর কাঁপছে। ব্যস্ত চোখ ঘুরিয়ে আশপাশ দেখতে লাগলো। এটা কোথায়? এটা কি একটা বেডরুম? দেখতে দেখতে ক্লোজেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একজন স্বাস্থ্যবান লম্বা লোকের উপর তার দৃষ্টি আটকে গেল। লোকটাকে দেখে প্রথমে যে শব্দটা মনে এলো, সেটা হলো-‘বডিগার্ড’। পরে আবার মনে হলো, না, লোকটাকে সেক্রেটারির মতো লাগছে। কারো পার্সোনাল সেক্রেটারি হবে বোধহয়। ইরতিজা যখন এসব ভাবছিল তখন একটা পুরুষ কণ্ঠ বলে উঠলো,
“ঠিকই ধরেছিলাম। তুমি আসলেই একজন আততায়ী। তোমার ওই হাত ট্রেনিং প্রাপ্ত। মানুষকে আক্রমণ করার সব রকম কলাকৌশল জানো তুমি।”
কণ্ঠ অনুসরণ করে তাকালো ইরতিজা। সুদর্শন মানবকে চোখে পড়লো। চোখ গিয়ে স্থির হলো সুদর্শন মানবের চোখের উপর। চোখেই কেন চোখ চলে গেল? এটা একটা আকর্ষণ! কমলা রঙা চোখ দুটোতে একটা আকর্ষণ ভাব আছে।
ক্যানিয়ল ইরতিজার দিকে ঝুঁকে প্রশ্ন করলো,
“হু ইজ ইওর বস?”
ইরতিজা ভ্রু কুঁচকে বিস্ময়ের সাথে বললো,
“বস?”
ক্যানিয়ল ঠোঁট টেনে বাঁকা হেসে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। শুধালো,
“আমি সবই বুঝতে পারছি। ওই আততায়ী লোকটারই পার্টনার তুমি। তুমি যে রাস্তায় ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে, ওই লোকটা তোমাকে এসে অ্যাটাক করবে, এ সব কিছুই আসলে তোমাদের সেটআপ। যাতে আমার কাছ থেকে সহজেই ছাড়া পেতে পারো সে জন্য এই প্ল্যানটা করেছো। তোমরা আসলে একই গ্যাংয়ের সদস্য। তুমিও একজন আততায়ী! ছি! আমি ভাবতে পারি না তোমাদের গ্যাংয়ের নীতি এত জঘন্য! শেষমেশ একটা মেয়েকে দিয়ে আমাকে আক্রমণ করার চিন্তা-ভাবনা করেছে! ছি! তোমাদের গ্যাংয়ের প্রতি একরাশ ঘৃণা প্রকাশ করছি।”
ইরতিজা হতভম্ব! কী বলছে এই ছেলে? পার্টনার! আততায়ী! গ্যাং! সরাসরি প্রশ্নই করে ফেললো,
“কী বলছো তুমি? গ্যাং, আততায়ী এসবের মানে কী?” কিছুটা ক্ষিপ্রতা প্রকাশ পেল ইরতিজার গলায়।
ক্যানিয়ল দ্রুত বেগে হাত বাড়িয়ে টেবিল থেকে পিস্তল তুলে নিলো। মোড করে নিশানা করলো ইরতিজাকে।
ইরতিজা চমকে উঠলো।
“ধূর্ত সাজার চেষ্টা করো না। তুমি জানো আমি কী বোঝাতে চাইছি।” ঠান্ডা গলায় বললো ক্যানিয়ল।
ইরতিজা পিস্তল দেখে ভীষণ আশ্চর্য হলো। ভয়ও পাচ্ছে। ক্যানিয়লের দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো,
“এটা কি আসল?”
ক্যানিয়ল একটু থতমত খেয়ে গেল। পিস্তলটা নকল। কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই এটা নকল। একদম আসল মনে হয় দেখতে। ভেবেছিল মেয়েটা পিস্তল দেখে ভয় পেয়ে যাবে, অথচ সে কৌতূহলী চোখে প্রশ্ন করছে। ক্যানিয়ল জোর দিয়ে বললো,
“তো? এটাকে কি তোমার নকল মনে হচ্ছে? আমি বড়ো লোক। বড়ো লোকদের কাছে পিস্তল রাখা তেমন কোনো কঠিন ব্যাপার নয়।”
“কিন্তু এটা অন্যায়।”
ক্যানিয়ল পিস্তলটা আরও একধাপ কাছে এগিয়ে নিয়ে বললো,
“তুমি কি চাও আমি তোমাকে শুট করি? মৃত্যুবরণ করার এতই শখ তোমার? তখন রোডে দাঁড়িয়ে তো বলেছিলে তুমি বাঁচতে চাও। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে তোমার মাঝে বেঁচে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই। তুমি কি মরতে চাও?”
ইরতিজা ভয় পেয়ে গেল। পিস্তল আসল কি নকল তা তো কোনো বিষয় না। তাকে মারতে কি পিস্তলের প্রয়োজন পড়বে? ইরতিজার ভয়ার্ত চোখ ক্লোজেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কালো স্যুট-প্যান্ট পরিহিত লোকটার উপর চলে গেল। ওই লোকটা একটা ঘুষি মারলেই তো বোধহয় সে অজ্ঞান হয়ে যাবে। তারপর গলা টিপে হত্যা করা কি তেমন কঠিন কোনো ব্যাপার? ইরতিজা নিজের জীবনের প্রতি গভীর মায়া অনুভব করলো। কান্না উদ্বেলমান হচ্ছে তার মাঝে। কোন জায়গায় এসে ফেঁসে গেছে সে? তখন রাস্তায় একজন তার গলায় ছুরি ধরেছিল, আর এখন একজন পিস্তল দেখিয়ে তাকে ভয় দেখাচ্ছে। কী সাংঘাতিক! এসব কি বাস্তবেই ঘটছে? না কি কোনো স্বপ্নের রাজ্য এটা? আশেপাশে তাকালো ইরতিজা। ভয়ে ভয়ে সংঘর্ষ হলো। কোথায় আছে সে? কয়টা বাজে এখন? বাড়ি ফিরবে কখন? আদৌ কি এরা ফিরতে দেবে? না কি আততায়ী ভেবে বন্দি করে রাখবে?
ইরতিজা কান্না চেপে রেখে ক্যানিয়লের দিকে তাকালো। বললো,
“দেখো, তুমি যেটা ভাবছো আমি সেটা না। আমি কোনো আততায়ী নই। আমি এই শহরে নতুন। তেমন কিছুই চিনি না এই শহরের।”
“তুমি মিথ্যাবাদী!”
চোখের কোল ছাপিয়ে জল গড়িয়ে পড়লো ইরতিজার। অসহায়ত্বে ঢেকে গেল সমগ্র মৌন আকাশ। বিশ্বাস করানোর চেষ্টার্থে বললো,
“আমি মিথ্যাবাদী নই!”
(চলবে)