উড়ো পাতার ঢেউ পর্ব: ৩০

0
510

#উড়ো_পাতার_ঢেউ
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ৩০
_________________

জোনাসের উষ্ণ বুকে স্তব্ধ ইরতিজার ঠাঁই এই মুহূর্তে। ইরতিজা বেশ কিছু সময় স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ঘটনাটা বুঝে উঠতে সময় লাগলো তার। প্রথমে মনে হয়েছিল সে চোখের ভুল দেখছে, কিন্তু আসলে বাস্তব। ইরতিজার প্রচুর রাগ হলো, বিরক্ত লাগলো। সে শক্ত কণ্ঠে নির্দেশ করলো,
“ছাড়ো জন!”

জোনাস ছাড়লো না।
“সবসময় তো তোমাকে ছেড়েই দিয়েছি টিজা। যখন আমাকে রিজেক্ট করে দিয়েছিলে তখনও তুমি মুক্ত ছিলে, এমনকি যখন নিউ ইয়র্ক ছেড়ে এই রেডমন্ড এলে তখনও তুমি মুক্ত ছিলে। এখন একটুখানি সময়ের জন্য আমার বক্ষস্থলে বন্দি থাকলে কি খুব বেশি ক্ষতি হবে?”

ইরতিজা জোনাসের কথা কানে না তুলে আগের চেয়েও জোর গলায় বললো,
“ছাড়ো আমায়…”
বলতে বলতে সে নিজেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো জোনাসকে। জোনাস দূরে সরে গেল। ইরতিজার মুখমন্ডল কাঁপছে অনবরত। বললো,
“এটা কী করলে! আর এখানে কেন তুমি? আবারও কেন এসেছো?”

“না এসে উপায় ছিল না। তোমার মন আমাকে চুম্বকের মতো টানছিল। জানো তো, সকল টান উপেক্ষা করা গেলেও মনের টান উপেক্ষা করা যায় না। এটা সর্বাপেক্ষা বেশি জোরালো। আমি আসিনি, তোমার মন আমাকে আসতে বাধ্য করেছে।”

অস্বাভাবিক ভাবেই ইরতিজার খুব রাগ হচ্ছে। রাগে ফুঁসছে। তার দৃষ্টি বিরক্ত মেখে চেয়ে আছে জোনাসের দিকে। জোনাসের চোখে কোমলত্ব। সে এক পা কাছে এগিয়ে আসতেই ক্যানিয়ল ইরতিজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলো দুজনের মাঝে।
আকস্মিক ঘটনাটায় জোনাসের পা ওখানেই স্থির হয়ে গেল। ইরতিজা পিছন থেকে অবাক হয়ে দেখতে লাগলো ক্যানিয়লকে।
ক্যানিয়ল জোনাসকে বললো,
“ওখানেই থামো। এমনিতেই অনেক এগিয়ে ফেলেছো তুমি! আর এগিয়ো না। তুমি জানো না, কারো অনুমতি ব্যতীত তাকে জড়িয়ে ধরা অপরাধ?”

জোনাস সরু চোখে চেয়ে বললো,
“তুমি কে?”

“আমি কে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তোমার মতো একজন অপরাধীর কাছে জানানোর প্রয়োজন বোধও করি না।”

ক্যানিয়ল আর এক মুহূর্ত এখানে দাঁড়াতে চাইছে না। সে চেনে না ছেলেটা কে। তবে তার মোটেও সুবিধার লাগছে না ছেলেটাকে। ছেলেটা যে ইরতিজার পূর্ব পরিচিত সেটা বুঝতে পেরেছে। তবুও বিষয়টা হজম হলো না তার।
জোনাস বললো,
“তুমি টিজার রেডমন্ডের নতুন বন্ধু?”

ক্যানিয়ল ব্যাঙ্গাত্মক সুরে বললো,
“যে মেয়েটা সামান্য একটা মোবাইলের জন্য নিচু মানসিকতার পরিচয় দেয়, সেই মেয়েটার বন্ধু আমি এটা ভাবাও তোমার বোকামি কা/লপ্রিট বয়!”
ক্যানিয়ল ইরতিজার দিকে তাকালো।
“তুমি কি এখানে আরও কিছু সময় দাঁড়াতে চাইছো?”

ইরতিজা হকচকিয়ে গেল প্রশ্নটা শুনে। এই মুহূর্তটা কেমন ভাসা ভাসা লাগছে তার! মাথার উপর ঘুরপাক খাচ্ছে দিগভ্রান্তের অনুজ্জ্বল মিটমিট জ্বলতে থাকা হাজার নক্ষত্র। সে অপ্রস্তুতভাবে দুইপাশে মাথা নাড়লো।

“বেশ! কিছু সময় তো দূর, আমি তোমাকে একটু সময়ও দাঁড়াতে দিলাম না তাহলে…”

বলে ক্যানিয়ল ইরতিজার একটা হাত চেপে ধরে সাইকেলের কাছে এগিয়ে এলো। ইরতিজার সাইকেলটায় উঠে বসলো সে। ইরতিজাকেও উঠে বসতে বললে ইরতিজা জোনাসের দিকে তাকালো। জোনাস কিংকর্তব্যবিমূঢ়!
ইরতিজার হৃদয়ে হঠাৎ কষ্ট মিশ্রিত ঘৃণার কালো রং লেপ্টে দিলো একটা অদৃশ্য হাত। ছেলেটার কীভাবে সাহস হলো হঠাৎ এমন করার? এই ছেলেটাই দায়ী তার জীবনে কঠিন কিছু ঘটে যাওয়ার জন্য! কেন করেছিল অমন? প্রত্যাখ্যান হয়েছিল বলে প্রতিশোধ নিয়েছিল? বন্ধুত্বে প্রতিশোধ থাকে না। শত্রুতায় প্রতিশোধ দারুণ শোভা পায়। আসলেই তাদের সম্পর্কটা শত্রুতার! ইরতিজা চোখ সরিয়ে এনে সাইকেলে উঠে বসলো। অমনি সাইকেল চালাতে শুরু করলো ক্যানিয়ল। ইরতিজার সাইকেলটা নিয়ে গেল। কিন্তু সামুরার সাইকেলটা পড়ে রইল অবহেলায়। এ পর্যন্ত সে দুটো সাইকেল পরিত্যাগ করেছে মেয়েটার জন্য। প্রথমে নিজের সাইকেল, আর এখন সামুরার!

জোনাস তাকিয়ে রইল ছুটন্ত সাইকেলটার দিকে। শেষ মুহূর্তে ইরতিজার চোখে যে ঘৃণার কালো পর্দাটা দেখতে পেয়েছিল, তা দেখে বক্ষ কম্পিত হয়ে উঠেছিল তার। এত ঘৃণা কেন তাদের একে-অপরের প্রতি? অবশ্য হলেই বা কী? একটা ঘৃণার সম্পর্কও কখনো কখনো অধিক সৌন্দর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে!

______________

সাইকেলে ব্রেক কষলে ইরতিজার অন্যমনস্কতায় ছিদ্র ধরলো। এতক্ষণ সে অন্যমনস্ক হয়ে বসে ছিল চুপচাপ সাইকেলের পিছনে। সাইকেল থেমেছে তাদের বাসা থেকে খানিকটা দূরে। এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে বাসাটা। ইরতিজা নেমে পড়লো। আজ রোদ নেই। আকাশে ধূসর মেঘ ছোটাছুটি করছে। তবে পরিবেশ বেশি ঠান্ডা নয়। বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা আছে।

“ছেলেটা কি তোমার বন্ধু হয়?” প্রশ্নটা ক্যানিয়লের কাছ থেকে আসা বাধ্যতামূলকই ছিল যেন।

ইরতিজা উদাসীন নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বললো,
“বন্ধু ছিল অতীতে, বলতে পারো এখন শত্রু!”

“শত্রু?” শত্রু কথাটায় বিস্মিত হলো ক্যানিয়ল।

“হ্যাঁ শত্রু।” হঠাৎ মন খারাপি অসুখটা আরও তীব্র হলো ইরতিজার। সে উদাসী চিত্তে বলতে লাগলো,
“জানো ক্যানিয়ল, যখন কোনো প্রিয় বন্ধু শত্রুতে পরিণত হয় তখন সেই শত্রু সর্ব শত্রু অপেক্ষা বেশি বাজে হয়ে থাকে। সে এমন এক শত্রুতে পরিণত হয় যে, তাকে ঘৃণা করাও সহজ ব্যাপার হয় না। এমন শত্রুতা বিষাক্ত! আর এই বিষাক্ত শত্রুতা আমার মনকে বার বার বিষাক্ত করে তোলে। তাকে ঘৃণা করা সহজ হয় না, কিন্তু তার জন্য মনে যে অনেক ঘৃণা জমে আছে। কঠিন হলেও তাকে ঘৃণা না করে থাকা যায় না তাই!”

ইরতিজা ক্ষণকালীন বিরতি পালন করে বললো,
“জীবনে আমার সবচেয়ে বড়ো একটা আফসোস, আমি কখনও ভালো বন্ধু পাইনি। যারা বন্ধু ছিল, তাদের সাথে বন্ধুত্ব ভেঙেচুরে গেছে! এটা একটা চরম আফসোস আমার জীবনে।”
ইরতিজা বড়ো করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাঁটা শুরু করলো।
ক্যানিয়লের মনে গভীর প্রভাব ফেলছিল ইরতিজার কথাগুলো। সে কী-ই যেন ভাবছিল। হঠাৎ ডাকলো,
“ইজা…”

ইরতিজা দাঁড়ালো।
ক্যানিয়ল ধীর পদাঙ্কে সামনে এসে দাঁড়িয়ে এক হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
“তোমার জীবনে ভালো বন্ধুর অভাব, কিন্তু খারাপ বন্ধুর অভাব কখনও রেখো না।”

ইরতিজা বিস্ময়াপন্ন হয়ে তাকিয়ে রইল। ক্যানিয়ল ওর বিস্ময় জড়িত আঁখি জোড়ায় তাকিয়ে হাসলো,
“আমাকে নিজের খারাপ বন্ধুর তালিকায় এড করে নাও। কথা দিচ্ছি খুব খারাপ একজন বন্ধু হয়ে দেখাবো তোমায়। যার কারণে অন্য খারাপ বন্ধুদের প্রভাব খুব একটা কাছে ঘেঁষবে না তোমার।”

ইরতিজা বুঝতে পারছে না ক্যানিয়লের কথা। হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে আছে।
ইরতিজা চুপচাপ দেখে ক্যানিয়ল নিজেই ইরতিজার একটা হাত ধরে হ্যান্ডশেক করে হাত ছেড়ে দিলো। এরপর বললো,
“আর হ্যাঁ, শত্রুরা যখন বন্ধুর মতো হাগ করে সেই দৃশ্যটা খুব বিশ্রী দেখায়! তখন খুব ক/ষ্টে আমি আমার হাত-পা সংযত রেখেছিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিল এটা সংযত রাখতে।”

ইরতিজার চোখে-মুখে আরও প্রগাঢ় বিস্ময় ছেপে গেল। ক্যানিয়ল বললো,
“আর ও তখন ‘মনের টান’, ‘উপায় ছিল না’…এসব কী বলছিল? জানি না কী বলছিল, কিন্তু কথাগুলো শুনতে খুবই বাজে শোনাচ্ছিল! ওর কথা গুলোকে মনে হচ্ছিল ঠিক যেন বানরের ডাক!”

ইরতিজার ঠোঁট একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কী বলছে ক্যানিয়ল? বানরের ডাক!
ক্যানিয়ল পুরোটা ক্ষণ ইরতিজাকে বিস্ময়ের জলে ডুবিয়ে রাখলো। এমনকি যাওয়ার আগেও অদ্ভুত একটা কথা বলে গেল,
“চাঁদের আলো মেখে আর কখনও ওরকম দাঁড়িয়ে থাকবে না পাকিস্টানি গার্ল!”

ইরতিজা অনুভব করছিল কথাটা শুনে তার হৃদয়ের কার্যক্রম কেমন পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছিল। আচ্ছা, সে কি সত্যি সত্যি ক্যানিয়লের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে? না কি পড়ে গেছে ইতোমধ্যে? গা শিউরে উঠলো ইরতিজার!

________________

তখন মধ্যরাত। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। ক্যানিয়ল ঘুমে আচ্ছাদিত ছিল। ফোনকলের শব্দে তার ঘুমটা ভেঙে গেল সহসা। পিটপিট করে চোখ মেলে মিরান্ডার নামটা দেখতে পেল। রিসিভ করে ফোন কানে লাগিয়ে আবারও চোখ বুজলো। ঘুম আবেশী কণ্ঠে বললো,
“হাই মিরান্ডা!”

মিরান্ডা কোনো সৌজন্যমূলক কথাবার্তা না বলে বললো,
“তুমি আমায় ভালোবাসো ক্যানি?”
মিরান্ডার গলা বেশ সিরিয়াস শোনাচ্ছে।

ক্যানিয়ল চোখ মেলে ফেললো।
“হঠাৎ কেন এমন প্রশ্ন করছো?”

“ভালোবাসো কি না?” তেজি কণ্ঠে জানতে চাইলো।

ক্যানিয়ল অবাক মিরান্ডার এমন আচরণে। ধারণা করলো কিছু একটা হয়েছে মিরান্ডার। সে কথা না পেঁচিয়ে সোজা উত্তর দিলো,
“না।”

ওপাশে অদ্ভুত রকম হেসে উঠলো মিরান্ডা। হঠাৎই আবার থেমে গেল তার হাসি। বললো,
“আমার সাথে এটা কীভাবে করলে?”

“আমি বুঝতে পারছি না তুমি কোন বিষয়ে কথা বলছো!”

“এত বছর হয়ে গেল যে ক্যানি আমার জন্য কখনও অনুভূতি অনুভব করেনি, আর সেই ক্যানি এখন অন্য একটা মেয়ের প্রতি এত সহজে কীভাবে অনুভূতি অনুভব করতে সক্ষম হলো? হ্যাঁ? কীভাবে? কষ্ট হচ্ছে ক্যানি! কোনো মতেই মানতে পারছি না এটা।” কান্না কান্নাভাব উগরে উঠছে মিরান্ডার গলায়।

ক্যানিয়লের দু কান যেন ভুল শুনছে। সে বিচলিত বোধ করলো মিরান্ডার গলায় কান্নার আঁচ লক্ষ করে। আবার রাগও হলো। ঘুম ভাঙিয়ে এসব কী আবোল-তাবোল বকছে মেয়েটা?

“তুমি কী বলছো এসব?

মিরান্ডা বোতলের তলানিতে থাকা তরলটুকু গলায় ঢেলে নিয়ে বললো,
“আচ্ছা, তুমি বলো তো, ওই মেয়েটা আমার থেকে কোন দিক দিয়ে ভালো? ও কি আমার থেকে বেশি সুন্দরী? না কি ও আমার থেকে আরও বেশি ফেমাস কেউ?”

ক্যানিয়লের এবার সত্যিই রাগ লাগছে। চোয়াল শক্ত করে জিজ্ঞেস করলো,
“কার কথা বলছো তুমি?”

“কাইফ যখন আমাকে বলেছিল তোমাকে ইদানিং একটা মেয়ের সাথে দেখা যায়, তখন আমার বিশ্বাস হয়নি। কিন্তু এতদিন নজর রাখার পর, এত এত ছবি, ভিডিয়ো আমার কাছে আসার পর আমি সত্যিই এটা আর অবিশ্বাস করতে পারছি না। এতদিন খুব কষ্টে আমি সবকিছু সহ্য করেছি। কিন্তু আজ পারলাম না। আমি অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। তুমি আর ওই মেয়েটার সাথে দেখা করবে না, কথা বলবে না।”

ক্যানিয়লের কাছে এতক্ষণে সবকিছু পরিষ্কার। মিরান্ডা ইরতিজার কথা বলছে। কিন্তু সে অবাক মিরান্ডার কথাগুলো শুনে। বললো,
“তোমার কেন মনে হচ্ছে আমার অনুভূতি আছে ইজার প্রতি?”

“তুমি এখনও কী ভীষণ বোকা ক্যানি! নিজের অনুভূতি নিজে উপলব্ধি করতে পারছো না? এটা তো আমার জন্য আরও ভয়ংকর ব্যাপার হবে তাহলে। কারণ যতদিনে না তুমি এটা বুঝতে পারবে, ততদিনে এটা সমাধানও হবে না। একটা কথা মনে রাখো আমাদের বাগ্‌দান হয়ে গেছে। দুই ফ্যামিলিই চায় বিয়েটা হোক। এবং স্পেশ্যালি আমিও চাই।”

“কিন্তু আমি না চাইলে এই বিয়ে হওয়া অসম্ভব! যদি আমার মনে হয় আমি তোমার প্রতি…”

ক্যানিয়লকে থামিয়ে দিয়ে মিরান্ডা বললো,
“অনুভূতির কথা বাদ দাও ক্যানি। আমি জানি তুমি কখনোই আমার প্রতি কোনো বিশেষ অনুভূতি অনুভব করবে না। করার হলে অনেক আগেই করতে। আমরা ছোটো বেলা থেকে একসাথে বড়ো হয়েছি, অনেক দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি একসাথে। অনুভূতি আসার হলে এতদিনে এসে যেত। তুমি আসলে আমায় নিয়ে কখনও ভাবোইনি। কিন্তু তোমায় আমি বলে রাখছি, আমি কষ্ট পেতে আগ্রহী নই। আমাকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকো। নাহলে তোমাকেও কষ্ট পেতে হবে।”

“উন্মাদ হয়ে গেছো তুমি!”

“উন্মাদই তো হওয়ার কথা। যে ক্যানি কারো সাথে তেমন একটা মিশে না, সেই ক্যানির হঠাৎ একটা মেয়ের সাথে এত মেলামেশা আমাকে উন্মাদই করে দিয়েছে…”

ক্যানিয়ল মিরান্ডাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিলো। ঘাড়ের পিছনে দুই হাত রেখে মাথা নিচু করে বসে রইল অনেকক্ষণ। মাথার ভিতর যন্ত্রণারা সংগ্রাম করে যাচ্ছে। প্রতিটা বিষয় নিয়ে সে ভাবতে লাগলো। ইরতিজার প্রতি কি তার আসলেই অনুভূতি আছে? মিরান্ডার প্রতি কি তার অনুভূতি জন্মাবে না? না জন্মালে সম্পর্কটা কীভাবে গড়ে উঠবে? আর মিরান্ডা বলেছে মিরান্ডাকে নিয়ে সে ভাবেনি। ইরতিজাকে নিয়েও তো সে কখনও ভাবেনি। ইরতিজার ভাবনা মাঝে মধ্যে আপনা থেকে এসে হুটহাট করে মস্তিষ্কে গেড়ে বসতো। তাহলে ইরতিজার প্রতি তার অনুভূতি কখন কীভাবে জন্ম নিলো?

________________

রাত্রিকালে ইরতিজার ঘুম ভেঙে গেল ক্যানিয়লের কলের শব্দে। চোখ খুলে ক্যানিয়লের নাম দেখতে পেয়ে অবাক হলো সে। এই সময় ক্যানিয়লের কল দেওয়াটা আশ্চর্যজনক। সে কল রিসিভ করে ‘হ্যালো’ বলতেই ক্যানিয়ল বললো,
“আমি কি তোমার প্রেমে পড়েছি পাকিস্টানি গার্ল? না কি আমার উডবি ওয়াইফের ধারণা ভুল?”

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here