একটুখানি
— লামইয়া চৌধুরী।
পর্বঃ ৫০
কলরবের খুব কফি খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু
এলাকায় কফি পাওয়া যায় না। কফি খেতে হলে দূরে
যেতে হবে। আর বাসায় তো এখন যাবেই না।
মায়ের ঢং দেখলে আরো বেশি রাগ উঠবে। ভাবটা
এমন যেন উনি কুহুর মা। কুহুর চিন্তায় মরে যাচ্ছেন
উনি। আপাতত কলরব নিজের মাথা ঠাণ্ডা করতে এককাপ চা
খেলো দোকান থেকে। তারপর চুপচাপ চায়ের
দোকানেই বসে রইলো। সমীকরণ মিলাচ্ছে
সে। কাল রাত থেকেই তার মাথা কেমন যেন
ভোঁতা হয়ে গেছে। কি করবে কি ভাববে কিছুই
কূল পাচ্ছিলো না সে। এখন মাথা ঠাণ্ডা করে ভাববে
সে। একদম কুল ডাউন হয়ে। মেরিয়েম উজারলি যতটা
হট ঠিক তার চেয়ে বেশি কুল হয়ে কলরব সবটা
ভেবে দেখবে। প্রথমত একটু আগে খুবই জঘন্য
একটা চিন্তা করেছে সে। কূজনকে নাকি কুঁচি কুঁচি
করে পানিতে ভাসিয়ে দিবে। কীভাবে ভাবতে
পারলো খুঁজে পেল না কলরব। কলরব ভাবছে
কূজনের কি দোষ? আর সে নিজেও তো খুঁজে
এই গাধী মেয়েটাকেই ভালোবেসেছে।
কূজনেরও হয়তো একই প্রশ্ন। আর কূজন বেচারা
তো চুপচাপ সব সয়েই যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা
কলরবকে বা অন্য কাউকে সে নিজের মনের কথা
বুঝতে দেয়নি। জ্বরের ঘোরে যা বলার
বলেছে। জ্বরের ঘোরেও তো বলল সে
দুজনের মাঝে আসবে না, চলে যাবে। তাহলে
কূজনের দোষটা কোথায়? কিন্তু কুহু! কুহু যদি
কূজনকে ভালোবাসে তাহলে কলরব নিজে ওদের
বিয়ে দিয়ে দিবে। কূজন আর কুহুর মাঝে কখনো
আসবে না সে। কিন্তু সমস্যা হলো এই মেয়ে
ক্লিয়ারলি কিছুই বলে না। যদিও বা কলরবের ধারণা সে
কুহুর মনের কথা বুঝতে পারে তাও মেয়ে মানুষের
মন বুঝা বড় দায়। কথায় আছে স্বয়ং দেবতারাও নাকি
বুঝে না। কলরব একটার সাথে আরেকটা ঘটনা মিলিয়ে
দেখার চেষ্টা করছে। প্রথমত কূজন বলেছিল কুহু
যেন একবার তাকে ভালোবাসি কথাটা বলে তাহলে
সে চলে যাবে। মানে কুহু কূজনকে ভালোবাসি
বলেনি। কিন্তু আজ যখন কলরব নিজে কুহুকে
জিজ্ঞাসা করলো তাকে ভালোবাসে কিনা জবাবে
কুহু কিছুই বলেনি। কলরব অবশ্য এই জবাবের আশাও
করেনি। এতো তাড়াতাড়ি কি বলা যায় নাকি? সে নিজেও
বেশ সময় নিয়েছে। আর কুহুর মুখ থেকে
ভালোবাসি নামক কথা শুনতে সে মরেও যাচ্ছে না।
ভালোবাসাবাসি যদি শুধু তিন শব্দে আটকে থাকতো
তাহলে তো হতোই। ভালোবাসা প্রকাশের
অনেক ধরণের পথ আছে। তবে ছেলেদের
রাস্তাগুলো সীমিত। মেয়েরা বহু উপায়ে ভালোবাসি
বলে। এই ভালোবাসা কান দিয়ে শোনা যায় না, শুনতে
হয় হৃদয় দিয়ে। কোনো কোনো মেয়ে খুব
সুন্দর করে প্রেমিকের চোখে চোখ রেখে
অহর্নিশ জেগে থাকতে পারে। কেউবা
লজ্জায় মুখ তুলে তাকাতেই পারে না। কিছু মেয়ে
অভিমানের ঝুঁড়ি নিয়ে বসে থাকে। কেউবা
ভালোবাসার মানুষের প্রতি হুটহাট রেগে যায়, কারণ
ছাড়াই। ওরা চায় ভালোবাসার মানুষটি ওদের রাগ ভাঙাক।
অভিমানি মেয়েটি চায় প্রেমিক পুরুষটি যেন
মেয়েটির চোখের পানিটুকু দেখে আৎকে উঠে
বুকে টেনে নেয়। এরা সবাই তো ভালোবাসে
কিন্তু ধরণটা ভিন্ন। কলরব নিজের ভাবনা দেখে বেশ
অবাক হলো। মেয়েদের সম্পর্কে পিএইচডি
করে ফেলেছে এমন মনে হচ্ছে নিজেকে।
আনমনেই হাসলো তারপর হঠাৎ বুঝতে পারলো কুহু
বোধহয় তার উপর রেগে আছে। ফুলটুশীর
তো নাকের ডগায় রাগের রাজত্ব। নিশ্চই ঐসময়
ফোনে কথা বলেনি তাই হয়তো রাগ করেছে।
কিন্তু এতে রাগ করার কি আছে? ব্যস্ত ছিল তা তো
বলে দিয়েছে সে। তারপর ফোনও দিয়েছে।
এই সামান্য একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা করার কি আছে?
এই হল মেয়ে মানুষ। প্রথম তো কত কারখানা করে
কল দেওয়ার জন্য রাজি করাতে হয়। তারপর এটা নিয়েই
নাগড়ামি শুরু। হতে পারে প্রথম ফোনে কথা বলা
নিয়ে কুহুর কিছু এক্সপেকটেশন ছিল। মেয়েরা
তো আবার প্রথম দেখা হওয়া, প্রথম কথা বলা, প্রথম
চোখে চোখ রাখা, হাতে হাত রাখা সব কিছু স্পেশাল
চায়। সব প্রথমের দিন, বার, তারিখ সব মনে রাখে। কুহু
হয়তো তাই রেগে আছে। কিন্তু বিয়ে চাপে
পড়ে করছে কিনা সে প্রশ্নের জবাব দিল না
কেনো সে? এটা তো বলতে পারতো। চুপ থাকা
সম্মতির লক্ষণ হলেও কিছু বিষয় সোজাসোজি বলা
ভালো। অন্তত ইনিয়েবিনিয়ে কিছু বললেও কলরব
বুঝতে পারতো। কিন্তু বিয়ে ভেঙে দিবে বলায়
কান্না করলো কেনো? আবার সাথে বলে
দিয়েছে যেন অন্য ফুলটুশীদের মধ্য থেকে
কাউকে বিয়ে করে সে। কলরব চায়ের
দোকানের বেঞ্চ ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।
পকেট থেকে ওয়ালেট বের করে দাম মিটিয়ে
দোকান থেকে বেরিয়ে এলো। এক দুইটা রিকশা
যাচ্ছে পাশ দিয়ে। কলরব বুঝতে পেরেছে কুহু
তার উপর রেগে আছে। তাই বিকেলে একবারো
তাকায়নি তার দিকে। যতবার দেখেছে আড়চোখে
তাকিয়ে দেখেছে। কলরবের চিন্তা ভাবনা তো
চুম্বকের মতন। সবসময় প্রব্লেমটা টেনে বের
করে ফেলে সে। কিন্তু কূজন কুহুকে
ভালোবাসে শুনে সবটুকু চিন্তা ভোঁতা হয়ে
গিয়েছিল তার। সব একসাথে গুলিয়ে ফেলেছিল।
মায়ের উপরও কতক্ষণ রাগ ঝেরে এসেছে।
কলরব নিজেই চিন্তা করলো ইরিনের সাথে এতো
রাতে কেউ ছাদে দাঁড়িয়ে কথা বলবে সেটা সেও
মেনে নিবে না। মা তো মায়ের জায়গায় ঠিকই
আছে। বিষয়টা আসলেই খারাপ দেখায়। যতোই
ফিওন্সে হোক। কলরবের এখন বাসায় যেতে
মোটেও ইচ্ছা করছে না। তাই ছাদে দাঁড়িয়ে চাঁদ
দেখছে সে। যদিও চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে
তবে খুব বেশি ফিল করতে পারছে না। কেমন
যেন বিবর্ণ লাগছে। হঠাৎ কিছু একটার শব্দ শুনতে
পেল কলরব। দরজা খোলার শব্দ মনে হলো।
কলরব তো ছাদের দরজা খুলা রেখেই এসেছে
এটা আবার খুলবে কে? দেখার জন্যে এগুতে
যেতেই কিছু একটা মনে করে ঘাড় ঘুরিয়ে কুহুদের
ছাদের দিকে তাকালো। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট
দেখতে পেল একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে। সিঁড়িঘরের
সাইড দিয়ে হেঁটে ছাদের ওপাশে চলে যাচ্ছে।
কলরব মৃদু হেসে মোবাইলে সময় দেখলো। নটা
বেজে বারো মিনিট। কলরব খুব দ্রুত ভাবতে
লাগলো। মা কি কুহুকে পাঠিয়েছে? নাহ্ মা পাঠাবে না।
সে নিজেই কি এসেছে? হয়তোবা! কলরব ডাক
দিতে যেয়েও ডাকলো না। কুহুদের বাড়ি আর
কলরবদের বাড়ির ছাদ পাশাপাশি। লাফ দিয়ে সহজেই
যাওয়া যায়। কিন্তু দুটোতেই রেলিং দেওয়া। কিন্তু
কলরব ঝুঁকে একটুখানি দেখে নিল তারপর ভেবে
দেখলো ইজিলি যেতে পারবে সে।
…
কুহুর বেজায় মন খারাপ। বুক চিরে শুধু দীর্ঘশ্বাস
বের হচ্ছে। মন ভালো নেই তাই ভাবলো ছাদে
যেয়ে দাঁড়াবে। বারান্দায় এখন দাঁড়ানো যাবে না।
রাস্তায় দুনিয়ার মানুষ। ছাদের পিছন দিকটায় দাঁড়ালে কেউ
কিছুই দেখতে পায় না। বাড়ির পিছন দিকটায় শুধু কাঁঠাল গাছ
আর আম গাছ। বাড়িঘর তেমন নেই আর রাস্তাটাও কাঁচা
তাই মানুষজন চলাচল করে না। চাঁদ দেখতে কুহু যে
বরাবরি পছন্দ করে তা কবরী জানেন তাই কুহু মাকে
বলেই ছাদে চলে এলো। পিছন দিকটায় দাঁড়িয়ে
আছে। হালকা শীত পড়েছে। গায়ে চাদর জড়িয়ে
চাঁদ দেখছে কুহু। হঠাৎ কুহুর চোখের সামনে
কেউ হাত দিয়ে তুড়ি বাজালো। কুহু ভয় পেল একটু।
তাই আস্তে করে বলল,
– ইয়া আল্লাহ্!
তারপর বিস্ময় নিয়ে পাশে তাকাতেই দেখলো
কলরব দাঁড়িয়ে আছে। তাড়াতাড়ি করে বুকে ফুঁ
দিলো সে। কলরব ফিসফিসিয়ে বলল,
– তোমার ভয় হয় না?
কলরবের কথায় কুহু আবারো বুকে ফু্ঁ দিল। তারপর
বলল,
– আজব!
কলরব হাসলো তবে জোরে হাসলো না। পাছে
কেউ শুনে ফেলে আবার। কুহু কলরবের হাসির
দিকে তাকিয়ে আছে। কি অদ্ভুত মায়া লাগছে কুহুর।
কলরবের হাসিতে কিছু আছে কি? এতো ভালো
লাগে কেনো? আগে তো কখনোই ভালো
লাগেনি। মানুষ কি হারিয়ে যাওয়া জিনিষকেই
ভালোবাসে? কলরব ওর হবে না জেনেছে
বলেই কি আজ কলরবকে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে
করছে? কলরবের চওড়া হাসি দেখে কুহুর ইচ্ছে
করছে কলরবের গাল ছুঁয়ে বলতে,
– তুমি কি সত্যি আমায় ছেড়ে দিবে?
কথাটা ভাবতেই কুহুর চোখজোড়া ভিজে উঠলো।
কলরবের থেকে চোখ ফিরিয়ে নিল সে। যে
মানুষটা তার হবার নয় তাকে নিয়ে ভাবছে কেনো
সে? কলরব তার হবার নয় ভাবতেই কুহুর প্রতিটা শিরা
উপশিরায় বেদনা ছেয়ে গেল। খুব বেশি কষ্ট
হচ্ছে তার। কুহুর চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি
গড়িয়ে পড়লো। দ্রুত গতিতে কুহু পা চালালো চলে
যাওয়ার জন্য। কলরব জায়গা থেকে নড়লো না। ঠাঁই
দাঁড়িয়ে রইলো। কুহু কিছুটা দূর যেতেই কলরব সামান্য
জোরে বলল,
– কুহু তুমি কি চাচ্ছো আমি তোমার হাত ধরি?
কুহু কলরবের কথায় থমকে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ
ভাবলো কলরব আসলে কি বলতে চেয়েছে
তারপর পিছন ফিরে তাকালো। কুহুকে ফিরতে
দেখেই কলরব কিছুটা এগিয়ে গেল কুহুর দিক। তারপর
বলল,
– আমি জানতে চাইছি তুমি কি নিজ ইচ্ছায় আমাকে কথা
বলার একটুখানি সুযোগ দিবে নাকি চলে যেতে
চাইবে? চলে যেতে চাইলেও যেতে দিব না।
তোমার হাত ধরে আটকাবো তোমাকে।
কলরবের কথা শেষ হতেই কুহু স্বস্তির নিঃশ্বাস
ফেললো। কিন্তু কলরবের কথা শুনে প্রথমে
ভয়ে কুহুর গায়ের সবকটা পশম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল।
কলরব আবার নিজের জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালো, রেলিং
ঘেঁষে।
কুহু আস্তে করে বলল,
– আমার আপনার সাথে কোনো কথা নেই।
– কুহু! প্লিজ।
– কুহু নীচের দিকে তাকিয়ে রইল। অনেক্ষণ!
অনেক, অনেক, অনেকক্ষণ। তারপর কিছু একটা
বলতে চাইলো কিন্তু বলতে পারলো না। সব কথা
যেন গলায় এসে আটকে রইলো।
কলরব আকুতির স্বরে বলল,
– কুহু! তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করো?
কুহুর এবার কান্না চলে এলো। নীচের দিকে
তাকিয়ে বলল,
– নাহ্! কিন্তু…
তারপর আর বলতে পারলো, গলা দিয়ে কোনো
কথা বের হচ্ছে না।
কলরব উৎসুক হয়ে বলল,
– কিন্তু??
কুহু এবার মুখ তুলে চাইলো। কলরবের দিকে এক
দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে কলরবকে উদ্দেশ্য
করে বলল,
– কিন্তু যাকে ভালোবাসি সে অন্যকাউকে পছন্দ
করে।
কথাটা বলেই কুহু ঝড়ের গতিতে দৌড়ে চলে গেল।
কলরবও কুহুর পিছন পিছন আসলো। তারপর পথ
আটকে সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
– তা তুমি কাকে ভালোবাসো ফুলটুশী?
কুহু এবার আগুন ঝরানো চোখে কলরবের দিকে
তাকালো। যেন পারলে চোখ দিয়েই কলরবকে
ভষ্ম করে দেয়। কলরব একটুখানি কেশে বলল,
– তোমার কি আমাকে মেরে ফেলার ইচ্ছা?
– হ্যাঁ তাই, মেরে ফেলতে চাই।
কলরব মাথার চুল চুলকে বলল,
– তোমাকে না কাঁদলে একটুও ভালো লাগে না।
আমার মনে হয় তুমি যাকে ভালোবাসো সে
তোমার এরকম কাঁদুনে মুখ পছন্দ করে না। সে
পছন্দ করে নাকের ডগায় রাগ লেগে থাকা
মেয়েটাকে। যে রেগে গেলে চোখে
চোখ রেখেও দারুণ মিথ্যে বলতে পারে।
রেগে গেলে তার চোখগুলো ছোট ছোট
করে মিষ্টি কণ্ঠে ঝাল ঝাল কথা বলে মেয়েটা। তুমি
যাকে ভালোবাসো সে পছন্দ করে
ভীতসন্ত্রস্ত এক হরিণীকে। যে কিনা তোমার
ভালোবাসার মানুষটাকে দেখলেই ভয় পায়। চিনো
নাকি তাকে?? আমি কিন্তু ঠিকই তোমার ভালোবাসার
মানুষটাকে চিনেছি। ফুলটুশী তুমি কি আমার
ভালোবাসার মানুষটা চিনেছো?
– একদম আমাকে ফুলটুশী ডাকবেন না আপনি।
কলরব অবাক হয়ে বলল,
– কেনো?
– কেনো মানে কি? আমি আপনাকে ফোন
দিয়েছিলাম না?
– হুম দিয়েছিলে তো। আমি বিজি ছিলাম তাই…
– দেখুন সেটা সমস্যা না। সমস্যা হল সে নাম্বারটা
আপনার জানার কথা না। নতুন নাম্বার আমার। পিহু ছাড়া কেউ
জানে না। তাহলে চিনলেন কীভাবে আমি? আমি
তো কথাও বলিনি যে বলবেন কণ্ঠস্বর শুনে
চিনেছেন। যাকে তাকে ঢং করে ফুলটুশী বলে
বেড়ানো আপনার অভ্যাস। মেয়েদের সাথে
ফ্লার্ট করে বেড়ান তাই না?
কলরব কুহুর কথা শুনে হেসে দিল। সেই গগনবিহারী
হাসি। কুহু মুগ্ধ হয়ে কলরবের হাসি দেখছে। তাড়াতাড়ি
করে নিজের চেহারায় আবার রাগী লুক নিয়ে
এলো কুহু। কলরবের হাসি দেখে কিছুতেই গলবে
না সে। কলরব হাসতে হাসতেই বলল,
– আই লাইক ইট ফুলটুশী! রিয়ালি আই লাইক ইট! এন্ড
আই লাভ ইউ ফুলটুশী। লাভ ইউ!
কুহু মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিল।
কলরব ফিসফিস করে বলল,
– তোমাকে অনেক ভালোবাসি ফুলটুশী। তাই
তোমার নিরবতাও আমি চিনি।
কুহু কলরবের দিকে তাকিয়ে বলল,
– হুহ! বললেই হলো।
– না বললেও অনেক সময় হয় না। আবার কিছু কথা না
বললেও বুঝা যায়। যেমন তুমি কিন্তু বলোনি তুমি
আমাকে ভালোবাসো তাও বুঝে নিয়েছি। কি বলো
ভালোবাসো না?
কুহু কলরবের চোখে চোখ রেখে বলল,
– নাহ্ বাসি না।
– তাহলে তো মরণ ছাড়া আমার আর উপায় নেই। এক
কাজ করো ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দাও
আমাকে। তাও তো মরার আগে তোমার হাতের
ছোঁয়া পাবো।
কুহু দাঁত কিড়মিড় করতে করতে বলল,
– ফাজিল!
কলরব আহ্লাদি হয়ে কুহুর দিকে কিছুটা ঝুঁকে বলল,
– ফাজিল + ফুলটুশী দারুণ জমবে।
কুহু দুই পা পিছনে সরে বলল,
– জমে গেছে।
তারপর এক দৌড়ে সিঁড়িঘরে যেয়ে দরজা আটকে
দিল। আর কলরব হাসতে লাগলো সেই গগনবিহারী
হাসি।
চলবে…