এক ফুল সমুদ্র পর্ব-১০

0
2477

#এক_সমুদ্র_ফুল
#পর্ব_10(#অতীত_স্পেশাল_4)🌸
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida


ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চালাচ্ছে আরমান।তার পাশেই বসে আছে আয়শা।পিছনের সিটে বসে আছে সমুদ্র আর ওর কোলে বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে ফুল।তার পিছনের সিটে সাগর আর সোনালী।সমুদ্রের করা কাহিনী এখনও কারো বিশ্বাস হচ্ছে না।তাই পিছন থেকে অবাক চোখে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে সাগর আর সোনালী।সামনে থেকে কিছুক্ষণ পর পর আড় চোখে তাকাচ্ছে আয়শা আর আরমান।তাদের এই তাকানো সমুদ্রের চোখ এড়াতে পারলো না।
সামনে দেখে গাড়ি চালাও বাবা।এমনি রাত,,অ্যাকসিডেন্ট হতে বেশিক্ষণ লাগবে না তুমি যেইভাবে আড় চোখ দিয়ে আমাকে দেখছো এইভাবে তাকালে।(সমুদ্র)

হ্যা হ্যা।আরমান গাড়ি চালাও।সমুদ্র তো ঠিকই বলছে।(আয়শা)

হ্যা হ্যা।চালাচ্ছি।
বলেই আরমান ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো।

তোদের কি আলাদা ইনভিটিটেশন দিতে হবে?এইভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?(সমুদ্র কড়া গলায়)

না না।আমি তো ঘুমাবো এই দেখ ঘুমাচ্ছি।
বলেই চোখ বুজে নিলো সোনালী।

আমি তো এই যে বই পড়বো।সামনেই তো আমার পরীক্ষা।বই পড়ছি দেখ বই পড়ছি।
বলেই সাগর বইয়ে মুখ গুজে দিলো।

কিছুক্ষণ পর আবার যে যার মতো আড় চোখে সমুদ্রের দিকে তাকাতে লাগলো।এইবার সমুদ্র একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।কারণ ওদের কোনো দোষ নেই।আমি নিজেও জানে না ও এইসব কেনো করছি?কার জন্য করছি?শুধু জানি কোনো এক অজানা মায়া আমাকে ঘিরে ধরেছে।যেই মায়া আমাকে ফুলের কাছ থেকেই দূরে যেতে দিচ্ছে না।আর দাদুকে দেয়া প্রমিজ যেনো ওকে আরো বেধে রেখেছে।আমি কি দাদুকে দেয়া কথা রাখতে পারবো?
সমুদ্র ফুলের ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছু একটা ওকে টেনে দাঁড় করাচ্ছে ফুলের মায়ার সামনে।এইজন্য ও ফুলের মায়া ছাড়তে পারছে না।যেখানে ও নিজেই অবাক।সেখানে ও কি করে অন্যদের কাছ থেকে অবাক না হওয়া আশা করবে।


ওদের বাসায় পৌছতে পৌছতে ভোর হয়ে গেলো।আযানের আরো আধ ঘন্টা পর ওরা বাসায় পৌঁছালো।
বাসায় ঢুকেই সমুদ্র ফুলকে নিয়ে সোনালীর রুমে শুয়ে দিয়ে আসলো।ফুল এই অবস্থায় কিছুতেই একা থাকতে দেওয়া যাবে না।তাই সবাই ঠিক করল ফুল সোনালীর রুমেই এখন থাকবে পরে যদি বেশি সমস্যা হয় তাহলে আয়শা ওর সাথে থাকবে।যা ভাবা তাই কাজ।

ঘুমন্ত ফুলকে শুয়ে দিয়ে সমুদ্র নিজের সুট কেস নিয়ে রুমে চলে গেলো।কাউকে কিছু না বলেই।

দেখো।বলেছিলে না তোমার ছেলে পরিবর্তন হয়েছে?একটুও হয় নি যেমন আগে ছিলো তেমনি আছে। আগেও আমাদের কাজ থেকে দূরে থাকতে এখনও আমাদের কাজ থেকে দূরেই আছে।ততক্ষণও প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথা বলত না।এখনও প্রয়োজন ছাড়া কোনো কথা বলে না।(আরমান)

ছাড়ো না বাবা। ও এসেছে এতো দূর থেকে আবার সারা রাস্তা ফুল ওর কোলে ছিলো হয়তো ক্লান্ত হয়ে গেছি।(সাগর)

হুম বাবা।ছাড়ো এখন গিয়ে ফ্রেশ হয়ে তোমরাও ঘুমিয়ে পড়।আমিও গিয়ে ফুলের পাশে শুয়ে পড়ছি।কিছু হলে তোমাদের জানাবো।(সোনালী)

আচ্ছা যা তুই।সকালে উঠে আমাদেরও ডক্টরের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে।আয়শা চলো।
বলেই আরমান নিজের রুমে চলে গেল।

যে যাই বলুক না কেনো।আমার মনে হচ্ছে আমার সমুদ্রকে ফুলই আবার আমাদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে পারবে।এইজন্য যে করেই হোক ফুলকে সুস্থ করে তুলতে হবে আমাদের।(আয়শা মনে মনে)

কই আয়শা এসো।(আরমান রুম থেকে)

আসছি।
বলেই আয়শা নিজের রুমে ঢুকে পড়লো।


সকালে
প্রায় দশটার দিকে সবাই ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করার জন্য টেবিলে বসলো।
আমি কালকে ক্যাম্পিং এর জন্য বাহিরে যাবো!(সমুদ্র খেতে খেতে)

কয়দিনের জন্য?(সোনালী)

এক মাস!(সমুদ্র)

তোর স্কুল?(সাগর)

তা নিয়ে তোর চিন্তা করতে হবে না।(সমুদ্র)

সমুদ্র সাগর তোর বড়ো ভাই।(আয়শা)

মা প্লিজ আমি আর এই ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চাই না।আমার যা বলার আমি বলে দিয়েছি।
বলেই সমুদ্র উঠে নিজের রুমে চলে গেলো।

দেখলে তো ছেলেটা নিজের বড়ো ভাইকেও সম্মান দিতে ভুলে গেছে।(আয়শা রেগে)

মা তুমিও কেনো ওকে বারবার এক কথা বলো।সম্মান অর্জন করতে হয়।আমি এখনও ওর কাছ থেকে সম্মান অর্জন করতে পারিনি এইটা আমার অসফলতা।আর বাবা ও কিসের ক্যাম্পিং এ যাবে?(সাগর)

বিজনেস ক্যাম্পিং।রাঙামাটি।(আরমান)

ও।কিন্তু ওর স্কুল?(সাগর)

কাল থেকে স্কুলের গ্রীষ্ম কালীন ছুটি।(আরমান)

ওহ।তুমি যাবে না?(আয়শা)

না।আমি ফুলকে রেখে যেতে পারবো না।আর এইজন্য ও যাবে।(আরমান)

তারমানে এইবারও আমরা সবাই একসাথে কোথাও ছুটি কাটাতে পারবো না।(সোনালী মনমরা হয়ে)

সবাই চুপ।


কিছুক্ষণ পর
হ্যাল্লো ডক্টর শাহ্ বলছেন?(আরমান)

হ্যাল্লো।আরমান সাহেব আমি আপনাকেই ফোন দেবো দেবো বলে ভাবছিলাম।(ডক্টর শাহ)

আমাকে?কেনো?(আরমান অবাক হয়ে)

আসলে আপনার ছোটো ছেলে সমুদ্র আজ ভোরে আমাকে ফোন দিয়ে ঘুম থেকে উঠল।বললো ওর নাকী একটা পেশেন্ট এর জন্য appointment লাগবে।আর তা নাকি অনেক তাড়াতাড়ি।তখন আমি বললাম এতো ভোরে আমি appointment নিয়ে কিছু বলতে পারবো না।তাই সকাল দশটা এগারোটার দিকে ফোন করে বলবো।তখন ও বললো আপনাকে যেনো ফোন করে সময়টা বলে দেই।(ডক্টর শাহ্)

এইজন্য ভরে হন্তদন্ত হয়ে ও রুমে ছুটে গেছে।ফুলের জন্য ওর এতো চিন্তা।কিন্তু কেনো?হটাৎ ও এতো কেয়ারিং হয়ে গেলো কেনো তাও আবার ফুলের জন্য? যাই হোক এটা জেনে খুশি হলাম। ও কারো পরোয়া তো করে।আর সে যেই হোক না কেনো?(আরমান মনে মনে)

হ্যালো আরমান সাহেব আপনি শুনতে পারছেন?(ডক্টর শাহ্)

জ্বি জ্বি ডক্টর শাহ্।বলুন।(আরমান)

আপনারা কালকে সন্ধ্যায় আমার চেম্বারে পেশেন্ট কে নিয়ে চলে আসবেন!(ডক্টর শাহ্)

ঠিক আছে ডক্টর শাহ্।ধন্যবাদ আপনাকে!(আরমান)

আচ্ছা তাহলে রাখি।
বলেই ডক্টর শাহ্ ফোন কেটে দিলো।

যাক একটা চিন্তা দূর হলো।কিন্তু সমুদ্র কি,,চাইছি কি ও?(আরমান)

হটাৎ সোনালী মা বাবা বলে চিৎকার করতে লাগলো।
মা মা।বাবা বাবা কোথায় তোমরা আসো।(সোনালী চিৎকার করে)

কি হয়েছে কি?এমন করে চিৎকার করছিস কেনো?ফুল ঠিক আছে তো?(আয়শা রান্না ঘর থেকে দৌড়ে এসে)

হ্যা মা।ফুল চোখ খুলেছে।(সোনালী)

সর তো দেখি।
বলেই সোনালীকে সরিয়ে আয়শা ফুলের কাছে গেলো।

হ্যা তো।ফুল চোখ খুলেছে।আমি বরং সুপ নিয়ে আসি।ওকে খাইয়ে দিতে হবে।মেয়েটা কাল রাত থেকে কিছু খায়নি।
বলেই আয়শা রান্নাঘরে গিয়ে সুপ বানিয়ে নিয়ে আসলো।আরমান পাশেই দাড়িয়ে ছিল।সোনালী ফুলের মাথার কাছে বসে ছিলো।সাগর দেয়ালে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছে।সমুদ্র বাহিরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব দেখছে।
ফুল চোখ খুললেও সেই আগের মতই আছে।চুপ করে শুধু উপর দিকে তাকিয়ে আছে।কোনো কথা বার্তা কিছু নেই।
আয়শা সুপ নিয়ে এসে আস্তে আস্তে ফুলকে খাইয়ে দিলো।ফুল মাঝে মাঝে গিলতে পারে মাঝে মাঝে সুপটা মুখ বেয়ে নিচে পড়ে যায়।কিছুক্ষণ খাওয়ানোর পর।ফুল আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো।

আয়শা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে
কি থেকে কি হয়ে গেলো মেয়েটার?

আমাদের যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে ডক্টর দেখাতে হবে।(সাগর)

হুম।কালকে সন্ধ্যায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট!(আরমান)

ভালো।
বলেই আয়শা ফুলের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।

অন্যদিকে সমুদ্র কিছুক্ষণ দরজার পাশে থেকে পড়ে আবার নিজের রুমে চলে গেলো।


সমুদ্র নিজের রুমের বেলকনিতে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে!
আমি কেনো ওই মেয়েটার সাহায্য করছি?কারণ আমি দাদুকে কথা দিয়েছি আমি কোনো দিন ওর হাত ছাড়বো না।দাদুর সাথে যখনই আমার দেখা হতো তখনই উনি আমাকে বলত আমি যেনো মেয়েটার খেয়াল রাখি।উনি অনেক চিন্তিত থাকতো যে উনি চলে গেলে মেয়েটার কি হবে?কে খেয়াল রাখবে ওর?তখন আমি দাদুকে প্রমিজ করি আমি ফুলের খেয়াল রাখবো।যে করেই হোক এখন আমি আমার প্রমিজ রাখবো দাদু আমি ওর খেয়াল রাখবো।
আকাশের দিকে তাকিয়ে সমুদ্র কথা গুলো ভেবেই একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলো।


দুপুরে খাবারের পর,,,
দেখছো আজও ছেলেটা আমাদের সাথে খেলো না।(আয়শা মনমরা হয়ে)

সকালে খেয়েছে তো!(আরমান)

কোথায় খেলো?ক্যাম্পিং এর কথা বলেই তো উঠে গেলো।মুখে এক ফোঁটা কিছু না দিয়েই।(আয়শা)

কি আর করবে বলো? ও যখন আমাদের সাথে খেতে চায় না কি করার তাহলে?(আরমান দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)

হুম।তুমি এখন অফিসে যাচ্ছো?(আয়শা ব্যাগ গুলো আনপ্যাক করতে করতে)

হুম।অনেক দিন যাওয়া হয় নি।তাই ভাবলাম আজ হাফ বেলা করে আসি।আর কালকেও তো হাফ বেলাই করতে হবে!(আরমান)

হুম।একটা কথা বলবো।(আয়শা)

হ্যা বলো!(আরমান)

সমুদ্র কেমন যেনো পরিবর্তন হচ্ছে গো!আমার কেনো জানি মনে হয় ফুলই পারবে আমাদের ছেলেকে আবার আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনতে।(আয়শা)

আমারও তাই মনে হয়।(আরমান)

বাবা কোথায় তুমি?আমার প্রাইভেটে দেরি হয়ে যাচ্ছে।(সোনালী নিচে থেকে)

আসছি।তাহলে আমি যাই তুমি মেয়েটার খেয়াল রেখো।
বলেই আরমান চলে গেলো।যাওয়ার সময় সোনালী যেখানে প্রাইভেট পরে সেখানে ড্রপ করে দিয়ে যাবে।


সাগর নিজের রুমে বসে বসে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে।কিছু দিন পরেই ওর পরীক্ষা।এই পরীক্ষাতেই ও আর্মি হবার এক ধাপ এগিয়ে হবে।তারপরেই ট্রেনিং।খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছে।
আয়শা ব্যাগ গুছিয়ে রাতের রান্না করতে ব্যাস্ত।সোনালী প্রাইভেট পড়তে গেছে।আরমান অফিসে।কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার সমুদ্র আজ অফিসে যায়নি।যেই সমুদ্র অফিস বলতে পাগল সেই সমুদ্র অফিসে যায়নি।তবে ও নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।


সন্ধ্যার পর
সোনালী প্রাইভেট পরে বাসায় আসলো।এসে নিজের রুমে গিয়ে ও আবার চিৎকার দিয়ে উঠলো।

মা মা।ভাই,,সমুদ্র।(সোনালী)

কি হয়েছে?(আয়শা দৌড়ে এসে)

দেখো ফুল কেমন জানি করছে?(সোনালী কেঁদে কেঁদে)

কই দেখি তো?
বলেই সাগর ওর কাছে গেলো।গিয়েই দেখলো ফুল চোখ বন্ধ শুকনো গলায় বলছে
দাদুম দাদুম।আমাকে ছেড়ে যেও না। দাদুম।প্লিজ যেও না।আমি থাকতে পারবো না তোমাকে ছাড়া। দাদুম আমাকেও নিয়ে যাও তোমার সাথে।

যখন ফুল বললো– দাদুম আমাকে নিয়ে যাও তোমার সাথে তখন সমুদ্রের মনের মধ্যে কেমন যেনো ভয় ঢুকে গেলো।
তাহলে কি এই মেয়েও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?আমি কি দাদুকে দেয়া কথা রাখতে পারবো না?(সমুদ্র মনে মনে)

ফুল স্বপ্নের মধ্যে হয়তো খারাপ কিছু দেখেছে।এই জন্য ঘুমের মধ্যে এমন কথা বলছে।(সাগর ফুলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

দেখি তো।
বলেই আয়শা ফুলের কপালে হাত রেখে বলল
ওর তো জ্বর এসেছে।শরীর পুড়ে যাচ্ছে।এখন কি হবে?(আয়শা দিশে হারা হয়ে)

মা ফুলের কিছু হবে না তো?দাদুর মতো ও আমাদের ছেলে চলে যাবে না তো?(সোনালী কেদে কেদে)

সোনালী চুপ।মা না কেঁদে ডক্টরের কাছে ফোন দাও।আর তুই(সাগর) বরফের টুকরো নিয়ে আমার রুমে আয়।
বলেই সমুদ্র ফুলকে কোলে তুলে নিলো।

তুই ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস?(আয়শা)

আমার রুমে আজ রাতে আমার রুমে থাকবে।কালকে দেখা যাক কি হয়?
বলেই সমুদ্র চলে গেলো।

সোনালী তোর বাবাকে ফোন দিয়ে ডক্টর আনতে বল।
বলেই আয়শা সমুদ্রের পিছু পিছু গেলো।


সমুদ্রের রুমে
আয়শা ফুলের শরীর ভালো করে মুছে দিচ্ছে।আর সোনালী হালকা ঠান্ডা পানি দিয়ে জল পট্টি দিচ্ছে।বাহিরে দাড়িয়ে আছে সমুদ্র আর সাগর।

সাগর মাঝে মাঝে সমুদ্রের দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে।

কিছু বলবি?(সমুদ্র)

না।(সাগর)

কিছুক্ষণ পর আরমান ডক্টর নিয়ে আসলো।
ফুল কোথায়?(আরমান)

সমুদ্রের রুমে।(সাগর)

আচ্ছা।চলুন ডক্টর।
বলেই আরমান হন্তদন্ত হয়ে ডক্টরকে ফুলের কাছে নিয়ে গেলো।পিছু পিছু সাগর আর সমুদ্রও গেলো।

ডক্টর ফুলকে দেখে
ভয়ের কোনো কারণ নেই।আসলে ওর জ্বর এসেছে ভয়ের কারণে। ও হয়তো কোনো কিছু নিয়ে প্রচন্ড ভয় পেয়েছে।আমি ইনজেকশন দিচ্ছি আশা করি এতে জ্বরটা কমে আসবে আর ও গভীর ঘুমে থাকবে।তবে জল পট্টি দিতে থাকুন।
আপনারা যথাসম্ভব ওকে ভালো মনো বিজ্ঞানীকে দেখান।নাহলে এই ভয় ওর মনে গেথে যেতে পারে।আর এইবয়সে এমন কিছু কিন্তু ওর মানুষিক বিকাশে বাধা দেবে।(ডক্টর)

থ্যাঙ্ক ইউ ডক্টর।আমরা কালকেই ওকে নিয়ে যাবো।(আরমান)

ঠিক আছে।তাহলে আমি এখন আসি।(ডক্টর)

আমি আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।(সাগর)

আচ্ছা।চলুন।
বলেই ডক্টর চলে গেছে।

ওকে আমার রুমে নিয়ে চল।আমি ওর খেয়াল রাখবো।(আয়শা)

না ও আমার রুমে থাকবে।আমি কালকে সকাল পর্যন্ত আছি।সারারাত ও আমার কাছেই থাকবে।(সমুদ্র)

সমুদ্র,,,
আয়শা আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরমান ওকে থামিয়ে বললো
খেয়াল রেখো ওর।আর কিছু লাগলে জানিও।তোমার খাবার আমি উপরে পাঠিয়ে দিচ্ছি।

ঠিক আছে বাবা।(সমুদ্র)

পরেই আরমান আয়শা আর সোনালীকে নিয়ে বাহিরে চলে আসলো।

তোমার কি মনে হয় ও ফুলের খেয়াল রাখতে পারবে?(আয়শা)

আমার মনে হয় না আমার বিশ্বাস ও পারবে।ওকে ফুলের সাথে সময় কাটাতে দাও।সোনালী তুই গিয়ে সমুদ্রের খাবারটা দিয়ে আয়।(আরমান)

জ্বি বাবা।চলো মা আমাকে খাবার দিবে।(সোনালী)

কি করো তোমরা বাপ ছেলে আমি বুঝি না?
বলেই আয়শা নিচে চলে গেলো।

কেনো জানি মনে হচ্ছে। সমুদ্রই পারবে ফুলকে দেখে রাখতে।আর ফুলই পারবে সমুদ্রের খেয়াল রাখতে।(আরমান মনে মনে)


সমুদ্র খেয়ে দেয়ে পড়তে বসলো।প্রায় রাত এগারোটার সময়। আবার ফুল ঘুমের মধ্যে দাদুম দাদুম বলতে লাগলো আর কাপতে লাগলো।আর তা দেখেই সমুদ্র পড়া রেখেই ফুলের পাশে শুয়ে ওর মাথা নিজের বুকের মধ্যে রেখে জড়িয়ে ধরে আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।

কিছু হবে না ফুল।তুমি একা না আমি আছি তো তোমার পাশে।তোমার খেয়াল আমি রাখবো।আমি প্রমিজ করেছি দাদুকে।আমি তোমার কিছু হতে দেবো না।তুমি ভয় পেও না।
বলেই ফুলের মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।আর ফুলও সমুদ্রের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়ে ধীরে ধীরে চুপ হয়ে ঘুমাতে লাগলো।


চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here