এক শহর ভালোবাসা পর্ব_৪৪

0
1363

#এক_শহর_ভালোবাসা
#পর্ব_৪৪
#সুরাইয়া_নাজিফা

সকালে ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ শরীরে প্রচন্ড অস্বস্তি হতেই উঠে বসলাম। কেমন গা গোলাতে লাগলো তাই ধাক্কা দিয়ে শানের হাত সরিয়ে দিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলাম। হঠাৎ ঘুমের মধ্যে এমন হওয়ায় শান দ্রুত উঠে পড়ে আর দৌঁড়ে আমার পিছনে ওয়াশরুমে আসে। কল ছেড়ে কুলি করে মুখটা ধুয়ে নিলাম।আমি পাশ থেকে টাওয়ালটা নিতে পা বাড়াতে যাবো তখনই মাথাটা আবার ঘুরে উঠতেই শান পিছন থেকে আমাকে ধরে ফেললো। আমি শানের বুকে মাথা রাখলাম কিছুক্ষন।

“কি হয়েছে তোমার? ”

শানের এমন গম্ভীর কন্ঠো শুনে আমি আস্তে আস্তে নিজেকে একটু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম আর নিচের দিকে তাকিয়ে বললাম,

“কই কিছু না। ”
“আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলো কালকে তুমি আমার সাথে মিথ্যা বলেছো তোমার শরীরটা ভালো নেই তাই না। ”

শান অস্থির হয়ে আমার কপালে, গলায় হাত দিয়ে দেখল,
“কই জ্বর তো নেই তবে?”

আমি কোনো কথা না বলে চুপ হয়ে আছি। কি যে আছে আমার কপালে। দেখে তো মনে হচ্ছে প্রচুর রেগে আছে। আমাকে এভাবে চুপ থাকতে দেখে শান প্রচন্ড পরিমানে রেগে গিয়ে ধমক দিয়ে বললো,

“কি হলো চুপ করে আছো কেন আন্সার মি। ”

শানের ধমক শুনে একটু কেঁপে উঠলাম আমি শান আমার ডান বাহু শক্ত করে ধরে বললো,
“এই ঠিক করে বলোতো খাওয়া দাওয়া করছো তুমি এই কয়দিন যাবৎ ঠিক মতো। ”

সর্বনাশ করেছে। এই কয়দিন ধরে তো সত্যি সত্যিই আমি ঠিকঠাক মতো খাওয়া দাওয়া করিনা। আমারই বা কি দোষ খেতে পারলে তো খাবো।শান আনাকে চুপ থাকতে দেখে নিজের কোমড়ে একহাত রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

“এখনও বাচ্চাদের মতোই সবসময় তোমার পিছনে যতক্ষন খাবার নিয়ে দৌঁড়ানো যায় ততক্ষন ঠিকঠাক থাকো এই কয়দিন কাজে ব্যস্ত বলে তোমার খাওয়ার দিকে নজর দিতে পারিনি এজন্য না খেয়ে শরীরের এই অবস্থা করেছো তাই না। ”

আমি আমতা আমতা করে বললাম,
“উফ সকাল সকাল এতো চিৎকার চেঁচামেচি করছেন কেন আপনি?বাড়িসহ মাথায় তুলে ফেলবেন নাকি?কিছু হয়নি আমার। ”

শান অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,
“গলা তুলে আর একটা বললে ঠাঁটিয়ে এক চড় মারব। আমি দেখতে পাচ্ছি ঠিক আছো কি নাই তোমাকে বলার প্রয়োজন নেই। কালকে রাতেও মিথ্যা বলেছো তুমি। ”

শানকে এতো রাগতে দেখে আমার কান্না পাচ্ছিল। আমি গিয়ে ওনাকে জড়িয়ে ধরলাম।

শান রেগে বললো,
“ছাড়ো আমাকে। ”

আমি ঝাপটে ধরেই বললাম,
“না। ”

শান কিছু না বলে চুপ করে রইল কিন্তু আমাকে ধরল না। আমি উনার গালে আমার ঠোঁট ছোঁয়ালাম। মন খারাপ করে ধরা গলায় বললাম,
“স্যরি তো আমি আপনাকে টেনশন দিতে চাইনি এতো কাজের প্রেশারে থাকেন এই কয়দিন।”

এবার শানও আমাকে জড়িয়ে ধরল। জড়িয়ে রেখেই বললো,
“তোমার থেকে বেশী আমার লাইফে আর কোনো কিছুই ইমপর্টেন্ট নয়। তুমি টেনশন দিতে না চাইলেও আমি সারাদিন তোমার টেনশনেই থাকি সেটা কি তুমি জানো। তুমি খাচ্ছো কিনা, নিজের খেয়াল রাখছো কিনা সেটা ভেবেই অস্তির হয়ে থাকি। কারণ আমি জানি তুমি বেখেয়ালি। শুধু শুধু এই নামে ডাকি না আমি তোমায়।”

কিছুক্ষন আমি শানের বুকেই মাথা দিয়ে রইলাম। শান আমাকে কোলে তুলে নিল। এখন আর কিছু বললাম না কারণ এখন কিছু বললেই বকা খাবো। শান আমাকে কোলে তুলে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসপ আমাকে বেডে বসিয়ে দিলো।

“এখন ঠিক লাগছে শরীর? ”

আমি ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে বললাম,
“হুম। ”

“ওকে রেডি হয়ে নেও?”

আমি চমকে উঠে বললাম,
“রেডি হবো কেন?”

“ডাক্তারের কাছে যাবো।”

“ডাক্তারের কাছে কেন?কার কি হয়েছে?এই আপনি ঠিক আছেন তো?”

শান আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ধমক দিয়ে বললো,
“জাস্ট শাট ইউর মাউথ সোহা আমার কি হবে তোমাকে দেখাবো। ”

আমি ইনোসেন্ট ভাবে তাকিয়ে বললাম,
“দেখুন আমার কিছু হয়নি যাবোনা আমি। ”
শান কাবার্ড থেকে নিজের প্যান্ট শার্ট বের করতে করতে বললো,
“তোমাকে জিজ্ঞেস করিনি যা বললাম করো দ্রুত রেডি হও। ”

কথাটা বলেই উনি ওয়াশরুমে চলে গেল। ধ্যাত যে জন্য বলতে চাইনি সেটাই হলো এখন পুরোপুরি রোগী বানিয়ে ছাড়বে।


সবাই ব্রেকফাস্ট টেবিলে বসে ছিল সাথে আমরা এসে যোগ দিলাম। আমাকে সকাল সকাল এমন বাহিরে যাওয়ার জন্য রেডি দেখে মা বললো,
“কিরে কোথায়ও যাচ্ছিস নাকি সোহা?”

আমি কিছু বলার আগে শান বললো,
“হুম ডাক্তারের কাছে।”

বাবা ব্যস্ত হয়ে বললো,
“কেন কার কি হয়েছে?”

শান চেয়ার টেনে বসে বললো,
“সোহা অসুস্থ। ”

স্মৃতি আপু অবাক হয়ে বললো,
“হঠাৎ অসুস্থ মানে? কালকে পর্যন্ত তো সুস্থই ছিল। ”

আপু আমার কাঁধে হাত রেখে বললো,
“কি হয়েছে বাবু তোর।”

শান স্মৃতি আপুকে উদ্দেশ্যে করে বললো,
“তোমার বোনকে তো তুমি চেনো স্মৃতি মরে গেলেও কাউকে মুখ ফুঁটে কিছুই বলবে না। ”
আমি একটু বিরক্ত হয়ে বললাম,
“কিছুই না উনি একটু বেশী বেশী করছে। শরীরটা একটু দূর্বল লাগে কিছুদিন ধরে এজন্যই এখন ধরে বেঁধে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। ”

আমার কথাটা শুনে শান রক্তচোখে আমার দিকে তাকালো শানের তাকানো দেখে আমি নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ হয়ে খাওয়া শুরু করলাম।কিছুটা খেতেই আর খেতে ইচ্ছা করছিলো না তাই প্লেটটা ঠেলে উঠে দাঁড়ালাম।

“কি হলো কই যাও খাওয়া ফেলে?”
“খাবো না আর।”
শান চোখ দেখিয়ে বললো,
“একটু খাবারও প্লেটে দেখতে চাই না শেষ করো পুরোটা। ”
“প্লিজ না খেতে পারছি না। ”
“কোনো কথা শুনতে চাইছি না খাও। ”

আর কি করার খেতে বসে গেলাম আবারও শানকে মনে মনে বকা দিতে দিতে। কিন্তু দুই একবার মুখে দিতেই ভিতর থেকে সব ঠেলে আসতে চাইছে এমন অবস্থা।

শান গম্ভীর কন্ঠে বললো,
“দেখেছো না খেয়ে কি করেছো শরীরের।”

ভূমিকা আপু আমার সামনাসামনি বসে গালে হাত দিয়ে গোলগোল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। শানের উপর তো আর রাগ দেখাতে পারছি না তাই ভূমিকা আপুর তাকানো দেখে আমি একটু তেঁতে বললাম,
“কি হয়েছে ওভাবে কি তাকিয়ে আছো কেন?মজা নিচ্ছো?”

আমার কথা শুনে ভূমিকা আপু একটু হেসে বললো,
“না ভাবছি হঠাৎ তোমার এমন কি হয়ে গেল যে খেতেই পারছো না আমার তো অন্যকিছু মনে হচ্ছে।”

শান চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো,
“আর ভাবা ভাবির কাজ নেই। সোহা উঠো লেইট হচ্ছে। ”

আমি উঠে দাঁড়িয়ে সবাইকে বলে শানের পিছু চললাম। কিছুটা গিয়ে শান আবার দাঁড়িয়ে পড়ল আর আরশ ভাইয়াকে উদ্দেশ্যে করে বললো,
“আমার অফিসে যেতে লেইট হবে সব সামলে নিস ভাইয়ার সাথে। ”
“ওকে টেনশন নিস না। ”

তারপর আমি আর শান দুজনেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম।


ডাক্তারের কাছে আসার পর বেশ কিছুক্ষন সময় নিয়ে আমার চেকাপ করল। শান আমার সাথেই ছিল। যদিও আমাকে চেক করার সময় শানকে বলেছিল বাহিরে যেতে কিন্তু সে তো নাছড় বান্দা যাবে না মানে যাবেই না। উনার মুখটা কেমন কালো হয়ে আছে হয়তো একটু বেশীই চিন্তা করছে শান আমাকে নিয়ে এখন আমার নিজেরও খারাপ লাগছে এজন্যই বলতে চাইনি। চেকাপ করার পর ডাক্তার বললো উঠে আসতে। আমি উঠে গেলাম। তারপর আমরা দুজনেই ডাক্তারের সামনে দুটো চেয়ার টেনে বসে গেলাম।

ডাক্তার আমাদের দিকে তাকিয়ে বললো,
“বিয়ে হয়েছে কত বছর?”
শান বললো,
“চার বছর চারমাস। ”
ডাক্তার একটু হেসে বললেন,
“অনেক ভালোবাসেন নিজের ওয়াইফকে তাই না?”

ডাক্তারের কথা শুনে আমি একটু লজ্জা পেয়ে গেলাম। শান কোনো দ্বিধা ছাড়াই বললো,
“নিজের থেকেও বেশী। ”
আমি শানের দিকে তাকালাম। ডাক্তার আবার বললো,
“হুম আপনাকে দেখেই বুঝা যায়। তো বেবী আছে আপনাদের।”
“না।”
“কেন প্লান করেননি? ”
“আসলে ওর এখনও স্ট্যাডি চলছে তাই। ”

ডাক্তারের এসব কথার আগা মাথা কিছুই মাথায় ডুকতেছে না। এসব প্রশ্ন কেন করছে উনি? শুধু নিরব দর্শক হয়ে দেখে যাচ্ছি সব। ডাক্তার শানের কথার প্রতি উত্তরে বললো,
“ওহ।আচ্ছা এখানে কিছু টেস্ট দিয়েছি এগুলো করিয়ে কালকে দেখা করবেন। ”

“কি হয়েছে সোহার? ”

ডাক্তার হেসে বললো,
“অনেক বড় অসুখ হয়েছে তবে সেটা কালকে রিপোর্ট দেখে শিউর ভাবে বলতে পারবো। তবে আপাদত ওনার খাওয়া দাওয়ার দিকে একটু বিশেষ নজর দিবেন। অনেক দূর্বল উনার শরীর। ”

ব্যাস এটাই বাকি ছিল বলার। শান আমার দিকে তাকাতেই আমি চোখ ফিরিয়ে নিলাম তারপর ডাক্তারের কেবিন থেকে বেরিয়ে এলাম। সেখান থেকে একেবারে টেস্ট করিয়ে নিলাম। টেস্টের রেজাল্ট কালকে দিবে। আমরা দুজনেই হাসপাতালের বাহিরে এসে দাঁড়ালাম।

শান বললো,
“তুমি একটু দাঁড়াও আমি গাড়িটা পার্কিং থেকে নিয়ে আসছি। ”
“আচ্ছা। ”

শান চলে গেল। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শানের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ বলে উঠল,
“সোহা।”

হাসপাতালের মধ্যে নিজের নাম কোনো পরিচিত মানুষের কন্ঠে শুনতে পেয়ে অনেকটাই অবাক হলাম আমি। পিছনে ঘুরতেই যাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম তাকে দেখে মোটেও বিশ্বাস হচ্ছে না।আবারও পুরোনো ভয়টা জেগে উঠল। আমার অজান্তেই মুখ থেকে বেরিয়ে গেল,
“রায়ান ভাইয়া। ”

রায়ান একটু হেসে বললো,
“যাক তাও ভালো আমাকে এখনও মনে রেখেছো আমি তো ভেবেছি ঐদিনের পর আর মনেও রাখবে না। ”

উনার কথা শুনে আমার একটু খটকা লাগল তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম,
“আপনাকে মনে না রাখার মতো কোনো ভুল তো আপনি করেননি তাহলে কেন ভুলে যাবো। ”

রায়ানের চোখে মুখে অপরাধের ছাপ একদম স্পষ্ট হয়ে আছে। রায়ান মাথা নিচু করেই বললো,
“সত্যিই সোহা তোমার মন অনেক বড় যে এত সহজে আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো। সত্যি বলতে ঐদিনের পর আমি নিজেও ভালো নেই। এই একটা অপরাধবোধ আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আমি তোমার ভালোবাসায় না ভালোবাসা না ভালোবাসা হলে হয়তো তোমার ক্ষতি করার চিন্তা করতাম না। আসলে আমি তোমার সৌন্দর্যে এতটাই অন্ধ হয়ে গেছিলাম যে ঠিক ভুলের পার্থক্যই করতে পারিনি। তোমাকে নিজের করার জন্য কতটা নিচে নেমে গেছিলাম ভাবলেই নিজের প্রতি নিজের ঘৃণা হয়। ভাগ্যিস ঠিক সময় মতো সেদিন যদি শান না আসতো তাহলে তোমার জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হওয়ার কারণটা আমিই হতাম। পরবর্তীতে আমি অনুভব করেছি আমি কি পাপ করতে যাচ্ছিলাম তোমার আর শানের সম্পর্কটা নষ্ট করতে চাইছিলাম তেমার জীবন নষ্ট করতে চেয়েছিলাম যাইহোক শেষ মূহূর্তে আমি বেঁচে গেছি এই পাপ করা থেকে। তবে আমি সত্যি ক্ষমাপ্রার্থী। তুমি ক্ষমা না করলে আমি কখনোই শান্তিতে থাকতে পারবো না। প্লিজ সোহা ক্ষমা করে দেও আমাকে। ”

আমি উনার কথার অর্থ বুঝলাম না উনি কিসের জন্য অনুতপ্ত আর কেনই বা এতটা দোষি মনে করছে। উনি তো আমার সাথে তেমন কিছু করেনি শুধু একটু বিরক্ত অনুভব করতাম উনার এই গায়ে পড়া স্বভাবে বাট উনি যেভাবে বলছে তাতে তো মনে হচ্ছে উনি অনেক বড় কিছু করেছে। আমি একটহ ইতস্তত করে বললাম,

“ভাইয়া আপনি কি বলছেন আপনার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আপনি কাইন্ডলি বিষয়টা একটু খুলে বলবেন কি? ”

সোহার কথা শুনে রায়ান বেশ অবাক হলো নিজের বিষ্ময় নিয়ে বলে উঠল,
“কেন তানিশার পার্টির কথা মনে নেই তোমার? ”
“তো কি হয়েছে তাতে?”

সোহার এমন পাল্টা প্রশ্ন শুনে রায়ানের আর বুঝতে অসুবিধা হলো না যে সোহা সেদিনের ঘটা কোনো ঘটনাই জানে না হয়তো কেউ বলেনি? যাক ভালোই হয়েছে।রায়ান ভাবলো তাহলে সেই রাতের কথা নাহয় সোহার না জানাই থাক।

রায়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কথা ঘুরিয়ে বললো,
“না তেমন কিছুই হয়নি। আচ্ছা এসব কথা বাদ দেও তোমার খবর কি? তুমি হাসপাতালে কেন? অসুস্থ নাকি?”

আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম,
“একটু অসুস্থ? ”

“কি বলো কি হয়েছে?”

“জানি না কালকে রিপোর্ট দিলে বুঝতে পারব। তা আপনি বাংলাদেশে কবে এলেন আমি যতটা শুনে ছিলাম আপনি তো চলে গেছিলেন না দেশ থেকে? ”

রায়ান একটু হেসে বললো,
“হুম চলে গেছিলাম নিজের করা কিছু ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে তবে এই একবছর হলো দেশে ফিরেছি। চলে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু কাল রাতেই আমার ওয়াইফের লিভার পেইন ওঠে যার কারণে ওকে এখানে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। ”

“ওহ কি হয়েছে উনার? প্রেগন্যান্ট ছিলো কি?”

“হুম ছেলে হয়েছে। ”

রায়ান ভাইয়ার কথা শুনে আমি অনেক খুশি হলাম। যাক অবশেষে উনিও নিজের জীবনে ভালো আছে খুশি আছে।

আমি হেসে বললাম,
“কনগ্রাচুলেশন। ”

“ধন্যবাদ।এসো না ভিতরে এসে আমার বেবী আর ওয়াইফকে দেখে যাও। ”
আমি একটু মন খারাপ করে বললাম,
“আসলে ভাইয়া আমি শানের সাথে এসেছি আর শান গাড়িটা আনতে গেছে পার্কিং থেজে এসে যদি আমাকে না দেখতে পায় অনেক রাগ করবে বুঝতেই তো পারছেন। ”

“ওহ আচ্ছা তাহলে কোনো একসময় এসে দেখে যেও আর আমার ছেলের জন্য দোয়া করো। ”

“অবশ্যই।”

রায়ান ভাইয়া এমন কিছু টুকটাক কথা বলে চলে গেলেন।আমি উনাকে হাসিমুখে বিদায় দিলাম। যাক মানুষটা আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু উনার কিছুক্ষন আগে বলা কথা গুলো আমার কানে বারবার প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছি না। উনি কেন এমন ভাবে কথা গুলো বললো।আর তানিশার পার্টির কথাই বললো যেই রাডের কোনো কথা আমার মনে নেই। তাহলে কি ঐ রাতে এমন কিছু হয়েছিল যেই কথা আমাকে শান বলেনি। শান তো কখনো আমার থেকে কিছু লুকায়নি। তাহলে ঐদিনের কথা লুকিয়েছে কেন?কেন বলেনি আমায়? উনি এটা মোটেও ঠিক করেনি।
.
.
চলবে

বিঃদ্রঃ দিনদিন অলস হয়ে যাচ্ছি রিচেক দেওয়া হয়নি ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here