এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২ #লেখিকা – কায়ানাত আফরিন পর্ব – ১৩

#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
পর্ব – ১৩
‘ আপনি নাহিদ ভাইয়ার সাথে এরকম করলেন কেনো?’

রুমে এসেই সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়লাম আনভীরকে। উনি শার্ট খুলছিলেন এর মধ্যে আমাকে আসতে দেখে বোতাম খোলা বন্ধ করে সরু চোখে তাকিয়ে রইলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম,

‘ কি হলো বলুন?’

‘ কি রকম করলাম ওর সাথে। আমার জানামতে আমি তো সবসময় ওর সাথে ওমনই করেছি যেমনটা আমি সবসময় করি।’

উনি কথাটি বলে ওঠলেন বেপোরোয়া সুরে৷। আমি দম নিলাম। মনে মনে হাসফাস করতে থাকলাম কয়েকবার। অবশেষে উনি বললেন,

‘ তোমার ওই পিচ্চি মাথাটায় এত প্রেশার নিও না তো! বয়স আর কত! টেনশনের পাল্লা মাপলে তো মনে হবে ষাট বছরের বুড়ী।’

আমি দাঁতে দাঁত চেপে তাকালাম উনার দিকে। উনি এবার বললেন,

‘ নাহিদের সাথে এত কি কথা তোমার? ও তো এমনিতেই বাঁচাল, তুমিও কি ওই টাইপ হওয়ার পণ করেছো?’

‘ করলেও আপনার কি? বাসায় এভাবে একা থাকতেন, বুঝতেন। হসপিটালে নাহয় আরও মানুষরা আছে কিন্ত বাসায় তো নাহিদ ভাইয়া ছাড়া……’

‘ হসপিটালে কে আছে তোমার?’

উনার সরু কন্ঠ শুনে আমি ভাব নিয়ে বললাম,

‘ যেই হোক, আপনার চেয়ে হাজারগুণে ভালো।’

আনভীরের মুখ থমথমে হয়ে গেলো এতে। না পারছেন কিছু বলতে আর না পারছেন সইতে। আমি ঠোঁট চেপে হাসলাম শুধু। বললাম,

‘ উহু, পোঁড়া পোঁড়া গন্ধ পাচ্ছেন আনভীর?’

উনি বাঁকা হাসি দিয়ে শার্ট খোলাতে মনোযোগ দিতেই আমার মুখে হাসি উবে গেলো। বললাম,।

‘ একি! বাথরুমে যান, এখানে আমার সামনে খুলছেন কেনো?’

‘ আমার বউয়ের সামনে আমি খুলছি, তাতে তোমার কি!’

উনার চোখে মুখে রম্যাত্নক হাসি। আমি বুঝলাম একটু আগে আমার বলা কথাগুলোর প্রতিশোধ নিতেই ছোট প্রচেষ্টা মাত্র। আমি এবার অনেকটা রাগেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। বিড়বিড়িয়ে বললাম, ‘ চরম লেভেলের অসভ্য একটা!’

_________

নিষ্প্রভ রাতে বাহিরে শুধু শোনা যাচ্ছে খুবই সুক্ষ্ম কিছু শব্দ। ঢাকার মতো অতিব্যস্ত নগরীতে এ আর কঠিন কিছু না। আমিও সেই সাথে ছিলাম গভীর ঘুমে মগ্ন। কিন্ত আমি ঘুমের একপর্যায়ে কানের কাছে শুনতে পেলাম ভারী নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের শব্দ। সেই সাথে চাপা গোঙানির আওয়াজ। তৎক্ষনাৎ চোখ খুললাম আমি। আশানুরূপ ভাবেই নিজেকে পেলাম আনভীরের রুমে। চোখটা খুলতেই প্রথম চোখ গেলো বারান্দায়। প্রশস্ত কাচ ভেদ করে বাইরে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে গিয়ে দেখি বৃষ্টি পড়ছে। সেই সাথে বাতাসের তালে দোল খাচ্ছে সরু ডাল।

আমি ঘাড় বাকিঁয়ে তাকালাম আনভীরের দিকে। উনি আমার দিকে পিঠ দিয়ে বসে আছেন খাটের পাশে। মাথা খানিকটা নিচু করা আর দু’হাত মাথায় বেশ শক্তিদিয়েই চেপে ধরে আছেন যন্ত্রনায়। উনার এমন দৃশ্য দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম আনমনে। দ্রুত কম্বলের বাঁধন থেকে নিজেকে মুক্ত করে খাট থেকে উঠে পা বাড়ালাম উনার কাছে। দ্বিধা নিয়ে বলে উঠলাম,

‘ ক..কি হয়েছে আপনার? এভাবে…..’

‘ মাথাটা প্রচন্ড যন্ত্রণা করছে।’

উনি এ কথাটা বলেছেন অনেকটাই বাধ্য হয়ে। আমি হাত বাড়িয়ে টেবিল লাইটটি জ্বালালাম। তারপর উনার মুখের দিকে তাকাতেই মুখে ভয় উড়ে এসে বসলো। উনার নাক দিয়ে মৃদু রক্ত পড়ছে, ফর্সা নাক হয়ে আছে লাল। আমি এবার কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। না পারছি এভাবে রেখে যেতে আর না পারছি সরে এসে কাউকে ডাকতে। আমি ভীত হয়ে আনমনেই কপাল স্পর্শ করি উনার। জ্বরে পুরে যাচ্ছে উনার শরীর। আমি বিড়বিড়িয়ে বললাম,

‘ ইসসস….আপনার গা দেখি জ্বরে…’

আনভীর কোনো কথা বললেন না। যেন এই সব লক্ষণ উনার কাছে অতিথির মতো, আসে আর যায়। পূর্ব অভিজ্ঞতা যে বেশ কয়েকবার হয়েছে বুঝাই যাচ্ছে সেটা। আমি আতঙ্কে বললাম,

‘ আমি….আমি নাহিদ ভাইয়াকে ডাক দিয়ে আনছি।’

বলে উঠতে নিচ্ছিলাম আমি। কিন্ত আমায় চরম অবাক করে দিয়ে আমার হাত টেনে নিজের কাছে দাঁড় করিয়ে রাখলেন আমায়। উনি তখনও খাটে বসে আছেন দুর্বল শরীর নিয়ে। আমি প্রশ্নবিদ্ধ চোখে মাথা নিচু করে উনার মুখের দিকে তাকালাম। বিনাবাক্যে আমায় আরও একধাপ অবাক করে আচমকা নিজের হাত জোড়া দিয়ে আমার কোমড় জড়িয়ে ধরলেন আনভীর। পেটে মাথা গুঁজে আগ্রাসী কন্ঠে বলে ওঠলেন,

‘ আমার নাহিদকে প্রয়োজন না আহি! আমার তোমাকে প্রয়োজন।’

উনার এভাবে ঠোঁট নাড়ালো অবিচলভাবে আমার পেট স্পর্শ করে যাচ্ছে। যার দরুন আমার সারা শরীরে অন্যরকম এক শিহরণ জেগে উঠলো। আমি দাঁড়িয়ে আছি অবশ হয়ে। কন্ঠস্বর নিস্তব্ধ। সেই সাথে নিস্তব্ধ চারপাশ। কানের কাছাকাছি যেটা শুনতে পারছি সেটা হলো উনার উষ্ণ নিঃশ্বাস। আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে উনি যেন বাচ্চাদের মতো আমায় আরও নিজের চেপে পেটে মুখ গুঁজে রইলেন।
বাচ্চাদের প্রথম প্রথম স্কুলে যাওয়ার সময় যেই আতঙ্কটা বিরাজ করে ঠিক তেমনি। কোনোভাবে উনি নিজের থেকে আমায় একেবারেই দূর করতে চাচ্ছেন না এখন। আমি কাঁপা কাঁপা হাতে উনার মসৃন চুলে হাত বুলিয়ে দেওয়া শুরু করলাম। উনার উত্তাপে আমার শরীরটাও গরম হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম,

‘ আপনি একটু বসুন, আমি ওষুধ নিয়ে আসছি আপনার জন্য। নইলে ব্যাথা আর জ্বর কোনোটাই কমবে না। আর এই নিন ( টিস্যু এগিয়ে)…..নাকটা মুছে নিন পুনরায়। র..রক্ত পড়ছে আবার।’

বলেই আমি তড়িঘড়ি করে নাহিদ ভাইয়ার রুমে গেলাম। আসলে ওষুধ ছিলো শুধুমাত্র আমার কাছে বাহানা মাত্র। নাহিদ ভাইয়া আমায় এত রাতে দেখে মোটামুটি আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে কারনটি কি। তাই আমি বলার পরই বললেন,

‘ ভয় পাবেন না, এটা প্রায়ই হয় এআরকে’র। কোনো কারনে আবার স্ট্রেস নেওয়া শুরু করেছে যার জন্য আবার এ অবস্থা। আমি দুটো ওষুধ দিচ্ছি ড্রয়ার থেকে, আপাদত ওগুলোই বিকল্প হিসেবে খাওয়ান। এআরকে’র পার্সোনাল ডক্টর এটাই বলেছিলো। আর জ্বর খুব বেশি থাকলে উনাকে বলবেন শরীর টা একটু মুছে নিতে। তাইলেই হবে। আর আমি রুমে যেতাম বাট উনি যেহেতু না করেছে তাই গেলাম না। অলরেডি মাথা যন্ত্রণা করলে উনি অনেকটা অন্যরকম আচরণ করেন। রেগে টেগে গেলে কন্ট্রোল করতে কষ্ট হবে।’

আমি ওষুধ নিয়ে আনমনে উনার রুমে যেতে থাকলাম এবার। এজ এ ডক্টর হিসেবে আমি জানি যে এগুলো ব্যথা আর পার্লস রেট স্বাভাবিক করার ট্যাবলেট। আমি তারপর দ্রুত পা চালালাম রুম এ৷ উনি এখনও বসে আছেন সেভাবে। মুখে স্পষ্ট যন্ত্রণার ছাপ। আমি পানির গ্লাস আর ট্যাবলেট এগিয়ে দিলাম উনার দিকে। উনি তা চুপচাপ নিয়ে খেয়েে ফেললেন। ব্যাথা এবার কমছে ধীরে ধীরে। নিঃশ্বাস ফেলছেন ঘনঘন।

আমি মৌনব্রত হয়ে রইলাম। ভাবতে পারিনি উনাকে কখনও এতটা দুর্বল ভাবে দেখতে পারবো। কেন যেন মনে হচ্ছে কিছু একটা লুকোচ্ছেন উনি উনার ব্যাপারে। ডিসঅর্ডার আর যাই হোক কারন ছাড়া হয় না। উনার এমন কোনো অতীত আছে যার জন্য উনি এই সমস্যায় ভুগছেন দিনশুরুতে সবার সঙ্গে স্বাভাবিক থাকলেও দওনশেষে মাঝে মাঝে মাঝে মৃত্যুসম যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় এই ডিসঅর্ডার এর জন্য। এর মধ্যেও উনাকে মৃদু হাসতে দেখেও অবাক হলাম আমি। জিজ্ঞেস করলাম,

‘ একি! আপনি এভাবে মুচকি হাসলেন কেনো?’

আনভীর এ কথা শুনে সম্মোহনী দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন আমাতে। আমি অস্বস্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে গেলাম। আনভীর বলে ওঠলেন,

‘ এভাবে কেউ এর আগে এতটা পরোয়া করেনি আমার জন্য তাই!’

আমি তবুও নিশ্চুপ। হাত কচলাচ্ছিলাম আনমনে।

‘ তুমি না আমায় পছন্দ করো না। তাহলে এত যত্ন কেনো আমার জন্য। ডু ইউ ফীল সামথিং ফর মি?’

উনার ভ্রু জোড়া ভাঁজ করে এমন সন্দিহান প্রশ্ন করাতে আমি অপ্রস্তুত হলাম ভীষণ। বললাম,

‘ আমার……আমার দায়িত্ব ছিলো এটা।’

আনভীর এবারো হাসলেন ব্যঙ্গ ভঙ্গিমায়। যেন স্পষ্ট বুঝতে পেরেছেন আমার এগুলো সব উলট-পালট বাহানা। উনি এবার মিহি কন্ঠে বললেন,

‘ আহি!’

আমার শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ জেগে উঠলো উনার এভাবে ডাক দেওয়াতে। উনি পুনরায় বললেন,

‘ যদি এমন কিছু জানতে পারো যে আমি তোমার থেকে লুকিয়েছি বা চোখের সামনে যা আছে সব মিথ্যা, কি করবে তুমি?’

আমি দম নিলাম। বললাম,

‘ আপনার প্রতি সব বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবো আমি।’

কথাটি আমি বললাম এক সেকেন্ডও ব্যয় না করে। আনভীর দুর্বলভাবে হাসলেন, যেন এমন কিছুই আশা করেছিলেন তিনি৷ আমি এবার উনাকে চুপচাপ শুয়িয়ে দিলাম। বলে উঠলাম,

‘ ব্যথায় প্রচন্ড আবোল-তাবোল বকছেন আপনি, তার সম্পর্কে আপনার কি কোনো ধারনা আছে? এখন শুয়ে পড়ুন চুপচাপ।’

আমি এবার আমি খাটে বসতেই উনি আমার কোলে বাচ্চাদের মতো মাথা রাখলেন। আমি নির্বাক একরাচ সংকোচ নিয়ে তাকিয়ে রইলাম উনার দিকে। করছেন টা কি উনি? আগে তো কখনও এমন করেন নি। আনভীর জড়ানো কন্ঠে বললেন,

‘ আমায় কখনও ছেড়ে যাবে না তো আহি? একটা লম্বা সময় একাই অতিবাহিত করেছি। ১৫-১৬ বছর বয়সে বাবা-মাকে ছেড়ে একটা ছেলে যখন বিদেশে লাইফ কাটায় জানো সেটা কত কষ্টের? হোস্টেলের প্রতিটা পদে পদে র ্যাগিং এর শিকার হয়েছিলাম। শীতকালে বরফের মধ্যে বারান্দায় আটকে রাখা থেকে শুরু করে যা করা যায় সব। অসুস্থ হলে কেউ ছিলো না পাশে দাঁড়ানোর মতো। বাবা আমায় ভালোবাসতো ঠিকই কিন্ত তাই বলে ভাবেননি যে ওখানে আমি ভালো থাকবো কি-না! আমি আগে এমন ছিলাম না আহি। পরিস্থিতি আমায় এমন করেছে। সবাই শুধু একা ফেলে রেখেছে আমায়। আমি হ্যাপি, আমি হ্যাপি এই মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে, এতগুলো ফ্যানদের ভালোবাসা পেয়ে, কিন্ত দিনশেষে একেবারে একা হয়ে যেতাম আমি। আহি, কখনোই আমায় ছেড়ে যাওয়ার কথায় মাথায় আনবে না তুমি।আমি জানিনা যে তুমি আমার ভালোবাসা কি না। বাট ট্রাস্ট মি তুমি আমার কাছে এমন একটা জিনিস যা কখনোই আমি ছাড়তে পারবো না। আই নিউ ইউ এট মাই এভরি মোমেন্ট আহি! ‘

এই ধরনের হাজারো কথা বলে চলছেন উনি৷ আমি পাথরের ন্যায় বসে রইলাম। আঙুল চালাতে থাকলাম উনার মাথায়। আমি জানিনা এসব উনি কি ঘোরে বলছেন না-কি অন্যকোনো কারনে, তবে আমার প্রতি উনার এই পাগলামিটা কেনো যেনো প্রচন্ড ভালোলাগছে দেখতে।

________________

আকাশটা পরিষ্কার আজ। গতরাতের ঝুমসে বৃষ্টির পর প্রকৃতি যেনো নতুন করে মুখরিতা হতে শুরু করেছিলো। আমি ঘুম থেকে উঠে পাশ ফিরতেই দেখলাম ঘুমন্ত আনভীর। গতরাতের মতো আর বিচলিত অবস্থায় নেই, না আছে অস্থিরতা।

আমি খুব গভীরভাবেই উনার ঘুমন্ত মুখ পরখ করতে শুরু করলাম এবার। খাড়া নাক, লালচে পুরু ঠোঁট, উজ্জ্বল গায়ের রঙের সাথে উনার গায়ের গড়ন বেশ মানানসই। ঠোঁটগুলো কাঁপছে অল্পবিস্তর।
না বলে পারলাম না যে গানের গলার সাথে সাথে আসলেই চমৎকার দেখতে উনি। সেই সাথে রয়েছে দারুন এক পার্সোনালিটি। কিন্ত কে জানে উনার এতকিছুর পেছনে একটি বড় অসুখ, অস্থিরতা লুকিয়ে আছে? আমি উনার দিকে খানিকটা ঝুঁকে গেলাম আমাদের ঠিক প্রথম সাক্ষাৎ এর রাতের মতো, পরখ করে নিলাম উনার গায়ের তাপমাত্রা। চুলগুলো অল্পবিস্তর কেঁপে উঠাছে আমার উপস্থিতির জানান দিয়ে। এর মধ্যেই হঠাৎ আনভীর চোখ মেলে তাকালেন। আমায় নিজের এতটা কাছে দেখে বিস্ময়ের যেন অবকাশ রইলো না। আমিও টের পেলাম যে আমি আসলেই উনার কাছাকাছি আছি, অনেকটাই কাছাকাছি। উনি ভ্রু নাঁচালেন। সন্দেহ নিয়ে বলে ওঠলেন,

‘ উমমম, মিসেস আহির এভাবে আমার ওপর ঝুঁকে থাকাটা তো স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারছি না।….. ওয়ানা কিস মি বেবিগার্ল?’
.
.
.
.
~চলবে ইনশাআল্লাহ

অগোছালো হয়েছে একটু। বানান রিচেক করতে পারিনি সময়ের অভাবে। কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্ত।

ভুলক্রটি মার্জনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here