#এক_শ্রাবণ_হাওয়ায়-২
#লেখিকা – কায়ানাত আফরিন
#পর্ব – ১২
‘ আগে অলরেডি জড়াজড়ি করে লাফিয়ে আমায় কন্ট্রোললেস করেছো, এবার যদি উল্টাপাল্টা আবার কিছু করো, ট্রাস্ট মি, বড় একটা ভুল হয়ে যেতে পারে। আগেই ওয়ার্ন করে দিলাম আহি!’
আমি তখনও গুটিয়ে আছি পাহাড় সমান ভয় নিয়ে। উনার কথাগুলো শুনে ভয়ের সাথে লজ্জার মাত্রাটাও তিরতির করে বাড়তে থাকলো। আমি তখনও ভয়ে উনার শার্টের কলার চেপে ধরে বসে রইলাম। নড়লাম না একবিন্দুও। কেননা কুকুর ছানাটিকে আসলেই আমি প্রচন্ড ভয় পাচ্ছি। আনভীর আমার এ অবস্থা দেখে ঠোঁট দিয়ে ক্লান্ত শ্বাস ছাড়লেন। প্যাকেট থেকে ছোট বাটিতে ‘ডগ ফুড’ ঢেলে পুনরায় এগিয়ে দিলেন আমার হাতে। বললেন,
‘ জীমি কে দাও।’
‘ আমি…….আমি পারবো না আনভীর।’
উনি মৌনতা কাটিয়ে বলে ওঠলেন,
‘ ভয় পাও?’
‘ অনেক।’
আমার উত্তর শুনে উনি কথা বাড়ালেন না আর। আমার হাত প্লেটটি দিয়ে ডাক দিলেন জীমিকে। কুকুর ছানাটি আবার এসে পড়লো আমার কাছে। আমি ভয়ে পেছাতে যাবো পেছন দিয়ে হাত বাড়িয়ে আমার কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন আনভীর। যাতে একটুও আমি যেন নড়তে না পারি৷ এতসব দেখে রীতিমতো আমার ভয়ে কাবু হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হলো। তৎক্ষনাৎ উনি শীতল কন্ঠে বললেন,
‘ ভয় পেও না। জীমিকে ট্রেইন করা আছে। কোনো কামড় টামড় দেবে না। আহি! শুনেছো আমি কি বলছি?’
আমি কোনোমতে মাথা নাড়ালাম। এদিকে এই জীমির ভয় তার ওপর উনার জড়ানো কথাবার্তা সবমিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়ে গিয়েছিলো আমার। আমায় এমন দেখে উনি আশ্বাস দিয়ে বললেন,
‘ কিছু করবে না ও তোমার। আমি আছি তো!’
এই কথাটি শুনে আমার শরীর দিয়ে একটি শীতল হাওয়া বয়ে গেলো। আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম আনভীরের দিকে। উনার সুন্দর চোখজোড়ার ব্যস্ত দৃষ্টি জীমির ওপর মগ্ন। আমি ঠোঁট চেপে প্লেটটি জীমির দিকে এগিয়ে দিলাম। জীমি তাই হামাগুড়ি দিয়ে আমার কোলে বসে পড়লো। খেলার ছলে তোষামোদ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো আমায়। আমি ফ্যালফ্যাল করে জীমির দিকে তাকিয়ে রইলাম। কি সুন্দর দেখতে কুকুরটা। গায়ে ফর্সা লোমগুলো রাজকীয় ভাব ফুটিয়ে তুলেছে। যেন সে আনভীর রাজ্যের বিশিষ্ট রাজদূত কেউ। আনভীর এবার বললেন,
‘ মাথায় হাত বুলিয়ে দাও?’
আমি আপত্তি করছিলাম এতে। কিন্ত আনভীর আমার হাত দিয়ে জীমির মাথার কাছটিতে রেখে ইশারায় বললেন তা করতে। আমি জীমির গায়ে আদুরে স্পর্শ করতেই সে আরও আরামসে আমার কোলে শুয়ে পড়লো। প্রভাতি কিরণের প্রতিফলনে রোদ্দুর আছড়ে পড়ছে গার্ডের ওপর। এক পাশে নাম না জানা একটি গাছের মৃদু ডালপালার কড়মড় শব্দে মুখরিত পরিবেশ।
আমার ঠোঁটকোলে আপনা আপনি এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠলো৷ আনভীর জিজ্ঞেস করলেন,
‘ এখন ভয় লাগছে ওকে?’
‘ না।’
তৃপ্তি পেলেন আনভীর। বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জীমিকে বললেন উনার কোলে ঝাপঁ দিগে। তাই করলো জীমি। আমি শুধু অবাক হয়ে তা দেখতে লাগলাম। পরক্ষণেই আমার মনে পড়লো সময়ের কথা। ওহ! আমি তো বেমালুম ভুলেই বসেছিলাম যে হসপিটালে যেতে হবে। তাই উনাকে আর জীমিকে গার্ডেনে রেখে দ্রুতই রেডি হতে ভেতরে চলে যাই আমি।
_______________
হসপিটালে লাঞ্চ টাইম চলছে এখন। আমি সবেমাত্র সবগুলো ওয়ার্ড ভিজিট করে ক্যান্টিনের দিকে গেলাম। আমার সাথেই রয়েছেন ধ্রুব স্যার। পরনে এপ্রোন খুলে হাতে নিয়ে বললেন,
‘ তুমি টেবিলে বসো আহি! আমি লাঞ্চ নিয়ে আসছি।’
তারপর আমি গিয়ে টেবিলে বসলাম। এখানে আমার আরও কলিগ আছে। তারা প্রায়ই আমার আর ধ্রুব স্যারের ব্যাপারটি নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করেন। আমি মাঝে মাঝে এ নিয়ে একটু রাগারাগি করলেও ধ্রুব স্যার খুব একটা পরোয়া করেন না উনাদের কথায়। উনি লাঞ্চের ট্রে নিয়ে আসতেই ডক্টর সিনথি বলে ওঠেন,
‘ কি ব্যাপার ডক্টর ধ্রুব, আমাদের জন্য তো এভাবে নিয়ে আসলেন না?’
প্রতি উত্তরে কিছু বললেন না উনি। আমিও চুপ হয়ে রইলাম। এখান আমার সাথে আরও কয়েকজন আছে যারা এ.ডি হিসেবেই কর্মরত। তার মধ্যে ডক্টর ইশা যে কিনা আমার মেডিকেল ক্লাসমেট ছিলো সে হঠাৎ বলে ওঠলো,
‘ উহুম! উহুম! এটেনশন প্লিজ। আমি আমার সম্পর্কে একটি জরুরি সুসংবাদ শোনাতে চাই।’
ডক্টর সিনথি বললো,
‘ বিয়ে টিয়ে করছো নাকি ইশা?’
‘ আরে না ম্যাম, কি যে বলেন? ওয়েট দেখাচ্ছি! ‘
বলেই ব্যাগ থেকে কিছু একটা বের করলো ইশা। দাঁত কেলিয়ে বলে উঠলো,
‘ ট্যান ট্যানাআআআআআ!’
আমি বিস্ময়ে তাকিয়ে রইলাম হাতের টিকেটটার দিকে। জিজ্ঞেস করলাম,
‘ কি এটা?’
‘ এন্ট্রি টিকেট। তাও আবার যেমন তেমন না, সামনের উইকের ‘টাউন হল’ এ এআরকের কনসার্ট টিকেট! আই ক্যান্ট ইমাজিন ম্যান, অবশেষে এআরকে’র কনসার্ট টিকেট আমার হাতের নাগালে এসেছে।’
আমি বড় বড় চোখ করে ইশার দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। ডক্টর সিনথি বললেন,
‘ তো কবে কনসার্ট? ‘
‘ এইতো নেক্সট উইকে। আমি আর আমার বোন যাচ্ছি ওটাতে। এবার ইনশাআল্লাহ একটা অটোগ্রাফ আনবোই আনবো!’
ডক্টর সিনথির পাশ কেটে উনার এসিসট্যান্ট ধারা বলে ওঠলেন,
‘ ওএমজি! তুমি কত লাকি ইশা৷ আমি টানা ছয় মাস পাগলের মতো ওয়েবসাইট ঘাটছি, ফ্যানডমে টপে থাকার জন্য যা করার তাই করেছি। বাট আমি পেলাম না। এআরকে কে আমার যে কতটা ভালোলাগে বলে বুঝাতে পারবো না। উনার ভয়েস আর কিলার আইস নিমিষেই আমার মতো কাউকে ঘায়েল করে দিতে পারবে। ভাগ্যিস উনি অলয়েস লেন্স বা গ্লাস পড়ে থাকেন। নাহলে ফ্যান গার্লরা তো উনার তাকানোতেই হার্ট অ্যাটাক করতো।’
আমি এতক্ষণ নীরব দর্শক ছিলাম। খাওয়াতে মনও দিতে পারছিলাম না ভালোমতো। ইশা এবার বললো,
‘ আহি!’
ধ্যান ফিরলো আমার। ইশা জিজ্ঞেস করলো,
‘ তোমার মধ্যে তো এক্সাইটমেন্ট দেখছি না যে? এআরকে কে ভালোলাগে?’
আমি শুকনো ঢোক গিললাম। বললাম,
‘ না…..মানে…’
‘ না! এআরকে কে তোমার ভালোলাগে না আহি!’
ধারা বিস্ময় চোখে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। আমি আমতা আমতা করে বললাম,
‘ওমন কিছু না।’
আমি কোনোমতে উত্তর দিলাম ওদের। কেননা এতে কি বলা উচিত আমার জানা নেই। লাঞ্চ শেষ হওয়ার পরেও আমার মাথায় ওদের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। বাই চান্স ওরা যদি কোনোভাবে জেনে যায় যে আমি এআরকের ওয়াইফ তাহলে তো দ্বিতীয় দফা হার্ট অ্যাটাক করবে ওরা।আল্লাহ!
_____________
আজ সকাল থেকে মাথাটা অপূর্বের ভার হয়ে আছে। গতকাল বাড়িতে এসেছিলো শেষ রাতের সময়। ইদানীং প্রতি রাতেই নাইট ক্লাবে যাচ্ছে ও। ওয়াইনের বা হুইস্কির একটা বোতল না নিলে ওর ভালোলাগে না। ওটা নিলেই ওর মাথা ঠান্ডা হয়। নাহলে মাথায় সারাক্ষণই ‘আহি’ নামক যন্ত্রনাটি ঘুরপাক খেতে থাকে। অপূর্ব বুঝতে পারছে না যে আহিকে ও খুঁজে পাচ্ছে না কেনো? আগে তো এমন হয়নি? এর আগে তো আহি কম পালায়নি। তাহলে এবার এমন কেনো? ওর ভার্সিটি, ল্যাব, ফ্রেন্ডসের বাসায় তন্নতন্ন করে খুঁজছে, তবে ফলাফল একটাই, ‘আহি ইজ মিসিং!’, এতটুকুতে অপূর্ব শিউর, আর যাই হোক, আহি এই শহরে নেই। আর ওর এত সাহসও নেই একা এই গন্ডি থেকে পার হতে পারবে। কেউ তো আছে যে ওর হেল্প করছে, এটা ওকে খুঁজেই বের করতে হবে। এসব ভাবনার মধ্যেই রুমের দরজা ঠেলে প্রবেশ করলো অপূর্বের মা। বললো,
‘ তোর সাথে দেখা করতে এসেছে কেউ!’
‘ তো তুমি এসেছো কেনো আমার রুমে…..পাঠিয়ে দাও ওকে!’
এই ব্যবহার অপূর্বের নতুন না। অপূর্ব সবসময়ই এমন ব্যবহার করে ওর মায়ের সাথে। এর কারনও আহি৷ কারন আহির মায়ের মৃত্যুর পর যখন থেকে ওর বাবা ওকে ওদের কাছে ফেলে রেখে চলে গিয়েছে তখন থেকেই পাষাণের মতো মেয়েটাকে খাটাণ উনি। অপূর্ব শুরুতে কিছু না বললেনও পরবর্তীতে বলে এধরনের আচরণ না করতে। একটা ট্রোমাতে ছিলো ও। ওর ধারনা আহি আপাদমস্তক ওর কাঠপুতুল হয়ে কাজ করবে। অন্য কারও না। এমনকি ওর মায়েরও না।
এইতো কয়েক বছর আগের কথা। আহি তখন ব্যস্ত ছিলো মেডিকেল এডমিশন টেস্ট নিয়ে। চাচী তখন অনুমতি দেয়নি ওকে। কিন্ত অপূর্ব পরবর্তীতে অনুমতি দিয়েছিলো এ ব্যাপারে। আহির চাচী মেনে নিতে পারেনি। অনেকটা ক্ষোভের বশেই অমানবিক অত্যাচার করেছিলো ওর ওপর। আহি যাতে মেডিকেলের ভূত মাথা থেকে নামাতে পারে এর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলো। পরবর্তী তে অপূর্বের জন্য বেঁচে যায় আহি। সেই থেকেই মায়ের প্রতি ক্ষোভ যেন তুমুল রূপ ধারন করলো। আজও সেটা বিদ্যমান।
অপূর্বের উত্তর শুনে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো ওর মা। বিড়বিড়িয়ে বললো,
‘ আমার সংসারের নষ্টের গোঁড়াই ওই আহি!’
এই বলে চলে গেলো সে। কিছুক্ষণ পরই একজন যুবক এলো। পড়নে সাদামাটা পোশাক হলেও সাধারন কেউ ছিলো না। অপূর্ব হ্যান্ড এক্সারসাইজ করে গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
‘ আপডেট কি? খোঁজ পেয়েছো?’
‘ জ্বি স্যার। আপনার কথা অনুযায়ী নাহিদ নামের একজনকেই পেয়েছি আমি যে কোনো আইডল বা সেলিব্রেটি টাইপ কারও সেক্রেটারি। পুরো নাম নাহিদ রেজওয়ান খান। রকস্টার এআরকে ওরফে আনভীর রেজওয়ান খান এর সেক্রেটারি নাহিদ। সম্পর্কে ছেলেটা এআরকে’র কাজিন হলেও ওদের পার্সোনাল লাইফ আর প্রোফেশনাল লাইফ এক হয়নি।
আমি জানিনা স্যার যে এই নাহিদই সেই নাহিদ কি না যে আপনার বিরুদ্ধে এভিডেন্স কালেক্ট করেছে বাট আপনি নাহিদ সম্পের্ক যেমনটা চেয়েছিলেন উনি তেমনই একজন।’
অপূর্ব ভাবলো কিছুক্ষণ। নিজের ডান হাতের আঙুল চালিয়ে দিলো চুলে। বলে ওঠলো,
‘ এমন একজন মানুষ কেনো আমার পিছে পড়বে? ইন্টারেস্টিং! ‘
_____________
নাহিদ ভাইয়া কিছুটা চিন্তিত বিগত কয়েকদিন ধরে। আজও বারবার ড্রাইভ করতে গিয়ে মনোযোগ নষ্ট করে ফেলছেন। আমি আড়চোখে তাকালাম উনার দিকে। জিজ্ঞেস করলাম,
‘ কি হয়েছে ভাইয়া? কোনো সমস্যা?’
উনি ছোট্ট করে ‘না’ প্রতিউত্তর দিলেন। আমি কিছু বললাম না আর৷ আসলে আজকে অনেক ক্রিটিক্যাল একটা অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে হসপিটালে। এর পুরো দায়িত্বটি পড়েছে ধ্রুব স্যার আর ডক্টর নিহাজের ওপর। আমি যেহেতু উনার এসিস্ট্যান্ট ছিলাম তাই আমার ওপর দিয়ে ধকলটা কিন্ত কম যায়নি।
নাহিদ ভাইয়া একবার দেখলেন আমার বিষন্ন মুখ। হ্যাঁ, কিছুদিন ধরে বিরাট বিষন্ন হয়ে পড়েছি আমি। আমি ইদানীং গহীনভাবে খেয়াল করছি আনভীরের কার্যকলাপ। উনি একা খেতেই পছন্দ করেন। এমনকি আজ পর্যন্ত আমার সাথেও ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার কোনোটাই করেননি উনি। খুব গভীরভাবে খেয়াল করলে ধরা পড়বে এ বিষয়গুলো। আমি তখন জানতাম যে এর কারন কি হতে পারে।
এর মধ্যেই আমরা বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। আনভীর বরাবরের মতোই এসময়ে ছিলেন বাইরে। আমি হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। হাতে গরম গরম দু’মগ কফি নিয়ে গেলাম নাহিদ ভাইয়ার কাছে। জিজ্ঞেস করলাম,
‘ এবার বলেন তো কি হয়েছে?’
নাহিদ ভাইয়া অবাক হয়ে বললেন,
‘ ব্যাপার কি আহি? আপনার ই এস পি ক্ষমতা আছে নাকি?’
‘ ই এস পি ক্ষমতা থাকলেই কি বোঝা যায়? আপনার চোখ মুখই বলে দিচ্ছে সব। কি হয়েছে বলেন তো?’
নাহিদ ভাইয়া গম্ভীর হলেন। বলে ওঠলেন,
‘ আসলে, আনভীর যে ওষুধটা খায় ওটা কোনো কারনে কোনো ফার্মেসীতেই নেই। ‘
ভ্রু কুঁচকালাম আমি। বললাম,
‘ কি ওষুধ ভাইয়া?’
‘ এ…একচুয়্যালি আনভীর নরমাল থাকার একটা মেইন কারন হলো ওই ট্যাবলেট টা। এটা না খেলে ভাইয়ের প্যালপিটেশনস হয়, নাক দিয়ে একটু রক্ত পড়ে। যদিও তা ৩০ সেকেন্ডের মাথায় ঠিক হয়ে যায়, বাট কোনো হেল্প না পেলে তৎক্ষনাৎ মৃত্যুও হতে পারে। আর ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড আহি?’
আমি হ্যাঁ বললাম। ভাবতেই পারছি না যে উনার মেন্টাল কন্ডিশন এত উইক থাকা সত্বেও এত ক্যাজুয়ালি থাকে। আমাদের কথার মাঝেই আনভীর এসে পড়লেন। পরনে ব্ল্যাক মাস্ক আর ব্ল্যাক একটা হুডি। তাই তৎক্ষনাৎ আমাদের প্রসঙ্গ পাল্টাতে হলো। আনভীর তীর্যক চোখে তাকালেন আমাদের দিকে। বললেন,
‘ এখানে কি হচ্ছে? ‘
‘ কিছুনা, এমনিতেই আড্ডা দিচ্ছিলাম।’
আমার এই কথাটা কেনো যেনো ভালোলাগলো না আনভীরের। মুখে চাপা রাগের আভাস ফুটে ওঠলো। রাগী গলায় বললেন,
‘ এত কিসের কথা তোমার ওর সাথে? ভালোই তো বন্ধুত্ব চলছে। সারাদিন রোবটের মতো কাজ করো একটু ক্লান্ত লাগে না?’
নাহিদ ভাইয়া আগ বাড়িয়ে বললেন,
‘ আহা! এভাবে বকছেন কেনো আহিকে?’
আনভীর ঠোঁট চেপে নাহিদ ভাইয়ার দিকে তাকালো। এগিয়ে কান টেনে বলে উঠলো,
‘ আহি কি হ্যাঁ, আহি কি! এখন থেকে ভাবি বলবি ওকে। যদি আবার আহি শুনি, আমার ভাঙা গিটার দিয়ে তোকে পেটাবো।’
বলেই রাগে গজগজ করতে করতে রুমে চলে গেলেন আনভীর৷ আমি বোকার মতো তাকিয়ে রইলাম সেদিকে। সে সাথে নাহিদ ভাইয়াও। এমন কি বললো নাহিদ ভাইয়া যে এত রাগ করলেন উনি?
.
.
.
.
~চলবে….ইনশাআল্লাহ
আমার তরফ থেকে আজকে বিশাআআআআল…..বিশাআআআল একটা পার্ট। কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্ত। এবার সবার মন্তব্যের অপেক্ষায়।