#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_07
যখন নিজের নিরাপত্তার আবাস স্থান বিষাক্ত মনে হয় তখন নিশ্বাস নেওয়ার জন্য হলেও বাড়ির বাহিরে যেতে হয়।
আজ অনু নিজের পরিবারের কথা চিন্তা না করে এই মধ্যে রাতে চুপচাপ বাড়ির বাহিরে বেড়িয়ে আসে।
বাড়ির বাহিরে এসে একলা চলতে শুরু করে।
মন ভরে প্রকৃতির মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিচ্ছে।
এমন সুন্দর রাতের পরিবেশ দেখে অনুর আর ইচ্ছা করছে না বাড়িতে ফিরে যেতে।
যেহেতু এটা অনুদের এলাকা তাই সেখানে রাতের বেলাও নিজেকে নিরাপদ মনে করছে অনু।কারণ এখানে সে ছোট থেকে বড় হয়েছে।এখানের মানুষরা সহ প্রকৃতিও চেনে জানে অনু কে।
কিছুটা দূরে এসে একটা ছোট লেকের মতো আছে সেখানে এসে রাস্তার পাশে ঘাসের মাঝে হাটুতে ভর দিয়ে বসে পড়ে।
রাতের অন্ধকার বিশাল আকাশের বুকের মাঝে আলোর সমাহার নিয়ে অগণিত তারার মেলা বসেছে।
অনু চুপচাপ একলা নিরব প্রকৃতির আত্মনাদ কান পেতে শুনছে।হয়তো এই নিরবতা রাতের মায়া নয়তো অন্য কিছু।সে যাই হোক সে সব নিয়ে আর অনু চিন্তা করছে না।অনু ভাবছে সে কি এই বিয়েটা করে সুখি হতে পারবে?যে ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে সেই ছেলেটা তার সাথে ভালোভাবে কথা বলে না।
যার হাত সারাজীবনের জন্য সে ধরবে।
সে তো এমন ভাব করে সে অনুকে চেনে না।
তাহলে অনুকে বিয়ের পেছনে কি তার অন্য কোনো কারণ আছে?এসব চিন্তার মাঝে বিভোর ছিলো অনু।
এমন সময় কেউ একজন অনুর কাঁধে হাত রাখে।
অনু চমকে ওঠে!এতো রাতে কী তাহলে বাড়ি থেকে রাগ করে বেড়িয়ে এসে নিজের বিপদ বাঁধিয়ে নিলাম?
ভয়ে ভয়ে পেছনে ঘাড় ঘোরাতে দেখে আরিয়ান তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।অনু আরিয়ান কে দেখে স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে।যাক ভুল কোনো মানুষের দেখা সে পাইনি এরাতে।একজন বিশ্বস্ত মানুষের দেখা সে পেয়েছে।
আরিয়ান অনুর সামনে এসে বলে,”এভাবে এতোরাতে বাড়ির বাহিরে আশাটা তোমার মোটেই উচিৎ হয়নি!”
অনু কোনো উওর দেয় না নিরব থাকে।
আরিয়ান বলে,”বাড়ির মানুষের সব সিদ্ধান্ত যে তোমার মনের মতো হবে এমনটা কিন্তু নয়।তারপর ও আমাদের তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়।
সব সময় তাদের সাথে বিদ্রোহ না করা মোটেই উচিত কাজ না।”
অনু এবার বলে,”আচ্ছা যার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়ছে সে তো একবার ও আমার সাথে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করছে না।তাহলে শুধু শুধু আমাকে বিয়ে করার মানেটা কি?আমাকে যে বিয়ের আগে জানা বা বোঝার চেষ্টা করছে না।বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে এটা কি সঠিক চিন্তা ?”
এবার আরিয়ান ধমকের সুরে বলে,”দেখো মেয়ে আমি এসবের উপর পিএইচডি কমপ্লিট করি নাই।
আমার কোনো রকমের ধারণা নেই।তাই এই বিষয়ে আমি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না।”
অনু বলে,”হ্যা আপনি জানবেন কি করে।
আপনি তো আর মেয়ে মানুষ না যে আপনার ঘাড়ে এমন ভাবে সব চাপিয়ে দিবে।”
আরিয়ান :-তোমাদের তো বিয়ে নিয়ে ঝামেলা করে।আর আমাদের কতো দায়িত্ব তা জানো না বোঝো?একটা ছেলের কাধে তার বাবা-মা,ভাইবোন,স্ত্রী আরো অনেকের দায়িত্ব থাকে।তাদের সবার সব চাহিদা পূরণের দায়িত্ব ছেলেদের।
এই ধরো তোমার সাথে আমার বিয়ে হলো!
তাহলে তোমার দায়িত্ব আমার!তার সাথে আমার পরিবারের। এখন তুমি যদি বিয়ের পর আমাকেও মন থেকে মেনে নিতে না পারো।তাহলে তুমি কি আমার পরিবারের সদস্যদের মন থেকে মেনে নিতে পারবে?তাই ভেবে চিন্তে বিয়ের পিঁড়িতে বসিও বুঝলে।
অনু বলে,”জানেন পরশুদিন আমি ইরাদের সাথে ভার্সিটির ক্যান্টিনে একটু দেখা করতে গিয়েছিলাম।
সে আমাকে দেখে এমন ভাব করছিল যেনো সে আমাকে চেনে না।”
আমি কথার বলতে চাইলে বলে, “আমি ভার্সিটির জুনিয়র বেয়াদব মেয়েদের সাথে কথা বলি না।আর তুমি বা কেমন বেহায়া মেয়ে?সোজা চলে আসছো পরপুরুষের সাথে আগলা পিরিতের গল্প করতে?”
এবার আপনি বলুন সে কি ভাবে পারলো এতো গুলো মানুষের সামনে আমাকে অপমান করতে?সে কথা বলবে না,নিষেধ করে দিতো।কিন্তু সবার সমানে এভাবে অপমান করার কি ছিলো?
আর আজ তো সব লিমিট পার হয়ে গেছে।বাবা মা বিকালে ইরাদের বাড়িতে গিয়েছিল।সেখান থেকে এসে বলছে শুক্রবার আমার বিয়ে। বাহ কি দারুণ কথা।আচ্ছা আমি কি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি? কোথাও যাচ্ছি না তো! তাহলে বিয়ের মতো শুভ কাজে এতো তাড়াতাড়ি করার কি আছে?
আর সব থেকে বড় কথা আমি কুমারী মেয়ে।আমার বিবাহের জন্য মতামত দেওয়ার অধিকার আছে।কিন্তু এ সমাজে মতামত নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।তাদের মতামত আমাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।এই বিয়েটা সুন্দর ভাবে হতে পারতো।বিয়ের কথা শুনে বাড়ির মানুষেরা পর হয়ে গেছে।আমার সাথে পাঁচ মিনিট কথা বলার মতো সময় তাদের নেই।
আরিয়ান বলে,”আচ্ছা অনেক অভিযোগ করছো এবার বাড়িতে ফিরে যাও।নয়তো বাড়ির কেউ জানতে পারলে তোমার জন্য খুব খারাপ হবে।যে মেয়ের বিয়ে সে মেয়ে মাঝরাতে বাড়ির বাহিরে ছিলো।জানোই তো আমাদের সমাজের মানুষেরা কেমন।”
অনু একটু অবাক হয়ে বলে,”আমার বাড়ির মানুষের জানে না আমি বাহিরে?তাহলে আপনি জানলেন কী করে আমি এখানে এসেছি?”
আরিয়ান :-সন্ধ্যার দিকে আবির ফোন দিয়ে তোমার বিয়ের খবরটা আমাকে দিয়েছিল।আমি তখুনি বুঝতে পারি তোমার মনটা ভালো নেই।আর তুমি যে পাগল তাতে উল্টা পাল্টা কাজ শিউর করবা।আর কেনো জানি রাতে ঘুম আসছিল না তাই তোমাদের এলাকাতে চলে আসি।আর আসার পথে দেখেছি তোমাকে এদিকে আসতে।তাই চুপচাপ তোমার পেছনে চলে আসছি।মাঝ রাতে একটা মানুষিক রোগী কে তো আর একলা ছাঁড়তে পারি না।
অনু বলে,”আপনাকে যখনি একটু ভালো মনে করি তখনি আপনি এমন ফালতু কথা বলেন যার কোনো মানে হয় না।আসলে আপনি কোনোদিন ও ভালো হবার মানুষ না যতোসব। ”
আরিয়ান :-এইতো দেখছো মানুষের উপকার করতে নাই।এতো সময় ধরে উপদেশ দিলাম তার কোনো মূল্য নেই।
অনু:- রাখেন তো আপনার সস্তার উপদেশ। আমার এসবের কোনো দরকার নেই।বলে হনহন করে বাড়ির রাস্তায় হাটতে শুরু করে।
আরিয়ান ও কোনো কিছু না ভেবে অনুর পেছনে পেছনে যেতে থাকে।
অনু বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করার পর আরিয়ান নিজের বাড়িতে ফিরে যায়।
তবে অনু আরিয়ান কে এতোরাতে অনুদের বাড়িতে যাবার সময় কেউ একজন দেখে।
অনুর বাড়ির কেউ বুঝতে পারে না অনু রাতে বাহিরে গিয়েছিল।
পরেরদিন সকালে,
(আপনাদের হিরো হিসাবে কাকে পছন্দ?ভুলএুটি থাকলে বলবেন সংশোধ করবো)
‘
‘
‘
চলবে…..