খুনশুটি_ভালোবাসার পর্ব ৮

0
2118

#খুনশুটি_ভালোবাসার💞❤️💞
#Nishi_khatun (Angel_Frozen)
#part:_08

আবির বাড়ির বাহিরে যেতেই তাকে তাদের বাড়ির সামনের প্রতিবেশি আন্টি বলে,”দেখো আবির তোমার বোনের শুনলাম সামনে বিয়ে।তা এই বিয়েতে তোমার বোনের মতামত আছে তো?”

আবির :-জ্বি হ্যা! কিন্তু কেনো বলেন তো আন্টি?

আন্টি :-না মানে!বিয়ের আগে পরপুরুষের সাথে মাঝরাতে ঘোরাঘুরি করাটা একদম ভালো দেখায় না।

আবির:- আন্টি আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না!

আন্টি :-কাল রাতে নামাজ পড়তে উঠে একটু বারান্দাতে এসেছিলাম।তখন দেখলাম তোমার বন্ধু অনুকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যাচ্ছে। তা তোমরা যতোই ঐ ছেলেটা কে বিশ্বাস করো না কেনো।এতো বেশি বিশ্বাস করা কিন্তু মোটেই উচিৎ না।মনে রাখবে আগুর ঘি পাশাপাশি রাখতে নেই।তাছাড়া তোমার বোন তুমি ভালো বুঝবে।তবে আমার বলার দরকার ছিলো তাই আমি সাবধান করে দিলাম। পরে দেখো খারাপ কিছু হলে তখন আবার বলো না আগে থাকতে কেউ সাহায্যদান করে নাই।

আবির:-আন্টি জানি না কাল রাতে আরিয়ান আর অনু একসাথে ছিলো কি না।তবে আপনি ওদের সম্পর্ক নিয়ে অযথা বেশি চিন্তা করছেন।ওদের মাঝে এমন কোনো সম্পর্ক নেই।অনু আর আরিয়ান তো তেল আর পানি।যাদের কখনো মিল বা এমন সম্পর্ক সম্ভব না।

আন্টি :-আজকালকের ছেলে মেয়েদের ভালো উপদেশ দিতে নাই।তাদের কিছু বলাটাই বৃধা।থাকো তুমি তোমার অন্ধবিশ্বাস নিয়ে।যখন কোনো দূর্ঘটনা ঘটবে তখন আমরাই দর্শকের শাড়িতে থাকবো বুঝলে বলে চলে যায়।

আবির ঐ আন্টির কথা খুব একটা গায়ে মাখে না।কারণ সে জানে অনু আরিয়ানের মাঝে এমন কোনো কিছুই নেই যা ঐ সব কিছুর ইঙ্গিত করবে।আর কাল রাতে যদি আরিয়ান এখানে এসে থাকে তাহরে সে কথা আমাকে নিজে থেকেই বলবে।

আবির এসব কথা বাদ দিয়ে বোনের বিয়ের বাজার করতে চলে যায়।অনু আর ইরাদের বিয়েটা খুব সিম্পল ভাবে হবে।তাতে কি?মেয়ের বাড়ির মানুষেরা সিম্পল বিয়ের আয়োজনে ও কোনো কমতি রাখতে চাইছে না।তাই তারা তাদের মতো চেষ্টা করছে।

এদিকে ইরাদ বাড়িতে নাক ডেকে ঘুম দিচ্ছে।এমন সময় তাসনিয়া সেখান এসে ইরাদ কে বলে,”ভাইয়ারে তোর হবু বউ অন্যর হাত ধরে পালিয়ে গেছে।”

বোনের মুখে এমন কথা শুনে ইরাদ ধড়ফড়িয়া ঘুম থেকে জেগে বলে,”কার সাথে পালিয়ে গেছে?”

তাসনিয়া হেসে বলে,”আবার কার সাথে তোমার ঐ কুম্ভকরণের ঘুমের মাঝে।”

ইরাদ রেগে বলে,”দেখ তাসনিয়া আমার এসব ভালতু কথা মোটেই পছন্দ না।অনু কে নেক্সট টাইম একদম এমন ফালতু কথা মজার ছলেও বলবি না।”

তাসনিয়া কান ধরে বলে,”আচ্ছা নেক্সট টাইম এমন কথা আর বলবো না।এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এসো মা তোমাকে নিচে ডাকছে।”

ইরাদ রেডি হয়ে নিচে আসলে ওর মা একটা বিয়ের কার্ড হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,”এই কার্ডে সঠিক ঠিকানা দেওয়া আছে।কার্ডটা যেনো সঠিক স্থানে পৌঁছে যায়।কারণ এটার সঠিক স্থানে যাওয়াটা খুব দরকার।”

ইরাদ কার্ডটা হাতে নিয়ে বাড়ির বাহিরে চলে আসে।বাহিরে আশার পর তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে যায়।আর রাস্তার মাঝেই কার্ডটা ফেলে দেয়।বলে,”ধুর এসব কার্ড সঠিক স্থানে না গেলে সমস্যা হবে না।মায়ের আর কাজ কাম নেই অযথা টাকা গুলো এসব কার্ডের পেছনে নষ্ট করছে।”

ইরাদের বন্ধুদের মধ্যে একজন বলে,”দোস্ত কিছুদিন পর বিয়ে করে তো সারাজীবনের জন্য বউয়ের স্বামী হয়ে যাবি।তখন তো আর আমাদের জন্য তোর কাছে একটু সময় থাকবে না।”

ইরাদ বলে,”আরে ধুর ওইসব বিলাই মার্কা স্বামী আমি হবো না।বিয়ের পর বউ থাকবে বাড়ির কামের মেয়ে হয়ে আর আমি থাকবো নবাবজাদা হয়ে।তাই আমাকে নিয়ে তোদের এতো চিন্তা করার দরকার নেই।”

এদিকে অনু নিজের রুমের মাঝে পায়চারি করতে শুরু করেছে।তা দেখে স্নেহা বলে,”আপু তোমার সমস্যা কী?এভাবে রুমের মাঝে পায়চারি করছো কেনো?”

অনু স্নেহার হাত দুটো ধরে বলে,”আচ্ছা তুই আমার নিজের আপন বোন তাই তো?”

স্নেহা ভ্রু কুঁচকে বলে,”কোনো সন্দেহ আছে এই বিষয়ে?”

অনু :-আচ্ছা তুই আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবি?

স্নেহা :- হ্যা বলবো!কী সাহায্য লাগবে তোমার?

অনু ;- আমি ঐ ইরাদকে বিয়ে করতে চাই না।প্লিজ আমারকে এই বিয়েটা ভাঙ্গতে সাহায্য কর।

স্নেহ বিছানার উপর ধপাৎ করে শুয়ে পরে বলে,”আর কোনো কাজ ছিলো না?শেষ পর্যন্ত বিয়ের মতো পবিত্র সম্পর্ক আমাকে ভাঙ্গতে বলছো?”

অনু রেগে বলে,”ঐ ডায়নি বুড়ি ঐ বেডারে কি আমি বিয়ে করছি?যে তুই পবিত্র সম্পর্ক বলছিস? বিয়েটা সবে মাএ ঠিক হয়েছে এখনো বিয়েটা হয়নি।প্রতিদিন মানুষের এমন কতো বিয়ে ঠিকঠাক! তারপর সে বিয়ে গুলো ভেঙ্গেও যায়।আমার এই বিয়েটাও না হয় সেই লিস্টে পরবে।”

স্নেহা :-ঐ সব বিয়ে ভাঙ্গার জন্য কোনো না কোনো কারণ দায়ী থাকে।তুমিও ইরাদ ভাইয়াদের সামনে এমন কোনো কারণ এনে দাও যাতে তারা বিয়েটা ভেঙ্গে দেয় সিম্পল।

অনু :- আচ্ছা বিয়ে ভাঙ্গার জন্য কি করণ দিবো?

স্নেহা :- এই বড় বোন কে?আমি না তুমি?যেহেতু তুমি আমার বড়।তাই নিজের বিয়ে ভাঙ্গার কারণ ও তুমি নিজেই বাহির করো।আমি তো চাললাম হাওয়াতে ভাসতে।

অনু এবার পড়েছে বিপদে।সে আর যাকে ইচ্ছা বিয়ে করতে রাজী আছে তবে ঐ ইরাদ কে নয়।এখন সে কি এমন গল্প শোনাবে সবাইকে? যাতে তার কথা বিশ্বাস করে ইরাদের পরিবার বিয়েটা ভেঙ্গে দেয়।

অনু ভাবছে সমস্যা নেই এমন একটা গল্প বানিয়ে সবার সামনে উপস্থাপন করবো কেউ অবিশ্বাস করতেই পারবে না।

অনু আরিয়ান কে কল দিয়ে বলে,”আমি আমার বিয়েটা ভাঙ্গার রাস্তা পেয়েগেছি।এবার দেখবেন আমি পাগলি, মানুষিক রোগী না।”

আরিয়ান :তুমি যে মানুষিক রোগী না সেই প্রমাণ দিতেই শুধু মাএ বিয়েটা ভাঙ্গবে?অযথা একটা সুন্দর সম্পর্ক ভাঙ্গার দরকার কী?

অনু :-ধুর আপনার কাছে কিছু বলাটা বৃথা।উৎসাহ তো দিতে পারবেন না, তাই-না।তাই অযথা বাড়তি জ্ঞান দেওয়ার দরকার নাই।

আরিয়ান :-আসলেই তোমার মাথায় সমস্যা আছে।

অনু রেগে ফোনের লাইনটা কেটে দেয়।তারপর বলে,”আমি যে কি কি করতে পারি তা এবার সবাইকে বুঝিয়ে দিবো।চুপচাপ থাকি দেখে তো আমাকে পানিতে ভাসিয়ে দিতে পারে না সবাই।হুহ
(ভুলএুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন সবাই)



চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here