গল্প : অবশেষে তুমি (পর্ব ৩)
কলমেঃ Asma Aktar Urmi
কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেল। সবার মনে স্বস্তি। কিন্তু এ শান্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। আধাঘন্টা পরে নেহালের লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়। সবাই ওদের বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ওরা পিস্তল নিয়ে সবাইকে ভয় দেখায়। তারপর আমার রুমে গিয়ে আমাকে জোর করে তুলে কাজী অফিসে নিয়ে যায়। যখন অনেক চেষ্টার পরও আমি সাইন করছিলাম না তখন ওরা বললো যে আমাদের বাড়িতে এখনও ওদের লোক আছে। আমি রাজি না হলে আমার বাবা মায়ের ক্ষতি করবে। বাধ্য হয়ে আমি সাইন করলাম। তারপর আমাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে করে এই বাড়িতে নিয়ে আসলো। এটা কোন জায়গা আমি কিছুই জানি না।
বাবা মায়ের জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে। তাঁরাও হয়তো আমার জন্য এভাবে চিন্তা করছেন। জানি না ওনারা এখন কি করছেন।
খাবারের প্যাকেটটা ফেলে দিতে গিয়েও দিলাম না। না খেলে আমি অসুস্থ হয়ে যাব। এটা হতে পারে না। যেকোনো কৌশলে আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে। এসব ভেবে খেয়ে নিলাম। ওয়াশরুমে যাওয়া দরকার। ওয়াশরুমটা রুমের বাইরে। রুম থেকে বের হয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। বাইরে বেরিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছি। নেহাল বোধহয় ঘুমিয়েছে। কোনো সাড়া পাচ্ছি না। সদর দরজার দিকে তাকাতেই মনটা আনন্দে ভরে গেল। তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করে দেখি দরজা লক করা। আনন্দটা নিমেষেই শেষ হয়ে গেল। রুমে আসার জন্য পেছনে ফিরতেই নেহালকে দেখে চমকে উঠলাম।
– তুমি কি আমাকে এতটাই বোকা ভেবেছো? দরজা লক করা। চাবি আমার কাছে। আমার অনুমতি ছাড়া তুমি বাইরে যেতে পারবে না।
– কতদিন আমাকে আটকে রাখবেন?
– সারাজীবন।
রুমে এসে একা একা কাঁদতে লাগলাম। বাবাকে খুব মনে পড়ছে। আমার বিয়ে নিয়ে তাঁর কত আনন্দ, কত আশা ছিল। সব শেষ হয়ে গেল।
দিন যাচ্ছে। এই অসহ্য পরিস্থিতিতে পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি। প্রতিদিন ছাদের খোলা হাওয়া ছাড়া আমি থাকতে পরতাম না। আর এখন ঘরের মধ্যে বন্দী আছি। নেহাল আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু আমার ঘেন্না হয় ওর সাথে কথা বলতে। ও যদি সত্যিই আমাকে ভালোবাসতো তবে আমার জীবন নিয়ে এমন তামাশা করতো না। শুনেছি কেউ কাউকে ভালোবাসলে তার ভালোবাসার মানুষের খুশিটাই বড়ো করে দেখে আর সেটাই পূরণ করে। তবে এই গুন্ডাটা? এটা কখনোই ভালোবাসা হতে পারে না।
যতই খাওয়ার চেষ্টা করি খাবার মুখে ওঠে না। বাবার মুখটা সারাদিন চোখের সামনে ভাসে। বাবাও হয়তো আমার মতো খেতে পারছেন না। মায়ের বকুনি খুব মিস করছি। মা-ও হয়তো বকুনি দেবার জন্য আমাকে পাগলের মতো খু্ঁজছেন।
একমাস হয়ে গেছে। আর সহ্য হচ্ছে না। আমি বুঝতে পারছি এখান থেকে আমি বের হতে পারবো না। বের হওয়ার জন্য কিছু একটা করতে হবে।
বিকেলে নেহাল বাইরে গেল। আমি রান্নাঘরে গিয়ে ফল কাটার ছুরিটা নিয়ে আসলাম বেড রুমে। হাত কাটবো। তবে এমনভাবে কাটতে হবে যাতে রক্তক্ষরণ হয় কিন্তু আমি মরবো না। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওখানে কাউকে তো অবশ্যই পাব যে আমাকে পালাতে সাহায্য করবে। কিছুক্ষণ বসে ভাবতে লাগলাম কোথায় কিভাবে কাটলে বেশি ক্ষতি হবে না। যখনই ছুরিটা হাতে বসিয়ে একটা টান দিতে যাব গুন্ডাটা কোথা থেকে দৌড়ে এসে থাবা মেরে ছুরিটা নিয়ে গেল। আমি ভূত দেখার মত চমকে উঠলাম। ও তো এই সময়ে আসে না। আজকে কিভাবে আসলো? ও কি জানতো আমি কি করতে যাচ্ছি? না না, কিভাবে জানবে। তাহলে ও এভাবে দৌড়ে এসে ছুরিটা কিভাবে নিলো? এসব ভাবতে ভাবতে নেহাল আমার গালে জোরে একটা চড় বসিয়ে দিলো।
– কি করতে যাচ্ছিলে এটা?
– দেখতে পাচ্ছেন না?
– পাগলামীর একটা সীমা থাকা উচিত।
– এই কথা আপনি বলছেন? লজ্জা করছে না এটা বলতে? আপনার নিজের পাগলামীর সীমা আছে?
– আমি যা করেছি তোমাকে ভালোবেসে করেছি।
– আর আমি যা করছি আমার বাবা মাকে ভালোবেসে করছি।
– তুমি মরে গেলে তোমার বাবা মা ভালো থাকবেন?
– আমি বেঁচে থেকেও কি তারা ভালো আছেন?
– এতকিছু শুনতে চাইনা। ভবিষ্যতে এমন কিছু করার চেষ্টা করলে খারাপ হবে।
বলেই ও চলে গেল। সব প্ল্যান মাটি হয়ে গেল।
দেড়মাস হয়েছে আমি এখানে বন্দী। এখন আর পালানোর আশাও নেই। আজ সত্যি সত্যি মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আমার পরিবার আমার ভালোবাসার মানুষগুলোর সাথে যদি থাকতে না পারলাম তবে বেঁচে থাকারও কোনো মানে হয় না। আজ আবার নেহাল বাইরে যাবার পর ভাবতে লাগলাম। কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছি না। জীবনের প্রতি মায়া কেমন যেন চলে গেছে। খাটের ওপর দাঁড়িয়ে গলা থেকে ওড়নাটা নিলাম। টেবিলের সামনে থেকে চেয়ার এনে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়নাটা বাঁধলাম। চোখ বন্ধ করে বাবার কথা ভাবছি আর ওড়না গলায় পেঁচাচ্ছি। এমন সময় আবার নেহাল সেদিনের মত ছুটে আসলো। আমাকে চেয়ার থেকে নিচে নামালো। আজও আমি ওকে দেখে চমকে উঠেছি।
– তুমি পাগল হয়ে গেছো নিসা? কি করছিলে তুমি?
– আমি মরে যেতে চাই। এভাবে বন্দী হয়ে বাঁচার কোনো মানে নেই।
– বাবা মায়ের মতো তুমিও আমাকে একা রেখে চলে যাবে?
– বাবা-মা? আপনার?
– হ্যাঁ, আমার বাবা-মা।
– কোথায় তাঁরা?
– সেইখানে যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে না।
– ওনারা কিভাবে মারা গেলেন?
– তুমি শুনবে?
– হ্যাঁ বলুন।
– আমার তখন ১৫ বছর বয়স। বাবা পুলিশের কর্মকর্তা ছিলেন। কখনো অসৎ পথে উপার্জন করেন নি। অপরাধীদের শাস্তি দিতেন সবসময়। এলাকার একজন বিখ্যাত খুনী ছিল। তার কয়েকটা খুনের প্রমাণ জোগাড় করে বাবা ওর জেলে ঢোকার ব্যবস্থা করেছিলেন।
– তারপর?
– ওর কয়েকজন সঙ্গী এক রাতে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। বাবাকে মেরে ফেলে ওরা। মাকে ধর্ষণ করান পর খুন করে। আমি তখন মোটামুটি বুঝতে শিখেছি। ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম তাই ওরা আমাকে মারতে পারেনি। বাবা-মা হারিয়ে আমি দিকহারা হয়ে পড়লাম। তাঁদের মৃত্যুর পর আত্মীয়রা মুখ ফিরিয়ে নিলো।
একটা গ্যাংস্টার দলে যোগ দিলাম তখন। একে একে ওদের সবাইকে আমি খুন করি। কোনো প্রমাণ রাখিনি তাই পুলিশ আমার কিছু করতে পারেনি। তারপরে আর কারো খুন করিনি কিন্তু মারামারি, চাঁদাবাজি এসব আমার নিত্য সঙ্গী হয়ে গেল। আমি নেহাল আহমেদ থেকে নেহাল গুন্ডা হয়ে গেলাম।
বলো নিসা আমার কি করার ছিল? বাবা-মা হারা একটা ছেলেকে দেখার কেউ ছিল না। একমুঠো খাবার দেবার মতো কেউ ছিল না আমার পাশে। ভালো মানুষ আর হয়ে উঠা হলো না। ওই দলে যোগ দিয়ে ওখান থেকে আর বের হতে পারিনি। সমাজের কেউ আমাকে ভালো চোখে দেখতো না। কার জন্য নিজেকে শোধরাতাম? নিজের জীবনটাকে কখনো জীবন মনে হতো না। কতদিন বাঁচবো কখন মরবো কোনো টেনশন ছিল না। কিন্তু তোমাকে দেখার পর জীবনটা পাল্টে গেল। আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতে ইচ্ছা হয় এখন। সেই তুমিও আমাকে ছেড়ে যেতে চাও? তবে চলো দুজন একসাথে মরি। তুমি না থাকলে আমার যে বাঁচার কোনো মানে নেই।
নেহালের কথা শুনতে শুনতে কখন কেঁদে ফেলেছি জানি না। ও আমার চোখ মুছে দিলো।
– কষ্ট কি সেটা তুমি জানো না নিসা। বাবা মায়ের আদরে বড়ো হয়েছো। এতিমের দুঃখ তুমি বুঝবে না। আমি জানি আমি যা করেছি তা অন্যায় কিন্তু ওই সময় আমাকে সঠিক রাস্তা দেখানোর কেউ ছিল না।
এই প্রথম নেহালের জন্য আমার মায়া হচ্ছে। আমি ওকে বেশি কিছু বলতে পারলাম না। শুধু বললাম “আমি ঘুমাবো”। ও উঠে চলে গেল। একটু পর এসে বললো,
– খাবার গরম করেছি। খেয়ে ঘুমাও।
খুব ক্ষিদে পেয়েছে। খেতে বসে মনে হলো নেহাল খেয়েছে কি-না। ওর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে দরজা নক করলাম। দরজা খোলাই ছিল। আমাকে দেখে ও অবাক হলো।
– কিছু বলবে?
– আপনি খেয়েছেন?
– খাবো পরে। তুমি খেয়ে ঘুমাও।
– রাত বাড়ছে। আসুন খাবেন।
ও হা করে আমার দিকে চেয়ে আছে। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছে।
– কি হলো, আসুন।
– হ্যাঁ আসছি।
আমি ওকে খাবার বেড়ে দিলাম। দু’জন একসাথে খেলাম আজ। কেন যেন ওর জন্য খুব মায়া হচ্ছে। মানুষের কত কষ্ট সেটা মুখ দেখে বোঝা যায় না। হয়তো সত্যিই আমাকে ভালোবাসে। এতদিনে ও কখনো আমাকে ছুঁয়েও দেখেনি। আমার কাছে ঘেঁষার চেষ্টা করেনি। অন্য কেউ হলে হয়তো অনেক কিছুই করতো। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
আজ সকালে উঠে একটু ফ্রেশ লাগছে। রান্নাঘরে গিয়ে নাস্তা বানালাম। নেহাল কি খেতে পছন্দ করে? জানি না। পরোটা আর ডিম ভাজি বানালাম। তারপর ওকে ডেকে তুললাম। আমাকে দেখে এবারও হা করে চেয়ে আছে।
– কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
– না মানে….
– নাস্তা রেডি। ফ্রেশ হয়ে খেতে আসুন।
– হু? হ্যাঁ আসছি।
আমি টেবিলে নাস্তা রেডি করছি আর ভাবছি, আমি কেন এমন করছি? আমি কি আমার ভাগ্যকে মেনে নিলাম? ওর প্রতি কি আমার মায়া হচ্ছে? আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি? এসব ভাবতে ভাবতে নেহাল এসে পড়লো। নাস্তা শেষ করে ও বাইরে গেল। আমাকে রান্না করতে নিষেধ করলো। বললো ও এসেই করবে। আমি যেন কষ্ট না করি। যাবার সময় বাইরে থেকে দরজা লক করে গেল। আজ কেন জানি আমার খারাপ লাগছে না। দুপুরের খাবার রান্না করলাম। গোসল করে নিজের অজান্তেই নেহাল জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।
ইদানিং নেহালের সাথে টুকটাক কথা হয়। মাঝে মাঝে ওর সাথে গল্প করি। দু’জন একসাথে রান্না করি। এখন মাঝে মাঝে ও আমাকে বেড়াতে নিয়ে যায়। খোলা হাওয়ার প্রাণ ভরে নিশ্বাস নেই আমি। হয়তো ও আমাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে আমি পালাবো না। আমারও কেমন জানি ওর বিশ্বাসটা ভাঙতে ইচ্ছে হয় না। বাবা মাকে খুব মনে পড়ে। নেহাল বাবা মায়ের কথা বললেই চুপ করে থাকে। হয়তো ভাবে আমি ওখানে গেলে আর আসবো না। কিন্তু আমার ফিরে আসতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছা হয় বাবার সাথে দেখা করে আবার এখানেই আসবো। দুজন একসাথে রান্না করবো। খোলা হাওয়ায় ঘুরে বেড়াবো।
দুইমাস হয়ে গেছে। আজ বাবার জন্মদিন। প্রতিবছর এদিনটা আমরা খুব আনন্দ করে কাটাই। ভীষণ মিস করছি বাবাকে। নেহাল বাইরে থেকে এসে দেখলো আমি কাঁদছি। দৌড়ে এলো।
– কি হয়েছে নিসা? কাঁদছো কেন এভাবে? চেহারার কি অবস্থা করেছো? কিছু লাগবে?
– আমি বাবার কাছে যাব। প্লিজ একবারের জন্য আমাকে বাবার সাথে দেখা করতে দিন।
– ……………
– চুপ করে আছেন কেন? কিছু বলুন। আমি আবার ফিরে আসবো। বাবার সাথে দেখা করেই চলে আসবো।
– তুমি আসবে না নিসা।
– কে বলেছে আসবো না! অবশ্যই আসবো। আমি যে আপনাকে…..
– আমাকে কি?
– কিছু না। আমাকে একবার যেতে দিন প্লিজ।
– আমাকে ভালোবাসো নিসা?
– ……………….
– বলো না!
– আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
– সত্যি বলছো? এটা আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কোন প্ল্যান নয় তো?
– আমি মিথ্যে বলছি না। যদি বিশ্বাস না করেন তাহলে আমাকে এখানেই আটকে রাখেন। আর যদি বিশ্বাস করেন তাহলে একবার আমাকে বাবার সাথে দেখা করতে দিন। আজ বাবার জন্মদিন।
কথাটা শুনে নেহালের মন নরম হলো।
– কিন্তু তোমার বাবা যদি তোমাকে আসতে না দেন?
– আমি ছোটবেলা থেকে কখনও বাবার অবাধ্য হই নি। আমার একটি আবদার নিশ্চয়ই বাবা মানবেন। বাবাকে বলবো আপনাকে ক্ষমা করে দিতে।
– যদি না করেন? যদি তুমি আসতে না পারো?
– তাহলে ছাদের পাইপ আছে তো।
কথাটা শুনে নেহাল হো হো করে হেসে দিলো।
– ওটার অভ্যাস আমার একা আছে। তোমার নেই।
– আমি অভ্যাস করবো কে বলেছে? আমি তো আপনার কাঁধে চড়বো।
দুজনই হাসতে লাগলাম। পরদিন দুজন আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। নেহাল মনে মনে বলছে আমি যেন ফিরে আসি। আর আমি মনে মনে বলছি বাবা যেন নেহালকে মাফ করে দেন।
৫ বছর পর…………
এয়ারপোর্টে বসে আছি। ৭টায় ফ্লাইট। ইংল্যান্ড এর একটা নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। স্কলারশিপের কথাটা নেহাল জানে না। জানাতেও চাই না। প্লেনে উঠে এসএমএস করে দেবো। তখন ও চাইলেও আমাকে আটকাতে পারবে না। ডিভোর্স লেটারটা এতক্ষণে হয়তো পেয়ে গেছে। আজ আমার প্রতিশোধ পূর্ণ হয়েছে। আজকের এ দিনটা নেহালকে দেখতে হতো না যদি সেদিন বাবার বাসায় গিয়ে সব ঠিক থাকতো।
চলবে…..