গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া লেখায়_ফারহানা_ছবি পর্ব_৫

গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
লেখায়_ফারহানা_ছবি
পর্ব_৫
.
.
🦋
______

নতুন বউকে বরন করে ঘরে তুলে মিসেস সাহারা বেগম ৷ অন্য দিকে জীবন মাহমুদ মুখ ভার করে ভিতরে ঢুকে গেলেন ৷ সাহারা বেগম প্রথমে তার স্বামীর মুখ ভার এর কারণ বুঝতে না পারলেও নতুন বউ এর মুখ দেখে বুঝতে পারলেন আসল কারন টা, সাজিত হুট করে প্রিয়ার হাত টানতে টানতে তার বেডরুমে নিয়ে এসে ফ্লোরে ছুড়ে মেরে দরজা লক করে প্রিয়ার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে উঠলো, ” হাউ ডেয়ার ইউ! তোর সাহস দেখে আমি সত্যি স্পিচলেস ৷ আমার বউ হওয়ার খুব শখ তোর তাই না?”

প্রিয়া ফ্লোর থেকে হাত ঝাড়তে ঝাড়তে উঠে সাজিতের মুখের দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসতে লাগলো৷ সাজিত প্রিয়াকে হাসতে দেখে ব্রু জোড়া কুচকে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো প্রিয়ার এই অহেতুক হাসির কারণ নাকি বিয়ে করে পাগল হয়ে গেল?

প্রিয়া হঠাৎ হাসি থামিয়ে সাজিতের উদ্দ্যেশ্য বলতে লাগলো, ” মিস্টার আসফিক মাহমুদ সাজিত, আপনার সত্যি মনে হয় আমি আপনাকে বিয়ে করার শখ ছিলো লাইক সিরিয়াসলি হা হা হা , যাই হোক আপনার ভুল ধারনাটা আমি নিজ দায়িত্বে ভেঙে দিচ্ছি৷ ”

” মানে!”

” উফফ সাজিত তোমার এই কথা বলার মাঝখানে ফোরন কাটার স্বভাব টা গেলো না৷ চুপ করে আমার কথাটা মন দিয়ে শোন৷ তুমি যে আমার আপুর জীবন নষ্ট করার জন্য বিয়ে করতে চেয়েছো এটা কি আমি জানি না ভেবেছো?”

” তু,,তুমি এই সব কথা কি করে জানলে?”

” আমি কি করে জানলাম সেটা বড় প্রশ্ন নয় ৷ তুমি যে আমার আপুর জীবনটা হেল করে দিতে চেয়েছো এই টাই বড় কথা ৷ যাই হোক এই বিয়েটা আপনিও মানেন না আর না আমি মানি তবে এটা কখনো ভেবে নিবেন না যে আমি আপনাকে ডিভোর্স দিবো ৷”

” ডিভোর্স তো তোমাকে দিতে হবে প্রিয়া”

” ইসস আপনার মুখে না প্রিয়া নাম টা মানাচ্ছে না আগে কতো সুন্দর করে প্রিয়ু বলে ডাকতেন মনে আছে ?”

সাজিত মুখ ঘুড়িয়ে নিয়ে বলে,” না আমার পুরনো কোন কথা মনে নেই আর না মনে করতে চাই”

” এ্যাজ ইউর উইস , তো মেরা হাসবেন্ট আমার ভিষণ ঘুম পেয়েছে আমি ঘুমিয়ে পড়ছি গুড নাইট”

সাজিতকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বিছানার এক কোনে শুয়ে পড়লো৷ সাজিত ভেবে ছিলো তার প্লান নষ্ট করায় প্রিয়া কে আজ রাতে উচিত শিক্ষা দেবে কিন্তু এতো পুরো উল্টা হয়ে গেল৷ এতো কষ্ট করে তিন বছর ধরে করা প্লান এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে এটা ভেবে সাজিতের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে ৷ ঘুমন্ত প্রিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে সাজিত বাঁকা হেসে হুট করে প্রিয়াকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমের বাথটবে ফেলে দেয়৷ আচমকা এমন ঘটায় প্রিয়া চমকে ওঠে ৷ চোখ মেলে তাকিয়ে নিজেকে ওয়াশরুমের বাথটবে দেখে প্রিয়ার বুঝতে বাকি নেই কাজ টা কার; প্রিয়া বাথটপ থেকে উঠে দাড়াতে সাজিত প্রিয়ার গাল চেপে ধরে বলে,” আমার সাথে যখন তুই একবার জড়িয়ে পড়েছিস ৷ আমার প্লান নষ্ট করেছিস তোকে তো আমি ছাড়বো না প্রিয়া ৷ তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মারবো তোকে তারপর তোর-ই চোখের সামনে তোর বোনকে বিয়ে করবো আর তুই নিজে দাড়িয়ে থেকে আমাদের বিয়ে দিবি ৷”

এতো জোড়ে গাল চেপে ধরেছে সাজিত যেন মুখের হাড়গোর এখুনি ভেঙে যাবে৷ প্রিয়া সহ্য করতে না পেরে সাজিতের পায়ে জোড়ে পারা দিতে সাজিত উহু বলে একটু দুরে সরে যায়৷ সে সুযোগে প্রিয়া শাওয়ার অন করে দিয়ে সাজিতকে তার নিচে দাড় করিয়ে দিয়ে বলে,” আমি কোন দূর্বল অবলা নারী নই যে তুই যা চাইবি তাই হবে৷ আমাকে এখনো চিনিস নি তুই আর আমার আপুকে চিনিস৷ আমার আপুকে এখনো তোর আসল চেহারার কথা জানাই নি ৷ যে দিন আমার আপু তোর আসল জানোয়ারের রুপ টা দেখবে সেদিন বুঝবি আমার আপু কি জিনিস৷ আর একটা কথা আমাকে তিলে তিলে কষ্ট দেওয়ার আগে নিজের ফ্যামিলির কথা ভেবে নিস ৷ কারণ আমি বিন্দুমাত্র কষ্ট পেলে তোর পরিবারও সে একি কষ্ট অনুভব করবে৷”

প্রিয়ার মুখে তুই ডাক আর এতো গুলো থ্রেট শুনে সাজিতের মাথা যেন খারাপ হয়ে গেল৷ হুট করে প্রিয়ার গলা চেপে ধরে বলে, ” কি বললি তুই? আমার ফ্যামিলি কে কষ্ট দিবি? তিলে তিলে নয় তোকে আজ একে বারে শেষ করে দিবো ”

প্রিয়ার চোখ মুখ উলটে আসছে ৷ কোন ভাবে সাজিতের হাত থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছে না৷ মনে হচ্ছে আজ ওর জীবনের শেষ দিন৷ হুট করে প্রিয়া সাজিতকে ধাক্কা মারে , সাজিত আচমকা ধাক্কা সামলাতে না পেরে দেওয়ালের সাথে মাথায় আঘাত লাগে৷ সাজিত প্রিয়ার গলা ছেড়ে দিয়ে মাথা চেপে ধরে৷

সাজিত গলা ছেড়ে দিতে প্রিয়া শ্বাস নিতে পেরে যেন নতুন জীবন ফিরে পেল৷ পানির পিপাসায় গলা শুকিয়ে গেল প্রিয়ার দৌড়ে রুমে গিয়ে গ্লাসের পানি খেয়ে নিলো৷ নিজেকে শান্ত করে ওয়াশরুমে এসে দেখে সাজিত সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে৷

প্রিয়া শাওয়ার অফ করে দিয়ে ওয়াশরুমের দরজা চাপিয়ে ভিজে শাড়ি চেন্জ করে থ্রি-পিস পড়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে আর মনে মনে বলতে লাগলো, ” আজ সারা রাত ওয়াশরুমে কাটাক জানোয়ার টা , বাকিটা কাল দেখা যাবে ৷ নিজেকে প্রস্তত করতে হবে আগামিকাল এর নতুন যুদ্ধের জন্য”

প্রিয়া নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে ৷ আর অন্যদিকে সাজিত ওয়াশরুমে সেন্সলেস অবস্তায় পড়ে রইল৷

___________

সকাল আট-টায় প্রাণোর ঘুম থেকে উঠে দ্রুত ফ্রেস হয়ে নিয়ে বান্ধবীদের নিয়ে রেন্টুরেন্টে চলে যায়৷ রেস্টুরেন্টে ঢুকে প্রাণো স্মরণ সহ তাদের বাকি বন্ধুদের দেখতে পেল৷ প্রাণো স্মরণের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে এক হাসি দিতে স্মরণের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ৷ সাফা ঐশী স্মিতা দ্রুত গিয়ে যে যার চেয়ারে বসে পড়ে বলে,” এখন আবার খাবারের অর্ডার করে বসে থাকতে হবে ধুর ভাল্লাগে না”(সাফা)

” সাফা লেট করে ঘুম থেকে উঠলে তো এমন টাই হবে তাই না?”(প্রাণো)

” প্রাণো আপনাদের খাবারের অর্ডার দিতে হবে না৷ আমরা আগে থেকে অর্ডার দিয়ে দিয়েছি”(সাগর)

সাগরের কথা শুনে স্মিতা লাজুক হাসি দিয়ে বলল,” থ্যান্কিউ সাগর ”

স্মিতার লাজুক হাসি কারোর চোখ এড়ায়নি মুখ টিপে টিপে হাসতে লাগলো সবাই , প্রাণোর হঠাৎ স্মরণের দিকে চোখ পড়তে প্রাণোর চোখ দু’টো আটকে যায় ৷ ফর্সা শরীরে কালো জিন্স কালো শার্ট হাতা ফোল্ট করা , খোচা খোচা চাপ দাড়ি , সিল্কি চুল গুলো বাতাসে এলোমেলো হয়ে ভরাট কপাল ছেয়ে আছে৷ হাসলে চোখ দুটো ছোট হয়ে যাচ্ছে ৷ কফি কালার ঠোঁট জোড়া যেন চেপে ধরে হাসছে৷ এক মুহূর্তের জন্য প্রাণো যেন স্মরণের ঠোটঁ জোড়ায় দিকে তাকিয়ে আটকে গেল৷ হঠাৎ সাজিতের করা বেইমানির কথা মনে উঠতে কেমন যেন মন টা বিষিয়ে গেল প্রাণোর….

” ছিঃ কি ভাবছি আমি! আর ওনাকে বা এভাবে কেন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছি ৷ এভাবে তো সাজিতকেও কখনো দেখেনি আমি! তাহলে আজ কেন অন্য পুরুষকে এভাবে দেখতে গেলাম?” মনে মনে কথা গুলো বলে নিজেকে বকতে লাগলো প্রাণো৷ প্রাণো যখন স্মরণকে খুটিয়ে দেখায় ব্যস্ত তখন স্মরণের নজর ও প্রাণোর উপর ছিলো কিন্তু প্রাণোকে বুঝতে দেই নি ৷ যখন প্রাণো মুড অফ করে অন্য দিকে তাকালো তখন স্মরণের কিছুটা মন খারাপ হলো৷ ইতিমধ্যে টেবিলে খাবার চলে আসতে সবাই খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কারণ আজ সবাই নীলাচল ঘুড়তে যাবে৷

খাওয়া শেষ হতে প্রাণো তাদের চারজনের বিল দিতে গেলে স্মরণ মুখের উপর বারন করে দেয়৷ প্রাণো ভদ্রতার খাতিলে বেশি জোরাজুরি করলো না৷ সবাই জোড় বেধে বের হলো ৷ স্মরণ আগে থেকে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে রেখেছিলো ড্রাইভার কে কল দিতে তিনি আদঘন্টার মধ্যে চলে আসেন৷ এক এক করে সবাই বসে পড়ে ৷ স্মিতা প্রাণোকে বলে, ” দোস্ত নীলাচল নিয়ে কিছুতো বল আমরা আগে কখনো যাই নি তুই তো গিয়েছিস তাই না?”

” হুম গিয়েছি ৷ মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের কাছে নীলাচল ৷ যা টাইগার হিল নামেও পরিচিত৷ চোখ জুড়ানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর রোমাঞ্চকর পরিবেশ নীলাচল৷ জানিস স্মিতা নীলাচল গিয়ে তুই বান্দরবানের উচ্চতম স্থান দেখতে পাবি ৷ তাজিনডং (বিজয়),মৌদক মৌল( সাকা হাফং) ও কেওক্রাডং ৷ এই তিন পর্বতশৃঙ্গ জয় করার জন্য যে কেউ জঙ্গল ও পাহার নদী বেয়ে উঠতে পারে৷ একবার পর্বতারাহণ শুরু করলে আকর্ষনীয় ঝড়নার দেখা মিলবে৷”

” ওয়াও তোর মুখে বর্ননা শুনে আমার তো এখুনি যেতে ইচ্ছে করছে প্রাণো” ঐশী বলে উঠলো৷ ঐশীর কথা শুনে নিলয় দাঁত কেলিয়ে বলে ওঠে,” হু তোমরা মেয়ে পাহাড়ে উঠবে হাহ! জঙ্গল একটা পাড়ি দিলে তোমাদের খোজ আর পাওয়া যাবে না৷ ”

“নিলয় ভাই আমি এই তিন পাহাড়ে উঠেছি ৷ আপনার কথা মতো জঙ্গল ও পাড়ি দিয়েছি”

” কিহ!”

” জ্বি , মেয়েদের আন্ডারস্টিমেন্ট করা একদম ঠিক না নিলয় ভাইয়া”

” স্যরি প্রাণো আর হবে না”

প্রাণো মুচকি হেসে স্মরণের দিকে তাকাতে দেখে স্মরণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ওর দিকে বিষয়টা প্রাণোর কাছে আনইজি লাগছে বিধায় ঘাড় ঘুড়িয়ে বাইরের পরিবেশ দেখতে লাগলো৷ হঠাৎ গাড়ি থামাতে প্রাণো বলে ওঠে,” আর্মি চেকপোস্টে প্রত্যেক পর্যটনদের নাম ঠিকানা নিবন্ধন করতে হবে৷”

সবাই নিজেদের নাম নিবন্ধন করে ৷ গাড়ি আবার চলতে লাগলো ৷ উচু নিচু রাস্তা পেরিয়ে দুঘন্টা পর সবাই নিলাচল এ এসে পৌছায়৷

ভিতরে ঢুকতে ঢুকতে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়তে লাগলো আর এই সময়টায় মেঘের আনাগোনা বেশি থাকে ৷ প্রাণো দেরি না করে মেঘের সমুদ্রের দিকে ছুটে যায়৷ কাঠের মোটা রেলিং এর কাছে আসতে প্রাণোর চোখ জোড়া খুৃশিতে চিক চিক করে ওঠে ৷ সাফা ঐশী স্মিতার ও একি অবস্তা অন্য দিকে স্মরণ তার প্রাণকে দেখায় ব্যস্ত৷ প্রাণোর হাসি মাখা মুখটাই যেন এতোক্ষন ধরে স্মরণ দেখতে চেয়েছিলো৷

” আল্লাহ কি সুন্দর , চারিদিকে মেঘদের ভেষে বেড়াচ্ছে ৷ বর্ষা কাল হওয়ায় মেঘের আনোগোনা যেন আরো বেড়ে গেছে ৷ ”

প্রাণোর মুখ থেকে আর একটা শব্দ বের হচ্ছে না৷ সে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে ব্যস্ত৷

দু’ঘন্টা নীলাচল ঘুড়ে তারা পাশে একটা রেস্তরায় ঢুকে যায়৷ দুপুর হওয়ায় তারা সেখানে লাঞ্চ করে বের হয় উদ্দ্যেশ্য মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স৷ প্রত্যেকে মেঘলা গিয়ে টিকিট কেটে ঢুকে পড়ে৷ ছোট্ট চিড়িয়া খানা, ঝলন্ত ব্রিজ, পাহাড়ের নিচে কৃত্রিম লেগ, দেখে প্রাণোর ইচ্ছে হলো নৌকায় চড়বে৷ স্মরণ প্রাণোর ইচ্ছে যেনে তিনটে নৌকা ভাড়া করে৷ প্রাণো নৌকায় ভ্রমণ করায় এতো ব্যস্ত ছিলো যে স্মরণের দিকে আর নজর দেয়নি ৷ এদিকে সাগর নিলয় আকাশ স্মরণকে দেখে মিটমিটিয়ে হাসছে৷

সারাদিন প্রচুর ঘুড়ে সবাই বেশ ক্লান্ত বিকেল পাঁচটায় সবাই বের হয় রিসোর্টের উদ্দ্যেশ্য, রাত হওয়ার পূর্বে তাদের রিসোর্টে ফিরতে হবে৷

রিসোর্টে ফিরে হুট করে স্মরণ উধাও হয়ে যায়৷ প্রাণো স্মরণকে না দেখতে পেয়ে আকাশের কাছে জানতে চাইলে আকাশ জানে না বলে নিজেদের কটেজে ফিরে যায়৷ রুমে এসে প্রাণো গোছল করে চেন্জ করে ভিজে চুল না মুছে ব্যালকনিতে গিয়ে উড়ন্ত গরম ধোয়া চায়ের কাঁপ নিয়ে বসে৷ রুমে তার বান্ধবী গোছল করে বিছানায় শুয়ে পড়ে৷ আকাশে ঘন কালো মেঘ থাকায় চাঁদের আজ দেখা নেই৷ তবুও ব্যালকনিতে বসে থাকতে প্রাণোর ভালো লাগছে৷ প্রানো চোখ বন্ধ করলে তার চোখের সামনে সাজিতের একমাস প্রেমের অভিনয় গুলো বার বার ভেষে উঠছে৷ প্রাণোর কেন যেন অতটাও খারাপ লাগছে না কারণ সাজিতকে সে কখনোই ভালোবাসেনি বরং ভালো লাগতো বিধায় কথা বলতো আর যেখানে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো এঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে সেখানে কথা বলা বারন করার কোন রাস্তা ছিলো না৷

প্রাণো দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো, ” মিস্টার আশফিক মাহমুদ সাজিত আমার বোন কে ঠকানোর শাস্তি তুই পাবি , তবে আমার মনে হয়না আমাকে কিছু করতে হবে আমার বোন-ই তোকে সামলে নিতে পারবে৷ তুই কি ভেবেছিলিস আমি পালিয়েছি শুধু বিয়ে না করার জন্য? উহু পালানোর পেছনে একটা বড় কারণ ছিলো ৷”

চায়ের কাঁপে চুমুক দিয়ে প্রাণো রহস্যময় হাসি দিলো৷

____________

গতকালের মতো সেই লোক গুলো মার খেয়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ৷ সামনে চেয়ারে বসে সিগারেট ফুকতে লাগলো সেই ব্যক্তি৷

” বস এদের কি করবো?”

” পাহাড় থেকে ফেলে দে”

” বস পুলিশ কেস হবে তো? আর এদিকে আর্মি … ” বাকিটা বলার আগে সেই ব্যক্তি বলে উঠলো ,” কেউ কিছু জানবে না এদের মুখ একেবারে থেতলে দে যাতে এদের মুখ না চেনা যায়৷ শরীরের কাপড় গুলো জ্বালিয়ে ফেল কোন আই ডেন্টি যেন না থাকে৷ আমার কলিজা আমার প্রাণের যে ক্ষতি করতে চাইবে তাকে শেষ করে দিবো ঠিক এই ভাবে….”

” ওকে বস কাজ হয়ে যাবে”

আদমরা লোক গুলোর ছবি তুলে নিয়ে সেই ব্যক্তি বেড়িয়ে গেল৷

__________

পুরোদিন সাজিত মাথা যন্ত্রনায় রুম থেকে বের হতে পারেনি৷ আর না প্রিয়া কে হুমকি ধামকি দিতে পেরেছে৷ প্রিয়া তার শশুরবাড়ির মানুষের মন একদিনে জয় করে নিয়েছে এমন ভাব করতে লাগলো৷

সকালে যখন সাজিতের জ্ঞান ফিরে আসে তখন নিজেকে ওয়াশরুমে আবিষ্কার করে৷ গতকাল রাতের কথা সব মনে পড়তে সাজিতের মাথায় যেন রক্ত উঠে যায়৷ উঠতে নিলে মাথার পেছনে ব্যাথা অনুভব করায় হাত দিয়ে চেপে ধরে উঠে দাড়ায়৷ সাজিতের শরীরে গতকাল রাতের ভিজে পান্জাবি শুকিয়ে আছে৷ সাজিত পারে প্রিয়াকে খুন করতে ৷ কিন্তু এখনি তার মাথা গরম করা চলবে না বিধায় ধিরে ধিরে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে প্রিয়া শাড়ি পড়ে সেজে গুজে বসে আছে ৷ যেন তারই অপেক্ষা করছে৷ সাজিত কে দেখে প্রিয়া তার দাঁত ক পাটি বের করে দিয়ে বলে উঠলো ,” গুড মরনিং মাই ডেভিল হাসবেন্ট”

প্রিয়ার মুখে ডেভিল হাসবেন্ট কথাটা শুনে থমকে দাড়ায় সাজিত…..
.
.
.
#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here