গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৪

গ্যাংস্টার_লাভ পার্ট_৩৪
#নুসরাত_জাহান_অংকুর

রিহা আমতা আমতা করে বলে

রিহা : কই কিছু না তো আপনি বেশি শুনলেন ওসব বাদ দিন আর কিছু দিন থাকি

রাইসা খান ও সহমত পোষণ করে।

রাইসা খান : হা রিহা ঠিক বলছে
রেহান : খালা মনি আমি এই নিয়ে কোনো কথা বলতে চাইনা আমি জেনে বুঝে আমার স্ত্রীর বিপদ ডেকে আনতে পারি না

রাইসা খান তো ভয় পেয়ে যায়।

রাইসা : মানে? কিসের বিপদ ?(আমতা আমতা)
রেহান : বিপদ নয় তো কি একবার পানিতে পরে যাওয়া আর একবার রাইহান না কে, সে তো ওর পিছনে পড়ে গেছে আমি এখানে আর থাকতে পারবো না
রাইসা খান : তোর কি কারোর উপর সন্দেহ হয়
রেহান : কার উপর হবে রাইহান ছেলেটার নজর আমার ঠিক লাগছে না
রাইসা খান : আরে ওর কথা বাদ দে আমরা তো এখানে সব নিজেদের লোক
রেহান : খালামণি প্লিজ আমরা আজ বের হচ্ছি এটাই ফাইনাল

রাইসা খান কিছু বলার আগেই মাইশা চৌধুরী এসে বলে

মাইশা চৌধুরী : অনেক দিন তো হলো আর কত দিন এবার আমাদের যাওয়া উচিৎ। আর দুলাভাই এর তো আসার নাম নেই অন্য এক সময় এসে ঘুরে যাবানে এখন আমাদের যেতে দে । রিহা সব গুছিয়ে নে
রিহা : মামনি

রিহার কথা না শুনে মাইশা চৌধুরী চলে যায় । রিহা সব গুছাতে লাগে রাইসা খান কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থেকে চলে যায়।

রিহা সব গুচাচ্ছে আর রাগে ফুসছে । রেহান রিহাকে জড়িয়ে ধরে।

রিহা : ছাড়ুন তো
রেহান : বাবা কি রাগ এত রাগ শরীরের জন্য ঠিক না মিসেস রেহান চৌধুরী
রিহা : যান তো গুছাতে দেন

রেহান রিহা কে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে

রেহান : তুমি যেটা ভাবছো সেই সব আমি জেনে ছাড়বো তোমাকে কষ্ট করতে হবে না তুমি শুধু আমাকে দেখ
রিহা : মানে ?
রেহান : মানে হলো এখন থেকে তুমি নিজের আমার এর আমার ছোট পরিবারের কথা ভাববে বুঝছো
রিহা : আপনার ভাবার হলে আপনি ভাবেন
রেহান : চুপ সব সময় এত কথা বলো কেনো যত কথা বলো তত আদর করলে তো হয়
রিহা : কেনো আপনার আদর করার লোকের কি অভাব পড়ছে যান না নিজের গার্লফ্রেন্ড এর কাছে
রেহান : তুমি যা করছো তাহলে সত্যি সত্যি একটা গার্লফ্রেন্ড বানাতে হবে বুঝছি
রিহা : কি
রেহান : কিছু না তো

রেহান রিহার গালে হাত দিয়ে ঠোটের দিকে এগুতে লাগে। এক পর্যায়ে ঠোটের সাথে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

রিহা কোনো বাধা ছাড়া রেহান এর শার্ট ধরে। তখনই রুশ এর কথায় দুইজন দুইজন কে ছেড়ে দেয়

রুশ : সরি আমি কিছু দেখিনি

রিহা লজ্জা পেয়ে বাথরুমে চলে যায় রেহান মাথায় হাত দিয়ে চুলকাচ্ছে । রুশ একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায় ।

রেহান ব্যাগ গুছাতে লাগে । রিহা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রেহান এর সব গুছানো শেষ । রিহা তো তাকাতে পারছে না আজকাল রেহানকে আর আগের মত অসহ্য লাগে না মনে হয় রেহান পাশে থাকলে আর কিছু লাগবে না রিহার । কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হয় রিহা অনেক দণ্ডের মধ্যে আছে রিহার সাথে কি হচ্ছে সে নিজে ও বুঝতে পারছে না

এসব আনমনে ভাবতে ভাবতে হটাৎ ওর চোখ দরজায় যায় । সাদা রঙের উড়না দেখা যাচ্ছে। রিহার বুঝতে বাকি হইলো না এটা কে

রেহান এর ডাকে রিহার হুস ফেরে

রেহান : তাড়াতাড়ি রেডী হয়ে নাও
রিহা : হুম কিন্ত আপনি এবার থেকে যেনো অমন কিছু করবেন না বুঝছেন
রেহান : আর আমি কি করে জানবো
রিহা : তাইবলে সব সময়
রেহান : সব সময় কই তুমি তো দুরেদুরে থাকো

রিহা : আচ্ছা তাই (বলে গলা জড়িয়ে ধরে)

রেহান ও কোমর জড়িয়ে ধরে

রেহান : হুম তাই তো আজকাল ম্যাডাম এর সব কিছু কেমন অন্য রকম লাগছে ভাবছি তোমার ইচ্ছা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ করবো
রিহা : কি ইচ্ছা (ভ্রু কুচকে)
রেহান : কেনো সেদিন তো বললে আমার বেবি চাই বেবি চাই
রিহা : আমি কখন বললাম
রেহান : মেলা থেকে আসার সময় শুধু আমাকে বললে তো হতো কিন্ত তুমি সবার সামনে বললে বাহ তাহলে তোমার ইচ্ছা পূরণ তো করতেই হবে

বলে রিহার দিকে কিছুটা ঝুঁকে পরে । তখনই অন্তরা হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ে। রেহান রিহাকে ছেড়ে দাড়ায়

রিহা : আর আপু তুমি কোনো দরকার ?
অন্তরা : না রেহান এর সাথে কথা ছিল
রিহা : ওহ নক করে তো আসবে
অন্তরা : রেহান আমি আর আম্মু ও তোমাদের সাথে যাবো

রেহান কিছু না বলে একটা ডেভিল স্মাইল দেয়। রিহার রাগ তো সেই লেভেলে গেছে

রিহা : কুত্তী হারামী একটু ও আমার জামাই কে একা ছাড়া যায় না মা মেয়ে মিলে আমার ভালো জামাই এর পিছনে পড়েছিস আমি থাকতে তোরা আমার জামাই কে আমার কাছ থেকে নিতে পারবি না হু তোকে তো আমি দেখে নেবো বাসায় যেতে দে তোর আর তোর ডাইনি মার কি করি শুধু দেখ (মনে মনে)

অন্তরা : আমরা রেডী হয়ে আছি তোমরা রেডী হয়ে নাও

রিহা কিছু না বলে একটা শার্ট বের করে রেহান এর হাতে দেয় অন্তরা ও বলে

অন্তরা : রেহান এটা পড় তোমাকে খুব মানাবে (অন্য একটা শার্ট বের করে)

রেহান একবার অন্তরার দিকে তাকাচ্ছে তো একবার রিহার দিকে । রিহা রেহান এর হাতে চিমটি কাটে

রেহান : আহহহ
অন্তরা : কিহলো

রিহা চোখ রাঙিয়ে তাকায়
রেহান : না কিছু না আমি রেডী হব তুমি বাইরে যাও
অন্তরা : এটা পড় প্লিজ

অন্তরা বাইরে যায় রিহা ও বকতে বকতে বাইরে যায় ।

রিহা : কি মেয়ে অন্যের বরের উপর নজর দেয় এটাকে বিয়ে কেনো দেয়না মত বয়স হইছে । সব আমার জিনিসের উপর নজর এটাকে একটা শিক্ষা দিতে হবে
রুশ : কাকে শিক্ষা দিবি আবার
রিহা : কাকে আবার k k h কে
রুশ : সেটা আবার কে?
রিহা : অন্তরা
রুশ : k k h মানে কি ?
রিহা : কূত্তি কামিনী হারামী

রুশ হা
রিহা : মাছি ঢুকবে এখন গাড়ির কাছে চল ।
রুশ : তোকে নিয়ে আর পারি না

দুইজন গাড়ির কাছে এসে দেখে মাইশা চৌধুরী আর রাইসা খান আছে ।

একটু পর অনি নামলো তারপর অন্তরা । রেহান এর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে ।

রেহান আসতেই রিহা মুখ অফ অন্তরা তো সেই খুশি । রেহান অন্তরার দেওয়া শার্ট পড়েছে । রিহা তো রাগে জ্বলছে ।

রিহা : পানি দে তো
রুশ : কি করবি
রিহা : মাথায় দিয়ে ঘুম পড়বো (রেগে)
রুশ : রাগছিস কেনো দিচ্ছি

রুশ পানি দিতে রিহা পানি মুখে নেয় পরে রেহান কাছে আসতেই সব পানি রেহান এর শার্ট এ ফেলে দেয়

অন্তরা : এটা তুমি কি করলে ?
রিহা : সরি রেহান বুঝতে পারিনি রুশ একটা কথা বললো পানি পড়ে গেলো সরি
অন্তরা : তুমি একটু
মাইশা চৌধুরী : থাক না যা রেহান শার্ট চেঞ্জ করে নে

মাইশা চৌধুরী বেগ থেকে শার্ট বের করে দিকে রেহান সেটা পরে। রিহা তো সেই খুশি । অন্তরা তো জ্বলছে।

সবার থেকে বিদায় নিয়ে ওরা গাড়িতে উঠে। অনেক কিছু নেওয়ার ফলে গাড়িতে সবাই ধরছে না । তাই একজনের কোলে আরেক জন বসবে।

রেহান ড্রাইভ করছে পাশে অন্তরা বসে। অনি কোলে রুশ বসছে । রাইসা খান একা আর মাইশা চৌধুরীর কোলে রিহা বসেছে ।

সবাই এভাবে বসে যাচ্ছে জাগা কম থাকায় । রিহা তো রাগে ফুসছে অন্তরা বার বার রেহান এর দিকে তাকাচ্ছে । রেহান লুকিং গ্লাস এ রিহা কে একবার দেখছে তো মুচকি হাসছে । রিহা সামনে বসতে গেলে রিহার আগে অন্তরা বসে । রাইসা খান ও বলে ওখানে বসতে

রিহার অসহ্য লাগছে। শহরের রাস্তায় আসতে রিহা গাড়ি দাড়াতে বলে

রেহান : কি হলো

রিহা কিছু না বলে গাড়ি থেকে নেমে পড়ে।

রাইসা খান : এই মেয়ের আবার কি হলো
মাইশা চৌধুরী :কিহলো রিহা
রিহা : মামনি এভাবে কষ্ট করে যাওয়ার কোনো মানে হয় না আমি ক্যাব বুক করছি এখুনি চলে আসবে রুশ তুই কি যাবি ।
রেহান : কি পাগলামি করছো গাড়িতে উঠ
মাইশা চৌধুরী : রিহা তুই কিছু চিনিস না কখন কি হয়
রিহা : মামনি আমরা ক্যাব এ যাবো আর আজকাল GPS থাকলে পথ চেনা লাগে না
অন্তরা : আর রিহা উঠে পরো মাঝ রাস্তায় কি শুরু করছো
রিহা : মামনি তোমার কষ্ট হচ্ছে আমি জানি আর আমি ক্যাব যেতে পারবো আমার লোকেশন অন থাকবে তোমরা দেখতে পারবে রুশ তুই কি যাবি

রুশ তাড়াতাড়ি নেমে পড়ে ।

রেহান : অনি তুই গাড়ি চালা আমি ওদের নিয়ে আসছি
রিহা : কোনো দরকার নেই আমরা যেতে পারবে আপনি আপনার কাজ করেন

রেহান বুঝতে পারে রিহা অনেক কষ্ট পাইছে । রেহান অনিকে ইশারা করে

অনি : আমি যাচ্ছি তোমাদের সাথে
রিহা : হুম তাড়াতাড়ি আসুন ওই যে ক্যাব চলে আসছে

রিহা আর কাউকে কিছু বলতে না দিয়ে ক্যাব উঠে পড়ে। রেহান রিহার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে

রাইসা : যাক বাবা বাচা গেলো
মাইশা চৌধুরী : রেহান যা হলো ঠিক হলো না
রাইসা খান : কি ঠিক হয়নি এতে ওর কি দোষ
মাইশা চৌধুরী : তুই বুঝবি না রেহান তুই তো জানিস মেয়েটা কেমন

রেহান একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে গাড়ি চালায়। রেহান just পরীক্ষা করতে চাইছিল রিহা ওকে ভালোবাসতে শুরু করছে কি না সেই জন্য শার্ট পরে না কিন্ত এতে রিহা এত কষ্ট পাবে রেহান বুঝতে পারেনি । বাড়ি গিয়ে আগে ওর রাগ ভাঙ্গতে হবে নাহলে যে কি হবে

রেহান গাড়ির স্প্রিড বাড়িয়ে দেয়।

কয়েক ঘন্টার মধ্যে চলে আসে। বাসায় এসে দেখে ওরা কেউ আসেনি রেহান ফ্রেশ হয়ে অপেক্ষা করতে থাকে।

ভালোবাসার মধ্যে ঝগড়া ,দুষ্টুমি ,রাগারাগি থাকবেই নাহলে ভালোবাসা জমবে কি করে । এর জন্য আবার কেউ গালি দিয়ে না

2 ঘণ্টা পর ওরা ফিরে আসে। রেহান খুশি হয়ে যায়। রুশ আর অনি আসছে রিহা নেই। রেহান দরজার কাছে যায় কিন্ত কাউকে পায় না

রেহান : অনি রিহা কোথায়?
অনি :রিহা ওর আব্বুর বাসায় গেছে ওর আব্বুকে খুব মনে পড়ছিল
রেহান : কি ও আমাকে না জানিয়ে
মাইশা চৌধুরী : আমাকে বলেছে একটু আগে ফোন করেছিলো । ওর আব্বু ব্যাবসার কাজে এখানে আসছে তাই রিহা দেখা করতে গেছে।
রেহান : অ্যাড্রেস টেক্সট করে দাও। আমি রিহাকে আনতে যাচ্ছি

রেহান আর কিছু না বলে বেরিয়ে যায়।

রেহান খুব ভালো করে বুঝতে পারছে রিহা কতটা অভিমান করেছে । ছোট বেলার মত । রেহান এর সাথে ঝগড়া করলে ফুফুর বাসায় চলে যেত আর রেহান ওর আব্বুকে নিয়ে রিহাকে আনত ।

রেহান গাড়ির চালাচ্ছে তখনই ওর ফোনে টেক্সট আসে । রেহান অ্যাড্রেস অনুযায়ী যায়

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here